নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

(Alice Munroর DEEP-HOLES অবলম্বনে) খাদ

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০

মশলাযুক্ত ভাজা ডিমগুলো প্যাকেট করে নিলো স্যালি। সাধারণত পিকনিকে কিছু নিয়ে যাওয়াটাকে সে ঘৃণা করে। কারণ সেগুলো নোংরার হেতুও। হ্যাম স্যান্ডউইচ, কার্ব সালাদ, লেবুর অম্বল সব এক সঙ্গে প্যাকেট করাও ঝামেলা। ছেলেদের জন্যে কুল-এইড নামের পানীয়, তার আর অ্যালেক্সের জন্যে আধা বোতল শ্যাম্পেন। সে এক চুমুক খাবে মাত্র, কারণ সে নার্সিঙে জড়িত। এ উপলক্ষে সে প্লাস্টিকের শ্যাম্পেন গ্লাসও কিনেছে। সে যখন বাছাবাছি করছিল অ্যালেক্স তখন সত্যিকারে একটি- বিয়ের উপহার- চায়না কেবিনেট থেকে তুলে নিয়েছিল। সে প্রতিবাদ করলে অ্যালেক্স জেদ ধরেছিল এবং নিজের দায়িত্বেই সে প্যাকেট করেছে।

বাবা আসলে খানিকটা রক্ষণশীল হলেও চমৎকার মানুষ, কয়েক বছর পর কেন্ট স্যালিকে বলতে পারবে কৈশোরে স্কুলে সব কিছুতেই টেক্কা দিতেন, কাজেই এটা নিশ্চিত যে, তিনি বিজ্ঞানী হয়ে বাড়ির চারপাশের ফরাসিদের মুখ ভোঁতা করে দিতে পেরেছিলেন।



স্যালি যন্ত্রের মতো বলে উঠলো, বাবাকে নিয়ে মজা করবে না।

আমি তা করিনি। শুধু এটাই যে, মনে হয় জিওলজিস্টদের বেশির ভাগই অমনোযোগী।



জিওমরফোলজির জার্নালে অ্যালেক্সের একক গবেষণাপত্র প্রকাশ হওয়ার সম্মানে পিকনিকটা হচ্ছিল। তারা অসলার বাফ-এ গিয়েছিল। কারণ এ এলাকাটির বিস্তারিত তার গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছিল। আরেকটা কারণ ছিল যে, স্যালি আর বাচ্চারাও সেখানে কখনো যায়নি।



তারা গ্রাম্য এলাকার এবরো-থেবরো রাস্তায় দু মাইল পেরিয়ে গেল- হাইওয়ের বাঁক পেরিয়ে তারপর গ্রামাঞ্চলের উপযুক্ত কাঁচা রাস্তা ধরে যাওয়ার পর গাড়ি পার্ক করবার একটি জায়গা পেলো। সেখানে আর কোনো গাড়ি ছিল না। রঙ চটে যাওয়া একটি সাইন বোর্ড দেখা গেল যাতে লেখা আছে:

সাবধান। সামনে গভীর-খাদ।



শব্দ দুটোর মাঝে হাইফেন লাগালো কী বুঝে? স্যালি ভাবলো। কিন্তু মাথা ঘামাবে কে?



জঙ্গলে ঢুকবার পথটা মোটামুটি সাধারণ আর নিরাপদ মনে হচ্ছিল। স্যালি নিশ্চিত বুঝতে পারছে যে এটি ব্লাফ-এর সবচেয়ে উঁচু এলাকায় সেই সঙ্গে সে এও প্রত্যাশা করছিল যে, কোথাও ভয়ানক কিছু একটা দেখতে পাবে। সে এমন কোনো বিপদের আশা করেনি যেটার সঙ্গে খুব শীঘ্রই তার দেখা হয়ে যাবে।



