নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।
(Photo: Google)
বৃষ্টি থেমে যেতেই স্কুলের বাইরে বেরিয়ে এলো ঋভু। এতক্ষণ বসে থেকে হাঁটু আর পায়ের গোড়ালি ব্যথা হয়ে গেছে যেন। বিনা কাজে খুব বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না সে। ঘরে থাকলেও কিছু না কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। একেবারেই শুয়ে বসে কাটানোটা অসুস্থতা বলে মনে হয়। এমনিতেই ডাক্তার বলেছে, ডায়েট ছাড়া ওজন অন্তত চার কিলো কমাতে হবে। কিন্তু কিছুতেই ওজন কমানো যাচ্ছে না। শক্ত ব্যায়াম করতে পারছে না ভয়ে। একবার পিঠের পেশীতে টান লেগে বেশ কষ্ট পেয়েছিল মাস খানেক। তারপর জিমে যাওয়াটাও বন্ধ।
সকালের দিকে বাচ্চা দুটোকে তৈরি করে স্কুলে নিয়ে আসে। তখন নাক ডাকিয়ে ঘুমায় বিমল। আজকাল নিজেই ড্রাইভ করছে ঋভু। পুরুষ মানুষ সবাই এক না হলেও ড্রাইভার ফজর আলির চোখ ভালো ছিল না। কুতকুতে দৃষ্টিতে লালসা থাকলে কেমন ঘিনঘিনে মনে হয়। গাড়ি চালাতে চালাতে রিয়ার-ভিউ মিররে ঘন ঘন তাকাবার ফলে আইল্যান্ডে তুলে দিয়েছে কয়েকবার। অন্য গাড়িকে পেছন থেকে ঠুকে দেবার ব্যাপার তো ছিলই। তা ছাড়া একবার খুব বড় একটা এক্সিডেন্ট প্রায় ঘটিয়েই ফেলেছিল আশুলিয়ার কাছে। তা ছাড়া পুরুষের চোখে লোভটা কখনো উপভোগ করতে পারেনি সে। মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। যেন বাজারের কুকুর গুড়ের হাড়ির ভাঙা টুকরো চাটছে। দৃশ্যটাই অসহ্য!
আরে বাবা, একই চেহারা বারবার দেখার মাঝে কী এমন মোহ লুকিয়ে আছে? এক দুবার দেখলে কি চলে না? তার ওপর পরের বউ, ছেলে-মেয়ের মা। যার নুন খাচ্ছিস তার দিকেই লালসা মাখানো চোখে তাকানো সত্যিকার মানুষের আচরণ হতে পারে না। শেষে কী থেকে কী হয়ে যায়। তা ছাড়া সঙ্গে বাচ্চা দুটো থাকলে নিজেকে আরো বেশি দুর্বল মনে হয়। এতটা আতঙ্ক মনের ভেতর পুষে রেখে সুস্থ ভাবে চলাচলই দায় হয়ে যাবে ভেবে, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে গতমাসে ছাড়িয়ে দিয়েছে ফজর আলিকে। অবশ্য ফজর আলি জানতে চেয়েছিল কী অপরাধে তার চাকরি যাচ্ছে। বিশেষ কারণের কথা বলেনি ঋভু। শুধু বলেছিল, তোমার ড্রাইভিং খুবই বাজে। একমাসের অগ্রিম বেতনের সঙ্গে বাড়তি আরো এক মাসের বেতন দিয়েছে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আনন্দে। ফজর আলি চলে যাওয়াতে নিরাপত্তাহীনতার ভয়টাও কেটে গেছে। তা ছাড়া নিজের গাড়ি নিজে চালালে ক্ষয়-ক্ষতি কমই হয় বলে যাদের গাড়ি আছে এমন অনেকের মুখেই শুনেছে সে।
বিমল দশটার দিকে যাবে এয়ারপোর্টে। তাকে সেখানে নামিয়ে দিয়ে আবার এগারোটায় ফিরে আসতে হবে স্কুলে। স্কুল ছুটি হবার সঙ্গে সঙ্গেই উপস্থিত থাকতে হয় গেটে।
আজকাল অনেক নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এই তো পনের বিশ দিনের বেশি হবে না, মুনার ক্লাসের একজনকে মিথ্যে বলে নিয়ে গিয়েছিল কিডন্যাপাররা। তাই মুনা আর বিন্নিকে সে বলে রেখেছে যে, অচেনা বা মুখচেনা কেউ যদি এসে বলে, তাকে বাবা অথবা মা পাঠিয়েছে ওদের নিয়ে যেতে, তাহলে ভুলেও যেন কারো সঙ্গে না যায়। স্কুলের বাইরে থাকলেও তার মনের ভেতরটা আকুলিবিকুলি করে সব সময়।
তাড়াহুড়ো করে স্কুল থেকে ঘরে ফিরে এসে ঋভু দেখল, বিমলের কোনো প্রস্তুতিই নেই। নিশ্চিন্ত মনে মুভি দেখছে। ঋভুকে দেখতে পেয়েই কেমন চঞ্চল হয়ে উঠল সে। সোফা থেকে উঠেই যেন হামলে পড়বে এমন একটা ভাব দেখতে পেয়ে সে বলল, তোমার মতলবটা তো ভালো মনে হচ্ছে না!
