নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৭

১১ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৬:২৯





কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-১ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-২ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৩ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৪ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৫ কয়লাপড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৬



মাঝরাতে তীব্র আর অজানা একটি নতুন কু-উ-উ শব্দে ঘুম ভেঙে যায় মতিনের। একই সময় ঘুম ভাঙে আজগর মমতাজ আর শরবতের নেসারও। শব্দটা অচেনা মনে হলেও তাল পাতার বাঁশির সঙ্গে কেমন একটা মিল আছে মনে হলো। তাল পাতা মুড়ে বানানো বাঁশিটির শব্দ যেমন খুব বেশি দূর যায় না আকার ছোট হওয়ার কারণেই হয়তো। কিন্তু আকৃতি যথেষ্ট বড় হলে অনেক দূর থেকেই শুনতে পাবার কথা।

ঘরের পাশে মায়ের কণ্ঠস্বর শুনতে পায় মতিন, হজাগ অইসত্তিরে মতিন?

-হ মা।

-কীরম জানি একটা আওয়াজ হুনলাম, কু-উ-উ কইরা?

-আমিও হুনছি মা।

বলতে বলতে অন্ধকারেই বিছানা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে মতিন।

উঠোনে অন্ধকারে আরো দুটো বা আরো বেশি ছায়া নড়তে দেখা যায়। মতিন বলল, মায় কো?

-ইহানো।



মায়ের কাছাকাছি এগিয়ে গিয়ে মতিন বলল, তালপাতা দিয়া বাঁশি বানাইলে যেরুম আওয়াজডা আমার কাছে হেরুমই লাগলো। ঠিক তখনই ফের বার দুয়েক ডেকে ওঠে অজানা বাঁশি। আর শব্দের উৎস লক্ষ্য করে মতিন প্রায় চিৎকার করে বলে ওঠে, মনে অয় রেলগাড়ি যায়! এমন কি চলন্ত রেলের বাতির উজ্জ্বলতাও যেন সেদিকের আকাশটাকে আলোকিত করে দিয়ে মতিনের ধারণাকে সত্যে পরিণত করবার মানসে অস্থির হয়ে ওঠে। আরো দূরে আশপাশের বাড়িগুলোতেও যে মানুষ টের পেয়েছে ব্যাপারটা তা বোঝা যায় নানা আকৃতির আলোর নড়াচড়ায়। ঘটনা অদ্ভুত হলেও তার জন্যে প্রতীক্ষা ছিল সবার। আছেও। আর তাই যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে মধ্যরাতে ঘুম ফেলে বাইরে বের হয়ে আসা উৎসাহী মানুষের চাঞ্চল্যে।



বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও আর কোনো অচেনা শব্দ শুনতে পায় না তারা। কিন্তু সবাই একখানে জড়ো হয়েছে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে, তবু সেটা একটি ছোটখাটো আড্ডার আকৃতি পেতে দেরি হয় না। পাশের দু ঘর থেকে চাচি জেঠি তাদের ছেলে-মেয়েরা বেরিয়ে এলে দলটা আরো বড় হয়ে কলরবে মেতে ওঠে ঊঠানটা। এক সময় কথায় কথায় রেলগাড়ি, ফাদার প্যাট্রিক জনসন, মেম প্রসঙ্গ ছাড়িয়ে চলে আসে মতিনের বিয়ের প্রসঙ্গও। আর তখনই সে অন্ধকারে অন্যান্যদের অজ্ঞাতে চলে যায় কাচারি ঘরে। ঘুমিয়ে পড়বার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কথাবার্তা শুনতে কোনো অসুবিধা হয় না তার। এমন কি তার এও জানতে বাকি থাকে না, চৈত্র মাস ফুরালেই নতুন বছরের বৈশাখী মেলার পর আজগর আর জালালুদ্দিন সরকার কুট্টির বিয়ের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব নিয়ে যাবে।



রাতের আড্ডা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারে না হয়তো বাকি থাকা ঘুমের কারণেই। সবাই যার যেমন চলে গেলেও মতিনের ঘুম আসে না। নিশুতি রাতের প্রাণ বলা যেতে পারে জেগে থাকা ক্রন্দনরত ঝিঁঝিঁ পোকারা। তাদের ডাকাডাকি বা কান্নাকাটি না থাকলে আর কোথাও যেন কোনো শব্দ কর্ণগোচর হবার সম্ভাবনা ছিল না। তখন কবরের নিস্তব্ধতাই হয়তো রাতের জন্যে স্থায়ী হয়ে যেতো। এত ভাবনা মাথায় ঘুরপাক খেলেও কুট্টির ভাবনা কখন তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে বুঝতে পারে না। বুঝতে পারে না কুট্টির ভাবনা তাকে জানিয়ে দিচ্ছে যে, সে এখন আর সেই দুরন্ত আর দুষ্টু কুট্টিই নয়। সে এখন নারী হয়ে উঠবার অপেক্ষায় আছে কেবল। কিন্তু সে কি পারবে তার সঙ্গে মিলে মিশে থাকতে?



