নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

সেই ষাট সত্তর দশকের কথা বলছি- আমাদের শিক্ষা জীবনে এক ক্লাস পাস করে উপরের ক্লাসে রেজাল্ট রোল অনার অনুযায়ী অটো ভর্তি করে নেওয়া হতো, বাড়তি কোনো ফিস দিতে হতো না। যদি কেউ স্কুল বদলাতো তাহলে সেই ছাত্রকে যৎসামান্য ফিস দিয়ে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিতে হতো। তখন ভর্তি হতে হতো- বছরের শুরুতে, অর্থাৎ জানুয়ারী মাসে। এখন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বছরে একাধিক বার ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করেছে- এটা ভালো উদ্যোগ।

আজ থেকে ৬২ বছর আগে আমি যখন স্কুলের ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছিলাম তখন ভর্তির আগে অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে হয়েছিল। যদিও সেই স্কুলে খুব কম ছাত্ররাই ভর্তির জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতো, তবুও সেই অল্প সংখ্যক ছাত্রদেরই প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় (যে ক্লাসে ভর্তি হতে ইচ্ছুক সেই ক্লাসে পড়ার জন্য উপযুক্ত কিনা) অংশ গ্রহণ করেই ভর্তি হতে হতো। কারণ, মেধাই ছিল ভর্তির এক এবং একমাত্র মাপকাঠি।

আবার, ৩২ বছর আগে আমাদের বড়ো ছেলেকে যখন বনানীতে Playpen নামক একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করতে নিয়ে গিয়েছিলাম তখন ছেলের মেধা যাচাইয়ের জন্য সামান্য সময় খরচ করে, স্কুল কর্তৃপক্ষ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছিলেন আমার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের কাগজপত্র। অর্থাৎ, ছাত্র যেমনই হোক না কেন, বাবা মা বছর বছর ধরে ক্রমবর্ধমান খরচের ধাক্কা সামলাতে পারে কিনা সেটাই হল মূল বিবেচ্য বিষয়।

অর্থাৎ পরিস্কার জানিয়ে দেওয়া- "তোমার পকেটের জোর থাকলে তবেই এই স্কুলে পড়াও, না হলে নিজের রাস্তা দেখো।"- 'দেয়ার ইজ নো অল্টারনেটিভ'র দুনিয়ার আপ্তবাক্য এটাই- পয়সা থাকলে পড়বে, না থাকলে নয়।

আমাদের বড়ো ছেলে লেখাপড়া শেষ করে একটি বহুজাতিক কোম্পানির মাঝারি গোছের কর্মকর্তা, বৌমাও একই ধরনের অন্য একটা কোম্পানির কর্মকর্তা। আমাদের নাতনীর বয়স চার বছর। ওকে আগা খান স্কুলে ভর্তির জন্য নিয়ে গিয়েছে..... স্কুল কতৃপক্ষ ছাত্রীর ভর্তির যোগ্যতা নিরুপনের জন্য ছাত্রীর মা-বাবার স্যালারি স্টেটমেন্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট পরিক্ষা করে আর্থিক সংগতি নিশ্চিত হওয়া ছাড়াও বাড়িতে ইংরেজি চর্চার বিষয়টাও অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিশ্চিত করে নিয়েছে!

সে যাইহোক, আমাদের দুই সন্তানকে ক্লাস ইলেভেন পর্যন্ত পড়া বুঝিয়ে দেওয়া আমরা স্বামী স্ত্রী মিলে দুজনেই করেছি। ছেলে এবং বৌমা পেশাগত ব্যস্ততায় মেয়েকে পড়ানোর সময় দিতে পারে না। তবে এই বয়সে নাতনিকে পড়ানোর চর্চা এবং মানসিকতা আমাদেরও নেই। তাই বলে তো অবিভাবকের দায়িত্ব সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে চলার শিক্ষা প্রদানের দায়বদ্ধতা কমে যায় না। বিশেষ করে, কোন পথটা সঠিক নীতির আর কোনটা দূর্নীতির, সেটা বোঝানোর দায়িত্ব অবশ্যই অভিভাবকদের। অভিভাবক হিসেবে সেই লড়াইয়ের পথে ওদেরকে এগিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। পাশের বাড়ির মেয়েটা এ-যুগের প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত হয়ে সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, আবু সাইদ, মুগ্ধরা ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দেবে- আর আমার নাতনী বাড়িতে বসে সেই লড়াইয়ের মেওয়া খাবে- এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে পরবর্তী প্রজন্মকে সিস্টেমের বিরুদ্ধে যারা বুক চিতিয়ে লড়ছে তাদের পাশে দাঁড় করিয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করার দিন আজ সমাগত।
ভারতচন্দ্রের 'অন্নদামঙ্গল' কাব্যের প্রধান চরিত্র ঈশ্বরী পাটনী অন্নপূর্ণার কাছে আবেদন করেছিলেন, "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে"।

