নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
কাগজ......
'কাগজ' নামের একটি সিনেমা দেখলাম। লাল বিহারী নামক একজন কৃষকের সত্য ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
উত্তর প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের একজন কৃষক লাল বিহারী ওরফে ভরতলাল। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। যাকে তার নিকট আত্মীয় ষড়যন্ত্র করে অফিসিয়ালি কাগজে মৃত ঘোষণা করা হয়, যদিও তিনি জীবিত!
ভরতলাল তার ব্যবসা বাড়ানোর জন্য লোন নিতে গেলে জমির কাগজপত্র চায় ব্যাঙ্ক। তখন সে জানতে পারে, তার কাকা সরকারি অফিসারকে ঘুষ খাইয়ে তাকে সরকারি খাতায় মৃত ঘোষণা করে তার জমি নিজ নামে লিখিয়ে নিয়েছে। খুব চেষ্টা করে সে আইনি পথে লড়ার, কিন্তু সফল হয়না। তারপর চেষ্টা করে বেআইনি পথে লড়ার, কিন্তু বেআইনি কিছু ভরতলাল করতে পারে না। সে নানা কান্ড করে গ্রেফতার হতে চায়, যাতে সরকারি খাতায় তার নাম ওঠে, কিন্তু তাকে কিছুতেই পুলিশ গ্রেফতার করেনা। গ্রেফতার হওয়ার আশায় আদালতে দাঁড়িয়ে জজসাহেবকে নানা কটূক্তি করে, তাও তাকে গ্রেফতার করা হয় না। মার খায়, গালি খায় কিন্তু মৃত হয়েই থেকে যায় ভরতলাল। তারপর সে 'মৃতক পার্টি' নামের একটা দল গঠন করে। ইলেকশন লড়ে, আরো অনেক কাজ করে তার সত্য প্রমাণের জন্য। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ জীবনে জেতে, সে প্রমাণ করে সে জীবিত।
মানুষের চেয়ে কাগজ দামী।
মানুষের চেয়ে সিস্টেম বড়, কাগজ বড়।
এই ভরতলাল ব্যক্তিটি খুবই কোমল স্বভাবের। সে তার দোকানে সবকিছু কেটে দেওয়া ইঁদুরকেও মারতে পারেনা। ইদুর কলে আটকা পড়লে নদীর ধারে নিয়েগিয়ে ধমক দিয়ে ছেড়ে দেয়-"কারোর কোনো ক্ষতি করবিনা" বলে। সেই ভরতলালই যখন প্রতিশোধ নিতে অপহরণ করে তার কাকার নাতিকে, তখন তার কুটিল কাকিমা নিশ্চিন্ত থাকে। হেসে বলে, "হুঁ, যে একটা ইঁদুর মারতে পারে না, সে আমার নাতিকে কী মারবে? নিজেই এসে দিয়ে যাবে, কোন পুলিশ রিপোর্ট করার দরকার নেই। রিপোর্ট করলেই ওর নাম উঠে যাবে সরকারি খাতায়।" সত্যিই ভরতলাল নাতিকে আদর স্নেহ করে গোসল করিয়ে খাইয়ে দাইয়ে কতগুলো চকলেট বিস্কুট হাতে দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়!
