নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-১০ (শেষাংশ)

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:০৩





কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-১ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-২ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৩ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৪ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৫ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৬

কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৭ কয়লা্পোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৮ কয়লাপোড়া দীর্ঘশ্বাসের রঙ-৯



ইঞ্জিন থেকে নামবার পর কোথাও একটু খানি বিরতি না দিয়ে টানা হেঁটে সিদ্ধেশ্বরীতে ফিরে আসে মতিন। গাও গোসল দিয়ে বেজায় ক্লান্তিতেই হয়তো না খেয়ে শুয়ে পড়েছিল বিছানায়। আর সে অবস্থায় কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল বলতে পারবে না সে।



গতরাতে গোসল শেষে বনমালীর ঘরের বারান্দায় চিঁড়া-গুড় মাখিয়ে খাওয়ার পর বেশ ভালো ঘুম হয়েছিল তার। সকালের দিকে ঘুম ভাঙলে তার মনে পড়েছিল বিগত রাতের কথা। উঠে পড়ে সে আবিষ্কার করে যে,গায়ের ওপর পাতলা একটি কাঁথাও রয়েছে। আর সেটাই তাকে অবাক করেছিল ভীষণ।



মেঝেতে খড় বিছিয়ে তার ওপর একটি কাঁথা বিছিয়ে দিয়ে ঘুমের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বনমালী। কিন্তু রাত গভীর হলে খানিকটা শীত শীত মনে হলে নিজের অজান্তেই কখন পরনের লুঙ্গীটা টেনে উঠিয়েছিল গায়ের ওপর তা জানার কথা না তার। নারী মনের সহজাত কৌতূহল থেকেই হয়তো কুপি হাতে দরজা খুলে উঁকি দিয়েছিল মিনতি। আর কুকরে-মুকরে ঘুমিয়ে থাকা মতিনকে দেখে ঘর থেকে পাতলা কাঁথাটি এনে গয়ের ওপর বিছিয়ে দিয়েছিল তার। দৃশ্যটা কারো গোচরীভূত হবার কথা না থাকলেও বনমালী ঠিকই দেখেছিল রাতের প্রহরায় ঘুরতে ঘুরতে পুরোনো অভ্যাসবশে বাড়ির আঙ্গিনায় চলে এলে। দীর্ঘদিন পর তার মুখে একটি নীরব হাসি ফুটে উঠলেও তা রাতের অন্ধকার ছাড়া আর সবার দৃষ্টির আড়ালেই থেকে গিয়েছিল। প্রকৃতি বাপ-বেটিকে নিয়ে যে রহস্যটির জন্ম দিয়েছিল তাও আড়াল হয়ে থেকে গেল রাতের জঠরে।



মিনতির সঙ্গে সেদিন আর দেখা হয়নি মতিনের। কিন্তু বাড়তি একটা যত্ন পাবার যে লোভ তার মনে হঠাৎ করেই অঙ্কুর মেলবে তাই বা কে জানতো। আর তাই হয়তো কোম্পানির বাংলোতে থাকার চেয়ে বনমালীর ঘরের বারান্দাটিই তার কাছে অনেক বেশি নির্ঝঞ্ঝাট আর প্রশান্তি দায়ক মনে হয়েছিল বলে পার্কার ম্যাথিউজকে নির্দ্বিধায় বলে দিতে পেরেছিল,আইল স্টে উদ বনমালী নেক্সট টাইম।



পার্কার কেমন যেন দৃষ্টি সরু করে একবার তাকিয়েছিল মতিনের দিকে। কান চুলকাতে চুলকাতে কেমন বিষণ্ণ স্বরে বলেছিল,অ্যাজ ইউ লাইক!



ক্ষুধার তাড়নায় মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে অন্ধকারে কিছুই ঠাহর করতে পারে না মতিন। বিছানা হাতড়ে হাতড়ে নিজের অবস্থান বুঝতে চেষ্টা করে প্রথমে। তারপর আস্তে আস্তে ডাকে,কুট্টি,কুট্টি!



