নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কালেভদ্রে লিখি :)

মোঃ জুনায়েদ খান

ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..

মোঃ জুনায়েদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরস রচনা : মোবাইল

২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:১৬

বছর তিনেক আগে বড় শখ করে QWERTY কি-প্যাড ওয়ালা একটা মোবাইল কিনেছিলাম! কয়েকদিন যেতে না যেতেই Track Ball টা কাজে ইস্তফা দিল। ডানে যায়, বামে যায়, উপরেও উঠে কিন্তু নিচে নামে না! মহা মুসিবত! শখের মোবাইলটা বুঝি এবার যায়। সার্ভিসিং করলাম। ফিরে দু’দিন ঠিকভাবে কাজও করল। তারপর হঠাৎ একদিন হেডফোনের লাইনটা ডাইরেক্ট হয়ে গেলো! হেড ফোন না থাকলেও হেড ফোনের সিম্বল শো করে। হেড ফোন প্লাগইন না করলে কথা বলা যায় না। আবার হসপিটালে পাঠালাম। ডাক্তার বললেন, ‘মা এবং বাচ্চাকে একসাথে বাঁচানো সম্ভব না’। মানে হেডফোন থাকলে স্পিকার কাজ করবে না, আবার স্পিকার ইউজ করতে চাইলে হেডফোনের লাইন রাখা যাবে না!’ কি আর করার! নিরুপায় হয়ে আমার সাধের মোবাইলটাকে অকালে পঙ্গু বানিয়ে ঘরে ফিরলাম! ফিরে দেখি Track Ball মাইন্ড করে গো ধরে বসে আছে! ডানে-বামে, উপরে-নিচে কোন দিকেই যায় না! :-(



“WHERE THERE IS A WILL, THERE IS A WAY” - ট্র্যাক বলের বিকল্প হিসেবে শর্টকাট সিস্টেমটা বেশ ভালো ভাবেই আয়ত্ব করে নিলাম। ট্র্যাক বলহীন মোবাইলের সিকিউরিটিও বেড়ে গেল অনেকগুণ। আমার মোবাইল আমি ছাড়া কেউই চালাতে পারে না! এভাবেই চলল দু’বছর।



একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পঙ্গু মোবাইলটা বিছানায় নেই। খাটের নিচে ব্যাটারিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। অন করে দেখি ভাইব্রেশন মুড কাজ করছে না। নিউটনের তৃতীয় সূত্র ফলো করে মোবাইলটাকে আবার বিছানা থেকে ফেলে দিলাম! ঠেলার নাম বাবাজী! অন করে দেখি ভাইব্রেশনের দাদা সহ ভোঁ ভোঁ করছে!



গত কাল একটা নতুন জিনিস আবিষ্কার করলাম। আমার ফোনের ৪২ টা বাটনের মধ্যে কয়েকটা একদমই কাজ করছে না! গায়ে মাখলাম না। বিপত্তি টা ঘটলো তখন যখন আমার এক বন্ধু টেক্সট করলো।

বন্ধুর একটা টেক্সটের উত্তরে বললাম,- ‘Ky?’

বন্ধু অবাক হয়ে রিপ্লাই দিল, - ‘ :O Ky???’

পড়লাম মহাবিপদে। বন্ধুকে আমি কিভাবে বুঝাই যে আমার ফোনে ‘I’ বাটন কাজ করছে না! এটা বলতে গেলেও তো ‘i’ লিখতে হবে। বললাম, - ‘ j er ager letter ta kaj korche na tay y babohar korchy!’ বন্ধু মনে হয় ‘এত্ত গুলা’ মজা পেল। ওর অট্টহাসির স্মাইলি গুলো দেখে আমার কান্নাও অট্টহাসি দেয়ার চেষ্ঠা করছিল!



এক পর্যায়ে বন্ধু বলল, সে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে।

আমি বললাম, - ‘jol dao porjapto!’

বন্ধু আকাশ সমান বিস্ময় নিয়ে বলল, -‘jol!! :D :D

আমি নিরুপায় হয়ে লিখলাম, - ‘X, t er ager ta & y er porertao kaj korche na’ (আসলে sufficient water লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু w & s ও কাজ না করায় জল লিখতে বাধ্য হয়েছি!)



বন্ধুর ফ্রী SMS ছিল। বললাম, ‘barta r koyta ache?’