ঋভুর কণ্ঠে সত্যিই বিরক্তি।
ঋভুকে জাপটে ধরে বুকে মুখ ডুবিয়ে বিমল বলল, প্লিজ, পুরো দশটা দিন তোমাকে পাবো না!
-তাই বলে একদিনেই চেটেপুটে খেয়ে ফেলবে?
প্লিজ, প্লিজ! বলে, ঋভুর বুকের খাঁজে চুমু খায় বিমল। তারপর কাঁধে মুখ ঘষতে আরম্ভ করে।
ঋভু ছটফট করে উঠে বলল, এই, কালকে অমন পাগলামি করার পরও তোমার আরো ইচ্ছে রয়ে গেল? বলে, নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে আবার বলল, আমার পক্ষে কিন্তু মোটেও সম্ভব না!
-সব ঠিক হয়ে যাবে।
বলতে বলতে সোফার ওপরই তাকে পেড়ে ফেলে বিমল। কিন্তু মন থেকে কোনো সাড়া পায় না ঋভু। শরীর যেন পাকা ফোড়া হয়ে আছে ব্যথায়। বিমলের যেন সে বোধ নেই। সে ব্যস্ত তার পাওনা কড়ায়গণ্ডায় উসুল করতে। ঋভু কী আর করতে পারে? তার পুরোটা দেহের মহাজন তো বিমল। মনটাই কেবল নিজের দখলে আছে।
নিজের প্রাপ্তি বুঝে পেয়ে বিমল উঠে পড়ে হয়তো বাথরুমেই যায়। ঋভু তেমনি পড়ে থাকে সোফাতে। খুব কান্না পাচ্ছিল তার। এ কেমন জীবন? বল দেখলেই যেমন লাথি মারতে ইচ্ছে হয়, স্ত্রীকে দেখলেই পুরুষদের শরীর ব্যাকুল হতে হবে? ততক্ষণে বিমল শাওয়ার সেরে ফিরে এসে তৈরি হতে হতে বলল, আমার তো কিছু গোছগাছ হলো না। সময়ও তেমন নেই।
ভোরবেলা বিমল যখন ঘুমুচ্ছিল, শাওয়ার সেরে প্রায় সবই গুছিয়ে রেখেছে লাগেজে। এখন ছোটখাটো যা কিছু নেবার তা বিমলের নিজেকেই করা উচিত। অথচ অকাজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। গতরাতে বলতে গেলে মোটেও ঘুম হয়নি ঋভুর। আসলে বিমলই ঘুমুতে দেয়নি তাকে। ভোর চারটার পর মাত্র দুঘণ্টা ঘুমুতে পেরেছিল সে। তারপরই বুয়া এসে বেল টিপতে আরম্ভ করেছিল।
বিমলের জন্য গোছানো লাগেজটা বের করে দিয়ে ঋভু চটজলদি শাওয়ার নিয়ে আসে। সকালের দিকে যে কাপড়ে স্কুলে গিয়েছিল তা না ধুয়ে আর পরা যাবে না। সময় বাঁচাতে সালোয়ার কামিজ পরে নিয়ে লাগেজটা টেনে দরজার কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, তোমার কতদূর? বলতে বলতে আয়নার সামনে ফিরে এসে ভেজা চুলগুলোকে শুকিয়ে নিয়ে হালকা ভাবে বাঁধে কেবল। মোটামুটি উচ্চতার গোলগাল মুখের ঋভুকে খুব একটা সাজগোজ করতে হয় না। ঠোঁটে কেবল হালকা ভাবে লিপস্টিক ঘষে নিয়ে বলল, তুমি কি লাগেজে আর কিছু নেবে? আমি কাপড়-চোপড় দিয়েছি শুধু।
-না। কাপড়-চোপড় হলেই চলবে। ওহ আচ্ছা, শেভিং কিট দিয়েছ তো?
-না। ওটা বাকি আছে।
বলতে বলতে ফের লাগেজ খোলে ঋভু। তাতে শেভিং কিট রেখে ডালা লাগাতে লাগাতে বলে, আর কিছু?
-না, না। চল!
সামনে লাগেজ হাতে ঋভু। পেছনে আসে বিমল। সরাসরি গাড়িতে গিয়ে বসে সে। বাকি যা করার ঋভুকেই করতে হয়।
বিমানবন্দর যেতে তেমন একটা দেরি না হলেও হাতে কিছুটা সময় থাকা ভালো। বিমলের ধারণা, সঙ্গে তার পিএস রীতা যাচ্ছে কথাটা হয়তো জানা নেই ঋভুর। আর জানলেই বা কী করবার আছে তার। অফিসের ব্যাপার স্যাপার নিয়ে তার কী বা বলার থাকতে পারে।
অবশ্য ঋভু সবই জানে। আর এ ব্যাপারটা বিমল নিজেই জানে না। ঋভুরই বা কী করবার আছে? সে তো দীর্ঘদিনের অনিয়মের দাসত্বে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে মেনে নিতে হয়েছে অনেক কিছুই। দুটো সন্তানের মায়া, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনে অশান্তি বলতে বিমলের স্বেচ্ছাচারী জীবন, রীতার সঙ্গে সীমাহীন মাখামাখি সহ্য না করে উপায় নেই। স্বাধীন জীবন পেতে গেলে মুনা আর বিন্নির ভবিষ্যৎ অসহায় মুখের কথা ভাবলেই হাত পা জমে আসতে চায়। মনের যাবতীয় শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায় লহমায়। তা ছাড়া তার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি করতে গেলে অভ্যস্ত জীবনের হাত খরচই মিটবে না। ধীরে ধীরে বদলে যাওয়া বা ছেড়ে আসা জীবনে নতুন করে অভ্যস্ত হতে যাওয়া আরো কঠিন।
রাস্তার জ্যামের কারণে ঋভুর বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। ঋভু যখন স্কুলে এসে পৌঁছোয় ততক্ষণে ছুটি হয়ে যাবার কথা। কিন্তু বাইরে কোনো স্কুলের কোনো ছেলে মেয়ে এমন কি তাদের কারো কারো বাবা-মা থাকে তাদের কাউকে দেখতে না পেয়ে বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো। খুব কি বেশি দেরি হয়ে গেছে? মুনা আর বিন্নি কোথায়?
