নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছাইয়ের নেই আগুনের ভয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী

জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষবার কখন

০১ লা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮



(ফোটো: গুগুল)

আয়নার ভেতর দিয়ে একমনে সূচিকর্মে নিবিষ্ট রুমানাকে দেখতে দেখতে হঠাৎ মনের ভেতর কেমন কেমন করে ওঠে সালেক আহমেদের। অনেক দিন হয়ে গেল পাশাপাশি বসে দুটো কথা বলা হয় না। এক সঙ্গে কোথাও যাওয়া হয় না। ভালো করে তার মুখটা কতদিন দেখেন না। এমন কি শেষবার কবে আদর করেছিলেন তাও যেন ভুলে গেছেন তিনি। অথচ বরাবর শান্ত রুমানা এ নিয়ে কোনো জেদ বা অনুযোগ করেননি। অন্যদিকে অফিস ব্যবসা আর নানা ধরনের ব্যস্ততার অজুহাতে দিনের পর দিন সরে থেকেছেন ঘর আর স্ত্রীর কাছ থেকে।



গলায় টাই বাঁধতে বাঁধতে রুমানাকে অনেকদিন পর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলেন তিনি। কানের ওপরাংশে বেশ কয়েকটা পাকা চুল দেখা যাচ্ছে রুমানার মাথায়। তার এমন বয়সে মেয়েদের ঔজ্জ্বল্য বাড়তেই দেখা যায়। দেখা যায় রূপ আর শরীরের প্রতি বাড়তি যত্নের ছাপ। আর রুমানার যেন এদিকটাতে কোনো খেয়াল নেই। আবার কোনো কোনো মেয়ে এ বয়সে এসে স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে নিজের চেয়ে কম বয়সের ছেলেকে বিয়ে করতেও কুণ্ঠা বোধ করে না। অবশ্য সন্তান-সন্ততির দড়ি-দড়াতে আটকা পড়ে গেলে হয়তো মনের গহীনে লালিত অনেকটা সাধ বিসর্জন দিতে হয় স্বেচ্ছায়। যে ত্যাগের ভেতর দিয়ে ভিন্ন কোনো তৃপ্তি লাভের সুযোগ হয়তো থেকে যায় মেয়েদের ক্ষেত্রে।



একটা সময় বেশ সাজগোজ করতো রুমানা। বিশেষ করে চুল বাঁধার নানা রকম কৌশলের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। একবার কোনো এক জাপানী মহিলার কাছে চুলের বিভিন্ন স্টাইলের ওপর প্রশিক্ষণও নিয়েছিল। কিন্তু কেন যে আস্তে আস্তে সে ঘরকুনো হয়ে গেল সেটা আজও বিস্ময়ের ব্যাপার হয়ে আছে সালেক আহমেদের জীবনে। রুমানার মাথার সিঁথির কাছটাতে বেশ খানিকটা চুল উঠে গিয়ে কপালের অংশটা বড় হয়ে গেছে বলা যায়। নিজের দিকে আজকাল তাকাবার ইচ্ছে হয়তো তার হয় না। নয়তো অন্য কোনো মেয়ে হলে হয়তো আরো আগেই পাকা চুলগুলো তুলে ফেলতো বয়স লুকাবার জন্যে। পোশাকের দিক দিয়েও এক সময়ের রুচিশীল রুমানা স্বামীর টি-শার্ট আর একটি কটনের ঢিলেঢালা প্যান্ট পরে আছেন। অথচ দুরন্ত যৌবনের দিনগুলোতে যখন মেয়েরা টাট্টু ঘোড়ার মতো টগবগ করে ঘুরে বেড়ায়, সে সময় তার একমাত্র পছন্দের পোশাক ছিল শাড়ি ব্লাউজ। স্মার্ট মেয়েদের জন্য তখন চালু ফ্যাশন ছিল প্যান্ট-সার্ট। কিন্তু রুমানা সেদিকে ভ্রূক্ষেপও করেননি। আরেকটা ঝোঁক তার ছিল, গয়নার প্রতি। আজ কানে গলায় বা হাতে কেবল বিয়ের আংটিটা ছাড়া আর কোনো অলঙ্কার নেই। নাকে আছে সেই কোন আমলের একটি হীরকের নাকফুল।



বিয়ের পরপরই দুজনে যখন আগ্রা ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন, তখনই নাকফুলটা পছন্দ করেছিলেন রুমানা। সালেক আহমেদও দাম নিয়ে ভাবেননি। সেদিনই কিনে দিয়েছিলেন। হোটেলে ফিরে এসে আবদার করেছিলেন, তিনি যেন তার নাকে পরিয়ে দেন বিয়ের শুভেচ্ছা হিসেবে পাওয়া আগেরটি খুলে।



