![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"বিশ্বাসের তাঁতে আজ আবার বুনতে চাই জীবনের দগ্ধ মুসলিন "
জামায়াতে ইসলামীর নেতা যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা চালিয়েছে জামাত-শিবিরের নেতা কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রায়ের আগে ও পরে রাজধানীসহ ১৫ জেলায় তাঁরা তাণ্ডব শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এতে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শ ব্যক্তি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত-শিবির। সেখানে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের দুই কর্মীও নিহত হন। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় নিহত হয়েছেন জামায়াত-শিবিরের চার কর্মীসহ পাঁচজন। ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ছাত্রদল, যুবদল ও ছাত্রশিবিরের তিন কর্মীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। সাতক্ষীরায় সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন জামায়াত-শিবিরের চার নেতা-কর্মী এবং জামায়াত-শিবিরের হামলায় মারা গেছেন ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় নিহত হয়েছে এক কলেজছাত্র ও এক কিশোর। দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে নিহত হয়েছেন একজন। নাটোরের লালপুরে আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে শিবির। কক্সবাজার সদর ও পেকুয়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হয়েছেন এক মাদ্রাসাছাত্রসহ দুজন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সংঘর্ষে পুলিশের এক কনস্টেবল ও শিবিরের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ হয়ে দুজন মারা গেছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় নিহত হয়েছেন এক নির্মাণশ্রমিক। নোয়াখালীতে গুলিতে নিহত হয়েছেন দুইজন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গুলিতে নিহত হয়েছেন শিবিরের এক কর্মী। এ ছাড়া সেখানে ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে এক প্রকৌশলীকে হত্যা করে জামায়াত-শিবির। বগুড়ায় নিহত একজন।
এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুরে ককটেল বিস্ফোরণে একজন এবং রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে শিবিরের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
রংপুর: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বেলা ১১টা থেকে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পূর্ব দিকে বাজারের পাশে সমবেত হতে শুরু করেন জামায়াত-শিবিরের শত শত কর্মী। তাঁদের হাতে ছিল লাঠিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা সড়কের পশ্চিম দিকে অবস্থান নেন। সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই পৌনে দুইটার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মহাসড়কে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া করে। বেলা তিনটায় তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুই দিক থেকে পুলিশ-বিজিবির ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালান। ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপের জবাবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জামায়াত-শিবিরের তিনজন। এঁদের মধ্যে মিঠাপুকুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের সাহেব মিয়া (৪৫) ও একই উপজেলার মির্জাপুরের বৈরাতি এলাকার মশিউর রহমান (২৫) মারা যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মাহমুদুল হাসান (২৫) নামের জামায়াতের অপর কর্মী।
সংঘর্ষে আহত দুই পুলিশ সদস্যসহ জামায়াত-শিবিরের সাতজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৩ জন। পরে ইমাদপুর ইউনিয়নের মহুরীপাড়া গ্রামের আশিকুর (২৫), একজন অজ্ঞাতনামা (৪০) মারা যান।
গাইবান্ধা: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল চারটার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে স্টেশনের টিকিট, নগদ টাকা ও আসবাব পুড়ে যায়। পরে তাঁরা সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলপথে রেললাইন তুলে ফেলেন। ফলে এই রুটে চার ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়। তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে তদন্ত কেন্দ্রের কার্যালয় ঘিরে পুলিশকে পেটাতে থাকেন। এতে তিনজন কনস্টেবলসহ পাঁচজন নিহত হন। আহত হন আর তিন কনস্টেবল।
নিহতরা হলেন কনস্টেবল বাবলু মিয়া, হযরত আলী ও মো. নাজিম। আহত তিন কনস্টেবলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত অপর দুজন জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলে জানিয়েছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর আহমেদ। তবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।
নোয়াখালী: বেলা দুইটায় জামায়াত-শিবিরের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের আশপাশে হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে হামলা শুরু করে। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রাজগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী ও আলমপুর গ্রামের মোহাম্মদ উল্লার ছেলে মো. লিটন (২৫) নিহত হন।
একই সময়ে জেলা শহরের দত্তেরহাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হয়েছেন খোকন (২৫) নামের এক যুবক।
