নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভোরের তারা হয়ে একাকি পথ খুজি

ভোরের তারা

বিদগ্ধ অন্তরে বেদনার্ত আর্তনাদ কাদে। জমানো সুখটুকু নিঃশেষ হয়েছে বহুকাল। ভস্মটুকু তার পড়ে আছে অবহেলায়। কানামাছি দিনগুলো মনে পড়ে, মনে পড়ে অনাবিল সুখগুলো। সেই সব সুখ ধরা দিবেনা হয়তো আর।

ভোরের তারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোড় বাধা ভালবাসার বই

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৩৩





আমার চিন্তা চেতনার জগতে বই এক বিরাট জায়গা নিয়ে আছে। কত কত দিন যে বইয়ের স্বপ্ন ডানায় ভেসে অন্য ভূবনে হারিয়ে গেছি তার ঠিক নেই। একেকটি বই যেন অদেখা একেকটি ভূবন, সেখানে না যেয়েও সেই ভূবনের রঙ, রুপ, মাধূর্য দেখেছি। জীবন চলার পথের কত সুখ, দুঃখ ভালবাসার টানাপোড়েন, কত কি যে জানলাম বইয়ের মাধ্যমে। ধন্য তুমি বই ধন্য।



যদিও এখন আর সেভাবে বই পড়া হয়ে উঠে না। নিজের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ভাবি কিশোর বয়সের সেই বইয়ের নেশা আজ কোথায় হারালো!!! তবুও কিছু কিছু বই আছে যাদের কথা শত ব্যস্ততার মাঝেও মনে পড়ে। জীবনে যাদের এত অবদান সেই বই গুলো নিয়েই ধারাবাহিক ভাবে কিছু বলার আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস:P(সরি লেখাটা একটু বড় হয়ে গেল। দুটো বই নিয়ে করা সমালোচনা এত বড় হওয়াটা ঠিক হয়নি)।



সেবার বরিশালে বেড়াতে গিয়াছিলাম কোন এক পরিচিতের বাড়ীতে। ঢাকায় ফেরার পথে হাতে ধরিয়ে দিল দুটো বই । বইয়ের নাম দেখে মেজাজটা একটু খারাপই হল। কি সব অদ্ভুত নাম "লা নুই বেঙ্গলী" আর "ন হন্যতে"। আমি পড়ি হূমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, সমরেশ........আর এরা এসব কি ছাইপাশ দিয়েছে পড়তে! বই দুটো নাকি এক সাথে জোড়া বেধে পড়তে হয় (লেখক লেখিকা দুইজনে নাকি একে অন্যের প্রতি উত্তরে বই দুটি লিখেছেন)। এই ব্যাপারটাও যথেষ্ট বিরক্তি উৎপাদন করল। আমি পড়ব আমার ইচ্ছে মত, তা না কিসের নাকি জোড়া বেধে এইসব কাইজ্জা ঝগড়ার কাহিনী পড়তে হবে, যত্ত সব ডং! পাঠককে বাধ্য করা হচ্ছে বই দুটো পড়ার জন্যX(। ব্যবসায়িক ফায়দা আরকি!



ঢাকায় ফিরে বই দুটো সুন্দর করে শোকেসে সাজিয়ে রেখেছি । অনেক দিন হয়ে গেছে ছুয়েও দেখিনা। বই গুলো আমার দিকে আশার চোখে চেয়ে থাকে। পরীক্ষা শেষ, পড়ার কিছু নেই দেখে এক দিন বাধ্য হয়ে "লা নুই বেঙ্গলী" পড়া শুরু করলাম। "লা নুই বেঙ্গলীর" অর্থ হচ্ছে বাঙ্গালীর রাত। ফরাসি লেখক মির্চা এলিয়াদ এর রচয়িতা। তিনি তার আত্মজীবনির ছায়াতেই বইটি রচনা করেছেন। কখনও কখনও সত্যের সাথে মিশিয়েছেন ফ্যান্টাসি। না পাওয়ার হাহাকার সেই ফ্যান্টাসির নীচে চাপা পড়ে গেছে, অপ্রাপ্তি গুলো পেয়েছে পূর্নতা। প্রথমে পড়তে ভাল না লাগলেও ধীরে ধীরে কাহিনীর গভীরে ডুবে যেতে লাগলাম। এক সীমাহীন আকর্ষনে তীব্র আবেগে আন্দোলিত হতে লাগলো আমার হৃদয় জানালার কপাট গুলো। বয়স কম ছিল তাই হয়তো আবেগটাও বেশী ছিল।



গল্পের সময়কাল বৃটিশ পিরিয়ড। মির্চা ফ্রান্স থেকে ভারতে এসেছেন ভারতীয় ভাষার উপর জ্ঞান অর্জনের জন্য। গুরু মেনে সে শিষ্যত্ব গ্রহন করে নায়িকা মৈত্রেয়ী দেবীর বাবার। গুরুর বাড়ীতেই শিষ্যের ঠাই হয়। প্রথম প্রথম নিজের সাদা চামড়ার জন্য তার আচরনে অহংকার কাজ করতো। ধীরে ধীরে সেই অহংকারের জায়গা দখল করে তার ভারতীয়দের সাথে মিশে যাবার প্রবনতা। একটা সময় আবিষ্কার করে, সে মৈত্রেয়ীকে ভালবেসে ফেলেছে।



মির্চার কিছু কিছু ভালবাসার নমুনা না বললেই নয়। খাবার টেবিলে মৈত্রেয়ীর উপর অভিমান করে একটার পর একটা ভয়ংকর ঝাল মরিচ চিবিয়ে খাওয়া। ভীনদেশী তরুনের এই কান্ড অবাক করেছে আমাকে। বিদেশীরাতো জানতাম ঝাল সহ্যই করতে পারে না। আমরা বাঙালীরাই যেখানে সবাই ঝাল খেতে পারি না, আর সেতো ইউরোপীয়ান সাদা চামড়া!!!



