![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বানান ভুল সহ্য করি না। আমি যদি করি তো ধরিয়ে দেবেন।
হায়রে শিক্ষিত!
আমি থাকি শহরে। আগে মনে করতাম শহরের মানুষ সচেতন। কুসংস্কার, ভ্রান্ত বিশ্বাস শহরবাসীর নাই। কিন্তু আমি ছিলাম পুরোপুরি ভুল।
নেত্রকোনার কোনো এক ছাত্রমেসে থাকি। নাম বলার দরকার নাই। মোটামুটি প্রায় ৩০ জনের মত থাকি। সবাই ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ার বা ডিগ্রির বা কারিগরি শাখার উচ্চ শ্রেণিতে পড়ে। সবাই শিক্ষিত। (অন্তত আমার ধারণা ছিল)। আজ (৩০ শে এপ্রিল ২০১৭) এক সাপুড়ে মেসে ঢুকে গেল। মজা দেখতে সবাই বের হলো। আমিও হলাম। সাপ দেখলাম। লোকটা সাপকে এই সেই অনেক কিছু বলছে। অন্যদের মনে হতে পারে যে সাপটা তার কথা শুনছে। কিন্তু আমি যা দেখলাম তা নিতান্ত একটি বন্দী সাপের মোচড়ামুচড়ি ছাড়া আর কিছুই না। সেই মুহুর্তে লোকটার সঙ্গে আমার কথোপকথনঃ
-সাপের কি কান আছে? আপনি যে এটাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন?
-অবশ্যই কান আছে। তার কান জিহ্বায়। জিহ্বায় দুটো ফুটো আছে তা দিয়ে সাপ শুনে।
-জিহ্বা দিয়ে তো সাপে গন্ধ শুঁকে।
-আপনার কাছে যা মনে হয়।
স্পষ্টত এর বেশি সে কোনো কথা বলে নি। [এখানে একটা কথা বলে নিই। সাপের কান নেই। তাই বলে সাপ বধির না। সাপ বাতাসের শব্দ তরঙ্গ অনুভব করতে পারে। তার মাথার নিচে ভাইব্রেশন বোঝার জন্য বিশেষ হাড় আছে। অর্থাৎ সে কোনো কিছুর কম্পন অনুভব করতে পারে। তাই অনেক দূরের কোনো বস্তুর নড়াচড়াও সাপ সহজেই ধরতে পারে]
সাপের কান গেলো। লোকটা কিছু কিছু আগ্রহী লোকের কাছ থাকে টাকা নিলো। লোকটার বক্তব্যঃ
ভাইজানেরা আপনাদের মনে যদি কোনো গোপন কামনা থাকে তো মানত করে টাকাটা হাতে ধরুন। সাপের যার টাকা পছন্দ হবে তারটা নিেব।
কিছু লোক ধরলো টাকা। দুজন বাদে সবার টাকাই সাপে নিয়ে নিলো। নিলো বলতে সাপে টাকার কাছ দিয়ে ঘুরে গেলো আরকি। তো টাকা দেয়া শেষ হলে লোকটা সবার হাতে একটা করে তাবিজ দিলো। এবং বললো এর মাঝে আল্লাহর বাণী এবং কিছু ঔষধি গাছের মূল,শিকড় আছে। ওই মূহুর্তে তার সঙ্গে আমার কথোপকথনঃ
-এই তাবিজের ভেতর কুরআনের আয়াত আছে তাই না?
-হ্যাঁ, আছে।
-কুরআনের কোনো লিখিত অংশ নিয়ে নাপাক জায়গায় যাওয়া তো নিষেধ। তো এই তাবিজ নিয়ে কেউ টয়লেটে যাবে কিভাবে? প্রত্যেক বার তো তাবিজ খুলে টয়লেটে যাওয়া সম্ভব না। আপনি কি বলেন এ বিষয়ে?
-আপনার কথা ঠিক আছে। তবে যেহেতু তাবিজ বন্ধ থাকে তাই..........
অন্যান্য লোকের অন্যান্য কথায় প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেল। তামাশা দেখতে কয়েকটা মহিলাও এসেছিলো। তারাও তাবিজ বহনকারী। একজনকে লোকটা বললো স্বামীকে সালাম করে [abracadabra]। আবার আমাদের বাকযুদ্ধঃ
-আপনি তাকে তার স্বামীকে সালাম করতে বললেন কেন?
-কেনো? সালাম তো করবেই। স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত।
-নবীজির তো একাধিক স্ত্রী ছিলো। তাদের বেহেস্ত নিশ্চই নবীজির পায়ের নিচে?
-অবশ্যই।
-আপনি কি
আমাকে এমন কোনো হাদিস/প্রমাণ দেখাতে পারবেন যে নবীজির কোনো স্ত্রী তার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছে?
-(নিরুত্তর)
-আপনি কেন ওই মহিলাকে এই নির্দেশ দিলেন?
-(নিরুত্তর)
-কি হলো?
-(জনৈক) সে উত্তরটা জানে না।
-(আমি বললাম) আমি যদি কোনো বিষয়ে না জানি তো সেই বিষয় আরেক জনকে বলবো কেন?