টাই বাঁধা হয়ে গেলে গেরোটাকে গলার দিকে আরো খানিকটা ঠেলে টাইট করতে করতে তিনি ভাবছিলেন, রুমানা কি দিনের পুরোটা সময় সুই সুতো নিয়ে কাটান? বাড়ি থেকে বের হবার কি কোনো প্রয়োজন পড়ে না? তার ব্যক্তিগত কোনো জিনিসের প্রয়োজন হয় না। কবে যে তাকে সঙ্গে নিয়ে মৌচাক নিউমার্কেট ঘুরে ঘুরে ছোটখাটো দরকারি জিনিসগুলো কিনে দিয়েছেন সময়টা অনুমান করেও কাছাকাছি মেলাতে পারবেন না। এমন কি এক বছরের ব্যবধানেও অনুমানটা করতে পারবেন না। যদিও আগের মতো শরীর স্বাস্থ্য আর চেহারা নেই রুমানার। তবু কোথাও যেন এখনও বেশ খানিকটা মুগ্ধতা জড়িয়ে আছে। আর তখনই তিনি মনে মনে চায়না যাবার প্ল্যানটা বাতিল করে দিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় ফ্লাইট আগামী পরশু দিন সকাল দশটায় মিটিং। একদিন আগে গিয়ে মোটামুটি ঘুরে ফিরে বিশ্রাম নিয়ে ফুরফুরে মনে মিটিঙে যোগ দেবার ইচ্ছে ছিল তার। আর সে জন্যেই পোশাক-পরিচ্ছদে তৈরি হচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই রুমানার জন্যে কেমন করে উঠল মনটা। কতদিন হয়ে গেল স্বামী সঙ্গ পায় না। তিনি নিজেও যেন স্ত্রীর প্রতি অবহেলার কারণে ছোট হয়ে যাচ্ছিলেন নিজের কাছেই।



রেহানা যেবার পি.এ হয়ে জয়েন করলো, তার মাস খানেক পর থেকেই ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছিল তার ব্যস্ততা। সে সঙ্গে তৈরি হতে আরম্ভ করেছিল নিত্য-নতুন অজুহাত। এর কিছুই হয়তো টের পাননি রুমানা। অথবা টের পেলেও ঘর আর দাম্পত্য জীবনের শান্তি বজায় রাখতে চুপ থেকেছেন। তা ছাড়া বিয়ের পরপরই সালেক আহমেদের নাক ডাকার বিকট শব্দে রাতের ঘুম হারিয়ে গিয়েছিল রুমানার। ব্যাপারটা জানতে পেরে তিনিই প্রস্তাব রেখেছিলেন পাশের রুমে যেন ঘুমায় সে। যেহেতু ঘুমের সময়টুকুতে প্রেম-ভালোবাসার কোনো সুযোগ নেই, কাজেই বিনা প্রয়োজনে ঘুমের ক্ষতি করবার কোনো মানে হয় না। রুমানার বয়স তখন অল্প ছিল বলে ব্যাপারটা মেনে নিতেও আপত্তি করেনি। হতে পারে আলাদা ঘুমাতে ঘুমাতে ব্যাপারটার সুবিধাটা উপভোগ করতে পারছিল বলেই দিনের পর দিন স্বামীর সঙ্গ থেকে বঞ্চনাকে অতটা গুরুত্ব দেননি। তা ছাড়া তার দৈহিক চাহিদাটাও তেমন বেশি ছিল না, যতটা কাম্য ছিল স্বামীর মনোযোগ।



রেহানা একবার বলেছিল, মুখে মুখে বউটার অত প্রশংসা কর, তবু কোন বিবেকে আমাকে ছিবড়ে বানাচ্ছ দিন দিন? আমারও তো ঘর-সংসারের সাধ-স্বপ্ন আছে। বউয়ের কাছে ফিরে যাবার আগে দেখে শুনে আমার ভালো একটা বিয়ে দিয়ে দাও। তোমার দিকে আর হাত বাড়াবো না।



-আমি তো জোর করে বা এক তরফা তোমাকে টানছি না আমার দিকে। তুমি এক পা আগালে আমি এগিয়েছি দু পা। এর বেশি তো আমাকে দায়ী করতে পার না।



কপট গাম্ভীর্যে কথাগুলো বলছিলেন সালেক আহমেদ। তা ছাড়া এতদিন ধরে তোমাকে যত্ন-আত্তি আর পলিস করলাম কোন আশায়?



