![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার বাসার সামনেই ছোট ছোট ৪টি টিনসেড ঘর। প্রতিটি ঘরেই স্বামী স্ত্রীর সাথে এক দুটি ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমাদের মতোই জীবিকার তাগিদে একেক জায়গা থেকে চট্টগ্রাম শহরে এসে কোনরকম জীবন যাপন করছে ওরা। প্রতিদিনই কোন না কোন ঘর থেকে ঝগড়ার আওয়াজ আসে। প্রতিদিন অফিসে কিংবা বাসার যেকোন প্রয়োজনে ওদের বাসার সামনে দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। সে কারনে ওদের স্বাভাবিক জীবনযাপন কিংবা হাসি কান্নার সম্মুখীন হতে হয়। বর্ষা সৃজন হওয়ায় প্রতিদিনই ওদের রুমে পানি ঢুকে, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রুমের ভেতরে পানি থাকে। প্রতিদিন পানি পরিস্কার করেই এরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে, পানির বিষয়ে তাদের কোন আফসোস কিংবা অভিযোগ শুনা যায়না কখনো, বরং এটাই নিয়মিত ও স্বাভাবিকই মনে করে ওরা।
জীবন (ছদ্ম নাম) ও সাথী (ছদ্মনাম)র সংসারে ২ বৎসরের একটি মাত্র পুত্র সন্তান। জীবন ভালোবেসে বিয়ে করে সাথীকে। সে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করে। স্বামী স্ত্রী মিলে দোকান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কিনে আনা সহ প্রায় সময়ই জীবন ও সাথীকে হাসিখুশি ও ঝগড়ারত অবস্থায় দেখা যায়।
শুক্রবারে আমার অফিস বন্ধ থাকায় কোথাও বের না হলে সারাদিনই বাসায় থাকি আমি। বিকাল বেলায় বাসায় টিভি দেখছিলাম, এমন সময় প্রচন্ড জোরে চিৎকারের শব্দশুনে রুম থেকে বের হয়ে দেখি আমার পাশের রুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় সাথী। দরজার বাহির থেকে জোরে জোরে চিৎকার করে দরজা খুলতে বলছে জীবন।
সাথীদের পাশের ভাড়াটিয়া থেকে শুনেছি-কি এক বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সাথীর গায়ে হাত তুলে জীবন, এলোপাতাড়ি চর থাপ্পর মারতে থাকে সাথীকে। জীবনের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড়ে এসে আমাদের বিল্ডিং এর দোতলায় উঠে আমার পাশের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ভেতর থেকে সাথী চিৎকার করে বলে-দরজা খুললে আমারে মাইরালাইব, আমি দরজা খুলতাম না”।
আমরা কয়েকজন অনেক বুঝিয়ে জীবনকে চলে যেতে বলি, পরে সাথীকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বললে, সাথী ভেতর থেকে বলে “ঘরে গেলে আমারে মাইরালাইব, আমি যাইতাম না”। তারপর আমাদের বিল্ডিং এর কেয়ারটেকার ও কয়েকজন মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দেয়।
সাথীর বক্তব্য থেকে জানা যায়, প্রায়শই সাথীর গায়ে হাত তুলে জীবন। চাওয়া পাওয়ার সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। এভাবেই চলতে ওদের জীবন।
গত বৃহস্পতিবার অফিস থেকে একটু আগে বের হয়েছি। সাথীদের বাসার সামনে যেতেই দেখি জিন্স প্যান্ট ও শর্ট কামিজ পড়া হাস্যোজ্জ্বল এক মেয়ে। সামনের দিকে ফিরতেই দেখি সাথী। আমিতো অবাক। যে মেয়েটি প্রায়শই স্বামীর হাতে মার খায় এবং সর্বশেষ বেশ কিছুদিন মনমরা অবস্থায় ছিল সেই মেয়েটির হঠাৎ পোশাক পরিচ্ছদ চালচলনে কত পরিবর্তন? সাথে সাথে মনে মনে হেসে ফেলি আমি।
পরণেই ভাবতে থাকি, এইতো সংসার, কান্না হাসি, ঝগড়াঝাটি হবেই থাকবেই, তাই বলে শখ আহাদ পূরণ হবে না কেন? সংসারের ছোটখাটো মান অভিমানের কারনে কেন থেমে থাকবে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা।
তবে হ্যাঁ পারিবারিক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও মান অভিমানের মাত্রাটা যেন সীমা ছাড়িয়ে না যায়, ছোটখাট বিষয় নিয়ে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা খুবই গর্হিত কাজ। তাছাড়া নিজেদের ছোটখাটো ঝগড়াগুলোকে বড় করে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা নারী নির্যাতনেরই শামিল।
সংসার হোক আনন্দপূর্ণ, কোন ঝড়ই যেন সংসারের উপর আঘাত আনতে না পারে। স্বামী স্ত্রী দুজনেরই এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরস্পরকে বুঝতে হবে, মানতে হবে। তাহলেই সংসার হবে শান্তিপূর্ণ।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫
আলগা কপাল বলেছেন: মনে আছে অনেক কথাই। প্রকাশ করার ভাষা পাচ্ছি না। জীবন সাথী র সংসারে হাসি কান্না থাকবেই। (আর কিছু বলতে পারলাম না)
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩
অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: সাথীদের বাসার সামনে যেতেই দেখি জিন্স প্যান্ট ও শর্ট কামিজ পড়া হাস্যোজ্জ্বল এক মেয়ে। সামনের দিকে ফিরতেই দেখি সাথী
সাথীরা হাস্যোজ্জ্বল থাকুক সবসময়।