নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রমন

অতি সাধারন, কিন্তু প্রগতির পক্ষের সামান্য মানুষ!

শ্রমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় "কার্যকর করবে" বিএনপি-জামাত জোট!

১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫১



পত্রিকান্তরে পড়েছি যে যুদ্ধাপরাধী বিচারের আদালত নিজেই বলেছেন যে একাত্তরের সব মানবতা বিরোধী অপরাধের "নাটের গুরু" অর্থাৎ "মাস্টার মাইন্ড" হচ্ছেন গোলাম আজম যার বিরুদ্ধে অতি গুরুতর পাঁচ ধরনের অপরাধের সবকয় টি ই নাকি প্রমানিত হয়েছে, অথচ তার ফাঁসির আদেশ হয়নি, তার হয়েছে ৯০ বছরের জেল! অর্থাৎ বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় যেদিনই আসুক না, তারা তখন গোলাম আজমকে হয় তো ছেড়ে দেবে যদি চায় আর তাতে তো কোনই সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না!

আমার ধারনায় বর্তমানে বাংলাদেশে সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যাক্তি এই গোলাম আজম, যিনি রাজনীতি ছেড়ে দিলেও প্রভাব বলে ইচ্ছে করলে দিন কে রাত আর রাত কে দিন করতে পারেন, অবশ্য বাংলাদেশেই! গ্রীস্মের রমজানের এই তের-চৌদ্দ ঘন্টার রোজায় পূর্বের অভিজ্ঞতায় জানা আছে যে জামাতের "যুদ্ধপরাধীর" রায় হলেই হরতাল হবে! হিংসাত্মক কার্যাবলী করবে জামায়াত, এই দূর্বিষহ গরমের রোজায় হরতালে একেবারেই নাস্তানাবুদ হয়ে পড়বে সাধারন মানুষ কারন তাদের নিত্ত নৈমিত্তিক কাজ করতেই হবে! না এটা কোন বিবেচনায় আসেনি, বরং গোলাম আজমের ৯০ বছর জেলের রায়ে কি এক অজানা সুখে আহ্লাদে নিজেদেরকেই গদ গদ হতে দেখা গেছে গুরুত্বপূর্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের, ভাবখানা, হু হু দেখলে পাবলিক, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের বিচার তো করলাম!

এর ভেতর দু একজনের ফাঁসির রায় হচ্ছে, আবার কারো কারো ৯০ বছর (কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনে খানিকটে অসুবিধে ঘটেছিল, শাহবাগ প্রজম চত্বর তৈরী হয়েছিল!) জেল ধরনের সাজা দিচ্ছেন আদালত! কিন্তু এসব সাজা কার্যকর করার জন্যে আওয়ামী লীগ অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে রেখে যাচ্ছে বিএনপি-জামাত জোটকে (বাজারে প্রবল গুজব যে এরাই নাকি এবার রাস্ট্রিয় ক্ষমতায় আসছে!)! তা হলে ধরে নিতে হয় যে এই বিচারের রায় কার্যকর করবে বিএনপি-জামায়াত জোট, কারন এই সরকারের সময় এতটা নেই যে তাতে তারা ইচ্ছে থাকলেও তা করে যেতে পারে! পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের মাঝখানে যারাই থাকুন না কেন তাদের এ সাজা কার্যকর করার কোন সূযোগ থাবে না, কিম্বা "বৈরী" রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সমীকরন পালটে গেলে (সম্ভাবনাই বেশী) এদের সাজা সংক্রান্ত অনেক কিছুর ই পালটে যাবার সম্ভাবনাই প্রবল!

এদের হাতে আওয়ামী লীগের সময়কার রায় কার্যকর কেমন হতে পারে তা বোধ হয় বোধ প্রায় সকল পাবলিকেরই মোটামুটি একটা অনূমান রয়েছে!

দেখা যাক, কি করে বিএনপি জামাত জোট তাদের নেতাদের ফাঁসিতে ঝোলায় আর রায় অনুযায়ী অন্যান্য শাস্তির ব্যাবস্থা করে!