জটিল কোঠা, আসলেই, কোনোটা কফিনের মতো, কোনোটি আবার আরও বড়। পাহাড়ের পাথর কেটে ঘরের মতো বানানো হয়েছে। যাদের মাঝে আঁকাবাঁকা করিডোর রয়েছে। সেই সঙ্গে দেয়ালের গায়ে বংশ বিস্তার করেছে শ্যাওলা আর ফার্ন। যথেষ্ট গাছপালা নেই। নিচের কুঁচিপাথরের ওপর অনায়াসে কুশন সাজানো যেতে পারে। রাস্তাটি শক্ত মাটি আর কঠিন শিলার স্তরের মাঝামাঝি অংশের ওপর দিয়ে সাপের মতো এঁকেবেঁকে চলে গেছে যেন।



ওওওইইই, বাচ্চাদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে। নয় এবং ছয় বছরের কেন্ট আর পিটার দৌঁড়াচ্ছে সামনের দিকে।



কাছাকাছিই থেকো, এখান থেকে দূরে যেও না। অ্যালেক্স ডেকে বলল। কোনো বোকামি করবে না, শুনতে পাচ্ছ আমার কথা? বুঝতে পারছ? বলো।



তারা বলল, আচ্ছা। সে পিকনিকের বাক্স নিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে ভাবল যে, আর হয়তো বাবাগিরি ফলানোর দরকার পড়বে না। স্যালি শাবানাকে কোলে নিয়ে ডায়াপারের ব্যাগ সহ তাড়াহুড়ো করে এলোমেলো পায়ে আসছিল তার পিছু পিছু। যতক্ষণ ছেলেদের দেখতে না পেলো ততক্ষণ সে হাঁটার গতি কমালো না। ছোট ছোট পদক্ষেপে চলতে চলতে সে তাদের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখতে পেল তারা কালো ফাটলের ভেতর সতর্কতার সঙ্গে ভীতিকর শব্দ করছে। সে প্রায় শ্রান্ত কণ্ঠে কেঁদে উঠে তাদের সঙ্গে রাগারাগি করলো কিছুক্ষণ।



যতক্ষণ নোংরা আর পাথুরে পথের দেখা না পাওয়া গেল ততক্ষণ সতর্কতার প্রয়োজন পড়লো না, কোনটা মনে করে তারাও তার দেখাদেখি পেরিয়ে এসেছে আধ মাইল সম্ভবত তার আগে ছিল সিকি মাইল। তারপর যেখানে উজ্জ্বল আকাশ ব্যাপক আলো ছড়াচ্ছিল, সেখানেই গিয়ে থামল তার স্বামী। নিজেকে জানান দিতে সে একটি চিৎকার করলো।



ছেলেরাও তা দেখে সত্যি সত্যি আশ্চর্য হয়ে চিৎকার করে উঠল। স্যালি জঙ্গল থেকে বের হয়ে দেখতে পেলো গাছের চূড়া থেকে ওপরে সারি বাধা পাহাড়ের শিলার স্তর-নিচে বিস্তৃত ফসলের মাঠ সবুজ আর হলুদ মিলে ঝলমল করছে।



তাড়াহুড়ো করে শাবানাকে কম্বলের ওপর বসিয়ে দিতেই সে কেঁদে উঠল।

স্যালি বলল, খিদে পেয়েছে।



ভেবেছিলাম, গাড়িতেই তার খাওয়া হয়ে গেছে, অ্যালেক্স বলল।



-তখন তো খেয়েছেই। কিন্তু আবার খাওয়াতে হবে তাকে।



সে শাবানাকে এক পাশে কাঁকালে ধরে রেখে আরেক হাতে পিকিনিকের বাক্স খুলছিল। জিনিসগুলো কী ভাবে ছিল তা কল্পনায় ছিল না অ্যালেক্সের, কিন্তু সে একটি কৌতূকপূর্ণ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গ্লাসগুলোর মোড়ক খুলে নিয়ে পকেটে রাখতে রাখতে সেগুলোকে তাদের পাশেই ঘাসের ওপর রাখছিল।



গলায় বিচিত্র একটি শব্দ করে কেন্ট বলল, আমার পিপাসা পেয়েছে অনেক।



পিটারও তার দেখাদেখি বলল, আমারও পিপাসা পেয়েছে।



চোপ! অ্যালেক্স বলল।



পিটার চুপ থাক! কেন্ট বলল অ্যালেক্স স্যালিকে জিজ্ঞেস করল, তাদের জন্য কোন ড্রিংসটা এনেছ?