আজকের এই জন্মভূমিতে একজন সন্তানের বাবা হিসেবে, দাদা হিসাবে আমার একটাই চাহিদা-
আমার বংশধর যেন থাকে সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮

Sayed Kutub বলেছেন: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর অনেকের বিশ্বাস উঠে গেছে। এখন কোনোভাবে এসএসসি এবং এইচএসসি পাশ করাতে পারলে যাদের ইকোনমিক অবস্থা ভালো তারা বিদেশ পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫১

জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশের বেশীরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার নাম চলছে- অরাজকতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, রাজনৈতিক দলের অনাকাঙ্ক্ষিত নাক-গলানো কালচার।

২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:২১

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আমাদেরও একই অবস্থা পড়াশুনা শেষ করা পর্যন্ত যে পয়সা খরচা গেছে তা এখন এক ক্লাসেই লাগে! পড়াশুনাটাও এখন পুরাই বাণিজ্যিই হয়েগেছে। যার পয়সা আছে সে পড়বে যার নেই সে পড়বেনা এমন অবস্থা।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: আজ এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে....যাদের মধ্যে দুই তিনটা সাবজেক্টে পরীক্ষা দেয়নি, তাদেরকে পূর্ববর্তী পরীক্ষার আনুপাতিক রেজাল্ট বিবেচনায় নম্বর দেয়া হয়েছে! ভাবা যায়!!!

৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৬

আজব লিংকন বলেছেন: দিনদিন শিক্ষা বাণিজ্য আরও দানবে পরিণত হচ্ছে। বাংলা মিডিয়ামে তাও একটু স্বস্তি রয়েছে কিন্তু ইংরেজি মিডিয়ামের ব্যাপারটা পুরো আলাদা। এলিট শ্রেণীর লোকদের ব্যাপার-স্যাপার আমার মাথায় ঢোকে না। আমার পড়ালেখা ছিল সরকারি স্কুলে। নাম মাত্র বেতন এবং ফ্রী টিফিন দেওয়া হতো। উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ স্কুলগুলোর মধ্যে একটা জিলা স্কুল।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: দুইদিন আগেই খবরের কাগজে পড়লাম দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কাদির মোল্লার শিক্ষা বানিজ্যের কূটকৌশল!

৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫

আজব লিংকন বলেছেন: আপনার দাদু ভাইয়ের জন্য দোয়া এবং শুভকামনা রইল।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:

- হুম, বাচ্চাদের স্কুলে পড়ানোটা এখন বিশাল চেলেঞ্জের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেজায় খরচ।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩২

জুল ভার্ন বলেছেন: টাকা নাইতো শিক্ষাও নাই।

৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লাস্ট লাইনে এসে এ লেখাটা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠলো।

শিক্ষাক্ষেত্র একদিকে যেমন বাণিজ্যকেন্দ্র হয়ে উঠছে, অন্যদিকে এটাও ঠিক, যে তরুণ অন্য কোথাও কোনো চাকরিবাকরি পেলো না, তার শেষ ঠিকানা হয়ে ওঠে শিক্ষকতা। ফলে, শিক্ষকদের মধ্যে একধরনের হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে সমাজের মানুষ যখন জানে ঐ লোকটা একজন শিক্ষক, তখন তার দিকে একটি নীচু চোখেই তাকায়। অথচ, আমাদের বাল্যকালে আমার কাছে শিক্ষকদেরকে মনে হতো সবচাইতে সম্মানিত ব্যক্তি। কোনো সামাজিক বিচার-আচারে শিক্ষককে ডেকে আনা হতো, কোনো সমস্যা সমাধানের পরামর্শের ব্যাপারে শিক্ষকের দ্বারস্থ হতো মানুষজন।