কিন্তু এই বর্তমান বিচারাধীনরা যে একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করা পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বা রাজনীতিবিদদের দোসর, তো দোসরদের বিচার করা গেল, আমরা বগল বাজিয়ে আনন্দ করলাম, কিন্তু আমাদের ওই আদালতের টার্মস অফ রেফারেন্সে এরা যাদের দোসর, তাদের বিচারের ব্যাবস্থা কেনো থাকলো না? আমরাই যখন সিমলা চূক্তি করে তাদের কোন বিচার ছাড়াই ভারতের ইচ্ছের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম, আর ভারত তাদের নিজেদের দর কষাকষিতে সেই সব অপরাধীদের কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের সহী সালামতে পাকিস্তানে পৌছে দিয়েছিল, তখন বাংলাদেশে কোন টু শব্দ কেনো ওঠেনি? আর আজ পাকিস্তান বিদেশী রাস্ট্র হলেও আমাদের এই আদালত দোসরদের সাথে মূল অপরাধীরা, যারা এখনও পাকিস্তানে বেচে বর্তে আছে, তাদের আদালতের সমন কেনো পাঠালো না? এটা তো এ ধরনের আদালতের এখতিয়ারের বাইরে হতে পারে না বলেই মনে হয়! কই, এই একাত্তরের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের বিচারের এই আদালতের তো সেই পাকিস্তানী মূল অপরাধীদের ব্যাপারে কোন আগ্রহই দেখলাম না, নাকি তারা চিরতরেই পার পেয়ে গেছে? আর তাই যদি হয়, তা হলে এই দোসরদের বিচারের কি কোন নৈতিক অধিকার আমরা রাখি?

আমার ধারনা, এদেশের বেশীর ভাগ মানুষ এই বিচার-টিচার নিয়ে মাথা ঘামায় না, মাথা ঘামায় না মূক্তিযূদ্ধ নিয়ে (তো সেটি ভালোই হোক আর মন্দই হোক!)! জাহানারা ইমাম শ্রদ্ধেয় ছিলেন, কিন্তু তার সাথে কতজন সত্যিকার অর্থে বিচার চেয়েছেন? যারা তার সাথে ছিলেন তারা বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর মূল স্রোত নয়, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর মূল ধারা কট্টর ইসলাম পন্থী (কেউ মনে কস্ট পেলেও বাস্তব সত্যকে মেনে নিন, ঝামেলা কমবে!) হয়তো নগর ভিত্তিক কিছু "প্রগতিশীল" মানুষ ছাড়া!

হয়তো তখন গবেষনা করলে দেখা যেত যে একাত্তরের মূক্তিযূদ্ধ বেশীর ভাগ মানুষই চায় নি, বরং এদের কাছে পশ্চিম পাকিস্তানীদের গোলামী করা অনেক বেশী সন্মানের মনে হতো! কিন্তু তাই "গোলমালের বছরের গোলমালে" যখন বাংলাদেশ প্রায় "আচম্বিতে" স্বাধীন হয়ে পড়লো কিছু মানুষের আত্মদানে আর ভারতীয় বাহিনীর সার্জারীতে, তখন সেই পাকিস্তান পন্থী মানুষরা আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধে চলে গেল কারন স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদান কারী দলই আওয়ামী লীগ! দেশ হলো দুইভাগে বিভিক্ত, অ-আওয়ামী জোট আর আওয়ামী লীগ! স্বাধীনতা এদের বিস্তর প্রেসিডেন্ট, জেনারেল, ব্যাবসায়ী ইত্যাদি হবার সূযোগ দিলেও এরা তা কখোনোই মনে রাখেনি!

তাই বঙ্গবন্ধর হত্যাকান্ডে এই বাঙ্গালী কাঁদেনি তখন, বরং সোৎসাহে কয়েকদিনের পাকা দাড়ি মুখে টিভি পর্দায় আগতঃ মোশতাকের ভেতর দেখেছে তাদের বাংলাদেশ বিরোধী সেই যুগান্তকারী নেতা আর সৈনিকরা তাদের ট্যাঙ্কে ঝুলিয়েছে তার ছবি, (আমরা প্রত্যক্ষ দর্শী ছিলাম)যার জন্যে তারা এতদিন অপেক্ষা করে ছিল! আর সেই "খুনী" মোশতাক" গত হতেই পেয়ে গেছে আটত্রিশ বছর বয়স্ক জেনারেল রাস্ট্র-প্রধান যিনি মোশতাকের সামরিক সংস্করনতো বটেই, আরেক কাঠি বাড়া, তাই জিয়ার মাঝেই বাংলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠি খুঁজে পেল তাদের এত দিনের "বুলন্দ নেতা"! বাংলাদেশের জনগনের অতি বৃহত্তর অংশ তাই বার বার ভোট দিয়েছে হয়, ইসলামী ঐক্য জোট কে, নয় বিএনপি কে, নয় তো জাতীয় পার্টিকে!

