নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রসগোল্লা সুখ......

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৭

রসগোল্লা সুখ........

প্রচলিত আছে- "যারা মিষ্টি ভালোবাসে, তাদের মনটাও মিষ্টির মতো মিঠে হয়"। প্রবাদের সত্য মিথ্যা মিলিয়ে দেখার সময় পাইনা- মিষ্টি, স্পেশালি রসগোল্লা পেলে।

মিষ্টি না বলে আমি রসগোল্লার কথা বলবো। রসগোল্লা মানে- রসে ভেজানো / ডুবানো মিষ্টি, ঢাকা শহরের শুকনো মিষ্টি না। রসগোল্লার প্রতি এই আনকন্ডিশনাল লোভ কোথা থেকে শুরু হলো বলাটা মুশকিল। তবে ছেলেবেলায় হালখাতা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দোকানে যেয়ে এবং বিভিন্ন দোকান থেকে বাড়িতে পাঠানো রসগোল্লা খেয়ে খেয়ে আমি যে সেই রসগোল্লার প্রেমে পরলাম- তা থেকে আর বের হতে পারলাম না। রসগোল্লা, দানাদার, পান্তুয়া, মিহিদানা, ল্যাংচা, রসমালাই, ক্ষীর, আমেত্তি, জিলাপী ছাড়াও আরো হরেক রকম মিষ্টির জগতে যতো ঢুকতে শুরু করলাম তত আরো বেশি করে মিষ্টি খেকো হয়ে গেলাম। পেল্লায় সাইজের ৮/১০ টা রসগোল্লা খাওয়া আমার কাছে খুবই সাধারণ ব্যাপার। সনাতন বন্ধুদের পুজো পার্বণ, বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান হলে তো কথাই নেই! বয়স বাড়ার সাথে সাথে মিষ্টিপ্রেম আমার ঢাকা ছেড়ে বিভিন্ন জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পরলো। কাজে, বেড়াতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যখন যেখানে যাই, প্রথমেই খোঁজ নেই- কোথায় ভালো রসগোল্লা পাওয়া যায়......

যারা মিষ্টি খায় তাদের আলাদা সুবিধে আছে, বাড়িতে অনেকেই যে মিষ্টি গুলো খায়না, শেষ অবধি সেগুলো অনায়াসেই আমার পাতে চলে আসে। নিকট আত্মীয় স্বজন, বন্ধুদের বাড়িতে মিষ্টি খেতে খেতে চক্ষু লজ্জায় "আর খেতে পারবো না"- বললে আরো এক্সট্রা পাওয়ার সম্ভবনাও প্রবল- "আরে আরে পারবি না কেনো- এই বয়েসেইতো খাবি"- বলে আরও কয়েকটা বেশী পেতাম।

কিন্তু বয়স বাড়ে, রিসেশন আসে বাজারে। ইনফ্লেশন এর যুগে খুব সাধারণ মানের এক পিস রসগোল্লার দাম সর্বনিম্ন ১০ টাকা পেরিয়ে এখন ৪০/৫০/৬০/১০০ টাকা হয়ে গিয়েছে। দোকানে দোকানে কম্পিটিশন বাড়ে, অন্যদিকে মিষ্টির সাইজ ছোট হয়ে যাচ্ছে। ম্যাঙ্গো, লিচু, আপেল, পেয়ারা, ডার্ক, হোয়াইট, এমনকি পোড়া চকোলেট, স্ট্রবেরি, ব্লু বেরি সব কিছু দিয়ে মিষ্টি বানানো শুরু হলো। মিষ্টির এহেন ফিউশন যে আমি উপভোগ করতে শুরু করলাম না, তা নয়- বরং মিষ্টির যেকোনো ফর্ম, শেপ এ আগের মতই দিওয়ানা হয়ে আছি।

তবে এখন আর আগের মতো রসগোল্লা খেতে পারিনা। একদিন ৪/৫ টা খেলে সারা দিনে আর খাইনা। তারপরও নিয়ম ভেংগে খাওয়া হয়। সাধারণত আমি রসগোল্লার স্বাদ ভুলি না। বছর খানেক আগে আমাদের বড়ো ছেলে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থেকে ভোলা নাথের মিষ্টি নামক একটা দোকানের পানতোয়া (চিনির রসে ভেজানো ঘিয়ে ভাজা রসগোল্লা জাতীয় মিষ্টি), ছানার আমেত্তি আর দৈ নিয়ে এসেছিলো- সত্যি বলছি, এতো সুস্বাদু মিষ্টি অনেক দিন পর খেলাম! আবার গতবছর এক বোনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সাতসকালে রূপনগর ছোট বোনের বাসায় গিয়েছিলাম। আমরা একসাথে বরিশাল যাবো.....সেই শোকের মধ্যেও ছোট বোনটা আমার রসগোল্লা প্রীতির কথা ভোলেনি (বোনেরা ভাইদের সবকিছুই মনে রাখে, কিন্তু আমরা স্বার্থপর ভাইয়েরা বোনদের সবকিছুই ভুলে যাই)- আমরা দৌড়ের উপর....বসার সময় নাই। ওদের ফ্রিজে রসগোল্লা ছিলো। বাটি ভর্তি বড়ো বড়ো সাইজের রসগোল্লা! হিমশীতল ঠান্ডা। গলার সমস্যায় আমার ঠান্ডা কিছু খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু রসগোল্লা বলে কথা! গপাগপ ৫/৬ টা গিলে ফেললাম। বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো স্বাদ ভুলিনি।