-কোনোদিন নিরাশ তো আর করিনি নিজের ইচ্ছায়।



রেহানা যেন খানিকটা ঝগড়ার মানসিকতা নিয়েই মুখ খুলেছিল। বলেছিল, যখন যেভাবে আর যেখানে চেয়েছ সেভাবেই পেয়েছ। কিন্তু সামাজিকতা, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন বলে কিছু ব্যাপারকে তো অস্বীকার করা সম্ভব না। আধবুড়ি দুর্নামটা যে কেমন, যার ঘরে আধবুড়ি মেয়ে নেই সে বুঝবে না কোনো দিন।



-আচ্ছা, আচ্ছা। মেনে নিচ্ছি।



বলে, এগিয়ে গিয়ে রেহানাকে আলতো জড়িয়ে ধরেছিলেন সালেক আহমেদ। তারপর চোখে চোখ রেখে বলেছিলেন, তোমার পছন্দের কেউ থাকলে বল, ব্যবস্থা একটা করে ফেলি।



-আর ব্যবস্থা!

বলে, ঠোঁট উলটিয়েছিল মেয়েটা। ফের কণ্ঠে খানিকটা অভিমান ঢেলে দিয়ে বলেছিল, আমজাদ বেকার ছিল বলে, বেচারাকে কেউ পাত্তা দিল না।



শেষটায় অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে একটা সরকারী চাকরি জোটালেও কম বেতন আর দূরের জেলায় পোস্টিঙের অজুহাতে বাবা-মা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাকে।



-এরপর আর একটা চেষ্টা করে দেখতে পারতে।



-কখন? চেষ্টা করতে হলে মুক্ত থাকতে হবে না? পুরো একটা সপ্তাহ ছুটি কখনো দিয়েছিলে আমাকে যে, ছেলে-ছোকরাদের সামনে ঠোঁট রাঙিয়ে, খোঁপায় ফুল গুঁজে দাড়াতে পারি?



রেহানার কথাগুলো মজা করে হলেও শেষের দিকের কথাগুলো ঘাই মেরেছিল বুকের ভেতর। বিবেকের দেয়ালে যেন ধাই ধাই করে হাতুড়ির ঘা পড়ছিল। আর সেই আঘাতেই যেন দীর্ঘ দিন পর শারীরিক মোহ থেকে জেগে উঠেছিলেন সালেক আহমেদ। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছিলেন নিজেকে আর একের পর এক প্রশ্ন বানে আহত করেছেন। ব্যাপারটা তেমন একটা বুঝতে না পেরেই হয়তো রুমানা বলে উঠেছিল, আয়নায় নিজেকে দেখার কী আছে অত? তুমি মোটেও বুড়ো হওনি। চুলগুলো অর্ধেক সাদা হয়েছে কেবল।



তখনই দিনের বেলা রুমানার কথা তার মনে পড়ছিল প্রবল ভাবে। এমনটা বিগত সময়গুলোতে কখনো ঘটেনি রেহানা অফিসে থাকা অবস্থায়। সে যেন এতদিন তাকে বন্দী করে রেখে ছিল কামনা নামের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। দিন রাত আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল দেহ নামের মাদকের নেশায়। সালেক আহমেদ ফের আয়না থেকে মুখ ফিরিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন রেহানার। চোখে চোখ ফেলে দৃঢ় কণ্ঠে জানতে চেয়েছিলেন, সত্যিই ঘর-সংসার চাও?

-মজা করে বললেও কথাগুলোকে মিথ্যে ভাবার কোনো কারণ নেই।

-আমি যে তা দিতে পারবো না তা কি জানতে না?



-তোমার কাছে তো দাবি করিনি! তোমাকে কখনো প্রশ্নের মুখে ফেলেছি এ নিয়ে? কখনো বলেছি কি আমার ভবিষ্যতের জন্য স্থায়ী কিছু করে দাও? আমি তো তোমাকে ভালোও বেসেছি কম বেশি। নাকি এগুলো মিথ্যে?



-না মিথ্যে না একটা অক্ষরও। মন থেকে যদি বল যে, সত্যিই ঘর-সংসার চাও তাহলে মিথ্যা অজুহাতে তোমাকে আটকে রাখবো না। লম্বা একটা ছুটি নাও। চাকরিটা ছেড়েও দিতে পার। চাইলে অন্য কোনো দেশে স্থায়ী হবার ব্যবস্থা করে দেই। সময় সুযোগে ঘর-সংসার পেতে নিয়ে জীবনটাকে গুছিয়ে নিতে পারবে।



কেমন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল রেহানা। সন্দেহ ভরা কণ্ঠে বলেছিল, মন থেকে বললে?