এটাই দুনিয়া। যে ভালো, যে কিছুতেই কারো ক্ষতি করেনা, তার অস্তিত্ব লোকে উড়িয়ে দেয়, তাকে দুর্বল ভাবে, তার ভালোমানুসিকে দুর্বল ভাবে, তাকে সহযোগিতা করে না ভালোমানুষ বলে। সুতরাং অসহযোগিতা করলেও, ভরতলাল গর্জাবে, কিন্তু বর্ষাবে না।
এই হল ভালোমানুষের অবস্থান। আবার কেউ কেউ বদলে ফেলেন নিজের অবস্থান। তারা ধীরে ধীরে অন্যদের মতো হয়ে ওঠেন। আর কেউ কেউ ভরত লালদের মতো প্রানন্ত চেষ্টা করে নিজের অবস্থানে টিকে থাকতে। এই দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকেদের হারানো খুব শক্ত। একবার করে আশালতাটি মুড়িয়ে খেয়ে নেওয়া হয়, আবার একটি পাতা গজায়, সত্য ছেড়ে নড়ে না। মুড়িয়ে খেয়ে নিলেও, পরের দিন পাতাটি গজিয়েছে। এখানেই এই ছবির সবচেয়ে বড় মেসেজ।
যে সিস্টেমের সঙ্গে লড়তে আপনারা সবাই ভয় পান, ভাবেন হারিয়ে যাবেন, কেননা আপনি একা। সেই সিস্টেমের সঙ্গে আজ অবধি যারা লড়েছেন সবাই একা ছিলেন। অর্ধেকের বেশি মানুষ ভাবেন বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই পারবেন না। সেই প্রাচীন কাল থেকে এ সমস্যার, এ দোলাচলের শুরু।
সত্য এবং মিথ্যা, আপনি কোন পক্ষ নিলেন সেটিই ইম্পর্ট্যান্ট। আপনি যদি সত্যের পক্ষ হন, বেশীরভাগ লোক একদিন না একদিন আপনার পক্ষে আসবেই। না আসলে আপনি অস্ত্র ধরার সক্ষমতা অর্জন করুন। অস্ত্র মানেই মারণ বাণ নয়, নিজের মেরুদন্ড সোজা করে হাঁটলে সবাই তাকে চমকায়, পিছনে কথা বলে, সামনে এসে টক্কর নেয়না, এ আমার জীবন দিয়ে দেখা।
ওই আত্মবিশ্বাসটুকুই আপনার অস্ত্র। সিস্টেমের মধ্যে পরিবার ও পড়ে। বেশিরভাগ মানুষকেই সবচেয়ে বেশি লড়তে হয় নিজের লোকেদের বিরুদ্ধে, আর সেখানে ভালোমানুষির সুবিধা বিপরীত পক্ষ নেবেই নেবে। এটাই হয়ে এসেছে। এটাই হয়। তবুও কেউ কেউ নিজের মতো করে জিতে যায়, শুধু আত্মবিশ্বাসে আর সত্যের জোরে। আমাদের পৃথিবীতে যা দেখানো হয়, তাই দেখি, যা দেখানো হয়না তা খুব কম লোকে দেখে। তারা বরাবরই সংখ্যা লঘু। গ্যালিলিও থেকে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তার মানে কি পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে তা প্রমাণ হয়নি, মেনে নেয়নি পৃথিবী, ধর্মের চোখ রাঙানির বাইরে গিয়ে? এই পোস্ট ট্রুথের যুগেও এখনো সে সত্য নস্যাৎ করতে কেউ পারেনি।
এরকম ভাবেই নিরস্ত্র মানুষেরা জিতে যায়, একা একা, সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও। কোন ফরমায়েশি ইতিহাস বাতিল করতে পারে না প্রকৃত সত্য।
'কাগজ' ২০২১ সালের প্রথম সপ্তাহে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় জীবনভিত্তিক সিনেমা। সিনেমাটির পরিচালক শীতেষ কৌষিক এবং প্রযোজনা করেছেন সালমান খান এবং নিশান্ত কৌশিক। গ্লামার নায়ক- নায়িকা বিহীন সিনেমার মূল চরিত্রে অসাধারণ সুন্দর অভিনয় করেছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী, মোনাল গাজ্জার এবং অমর উপাধ্যায়। হিন্দি ছবি ইংরেজি সাবটাইটেল থাকায় দর্শকদের জন্য সহজবোধ্য হয়েছে।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৩২
মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: কোন ভাষার মুভি এটি...?