আরেকটা ঘটনা ছিল এরকম- ওদের ভালবাসাবাসির কথা তখন জানাজানি হয়ে গেছে, গুরু শিষ্যকে নির্দেশ দিল তক্ষুনি তার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে। বেচারা মির্চা অক্ষরে অক্ষরে গুরুর নির্দেশ পালন করল। একটি বারের জন্যও মৈত্রেয়ীর সাথে দেখা করার চেষ্টা করল না। অথচ কি অসম্ভব ভালই না সে বেসেছিল মৈত্রেয়ীকে। যে ধৈর্য্য, সহ্য, ভদ্রতা সে দেখিয়েছে তা বিরল। হতে পারে তখনকার দিনের সমাজ ব্যবস্হা এত নিয়ন্ত্রিত ছিল যা একজন বিদেশীকেও ব্যতিক্রমী হতে দেয়নি। তবুও মানুষ বলে কথা।



মৈত্রেয়ীকে হারিয়ে মির্চা তখন দিশেহারা, পাগল প্রায়। এই সমাজ সংসার কিছুই তাকে ধরে রাখতে পারে না। শান্তির অন্বেষায় সে চলে যায় হিমালয়ে। সেখানে নাগা সন্নাসীদের সাথে ভীড়ে যায়, তাদের মত করে গেরুয়া পোশাক পরে খালি পায়ে ঘুরে বেড়ায়। সেখানে গুহায় বসে আহার নিদ্রা ত্যাগ করে ছয় ছয়টি মাস মৈত্রেয়ীর ধ্যানে কাটিয়ে দেয়। এরপর কিছুদিন যাযাবরের মত এখানে সেখানে ঘুরেফিরে ফিরে যায় ফ্রান্সে। কয়জন প্রেমিক পারে প্রেমিকার জন্য সমাজ সংসার ত্যাগ করে সন্নাসী হয়ে হিমালয়ে চলে যেতে! তাও আবার বিদেশী, যাদের কিনা পারিবারিক মূল্যবোধ স্নেহ ভালবাসার বন্ধন বড় ঠুনকো, নড়বড়ে।



ফ্রান্সে ফিরে ত্যাগ তিতীক্ষা হতাশা আর না পাওয়ার হাহাকার থেকে লিখল "লা নুই বেঙ্গলী" নামক অসাধারন এই বই খানি। তবে বইয়ের সমাপ্তি তিনি খুবই বাজে ভাবে টেনেছেন। পাঠককে অকুল পাথারে ভাসিয়ে দিয়ে হঠাৎ করেই তিনি কাহিনীর সমাপ্তি টানেন। অবশেষে কাহিনীর কি হল না হল পাঠক সেটা জানার আকুলতা নিয়ে কষ্ট পেতে থাকে। মির্চা সাহেবের এই দিকটাতে খেয়াল রাখা উচিত ছিল।



এবার অবশিষ্ট কাহিনী জানার তীব্র আকুলতা নিয়ে "ন হন্যতে" নিয়ে বসলাম। "ন হন্যতে" অর্থ হল দেহের ভিতর। বইটির লেখিকা মৈত্রেয়ী দেবী। অবাক হলাম এই ভেবে যে এইটুকু একটা কিশোরী মেয়ে ভালবাসার মানুষের জন্য বই লিখে ফেলেছে!!!প্রথম কয়েক পাতা পড়ে খেলাম বিরাট ধাক্কা। এই মৈত্রেয়ী দেবী বয়স্ক একজন মহিলা, যার কিনা স্বামী,পুত্র,পুত্র বধু,নাতি আছে। নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করতে লাগলাম এই মৈত্রেয়ী দেবীই কি মির্চা এলিয়াদের সেই মৈত্রেয়ী দেবী?



অস্বীকার করব না প্রথমে বইটা আমাকে সেভাবে টানলো না তবুও জোর করে পড়তে লাগলাম। নিঃসন্দেহে তিনি অনেক উচচমার্গীয় লেখিকা। তার চিন্তা ভাবনার বেশীর ভাগই আমার মাথার উপর দিয়ে গেল। এই সব গুরু গম্ভীর কথা পড়তে বেশ বিরক্ত লাগছিল। ঐ ছেলে মানুষী বয়সে হালকা ধরনের লেখা গুলোই যে ভাল লাগতো। যাই হোক পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে দিয়ে পড়তে লাগলাম। শেষে এসে গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়লাম বই খানির সাথে।



এই লেখিকার জীবন বোধ, দৃষ্টিভঙ্গি মির্চার তুলনায় নিঃসন্দেহে অনেক গভীর। তার লেখায় উঠে এসেছে তৎকালিন ইংরেজ শাসিত ভারতের সমাজ ব্যবস্হা, জীবন যাপন। তিনি ছিলেন উচ্চ শিক্ষীতা। সেই বৃটিশ পিরিয়ডে তার পরিবারের শিক্ষা প্রীতী চোখে পড়ার মত। প্রথম প্রথম মৈত্রেয়ী দেবীকে আমার বেশ শক্ত প্রকৃতির মহিলা বলে মনে হয়েছে। আসলে মির্চা বই লিখেছিলেন তার যুবা বয়সে আর মৈত্রেয়ী দেবী লিখেছেন তার জীবন সায়াহ্নে এসে। আবেগের পরিনতির পার্থক্যতো থাকবেই। তবে মৈত্রেয়ী দেবী কোন ফ্যান্টাসির আশ্রয় নেননি, যা সত্য তাই তুলে ধরেছেন।