ঠাকুরগাঁও: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়িয়াহাট এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল বের করেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। একপর্যায়ে বাজারের দোকানপাট ও বসতবাড়ি ও বিভিন্ন অফিসে হামলা চালানো হয়। দুপুর আড়াইটায় পুলিশ-বিজিবি এলাকায় গিয়ে ফাঁকা রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে জামায়াত-শিবির পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ-বিজিবি এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসে। এ সময় গুলিতে চারজন নিহত হন। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার গড়েয়া গোপালপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে মনির উদ্দীন (১৮), গড়েয়া হাটের মোটরমিস্ত্রি নিরঞ্জন মিঠুন (২৬) পুরাতন গড়েয়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. ফিরোজ (২৪) ও চোঙ্গাখাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রুবেল (১৪)।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, নিহত মনির ছাত্রদল, ফিরোজ যুবদল ও রুবেল শিবিরের কর্মী। আর মিঠুন সাধারণ পথচারী।
সাতক্ষীরা: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই মাইকে ঘোষণা দিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত কর্মীদের সাতক্ষীরা শহরের কদমতলা এলাকায় জড়ো হতে আহ্বান জানানো হয়। বেলা তিনটার দিকে ইঞ্জিন-ভ্যান, নছিমন-করিমনযোগে জামায়াতের কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে কদমতলা এলাকায় অবস্থান নেন। তাঁরা সদর উপজেলা জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন রাস্তার মোড়ে সমাবেশ করেন। এ সময় কদমতলা মোড়ে কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও পরে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সামনে চার-পাঁচটি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়। সার্কিট হাউস মোড়ে পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা কয়েক শ গুলি, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেন।
গুলিতে সাতক্ষীরা সদরের খানপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম (২২) ও হরিশপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন (১৭), বেলেডাঙ্গা গ্রামের আবুল হাসান (২০), পায়রাডাঙ্গা এলাকার শাহীন হোসেন (২৪) নিহত হন। এঁরা দলীয় কর্মী বলে দাবি করেছে জামায়াত।
বিকেল পাঁচটার দিকে কদমতলা এলাকায় সাতক্ষীরা সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে ওই কলেজের প্রভাষক মামুনুর রশিদের (৩০) বাড়িতে হামলা করা হয়। এতে মামুনুর গুরুতর আহত হলে চিকিৎসার জন্য খুলনায় নেওয়ার পথে রাত আটটার দিকে তিনি মারা যান।
সিরাজগঞ্জ: বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার চণ্ডীদাসগাঁতী এলাকায় সিরাজগঞ্জ-নলকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশ শতাধিক কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এখানে জামায়াত-শিবিরের ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ মুক্তার হোসেনকে (১৭) শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা দেড়টার দিকে মারা যায় রুহুল আমিন (১৬)। গুলিবিদ্ধ শফিউল নামের অপর একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।
নিহত মুক্তার শিয়ালকোল ইউনিয়নের রাজাখারচর গ্রামের আলমগীর খানের ছেলে। সে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র। আর রুহুল আমিন সদর উপজেলার চণ্ডীদাসগাঁতী গ্রামের জলিল শেখের ছেলে।
মুক্তার ও রুহুল দুজনই ছাত্রশিবিরের কর্মী বলে দাবি করেছেন জামায়াতের জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম।
বগুড়া: শহরতলির দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের চৈতন্যপুর এলাকায় বিকেলে জামায়াত-শিবির পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ছয় পুলিশকে আহত ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। এরপর র্যাব-পুলিশ ও বিজিবির এক যৌথ দল সন্ধ্যায় দ্বিতীয় বাইপাস সড়কে টহল দিচ্ছিল। টহল দলটি শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ এলাকায় পৌঁছার পর সেখানে দ্বিতীয় বাইপাস সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে তারা। এ সময় সংঘর্ষ বেধে গেলে র্যাব-পুলিশও গুলি ছোড়ে। এতে সুজাবাদ গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক ছবেদ আলী গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
দিনাজপুর: প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর একটার দিকে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে দিনাজপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কে মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিল থেকে চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু হান্নানের কাপড়ের দোকান, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আম্বি আহমেদের সারের দোকান এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আলমের জুতার দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ও বিজিবি শতাধিক গুলি ও ৫০টির বেশি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ফয়জার রহমান (৩০)। তিনি চিরিরবন্দর উপজেলার নশরৎপুর গ্রামের আবদুল খলিলের ছেলে।