আমার বেবুঝ বন্ধু উত্তর করল,- ‘bujhlam na?’

লিখলাম,- ‘barta mane mechage!’ (S কাজ না করায় Message ও ঠিকভাবে লিখতে পারলাম না! এ দুঃখ আমি কারে দেখাই :-( )



আমার প্রতিটা রিপ্লাইয়ে বন্ধু হেসে কুটিকুটি হচ্ছিল। মজা আমিও কম পাচ্ছিলাম না! এক জিনিস আর কতক্ষণ ভালো লাগে। বন্ধু একসময় নিজ থেকেই ইস্তফা দিয়ে দিল। আর আমি অনেকদিন পর মোবাইলটা পরিবর্তন করার গুরুত্ব নতুন করে অনুধাবন করতে থাকলাম। পরিবর্তনের কথা মনে করতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল! মায়া পড়ে গেছে মোবাইলটার উপর। গত তিনবছরের কত সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনার নীরব স্বাক্ষীই না এ যন্ত্রটা! অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এ মোবাইলটা ঘিরে, যে স্মৃতিগুলো বারবার ইচ্ছে করলেও মুছে ফেলা যায় না। এত তাড়াতাড়ি বিদায় দিতে ইচ্ছে করছে না আমার এ নীরব বন্ধুটাকে। মন যেন কেমন কেমন করে! :-(

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: থাক না... আর চেন্জ করে কি করবেন? এতোদিন যখন চালিয়েছেন, বাকি জীবনটাও এই সেট দিয়ে পার করে দিতে পারবেন মনে হয়....

২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৩

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: :D :D আমারো তাই মনে হয়।

২| ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪২

নীল জোসনা বলেছেন: নকশী ......সাথে একমত ...........।

২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৭

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: শেষে দেখা যাবে আমি ছাড়া আমার লেখা কেউ বুঝছে না :D

৩| ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৫১

মনুমনু বলেছেন: ভাই ব্লগইং ত একেই ব লে

২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০২

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৪| ২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৯

উদ্ভট কাব্যখোর বলেছেন: খুব সম্ভব , সিম্ফনি এক্স ১২০ টাইপ কিছু একটা । আমিও পাঁচ বছর থেকে এরকম ভাবে চালাচ্ছি। জীবনের গল্পের সাথে হুবহু মিলে যাওয়ায় অনেক ভালো লাগলো

২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:১০

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: কাছাকাছি :) ধন্যবাদ :)

৫| ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:২৬

সুমন কর বলেছেন: ভাল লাগল। =p~

২৯ শে মে, ২০১৪ ভোর ৪:৩৪

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৬| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৫

এহসান সাবির বলেছেন: ফোন টা মিউজিয়ামে পাঠতে হবে.....!

২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: আপনি তাহলে মিউজিয়াম কতৃপক্ষের সাথে কথা বলুন। :D

৭| ২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২

এহসান সাবির বলেছেন: ২৫ বছর আগে একটা ওয়াকম্যান কিনেছিলাম ময়ের কাছে থেকে টাকা নিয়ে আমি আর আমার ভাই মিলে। রেডিও বাদে ওটাই ছিল আমাদের ১ম গান শোনার যন্ত্র। প্রথমে হেড ফোনে শুনতাম, তারপর সাউন্দ বক্স বনানো হল, এমপ্লিফায়ার আসলো........

তারপর ডেক সেট, সিডি ওয়াকম্যান, এম পি থ্রি, আই ফোন, আই প্যাড....... কত কি আসলো গেলো...

আমার ওয়াকম্যান টা থেকেই গেল... আমার ড্রয়ারে, আমার মিউজিয়ামে.... বাজে না, ৩ টা বাটন ছিল, প্লে বাটন টা নাই... ও ঐ যে যেখানে ক্যাসেট টা দিতে হয় ঐটাও নাই....

থাকুন না আরো কিছু দিন....... ও ভাবেই..!!


শুভ কামনা আপনার জন্য।

২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:১৩

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: উপযোগ হারিয়ে গেলেই সবকিছু মূল্যহীন হয়ে যায় না। আশা করি আপনার ওয়াকম্যানটি আপনার নিজস্ব জাদুঘরে বেঁচে থাকুক অনন্তকাল। :)

৮| ২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩

এহসান সাবির বলেছেন: *মায়ের
*সাউন্ড বক্স

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.