এটা ঠিক এই বই তিনি লিখেছিলেন অনেকটা বাধ্য হয়েই। মির্চা বই লেখার পর তা নিয়ে হুলুস্হুল পড়ে যায় ফ্রান্সে। সেই উত্তেজনার ধাক্কা ভারতে এসেও লাগে। ভারতীয় শিক্ষিত সমাজও মির্চার লিখিত বইয়ের সাথে সমান ভাবে অভ্যস্ত হয়ে উঠে। তাইতো মৈত্রেয়ী দেবী যেখানেই গেছেন সমালোচনার তীর তার গায়ে এসে লেগেছে। লোকজন অর্থ পূর্ন হাসি হেসেছে। কয়েক জন ফরাসিতো বলেই ফেলল "তুমি আমাদের দেশের জাতীয় নায়িকা"। তৎকালিন রক্ষনশীল সমাজে একজন বিবাহিতা মেয়ের এই ধরনের পরিস্হিতিতে পড়া সত্যিই পীড়াদায়ক। অবশেষে তিনি মির্চার বইটি যোগাড় করে পড়লেন। পড়ে বুঝলেন তিনি মির্চার ফ্যান্টাসির জালে আটকে গেছেন, তার চরিত্র হনন হয়েছে। সব মিলিয়ে তাই বাধ্য হলেন "ন হন্যতে"র মাধ্যমে আসল ঘটনাটি তুলে ধরতে।



মৈত্রেয়ী দেবীর চোখ দিয়ে তার প্রেমকে যতটুকু উপলব্দী করলাম তা হল তার কৈশরের প্রথম প্রেম ছিল মির্চা। তাই অন্য রকম এক আবেগ সেখানে কাজ করেছিল। মির্চা যতটা গভীর প্রনয়ের কথা বলেছেন আসলে তার ছিটেফোটাও ছিল না তাদের প্রেমে। তাদের ভালবাসা ছিল সম্পূর্ন ঐশ্বরিক। মির্চাকে বাড়ী থেকে বের করে দেবার পর স্বাভাবিক ভাবেই মৈত্রেয়ী দেবী ভীষন ভাবে ভেঙে পড়েন।



মেয়েকে স্বাভাবিক করতে মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা পুরো পরিবার নিয়ে বেড়াতে যান হিমালয়ের কোন এক নয়নাভিরাম স্হানে। কাকতালীয় ভাবে এই জায়গাটি হল সেই জায়গা যেখানে মির্চা মৈত্রেয়ীর ধ্যানে গুহায় ছয় ছয়টি মাস কাটিয়ে দিয়েছিলেন। মৈত্রেয়ী দেবী একে ওকে জিজ্ঞাসা করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেন। সেই গুহাটাতেও গেলেন যেখানে মির্চা এত গুলো দিন কাটিয়েছেন। আমার মনে আশার সঞ্চার হল এই বুঝি দুজনের দেখা হতে চলেছে। কিন্তু না তেমন কিছুই হল না। উল্টো দুজনের মধ্যে লক্ষ, কোটি যোজন যোজন দূরত্ব তৈরী হয়ে গিয়েছিল। মৈত্রেয়ী দেবী গুহায় গেলেন ঠিকই কিন্তু সেখানে মির্চার ব্যবহার্য কিছু জিনিস ছাড়া আর কিছুই পেলেন না।



এরপর মৈত্রেয়ী দেবী আরো বেশ কিছু দূর তার পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যান। একটা সময় তার বিয়ের কথাবার্তা চলতে থাকে। মৈত্রেয়ীতো কিছুতেই বিয়ে করবেন না। বইয়ের এখানে একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করেছিল। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ কাহিনীতে এসে পড়লেন। মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা এবং মৈত্রেয়ী দেবী নিজেও রবীন্দ্রনাথের একান্ত ঘনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ মৈত্রেয়ী দেবীকে তুই করে সম্বোধন করতেন। মৈত্রেয়ীর বাবা কবিকে অনুরোধ করলেন মৈত্রেয়ীকে বুঝানোর জন্য। কিন্তু কবি সেই রাস্তায় গেলেন না। জেনে নিলেন মৈত্রেয়ীর ইচ্ছার কথা এবং তাকে তার জ্ঞান,বুদ্ধি বিবেক বিবেচনা ব্যবহার করে চলতে বললেন।