এই প্রসঙ্গটাও গেলো চাপা পড়ে।
আমি এতগুলো প্রশ্ন করলাম কোনো প্রশ্নরই সে কোনো উত্তর দিলো না।
একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী (২০১৭ সালের। এখন পরীক্ষা দিচ্ছে।) ২০+১৩০ টাকা দিয়ে তাবিজটা নিলো। সাপ যাদের হাতে নামে নি তাদের তাবিজ লোকটা ফিরিয়ে নিলো। এভাবে লোকটা বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে গেলো।
আমি আরো কিছু প্রশ্ন করেছিলাম যার কোনো সদুত্তর লোকটা দিতে পারে নি। কিন্তু পাবলিকের আমার কথায় কিছু আসলো গেলো না। তাদের তাবিজ তারা ঠিকই নিলো।
আমি আর বেশি কিছু বললাম না। পাবলিক আমার কথাগুলোতে কোনো প্রকার সমর্থন প্রদান করেনি। তাই আমি পিছু হটে এলাম। কারণ বিনামূল্যে পাবলিকের মাইর কেউ খেতে চায় না। তার উপর আমার যে স্বাস্থ্য!
আমরা যদি এখনো সাপের তাবিজে বিশ্বাস করি তো.......... কি হবে?
উত্তর হচ্ছে কিছুই না।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: আর ভাই! লজ্জা দিবেন না। দেশের কলেজ ছাত্রগুলো তাবিজ নেয়া আরম্ভ করে তো..........
অযথা প্যাঁচালে লাভ নেই। যাইহোক, আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩
আলগা কপাল বলেছেন: এসব ভণ্ডামি এখনও অনেক আছে। সাধারণ পাবলিকের দুর্বল মনই এদের ব্যবসার মূল। পাবলিকের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এসব দূর হবে না।
ইঁদুর ভাইয়ের পরামর্শটা মেনে চলতে চেষ্টা করবেন। স্থান কাল না বুঝে জ্ঞান দিতে গেলে মাইর খেতে পারেন।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: হ্যাঁ ভাই, নিজের চোখে দেখলাম কেমন বাটপার। তবে ভুলভাল কিছু শুনলে মাথা ঠিক থাকে না। তাই ইঁদুর ভাইয়ের পরামর্শ যে সবসময় মেনে চলতে পারবো তা মনে হয় না।
৩| ০১ লা মে, ২০১৭ সকাল ১০:১৫
অপ্সরা বলেছেন: হা হা প্রথমে পোস্ট পড়ে মজা পাচ্ছিলাম। তারপর ইঁদুরভাইয়ার কথা শুনে আরও হাসলাম। সাপের গন্ধ পেয়ে কোথায় ইঁদুর পালাবে তা না ভাইয়া চলেই এলো তোমার পোস্টে ভাইয়া!!!!!!
যাইহোক প্রতিবাদে পাবলিকের মাইরের সম্ভাবনা থাকলেও দু একজন প্রতিবাদী আসলেও দরকার। নইলে আজ যতটুকুও মানুষের মাঝে সত্যিটাকে বাছ বিচারের ক্ষমতা জন্মেছে তাও জন্মাবেনা আরও শত কোটি বছরেও।
০২ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১:১২
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: প্রতিবাদী দরকার তা ঠিক। ফেসবুকে বাংলা ভাষার অপব্যবহার নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে "পণ্ডিত" হয়ে গেছি। ইংরেজি বর্ণমালায় বাংলা লেখার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকের রোষের শিকার হয়েছি। কয়েকজন বন্ধুর সাথে সম্পর্ক চাঙ্গে উঠেছে। আর কত?
আপনাকে ধন্যবাদ আমার ব্লগে আসার জন্য।
৪| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ৮:১৭
হাফিজ রাহমান বলেছেন: বেশ চমৎকার পোষ্ট। এক পৃথিবী ধন্যবাদ আপনাকে। সত্য কথা বলতেই হবে। এর জন্য ভয় পেলে তো চলবে না। ভয় পেলে তো দায়িত্ব মুক্তি হবে না। তাই এসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠুন সদা সর্বদা। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
০২ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১:১৩
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ উৎসাহ দেয়ার জন্য
৫| ০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:০৮
অপ্সরা বলেছেন: হা হা আর কত আর ভাইয়া!!!
যত দিন মনে হবে তুমিই ঠিক ততদিন!!!!
এরপর নিজেই বুঝবে বলবে কি বলবে না আর কোথায়ই বা বলবে আর কোথায়ই বা না!!!!!!!!
ততদিনের জন্য শুভকামনা !!
০৩ রা মে, ২০১৭ রাত ১২:১৫
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: তা ঠিক। আমার চারপাশের মানুষ যখন রূপকথা বলতে শুরু করে তখন ঠিক থাকতে পারি না।
ধন্যবাদ বোন অপ্সরা।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৬
ধানক্ষেতের ইঁদুর বলেছেন: হা হা হা। আপনি দেখি প্রতিবাদী হিরো। বেশি সাহস দেখাতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন। সুতরাং সাবধান।