তারপর সময়ের স্রোতে একদিন সামরিক সরকার ভেসে গেছে, এসেছে "গণতন্ত্র", চিন্তা করুন তো বেগম জিয়া আর জেলে পোরা এরশাদ তাদের তিন তিনটি সিটে কি সাবলীল ভাবে জিতেছিলেন ও এখনো জেতেন, আর হাসিনা হারেন খোকার কাছে!

বাধ্য হয়ে জামাতের সাথে নির্বাচনী ঐক্য করে নিরুপায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে ১৯৯৬ তে, তো তাতে জামাতের ভোট সংখ্যা যাই দেখান না কেন, জামাত যে সাথে আছে সেটাই ছিল বৃহত্তর বাংলাদেশী জনগোষ্ঠি যারা মৌলবাদী তাদের কাছে এক ধরনের সিগনাল যে আওয়ামী লীগ আবার আওয়ামী মুসলিম হচ্ছে (খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন!), হাসিনা নিজে হিজাব ধরলেন, তাকে বা আওয়ামী লীগকে দোষ দেবার কিছুই নেই, এটা তাদের টিকে থাকার প্রচেস্টা এই মৌলবাদের দেশে! আমার কথা যদি "ট্রিয়াঙ্গুলেশন" করতে চান তবে "সাংবাদিক" মাহমুদুর রহমান আর "আমার দেশের" বিপূল জনপ্রিয়তার কথা স্মরন করবেন!

তত্ত্বাবধায়ক সরকার না এলে দ্বিতীয়বারে আওয়ামী লীগ কোন ক্রমেই ক্ষমতাতে আসতে পারতো না, ইসলামী মৌলিক চিন্তার বৃহত্তর জনগোষ্ঠি আওয়ামী লীগ কে যে কোন ভাবেই রুখে দিত! সেই আওয়ামী লীগ আজ করছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, তাই তার পারফরমেন্স কি হতে পারে তা তো সহজেই অনূমেয়!

আজ আমাদের চিন্তার সময় এসেছে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মতামতই চিরকাল মেনে নেবে দেশের প্রগতিশীল শক্তি নাকি ভোটের সংখ্যা নয়, "রোমান সিটিজেন" স্টাইলে যে টি ভাল সেই টি ই জোর করে গিলিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মৌলবাদী রোগ চিরদিনের জন্যে দুর করে দিতে হবে দেশ ও জনগনের বৃহত্তর ভবিষ্যত কল্যানের কথা ভেবে?



এই সব ইস্যুই নিয়ে আমাদের সময় ডট কমে কিছু চমকপ্রদ খবর দেখছিলাম (নাইমুল ইসলাম খানের খবর ফ্যাক্টরী!), পাঠকের আগ্রহের উদ্রেক করতে পারে বলে তা এখানে আবার লিখছি!

জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের মামলার রায়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ৯০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। মামলার রায়ে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। আইনমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাদের এই তাৎক্ষণিক সন্তোষ প্রকাশ নিয়ে অনেকেই যেমন বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, তেমনি তাদের মনে সৃষ্টি হয়েছে নানা সন্দেহের। তবে এর বিপরীতে ক্ষমতাসীনদের অনুগত এবং শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় হতাশা দেয়া দিয়েছে। হতাশার কারণে এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা মঙ্গলবার হরতালও করেছেন। যারা বিস্মিত হয়েছেন, তারা বিস্মিত হয়েছেন এ কারণে যে, রায়ের পূর্ণাঙ্গ খুটিনাটি দেখার আগেই তাৎক্ষণিক সন্তোষ প্রকাশ করে জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আঁতাতের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়েছে। আবার ১১ ছাত্র সংগঠনের হরতালে সক্রিয় সমর্থন দিয়েছে সরকার সমর্থক গণজাগরণ মঞ্চ। গণজাগরণ মঞ্চের নিজস্ব অবরোধ কর্মসূচি এবং শাহবাগের সমাবেশ থেকে রায় মানি না বলে যে ঘোষণা তার মধ্যেও ব্যাপক হতাশার দিকটি যেমন আছে, তেমনি সরকারের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাতের বিষয়টিও। গণজাগরণ মঞ্চের মতোই হতাশ হয়েছে আওয়ামী লীি!)রানার এবং তাদের অনুগত বিভিন্ন সংগঠন। রায়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রফেসর আনিসুজ্জামান, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, মুনতাসির মামুনসহ আওয়ামী লীগ ভক্ত ব্যক্তিরা। এমনকি ক্ষমতাসীন জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ (ইনু)সহ ওই দলগুলো গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে মৃত্যুদন্ড না দেয়ায়। রাশেদ খান মেনন তার প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সন্তুষ্টিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং জামায়াত প্রশ্নে সরকারের দোদুল্যমানতার সমালোচনা করেছেন।



