নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
'লাইফ ইজ বিউটিফুল' এর গুইডোকে মনে আছে?
গল্পের সারাংশঃ- গল্পের নায়ক গুইডু ও তার প্রেমিকা ডোরার প্রেম ও বিবাহ বন্ধন এর ঘটনা দিয়ে ঘটনার শুরু, যাতে মিশে আছে হাস্যরসাত্নক ভাবনা। এর পরের অংশে গুইডু ও ডোরার একমাত্র ছেলে জোসুয়ার সাথে তার বাবার মিথ্যে সাজানো গল্পের এক নির্মম ঘটনা। খুব অল্পে বলতে গেলে এতটুকুই ঘটনা কিন্তু দেখার পর বোঝা যাবে জীবন কতটা নির্মম হতে পারে, যুদ্ধ কতটা আঘাত করে মানুষকে। নাজি সেনাবাহিনী যখন গুইডু ও তার ছেলে জোসুয়াকে কনসেনট্রেসন ক্যাম্পে চালান করে, গুইডো তার ছেলেকে সেই বীভৎসতা বুঝতে না দেওয়ার জন্য অদ্ভুত এক গল্প ফাঁদে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একটি ইহুদী পরিবারের উপর কেমন নির্যাতন করা হয়েছে তার খানিক বর্ননা। সুখ যেমন চিরকাল থাকে না তেমনি দুঃখও চিরকাল থাকে না এই সিনেমা দেখলে তা হাড়ে হাড়ে বোঝা যাবে।
সে তার ছেলেকে বোঝায় এই ক্যাম্প, যুদ্ধক্ষেত্র সমস্তটাই একটা খেলা। এই খেলায় জিততে হলে তাকে কয়েকটা টাস্ক করতে হবে। যেমন- মায়ের জন্য কাঁদা যাবে না, খিদে পেলে চিৎকার করা যাবে না- করলেই পয়েন্ট কাটা যাবে, তাহলেই আর মিলবে না পুরস্কার হিসেবে ট্যাঙ্কটি।
বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্যেও গুইডো তার এই গল্পটি চালিয়ে যায়। এমনকি একটি বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে থাকা তার ছেলের সামনে দিয়ে যখন তাকে জার্মানরা নিয়ে যায় গুলি করবার জন্য, তখনও সে তার অভিনয় চালিয়ে যায়- যাতে তার ছেলে বুঝতে না পারে আসলে কি ঘটছে। নিজে বাস্তবের গুলিতে এফোঁড় ওফোঁড় হতে হতেও ছেলের জন্য জিইয়ে রাখে রূপকথা।
আমরা প্রতিদিন যখন খবরের কাগজ খুলছি, খবরের চ্যানেল দেখছি, রাস্তায় হাঁটছি তখন কি মনে হচ্ছে না, আমরা অদৃশ্য এক কনসেনট্রেসন ক্যাম্পের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি- যেখানে আমাদের পাশ দিয়েই একের পর এক লাশ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ওই লোকগুলো। ওদের মুখগুলো চেনা যাচ্ছে না, কেমন ঝাপসা। কিন্তু বয়ে নিয়ে যাওয়া লাশগুলো কেমন যেন চেনা চেনা, কেমন যেন আমার বন্ধু, আমার ভাইয়ের মতো দেখতে। ওই বীভৎস থেঁতলে যাওয়া শরীরগুলো থেকে দূরে পালাতে চাইছি, কিন্তু পালাতে পারছি না কেন? চ্যানেল পাল্টে ঢুকে যেতে চাইছি বিনোদনের রঙিন দুনিয়ায়, কিন্তু পাল্টাতে পারছি না কেন? আমার হাতে রক্তের দাগ কেন, আমি তো কাউকে মারিনি। ওই ঝাপসা মুখগুলো একটু যেন স্পষ্ট দেখাচ্ছে। মুখগুলো আমার মতোই না? হ্যাঁ, তাইই তো। ওই তো আমিই আমার বন্ধুর, আমার ভাইয়ের লাশ বয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর আমরা কেমন ভান করছি সবকিছু কি সুন্দর, কি স্বাভাবিক হয়ে আছে, ঠিক যেন রূপকথা।
সময় হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার, ওই মিথ্যে রূপকথাকে আঁকড়ে ধরে থাকবো নাকি ওই সব মুখগুলো থেকে আমার চেহারার মুখোশটা টেনে ছিঁড়ে ফেলব? আপনার স্বজনদের রক্তের দাগ নিজের হাত থেকে মুছেই শান্ত থাকবো নাকি আমার নামধারী হত্যাকারীগুলোকে প্রকাশ্যে চিহ্নিত করবো আমার শত্রু হিসেবে?
