![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
বেদানার ভিতরে লাল.........
অসংখ্য লাল দানায় ভরা ফল, নাম বেদানা। ইংরেজী নাম Punica granatum। মধ্য প্রাচ্যের শুকনো জমিতে রসে টইটুম্বুর বেদানার আদি নিবাস। সিল্ক পথের পথিকদের সঙ্গে এই গাছ পৌঁছে যায় তুরস্ক হয়ে স্পেন। এদিকে ইরান আফগানিস্তান হয়ে কাশ্মীর থেকে উত্তর ভারত পেরিয়ে পাকিস্তান জুড়েও ছড়িয়ে পড়েছে এই Punica granatum।
আরো নাম আছে বেদানার,
ডালিম আর আনার।
ছেলে বেলায় আমরা যেটাকে ডালিম বলতাম, সেটাই আনার কিম্বা বেদানা। বেদানা কোন ভাষা আমার জানা নাই। ফার্সি ভাষায় বলে আনার, হিন্দিতে বলে দাড়িম্ব। ভেতরের লাল দানার সৌন্দর্যের সাথে গারনেট পাথরের সাথে তুলনা করেছে এক ইংরেজ কবি। তিনি আদর করে ডেকেছে 'গার্নেট ফ্রুটস'। মহার্ঘ এই ফলটি ফারাওদের খুব প্রিয় ছিলো। তাই মিশরে মমির সঙ্গে দেওয়া হত বেদানা, এমন প্রমাণ মিলেছে মমি গুলো গবেষণা করে। একদা আমাদের দেশে এ ফলের জোগান ছিল অত্যন্ত সীমিত।
এখন বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হয়, দেশেও হাইব্রিড আনার চাষে বাড় বাড়ন্ত। চার পাঁচ বছর আগে আসাদগেট হর্টিকালচার থেকে আমি দুটি টিস্যু কালচার চারাগাছ কিনে অর্ধেক ড্রাম টবে লাগিয়ে ছিলাম। হর্টি কালচার সেন্টারের একজন কৃষিবিদ বলেছেন, আনার চাষ করে কমপক্ষে তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে ফুল- ফলের জন্য। গত বছর দুই গাছে ৮ টা ফুল এসেছিলো কিন্তু ফল ধরেনি। এবছর দুইটা গাছে ১৮ টা ফুল আসলেও মোট ৬ টা ফল পূর্ণতা পেয়েছে। কিন্তু দুটি ফল অজ্ঞাত কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এক সময় আফগানিস্তান ও ইরানে বেদানার বাগিচা আলো করে ফুটত লাল রঙের আনার কলি(ডালিম ফুল)। মোঘল সম্রাট আকবর পূত্র সেলিম(সম্রাট জাহাঙ্গীর) নাদিরা বেগম, প্রকারান্তরে শরফ-উন-নিসার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে 'আনার কলি' নাম দিয়ে ছিলেন।
এশিয়ার সমস্ত সংস্কৃতিতেই বেদানার লাল রসের কদর ছিল চড়া। এর রঙের জন্যই হয়তো আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ডালিমের রক্ত পরিশোধক গুণের উল্লেখ ও প্রশংসার অভাব ছিল না। আধুনিক জৈবরসায়নবিদরা গবেষণা করে বলছেন- বেদানা সত্যি এক বিস্ময়কর ফল! এর দানার লাল রসাল অংশে রয়েছে পিউনিক্যালাজিন নামের এক ফেনলিক যৌগ। যা আমাদের খাদ্য নালী থেকে রক্তে মিশে যেতে কোন বাধা নেই।
পিউনিক্যালাজিনের হাজারো উপকারের কথা গুগল সার্চ করলেই জানা যায়। এই রাসায়নিক যৌগটি ক্যান্সার, বিশেষত কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যাকে আয়ত্তে রাখতে এর জুড়ি নেই। রক্তের লোহিত কণিকা তৈরির জন্যে প্রয়োজনীয় ফোলেট আর রক্তপাত রোধ করার জন্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন K সবই বেদানার দানায় ভালো পরিমাণে মজুত আছে।
বেদানার লাল দানার একেবারে মাঝখানটিতে আছে একটু শক্ত কিন্তু ছোট্ট বীজ। আশ্চর্যের বিষয় বেদানার বীজে আছে এক অসামান্য পুফা অর্থাৎ পলি-আনস্যাচুরেটেড-ফ্যাট যার নাম পিউনিসিক এসিড। যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা উর্ধমুখী, তাঁরা দানা গুলিকে বীজ সহ বেশ করে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। পারলে রোজই খান। ওই বীজের পিউনিসিক এসিডকে বলা হচ্ছে ওমেগা ৫ ফ্যাটি এসিড। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্তের লিপিড কোলেস্টেরল ইত্যাদিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারদর্শী। আনারের বীজের তেলে আরেকটি খুব চেনা পুফা লিনোলিক এসিডও আছে অল্প পরিমাণে, যাকে বলা হয় ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড। বীজ চিবিয়ে খেলে শুধু এইসব পুফা নয়, বেশ খানিক ভিটামিন E পাওয়ারও সম্ভাবনা বাড়ে।
ইংরেজি পমোগ্রেনেট শব্দের মানে 'বীজ ভর্তি আপেল'। এন এপেল এ ডে, কিপস ডক্টর এওয়ে। এ ব্যাপারে বেদানা আরো কয়েক কদম এগিয়ে। আনারে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুগুণ আয়রণ। জিঙ্ক এবং ভিটামিন সি-র পরিমাণও বেশি। আমার চাষ করা আনার তেমন রসালো নয় বরং অনেকটা চাউল ভাজার মতো মুড়মুড়ে!
বেদানার দানা থেকে গাছের চারা তৈরী করা হয় না। সেটা করা হয় টিস্যু কালচারের সাহায্যে। এতে মা গাছের জিনগত সমস্ত বৈশিষ্ট্য হাজার হাজার সন্তানের মধ্যে হুবহু কপি হয়ে যায়। আমাদের সকল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সুলভ দামে কৌটো বন্দী বেদানার রস পাওয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে, যে কোন ফলের রস ফলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফাইবার বাদ দিয়ে তৈরি। বেদানার বীজের সেই অনবদ্য এন্টিক্যানসার উপাদান বেদানার রসের মধ্যে অনুপস্থিত। তাই পারলে যে কোন ফলই চিবিয়ে খান, আর সেটা অনেক বেশি পুষ্টিকর অভ্যাস।
১১ ই জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: বেদানার রস এবং বিচি দুটোই ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের।
আমার মনে হয়, খালি পেটে আনার ছাড়াও অনেক ফলের রসই এসিডিটি হয়। সেইজন্যই সাধারণত খাবার পরে ফল সার্ভ করা হয়।
২| ১৩ ই জুন, ২০২৫ সকাল ৮:১১
আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: যাক, আপনার মাধ্যমে বেদানার উপকারিতা জানতে পারলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১:১০
শায়মা বলেছেন: বেদানার বীজ যেমনই সুন্দর তেমনি মজাদার। ভাইয়া বেদানা আমার অনেক প্রিয় কিন্তু বেদানার একটা বিশেষ নেগেটিভ সাইডও আছে মনে হয় খালি পেটে খেলে এসিডিটি হতে পারে। তাই একটু ভরপেটেই খাওয়া ভালো। যদিও এটা আমার নিজের মতামত!