কিন্তু কুট্টির কোনো সাড়া না পেয়ে সে অন্ধকারেই হাতড়ে হাতড়ে দরজা খোলে। দরজার কপাটের ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হয়তো বেশিই হয়। পাশের ঘর থেকে শাশুড়ির কণ্ঠস্বর ভেসে আসে,মতিনে উঠলা?



-হা। মামি।



-এই ঘর আইও।



সে ঘরের দরজা বাইরে থেকে টেনে দিয়ে উঠোনে এসে দাঁড়ায়। তার কিছুক্ষণ পরই কুপি হাতে ঘর থেকে বের হতে দেখা যায় কুট্টিকে। মতিনের মুখোমুখি হয়ে ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল,কই আছিলেন দুইডা দিন,বাইত গেছলেননি না?



-না। বেইন্যালা বাইত যাইয়াম।



-হাত মুখ ধুইয়া লন,ভাত খাইবেন।

বলতে বলতে পুকুরের দিকে হাঁটে কুট্টি। পেছন পেছন হাঁটে মতিন। বলে,চাকরিত যাইতাছি তরে কইয়া না গেলাম?



-মনো নাই কি কইছলেন! চাকরি কী? কীরম?



কুট্টির মনের শৈথিল্য হয়তো দূর হয়নি এখনো। ব্যাপারটা এই কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত তার মনে ছিল না। কুট্টির জিজ্ঞাসার সূত্র ধরেই ভাবনাটা যেন ফের শাখা-প্রশাখা মেলতে আরম্ভ করে তার মনের ভেতর। একবার স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে যেন তার মনের অবস্থা পরিমাপ করতে চায় সে। কিন্তু কুপির লালচে আলো দিনের আলোর মতো অতটা পরিষ্কারভাবে দৃষ্টিগোচর করতে পারে না তার অবয়ব। তাই কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়েই পুকুরে নামে সে। কালচে পানিতে হাত-মুখ ধুয়ে ওপরে উঠে এলে কুট্টি ফের আগে আগে হাঁটে। হাতে ধরা কুপির আলো সামনে থাকায় কুট্টির দেহের ছায়ার কারণে পেছনের পথ অন্ধকার হয়ে থাকে। চলতে অসুবিধা হলেও কেন যেন কিছু বলতে ইচ্ছে হয় না মতিনের।



খেতে বসলে মামি তার সামনে খাবার এগিয়ে দিতে দিতে বলেন,জামাই মানুষ কিছু না কইয়া কই গেলাগা,তোমার মামু দুইদিন ধইরা পেরেশান!



কথা শুনেই চকিতে একবার কুট্টির দিকে তাকালে সে দেখতে পায় সে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো কথাটা সে কাউকে বলেনি ইচ্ছে করেই বা বলতে ভুলে গেছে। ভাতের থালা টেনে নিয়ে সে জানায়,আমি রেল কম্পানিত চাকরি লইছি এই কথা আমনের মাইয়ারে কইছলাম।



-মাইয়ারে কইবা ব্যাডা,আমরা কি আছিলাম না? একটা কাম করবা কাউরে জিগান হোনানের কাম নাই? ময়-মুরুব্বীর লগে বুঝ-পরামিশ না কইরা কোট্টে কোট্টে কাম কইরালাইলে ইষ্টি-কুডুমের কোন কাম?



ব্যাপারটা খুব ভালো মনে হলো না মতিনের কাছে। কুট্টি যদি কথাটা জানাতো তাহলে হয়তো এত কথা শুনতে হতো না তাকে। তা ছাড়া সেও তো জানতো না যে,যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজে যোগ দিতে হবে। এমন সম্ভাবনার কথা তার ভাবনায় এলে সে তো অবশ্যই জানাতো কথাটা। কিন্তু এখন তাদের কী করে বোঝাবে যে,এমনটা সে ইচ্ছে করে বা তাদের অবহেলা করে করেনি। পাশের বিছানায় হাশেম মিয়া হয়তো ঘুমাননি। শুনতে পাচ্ছেন তাদের কথাবার্তা। মাঝে মধ্যে নড়াচড়া করছিলেন তিনি। হয়তো শাশুড়ি-জামাতার কথার মাঝে জড়াতে আগ্রহী নন বা এখনো রেগে আছেন।