সকালের দিকে হয়ে যাওয়া বৃষ্টির জল এখনো জমে আছে এদিক ওদিক। কিন্তু সেদিকে কোনো খেয়াল নেই যেন তার। গাড়ি থেকে নেমেই ছুটতে আরম্ভ করেছিল। স্কুলের অফিস রুমে গিয়ে কাউকে পায় না ঋভু। তখনই যেন কী হয় তার, হঠাৎ চিৎকার করে উঠে বলে, দারোয়ান, বুয়া! কিন্তু সাড়া দেয় না কেউ। হঠাৎ বাচ্চাদের হট্টগোলের শব্দ শুনতে পায় সে। মুহূর্তকাল মাত্র স্থির থেকে উৎকর্ণ হয়ে শোনে সে। তারপর সেদিকেই এগিয়ে যায়।
একটি হল রুমে জড়ো হয়েছে সব বাচ্চারা। যাদের ভেতর মুনা আর বিন্নিকেও দেখা যায় অন্যান্যদের সঙ্গে হুটোপুটি করছে। তাদের দেখতে পেয়ে প্রাণে যেন পানি ফিরে আসে। একটু সুস্থির হতেই খানিকটা আগে অকারণ উদ্বেগের জন্য মনে মনে লজ্জিত হয়। আজ কত তারিখ? মাসের শেষদিন এ প্রোগ্রামটা হয়। টিচাররা এর নাম দিয়েছে স্বাধীনতার ক্লাস। এ দিন যার যেমন সময় কাটায়। বেশিরভাগ বাচ্চাই ফার্মের ঝিমোনো মুরগির মতো বসে থাকে চুপচাপ। কেউ কেউ খুব দুরন্ত। ব্যথাও পায়। তবু সতর্ক থাকে টিচাররা। মুনা আর বিন্নি যে কতটা দুষ্টুমি আর লাফালাফি করতে পারে এই একটি দিনেই বোঝা যায়। কিন্তু অন্য সময়টাতে যেন রোবট হয়ে যায়। নিয়ম মেনে সব কিছু করে যাওয়া, যাতে আন্তরিকতার ছোঁয়া থাকে না সামান্য পরিমাণেও।
আরাম, আয়েশ আর আধুনিকতার সঙ্গে তাল রাখতে গিয়ে অথবা সময়ের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়ে গিয়েই কিনা জীবনের স্বাভাবিকতায় ভাটা পড়ছে দিনদিন। অথচ ঋভু হয়ে উঠবার আগে কৃষকের মেয়ে রিজিয়া বানু এমনটা ছিল না। এমন কি আধুনিক ঋভুও কি সত্যিই আধুনিক হয়ে উঠতে পেরেছে? বাইরে বাইরে ঋভু হয়ে উঠতে পারলেও ভেতরে ভেতরে সেই রিজিয়া বানুকেই ছটফট করতে দেখে। ছোটখাটো অপ্রাপ্তি, রাগ-অভিমান, খুনসুটি এসব নিয়ে কি খুব মন্দ ছিল রিজিয়া বানু? সে জীবনে তবু কিছুটা হলেও প্রাণ ছিল। আনন্দ ছিল। ভোগের সঙ্গে কিঞ্চিৎ ত্যাগও। কিন্তু এ জীবনে চাক্ষুষ প্রাপ্তি আর প্রাচুর্যের বাইরেও যে ভিন্ন কিছু থাকতে পারে, তা যেন অনুভব করবার অবসর পাওয়াটা আরো কঠিন হয়ে উঠেছে।
ডানা কেটে দিয়ে বনের পাখিকে হয়তো পোষ মানানো যায়। সোনার শেঁকলে বাঁধলে পাখি আর তার পালনকর্তার মান বাড়ে। কিন্তু পাখির স্বাভাবিক জীবনের মৃত্যু ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় বন্দিত্ব নামের উপসর্গ।
আজ তো দেখাই পেলাম না আপনার!
খানিকটা অনুযোগের সুরে বলে ওঠে শফিক হাজারি। যাও শাড়ি পরা অবস্থায় একটু বিজলির মতো দেখলাম, তাও আবার পালটে এসেছেন। বলে, দাঁত দেখিয়ে হাসে সে। মৃদু স্বরে আবার বলে, ভাইজান কি সন্ত্রাস চালিয়েছিল?
-ধ্যাত! এমন কেন মনে হয় আপনার? সবগুলোই শয়তানের হাড্ডি!