আজগর আর মমতাজ তো মাঝে মধ্যেই ঝগড়া লেগে যায়। এমন কি কোনো কোনোদিন সে ভাতও খায় না সারাদিন। পুকুর পাড়ে বসে থাকে মুখ ভার করে। যদিও মতিনের চোখে পড়েনি, তবে শুনেছে যে, আজগর মাঝে মধ্যে মারধরও করে বউকে। যেটা তাকে আরো বেশি অবাক করে যে, তবু তারা দুজনে একই ঘরে থাকছে। ছেড়ে যাচ্ছে না কেউ কাউকে। মারধরের মতো ব্যাপারগুলো যেদিন ঘটে সেদিন অথবা রাতের বেলা কী করে একে অন্যের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলতে পারে? একই বিছানায় শুতে পারে? নাকি একই বিছানায় বা একই ঘরে আলাদা শুয়ে থাকে পরস্পরের দিকে পিঠ দিয়ে?



ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে মতিনের ভেতরটা কেমন যেন অস্থির অস্থির মনে হয়। খুব বেশি দিন হয়নি ইয়াসিনের বোন মালুর বিয়ে হয়েছে। ঠিক বিয়ের আগের দিন পর্যন্ত সে তাদের সঙ্গে স্যাকরা বাড়ির গাব গাছে ডুমুর গাছের এ ডাল ও ডাল করে ছুটে বেড়িয়েছে। কিন্তু বিয়ের আগের দিন গায়ে হলুদ মেখে তাকে ঘরের ভেতর আটকে রাখলে ইয়াসিন বলেছিল, মালু বড় অইয়া গেছেগা। মায় কইলো। কিন্তু কোহান দিয়া বড় অইল? আবার বিয়াও দিয়ালাইতাছে!



সেই মালু স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি বেড়াতে এসেছিল এক বছর পর। খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে সে দেখা করেনি। কেমন ঘোমটা দিয়ে জড়সড় হয়ে আড়াল করে রেখেছিল নিজের মুখটি। যেন কোনোদিন চোখের দেখাও হয়নি মতিনের সঙ্গে। বেগানা অচেনা পুরুষের সামনে মেয়েরা আসতে যেমন লজ্জা পায় তেমনই আচরণ করেছিল মালু। ব্যাপারটায় মতিন যেমন কষ্ট পেয়েছিল, ইয়াসিনও কম অবাক হয়নি। সে অনেক চেষ্টা করেও ভেদ করতে পারেনি মালুর সেদিনকার আচরণের রহস্য।



সেদিন গুণবতী থেকে ফিরে আসবার সময়ও কাছে আসেনি কুট্টি। গায়ে ভালো মতো আঁচল জড়িয়ে দূর থেকে কেমন যেন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছিল। সে দৃষ্টিতে অনুযোগ বা প্রত্যাশা কোনো কিছুরই সাক্ষাৎ পায়নি মতিন। কেবল এতটুকুই মনে হয়েছিল তার যে, কুট্টি যেন হঠাৎ করেই দূরের কেউ হয়ে গেছে। এতকাল তার অযাচিত দুষ্টুমির জন্যে বেশ খানিকটা বিরক্ত থাকলেও কেমন মায়া পড়ে গেছিল সেদিন।



পরদিন স্যাকরা বাড়ি থেকে গয়না আনতে গেলে সুরঞ্জিত স্যাকরা তাকে বসিয়ে রেখে সামনে রাখা একটি জলচৌকির ওপর মেলে দিয়েছিল অনেকগুলো অলঙ্কার। যেগুলোর মাঝে দুটো সে চিনতে পেরেছিল হাতের চুড়ি আর কানের দুল। গলায় পড়বার জন্য বেশ কটা পেট মোটা দুপ্রান্ত সরু তাবিজ। নাকফুল আর নোলকও দেখিয়েছিল। এত গয়না পরে কী করবে কুট্টি, তার কি আরাম করে শোয়া অথবা ঘুম হবে? কানের দুল গলার তাবিজ বাড়তি একটা বিরক্তির বস্তু হিসেবে তাকে অস্বস্তিতে ফেলবে না?