কাজেই গোলাম আযমের মামলার রায় প্রশ্নে ক্ষমতাসীনদের মধ্যেও তাদের মূল দল অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নটি আঁতাতের। ক্ষমতাসীন জোট এর অনুগত, শরিক এবং শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে আগে থেকেই জমে থাকা সন্দেহের ঝুড়িটা আবার উন্মুক্ত হয়েছে। প্রশ্নটি জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার। জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠকটি নিয়েও নতুন করে আবার নানা কথা উঠছে। প্রশ্নটি জামায়াতের সঙ্গে ওই আঁতাতের এবং সমঝোতার। এই একই আঁতাতের প্রশ্নটি উঠেছিল জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার রায়ের পরে। তরুণরা তখন ওই আঁতাতের বিরুদ্ধে দল-নিরপেক্ষভাবে কোনো ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চকে দলীয়করণ করার কারণে এখন ওই স্থানের পরিস্থিতি ভিন্ন। এবারেও ব্যাপক সংখ্যক তরুণ গোলাম আযমের রায়ে হতাশ হলেও বিস্মিত হননি। বিস্মিত নন, কারণ তারা জানেন ভেতরে ভেতরে আসলে কি হচ্ছে।



রায়ের পরে জামায়াতের ভাংচুর নিয়ে সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তেমন কোনো স্পষ্ট বক্তব্য চোখে পড়েনি। এটিও একটি দিক। পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে ক্ষমতাসীনদের মনোবল যখন লণ্ডভণ্ড, তখন এই রায়ের মধ্যদিয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাস্তবে এটা কতোটা প্রভাব বিস্তারী হবে তা এখনই বলা যায় না। আওয়ামী লীগের ধারণা ছিল, অন্যান্য রায়ে না হলেও গোলাম আযমের মতো ‘জামায়াত গুরুর’ দন্ডের ব্যাপারে জামায়াতের পাশে এসে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দাঁড়াবে। অন্তত নৈতিক সমর্থনটুকুও দেবে। কিন্তু বিএনপি জামায়াতের হরতালে সমর্থন দেয়নি। এমনকি রায় নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেনি। এখানে অবশ্য জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির মানসিক দূরত্বের সৃষ্টি হতে পারে। এ বিষয়টিও যে আওয়ামী লীগের মাথায় নেই, তা নয়। তারা এখন এই দূরত্বকে আরো বৃদ্ধির চেষ্টা চালাবে। কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে এই দূরত্বকে। সরকার, ক্ষমতাসীন দল দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতকে বিএনপির কাছ থেকে আলাদা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবার এই চেষ্টা আরো প্রবল হবে, চাপ বাড়বে জামায়াতের উপরে, যাতে জামায়াত প্রকাশ্যে বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে যায়। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের মধ্যে এমন একটা তাগিদ অনুভূত হচ্ছিল।



ইতোমধ্যেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে, বুধবার জামায়াতের মহাসচিব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে মৃত্যু দন্ড, আর জামাতের হরতালও আবার জোর পেয়েছে, সরকার সাপ ও বেজি ছেড়ে যেন খেলা দেখছে! পর পর এই রায় ঘোষণার নিশ্চয় কোনো মাজেজা আছে। তবে আইনের ভাষায়, রায় ঘোষণা সম্পূর্ণভাবে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার।



কিন্তু এই রায় ঘোষণার মাধ্যমে সরকার কি লাভবান হবে? মনোবল কি ফিরে আসবে ক্ষমতাসীনদের মাঝে? এই সরকারের ওপরে জনগণের আস্থা যে একেবারেই তলানিতে নেমে এসেছে, তার কি কোনো হেরফের হবে?



জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত নিয়ে তরুণদেরসহ অনেকের চাপের কারণে হেফাজতে ইসলামকে টেনে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে এসেছিল আওয়ামী লীগ। এতে তাদের কোনো লাভ হয়নি। বরং বুমেরাং হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করেও আওয়ামী লীগ কি লাভবান হতে পারবে? জামায়াত কি পারবে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে গেলে তার বিলীন হওয়ার ত্বরান্বিতকরণ প্রক্রিয়া ঠেকাতে?



