![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দয়াকরে, আমার পোষ্টা সর্ম্পূন পড়ে তার পর মন্তব্য করুন।'জশনে'শব্দের অর্থ খুশি বা আনন্দ 'জুলুস'শব্দটি 'জলসা' শব্দের বহুবচন এর অর্থ হলো বসা বা উপবেশন । নামায আল্লাহর জিকিরের জলসা , একই স্থানে দাঁড়িয়ে বসে তা সম্পন্ন করা হয় ।হজ্ব হলো আল্লাহর জিকিরের জুলুস, যা এক বৈঠকে সম্পন্ন করা যায় না বরং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ফিয়ে সম্পন্ন করতে হয় । পবিত্র কোরআন থেকে প্রমান পাওয়া যায় যে, "তাবুতে সকীনা " ফেরেশতাগন জুলুস সহকারে নিয়ে এসেছিলেন । "মিলাদুন্নবী" অর্থ হলো নূরনবী সাল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর জম্ম কাহিনী ও তত্সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী আলোচনা করা । সুতরাং "জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম " মানে প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর শুভাগমন উপলক্ষে মিছিল সহকারে আনন্দ প্রকাশ করা । একটা কথা বলে রাকি , এটা একটা শরীয়ত সম্মত অনুষ্ঠান । হযরত নবী করীম সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি আন্তরিক মুহব্বতের বহিঃ প্রকাশের উত্তম ব্যবস্থা । কোরান হাদীসে এর বৈধতা ও ভিত্তির অসংখ্য প্রমান রয়েছে । সহীহ মুসলিম শরীফের ২য় খন্ডের "হাদীসুল হিজরত" অধ্যায়ে হযরত বারাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা আলা আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা শরীফ ত্যাগ করে মদীনা শরীফে প্রবেশ করলেন , তখন মদীনা শরীফের নারী পুরুষ ঘরের ছাদের উপর আরোহন করে প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কে মদীনা শরীফের খোশ আমদেদ জানান । সকলেই "ইয়া মুহাম্মদ , ইয়া রাসূলাল্লাহ শ্লোগান দিতে থাকেন । মদীনার আবাল বৃদ্ধ বনিতার কন্ঠে গাওয়া " তালাআল বাদরু আলাইনা মিন ছানিয়াতিল ওয়াদায়ি , ও য়াজাবাশ শুকরু আলাইনা মা দাআ লিল্লাহি দায়ি " এ থেকে স্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হয় যে , সাহাবায়ে কেরাম হুজুর সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর শুভাগমনে জুলুস{মিছিল} আকারে "ইয়া রাসূলাল্লাহ" ধ্বনিতে আকাশে বাতাসে মুখরিত করে তোলেন । এই জন্যই আল্লাহ ও নবী প্রেমিক মুসলমান গন সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ করে ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর খুশিতে বিভোর হয়ে মিছিল সহকারে আনন্দ উত্সব করে থাকে এবং রাসূলাল্লাহ সহ সালাত সালাম ও নবী প্রশস্তিমূলক নানা কসিদা কবিতা ও নাতে সূর লহরিতে আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত করে তোলে । এখানে পার্থক্য হলো যে , সাহাবায়ে কেরাম নূরনবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মক্কা শরীফ থেকে মদীনা শরীফে প্রবেশ কালে ইয়া রসূলাল্লাহ ধ্বনিতে বিভোর হয়ে জুলুস বা মিছিল করেছেন এবং আমরা রবিউল আওয়াল চাঁদের বিভিন্ন তারিখে রাহমাতুলালিল আলামীন সল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর এই পৃথিবীতে আগমনের খুশীতে আত্নহারা হয়ে জুলুসের মাধ্যমে আনন্দ উত্সব করে ইয়া রসূলাল্লাহ ধ্বনি দিয়ে থাকি। যা নিম্নের আয়াত শরীফের নির্দেশ মোতাবেক উত্তম আমলের অন্তর্ভূক্ত । আল্লাহ কালামে পাকে ঘোষণা করেন : "কুল বিফাদলিল্লাহি ওয়া বিরাহমাতিহী ফাবিযালিকা ফালাইয়াফরাহু " অর্থাত্ , হে নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ! আপনি উম্মতগণকে বলে দিন ,আল্লাহর ফজল এবং তাঁর রহম প্রাপ্তিতে তারা যেন খুশি প্রকাশ করে । প্রকাশ থাকে যে , রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর ফজল তথা অনুগ্রহ এবং রহমত উভয়ই । কেননা কালামে পাকে রয়েছে " লাক্বাদ মান্নাল্লাহু আলাল মুমিনীনা ইয বা'আছা ফিহিম রসূলা " অর্থাত্ "নশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মুমিনদের ওপর বড়ই অনুগ্রহ বা ফজল করেছেন যে , তাদের মধ্যে একজন সম্মানিত রসূল প্রেরণ করেছেন "। অন্য আয়াতে ঘোষিত হয়েছে " ওয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রহমাতাল্লিল আলামীন " অর্থাত্ ' হে প্রিয় রসূল সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ! আমি আপনাকে সমগ্র আলমের জন্য রহমত করে পাঠিয়েছি ।উপরে বর্ণিত আয়াতদ্বয় দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল রসূল সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ই আল্লাহ তাআলার ফজল ও রহমত । কাজেই দুনিয়াতে তাঁর আগমনের দিনে শরিয়তসম্মত রীতি অনুযায়ী জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পালন করা কালামে পাকের নির্দেশের অন্তর্ভূক্ত । এটা নিঃসন্দেহে বৈধ ও উত্তম কাজ । প্রচলিত নিয়মানুসারে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পালন করা নিন্দনীয় কিংবা বেদআত হতে পারে না । কেননা রসূলে পাক সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন " যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্কৃষ্ট নিয়ম - পদ্ধতি বের করবে এর প্রতিদান তার আমলনামায় লেখা হবে , অথচ অনুসরণকারীদেরও সাওয়াবের কোন অংশ কম হবে না "।(মেশকাত শরীফ) । মোট কথা , ইসলামের মধ্যে যে প্রচলন বা রীতি কোরআন ,সুন্নাহ্ , ইজমা ও ক্বিয়াসের পরিপন্থী হবে না তা কখনো নিন্দনীয় বা বেদআত হতে পারে না [মিরকাত]সুতরাং প্রচলিত জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু তা আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পালন করা কোরআন , সুন্নাহ্ ও ইজমার পরিপন্হী নয় । আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌপিক দান করুক আমিন ।
©somewhere in net ltd.