-হ্যাঁ। তোমাকে ছুঁয়ে বলছি।



সালেক আহমেদের কথা শুনে রেহানার দু চোখ টলমল করে উঠেছিল। সে সঙ্গে নাক মুখ লাল হয়ে উঠেছিল। হয়তো কান্না পাচ্ছিল তার। আর সেই কান্না লুকাতেই হয়তো সালেক আহমেদকে জাপটে ধরে কাঁধে মুখ ডুবিয়ে দিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর মাথা তুলে বলেছিল, তোমাকে ছেড়ে আরেকটা পুরুষকে নিয়ে কি থাকতে পারবো?



-না পারলে তো আছিই। কিন্তু পুরোনো প্রেমিক-প্রেমিকাকে বুকে পুষে রেখে কি মানুষ সংসার করে না? সন্তান জন্ম দিয়ে তাদের পাল-পোষ করে বড় করে না?



-আমাকে লোভ দেখাচ্ছ?



-একটুও না। আমার অক্ষমতার কাছে যাতে তোমাকে ছোট হয়ে থাকতে না হয় সেই পরামর্শ দিচ্ছি।



এরপর সালেক আহমেদের বুকে মাথা রেখে সত্যি সত্যিই ডুকরে উঠেছিল রেহানা। এ কেমন ভাগ্য নিয়ে জন্ম নিলাম আমি? যাকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালো বাসলাম তাকে নিয়ে সংসার করতে পারি না!



-কোনো কোনো মানুষ এমনও হয়। বাধ্য হয়ে আপস করে জীবনের অসঙ্গতির সঙ্গে। আস্তে ধীরে চেষ্টা করে মেনে নিতে। কিছুটা জোর করে হলেও মানিয়ে নিতে হয়।



তারপর নিজের হাতে রেহানার চোখ মুছে দিতে দিতে বলেছিলেন সালেক আহমেদ, মন খারাপ করে না। তোমার শিক্ষা আছে, মেধা আছে। ঠিকই নিজেকে দাড় করিয়ে ফেলতে পারবে।



রেহানা ফের কেঁদে উঠেছিল। যতক্ষণ অফিসে ছিল ততক্ষণ জড়িয়ে ধরে রেখেছিল সালেক আহমেদকে।



মাস দুয়েক হয় রেহানা চলে গেছে সুইডেনে। ভালো একটা চাকরিও পেয়ে গেছে। সাবলেট থাকছে বাংলাদেশী এক পরিবারের সঙ্গে। সে সংবাদ জানানোর পর আর একটি দিনও ফোন করেনি সে। খুব বিপদ না হলে আর ফোন করবে না এমন প্রতিশ্রুতিই তার কাছ থেকে আদায় করে নিয়েছিলেন সালেক আহমেদ। মাঝখান দিয়ে বেশ মনে পড়ছিল তার কথা।



মাথার চুল আঁচড়িয়ে নিয়ে রুমানার পছন্দের সুগন্ধ বুকের আশপাশে স্প্রে করে ছোট ছোট পদক্ষেপে রুমানার সামনে গিয়ে দাঁড়ান সালেক আহমেদ। তখনই খানিকটা অবাক হয়ে মুখ তোলেন রুমানা। সেই সুযোগে সালেক আহমেদ বললেন, কই এখনো বসে আছ, কখন রেডি হবে?



এটা তার পুরোনো অভ্যাস। আগে থেকে কিছু না বলেই এমন ভাব দেখাবেন যেন রুমানা কিছুই শুনতে পায়নি বা শুনলেও ভুলে গেছেন। তখন তাকে কেমন বিভ্রান্ত দেখায়। বোকা বোকা একটা ভাব মিশে গিয়ে গাল দুটো লালচে হয়ে ওঠে। কিন্তু এখনকার ব্যাপারটা তেমন কিছু হলো না। হাতের সুই সুতো রেখে দিয়ে রুমানা বলে উঠলেন, কখন কী বললে?

-যখন টাই বাঁধছিলাম। যখন চুল আঁচড়াচ্ছিলাম। শেষবার বলেছি যখন গায়ে সেন্ট স্প্রে করছিলাম।



কিন্তু তারপরও রুমানাকে বিভ্রান্ত দেখায় না মোটেও। বরং কিছুটা জোর দিয়েই বলে ওঠেন, কিছুই বলনি তুমি। হয়তো মনে মনে ভাবছিলে। আয়নায় তোমাকে আমি দেখছিলাম। যতক্ষণ সেখানে ছিলে আমার মনোযোগও ছিল তোমার দিকেই।



সালেক আহমেদ হঠাৎ ধপ করে রুমানার শরীর ঘেঁষে বসে পড়েন পাশে। তারপর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দুটি বাহু ধরে তাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে প্রায় কাতর কণ্ঠে বলে উঠলেন, ওঠো তো! চট জলদি রেডি হয়ে নাও। অনেকদিন হয়ে গেল এক সঙ্গে কোথাও যাই না।



রুমানা দু ঠোঁটের প্রান্তে এক রকম দুষ্টু দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে তুলে বললেন, সিদ্ধান্তটা কি আয়নার সামনে দাঁড়িয়েই নিয়েছ?