সেই ছেলে বেলা পেরিয়ে বহু বছর পর ২০১৬ সালে পিরোজপুর গিয়েছিলাম। তখন ওখানকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন আমার ভাগ্নে। ওর অফিসে রসগোল্লা দিয়ে আপ্যায়ন করলো- এতো সুস্বাদু রসগোল্লা খেয়ে আমার কি যে ভালো লেগেছিল...
'রসগোল্লা ভালো লেগেছে' ভাগ্নেকে বললে নির্ঘাৎ সে কিনে দিবে- ওকে সেই প্যারা দিতে চাইনি বলেই খুব কৌশল করে ভাগ্নের কাছে জেনে নিলাম কোন দোকানের মিষ্টি....

ভাগ্নের অফিস থেকে বের হয়ে প্রিয় বন্ধু হুমায়ুন ভাইয়ের সাথে গেলাম দুলালের মিষ্টির দোকানে। হুমায়ুন ভাই স্থানীয় লোক, তার উপর নেতা মানুষ। দোকানী হুমায়ুন ভাইর সৌজন্যে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করলো। ঢাকা ফেরার দিন দুই পদের পাঁচ কেজি রসগোল্লা এবং এক কেজি ঘি কিনে আনি। কিন্তু গরম রসগোল্লা প্যাকেট করে দেওয়ায় ঢাকা আসতে আসতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যা খাওয়ার উপযুক্ত ছিলো না। তবে এরপর যতবারই পিরোজপুর গিয়েছি- দুলালের রসগোল্লা কিনে আনতে ভুলিনি।

....... অনেক দিন আগে এই ব্লগে জিলাপীর পোস্ট দিয়ে জিলিপির ছবির নিচে ক্যাপশন লিখেছিলাম- স্লিম ট্রিম! এই জীবন জিলিপি হয়ে যাক.....আমার জীবন স্লিম ট্রিম হবে কিনা জানিনা, কিন্তু রসগোল্লা প্রেম আজীবন এক্সট্রা লার্জই থাকবে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

জটিল ভাই বলেছেন:
আপনার লিখা পড়ে মুজতবা আলীর কথা ভীষণ মনে পরছে। সুযোগ হবে কিনা জানিনা দুলালের রসগোল্লা খাবার। তবে চাই নামটা মনে থাকুক।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় কোথায় কোথায় সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া যায়- তার তালিকা দেবো। যখন যেখানে যাবেন স্বাদ নিবেন।

২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০১

জটিল ভাই বলেছেন:
আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় কোথায় কোথায় সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া যায়- তার তালিকা দেবো। যখন যেখানে যাবেন স্বাদ নিবেন।

জেনে ভালো লাগলো। যদিও আমার মিষ্টির চেয়ে ঝালই বেশি প্রিয়। তবুও লিস্টটা দেখে চোখ জুড়াবো ♥♥♥

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৮

জুল ভার্ন বলেছেন: আমার অবস্থান আপনার বিপরীত। অর্থাৎ আমি একেবারেই ঝাল খেতে পারিনা।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: কি যে প্রিয় সব মিষ্টি । আমার প্রিয় অবস্য গুড়ের সন্দেস ও রসমালাই

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২০

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার পছন্দের সাথে মিল আছে, তবে রসগোল্লার উপর কোনো মিষ্টি নাই!

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

শায়মা বলেছেন: আমি যে মিষ্টি খাই ভাইয়া!!!!!!!!!!!!!!!