সবগুলো মিলিয়ে হঠাৎ করেই যেন খাবারগুলো বিস্বাদ মনে হয় মতিনের কাছে। ইচ্ছে হয় এখনই উঠে যেতে। কিন্তু আবার নতুন কোন সংকট সৃষ্টি হয় সে আশঙ্কাতেই সে না খেতে পারলেও থালার ভাত নাড়াচাড়া করতে থাকে। তার দিকে কারো তেমন মনোযোগ নেই বলেই হয়তো ব্যাপারটা মা অথবা মেয়ে কারো চোখে পড়ে না।



কিছুক্ষণ পর থালা ঠেলে দিয়ে হাত ধুতে ধুতে সে জানায়,নাহ,খাইতাম না আর। শইলডা কিরম জানি ভালা লাগতাছে না! তারপর উঠে পড়ে সে জানালো, বেইন্যালা কইলাম আমি যায়াম গা।



-আইচ্ছা। যাইও। তোমার মা নয়তো আজগররে কইও একবার আইতো।



-আইচ্ছা।



বাইরে বেরিয়ে আসতেই মতিনের ইচ্ছে হয় তখনই বাড়ির দিকে হাঁটতে আরম্ভ করে। কিন্তু পরদিন যখন গ্রামের লোকজন জানবে যে,হাশেম মিয়ার জামাই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে চলে গেছে,তাহলে দু পক্ষকেই নানা রকম উদ্ভট কথার মুখোমুখি হতে হবে। যে করেই হোক কোনো রকমে রাতটা পার না করলে উপায় নেই। সে গুণবতী ছেড়ে যাচ্ছে,দু চার-পাঁচজন গ্রাম বাসীর চোখে না পড়লে অশোভন দেখায়।



ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লেও বেশ কিছুক্ষণ সে অপেক্ষা করে কুট্টির জন্যে। কিন্তু কুট্টির আসবার কোনো লক্ষণ দেখতে না পেয়ে নিরাশ হয়েই সে আশ্রয় নেয় ঘুমের কাছে। জেগে জেগে শরীরকে কষ্ট দেবার মানে ইঞ্জিনের ভেতর নিজের কষ্টটাকে আরো কয়েকগুণ করে তোলা।



সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই মতিন গিয়ে দাঁড়ায় মামির সামনে। মামি,আমি তাইলে যাই। মামু কই?



-তোমার মামুরে দেখলাম গরু দুইডারে লইয়া কই জানি গেলো। গেলেগা নাস্তা-পানি কিছু কইরা যাও।



-নাহ। অনেক পথ। কুট্টিরে কাইল খাওনের পরে আর দেখলাম না।



-মাইয়াডার শইল বেশি ভালা না। কবিরাজের বাইত যাইবো কইলো।



-কতক্ষণে আইবো কইছে কিছু?



-কতক্ষণে আইয়ে ঠিক আছেনি কোনো! তুমি গেলে তাইর লাইগ্যা কতক্ষণ দিরং করবা, তোমার তরাইয়া?



-আইচ্ছা,তাইলে যাই।



-খাইয়া গেলা না কোনো তান!



মতিন আর কিছু বলতে উৎসাহ পায় না। আরো দু মামার কারো সঙ্গেই দেখা হয় না তার। মামিদেরও নানা কাজের ব্যস্ততায় তেমন কোনো কথা বলবার সুযোগ হয় না। হয় না সৌজন্যমূলক কথাও। বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় উঠে তার মনে হয় কোথাও বড় রকমের একটি প্যাঁচ লেগে গেছে। তার সঙ্গে সবার শীতল আচরণেই তা পরিষ্কার। কিন্তু মূল বিষয়টা যে কী,তাই সে জানতে পারলো না কারো মুখে। এমন অবস্থায় বাড়ি গেলে মা,ভাই এমন কি মমতাজের জিজ্ঞাসার মুখেও পড়তে হবে তাকে। কিন্তু তাদের জিজ্ঞাসা ন্যায্য হলেও সে কী জবাব দেবে তাদের? সে যদি বলে মূল ঘটনার কিছুই সে জানে না। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই পালটা প্রশ্ন উঠবে যে,তাইলে হুদাহুদিই তারা তর লগে এমন করল? না হয় কাজটা সে কাউকে না জানিয়েই নিয়েছে। নয়তো কারো সঙ্গে বুঝ-পরামর্শ না করেই ইঞ্জিনে উঠে গেছে,কিন্তু তাদের কার কী বলার আছে তাও তো কেউ বলল না পরিষ্কার করে। তাহলে তার দিক দিয়ে কোন অন্যায়টা হয়ে গেল এমন?