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার পোস্টের নিচের লাইনে লিখেছি।
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৪৯
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সহজ সরল লোকেরা পদে পদে বিপদে পড়ে।ভোগবাদের এই দুনিয়ায় সরল লোকদের স্থান নেই।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত।
৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫১
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি মুভির গল্পে উঠে আসা 'ভালো মানুষদেরকে ঘিরে সামাজিক প্রপঞ্চ' নিয়ে লিখেছেন, নিশ্চয় সেটা আলোচনার দাবীদার। কিন্তু আমার সবসময় মনে হয় যে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি কমার্শিয়াল ধারার বাইরে বের হয়ে এ ধরনের সামাজিক বিষয়গুলোকে নিয়ে ব্যতিক্রমী ট্রাকের মুভি করতে পারেনা কেনো?
আয়নাবাজীতে সেরকম গল্প এসেছিলো যদিও, কিন্তু দিনশেষে আমাদের মুভি দেখে ধারণা হয় এখানে প্রেম পিরীতি ছাড়া আর কিছুই নেই। ইদানিং নাটকগুলোও সে পথে সমানে দৌঁড়াচ্ছে।
সুন্দর লেখায় প্লাস।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৫
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত। আমরা সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে পারছিনা।
৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: দারুন মুভি তো । কী সুন্দর করে লিখেছেন মাশাআল্লাহ
ভালো মানুষেরা ঠকে পদে পদে
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: একমত। আমরা সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে পারছিনা।
এক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে না পারলেও অনাবশ্যকীয় অনেকক্ষেত্রেই অবশ্য আমরা সীমানা পেরিয়ে গিয়েছি
৭| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: পঙ্কজ ত্রিপাঠী- অসাধারন এবং ব্যতীক্রমী অভিনেতা।
আমি তার অভিনয়ের ভক্ত।
লুডুতে ও অসাধারন অভিনয় করেছেন উনি।
ভবিষ্যতে উনি আরো সফল হবেন... আশা করা যায়।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: লুডু ছবিটাও আমি দেখেছি। হ্যাঁ লুডু ছবিতেও তিনি অসাধারন সুন্দর অভিনয় করেন।
৮| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:১১
করুণাধারা বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে মুভিটি দেখার আগ্রহ হচ্ছে। দেখি দেখতে পারি কিনা।
অনেক ধন্যবাদ চমৎকার এই মুভি সম্পর্কে জানাবার জন্য।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আশা করি ভালো লাগবে।
৯| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩২
ফয়সাল রকি বলেছেন: কাগজ- দেখেছি। মোটামুটি মানের সিনেমা। ট্রেইলার কিংবা রিভিউতে যতখানি দেখানো হয়েছে তাতে সিনেমাটা দেখার আগে আশার পারদ অনেক উপরে ছিল, যা ধীরে ধীরে নেমে যায়। তবে আপনি রিভিউতে যে মেসেজের কথা বললেন, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সিস্টেমের বিরুদ্ধে একা লড়ে যাওয়া দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত কম।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আলবাত।
১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ্মুভিটার কথা খুব শুনেছি।
খুব শ্রীঘই দেখবো।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: ভিন্ন ধারার ছবি। ভালো লাগবে।
১১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১০
ওমেরা বলেছেন: ভালো মানুষের সরলতার সুযোগ মানুষ নিয়ে মানুষ এমনি করাই ঠকায় । এই সিনেমা দেখে তো কেউ ভালো মানুষ হতে চাইবে না ভালো মানুষের দূর্বলতার সুযোগ কি ভাবে নেয়া যায় সেটাই শিখবে ।
আপনার রিভিও ভালো হয়েছে ।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: একই ভাবে ভালো মানুষ প্রেরণা পায় কিভাবে লড়াই করে নিজের ভালোত্ব প্রমাণ করতে হয়।
১২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার লেখা মুভিটা দেখার আগ্রহ হচ্ছে। সুন্দর কাহিনী ।
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: ভিন্ন ধারার ছবি। ভালো লাগবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৮
এল গ্যাস্ত্রিকো ডি প্রবলেমো বলেছেন: এত চমৎকার কাহিনী নিয়ে সিনেমা, দেখতে হবেই। আপনাকে ধন্যবাদ।