খুব ঝাঁঝ দেখিয়ে বলতে পারলেও গম্ভীরতা বজায় রাখতে পারে না।
লোকটা বেশ হাসিখুশি আর প্রাণোচ্ছল। চুল দাড়ি কিছুটা বড় হলেও সারা বছর একটি মাঙ্কি ক্যাপ থাকে তার মাথায়। বিন্নির মিস জাহানারার মতে মাথার টাক আড়াল করতেই স্মার্টনেসের ছুতোয় ও কাজটি করে। কোনো কারণে হয়তো বিয়েটা করতে পারেনি। অথবা তা নিয়ে ভিন্ন কোনো কষ্টের গল্প আছে। সখ্যতা গাঢ় হবার পরও সে দিকটি নিয়ে কেন যেন কোনো রকম কৌতূহল প্রকাশ করতে আগ্রহ হয়নি ঋভুর। হতে পারে তা জানবার পর, নিজের অতীতের অন্ধকারে আলো পড়বার কারণে নিজেকে আড়াল করতে পারবে না লোকটা। ছন্দ কেটে যেতে পারে স্বাভাবিক সম্পর্কের। থাকুক শফিক হাজারি যেমনটা আছে। অন্তত একঘেয়ে জীবনে কিছুটা হলেও বৈচিত্র্যের সন্ধান দিতে পেরেছে লোকটা। এটাই তার জন্যে অনেক প্রাপ্তি। খুঁচিয়ে সুস্থ অংশে ক্ষত সৃষ্টি করতে চায় না।
শখের কবি হলেও কবিতা মন্দ লেখে না। অন্তত ঋভুর কাছে ভালোই লাগে। মাঝে মধ্যে লেখায় অনেকটা বিষাদ ছেয়ে থাকে। তবু সেই বিষাদেরও আলাদা একটি সৌন্দর্য আছে। শফিক হাজারি মাঝে মধ্যেই জেগে ওঠা ঘূর্ণির মতোই খ্যাপাটে হয়ে ওঠে। একটু আড়াল পেলেই জাপটে ধরে আগ্রাসী চুমু খাবে। হাজারির এমন দুর্বৃত্তায়ন ভালোই উপভোগ করে ঋভু। কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে রাগ দেখালে পালাতে পালাতে শফিক হাজারি বলে, বক্ষিল! সিন্দুকে তুইল্যা রাখেন। ভালো কিশমিশ হবে!
-শয়তান!
মনে মনে গালি দিলেও আজকাল বেশ টের পায় যে, তাতে খানিকটা সুবাসের মতো আদর আর প্রশ্রয়ও মিশে থাকে। মাঝে মাঝে বিমল দেশের বাইরে থাকলে, মাঝরাতে তার নাক ডাকার মৃদু শব্দ না থাকলে রাতগুলো বড্ড নিঝুম আর দীর্ঘ মনে হয়। সে সময় শফিক হাজারিকে ফোন দিলে সে বলে, ঘুম পাড়াইতে আসবো? মনে হাজারো ইচ্ছে থাকলেও কোনোদিন হ্যাঁ বলবে না সে। পুরুষগুলো অল্পতেও তুষ্ট থাকে আবার সুযোগে সবটাই গিলে ফেলতে চায়। সে তুলনায় হাজারি কখনো লঙ্ঘন করবে না তার সীমা। স্বভাবে দুর্বৃত্ত হলেও জাগ্রত বিবেক বোঝা যায়।
বাচ্চাদের স্বাধীনতার ক্লাস শেষ হয় হয়তো। মুনা আর বিন্নিকে হাসি মুখে লাফাতে লাফাতে আসতে দেখা যায়। ঘামে ভেজা চেহারা। ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে দুজনের হাতে দিয়েই তার চোখ পড়ে, হাজারি কেমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বিমলের চোখে কখনো এমন কিছু দেখেছে কি? মুগ্ধতা বা বিস্ময়ের বদলে সব সময় একটি লালা মিশ্রিত চটচটে চাহনি থাকে তার।
কখন আসলেন, আবার যাচ্ছেনও? হায়রে আমার কপাল!
হাজারির কণ্ঠে সত্যিকার আক্ষেপ শুনে চমকে ওঠে ঋভু। একবার চোখ তুলে তাকায়। সহানুভূতির সুরে বলে, আজকে আর ডাকাতি করা গেল না?
তৎক্ষণাৎ জিভে কামড় দিয়ে, দু হাতে নিজের দু কানের লতি ছুঁয়ে শফিক হাজারি বলল, ডাকাতি হবে কেন? আমার জন্যে তো এটা লক্ষ্মীর প্রসাদের এঁটো পাতা!