পথ চলতে চলতে সে গুণবতী রেল রাস্তায় উঠে পড়লে দেখতে পায় পেছনে সূর্য উঠে গেছে বেশ খানিকটা ওপরে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ভেবে ঠিক করতে পারে না বাড়ি যাবে না কি কুটিলা স্টেশন যাবে। শেষে অনেক ভেবে সে স্থির করে যে,না বাড়ি, না শ্বশুরবাড়ি কোথাও যাবার আর ইচ্ছে নেই তার। এখন থেকে কুটিলাই হবে তার স্থায়ী নিবাস। জনেজনে মন রেখে চলা আর কারো পক্ষে সম্ভব হলেও তার পক্ষে সম্ভব নয়।



পরিশিষ্ট:



পার্কার ম্যাথিউজ কোনোভাবেই রাজি হয়নি ইঞ্জিন চালনা শিখতে। তার নাকি ভয় হয়। মনে হয় পেছন থেকে যদি বগিগুলো ছিটকে পড়ে? তাহলে মানুষ মারা যাবে অনেক। আবার ইঞ্জিন থামাতে গেলে যদি ইঞ্জিন না থামে তাহলে তার কী হবে? এইই ভালো সে কয়লাবরদার হয়েই কাটিয়ে দেবে বাকি জীবন। বছর খানেকের ভেতর তার স্ত্রী সন্তান আর মা চলে এলে কোম্পানির বাংলোতেই থাকতে পারবে সবাই মিলে। যেহেতু মতিন থাকে বনমালী দাশের বাড়িতে। একা একা তার নিজের কোনো সমস্যা নেই।



অন্যদিকে ইঞ্জিন চালনায় মতিনের হাতেখড়ি খুব ভালোভাবেই হয়েছিল। এ নিয়ে বেজায় খুশি বিলি জনসন। দিনেদিনে তার কর্মদক্ষতা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে তার সুনাম,আর সুনামের সঙ্গেসঙ্গে তার পিতৃদত্ত নাম মতিনের চেয়ে মারটিন নামটাই প্রচার পেতে থাকে। একদিন আসাম রেলওয়ের বড় সাহেব তাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়ে জানায় যে, খুব শীঘ্রই তাকে ভারতের বড় কোনো জংশনে বদলি করা হবে। এই খুশির সংবাদে তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে না পড়লেও কেমন জ্বলতে থাকে। ইচ্ছে হয় এক ছুটে চলে যায় সিদ্ধেশ্বরী। মাকে জড়িয়ে ধরে বলে যে, সে আরো বড় জায়গায় যাবে খুব শীঘ্রই। কিন্তু তখনই তার আরেক মন বলে, থাউক,এই পর্যন্ত কেউ যহন আমার খোঁজ-খবর করলো না,তাইলে কার লাইগ্যা কানতাম?



(শেষ হইল।)

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:১৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: কিন্তু বাড়তি একটা যত্ন পাবার যে লোভ তার মনে হঠাৎ করেই অঙ্কুর মেলবে তাই বা কে জানতো। মানব মনের এই রহস্যটা থেকেই যাবে আজীবন।।
শেষে এটুকুই বলবো,গল্পটা শেষ হয়েও হইলো না শেষ।।
পরের লেখায় কবে হাত দিচ্ছেন??