এই সময়টায় মৈত্রেয়ীর এত রাশভারী আদর্শবান বাবা জড়িয়ে পড়েছিলেন অনাকাক্ষিত এক প্রেমের সম্পর্কে। মহিলাটি তখন তার পি এইচ ডি কমপ্লিট করছিলেন। সেই মহিলাই মৈত্রেয়ী আর রবীন্দ্রনাথের কথোপকথন চুরি করে শুনে ফেলেন। এরপর তা লাগিয়ে দেয় জায়গা মত। ফলে মৈত্রেয়ীর বাবা আরো ক্ষেপে যান এবং উঠে পড়ে লাগেন মেয়েকে পাত্রস্হ করতে। অবশেষে মৈত্রেয়ী বাধ্য হলেন বিয়ে করতে। বর হিসেবে যিনি তার জীবনে এলেন তিনি ছিলেন সরকারি চাকুরিজিবী এবং পি এইচ ডি ডিগ্রীধারী। সত্যি বলতে মৈত্রেয়ী দেবী অত্যন্ত ভদ্র, মার্জিত,শান্ত একজন মানুষকে তার জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন। যিনি তাকে ভীষন রকম সম্মান দিয়েছিলেন, দিয়েছিলেন অগাধ ভালোবাসা। ভদ্রলোক কোন দিন মুখ ফুলে একটা কটু কথাও বলেননি, আর ছিলেন মৈত্রেয়ীর প্রতি ভীষন রকম কেয়ারিং। মৈত্রেয়ী দেবীর ভালবাসার ভাগ্য সত্যিই ঈর্ষনীয়।



জীবন চলে যায় জীবনের নিয়মে। স্বামীর বদলির চাকরির সুবাদে ভারতের এখানে সেখানে যাবার অভিজ্ঞতা হয় মৈত্রেয়ী দেবীর। ইংরেজ হেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতের পদের মানুষের সাথে মেলামেশার সুযোগ হয়। ফলে ভাবনা চিন্তার ভান্ডার হয় কানায় কানায় পূর্ন। চিঠি পত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ হোত তাছাড়া রবীন্দ্রনাথ কখনো সখনো কিছুদিনের জন্য হলেও মৈত্রেয়ীর কাছে এসে বেড়িয়ে যেতেন।



মৈত্রেয়ীর বাবা মাঝে মাঝেই মির্চা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য মেয়েকে জানাতেন। যেমন মির্চা মৈত্রেয়ীকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে, সে নাকি তার পর্ন লেখালেখির জন্য জেল খেটেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। পরে মনে হল এই সব কথার বেশীর ভাগই মিথ্যাচার ছিল। ততদিনে মির্চা বিয়ে করেছেন, লেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।



এদিকে বিভিন্ন মানুষের টিপ্পনি,বাকা কথা শুনে শুনে মৈত্রেয়ী দেবী বইটি পড়লেন এবং মির্চার ঠিকানা যোগাড় করে চিঠি লিখলেন। বেশ কয়েকটি চিঠিই তিনি লিখেছিলেন। কিন্তু মির্চা একটিরও উত্তর দিলেন না। অতঃপর মৈত্রেয়ী দেবী সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি মির্চার সাথে দেখা করবেন। স্বামী বড় চাকুরে হবার সুবাদে শুধু দেশেই নয় বিদেশে যাবার সুযোগও হরহামেশাই তৈরী হোত। ফ্রান্সে, লন্ডনে বিভিন্ন দেশে তিনি তিন চার বার করে অল্পের জন্য মির্চাকে ধরতে পারলেন না। মির্চা কিভাবে যেন আগেই টের পেয়ে সরে যান। মৈত্রেয়ী দেবী বুঝে উঠতে পারেন না কেন মির্চা তার সাথে দেখা করতে চান না? কেন তার চিঠির উত্তর দেন না? বলাই বাহুল্য তার স্বামী তাকে এই ব্যাপারে যথেষ্ট সহোযোগিতা করেছেন।



শেষবার প্রতিজ্ঞা করে বের হলেন এই বার মির্চাকে খুজে বের করবেনই করবেন। তার ফ্রান্সে আসার খবর কাক পক্ষী কাউকেও জানতে দিলেন না। খোজ নিয়ে জানতে পারলেন মির্চা স্হানীয় একটি ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীর শিক্ষক। মৈত্রেয়ী দেবী সোজা সেই ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে চলে গেলেন। খুজে বের করলেন লাইব্রেরী রুম। এই জায়গাটা একটু ডিটেইলস করে বলি। বইয়ের এখানে একটা লাইন আছে যা আমার ভীষন ভীষন প্রিয়।



মৈত্রেয়ী দেবী সিড়ি বেয়ে উঠছেন, দোতালায় লাইব্রেরী রুম। আর একটু পরেই মির্চার সাথে তার দেখা হবে। মৈত্রেয়ী দেবী রুমে ডুকলেন। হেটে হেটে রুমের শেষ প্রান্তে চলে এলেন। এসে দেখেন এক পৌঢ় ভদ্রলোক চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে আছেন, স্তম্ভিত, বাকরুদ্ধ এবং মৃদু কাপছেন। মৈত্রেয়ী দেবী দেখলেন বয়সের আড়ালে লুকিয়ে আছেন সেই মির্চা এলিয়াদ। মির্চা বললেন "সিড়িতে তোমার পায়ের আওয়াজ শুনেই বুঝেছি তুমি এসেছ"(এটাই আমার প্রিয় লাইন)। এক অসম্ভব কষ্ট মেশানো ভাল লাগা পেয়েছিলাম আমি তখন। কি করে একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে এতটা ভালবাসতে পারে যে ত্রিশ চল্লিশ বছর পরেও ভালবাসার মানুষের পায়ের আওয়াজ মনে রাখতে পারে!