কুল-এইড, নীল জগটাতে দেখ, আর প্লাস্টিকের গ্লাসগুলো ওপরে ন্যাপকিনে বাঁধা আছে।



(সময় পাইলে চলবে)



Click This Link

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: চমৎকার । প্লাস । চালানোর মতো সময় বের করতে পারেন এই কামনা করি ! :)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ শাহরিয়ার। চেষ্টা করবো অবশ্যই। ভালো থাকুন সব সময়।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২

মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার লেগেছে জুলিয়ান ভাই । এই পর্বটা ফেবুতে পড়েছিলাম । একবার যখন শুরু করেছেন, শেষটা করা উচিত । সাথে আছি ভাই ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতঃ। শুরু করেছিলাম খেয়ালের বশে, এখন নিজ থেকেই তাগিদ পাচ্ছি। তবে ফ্রি সময়টা কমে গেছে বলে একটু ভাবনা হচ্ছে। তবু আশা ছাড়ছি না। সঙ্গে থাকলে আরেকটু জোর পাবো।

৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩

এহসান সাবির বলেছেন: চলুক.....

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সাবির। আশা করি চলবে। কিন্তু সময়...

৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আপনি যেন সময় পান আর গল্পটা চলতে থাকে সে দোয়া করি !

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আমিন, আমিন! দোয়া জানি কবুল হয়।

৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:২৫

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

পড়তে খুব আরাম লাগছিল ... পরের পর্বের অপেক্ষাই রইলাম

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ। দেখি আগামি সপ্তাহে দিতে পারি কিনা কিছুটা। ততদিন ভাল থাকেন।

৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪০

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
ভালো লাগলো খুব।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ দুর্জয়। ভাল থাকুন।

৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৫

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: চলুক লেখা। চমৎকার হচ্ছে।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ খান। ভাল থাকুন।

৮| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
পড়ে পার্ট কবে?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: দিবুনি এ সপ্তাহেই। দুই এক দিনের ভেতর। ততক্ষণ ভালো থাকেন।

৯| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৭

জুন বলেছেন: পরের পর্বে যাচ্ছি
+

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

১০| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

আরজু পনি বলেছেন:

বাহ দারুণ হচ্ছে...ইচ্ছে করেই পেছনে এলাম শুরু থেকে পড়তে ।

সুযোগমতো পরেরটা পড়ে নিব ।


শুভেচ্ছা রইল ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সমস্যা নাই। ভালো থাইকেন পুরো নতুন বছর।

১১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২১

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ‘সময় পেলেই চলবে...’ B-)
অনুবাদ গল্পের মধ্যে এটি কিন্তু মৌলিক কথা, জুলিয়ান ভাই ;)


ভালো লাগছে...
এবার যাচ্ছি পরেরটিতে...

১২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: ‘কৌতুকপূর্ণ দীর্ঘশ্বাস’
কথাটিতে মজা পেলাম।
এর কী ইংরেজি হতে পারে, ভাবছি :)

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৫৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ডাক্তার। আপনি মজা পেলেন তার আগে আমি পেয়েছিলাম। গল্পে শব্দগুলো এমন > good-humored sigh ।

এটাকে আর কী বলা যায়? :D

১৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২২

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: অনুবাদ ধরছেন নাকি? বেশ ভালো। দেখি পড়ে পরের গুলো আগে

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: পড়েন। কী মনে হইলো ঝাইড়া কাইশেন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.