শহরের নামকরা স্কুলগুলোতে উচ্চবেতনে কোয়ালিফায়েড শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের বেতনের যোগান দেয়ার জন্যই ছাত্রদের টিউশন/সেশন চার্জ অনেক বেশি। এসব স্কুলে পড়ানোর মতো আর্থিক সঙ্গতি সবার থাকে না। স্কুল অথোরিটি এজন্যই ছাত্রভর্তির আগে বিষয়টা নিশ্চিত করে নেয়ার জন্য ইনকাম ট্যাক্স, ইত্যাদি বিষয়ের অনুসন্ধান করে। বিষয়টা একদিক থেকে ভালোই।

বাচ্চাদের লেখাপড়া করানোটা মা-বাবার জন্য এখন বড়ো চ্যালেঞ্জ। ভালো স্কুলে ভর্তি করানো যেমন একটা চ্যালেঞ্জ, সন্তানের প্রতিদিনের পড়া ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করাও একটা চ্যালেঞ্জ। ভার্সেটাইল অ্যামিনিটির যুগে বাচ্চাদের কাছে লেখাপড়ার চাইতে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল গেইমস, একটু বড়ো হলে নেশায় আসক্ত হওয়া, ইত্যাদি বেশি আকর্ষণীয়।

কমেন্ট বড়ো হয়ে যাচ্ছে, ক্ষান্ত দিচ্ছি এখানেই।

আপনার নাতনির জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল প্রিয় জুল ভার্ন ভাই।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯

জুল ভার্ন বলেছেন: সোনা ভাই, শিক্ষকদের অবজ্ঞা করার মূল কারণ হচ্ছে- বর্তমানে শিক্ষা কিম্বা শিক্ষকতাকে দুই একজন ছাড়া কেউ ব্রত হিসাবে নেয় না। দুই একজন ব্যতিক্রম বাদে সব চাইতে কম মেধাবীরা অন্য কোথাও কোনো কর্মসংস্থান করতে না পেরে রাজনীতিতে ঢোকে, সেই সুযোগও না পেলে শিক্ষকতা... সেই সব শিক্ষকদের না আছে পান্ডিত্ব, না আছে ব্যক্তিত্ব। কাজেই ছাত্র এবং সমাজের অন্যরা তাদেরকে সম্মান করবে কিভাবে!

৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৫

সামিয়া বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা এক ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে গিয়েছে সবখানে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

জুল ভার্ন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: খুব ভাল লেগেছে আপনার কথাগুলো। বিশেষ করে ==

পাশের বাড়ীর মেয়েটা প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত হয়ে সিস্টেমের বিরুদ্ধে পড়াই করবে, আবু সাইদ , মুগদ্ধরা ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জীবন দেবে আর আমরা ঘরে বসে সেই লড়াই এর মেওয়া খাব - এই ধারনা থেকে আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: সত্যি বলতে, উল্লেখ্য অংশটুকু লিখেছি বাস্তবতার নিরিখে। খেয়াল করে দেখুন- গত ষোলো বছরে বিএনপির এমন কোনো নেতা কর্মী নাই যাদের বিরুদ্ধে ৫/১০ টা মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন করেনি। ১ লাখ ৫০ হাজার মামলা দিয়েছে প্রায় এক কোটি বিএনপি নেতা কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ৮০০ নেতা কর্মীকে আওয়ামী জান্তা হত্যা করছে। দুই হাজার নেতা কর্মীদের গুম করেছে। ৫৮০০ টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলা দিয়েছে.... ষোলো বছর যাবত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে বিএনপি। এখন সব কৃতিত্ব সমন্বয়ক আর মাষ্টার মাইন্ডদের!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.