এরপর শেষবারের মত তাদের মধ্যে কিছুক্ষন কথোপকথন হয় যার সবটা আমার মনে নেই(এগারো বছর আগে পড়েছিলাম, স্মৃতিতো প্রতারনা করবেই)। তবে হে মির্চা মৈত্রেয়ীর সব চিঠিই পেয়েছিলেন, ইচ্ছে করেই কোন উত্তর দেননি এবং ইচ্ছে করেই দেখা দেননি। কেন যে দেননি তার সেই উত্তর এখন আর মনে পড়ছে না। আর তিনি মৈত্রেয়ীর সব খোজ খবরই রাখতেন। এমনকি যতবার তিনি ফ্রান্সের মাটিতে পা রেখেছেন ততবারই তিনি তার আসার খবর পেয়ে গিয়েছিলেন।



মৈত্রেয়ী জিজ্ঞাসা করেছিলেন কেন তাকে নিয়ে প্রনয় লীলার কথা লিখেছেন? উত্তরে মির্চা বলেছিল "মৈত্রেয়ী তার কাছে ছিল দেবীর মত, আর দেবীরাতো অভিসারে যায়ই"। আমার মনে হয় বাস্তবে না পেলেও লেখার মাধ্যমে তিনি মৈত্রেয়ী দেবীকে গভীর করে পেতে চেয়েছিলেন। মির্চার শেষ কথা গুলো ছিল কিছুটা এরকম "এই জনমে তোমাকে পেলাম না, কিন্তু পরের জনমে নিশ্চই পাব, কোন এক নদী তীরে দু হাত বাড়িয়ে সেদিন আমি তোমাকে গ্রহন করব "।



ফিরে এসে সমাজ সংসারের ভয় না করে মৈত্রেয়ী দেবী লিখেন তার এই বিখ্যাত ব্ই "ন হন্যতে"। যা বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন। আরো অনেক পরে তার এই বই নিয়ে মুম্বাইয়ের বিখ্যাত পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানশালী তৈরী করেন তার বিখ্যাত ফিল্ম "হাম দিল দে চুকে সানাম"। এতে ঐশ্বরিয়া অভিনয় করেন মৈত্রেয়ী দেবীর ভূমিকায় আর সালমান করেন মির্চার ভূমিকায়। পরবর্তীতে এই ছবি, ছবির পরিচালক এবং তার কলাকুশলিরা ফিল্ম ফেয়ার এ্যাওয়ার্ড পান। কথিত আছে পরিচালক কাহিনী ব্যবহারের পারমিশন টুকু পর্যন্ত মৈত্রেয়ী দেবী বা তার পরিবারের কাছ থেকে নেননি।



খুব ইচ্ছে ছিল এই দুজনের সাথে দেখা করব। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে যে অনেক ফারাক থাকে। যতটুকু জেনেছি মির্চা পরলোকগমন করেছিলেন আর মৈত্রেয়ী দেবী এত দিনে নিশ্চয়ই আর বেচে নেই। কোথাকার কোন মৈত্রেয়ী দেবী আর মির্চা এলি্যাদ চিনি না জানি না তবুও কেন যে তাদের জন্য এত মায়া আর ভালবাসা কাজ করে বুকের ভিতর!





মন্তব্য ৭১ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৭১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৪৬

বড় বিলাই বলেছেন: সঞ্জয় লীলা বানসালির এই জিনিসটা খুব খারাপ লাগে, হাম দিল দে চুকে সানাম এর কাহিনী সে নিয়েছে ন হন্যতে থেকে, ব্ল্যাক এর কাহিনী নিয়েছে হেলেন কেলারের আত্মজীবনী থেকে। অথচ এই দুটো সিনেমাকে সে মৌলিক কাহিনী বলে ফলাও করে প্রচার করে।

আমি লা নুই বেঙ্গলী পড়ার আগেই ন হন্যতে পড়েছিলাম। তাই লা নুই বেঙ্গলী পড়ার সময় একটু রাগ হচ্ছিল, কারণ আগে থেকেই জানতাম এখানে সত্যির সাথে ফ্যান্টাসী মিশে আছে। এজন্য ন হন্যতে পড়ে মৈত্রেয়ী দেবীর জন্য যে কষ্ট অনুভব করেছি, মির্চার জন্য ততটা অনুভব করতে পারিনি, বরং রাগটাই কষ্টের ব্যাপারটাকে ছাড়িয়ে গেছে।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:০২

ভোরের তারা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু কষ্ট করে আমার এই দীর্ঘ লেখা পড়েছেন। মির্চার লেখার এই দিকটা আসলেই দুঃখজনক। নয়তো তার মত করে ভালবাসতে পারার গুন খুব কম লোকেরই আছে।

"দেবদাস" শরৎ চন্দ্রের আলোচিত উপন্নাস না হলে হয়তো বানসালি এটাও তার নিজের নামে চালিয়ে দিতেন। কৃতজ্ঞতা বোধ মানুষকে বড় করে ছোট নয় এটা বোঝার শক্তি তার নেই।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৫৭

বাবুনি সুপ্তি বলেছেন: আমি ন হন্যতে পড়েছি আগে। পড়ে বুঝতে একটু কষ্ট হয়েছে কিন্তু আমার মনে দাগ কেটে গিয়েছে। আমি পরে শুনলাম আরেকটা বই আছে "লা নুই বেঙ্গলী" নামে। কিন্তু আমি কিছুতেই বই টা পড়ার সুযোগ পাইনি এখনো। কোন একদিন হয়ত পড়তে পারব।

ন হন্যতে আমার খুবই প্রিয় একটা বই। আমি সব বইয়ের নাম ভুলে যেতে পারি গল্প ভুলে যেতে পারি কিন্তু এটা কখনই ভুলতে পারব না।