-নাহ!



বলেই, রুমানার বাহু ছেড়ে দিয়ে পেছনের দিকে দুহাত নিয়ে দেহের ভর রেখে আবার বললেন সালেক আহমেদ, গত পরশু দিন সিঙ্গাপুরে মিটিঙে বসে খুব মনে পড়ছিল তোমার কথা। আর তখনই বুঝলাম যে, আমরা অনেকটা পর পর হয়ে গেছি। আচ্ছা বলতে পার, কতদিন আগে আমরা শেষবার এক সঙ্গে বসে খেয়েছি? পাশাপাশি বসে বারান্দা দিয়ে বাইরের জীবনটাকে দেখেছি কবে? শেষবার কবে আমাকে চুমু খেয়েছিলে মনে করতে পার? এক বিছানায় একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কবে শুয়েছিলাম কিছুই মনে করতে পারি না।

বলতে বলতে একটি দীর্ঘশ্বাস চাপেন তিনি।



রুমানা হঠাৎ হেসে উঠে বলল, আমি তো আরো ভাবছিলাম দিন দিন তুমি রোবট হয়ে যাচ্ছ নয়তো কোথাও অবৈধ কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে গেছ!

সালেক আহমেদ হঠাৎ রুমানার মুখের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে আহত কণ্ঠে বললেন, আমার সম্পর্কে তোমার এই ধারণা?



তারপরই দু হাত ঊর্ধমুখি করে বলে উঠলেন তিনি, ওহ ঈশ্বর, কেন যে তুমি আমাকে অকাল বার্ধক্য দিলে!



স্বামীর নাটকীয়তা দেখে রুমানা হাসে। সারা অবয়ব যেন ঝলমল করতে থাকে হাসির চ্ছটায়।



সালেক আহমেদ হঠাৎ রুমানার গাল টিপে দিয়ে বললেন, তোমার হাসিটা তেমনই আছে।



-আর গলাতে হবে না!

বলতে বলতে উঠে ফের বললেন তিনি, পাশে এসে যখন বসলে তখনই অর্ধেক গলে গেছি।



সালেক আহমেদও সঙ্গে সঙ্গে উঠে পড়ে পেছন থেকে রুমানাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, কোমরে ব্যথা পাবার সম্ভাবনা না থাকলে এখনই তোমাকে উঠিয়ে নিতাম।



রুমানা স্বামীর আলিঙ্গনের ভেতর ঘুরে মুখোমুখি হয়ে বললেন, শান্ত আসছে দশটার ফ্লাইটে। আমরা তাহলে এয়ারপোর্টে চলে যাবো।



-তাহলে তো বেশ হবে। ছেলেটা অনেকদিন পর আবার সারপ্রাইজড হবে।

বলতে বলতে রুমানাকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে চিলের ভঙ্গিতে তার ঠোঁটে একটি চুমু খান টুক করে।



-ইশ ঢং!

বলেই, রুমানা আরো জোরে আঁকড়ে ধরেন স্বামীকে। তারপর কাঁধে মুখ নামিয়ে বললেন, তাহলে আজ রিকশায় ঘুরবো।



-আচ্ছা।

বলেই, সালেক আহমেদ রুমানাকে মুক্ত করে দিয়ে বলেন, তুমি তৈরি হয়ে নাও।



রুমানা হয়তো তার রুমের দিকেই যায়। পেছন থেকে দৃষ্টিতে মুগ্ধতা মেখে তার দিকে তাকিয়ে থাকেন সালেক আহমেদ। হঠাৎ করেই তার ইচ্ছে হয় গলা ছেড়ে গান গাইতে। পরিচিত একটি গানের লাইনও মনে পড়ে যায় তার। এই মেঘলা দিনে একলা... এসে ধাক্কা দেয় তার নিউরনে। আর তখনই নিজে নিজে আবার হেসে ওঠেন তিনি। কিন্তু শেষবার কখন কোথায় গলা ছেড়ে গান গেয়েছিলেন মনে করতে পারেন না।



(সমাপ্ত।)



***জলভূমিতে প্রকাশিত।





মন্তব্য ৪৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৪৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০

সাদাসিধা মানুষ বলেছেন: চমৎকার!