গুইডো চায়নি তার ছেলে এক আতঙ্কের ছবি বুকে নিয়ে বড় হোক, বেঁচে থাকুক একরাশ ঘৃণার উত্তরাধিকার নিয়ে; এখনো পৃথিবীর মুখ না দেখা আমার সন্তানের জন্য রূপকথার পৃথিবী না হোক, একটা আতঙ্ক-বিহীন পৃথিবী দিতে চাই যেখানে তার বাবা একজন লাশ টেনে নিয়ে যাওয়া নির্বাক নাগরিক হবে না।
ব্যক্তিগত উপলব্ধিঃ- বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, লাইফ ইজ বিউটিফুল' নয়, বরং লাইফ ইজ স্ট্রাগল। তবে জীবন হতে পারে চমৎকার, যদি আপনি একে ভয় না পান। এজন্য প্রয়োজন সাহস, কল্পনা শক্তি ও অল্প কিছু টাকাকড়ি।
পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল স্থান হলো মন, আর সবচেয়ে দুর্বল অস্ত্র ভালোবাসা। যদি অল্পতেই আপনার মন খারাপ হয়ে যায় তাহলে বুঝে নিবেন পৃথিবীটা আপনার জন্য অনেক কঠিন। যোগ্য ব্যক্তিরা-ই সমালোচিত হয় আর সমালোচনা করে অযোগ্য ব্যক্তিরা। সব কিছু জানা কারোর জন্য আবশ্যক নয়। কিন্তু যা কিছু বলবে তার সবটুকু সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শক্ত মনের মানুষের দুঃখ কম। কারোরই উচিত না অন্যকে ইমোশনালি ডমিনেট করা।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:০৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে যারা বাইরে খুব শক্ত থাকে, তারাই ভেতরে খুব বেশ কোমল। তবে যারা মনে শক্ত তাদের ডমিনেট করা অত্যন্ত কঠিন।
৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর উপলব্ধি আপনার। জীবন সত্যিই সুন্দর
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:০৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:২৪
কামাল১৮ বলেছেন: সবার উপলব্ধি এক রকম না,সেটা নির্ভর করে তার চিন্তা করার পদ্ধতির উপর।সমস্ত বিশ্বকে বা বস্তু জগৎকে বা ঘটনাকে ব্যাখ্যা করার দুটি পদ্ধতি আছে।একটি হলো ভাববাদী অন্যটি হলো বস্তুবাদী পদ্ধতি।দুটি সম্পূর্ণ বিপরীত।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:১২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও মনে করি, উপলব্ধি এক একজনের এক এক রকম। বিষয়টা নির্ভর করে দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতার উপর। ভাববাদী বাস্তবতা বর্জিত হলেও বিশ্বাস এবং আদর্শিক- যার জন্য ভাববাদীতা বস্তুবাদীতা সাংঘর্ষিক হয়না।
৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৫৪
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: মন তো মানে না যা বোঝাতে চাই, বিপত্তির উৎস।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন- কঠিন বাস্তবতায় আবেগ আটকে রাখা যায়না।
৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:১৭
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আমরা চোখ বন্ধ রেখে
কান বন্ধ রেখে
মুখ বন্ধ রেখে বাচতে চাই।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: কী দূর্ভাগ্য, আমরা এখন শুধু নিজেকে নিয়েই বাঁচি, নিজেকে নিয়েই ভাবি! আমরা আমাদের নূণ্যতম নাগরিক দ্বায়িত্ব দূরের কথা পারিবারিক-সামাজিক দ্বায়িত্বটুকুও পালন করছিনা!
৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমি ভাবলাম মুভি রিভিউ লিখেছেন কিনা। কিন্তু না অন্য জিনিস।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আধা রিভিউ, আধা উপলব্ধি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল স্থান হলে মন......
শেষের প্যারাটা মনে হলো আমার জন্য !
চমৎকার উপলব্ধি প্রিয় জুলভার্ন।