মজার ব্যাপার হচ্ছে বইটা পড়লেও অনেকেই জানে না কাহিনী টা সত্যি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:০৬

ভোরের তারা বলেছেন: আপনাকে পেয়ে ভাল লাগলো। কেমন আছেন? বইটা আমারো খুব প্রিয়। আবার পড়তে হবে এখন নিশ্চয়ই সব কথা বুঝতে পারব:)

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৫৮

বাবুনি সুপ্তি বলেছেন: আপু আপনার লেখাটা অনেক ভালো লাগল। মনে করিয়ে দিল সব কিছু।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:০৭

ভোরের তারা বলেছেন: কষ্ট করে এই দীর্ঘ লেখা পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ

৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:১১

বাবুনি সুপ্তি বলেছেন: আমারও আবার পড়তে ইচ্ছে করছে। দেখি লাইব্রেরিতে যেতে হবে :)

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:৫৫

ভোরের তারা বলেছেন: :)

৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:০৬

রাফাত আফরিন বলেছেন: অনেক ভাল লিখা ++++++++++

৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৪৮

আবদুল্লাহ আল মনসুর বলেছেন: +++

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৫

ভোরের তারা বলেছেন: ধইন্যা:)

৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:০১

রিফাত হক বলেছেন: অসাধারন একটা বই " ন হন্যতে"। আপনি ঠিকই বলেছেন, যারা প্রথমে ন হন্যতে পড়েছেন, তাদের কিন্ত "লা নুই বেংগলী" কম ভালো লাগবে। কিন্ত দুটি বই ই অসাধারন। বই দুটো নিয়ে অনেক পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন, আপনাকে ধন্যবাদ।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৮

ভোরের তারা বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৪৫

সুরঞ্জনা বলেছেন: দুটোই আমার প্রয় বই, এবং অনেক বার পঠিত। মৈত্রেয়ী দেবী বছর খানেক আগে মারা গেছেন। উনার লেখা মংপুতে রবিন্দ্রনাথ বইটা পড়লে তার বিয়ের পর সুন্দর সংসারের কথা, কবিগুরুর সাথে অন্তরঙ্গতার কথা জানতে পারবে।

"ন হন্যতে একটি প্রিয় লাইন এখনো মনে পড়ে, যখন মৈত্রেয়ী মির্চার লাইব্রেরীতে দেখা করতে গিয়ে আবিস্কার করে মির্চা অন্ধ। মির্চার সে আর্তনাত " আমি কি করে তোমায় শান্তি দেবো? আমার নিজের কাছেই তো কোন শান্তি নেই"।

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৫৮

ভোরের তারা বলেছেন: মির্চা অন্ধ হয়ে যাবার এই জরুরী কথাটাতো আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপু মনে করিয়ে দিবার জন্য। ইচ্ছে করে অখন্ড অবসর কাটাই রাজ্যের সব বই নিয়ে। মৈত্রেয়ী দেবীর অন্য বই গুলো সময় করে পড়তে হবে। ভাল থাকবেন।

৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:৩৯

হুপফূলফরইভার বলেছেন: কেন আর কিভাবে যে বই পড়াটা সেই ছোটকাল থেকেই আমার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে অপ্রিয় কাজের একটি হয়ে গেল আফসুস!!

আল্লার এই দুনিয়াতে কত কিছু অজানা!!! রিভিউ ভাল লেগেছে!! দেখি কোন একদিন হয়ত লাইব্ররীতে যাব! আর মনে থাকলে পৃষ্ঠা উল্টে দেখব!! ন হন্য!

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৪৯

ভোরের তারা বলেছেন: আজ থেকেই বই পড়া শুরু করে দিন। এ যে কি এক অমৃত ভান্ডার তা যখন শুরু করবেন তখন বুঝতে পারবেন:)

১০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০২

পার্থরূপ বলেছেন: ন হন্যতে অথ্ =হয় না

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৪৭

ভোরের তারা বলেছেন: একমত হতে পারছি না।

১১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২৩

দুরন্ত স্বপ্নচারী বলেছেন: বিড়াট হিস্ট্রি B:-)

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৩৯

ভোরের তারা বলেছেন: হ হিস্ট্রিটা একটু বিড়াটই হইয়া গেল:(

১২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:৫৫

নীল-দর্পণ বলেছেন: ন হন্য তে পড়েছি বাকী আছে লা লুই বেংগলী।
বইদুটো কি আসলেই সত্য কাহিনী নিয়ে লেখা?

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০০

ভোরের তারা বলেছেন: আসলেই সত্য কাহিনী। মানুষের জীবন কেমন গল্পের মত। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

১৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৪৩

দুরন্ত স্বপ্নচারী বলেছেন: বড় হইলেও যথেষ্ট উপাদেয় হইছে :)

১৯ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:০৯

ভোরের তারা বলেছেন: অনেক অনেক ধইন্যা আপনেরে:)

১৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ২:১৯

শ্রাবণ এর বৃষ্টি বলেছেন: লেখাটা বড় হয়েছে কিন্তু যথেষ্ট সাবলিল। খুবই ভাল লাগল, পুরানো কাহিনীটা ও একই সাথে কিছু পুরানো স্মৃতি মনে করিয়ে দিল। দেখি বই দুইটা আবার খুজে বের করতে হবে।

১৯ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:১১

ভোরের তারা বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। মাধুকরি নিয়ে লিখব ভাবছিলাম। মাধুকরির নায়কের নামটা বলতে পারবেন কি?

১৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৪২

সকাল রয় বলেছেন:

পড়তে পড়তে টায়ার্ড
কেমন আছেন কন তো ?

১৯ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ৮:০৯

ভোরের তারা বলেছেন: আছি আর কি। আপনার হায়াত আছে, ভাবতেছিলাম আপনার লেখা গুলো পড়া শুরু করব:)

১৬| ২০ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১:০৬

জিকসেস বলেছেন: ব্লগে এত বড় লেখা এই প্রথম পড়লাম। আমি তো আবার হালকা মজার লেখা লিখি। এই একটা কোনরকম সিরিয়াস লেখা লিখসিলাম। দেখেন তো কেমন হইসে। সত্য কাহিনী। (Click This Link)

২০ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৯:১৪

ভোরের তারা বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য। পড়লাম এবং মন্তব্যও করে এলাম।

১৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:৫১

জুন বলেছেন: দুটি বই ই আমার অসম্ভব প্রিয় ভোরের তারা।যখনই পড়ি ভীষন ভাবে আলোড়িত হই।মির্চার চোখের সমস্যা প্রথম থেকেই ছিল তাই শেষে অন্ধ হয়ে মৈত্রেয়ী দেবী কে দেখতে না পারাটা একটা ধাক্কা দিয়েছিল আমাকে কাহীনির নায়িকার মতই।
সুন্দর লিখেছেন।
প্লাস...।

২৬ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০১

ভোরের তারা বলেছেন: kosto kore ei dirgho lekha porar jonno many many thanks apu. shomo mona manushder pele besh valo lage.valo thakben.

১৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:২০

সত্যবাদী মনোবট বলেছেন:

"সিঁড়িতে তোমার পায়ের আওয়াজ শুনেই বুঝেছি তুমি এসেছ"


আমার স্পন্দনে আছো মিশে
বাতাসের মাঝে পাই তোমার ঘ্রাণ
আমার পৃথিবী তুমি
তোমার অপেক্ষায় বাঁধি নতুন গান।।


আমি এমন-ই ভালোবাসা চাই। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপু

২৬ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০৭

ভোরের তারা বলেছেন: khub shundor apnar montobbo. Boi duti na pora thakle pore felun, onek valo lagbe.

১৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:২৮

কাব্য বলেছেন:

২৬ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৫

ভোরের তারা বলেছেন: shotti koira kon ei birat lekha porsento?apnar khobor kita? Asen kiram

২০| ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:২৩

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: খুব ভালো বই। আবার মনে করিয়ে দিলেন বলে ধন্যবাদ। তাঁর লেখা মংপুতে রবীন্দ্রনাথ অসাধারন বই। অন্তরঙ্গ আলোকে রবীন্দ্রনাথের এমন লালিত্যময় উপস্থাপনা কম পাবেন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৯:৩৮

ভোরের তারা বলেছেন: আপনার উপস্হিতি ভাল লাগল।কেমন আছেন? মংপুতে রবীন্দ্রনাথ বইটির কথা এত শুনেছি--- পড়তেই হবে দেখছি।

২১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩৭

শায়মা বলেছেন: মৈত্রেয়ী আর মির্চা এলিয়াদ।
আহা সেই যে তাদের নানা রঙের দিন গুলি।:(

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৩০

ভোরের তারা বলেছেন: কেমন আছেন আপু?

২২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৬:১৪

ইব্রাহীম আহমেদ বলেছেন: আমি আগে লা নুই বেংগলী আগে পড়েছি - আর পরে ন হন্যতে । ফলাফলঃ বুকের মাঝে একগাদা কষ্ট ।


এই গল্পদুটো থেকে প্রভাবিত হয়ে ব্লগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম , ন হন্যতে । আপনি পড়েছিলেন মনে হয় :)


অনেক দিন পরে ব্লগে আসলাম । আশা করি ভাল আছেন :)

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৪০

ভোরের তারা বলেছেন: আমি ভাল আছি, আপনি কেমন আছেন? আর নিয়মিত আপনার লেখা আশা করছি। ভাল থাকবেন।

২৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৬:২০

ইব্রাহীম আহমেদ বলেছেন: সেই পোস্টে আপনি বলেছিলেন , আপনার এই লেখাটা ড্রাফটে পড়ে আছে । এতদিন এমন একটা লেখাকে আধারে ফেলে রাখাটা ভীষণ অন্যায় ! X((

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৫৫

ভোরের তারা বলেছেন: হা হা হা। আপনার মন্তব্যে উৎসাহিত বোধ করছি। আপনার স্মৃতি শক্তিতো অসাধারন।

২৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:২৫

সত্যবাদী মনোবট বলেছেন: ওর রে.......

প্রিয় আপুটার দেখা পেলাম অবশেষে। পড়ি নাই রে আপু :( ইনশাল্লাহ চেষ্টা করবো।

আপু তোমার ফেইসবুকে এ্যাকাউন্ট আছে?
তোমার মেইল এ্যাডটা আমায় দাও

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৫৮

ভোরের তারা বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগল। ফেস বুক আই ডি একটা আছে পরে দিব।আপনি কি নামে আছেন? এই লেখাটা একটু বোরিং হয়ে গেছে।

২৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:১৭

তাজা কলম বলেছেন: বই দুটো আমারো প্রিয় বই। অনেককেই গিফট করেছি বইদুটো :D

আপনার লেখা ভাল লাগল।

৩০ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:১৩

ভোরের তারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে এই দীর্ঘ লেখা পড়ার জন্য।

২৬| ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৩

সত্যবাদী মনোবট বলেছেন: [email protected] দিয়ে একটা সার্চ দিয়েন

এই অধম ভাইটাকে পেয়ে যাবেন.........