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সাদাসিধা মানুষ।

ভালো থাকেন সব সময়।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: বহুত বড় গপ! অর্ধেক পড়ছি, বাকিটা পড়ে মতামত জানাইয়া দিবো ...

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৪৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ অভি। পরেরগুলাতে শব্দসংখ্যা উল্লেখ করে দিবো।
ভালো থাকেন সব সময়।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪১

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

রেহানাকেও রেখে দেয়া যেতনা ? আই মিন বৈধ ভাবে ? রুমানাকে জিজ্ঞাস করে নিলে কেমন হত ?

অনেক সুন্দর গল্প , প্রায় বাস্তব !!

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মুদ্‌দাকির।

দুজনকে রাখা যাইতো, কিন্তু এমন ধরনের বাংলা সিনেমা আছে পুরোনো দিনের। তাই তেমনটাতে আগ্রহ হয় নাই।

যেই গল্ভাপে বাস্লোতবতা বেশি তার টিকে থাকবার সম্ভাবনাও বেশি। থাকুন সব সময়।

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:০৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


বাস্তবতার ছোঁয়ায় খুব সুন্দর গপ হইছে +++

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ কান্ডারি অথর্ব।

ভালো থাকেন সব সময়।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আরাম পেলাম গল্পটা পইড়া জুলিয়ান দা! ভাল্লাছে! +

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ কা_ভা।

ভালো থাকেন সব সময়।

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:০২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: একটি মানুষের ভিতর তার দ্বৈত-সত্বার(বানানটি ভুল মনে হচ্ছে)ব্যাপারটি সুন্দর ফুটে উঠেছে। মনে হচ্ছে একে বাস্তবতার মিশেল বললেও আমি ভুল করবো না।
গল্পটি পড়ার পর কেন যেন নিজেকে সালেক সাহেব আর স্ত্রীকে রুমানা রূপে ভাবতে শুরু করেছিলাম,তা জানি না। শুধু পার্থক্য আমার আর তার মাঝে ছিল শুধুই ছোটবেলার ভালবাসা। (যা আমার শ্বশুরবাড়ীর ছোট-বড় সবারই জানা,একই এলাকায় বসতি বিধায়)।। ও বেচে থাকতে স্ত্রীকে অবহেলা না করলেও,শুধুই ছিল স্ত্রী।
নিজেকে আয়নয় দেখানোর জন্য ধন্যবাদ।।

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী।

দ্বৈতসত্ত্বার মানুষ প্রচুর আছে আমাদের সমাজে। তা কখনো ফুটে ওঠে ব্যক্তির অজান্তে, কখনো বা প্রয়োজনে তা বিকশিত হয়।

গল্পটি পড়ার পর কেন যেন নিজেকে সালেক সাহেব আর স্ত্রীকে রুমানা রূপে ভাবতে শুরু করেছিলাম,তা জানি না।

-কল্পনা কেবল কল্পনা নয়, কোথাও না কোথাও বা কারো না কারো জীবনে ঘটে থাকে। জেনে খুব ভালো লাগল।

ভালো থাকুন সব সময়।

৭| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:২৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এ ধরণের বাস্তব পটভূমির গল্প আমার খুব পছন্দের।

ধন্যবাদ, ভাই জুলিয়ান সিদ্দিকী। জলভূমি কী প্রিন্ট, না অনলাইন মিডিয়া?

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আবুহেনা।

জলভূমি অনলাইন ম্যাগাজিন। সম্ভবত ভারতীয়।

ভালো থাকুন সব সময়।

৮| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:১০

মামুন রশিদ বলেছেন: না না, এটা পড়ুম না! গতকালের পোস্ট নাই ক্যান? প্রাসঙ্গিক এবং সরস একটা মন্তব্য গতকাল সারা দুপর পোস্ট করতে চেষ্টা করেছি । কিন্তু মোবাইলের নেট সেটা এলাউ করেনি :(

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: গতকালের পোস্ট মডারেটরের দায়িত্বে ড্রাফট অবস্থায় আছে। তা এখন আমার সম্পদ নহে। কাজেই এ প্রসঙ্গে আমি কিছু বলিতে পারছি না।

আরে ভাই পড়েন। এই গল্পটা খুবই সুন্দর আর রোমান্টিক। আপনার বৃদ্ধ বয়সে এই গল্প আপনাকে সাহস যোগাবে। :)

৯| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: দারুণ চমৎকার একটা গল্প পড়লাম জুলিয়ান দা। পোস্টে ভালো লাগা থাকল।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১২