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী।

লেখাটা আমার মতে ছোটগল্পের আদলে শেষ হলেও শেষ পর্যন্ত একটি উপন্যাস। তবে, পাঠক-সমালোচকরাই ঠিক করুক এটার গঠন।

লেখা তো থেমে নেই। চলছে একটি ছোটগল্প।

ভালো থাকবেন, এই শুভ কামনা জানাই।

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পাইলাম আমি ইহারে পাইলাম!

শেষটা দারুণ হয়েছে। এইটারে নভেল না বলে নভেলেট বলা উত্তম, ওই ক্রাইটেরিয়ায় খাপ খেয়ে যায় সুন্দরভাবে। মতিনের একাকীত্ব, উন্নতির সাথে সাথে মানসিক অবস্থার বিশ্লেষণ নিয়ে সামনে আরও কিছু লেখার প্ল্যান আছে কিনা জানায়েন।

উপভোগ্য একটা লেখা। অন্য জগতে, অন্য সময়ে নিয়ে গেছিলেন।

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৫১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু।

এটা যেভাবে শেষ হয়েছে সেভাবেই থাকুক। ব্যাটা বড্ড যন্ত্রণা দিছে আমারে। না জানা বিষয় নিয়া লেখা খুব কষ্টের কাজ। :)

তবে আমি পরিতৃপ্ত।

ভালো থাকেন আপনি। এই কাহিনীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেন যতকাল এটা পাঠকের পছন্দের তালিকায় থাকবে।

৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০৯

মামুন রশিদ বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কু উপরেই আছেন, হলদে বাতির কারাগারের কথা মনে আসছে । কি এক ভাব ই না উস্কে দিলেন, কারিগরের হাতে পড়ে তা এক বিস্তৃত পটভূমি পেল । উপমহাদেশে রেলের সেই না জানা প্রারম্ভিক পর্ব, সমকালীন জন জীবনের ভাবনা আর চিত্ররুপ, কি অপরুপ ভাবেই না উঠে এলো লেখায় ।

তবে শেষটায় এসে কিছুটা হতাশ হলাম । লেখা শেষ করে দেয়ার পূর্ব প্রস্তুতি উপন্যাসের স্বাভাবিক বিস্তারকে রুদ্ধ করেছে । স্নিগ্ধতা ছড়ানো লেখাটি হঠাৎ করেই যেন শেষ করে দেয়া হয়েছে । মতিনের নতুন জীবন, একাকীত্ব, মিনতি- কোন কিছুই পূর্ণতা পায় নি ।

সম্ভব হলে শেষটা পূনরায় লিখবেন ।

২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:০৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।

আপনি তো আমার দুঃখটা বোঝা উচিত ছিল। না জানা বিষয় টানাটানি অনেক কষ্টের। শুরুতে আমার ইচ্ছে ছিল এটা ছোটগল্প হবে। বিস্তৃত হতে থাকলে ভাবলাম বড় গল্প হবে। কিন্তু না দেখা গেল এটা নভেলা/নভেলেট/উপন্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কিন্তু সমাপনী দিয়ে আবার ফিরে আসছে ছোটগল্পের অনুভূতি।

পুনরায় লেখা আমার জানে কুলাবে না। :P

ভালো থাকেন সব সময়। আরো ভালো গল্প দিতে চেষ্টা করবো। তবু এটা নিয়ে বিপদে থাকতে চাই না।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০০

জুন বলেছেন: মাইনাস জুলিয়ান ভাই :(
এটা কেমন শেষ হলো ! কেমন অতৃপ্তি রয়ে গেল। আরেকটু বড় করেন । বড্ড তাড়াহুড়ো করলেন শেষে। মনে হলো কেউ যেন আপনাকে দিব্বি দিয়েছে আর না লেখার জন্য :(
তারপর ও লেখকের স্বাধীনতার কথা ভেবে চুপ থাকলাম :(
+

২২ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আপু না ভালা!
মাইনাস দিলেন বইল্যাই এই কাহিনীর সংজ্ঞা পালটাইয়া ছোটগল্প করা হইল। আর ছোটগল্প এমনই হয়। :)

ভালো থাইকেন অনেক। ব্যাঙ্ককে আছেন, মিছিলে যাইয়েন না কইলাম। রাষ্ট্রদ্রোহী হইবেন তাইলে।