বই দুটো কি নেটে পাওয়া যেতে পারে আপুনি?

৩১ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩১

ভোরের তারা বলেছেন: Ekta google search dea dekte paren bhaia.

২৭| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৪৯

সিস্টেম বলেছেন: B:-)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৫৯

ভোরের তারা বলেছেন: B:-/

২৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৪১

চতুষ্কোণ বলেছেন: রিভিউ ভাল লাগলো। বেশ গোছানো।

দুটো বই' ই পড়া হয়েছে। মির্চা অসাধারণ লিখেছিলেন। তবে আমার ন হন্যতে টাই বেশি ভাল লেগেছে। এই বইটাতে কিছু ছোট ছোট লিরিক আছে। খুবি প্রিয়।

উল্লাস উতরোল বেনুবন কল্লোল,
কম্পিত কিশলয়ে মলয়ের চুম্বন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১৯

ভোরের তারা বলেছেন: কবিতার উক্তি মনে রেখেছেন দেখে বুঝতে পারছি খুব মনোযোগ দিয়ে বই দুটো পড়েছেন। আর এত চমৎকার বই মনে রাখাটাই স্বাভাবিক। ভাল থাকবেন।

২৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৯

পুরাতন বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা আফা :D

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৭

ভোরের তারা বলেছেন: আপনেরেও ঈদের শুভেচ্ছা। এইবার আপনার বিফ ডেভিল রান্ধনের চিন্তা ভাবনা করতাছি :#>

৩০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:২৬

অগ্নিশিখা বলেছেন: ঈদ মোবারক আপু।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৬

ভোরের তারা বলেছেন: আপনআকেও ঈদ মোবারক

৩১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১২:১৮

দুরন্ত স্বপ্নচারী বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৯

ভোরের তারা বলেছেন: ধন্যবাদ। ঈদ কেমন কাটালেন?

৩২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১২:১৩

নীল ভোমরা বলেছেন: পোস্টে প্লাস।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৩১

ভোরের তারা বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেক দিন পরে দেখলাম। কেমন আছেন

৩৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১২:২০

মে ঘ দূ ত বলেছেন: অনবদ্য! বড় হলেও পড়তে অসুবিধে হয়নি। সাবলীল লেখনী।

আমি বইদুটো পড়েছিলাম বেশ অনেক আগে। ভাসা ভাসা মনে পড়ছিল কাহিনীটা আপনার লেখাটা পড়ার সময়। সুপ্তির মন্তব্যটা পড়ে মনে পরলো, বই দুটো পড়বার সময় আমারও জানা ছিলনা এদুটো সত্য কাহিনী। নহন্যতে যে লা নুই বেঙ্গলীর উত্তরে লেখা সেটিও জানা ছিলনা। নাম দুটোর মানেটাও নতুন করে জানলাম আপনার লেখাটা পড়ে। :-)

শেষের ছবিটাতো বেশ!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৬

ভোরের তারা বলেছেন: ভাল লাগলো আপনার সুন্দর কথা গুলো।

৩৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:০৩

কাব্য বলেছেন: ঈদ মোবারক :||

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৫৬

ভোরের তারা বলেছেন: ঈদ মোবারক 8-|

৩৫| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:১৩

মনোয়ার পারভেজ বলেছেন: শেষ পর্ব লিখলাম। কেমন আছেন?
Click This Link

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:২৫

ভোরের তারা বলেছেন: আছি ভাই কোন রকম। পড়লাম।

৩৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:৫১

স্তব্ধতা' বলেছেন: রিভিউ বলবোনা বরং বলবো অনুভূতির ভাগীদার করলেন। দারুন লাগলো পড়তে।++++++

ভালোবাসার থেকে এত তীব্র আর কোন ফ্যান্টাসী আছে কি না আমি জানিনা।কিং অফ অল ফ্যান্টাসীস।আর মীর্চা সেই ফ্যান্টাসীতে আকন্ঠ ডুবে ছিলেন।তাই চল্লিশ বছর পরও মৈত্রীয় দেবীর পায়ের শব্দে....আহ অসাধারন।পাগলের মতো ভালোবাসা একেই বলে। আর তাই নহন্য-র থেকে তার বর্ণনাটাকেই আমি এগিয়ে রাখবো।ওটাই সত্যি, দগদগে অনুভূতিগুলোকে কাছ থেকে দেখে আলিঙ্গন করে মাখামাখি হয়ে লেখা।মৈত্রীয় দেবীরটা অনেক দূর থেকে নিজের কার্য বিচারকের ভূমিকা নিয়ে লেখা, হয়তো পরিণত, কিন্তু ফ্যান্টাসী থেকে অনেক দূরে, এমনি ভালোবাসার থেকেও।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:১৪

ভোরের তারা বলেছেন: বাহ খুব সুন্দর আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। যেন আমার ভাবনা গুলোই দেখতে পেলাম। আমিও মীর্চার ভক্ত। তার লেখাতেই যেন বাধ ভাঙা এক তীব্র ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। যা সেই সময় আমার কিশোরী মনকে ছুয়ে গিয়েছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ অনিয়মিত আমার এই পুরনো লেখা পড়বার জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.