সুরঞ্জিত উঠে গিয়ে কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এসেছিল দুটো আঙটি নিয়ে। মতিনের হাতের দুটো আঙুলে দু আংটির মাপ নিয়ে বলল, চারদিন পর যেতে। না পারলে সে নিজেই বাড়ি নিয়ে যাবে। মজুরিটাও বুঝে আনতে হবে। সেই সঙ্গে এটাও তার মাকে জানাতে হবে যে আরও পাঁচ আনা গিনি বেঁচে গেছে। সেটা দিয়ে কিছু করতে হবে কি না।

মতিন নিজ থেকেই বলে উঠল, পাঁচ আনা দিয়া চুড়ি বানানি যাইবোনি?

-একটা চিক্কণ চুড়ি অইব।

-তাইলে একটাই বানাও। মা’র হাত দুইডা খাইল্যা। একটা পিন্দলেও আরেকটা আমি ট্যাহা কামাই করতারলে বানাইয়া দেম!

সুরঞ্জিত স্যাকরা হেসে উঠে বলল, বেওয়া মানষ্যে জিনিস পিন্দন ভালা না।

মতিন প্রথমে বুঝতে না পারলেও বলে, আমার মা জিনিস পিন্দলে কার কি। মার শইল্যে একটাও জিনিস নাই।

-আইচ্ছা আমি ঠিকই চুড়ি বানাইয়া দেম। গিনি তোমরার, জিনিস তোমরার। মা তোমরার। আমার কওনের কী হক আছে?



আসলে হক নেই সুরঞ্জিত স্যাকরার। শুধু সুরঞ্জিত স্যাকরা কেন, কারোরই কিছু বলবার হক নাই। থাকা উচিতও নয়। বাড়ি ফিরে মায়ের হাতের চুড়ির কথা বলতেই মা শরবতের নেসা হাসতে হাসতে দু চোখ ভিজিয়ে ফেলে বললেন, পুত বাঁইচ্যা থাক। তর মনের ভিতরে জানি কোনো ময়লা কালির ছিডা না লাগে।



মায়ের অনেক কিছুই বুঝতে পারে না মতিন। মায়ের শখ আহ্লাদ বলতে তেমন কোনো কিছুর কথাই বলতে গেলে শোনা যায় না। তবু কিছুর কথা বললেও যেন তাতে তার আপত্তি বড় হয়ে ওঠে। তাই মায়ের কোনো ব্যাপারে খুব একটা দ্বিমত করতে পারে না।



দুপুরের খানিকটা আগে দিয়ে ইয়াসিন কোত্থেকে যেন ছুটতে ছুটতে এলো। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, মতিন্যা হুনছত্তি? যোহরের বালা রেলগাড়ি আইবো।



-কই হুনলি এই কতা?



-কুল্লো গ্যারাম অইয়া গেছেগা। মিশনের বিলাতি সাবেও কইছে। যাবিনি?



ইয়াসিনের চেয়ে তারও কোনো অংশে উৎসাহের কমতি নেই। সে তখনই বলে উঠল, ল যাই। লোয়ার গাড়ি থামবো কই? আইবো কইত্থে?



-চাঁনপুর থাইক্যা ছাইড়া আইবো। যাইবো কুমিল্লা টাউন। হাওনগাছা। গূণবতী, কুটিলা থামবো। সামনে আরো অনেক ইস্টিশন ধরবো।



সম্পূর্ণ নতুন না হলেও ইস্টিশন শব্দটা তাকে নাড়া দিল ভীষণ ভাবে। যেখানে একজন বড় সাহেব থাকে। যাকে বলে স্টেশন মাস্টার। আরেকজন থাকে টিকেট কালেকটর। চেকার। কত কী বলেছিল জনসন সাহেব। সব কিছু মনে রাখতে পারেনি সে। তার প্রচণ্ড ইচ্ছে কয়লা দিয়ে কীভাবে ইঞ্জিন চলে তা দেখা। কিন্তু কীভাবে দেখবে তা নিয়েই সে মহা দুশ্চিন্তায় আছে। কেউ জানাশোনা থাকলে তাকে বলে কয়ে দেখা যেত।

সে হঠাৎ ইয়াসিনকে বলল, তুই থাক, আমি এক দৌড়ে ঘরেত্তে কোর্তাডা লইয়া আই। বলেই সে বাড়ি অভিমুখে দৌড়ে যেতে থাকে। ইয়াসিন সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে মতিনের ফিরে আসবার অপেক্ষায়।



কিছুক্ষণ পরই প্রায় ঊর্ধশ্বাসে ছুটে আসতে দেখা যায় মতিনকে। হাতে ধরে রাখা কোর্তাটা পতপত উড়ছে যেন। কিন্তু মতিন ইয়াসিনের কাছে এলেও না থেমে বলে, দৌড় দে!