মুনা আর বিন্নির ব্যাগ দুটো দুহাতে ঝুলিয়ে নিয়ে ঋভু বলল, পুরো প্রসাদ পেতে একদিন মন্দিরে চলে আসেন।
কথাটা শেষ করে আগ্রহ নিয়ে ঋভু তাকিয়ে ছিল শফিক হাজারির মুখের দিকে। হঠাৎ করেই সেখানে কেমন একটা মেঘের ঘনঘটা দেখা যায়। দৃষ্টি আনত করে সে বলে, আমি যে দলিত। হরিজন।
এমন রহস্যময় কথা বোধগম্য হয় না ঋভুর। মনে মনে বিরক্ত হয় সে। কেড়ে খেতে সমস্যা নেই, দান গ্রহণে যত সমস্যা। লোকটাকে পুরোপুরি বুঝবে কবে? মেয়েরা পুরুষদের বুঝতে পারে কথাটা তাহলে পুরোপুরি সত্যি নয়। শফিক হাজারির মতো কিছু পুরুষ প্রকৃতই দুর্বোধ্য হয়। গাঢ় অন্ধকারের মতোই দুর্জ্ঞেয় আর রহস্যময়।
(সমাপ্ত)
***আগে প্রকাশিত।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৮
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ হরিণা-১৯৭১ (অনুমান করি- পংবাড়ী, ঢাকা-১৯৭১, ফার্মার)।
দায়সারা পাঠের কারণেও এমন মনে হইতে পারে।
মানসাঙ্ক- অনেক কঠিন ব্যাপার। তবে চেষ্টায় আছি তেমন কিছু একটার জন্য। ততদিন ভালো থাকুন।
২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৫
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
পুরুষদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দেখি ভালোই আঁকছেন, জুলিয়ান। গল্পখানা উপ"ভোগ" করলাম
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ অন্ধবিন্দু।
সবাই কেবল পুরুষগুলারেই দেখে। আপচুচ!
আমি আসলে মানুষদের ব্যাপার-স্যাপার দেখাইতে চাইছি।
ভালো থাকুন সব সময়।
৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩১
লীন প্রহেলিকা বলেছেন: ভাল লাগলো অনেক শ্রদ্ধেয়, নারী না হয়েও খুব সুন্দর ভাবেই নারীর মাঝে নিলীন অসহায়ত্ব তুলে ধরেছেন, প্রিয়তে তুলে রাখলাম। সালাম সহ শুভেচ্ছা রইল।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১২
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ নীল প্রহেলিকা। (নিক আপডেট করছেন নাকি>)
শুভ কামনা থাকলো আপনার জন্যেও।
৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৯
আবু শাকিল বলেছেন: গুরু জী ফিরে এলেন "এক্টু আকাশ " নিয়ে।সাথে দিয়ে গেলেন বচন-
"এ কেমন জীবন? বল দেখলেই যেমন লাথি মারতে ইচ্ছে হয়, স্ত্রীকে দেখলেই পুরুষদের শরীর ব্যাকুল হতে হবে?
কেনু কেনু ???
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৩
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আবু শাকিল।
পুরুষরাই ভালো বলতে পারবে। আমি তো বৃদ্ধ।
ভালো থাকুন এই শুভ কামনা।
৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:০১
জাফরুল মবীন বলেছেন: জীবনের খুব সাধারণ ঘটনাগুলোকেও অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে একেবারে মানসপটে জীবন্ত করে তোলার আপনার সক্ষমতার প্রমাণ আবারও পাওয়া গেল এই গল্পে।খুব ভাল লেগেছে।
ঋভু নামটাও বেশ চমৎকার লাগল যদিও অর্থ জানিনা।
অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্যে।ভাল থাকবেন।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ জাফরুল মবীন।
ঋভু নামটা অনেক আগে একটা চিনাবাদামের ঠোঙায় পাইছিলাম। সম্ভবত ভারতী কারো লেখা গল্পের পাতা ছিল সেটা। এ গল্প লেখার সময় প্রথম ধাক্কাতেই নামটা এলো।
অভিধানে দেখলাম ঋভু অর্থ দেবতা বা দেবতার ক্ষমতার অধিকারী।
শুভ কামনা থাকলো আপনার জন্যেও।
৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: পুরুষ চরিত্রটা অদ্ভুত লাগল না এট্টা একটা টাইপ। এরা হয় ভীতু কিংবা সামাজিক সাবধানী। কিংবা আমার কাজের মেয়ের মতো মানসিক সমস্যা আক্রান্ত। তবে আমার কাজের মেয়ে এমন সাধলে বা দিলে সেটা এখানে ওখানে ফেলে রাখবে , চুরি করে খাবে। হে হে।
যেমনে বোল্ডলি কইলাম ভাইব্বেন না আবার আমি এমুন কাউরে চিনি। । লেখকরা সবাইকেই চিনে। কি কন?
