![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেঘ ছায়াময় প্রজাপতি দিন গুলো এলেই শ্রাবন্তীর মনের কোনে কেমন যেন কথার মেঘপুঞ্জ জমতে থাকে।এক সময় মেঘের ভারে কথার পঙতিমালা বেরিয়ে আসে কলম ফুড়ে,বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে ডায়রির পাতা জুড়ে, গোটা গোটা কালো অক্ষর রুপে।আজ ডায়রি লেখার দিন,আজ হাসিবের কথা বলার দিন। খুব করে মনে পড়ছে তাকে,আসলে সবসময়ই মনে পড়ে। আর মনে পড়বে নাইবা কেন,সেতো বসবাসই করে মনের গহিনে ।
বড় বেশি নিষ্পাপ ছিল মানুষটা। একদম সদ্য ফোটা বৃষ্টি ভেজা জুই ফুলের মতন, ছিপছিপে গড়নের, লম্বা, শ্যাম বর্নের মানুষটির মাথা ভর্তি ছিল এলরাশ নরম কোমল চুল,ভীষন প্রিয় ছিল শ্রাবন্তীর সেই চুল। চোখের চশমাটা অন্য রকম এক ব্যাক্তিত্ব এনে দিয়েছিল চেহারায়। এমনিতেও মৃদুভাষী মানুষ ছিল,তুখোড় ছাত্র হিসেবে ছিল দারুন সুখ্যাতি।দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসতো। তবু মাঝে মাঝে হাসিবের "এই আছি বেশ" টাইপের গাছাড়া ভাব দেখলে শ্রাবন্তীর কষ্ট হোত।ওর চাওয়া ছিল হাসিবের সবকিছু হবে সবার চাইতে সেরা,তা সে সামাজিকই হোক আর বৈষয়িকই হোক। অল্প বয়সে মানুষ কত ফানুসইনা উড়ায়,কত কিছুই না চায়! শ্রাবন্তী দূর্দান্ত সুন্দরী,হাসিবের মত না হলেও পড়াশুনাতে বেশ ভালো। কত শত আশিক, মজনু ঘুরে ফেরে ওর পেছনে! কে তাকায় প্রেমিককূলের দিকে!! তাহলে কি হবে! স্রষ্টাতো কাহিনী লিখেছেন ভিন্ন ভাবে। দুজনের মনোমালিন্যের সুযোগে ভিতরে ডুকে পড়ে রাতুল। বিচ্ছেদের দেয়ালে ফাটল ধরে,যে ফাটল শুধু দিন দিন বাড়তে থাকে।শরৎচন্দ্রের ভাষায় বলতে হয় "বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না দূরেও ঠেলিয়া দেয়"।
রাতের তারারা যেভাবে দিনের আলোয় হারায়,সেভাবেই চিরতরে হারিয়ে যায় হাসিব,সন্ধ্যা নামলেও আর শ্রাবন্তীর আকাশে উদয় হয় না। সুখ সেতো পদ্ম পাতার শিশির, শ্রাবন্তী সুখি হয় না রাতুলের সাথে। তবু সমাজ সংসারের কারনে জীবন চালিয়ে নেয়। মানুষটার অনেক মিথ্যাচার,কষ্ট দেয়া, প্রতারনা বেরিয়ে আসে একে একে।সুখ, স্বাচ্ছন্দে ভরা জীবনটা ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে থাকে কষ্ট,সংগ্রাম আর গ্লানিতে। একে একে মৃত্যু হতে থাকে সব স্বপ্নের। বেচে থাকা হয় বেচে থাকার নিয়মে।
শ্রাবন্তী খুজে ফেরে হাসিবকে। চোখ বন্ধ করলে যে বাতাসটা বুক ভরে নেয়,সেখানেও ওকে অনুভব করে,মনে করে এই বাতাসটাতো ছুয়ে এসেছে হাসিবের অস্তিত্বকে। একাকিত্বের সঙ্গী হয় আকাশ ভরা তারা,কখনও একলা দুপুর,কখনওবা দরজার ফাক গলে আসা শেষ বিকেলের এক চিলতে রোদ্দুর,ঘাস পাতার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেও কেটে যায় অনেকটা সময়। কদাচিৎ রাত নামলে ওর বাড়ির সামনে যেয়ে দাড়ায়,কান পাতে,ঝিঝি পোকার শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না,দেখাও হয় না কখনও।ইন্টারনেটের জগতে খুজে ফেরে বছরের পর বছর,কত সহস্র বার যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে খুজে ফিরেছে তার হিসেব নেই।ঐ নামের যারা আছে তাদের প্রত্যেককে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, তারা সেই শান্ত ছেলেটি হাসিব কিনা! অবশেষে হাসিব একাউন্ট খোলে। শ্রাবন্তী শুধু দূর থেকে দেখে,যতটুকু পাবলিক করা শুধু ততটুকুই দেখে,সেটা খুব বেশী না। কভার পেজ জুড়ে হাসিবের বউ বাচ্চার সুখি ছবি।তবু প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ বার ওর প্রোফাইলে যাওয়া হয়,বার বার দেখা হয় একই ছবি,একই পোস্ট, দেখতে দেখতে মুখস্হ হয়ে গিয়েছে প্রায়। হাসিবের হয়তো জানা হবেনা কোনদিন কিভাবে কেউ ওকে এখনও খুজে ফেরে!!ওর চোখের সমস্ত জলে যে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে যাবে সে খবরও হয়তো জানা হবে না!!!
সকল চরিত্র কাল্পনিক
২| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৩২
জলপাতা বলেছেন: ধন্যবাদ।আগে অনেক লেখা হোত।আগের নিকের পাসওর্য়াডটি হারিয়ে ফেলেছি।
৩| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৫
বিজন রয় বলেছেন: আগের নিক কোনটা ছিল, দেখি চিনতে পারি কিনা।
৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:৪৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালোলাগা ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮
বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর লেখা দিয়ে ব্লগিং শুরু।
নিকটিও সুন্দর।
ব্লগে স্বাগতম।
শুভকামনা, শুভব্লগিং।