নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিস্টেম লসঃ

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৪

সিস্টেম লসঃ

গত ২০২১-২০২২ সালে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় স্বাধীনতা পদক পেয়েছে- সেই অমরত্বের কথা নিশ্চয়ই আমাদের ভুলে যাওয়া উচিৎ হবে না। চলতি বছর বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের বাৎসরিক সক্ষমতা(চলতি বছরের কাজের 'টার্গেট' স্পর্শ করার জন্য সরকারের কাছে বোনাস দাবী করেছে। বহুল আলোচনা সমালোচনার মুখে বোনাসের দাবী প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রথমেই একটা বাণী উগরে দিচ্ছিঃ "ঘুষ দিবেন না, ঘুষ দাতা জাহান্নামে যাবে"!
সম্পুরক বাণীঃ ঘুষ গৃহীতা কানাডা- মালেশিয়া বেগম পাড়ায় সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করিবে

বাংলাদেশে সরকারী সেবাখাতে 'সিস্টেম লস' কথাটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মুখরোচক একটি শব্দ। প্রথমেই বলি- সিস্টেম লস কি?
সহজ কথায়- সাধারণত যখন কোন জিনিস তার নিজস্ব গতিপথে চলে তখন তাকে সিস্টেম বলে। আবার যখন নিজস্ব গতিপথে না চলে ভিন্ন পথে অনিয়মিত ভাবে চলে তখন তাকে আমরা সিস্টেম লস বলি। বাংলাদেশে অর্থনীতিতে সিস্টেম লস কথাটি ব্যাপক ভাবে পরিচিত। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে স্বধীনতা সংগ্রামীরা স্লোগান দিত-"সরকারকা/ কোম্পানীকা মাল দরিয়ামে ঢাল"! কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে কথাটি ব্যাবহৃত হয় রাস্ট্রায়ত্ব বা সরকারি যাবতীয় মালামাল নিজের মনে করে ইচ্ছামত খরচ করা ও লুটপাট করা বোঝাতে।

চুরি করে বি্দ্যুত ব্যাবহার, পানি ব্যাবহার, ব্যাংকের ঋণ লোপাট করা, গ্যাস চুরি/অপচয় করা, লাইনম্যান, মিটার রিডারকে ঘুষ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বিদ্যুত/গ্যাস বিল মাত্র কয়েক হাজার টাকায় নামিয়ে নিয়ে আসা ইত্যাদি গহির্ত কাজে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত। সীমাহীন দুর্ণীতি এবং অপচয়ের পিছনে যে বিশয়টি কাজ করে তাহলো সরকারী সম্পদ আত্মস্বাৎ 'অনৈতিক নয়' মনে করা। এধরনের অপকর্মের কারনেই সরকার প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা সিস্টেম লসের খাতায় নাম লেখাচ্ছে।
এই সিস্টেম লসের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ সত্যি সত্যি চলে যায় যান্ত্রিক সিস্টেমের ত্রুটির জন্য যা সর্বোচ্চ ১০ শাতাংশ। বাকী ৯০ ভাগ চলে যায় দূর্ণীতির কারনে- বিশেষ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীর পকেটে।

আমার দেখা বিদ্যুৎ বিভাগের একটা দুর্নীতির চিত্রঃ আমাদের নিকট প্রতিবেশীর একটা বহুতল বানিজ্যিক ভবনের দুইটা ফ্লোর কোচিং সেন্টার হিসাবে ভাড়া দেওয়া। স্বাভাবিক নিয়মে মাসে ৫০/৬০ হাজার টাকা বিল হওয়া উচিৎ। কিন্তু মিটার রিডার-বিল্ডিং মালিক কারসাজি করে দুটি ফ্লোরে মাসে বিল করা হতো ২৫০০/-- ৩০০০/- মধ্যে। মালিকের শত্রুপক্ষের অভিযোগে ডেসার কেন্দ্রীয় অফিস থেকে একটা টিম এসে সত্যতা প্রমাণ পায়। দেখা যায় দুই বছরে ৬৪ লক্ষ টাকার বিল ফাঁকি দিয়েছে। বিল্ডিং মালিক দেশের সুনামধন্য একজন সাংবাদিকের কাজীন....যথাযথ ভাবে তদ্বির করে নামমাত্র জরিমানা দিয়ে যথারীতি বিদ্যুৎ চুরি করে যাচ্ছে।

