নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অসম পাহাড়ে সরলভাবে বেড়ে উঠা ছেলে। সরলতায় যেমন আমার ভালবাসা তেমনি আমার পাহাড়ের অধিকারেও আমি ক্ষিপ্র।

জয় মারমা

আমি অসম পাহাড়ে সরলভাবে বেড়ে উঠা ছেলে।

জয় মারমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদিবাসীদের মাতৃভাষা চর্চা ও উন্নয়নে করণীয়

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৫



আদিবাসীদের মাতৃভাষার পক্ষে জাতীয়ভাবেও অনেক শক্তিশালী যুক্তি ও আইনগত ভিত্তি ইতোমধ্যে তৈরী হয়েছে। এখন প্রয়োজন এগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। যেমন, ২০১০ সালে গৃহীত জাতীয় শিক্ষানীতি। উক্ত শিক্ষানীতিতেও আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষা শিক্ষা প্রদান ও প্রাথমিক স্তর হতে ঝরে পড়া রোধ করার জন্যে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন-

১. দেশের আদিবাসীসহ সকল ক্ষুদ্রজাতিসত্তার ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো (জাতীয় শিক্ষানীতিঃ ২৩ নং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও নীতি);
২. প্রাথমিক স্তরে আদিবাসীসহ সকল ক্ষুদ্রজাতিসত্তার জন্যে “স্ব স্ব মাতৃভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা” (আদিবাসী শিশু: অনুচ্ছেদ ১৮);
৩. আদিবাসী প্রান্তিক শিশুদের জন্যে বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা করা (আদিবাসী শিশু: অনুচ্ছেদ ১৯);
৪. প্রাথমিক স্তরে আদিবাসী শিশুদের ঝরে পড়া রোধ করার লক্ষ্যে:
(ক) আদিবাসী শিশুরা যাতে নিজেদের ভাষা শিখতে পারে সেজন্যে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ ও পাঠ্যপুস্তকের ব্যবস্থা করা;
(খ) আদিবাসী এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা; এবং
(গ) যেসব আদিবাসী এলাকায় হালকা জনবসতি রয়েছে, প্রয়োজন হলে সেসব এলাকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা (আদিবাসী শিশু: অনুচ্ছেদ ২০)।


জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ উল্লেখিত উপরের সুপারিশগুলো কে বাস্তবায়ন করবে ? এসব সুপারিশ এমনি এমনি বাস্তবায়ন হবে না। আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান যেমন পার্বত্য মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলাপরিষদগুলোর কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান কী আমাদের পাহাড়ের জনগণের জন্যে কোন কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পেরেছে বা পারছে ?

পার্বত্য মন্ত্রণালয় পাহাড়ের জনগণের আশা আকাংখা পূরণ করতে পারছে না। যাদের পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো তাদের অনেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের নাম দিয়েছেন, “মন্ত্রণালয় নয়, যন্ত্রণালয়”। আর পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে, “জ্বালা পরিষদ”। “জ্বালা পরিষদ” পরিষদ হওয়ার অনেক কারণ আছে। জেলা পরিষদের প্রাথমিক শিক্ষা দেখাশুনা করার কথা। পার্বত্য জেলাগুলোতে যাতে গুণগত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার কথা। কিন্তু নিয়োগ নিয়ে কী হচ্ছে ? শিক্ষক পদের জন্যে এখন চাকরী প্রার্থীদের ২–৪ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পেতে হচ্ছে। মেধার পরিবর্তে টাকা প্রাধান্য পাচ্ছে। মাতৃভাষা তো দূরের কথা, মেধাহীন শিক্ষক দিয়ে আমাদের আদিবাসীদের জাতির ভবিষ্যত কী হবে ? ঘুষ দিয়ে চাকরী পাওয়ার জন্যে কী জেলা পরিষদ চেয়েছিলাম ? জেলা পরিষদসমূহের ‘জ্বালা’ কে দূর করবে ? আমাদের নেতারা কিংবা ‘সুশীল’ সমাজের প্রতিনিধিরা জেলা পরিষদসমূহের এসব ‘জ্বালা’র ব্যাপারে কোন চিন্তা করেন কী ? জেএসএস-ইউপিডিএফ নেতারাও মাতৃভাষা চালুর ব্যাপারে দাবী তোলেন, শোভাযাত্রা করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে জেলা পরিষদসমূহের ‘জ্বালা’ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যে তারাও কী কখনো ভাবেন ? কোন কঠোর কর্মসূচী নেবেন কী ?

আদিবাসীদের মাতৃভাষা চর্চা ও রক্ষার ব্যাপারে অনেক তত্তকথা বলা যায়। তবে আমি মনে করি, আমাদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন পার্বত্য মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলাপরিষদগুলো যতদিন পর্যন্ত কার্যকর করা যাবে না, ততদিন পর্যন্ত আমাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। ‘যন্ত্রণালয়’ ও ‘জ্বালা পরিষদ’ হয়ে তারা যন্ত্রণা ও জ্বালা দিয়ে যাবে। তাই এ মুহুর্তে আন্দোলন হওয়া উচিত ‘যন্ত্রণালয়’কে কার্যকর মন্ত্রণালয়ে পরিণত করা, আর তিন ‘জ্বালা পরিষদের’ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে প্রকৃত জেলা পরিষদে পরিণত করা। সেই সাথে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মেধাবী নেতৃত্বও প্রয়োজন। তা না হলে আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবী কখনো পূরন হবে না।

(তথ্যঃ লেখার সকল তথ্য বিভিন্ন মাধ্যম হতে সংগৃহিত)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.