তারা ছুটতে ছুটতে কুটিলা যাবে না গুণবতী যাবে ঠিক করতে পারে না। দুটো জায়গার দূরত্বই প্রায় সমান সমান। তারা দুজনেই থেমে একটি ঘন বটগাছের ছায়ায় বসে জিরিয়ে নেয়। কিছুদিন আগে চৈত্র মাসের কোনো একটি পূজা হয়েছে হিন্দুদের। তারই নানা রকম চিহ্ন লেগে আছে বটগাছের গায়ে। ইয়াসিন বলল, ল উডি।



মতিন বলল, আমার পানির তিয়াস লাগছে। বলেই বটগাছ সংলগ্ন পুকুরে নেমে দু হাতে আঁজলায় তুলে পানি পান করে। পাড়ে উঠতে উঠতে বলে, কেরুম কষ কষ লাগলো পানিডা।



আগে খাইছত না? জানতে চায় ইয়াসিন।

-নাহ।

-পুষ্কুনীর হেই পাড় একটা চিতা আছে। চিতার কয়লা, ছালি মিশ্যা মনে কয় এরুম অইছে।



ইয়াসিনের কথা শুনে মতিনের কেমন একটা অস্বস্তি হতে থাকে। মনে হলো পেটের ভেতরটা একবার গুলিয়ে উঠল যেন। পানিটাকে কি ঘেন্না করা উচিত? তারপরই তার মন বলে যে, পানি তো পানিই। পুকুরের পানিতেও কত কিছু মিশে থাকে। এত কিছু নিয়ে ভাবলে চলে না। কীভাবে ভালো মতন বেঁচে থাকা যায় সেটাই আসল। মন থেকে যাবতীয় দ্বিধা যেন মুহূর্তেই ঝেড়ে ফেলে বলে ওঠে সে, ল সামনে যাই!



দূর থেকেই দেখা যায় রেল রাস্তার পাশ ঘেঁষে অনেক মানুষ পাশাপাশি সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরো কিছুটা পথ এগিয়ে যাবার পর তাদের চোখে পড়ে সেই ভীড়ে সব বয়সের পুরুষদের পাশে অনেক নারী, যুবতী আর কিশোরীও আছে। আছে অনেক নারীর কোলে বিভিন্ন বয়সের শিশুও। একটা অভূতপূর্ব বিস্ময়ের মুখোমুখি হতেই যেন সুদীর্ঘকালের লালিত সংস্কার আর জড়তাকে পাশ কাটিয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে চলে এসেছে নারীরাও। যারা হয়তো কোনো দিন বাপের বাড়ি আর আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো কারণে ঘরের বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। হয়তো পরে গ্রামে ফিরে গেলে অনেককে এ নিয়ে নানা কটু কথাও শুনতে হবে। কিন্তু অত্যাশ্চর্য লোয়ার গাড়ি বা রেলগাড়ি দেখবার প্রাথমিক উত্তেজনা তাদের সেই ভয় আর সংস্কারকে জয় করতে পেরেছে আপাতত।



কিন্তু কখন রেলগাড়ি আসবে তা সুনির্দিষ্ট করে জানা নেই কারো। সেখানে অপেক্ষা করবার বদলে তারা ঠিক করে আরো কিছুটা হাঁটতে পারলে কুটিলা স্টেশনেই চলে যেতে পারবে। আর সেখানে রেলগাড়িটা থামলেই সামনা সামনি দেখা এমন কি ছুঁয়ে দেখাটাও হয়তো সম্ভব হবে তাদের পক্ষে। তারা তাই রেল রাস্তার ওপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে চলে কুটিলা স্টেশনের দিকে।



হাঁটবার পরিশ্রমে অথবা সূর্যের গণগণে উত্তাপে দুজনেই ঘেমে নেয়ে এক সা। তবু পথ চলায় যেন তাদের দুজনের কারো ক্লান্তি নেই। আশপাশের গ্রাম থেকেও জমির আইল পথে আরো অনেক মানুষকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছিল। ঠিক তখনই তাদের অবাক করে দিয়ে পেছনের কোথাও কোনো গ্রামের পাশে জীবন্ত হয়ে ওঠে গত রাতের মতো কুউ-উ-উ শব্দের যাদু। আর তা শুনেই তারা দুজন ফের ছুটতে আরম্ভ করে কুটিলা স্টেশন অভিমুখে।



(আর বেশি নাই)