কিন্তু জনমনে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি রয়েছে তাহলো - রায় তো একের পর এক ঘোষিত হচ্ছে, এই সরকারের শাসনামলে কি রায়গুলো আদৌ কার্যকর হবে? না, রায়ের দন্ড কার্যকর করার বিষয়টি তারা রেখে যাবে অসমাপ্ত দাবা খেলার একটি ঘুটি হিসেবে ভবিষ্যতের জন্য, ভিন্ন কোনো চাল দেয়ার প্রবল আকাঙ্খায়?



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩০

শিহাব হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই এইরকম একটা দুর্দান্ত পোস্টের জন্য, অজানা অনেক কিছুই জানতে পারলাম, প্রিয়তে রেখে দিলাম পোস্টটা.. :) :)

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৪

শহীদুল্লাহ খান বলেছেন: "জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত নিয়ে তরুণদেরসহ অনেকের চাপের কারণে হেফাজতে ইসলামকে টেনে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে এসেছিল আওয়ামী লীগ।"



একমত নয়।
প্রতিস্ঠিত তথ্য হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হেফাজতকে ব্যবহার করেছে এবং করছে। হেফাজতের পেছনে বেশ বড় অংকের বিনিয়োগও তাদের আেছে।

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২৫

শ্রমন বলেছেন: ভাই একমত না হতে পারলে আমি ও খুশী হতাম। কিন্তু ওই বক্তব্য টি আমাদের সময় ডত কমে আস লেও আমি তাতে একমত! ভাই এদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কিশোর বেলাতেই অস্ত্র হাতে নিয়েছিলাম, কিন্তু আজ আমাদের উপলব্দধি যে আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক থালেও এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রানের সায় তাতে ছিল না! আওয়ামী লীগ অবশ্যই হেফাজতকে ব্যাবহারের চেস্টা করেছে এবং এখনও করছে, ঘটনা পরপম্পরা লক্ষ করলেই তা যে কেউ বুঝতে পারবে! কিন্তু ওই যে লিখেছি, বেশীর ভাগ জনগনই যে মৌলবাদের পক্ষে তা সে যে ভাবেই হোক না কেন, তাই এখানেও আওয়ামী লীগ ব্যার্থ হয়েছে শোচনীয় ভাবে! আওয়ামী লীগ এই বিচার আচার আবার করছে জামায়াত কে চাপে রাখতে যাতে জামায়াতই ইসলামী যে কোন ভাবেই হোক না কেনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নেয়, কারন তত্বাবধায়ক সরকার যে কোন ভাবেই আসুক না কেন জনগনের ও প্রায় সর্বমহলের আওয়ামী বিরোধী অন্ধ-বিশ্বাসের ফলে তত্ত্বাবধায়ক আমলে আওয়ামী লীগ ব্যাকফুটে চলে যাবে! এই সরকারের সময়কার রেকর্ড পরিমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা কেউ বলবে না, বলবে শুধু পদ্মা সেতূ, শেয়ার মার্কেট কেলেংকারী সহ শুধু মাত্র ব্যার্থতার কথাই!
তাই জনগনকে সফট-বর্ম হিসেবে ব্যাবহার করে আওয়ামী লীগ হরতালের পরোয়া করবে না, জনগনের ক্ষতির হিসেব করবে না, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে আওয়ামী লীগের মিনিমাম দরকার পরবর্তী নির্বাচনে জেতা, তার জন্যে আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দেশে যাই ঘটাক না কেন তা ঘটতে দেবে, জনগন কে মর্মান্তিক সাফার করতে দিয়ে বোঝাতে চাইবে যে বিরোধী দল কত খারাপ ও কোন ভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে রাজী হবে না!
তারপর? পোড়ামাটি নীতিই অনূসরন করে শেষ পর্যন্ত যে কি হবে তা বলা মুশকি্ল, কিন্তু নীরিহ জনগন কে ভুগতেই হবে বাংলাদেশের এই অভিনব রাজনীতির কারনে!
আমি রাজনীতি করিনে, কিন্তু মূক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি মনে করি নিজেকে, শুনলে অবাক হবেন, আমার বয়সী বন্ধুদের ভেতর একমাত্র আমিই একা আওয়ামী লীগের সাফল্যকে সমর্থন করে তুলে ধরি, ব্যার্থতার সমালোচনা করি! আর সব? তারা আওয়ামী লীগের ঘোর বিরোধী এবং তাও অন্ধভাবে! এখন বলুন, আমি কি ভাবে এর চাইতে ভাল কথা লিখতে পারি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.