![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি বলি মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিকতা নেই, মূল্যবোধের বালাই নেই, অসম জীবন ব্যবস্থায় ব্যস্ত, অতি মাত্রায় স্বার্থপরতা, সমাজের কঠোরতা আর জীবনের নীরেট বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে আমরা নির্বোধ প্রাণীর মত জীবন নামক কাঁচা মাটির রাস্তায় হেটে চলেছি প্রতিনিয়ত, তবে কি ভুল বলা হবে? আসুন কিছু বাস্তবতা দেখে নেই আর নিজেকে বিচার করি...
পূর্ণতা বাবা মা এর একমাত্র মেয়ে, তার বাবার অঢেল টাকা পয়সা, ৭টি বাড়ি আর ১২টি গাড়ির মালিক যদিও পরিবারে তারা তিনজন। রোজার শুরুতেই আল্লাদি মেয়ে বায়না ধরলো সে তার বন্ধুদের সাথে ইফতার পার্টির আয়োজন করবে, তাই টাকা দরকার, মেয়ের মুখে পার্টির কথা সুনতেই বাবা তিন লাখ টাকা বের করে দিল। পূর্ণতা একটি পাঁচ তারা হোটেলে তার দশজন বন্ধুদের নিয়ে ইফতার আর রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের পার্টি উজ্জাপন করলো। বাসায় আসার পর বাবা তার লাডলিকে জিজ্ঞেস করলো কিরে কেমন হলো পার্টি? মেয়ে বললো আর কিছু টাকা বেশি হলে ভাল হতো, বাবা বললো আমাকে বললেইতো হোত। দুদিন পর পূর্ণতা বাবাকে বললো সপিং করবো ঈদের জন্যে টাকা দাও, কত লাগবে বলাতে সে বলল ১০ লাখ দাও, বাবা তার কথামত টাকা দিল। এই টাকা দিয়ে পূর্ণতা জামা কাপড়, জুতা, কিছু কসমেটিকস, ঘড়ি আর তার সাথে মিলিয়ে গহণা কিনল। পূর্ণতার জীবনে সবকিছুতেই পরিপূর্ণ। বলতে ভুলেই গেছি পূর্ণতারা থাকে গুলশান লেক এর পাশে। লেক ভিউ বিশাল টাওয়ার তাদের কিন্তু পূর্ণতা কখনও ছাদে উঠেনা, কেন জানেন? ১০০ গজ প্রসস্ত এই লেকের ওপারেই হল হতদরিদ্র মানুষের বিশাল বসতি আর ছিন্নমুল মানুষের বস্তি। দরিদ্র মানুষ আর দারিদ্রতা দুটোকেই খুব ঘ্রিনা করে পূর্ণতা।
পূর্ণতার একদিনের সপিং এর টাকা দিয়ে ঐ বস্তির ১০০টি পরিবারের খরচ অনায়াসে চলে যাবে পুরো মাস। একদিকে ধনির দুলালির বিলাস বহুল জীবন আর অন্যদিকে ছিন্নমুল মানুষের জীবন বাচিয়ে রাখার যুদ্ধ। নির্মম হলেও সত্যি এই দুমেরুর মানুষের দুরুত্ব মাত্র ১০০ গজ।
মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্ছ বিত্তের সবাইকে দেখা যায় বিভিন্ন নামী দামি রেস্টুরেন্টে দল বেধে ইফতার পার্টি করে আর লাখ লাখ টাকা খরচ করে, আমি আপনিও হয়তো এর ভিতরেই পরি। অথচ শুধু ঢাকাতেই আছে লক্ষাধিক ছিন্নমুল মানুষ যারা দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্যে জীবন সংগ্রামে দিন পার করছে।শুধু রাতে কমলাপুর রেলস্টেশনের দিকেই তাকান, পুরো ঢাকার ছিন্নমুল মানুষের এক স্থির চিত্র ফুটে উঠবে আপনার চোখের সামনে।
নিজেকে একবার জিজ্ঞেস করুন কি করলেন এই সমাজ আর এই জাতির জন্যে?সমাজের এই ছিন্নমুল মানুষ কিন্তু আমাদেরি বৈষম্যের ফসল, ত্রুটিপুর্ণ রাস্ট্র ব্যবস্থারি ফলাফল যার পলশ্রুতিতে জন্ম নেয় দারিদ্রতার কসাঘাতে জর্জরিত এক বিশাল অবহেলিত জনগোস্ঠির।
আমরাকি পারিনা আমাদের ঈদের বাজেট থেকে কিছু টাকা তাদের জন্যে দিতে? আমরাকি পারিনা প্রতিটি পারা মহল্লায় তহবিল সংগ্রহ করে সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফুটাতে? আমাদের একটু প্রচেস্টা অনেক মানুষকে নতুন করে বাঁচার আসা জাগাতে পারে। চলুন আজ থেকেই শুরু করি, আপনি শুরু করুন, আপনাকে দেখে আরো ১০ জন আসবে, দেখবেন আমাদের/আপনাদের চেস্টা বৃথা যাবেনা। আসুন শেষ একবার চেস্টা করি।
বি:দ্র: এখানে যে নাম ব্যবহার করা হয়েছে তা কাল্পনিক।
©somewhere in net ltd.