নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নক্ষত্রের সাতকাহন

নক্ষত্রেরও মৃত্যু হয় , আমরা তো মানুষ ... সবকিছু বুঝি না , বুঝতেও নেই

জুলিয়াস সিজার

ফলের সাথে তুলনা করলে আমাকে লিচু বলতে পারেন। লিচু একধরনের এরিল। এর তিন স্তর আছে। সবার বাইরেরটি রুক্ষ , মাঝেরটি সবচেয়ে নরম আর একেবারের ভেতরেরটি পুরাই সলিড। ধরে নিন আমি তেমনই।

জুলিয়াস সিজার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি বাস জার্নি , একজন নেফারতিতি এবং কিছু জীবনের গল্প

০২ রা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪

তাকে ব্যাখ্যা করার জন্য আমার দরকার নেই শেলী , শেলডন কুপার , হোমার কিংবা শেক্সপিয়ারের। রবীন্দ্রনাথের এক মায়াবন বিহারিনীই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু না , তার নাম দিলাম নেফারতিতি। তার বয়স কত ? দু মাস কিংবা তিন - হয়ত সে সকল রূপ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। তবুও তার অনন্যতা ছিল তার আয়ত দুচোখে। সে বসে ছিল ঠিক আমার এক সিট আগে তার মায়ের কোলে , পাশে চিন্তিত মুখে তার বাবা কারন তাদের সিটের উপরের এসি নষ্ট , বিপুল বেগে হাওয়া আসছে। ছোট্ট নেফারতিতি মা আমার একটু পর পর ঠান্ডায় কেঁপে কেঁপে উঠছে। এই দৃশ্য দিয়ে আজকের বাস জার্নির কথা শুরু। যখন লিখছি তখন বাস নরসিংদির রাস্তার বুক চিরে প্রবল বেগে সামনের দিকে ধাবমান।



বাসের একজন তার সিট ছেড়ে দিল তার ও তার মায়ের জন্য কিন্তু বিধি বাম। যে নেফারতিতি একটু আগে হাসছিল , খেলছিল সেই নেফারতিতি কান্না শুরু করল। বুঝতে পারলাম তার প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে কিন্তু তার মা তার খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছে না। কেউ যখন তার কান্নায় কর্ণপাত করছে না এবং তার মা বাবা দিশেহারা একটু আড়ালের জন্য তখন পাশে বসা ছোট ভাইটাকে সমেত উঠে গেলাম সিট থেকে। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে দুজন বসলাম তাদের সিটে আর নেফারতিতি তখন তার মায়ের কোলে তার ক্ষুধা নিবৃত্তি করছে আমাদের সিটে। একটু পরেই যখন আবার তার হাসির শব্দ শুনতে পারলাম তখন বুঝলাম এই শব্দের চেয়ে মধুর আর কোন সঙ্গীত বোধ হয় আমি এর আগে শুনিনি।



গতদিন যখন রায় প্রকাশ হল সেদিন রাত্রে আমার তিন বুয়েটিয়ান জুনিয়র বেড়াতে আসে হলে। দিবাগত রাত যখন একটা তখন রওনা হলাম তাদের ফিরিয়ে দিয়ে আসতে বুয়েটে , কিন্তু বিধি বাম। মেইনগেটে তালা। খবরে প্রকাশ কে বা কারা আসছে হল আক্রমনে। নিজে হলে বেড়িয়ে যেতাম কিন্তু জুনিয়রদের কিছু হলে জীবনেও নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না। যারা আসছে বা আসতে চাইছিল ওরা হয়ত বোকা। কারন দুইহাজার ছাত্র জানে নিজেদের ও তাদের প্রিয় হলের প্রোটেকশন দিতে। কিন্তু হলের ছাত্রদের হল রক্ষার মহরা দেখে আমার জুনিয়র গুলো প্রায় হতভম্ভ হয়ে গেল। তাদের ছয়তলার কোন এক রুমে রেখে এলাম । ছোট হয়ে গেলাম নিজের কাছে সেদিন কারন তারা তাদের দাদার জীবনের অপ্রকাশিত কিছু অধ্যায়ের জীবন্ত স্বাক্ষী হয়ে গেল।