সবাই বলে মোটা হয়ে ফেটে যাবে ফটাস করে। তাতেও আমার কিছুই যায় আসে না।

রসগোল্লা কালোজাম চমচম পান্তুয়া সবই আমার প্রিয়।

আজকাল প্রিয় ওয়াফেল আপ! :)

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আপু, মিষ্টি খেলেই মোটা হয়ে যাবে- এই প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি আমার মিষ্টি খাওয়ার বর্ননা দিয়েছি- গত ৪০ বছর যাবত ক্যান্সার এবং গুম জেল জীবন ছাড়া আমার ওয়েট- ৭৪-৭৬ কেজির মধ্যে। আমার দুই ছেলেও আমার মতো মিষ্টি লাভার। ওদের হাইটি ৬' প্লাস, গড় ওয়েট আমার কাছাকাছি। আমার স্ত্রীও মিষ্টি লাভার। হাইট ৫'-৬', ওয়েট ৭৮ কেজি
আমাদের বাড়িতে আমার এবং আমার স্ত্রীর পছন্দ চমচম, বালুসাই মিষ্টি, ছোট ছেলের লাল মিষ্টি (কালোজাম), বড়ো ছেলে সর্বভুক। ছেলের বৌ এবং নাতনী ওদে বাবা-মার অনুসারী।

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৫

আজব লিংকন বলেছেন: "যারা মিষ্টি ভালোবাসে, তাদের মনটাও মিষ্টির মতো মিঠে হয়" হ্যাঁ ভাইজান তারপর ডায়াবেটিস হয় তা ভুলে গেলে চলবে না।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৮

জুল ভার্ন বলেছেন: এখানেই আমাদের ভুল ধারণা, মিষ্টি খেলে ডায়বেটিস হয়না, তবে ডায়বেটিস রোগীরা মিষ্টি খেলে ডায়বেটিস বেড়ে যায়।

৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯

মেহবুবা বলেছেন: ছোটবেলায় গ্রামে ঘোষেদের দোকানের রসগোল্লার স্বাদ এখনও মনে আছে, তুলতুলে নরম গরম গরম রসগোল্লা! যেগুলো বাড়ীতে এনে অনেক সময় পরে খাওয়া হোত আজবভাবে সেগুলো আমার কাছে গরম মনে হোত। সেই ঘোষেরা এখন নেই, সেই স্বাদের দুধ পাওয়া যায় না, রসগোল্লা কিভাবে মজা লাগবে? তবে কোন কোন দোকানের স্পন্জ রসগোলা ভালোই লাগে।
ছোটবেলায় খুলনা অঞ্চলে দানাদার নামে ছোট ছোট মিষ্টি পাওয়া যেত চিনির প্রলেপযুক্ত ঘন দুধের তৈরী, অনেক মজা!

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১

জুল ভার্ন বলেছেন: আগেকার মিষ্টি তৈরী করতেন প্রকৃত ঘোষেরা, তাদের কাছে মিষ্টি তৈরী ছিলো একটা শিল্প, একধরণের সৃজনশীলতা। এখন খাটি দুধ পাওয়া যায় না, গরুকে কৃত্রিম খাবার খাওয়ানো হয়। খাটি দুধ ছাড়া মানসম্মত সুস্বাদু মিষ্টি তৈরী সম্ভব না। এখন বেশীরভাগ মিষ্টি তৈরী করে মুসলমান সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা। ভালো কারিগর অন্য পেশায় চলে গিয়েছে। এরা জানে না প্রস্তুত প্রণালী, জানে ভেজাল দিয়ে অতিরিক্ত লাভবান হতে।
স্পঞ্জ রসগোল্লার জনকভূমি বিক্রমপুর এলাকা। খুবই সুস্বাদু!

দানাদার অত্যন্ত সুস্বাদু মিষ্টি। আমি ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজে পড়া কালীন আমাদের লাঞ্চ, ব্রেকফাস্টের মাঝেমধ্যে ডেজার্ট তালিকায় দানাদার থাকতো... ভেতরে খাটি ছানার গোল্লা, উপরে চিনি। এখনো সাভার এলাকায় এবং লোকজ মেলায় পাওয়া যায়, তবে তা শুধুই ময়দার গোল্লা বানিয়ে তার উপর চিনি মেখে দেয়। এমন আরও কিছু মিষ্টির নাম- আংগুল গজা/ গজা, বাতাসা, নকুলদানা, সন্দেশ।

৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬

প্রামানিক বলেছেন: ছতিশ পালের দুই আনা দামের রসগোল্লার স্বাদ এখনো ভুলতে পারি নাই। দেশ স্বাধীনের পরে এই পাল কোথায় যে চলে গেল সেই থেকে ঐ স্বাদের রসগোল্লা আর পাই না।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: প্রামাণিক ভাই, সতীশ পাল কোন এলাকার মানুষ? আমিও এক আনা, দুই আনায় পেল্লায় সাইজের রসগোল্লা খাওয়া পাবলিক। সত্যি বলতে, স্বাধীনতার পরই আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য হারিয়ে গিয়েছে। আসলের যায়গা দখল করে নিয়েছে নকল ভেজাল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.