বিদ্যুত খাতের সিস্টেম লসের শুধুমাত্র একটা কারন/ঘটনা বর্ণনা করছি। বাংলাদেশে বিদ্যুত খাত উতপাদনে এবং বিতরণ খাতে বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। যেমন পি ডি বি, ডেসা, ডেসকো, প্ললী বিদ্যুত এরকম আরো কয়েকটি সংস্থা। তার মধ্যে বেশ কয়েকটা অধিদপ্তর নিজস্ব নিয়ম নীতিতে কাজ করে। এর মধ্যে চুরি চামারিতে তথা সিস্টেম লসের সম্রাট হলেন মিঃ ডেসা এবং মিঃ পি ডি বি। লাইন ম্যান, মিটার রিডার চুরি করে কোটি পতি হবার কাহিনী এখন সবাই জানেন। তবে মেন্টেইন্যান্স ডিপার্ট্মেন্টের চুরির দিকে কেউ খেয়াল এখনো করেনি বোধ করি। মেন্টেইনেন্স ডিপার্ট্মেন্টের চুরি করা হয় মুলত ডেসা/ পি ডি বি'র ঠিকাদারদের মাধ্যমে। ধরা যাক-ঢাকা শহরের ডেসা'র চলতি বছর মেন্টেনেন্স খাতে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্ধ আছে। এখন সেই বরাদ্ধকৃত টাকাটা ভাগ বাটোয়ারা করে খেতে হবে- নামে মাত্র(কাগজে কলমে)মেন্টেনেন্স করার নামে।

এ টু জেড কর্তিপক্ষ বিভিন্ন এরিয়ার মেন্টেনেন্স কাজের সেডিউল বানাবে ছোট ছোট (প্রতিটা কাজ ১০/২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে। বিদ্যুত বিভাগের মেন্টেনেন্স কাজে ২৫ লক্ষ টাকার নীচের কাজের টেন্ডার নোটিশ পত্রিকায় দেয়া লাগেনা)বরাদ্ধ দিয়ে। তারপর পছন্দের ঠিকাদারদের ডেকে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব মিটিং করবেন। ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তথা বিদ্যুৎ কর্তিপক্ষদের ৫০% বরাদ্ধের টাকা এডভান্স দিয়ে দিবেন। বাকী টাকা বিল করে ঠিকাদার তুলে নিবেন। ভিতরের যা কিছু কাজ- অর্থাৎ ঠিকাদার কাজ করেছে, ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে গিয়ে কাজ তদারকী করেছেন ইত্যাদি সেডিউল মত তৈরী করে নোট দিবেন যার যার টেবিলে বসেই। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বিল পেয়ে যাবেন। কাজ কিন্তু মোটেই হয়নি। যদি দুর্ভাগ্যবশত কোথাও কাজ হয়েই থাকে-তবে তা মাত্র ৩-৪% ! এক্ষেত্রে ডেসা/ পি ডি বি কর্তিপক্ষ কিন্তু অনেক উদার তথা দিল দরাজ কর্মকর্তা! যে টুকু কাজ হয়েছে কিম্বা হবে সেই পরিমান টাকা তারা বাদ দিয়েই ৫০% টাকা নিবেন এবং রেশিও মোতাবেক সবাই ভাগ করে নিবেন! যদি বিশ্বাস না হয়-সরকারের যেকোন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে গোপনে পরীক্ষা করে দেখা হোক- সত্যতা মিলবে(যদিনা সেই গোয়ান্দাদেরকেও ভাগ বাটোয়ারা না দিতে হয়)!

রক্ষক যদি ভক্ষক হয়- তাহলে পদেপদে সিস্টেম লস আরও বাড়বে। খেসারত দিতে হবে আমজনতার।

(আমাদের অত্যন্ত প্রিয় একজন ব্লগার বন্ধু সরকারের অতিরিক্ত সচিব যিনি বেশ কিছুদিন ডেসার চেয়ারম্যান ছিলেন(এখন অন্য মন্ত্রনালয়ে বদলী হয়েছেন) তাঁর একটা মতামত পেলে ভালো লাগতো। কিন্তু তাঁর অবস্থানগত কারণে তিনি মন্তব্য করবেনা জানি)

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:০৬

জটিল ভাই বলেছেন:
"ঘুষ দিবেন না, ঘুষ দাতা জাহান্নামে যাবে"! বাক্যটিতে "জাহান্নাম" শব্দটির ব্যবহার সাম্প্রদায়িক হয়ে গেলো না? তারচেয়ে নরক ব্যবহার করলে বেশি নিরপেক্ষ কি হতো না?