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মহামহোপাধ্যায়।

ভালো থাকুন সব সময়।

১০| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:২৩

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
সহজিয়া সরল গল্প ৷ ক্লাইমেক্স বা অণুঘটক যাও ঢোকার সম্ভাবনা বা ইঙ্গিত ছিল সেটা চাপাই থাকল ৷ কোথায় যেন আপনার নামের বা লেখকের ভিন্নরূপ দৃষ্টির সুবিচার পেলাম না ৷ পড়তে আরাম লাগবে পাঠকের ৷

ভাল থাকুন ৷

০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর আলম৫২।

এখানে গল্পের সরলতার ভেতরেই একটি পরিবারের নান রকম বঞ্চনা গল্পও আড়াল হয়ে আছে। রুমানাকে এখানে আঁকা নির্বিরোধ স্ত্রী হিসেবে যা প্রায় অবিশ্বাস্য। রেহানা ভালোবাসে যেখানে স্বার্থ বা লোভ প্রধান হয়ে ওঠে না। আর লম্পট সালেক আহমেদের বোধোদয় দিয়েই কাহিনীর সমাপ্তি।

সাদামাটা জীবনে যদি ক্লাইমেক্স দেই পাঠের আরামটা থাকে না। আরেকটা দিকে দৃষ্টি ছিল যে, আমার আগের কোনো একটা গল্পে দাম্পত্যের সঙ্ঘাত, বঞ্চনা, প্রতারণার ব্যাপার আছে। গল্পের ভিন্নতার কারণে আপাত দৃষ্টিতে খুব সাদামাটা হলেও জীবনের অনেক সূক্ষ্ম দিক আছে যা সাধারণত আমাদের চোখে পড়ে না।

আমি চাই আমার গল্প নিয়ে যেন এমন অভিযোগ না ওঠে যে, সব গল্প আর গল্পের কাঠামো প্রায় একই রকম।

ভালো থাকবেন সব সময়।

১১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

পার্থ তালুকদার বলেছেন: খুব ভাল লাগলো ভাই ।

রেহানার জন্য খারাপ লাগছে নাকি রুমানার জন্য আনন্দ লাগছে, বুঝতে পারছিনা।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:২৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ পার্থ তালুকদার।

রুমানার জন্য খারাপ লাগবে তার বঞ্চনার জন্য। রেহানার জন্য খারাপ লাগবে তার স্বপ্ন অপূর্ণ থাকল বলে।

ভালো থাকুন সব সময়।

১২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুলিয়ান সিদ্দিকী ,




ফিরে আসার গল্পকথা লিখেছেন। যার হাত ধরে শুরু পথচলা , সেই হাতেই আবার ফিরে আসা । মাঝখানের বেপথু চলাটুকু অনেকটাই বাস্তব । তা মধুর বটে , স্থায়ী নয় ।

মানুষকে যে ফিরতেই হয় তার ঘাটে !

সুন্দর ।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস।

মানুষকে যে ফিরতেই হয় আরেক মানুষের কাছে। রুমানা অমানুষ হয়নাই বলেই ভণ্ড সালেক হুশ ফিরে পাবার পর রুমানার কাছে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। যদি রুমানাও এমনই হতো তাহলে সালেক এর কী হতো? ফেরা হতো না। আবার হয়তো নিক্ষিপ্ত হতো অন্য কোনো অন্ধকারে।

ভালো থাকুন সব সময়।

১৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: সহজ সরল গল্প। পড়ে গেলাম আর কী।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:২১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ হামা।
ভালো থাকেন সব সময়।

১৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪

আবু শাকিল বলেছেন: সুন্দর গল্প। গল্পের রুমানা র বয়স কত এখন =p~ =p~

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩০

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আবু শাকিল।

হুম, যখন গল্পটা লিখি তখন রুমানার বয়স মনে হচ্ছিল ৪৮/৪৯ :)

ভালো থাকুন সব সময়।

১৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৫৯

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: গল্প-গাঁথুনি বেশ।

ভালো লেখা চলতে থাকুক।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ ইসহাক খান।

ভালো থাকুন সব সময়।

১৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো ভাইয়া, কিন্তু আশা করি এ যেন গল্পতেই সীমাবদ্ধ থাকে, কারো বিবাহিত জীবন যাতে এরকম না হয়।
সবসময় শুভকামনা।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সাজিদ উল হক আবির।

এমন ঘটনা বাস্তবেও অনেক থাকবে সন্দেহ নাই। তবে এমন না ঘটলেই ভালো হতো।

ভালো থাকুন সব সময়।

১৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

মামুন রশিদ বলেছেন: মিলিয়ে দিয়েছেন থিক আছে । কিন্তু আমার মনে হয় সম্পর্কে একবার ফাটল ধরে গেলে আর কখনো পুরোপুরি জোড়া লাগেনা । তবে মানুষ তার সহজাত প্রবৃত্তিতে সব কিছুতেই মানিয়ে নেয় কেবল ।