নাটোর: নাটোর-পাবনা মহাসড়কে লালপুর উপজেলার কদিমচিলান নামক স্থানে শিবিরের কর্মীরা টহল পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পিকআপ থেকে নেমে পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় শিবিরের কর্মীরা পুলিশের একটি শটগান ও একটি রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ সদস্যদের বেদম লাঠিপেটা করেন। এতে সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর শিবিরের কর্মীরা কদিমচিলান গ্রামের দোলু ডাক্তারের বাড়িতে হামলা করে তাঁর ছেলে খায়রুল ইসলামকে (৪০) পিটিয়ে হত্যা করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে কদিমচিলান গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: বিকেল পাঁচটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পিটিআই সড়কে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিতে শিবিরের এক কর্মী নিহত হন। বিকেলে শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ এলাকায় নির্মাণাধীন পর্যটন মোটেলে আগুন দেয় জামায়াত-শিবির। এ সময় তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক প্রকৌশলীকে নিচে ফেলে দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী। তিনি পর্যটন করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী।
চট্টগ্রাম: জামায়াত-শিবিরের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী মুখে কালো কাপড় বেঁধে লোহাগাড়া উপজেলার বটতলী স্টেশনে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় দূরপাল্লার গাড়িসহ ব্যাংক এশিয়া, ইউসিবিএল, সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি হাসপাতাল ও স্থানীয় বিপণিবিতানে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক গুলি ছোড়ে। গুলিতে মিছবাহ উদ্দিন নামের শিবিরের এক কর্মী নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন আরও আটজন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান পুলিশ কনস্টেবল মো. তারেক। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণজলদি ধোপাপাড়ায় দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে আহত হয়ে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন মারা যান। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন দয়ালহরি (৪০), অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পেকুয়া উপজেলা সদরের চৌমুহনী বাজারে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে দোকানপাটে ভাঙচুর চালান। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় সাজ্জাদ হোসেন (১৭)।
বেলা আড়াইটার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও বাজারে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পুলিশ বাধা দেন। তখন নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঈদগাঁও এলাকার সোহেল (১৮), ফাঁসিয়াখালির শফি আলম (২০) ও বোয়ালখালীর মো. রশিদকে (৩৫) কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় মারা যান রশিদ।
মৌলভীবাজার: বেলা সাড়ে তিনটায় জামায়াত-শিবির বড়লেখা উপজেলার রতুলি ও কাঁঠালতলি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার একটি করাতকলে অগ্নিসংযোগসহ সাতটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা কাঁঠালতলি বাজারসংলগ্ন এলাকায় পুলিশকে ঘিরে ফেললে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান লোকমান নামের একজন। তিনি বড়লেখা উপজেলার পূর্ব দক্ষিণভাগ গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
বাঘা: রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে গতকাল আমিরুল ইসলাম নামের শিবিরের একজন কর্মী নিহত হন। বিকেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী মুক্তার হোসেনকে জখম করেন। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিবিরের কর্মী আমিরুল নিহত হন।
মিরপুর: গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে কিয়াংসি চায়নিজ রেস্তোরাঁর সামনে পর পর আটটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ককটেলের আঘাতে মোসলেম উদ্দিন (৭০) নামের এক বৃদ্ধ গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ছয়নীগালায়। তিনি পেশায় কৃষক।
সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে মিরপুর ১ নম্বর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেমে থেমে অন্তত ২৫টি ককটেল-বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে মিরপুরে সরকারি বাঙলা কলেজসংলগ্ন টোলারবাগ গলি থেকে একদল দুর্বৃত্ত প্রধান সড়কে এসে পর পর আটটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা হাতে রাস্তায় নেমে এলে একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে গুলি চালায়। এতে কয়েকজন আহত হন।
প্রায় একই সময় কল্যাণপুর নতুনবাজার গার্লস কলেজের সামনে দুর্বৃত্তরা হঠাৎ আটটির মতো ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। স্থানীয়রা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পল্লবীর কালসি সড়কে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মিছিল বের করেন। এ মিছিল থেকে অন্তত ১০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় শটগানের গুলি ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শেওড়াপাড়া এলাকার রোকেয়া সরণিতে ৮-১০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় শিবির কমী্রা। পুলিশ এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
রাত পৌনে আটটার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর ফলপট্টির মোড়ে স্থাপিত গণজাগরণ মঞ্চে ঢিল ছোড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এরপর লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় বের হয়।
.
২| ০১ লা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
jotejoy বলেছেন: আপনার সাথে আমি একমত।সহিংসতা বন্ধে সরকারের আশু পদক্ষেপ দরকার।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:০১
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত আর জামাতের ভ্রান্ত নীতি এত গুলু মানুষ মৃত্যুর কারন ।
আমরা আর এমন সহিংসতা দেখতে চাইনা