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:১০

জুল ভার্ন বলেছেন: তা যা বলেছেন! জাহান্নাম শব্দে ইসলামী গন্ধ আছে- কাজেই এটা নিষিদ্ধ হওয়া উচিত!

২| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:১৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একজন ইঞ্জিনিয়ার অত্যন্ত মেধাবী হন। কম মেধার লোকের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার হওয়া কঠিন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হোল এই ধরণের বহু মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার
বড় বড় দুর্নীতির সাথে জড়িত। অনেক ইঞ্জিনিয়ার শুধু ঘুষ খাওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং লাইন ছেড়ে কাস্টমস, ট্যাক্স, ভিএটি এই সব লাইনে যাচ্ছে। আইবিএর এমবিএ করা ইঞ্জিনিয়ারও ঘুষ নিচ্ছে।

তবে শুধু ইঞ্জিনিয়ার না প্রত্যেকটা লাইনের মেধাবী লোকেরাই দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে পড়েছে। সুট বুট পড়ে এসি রুমে আলিশান কামরায় থাকে তাই হঠাৎ করে দেখে কেউ বুঝতে পারবে না।

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: দেশে এমন একটা সেক্টর নাই যেখানে "বাম হাতের কারবার" করায়ত্ত নয়....ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, শিক্ষক সবাই একই লাইনে......

৩| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:২৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: উনাদের একটু বোনাস দিলে কোন ক্ষতি ছিলো বলে মনে করি না। উনারা এমনেই হারাম খাবার খেতে খেতে ক্লান্ত, একটু হালাল খেতে পারতো!

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৩২

জুল ভার্ন বলেছেন: উনারা হারামকেই হালাল আদর্শ মেনে নিয়ে এগিয়ে চলছেন.....

৪| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: গুলিস্তান এলাকায় টিসিবি বিল্ডিং এ বিদ্যুৎ নেই। সেখানে গত ৪/৫ বছর ধরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।
এই বিল্ডিংটা সরকারী। অথচ ভাড়া নিচ্ছে ক্ষমতাবানরা।

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৩৫

জুল ভার্ন বলেছেন: গোটা দেশজুড়ে সব ফুটপাতের দোকান, বস্তি আলোকোজ্জ্বল..... কিন্তু কোথাও বৈধ সংযোগ নাই.....

৫| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৩

ঢাবিয়ান বলেছেন: স্বাধীনতা শব্দটাই এখন একটা কৌতুক হয়ে দাড়িয়েছে। এই কৌতুকের পদক পায় রাস্ট্রীয় লুটেরারা !!!

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫০

জুল ভার্ন বলেছেন: বর্তমানে যতোগুলো রাস্ট্রীয় পুরস্কার দেওয়া হয় তা সবই বানিজ্যিক ভিত্তিতে....

৬| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭

কামাল১৮ বলেছেন: আপনার দার্শনিক টাইপের লেখা গুলিই ভালো লাগতো।ভাবনা চিন্তা থাকতো।

২৫ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২

জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইজান, আমি দার্শনিক নই, বড়োজোর একজন সাধারণ বারোয়ারী লেখক বলা যায়।

৭| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: পড়েছি- মন্তব্য থেকে বিরত থাকছি! :(

২৬ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৬

জুল ভার্ন বলেছেন: কেন, ইন্ডাস্ট্রিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে তিক্ত অভিজ্ঞতা?

৮| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশ হলো চোরের দেশ।

২৬ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: চোরের খনির দল যখন ক্ষমতায়......

৯| ২৫ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:০২

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আমার এক বন্ধুর উক্তি মনে পড়ে গেল আপনার পোস্ট পড়বার পর , সেটাই বলি !!

" কী আর করা , এই দেশে জন্মাইয়া খাইছি ভীষণ ধরা ! "

২৬ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: জন্ম হোক যথা তথা- কর্ম হোক ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.