৫| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
শেষ ২ পর্বে এসে অতৃপ্তি রয়ে গেল ৷ চটজলদির আভাস ছিল ৷ তবে একে আরো বিস্তৃতি দেওয়া উচিত ৷ বিরতির সময় নেন ৷ পরিশিষ্টকে লেখায় অনুপ্রবেশ করিয়ে দিন পরবর্তীতে ৷

আপনার কাছেই পরে পরিপূর্ণ রূপ নিবে আশা করি ৷ সেটাই প্রাপ্য হবে ৷

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর আলম৫২।

আমার লেখাগুলো মাঝে মাঝে পড়ি। তখন যদি কিছু পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করবার প্রয়োজন হয় করে ফেলি।

এটার ক্ষেত্রে এমন হলে করে ফেলবো সন্দেহ নাই।

ভালো থাকুন সব সময়।

৬| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৪

আবু শাকিল বলেছেন: গ্রামীণ ভাষা গুলোতে ভালই রস ঢেলেছেন =p~

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আবু শাকিল।

ভালো থাকুন সব সময়।

৭| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুলিয়ান সিদ্দিকী ,



(শেষ হইল।)
না.... শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ .......

সহ ব্লগার মামুন রশীদ আর জুন এর মন্তব্যের প্রতিধ্বনি করছি ।

কয়লা পোড়ার গন্ধই পেলুম... রঙটা দেখাতে গিয়েও দেখালেন না । আপনিও কি অভিমান করেছেন ?

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: লেখকদেরই তো অভিমান বেশি থাকে।

ধন্যবাদ আহমেদ জী এস। ভালো থাকুন সব সময়।

৮| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৯

আরজু পনি বলেছেন:

সবগুলো পর্ব পড়া হয় নি যতদুর মনে আছে...
তবে এই পর্বটা আলাদা মনে করেই পড়লাম, শেষ লাইনটা বড্ড টনটন করে উঠলো।

যেখানে অভিমানের কোন মূল্য নেই
সেখানে অভিমান করার মতো বিরম্বনা আর নেই।

শুভেচ্ছা রইল।।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আরজুপনি।

অভিমানের মূল্য দিতে হলে অভিমান ব্যাপারটা বুঝতে হয়। মানব মনের সূক্ষ্ম এই ব্যাপারটির হদিস খুব কম মানুষের কাছেই প্রকাশ হয়। তাই সংসারের হাজারো অভিমানের ঘটনা ঘটে, কোনোগুলোর প্রকাশ ঘটে বেশির ভাগই প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে ভেতরে ভেতরে বদলে যেতে থাকে মানুষগুলো।

ভালো থাকবেন সব সময়, এই শুভ কামনা।

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

এহসান সাবির বলেছেন: আমার ১ম থেকে রিভাইস দিতে হবে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:৩৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ এহসান সাবির।
ঈদের সময়টা ভালো কাটুক, ভালো থাকুন সব সময়।

১০| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৪৯

সাদাসিধা মানুষ বলেছেন:
একটানা সবগুলো পর্ব পড়লাম
খুবই ভাললেগেছে। মাকে পুরোপুরি ভুলায়ে দিলেন?

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সাদাসিধা মানুষ।
ভালো থাকুন সব সময়।

১১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চতুর্থ ভাললাগা । সুন্দর +

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:০৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম আনোয়ার।

ভালো থাকেন সব সময়।

১২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪৯

দ্য ইলিউশনিস্ট বলেছেন: আরজুপনি আপুর মন্তব্য পড়ার পর শেষ লাইনে কি আছে পড়ে দেখার ইচ্ছা হল। কি অদ্ভুত। এখন শেষের মাত্র দুইটা লাইন পড়ে পুরো উপন্যাসটা পড়তে ইচ্ছা করছে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আগ্রহ ভালো। পইড়া দেখেন সবটা। তারপর কেমন মনে হইলে আমরাও জানতে পারবু।

আমার পোস্টে সেই সঙ্গে স্বাগতম জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.