জীবনের সঙ্গা আজো আবিষ্কার করতে পারিনি। আমার অধিকাংশ বন্ধু যারা প্রেমের রিলেশন মেনটেইন করে চলে , তাদের জীবন আজ জ্বলন্ত কয়লার মত ধিকি ধিকি করে জ্বলছে। কারন বিয়ে করতে হবে , তার আগে চাকুরী পেতে হবে তার সাথে প্রতিষ্ঠাও পেতে হবে। কিন্তু মেয়ের বাবা কী ততদিন অপেক্ষা করবে! অনেকেই হাসি মুখের অন্তরালে গুমরে উঠে।হয়ত সময়ের দৌড়ে সে হেরে যাবে , তবুও ছেলেটি শান্তি পাবে এই ভেবে যে হয়ত মেয়েটির ভাল বিয়ে হবে , সে সুখে থাকবে। এই আশা আর বিশ্বাস নিয়ে সে কাটিয়ে দেবে সারাটি জীবন হয়ত অকৃতদার হয়েই। সেটাই জীবনের সত্য ও সঙ্গা যে , ‘আমিও ভাল থাকি , তুমিও ভাল থাক , আমাদের একসাথে ভাল থাকা হল না’।

নেফারতিতি নেমে যাবে একটু পর। তার প্রকৃত নাম ইলমা। তার বাবা মা ধন্যবাদ দিয়ে গেল , আমি বললাম , ‘ ইলমা অনেক ভাল থাকুক।’ পৃথিবীটা গোল , হয়ত কোন একদিন ইলমার সাথে দেখা হয়ে যাবে। আমি হয়ত তাকে চিনতে পারব না , সেও হয়ত আমাকে চিনতে পারবে না। যাত্রা পথ ফুরিয়ে এসেছে - সামনেই গন্তব্য , উদাস নয়নে তাকিয়ে আছি আর কানে লাগানো হেডফোনে বেজে চলেছে অনুপমের গান “শুণ্য দুহাত আবার চাইছে ফিরিয়ে নিয়ে চল … তিস্তানে” তার তখনই আমি আমি আবিস্কার করলাম আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যে সব কথা সবার সামনে বলা যায় না বা বলতে নেই সেসব কথাই আমি বলে ফেলি প্রকাশ্যে … সব কথা বলতে নেই , বলা যায় না – বুঝে নিতে হয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

রেজোওয়ানা বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন





০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

জুলিয়াস সিজার বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৯

উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন ভাই। বিশেষ করে এই লাইনটি কেন জানি ভীষণ নাড়া দিল

তবুও ছেলেটি শান্তি পাবে এই ভেবে যে হয়ত মেয়েটির ভাল বিয়ে হবে , সে সুখে থাকবে। এই আশা আর বিশ্বাস নিয়ে সে কাটিয়ে দেবে সারাটি জীবন হয়ত অকৃতদার হয়েই। সেটাই জীবনের সত্য ও সঙ্গা যে , ‘আমিও ভাল থাকি , তুমিও ভাল থাক , আমাদের একসাথে ভাল থাকা হল না’।

০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪২

জুলিয়াস সিজার বলেছেন: :)

৩| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৩৮

Shihab Khan বলেছেন: ভাল হয়েছে।

Click This Link

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৮

জুলিয়াস সিজার বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

মুনসী১৬১২ বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা........

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৮

জুলিয়াস সিজার বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১৯

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: অনেকেই হাসি মুখের অন্তরালে গুমরে উঠে।হয়ত সময়ের দৌড়ে সে হেরে যাবে , তবুও ছেলেটি শান্তি পাবে এই ভেবে যে হয়ত মেয়েটির ভাল বিয়ে হবে , সে সুখে থাকবে। এই আশা আর বিশ্বাস নিয়ে সে কাটিয়ে দেবে সারাটি জীবন হয়ত অকৃতদার হয়েই। সেটাই জীবনের সত্য ও সঙ্গা যে , ‘আমিও ভাল থাকি , তুমিও ভাল থাক , আমাদের একসাথে ভাল থাকা হল না’।

:(:(:( +++
মন ছুয়ে গেলো!!

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৯

জুলিয়াস সিজার বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.