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৫৪

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: চলতে থাকুক।

শুভেচ্ছা জানবেন।

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছা আপনার জন্যেও।

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:০৪

তাহসিন মামা বলেছেন: ভালো লাগলো। চলুক।

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামু।

ভালো থাইকেন।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

জুন বলেছেন: আমার প্রিয় রেল্গাড়িকে ঘিরে লেখাটি লতিয়ে উঠছে জুলিয়ান ভাই। সবটুকু শেষ হোক তারপর পড়ে নেবো হাজার বছর ধরের মত গ্রামীন জীবনের উপাখ্যান।
+

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

গ্রামীন জীবনের চেয়ে মানুষকে গুরুত্ব দিচ্ছি এখানে।

ভালো থাকুন সব সময়।

৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭

মামুন রশিদ বলেছেন: আমরা কুউ শব্দ শুনতে পাচ্ছি । ভালোলাগা+

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।
ভালো থাকেন সব সময়।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: চমৎকার ...
আমি আগের পার্ট গুলো পড়িনি, এটাই প্রথম চোখে পড়লো বলে আফসোসই হচ্ছে...
শেষ পর্বটা রেখে দেবো অবশ্যই ...

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

দোষ তো আমার না।

এই জন্যই গুণীজন কহেন, যারা ঘুরাঘুরি করলে অনেক কিছুই চোখে পড়ে। :P

৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
আগের পর্ব পড়ি নি। আর বেশি নাই- তার মানে গল্প মনে হয় আগামী দু-এক পর্বের মধ্যেই শেষ হচ্ছে। এ পর্ব ভালো লাগলো। একটা পরিণতির দিকে এগোচ্ছে।

‘পথের পাঁচালি’র কথা মনে পড়লো- অপু আর দূর্গা রেলগাড়ি দেখার জন্য কীভাবে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে যেত পথঘাট, আঁখের খেত মাড়িয়ে।

শুভেচ্ছা জানবেন।

১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৪১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সোনাভাই। আগামী দু এক পর্বেই শেষ করবার ইচ্ছে আছে।

ইয়াসিন আর মতিন যখন দৌড়ুচ্ছিল, আমারও কিন্তু অপু আর দূর্গার কথাই মনে হয়েছিল। যেভবেই দেখেন, দৃশ্যটা কিন্তু ক্ল্যাসিক। অপু আর দূর্গা তাই আমাদের মনে সজীব আজও।

প্রেক্ষাপট ভিন্ন বলে সংকোচটা নাই আমার।

ভালো থাকুন সব সময়।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৫৬

বাবেষ্ট বলেছেন: More beautiful- better then bevor!

১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ বাবেষ্ট। আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।

৮| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:৩৭

জাফরুল মবীন বলেছেন: বিভিন্ন ব্লগারের পোষ্টে করা আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যগুলো আপনার ব্যাপারে আমাকে আগ্রহী করে তোলে।আপনি সিরিজ আকারে লিখে থাকেন।প্রথম থেকে না পড়লে বোঝা যাবে না তাই আপনাকে অনুসরণে নিলাম সময় নিয়ে সেগুলো পড়ে দেখার জন্য।শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা দু’টোই জানিয়ে গেলাম আপনাকে।

১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ জাফরুল মবিন।

ভালো থাকুন সব সময়।

৯| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৭

আহসানের ব্লগ বলেছেন: ভালো লাগা + + +

১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আহসান। ভালো থাকেন সব সময়।

১০| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুলিয়ান সিদ্দিকী ,




কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙের ভেতর থেকে অনিন্দ্য আর এক রঙ তুলে আনলেন -
মতিন নিজ থেকেই বলে উঠল, পাঁচ আনা দিয়া চুড়ি বানানি যাইবোনি?
-একটা চিক্কণ চুড়ি অইব।
-তাইলে একটাই বানাও। মা’র হাত দুইডা খাইল্যা। একটা পিন্দলেও আরেকটা আমি ট্যাহা কামাই করতারলে বানাইয়া দেম!


আর মায়ের এ কথাটুকু - তর মনের ভিতরে জানি কোনো ময়লা কালির ছিডা না লাগে ।
যেন সব সন্তানের ভেতরেই বুনে দেয় এক স্বজ্ঞানতার বীজ .....

১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস। ভালো থাকেন সব সময়।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪১

এহসান সাবির বলেছেন: চলুক।

খারাপ লাগছে না।

১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এতে সাহস পাই।

ভালো থাকুন সব সময়।

১২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২১

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:

প্রতিটা পর্বই ভালো লাগছে!!

চলুক ভাই!!

১৩ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ একজন ঘূণপোকা। ভালো থাকেন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.