গল্পটা জুলিয়ান ভাইয়ের লেভেল ছুঁতে পারেনি ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।

সংসার বা দাম্পত্য জীবন যে ভুড়ি ভুড়ি আপসের জায়গা এটাই এখানে দেখানো হইছে আসলে। মানুষ যাই করুক যেখানেই যাক, তাকে ফিরে আসতেই হয় নিজের ঠিকানায়। সালেক আহমেদ ফিরে এসেছেন স্ত্রীর কাছে, যে জন্য স্ত্রীর প্রতীক্ষা ছিল।
স্ত্রী ইচ্ছে করলে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারতেন, সম্পর্কটা ভাঙতে পারতেন। কিন্তু আপসকামী বলে তা তিনি করেন নাই।

সংসার জীবনে একজনকে নীরব থাকতেই হয়, নয়তো সংঘাত অনিবার্য।

গল্পটা আমার লেভেল ছুঁতে পারে নাই, তা যেমন ঠিক আবার কিছু কিছু লেখা লেখকের সৃষ্ট পর্যায়ে পোঁছাবে তারও নিশ্চয়তা নাই।

ভালো থাকুন সব সময়।

১৮| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬

লিখেছেন বলেছেন: vai, choroi pakhir golpo ta dropbox ba onno kothao share kora jay ki?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ। মডারেটর যেটারে আড়াল করে ফেলছে তা থাকুক আড়ালেই। চড়ুইর কাছে এটার স্ক্রিন শট বা কপি অবশ্যই থাকবে।

ভালো থাকুন সব সময়।

১৯| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩৮

ডি মুন বলেছেন: শান্ত-শীতল গল্প। বেশ ভালো লেগেছে।

লিখে চলুন নিরন্তর।

শুভেচ্ছা রইলো।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০২

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ডি মুন।

ভালো থাকেন সব সময়।

২০| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:৩৪

জুন বলেছেন: বেশি সরল জুলিয়ান ভাই, গড়গড় করে পড়ে ফেললাম সবুজ সাথী বইএর মত :)
+

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

সবুজ সাথী আমিও পড়ছি।

ভালো থাকেন সব সময়।

২১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপসের গল্প ভাল লাগছে। সচরাচর গল্পে দুষ্টের শাস্তি হয়, লজিক থাকে সাদা কালো। ধূসর কিছু নাই। এইখানে বাস্তবের ছোঁয়া আছে।

শুভরাত্রি।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু। আমি চেষ্টা করছি ছোটগল্পের গতানুগতিক ধারা থেকে সরে যেতে।

ভালো থাকুন সব সময়।

২২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অদ্ভুত সুন্দর ভালোবাসার গল্প। অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৪

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা মানুষ বলতে চায়।


ভালো থাকুন সব সময়।

২৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১২

আরিফ রুবেল বলেছেন: মধ্য বয়সের সংকট নিয়ে গল্পটা ভালো লিখেছেন। পুরুষটিকে বহুগামি বানালেও নারীটিকে রেখেছেন সতি সাবিত্রী। গল্পে আরো নাটকীয়তা আসতে পারত। তবে সহজ সরল রাখায় একেবারে মন্দ হয়নি। বিচ্ছেদের চাইতে মিলন মস্তিষ্কের জন্য আনন্দদায়ক। ভালো থাকুন, শুভ কামনা :)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: পুরুষটিকে বহুগামি বানালেও নারীটিকে রেখেছেন সতি সাবিত্রী।

ধন্যবাদ আরিফ রুবেল। আপনার কথাটি ধরেই বলি যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েরা তাদের স্বামীর বহুগামীতা টের পায় না বা ধরতে পারে না। তারা তাই ব্যস্ত থাকে নিজেকে নিয়ে সংসার নিয়ে আর সন্তান নিয়ে। অনেকে বুঝতে পারলেও তেমন একটা সমস্যা তৈরি করেন না। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা তাদের শুদ্ধতা বজায় রাখে বেশি।

এ কারণেই দেখা যায় সংসারে চালাক, প্রতিবাদী, বুদ্ধিমতি (এরা সাধারণত কূটিল বলে চিহ্নিত হয়।) মেয়েরা ব্যাপারটা ধরতে পারলে সংসার আর সংসার রাখেন না। তেমন ক্ষেত্রে পাজী পুরুষ কেমনটা করবে তা তো জানা কথা। :)

ভালো থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.