গল্পটা আপনার গল্পের ট্র্যাকের বাইরে হইছে।ভারসে্টাইল। খুব ভালো লেগেছে। আপনার লেখনী ভালো সবাই জানে। গল্পের চিন্তার বইচিত্র দরকার ছিল।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ বইঞ্জান।
অদ্ভুত কোনো বিষয়ে আমার আগ্রহ নাই, আমার গল্পেও তেমন ব্যাপার থাকে না। খুব সাদামাটা বিষয়গুলাতেই রঙ-চঙ লাগাইতে মজা পাই।
ভীতু নয় তারা। সামাজিক সাবধানী বলা যায়। বাইরের খোলসটাতে কাদা লাগতে দিবে না, কিন্তু আড়ালে দীগম্বর হয়ে নর্দমায় ডুব দিতে পিছ পা হয় না। মানুষের যে কত রকম পরিচয় আর কত রকম আড়ালের যে প্রয়োজন হয় সমাজে বাস করতে গেলে- আমি দেখি আর অবাক হই।
আপনি এমন কাউরে চিনেন না বা চিনবেন না তা তা তো হইতেই পারে না। লেখকের চোখ বইল্যা কথা, গল্প পড়বার সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রটা নিজেই বিকশিত হওয়ার কথা। আমাদের আশপাশে এমন চরিত্র বিস্তর। কায়ক্লেশে বজায় রাখে যাবতীয় ভারসাম্য।
ভালো থাকেন সব সময় আর ধুমাইয়া লেখেন।
৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৩
মামুন রশিদ বলেছেন: কর্পোরেট আধুনিক জীবন ব্যবস্থার সাথে এক সময় মানিয়ে নেয় সবাই । মেনে নেয় লাইফ পার্টনারের সীমাহীন দুশ্চরিত্রতা । এক সময় নিজেও ভোগী হয়ে উঠতে চায় এক সময়ের আটপৌড়ে নারী । প্রাণহীন এই শহরে মানুষ মানুষের মন বুঝতে চায়না, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ভোগই এখানে হয়ে উঠে আরাধ্য ।
সুন্দর গল্পে ভালোলাগা জানবেন জুলিয়ান ভাই ।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৮
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন রশিদ।
অনেক কিছুর সঙ্গে তো আমাদের মানিয়েই নিতে হয় নানা ভাবে। দেখাদেখি বা তীব্র ঘৃণা বোধ থেকে যেমন প্রেমের জন্ম হতে পারে তেমনই খুব মজবুত কিছু হঠাৎ করেই ভেঙে পড়তে পারে। মানুষ বেশির ভাগই স্খলিত চরিত্রের। কেউ গোপন রাখতে পারে কেউ কেউ পারে না।
মন বোঝার ব্যাপারটা আরো থাকবে না সামনের দিনগুলোতে। মানুষ আর তার শরীর প্রাধান্য পাবে। বাহ্যিক ব্যাপারগুলো গুরুত্ব পাবে। সম্পর্কের শুদ্ধতার ব্যাপারটা হাস্যকর হয়ে দাঁড়াবে।
ভালো থাকুন আর আমাদের জন্য লিখুন।
৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার গল্পের থিমগুলো সব কাছাকাছি হয়ে যাচ্ছে। খেয়াল রাখুন ব্যাপারটা।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১২
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব।
থিমগুলা কাছাকাছি হলেও উপস্থাপনের দিকটাতে মনোযোগ দিচ্ছি। তা ছাড়া গল্পটাকে না ধরতে পারলে হারিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
ব্যাপারটার প্রতি দৃষ্টি পড়লো বলে কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সঙ্গে থাকলো অপার শুভ কামনা।
৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
যাযাবর বেদুঈন বলেছেন: শিরোনামটা ভাল লাগছে। একটু আকাশ...
অনেক কিছু না বলেও যেন না বলা অনেক কথা বলতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। গল্পে সেই আকাঙ্ক্ষার কিছুটা প্রতিফলন আছে।
অনেক ভাল থাকুন আপনি।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫০
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ যাযাবর বেদুইন।
শুভ কামনা আপনার জন্যেও।
১০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
ডি মুন বলেছেন: "বল দেখলেই যেমন লাথি মারতে ইচ্ছে হয়, স্ত্রীকে দেখলেই পুরুষদের শরীর ব্যাকুল হতে হবে?"
------ পুরুষের চিরকালীন কাম প্রবৃত্তির ছাপ গল্পে স্পষ্ট যা বিমলের চরিত্রের আদলে খুব সুন্দরভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।
" ঋভুরই বা কী করবার আছে? সে তো দীর্ঘদিনের অনিয়মের দাসত্বে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। "
------ এভাবেই আমাদের সমাজে অধিকাংশ নারীরা দাসত্বে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। তদের নিজেদের ইচ্ছা অনিচ্ছা বিসর্জন দিতে হয়।
"এমন কি আধুনিক ঋভুও কি সত্যিই আধুনিক হয়ে উঠতে পেরেছে? বাইরে বাইরে ঋভু হয়ে উঠতে পারলেও ভেতরে ভেতরে সেই রিজিয়া বানুকেই ছটফট করতে দেখে।"
-------- তবুও আধুনিক জীবনে ক্লান্তি আর বিষাদ কিংবা অতৃপ্ততা বাসা বাধে। আর তাই ঋভুর মতো অনেকেই হাজারিদের বলে ফেলেন --
" পুরো প্রসাদ পেতে একদিন মন্দিরে চলে আসেন। "
কিন্তু তারা সব পুরুষকে চিনতে অক্ষম। কেননা আসল সত্যিটা হলো --
" মেয়েরা পুরুষদের বুঝতে পারে কথাটা তাহলে পুরোপুরি সত্যি নয়। শফিক হাজারির মতো কিছু পুরুষ প্রকৃতই দুর্বোধ্য হয়। গাঢ় অন্ধকারের মতোই দুর্জ্ঞেয় আর রহস্যময়। "
পুরুষ চরিত্রের দুটি ভিন্ন রুপ এবং সেইসাথে নারীদের সংসার দাসত্বের দারুণ একটি চিত্র আকলেন।
সব মিলিয়ে চমৎকার গল্প।
লিখে চলুন নিরন্তর। শুভকামনা রইলো।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ডি মুন।
কোনো একটা লেখায় ঘরের নির্যাতিত স্ত্রীদের ফুটবলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন কোনো এক মহিলা। আর সেই ব্যাপারটা মাথায় ছিলো বলে এখানে উল্লেখ করলাম।
