নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কালেভদ্রে লিখি :)

মোঃ জুনায়েদ খান

ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..

মোঃ জুনায়েদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি গেঞ্জির অপমৃত্যু

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১১

অনেকদিন ধরে বাথরুমের কোণায় একটা কালো গেঞ্জি পড়ে আছে। প্রতিদিন গোসল করতে গেলেই গেঞ্জিটার সাথে দেখা হয়। ভিজ একদম জুবুথুবু হয়ে আছে। প্রচন্ড জ্বরে যেন নিঃশব্দে কাতরাচ্ছে! শুকনো হলে হয়তো প্রথমদিনেই ওকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতাম। তাতে গেঞ্জিওয়ালার উপকার না হলেও গেঞ্জিটার অশেষ উপকার হত। অন্তত বেচারাকে এভাবে পানিতে ভিজে ধুকে ধুকে মরতে হত না!



গরম ভালই পড়েছে। শীতকালে একটা শার্ট দিয়ে এক মাস অনায়েশে চালান গেলেও গরমে এক সপ্তাহের বেশী চলে না। হাই কনসেন্ট্রেশনের পারফিউম ইউজ করার পরও কেমন যেন আঠা আঠা হয়ে থাকে। কাজেই কাপড় গুলোকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার গন্ধ সাবান দিয়ে ভালোভাবে গোসল করিয়ে দিতে হয়! অন্যথায় বিদ্রোহ করে। আকাশে-বাতাসে, মাঠে-ময়দানে সুগন্ধি ছড়ায়!



অনেক কাপড় জমে গেছে। সবগুলোকে একদিনে গোসল দেয়া সম্ভব না। তাই গুটিকয়েক এমারজেন্সি পেশেন্টকে নিয়ে শুরু করলাম ‘জাতীয় বস্ত্র গোসল সপ্তাহ-২০১৪’ এর প্রথম রাউন্ড। ‘বাদ যাবেনা কোন শিশু!’ থুক্কু!! ‘বাদ যাবেনা কোন বস্ত্র!’ লেবুর সুগন্ধযুক্ত তিব্বত বল সাবানের যাদুকরী ছোঁয়ায় বস্ত্র-গোসল কার্য বেশ দ্রুত গতিতেই সম্পন্ন হচ্ছিল। হঠাৎ হাফহাতা একটা কালো গেঞ্জির কথা মনে পড়ল। গত গরমে গেঞ্জিটা আনলিমিটেড সার্ভিস দিয়েছে। তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। লকারের উপর-নিচ, ব্যাগ, আলনা বাদ গেল না কিছুই। পেলাম না। বাথরুমের মুমূর্ষু গেঞ্জিটার কথা মনে হল। একটা কাঠি দিয়ে গেঞ্জিটাকে ভালোভাবে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখলাম। যখন বুঝতে পারলাম যে এ হতভাগা গেঞ্জিটা আমারই ছিল তখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া করার মত কিছু খুঁজে পেলাম না। গেঞ্জিটা মরে গেছে। লাশটা পঁচে ভুরভুরে হয়ে গেছে, কয়েকটা নাম না জানা পোকা ওর শরীর বেয়ে মনের সুখে ঘোরাফেরা করছে। নিজেকে কেমন যেন খুনি খুনি মনে হল। একমাত্র আমার অবহেলার কারণে, আমার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে, আমার উপেক্ষার কারণে একটা নিরপরাধ গেঞ্জি অকালে মারা গেল! শেম অন মি!



আমি কি পারতাম না দেখার প্রথম দিনেই তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে?



আমি কি পারতাম না মৃত গেঞ্জির জন্য উথলে পড়া দরদটা তার মৃত্যুর আগে দেখাতে??



আমি কি পারতাম না জীবিত গেঞ্জিটার একটু খোঁজ রাখতে???



যদি নাই পারি তবে কিসের আমি গেঞ্জিওয়ালা??????

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখসেন।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:১৩

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.