পুরুষ দুর্বোধ্য আর রহস্যময় হয়, বিপরীত দিকটা দেখলে ঋভুর মাঝেও ব্যাপারটা খুঁজে পাবেন। তবে এখানে বিমল যেমন সুযোগটা নিজের জন্য তৈরি করে নিয়েছে, আরেক দিকে ঋভুকেও অবহেলা আর নিতান্তই ভোগ্য করে তুলে তাকে সে উসকে দিয়েছে বহির্মুখি হতে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, আমার ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় সাইদ মোহাম্মদ ভাই একটা ছবি বেশ কিছুটা ঘষে দিয়ে আপলোড করেছেন, যেখানে দ্বিতীয় সারির মডেলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পোষাকে আটপৌঢ়ে বউও আছে। আমি মনে করি এক্ষেত্রে আটপৌঢ়ে বউটা সঙ্গ দোষে এমন কর্মে উৎসাহী হলেও তার স্বামীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উসকানি না থেকে পারে না।
তো এভাবেই আমরা নষ্ট হবার পথ তৈরি করে নেই অথবা নষ্ট হতে বাধ্য করি।
যাই হোক আপনার বিস্তারিত মন্তব্য জানান দিচ্ছে যে, গল্পটা পড়ে মজা পেয়েছেন।
ভালো থাকুন আর লিখতে থাকুন আমাদের জন্য।
১১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৪
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমার মনে হয়েছে, এই গল্পটি আসলে শুধুমাত্র পুরুষের চিরকালীন কাম প্রবৃত্তির গল্প নয়, এর মাঝে অন্তর্নিহিত আছে, নারী পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কের কিছু হতাশা আর এক ঘেয়েমির চিত্র। এই হতাশা বা একঘেয়েমি থেকেই হয়ত স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টিকে একজন নারী বা স্ত্রী দেখছেন 'বল দেখলেই যেমন লাথি মারতে ইচ্ছে হয়, স্ত্রীকে দেখলেই পুরুষদের শরীর ব্যাকুল হতে হবে?' এই প্রেক্ষাপট থেকে।
এই চিন্তা বা অস্থিরতার অন্যতম কারন পিএসের সাথে স্বামীর সম্ভাব্য বহুগামিতার ব্যাপারটি, যা দেখেও না দেখার ভান করতে হয়। ফলে স্বামীর কাছে শারিরীক মানসিক ইত্যাদি ব্যাপারে একঘেয়েমির শিকার হয়ে জীবনে কিছুটা হলেও বৈচিত্র্যের সন্ধানের জন্য আর একজন প্রানবন্ত ও উচ্ছল পুরুষের কাছে সুযোগের দুর্বৃত্তায়নের ছলে আগ্রাসী চুমু উপভোগ করে কৃষকের মেয়ে রাজিয়া, এই শহর যাকে ঋভুর বলেই চিনে।
আর এই সব গল্পে সমাজ সব সময়ই ঘুরে ফিরে খোঁজে তার চিরয়তার ফর্মুলার বানী- এই গল্পে প্রকাশ পেয়েছে পুরুষের দৈত চরিত্র এবং নারীদের দাসত্বের কাহিনী।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৫
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ কা_ভা।
সে খারাপ হয়ে যাবে বলে আমিও খারাপ হয়ে যাবো এটাও কিন্তু যৌক্তিক ব্যাপার নয়।
ভালো থাকুন সব সময়।
১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৫
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: একটু আকাশ !!
শিরোনাম টা যথার্থ হয়েছে ভাইয়া !
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৪
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ আভি।
ভালো থাকেন সব সময়।
১৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমার কাছে কেন যেন পুরুষ চরিত্রের চেয়ে নারী চরিত্রটাই ব্যাপক ভাবে মেলে উঠেছে।
রাবেয়া তথা ঋভুর চরিত্রের মাঝে তাই আমি দেখছি মা,স্ত্রী এবং প্রমিকার রূপকে।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৯
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী।
নারী যাই হোক তার ব্যক্তি জীবনে, মা হয়ে থাকলে তারা খুব কমই বিস্মৃত হয় নিজের মাতৃত্বকে। এ দিক দিয়ে তো তাদের মর্যাদা কখনো কমে যাবার মতো নয়।
ভালো থাকুন সব সময়।
১৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৪
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অসাধারণ! কবে এমন গল্প পড়েছি বলতে পারবো না, আদৌ কি কখনো পড়েছি? জানি না।
জীবন-ভালোবাসার টানাপোড়ন আর বাস্তবতা চাদরের আড়ালে নির্মমতা......।
খুব ভালো লাগলো। +++
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা মানুষ বলতে চায়।
আসলে বাস্তব সত্যিই নির্মম।
ভালো থাকুন এই শুভ কামনা।
১৫| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১৯
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: খুব ভালো লাগল জুলিয়ান দা।
আপনার গল্পগুলোর একটি বিশেষ দিক আমার অসম্ভব ভালো লাগে। আপনার বেশিরভাগ লেখাই জীবন ঘনিষ্ঠ। আমাদের প্রাত্যহিক জীবন যাপনের ছোট খাট বিষয়গুলো গল্পের ক্যানভাসে তুলে আনেন খুব চমৎকার ভাবে।
অনেক অনেক শুভ কামনা রইল প্রিয় লেখকের জন্য।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩৫
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রবাসী পাঠক।
" আমাদের প্রাত্যহিক জীবন যাপনের ছোট খাট বিষয়গুলো গল্পের ক্যানভাসে তুলে আনেন খুব চমৎকার ভাবে।"
আপনার বলা এ কথাগুলো বিশাল একটা প্রাপ্তি হয়ে থাকলো আমার জন্যে।
ভালো থাকুন নিরন্তর।
১৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৭
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
উপরের সবার মন্তব্যের সাথেই সহমত জানাই ।
এটাই আমাদের স্থলিত সমাজের দুর্গন্ধময় রূপ !
গল্পে ভালোলাগা, ভালো থাকুন ।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪৭
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নচারী গ্রানমা।
আমাদের সামাজিক বিধানের কারণে আমরা এমনটা ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। এখনো কোনো কোনো সমাজে একাধিক পুরুষের সঙ্গে এক নারীর সম্পর্ক অসিদ্ধ নয়।
একটা সময় কিন্তু এমন কোনো বাধা-ধরা ছিল না। তারপরে নিয়ম হলো একাধিক পুরুষের সঙ্গে নারী সম্পর্কিত হলেও সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পুরুষেরটাই হতে হবে। তারপর শ্বেতকেতু এসে কঠিন নিয়ম করে দিল যে, নারী একজন পুরুষের অধীন থাকবেন। সেই পুরুষের মৃত্যু হলে সেই নারী অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কিত হলে তিনি পতিত হবেন।
যত আইন মানুষের তৈরি আবার যত আইন ভঙ্গের ব্যাপার আছে তা-ও মানুষের দ্বারাই।
সমকাম অনেক দেশে বৈধ। আমাদের সংসদে যদি একটা বিশেষ আইন পাস করা হয় যে, এক নারী ইচ্ছে করলে পাঁচজন স্বামী রাখতে পারবেন। ফলে কিছুদিন খুব ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও হবে। কিন্তু এক সময় ব্যাপারটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ভালো থাকুন সব সময় আর পোস্ট খানিকটা দ্রুত দেওয়ার দাবি জানাই।
১৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: এত সুন্দর করে জীবন ঘনিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে এসেছেন যে ভাল না লাগার কোন কারন নেই --------চমৎকারতো বলতেই হবে
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৫
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।
ভালো থাকুন সব সময়।
১৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১৩
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আসলেই চমৎকার / এ বিষয়ে অমতকার ।।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৩
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবেশ বন্ধু।
ভালো থাকুন সব সময়।
১৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৭
লিখেছেন বলেছেন: সুন্দর
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৫
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ লিখেছেন।
ভালো থাকুন সব সময়।
২০| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:২৫
মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ফিনিশ টা যেভাবে টেনেছেন প্রশংসনীয় । মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো
উপভোগ করলাম ।
পুরুষগুলো অল্পতেও তুষ্ট থাকে আবার সুযোগে সবটাই গিলে ফেলতে চায়। - একমত ।
ভাল থাকুন জুলিয়ান দা ।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদ।
ভালো থাকুন সব সময়।
২১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
সহজিয়া ধারার পাঠ পড়ে ভাল লাগলো ৷ শফিক হাজারির সাথে মোস্তাক হোসেনের কোথায় যেন কিঞ্চিত মিল আছে হয়ত ৷
ভাল থাকবেন ৷
* প্রকাশিত গল্পে মন্তব্যে সাচ্ছন্দ্যবোধ হয় না ৷
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর আলম৫২।
একজন লেখক মূলত একটি চরিত্রকে নিয়েই কাজ করেন, জ্ঞাতে কিংবা অজ্ঞাতে। সেই সঙ্গে মিশে থাকে তার নিজস্ব দর্শন। তাই অস্পষ্ট হলে সাদৃশ্য থেকে যায় হয়তো।
ঠিক আছে, এরপর আর উল্লেখ করবো না প্রকাশিত কি না।
ভালো থাকুন সব সময়।
২২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
আহসানের ব্লগ বলেছেন: +
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: @আহসানের ব্লগিং।
ভালো থাকুন সব সময়।
২৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৯
এহসান সাবির বলেছেন: খারাপ লাগেনি......!
শুভেচ্ছা রইল।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ এহসান সাবির।
ভালো থাকুন সব সময়।
২৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩১
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার!
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ দেশ প্রেমিক বাঙালী।
ভালো থাকুন সব সময়। সেই সঙ্গে থাকলো ঈদের শুভেচ্ছা।
২৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:১৪
হামিদ আহসান বলেছেন: দারুন উপভোগ্য একটি গল্প পড়লাম। ধন্যবাদ আপনাকে
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৩৩
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ হামিদ আহসান।
ভালো থাকুন সব সময়।
২৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৬:০৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ডানা কেটে দিয়ে বনের পাখিকে হয়তো পোষ মানানো যায়। সোনার শেঁকলে বাঁধলে পাখি আর তার পালনকর্তার মান বাড়ে। কিন্তু পাখির স্বাভাবিক জীবনের মৃত্যু ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় বন্দিত্ব নামের উপসর্গ।
কথাগুলো খুবই ভালো লাগলো।
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৩৬
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ তনিমা। ভালো থাকুন সব সময়।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৯
হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:
কেমন যেন দায়সারা লেখা!
মানসাংক কোথায়?