নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কালেভদ্রে লিখি :)

মোঃ জুনায়েদ খান

ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..

মোঃ জুনায়েদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিড়ালের বাচ্চাও স্বাধীনতা চায়

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৬:৩৭

বৃষ্টি যেন বেদের মেয়ে জ্যোৎস্নার চেয়েও বড় কিছু হয়ে গেছে। আসি আসি করে বারবার ফাঁকি দিয়ে কোথায় যেন চলে যাচ্ছে। কষ্ট পাচ্ছে মানুষ, কষ্ট পাচ্ছে মাখলুক। সেদিন সন্ধ্যার পর রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। দেখি হাত দুয়েক দূরে দড়ির মত কি যেন একটা পড়ে আছে। একটু এগুতেই দড়িটা কিলবিল করে উঠলো! এক লাফে পাঁচ হাত পিছিয়ে এলাম। সাপ! পরিষ্কার রাস্তায় সাপটাকে এভাবে আশা করিনি। এরপর থেকে আলো ছাড়া সন্ধ্যার পর বাইরে বের হইনা। আজও সন্ধ্যায় একটা জরুরী কাজে বের হয়েছিলাম। সবেমাত্র বাড়ির গেটটা পেড়িয়েছি। হাতের টর্র্চটা তখনো অন করা হয়নি। আশেপাশে ‘কেউ’ করে কি যেন আর্তনাদ করে উঠল! বরাবরের মত লাফিয়ে পাঁচ হাত দূরে সরে গেলাম। টর্চ অন করে দেখি ভয়ঙ্কর কিছু না, বিড়ালের একটা মাসুম বাচ্চা! ‘কেউ কেউ’ করে চেঁচাচ্ছে। ভয়টাও লাফ দিয়ে পাঁচহাত দূরে সরে গেল। এবার টর্চ টা ননস্টপ জ্বালিয়ে হাঁটতে লাগলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ মাথায় খটকা লাগলো। ‘আচ্ছা বিড়ালের বাচ্চাটা ‘মিউ মিউ’ না করে ‘কেউ কেউ’ করছে কেন?’



কৌতূহলটা জিইয়ে রেখেছিলাম। ফেরার পথে ঐ জায়গায় এসে বিড়ালের বাচ্চাটার খোঁজ করলাম। পেলাম না। বাড়িতে পা দিতেই দেখি ‘কেউ কেউ’ করতে করতে বাচ্চাটা আমার পিছু নিল। কন্ঠটা মোলায়েম নয়, কর্কশ। পরিচয়ের বালাই ছাড়াই আমার পায়ের কাছে এসে লাফালাফি শুরু করে দিল! আম্মু বিড়ালের বাচ্চার উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির বাইরে রেখে আশার উপদেশ দিলেন। মাতৃ আজ্ঞা পালন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হলাম। হাতে তালি দিয়ে বাচ্চাটাকে বেরোনের রাস্তা দেখিয়ে দেই, বাচ্চা উলটো আমার দিকে চলে আসে! মহা মুসিবত! হঠাৎ লক্ষ্য করলাম বাচ্চাটার গলায় দড়ি বাঁধা! বিড়ালের গলায় দড়ি বাধার মত শক্ত কাজটা করল কে? যেই করুক তার অনুসন্ধান করার আগে বাচ্চাটাকে বাড়ির বাইরে চালান করে দিতে হবে। ধুলোমাখা ভেজা ভেজা দড়িটা হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে টানতে লাগলাম। টানটা আমার কাছে আস্তে হলেও বিড়ালের বাচ্চাটার জন্য মোটেও আস্তে ছিল না। বারবার হুবরী খেয়ে পড়ে যাচ্ছিল বেচারী। অনেক চেষ্টায় অবশেষে বাচ্চাটাকে বাড়ি ছাড়া করলাম। বাড়ি ভেজাল মুক্ত হলো! আহ শান্তি!



বাচ্চাটাকে বনবাসে রেখে বাড়ির গেইটের কাছে চলে এসেছি। ‘কেউ কেউ’ শব্দটা আবার কানে এসে বাঁধল। আগের চেয়েও অনেক তীব্র আর কর্কশ। ক্ষুধার্ত বাচ্চাটা মনে হয় আমাকে অভিশাপ দিচ্ছে। ভাবলাম কিছু খাবার দিয়ে আসি। একটা বাটিতে করে ভাত দিয়ে এলাম। ভাতের উপর দেখি আমার চেয়েও ওর অনীহা অনেক বেশী! ভাতের বাটি যেদিকে দেই সেদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে! ভাবলাম, ক্ষুধা নয়, বাচ্চাটাকে তৃষ্ণা পেয়েছে। একটা মাটির পাত্রে পানি এনে দিলাম। নবাবের বেটি দেখি পানিও খায় না!



টর্চটা এবার সোজা নবাবের মেয়ের চোখে ধরলাম। করুণ চাহনি, চোখে পেচুটি জমে আছে। ‘কি চাস তুই? এত কেউ কেউ করিস ক্যান?’ বাচ্চাটা অব্যক্ত ভাষায় কি যেন বলল। বোঝার শত চেষ্টা করেও আমার মত নাদান সে ভাষা বুঝতে পারল না। এর মধ্যে দেখি আমার মাদার একটা কাঁচি নিয়ে বাচ্চাটার কাছে চলে এসেছেন। বুঝে ফেললাম আমাকে কি করতে হবে। কাঁচিটা হাতে নিয়ে আলতো করে গলার দড়িটা কেটে দিলাম। ওনারে এখন আর পায় কে? নবাবের বেটি দিল এক ভোঁ দৌড়! আমাকে একটা ধন্যবাদও দিল না! ‘ওরে ও নবাবের বেটি! কোথায় গেল তোমার গগণবিদারী কেউ কেউয়ানী?’



মুক্তি, শান্তি, স্বাধীনতা! বিড়ালের বাচ্চাটা শব্দগুলো হয়তো উচ্চারণ করতে পারবে না, মুক্তি চাই মুক্তি চাই বলে রাজপথে স্লোগানও দিতে পারবে না কিংবা মুখ ফুটে বলতে পারবে না ‘ওরে আহাম্মক, আমাকে বাঁধিস না’। তারমানে এই নয় যে সে মুক্তি বোঝে না, শান্তি বোঝেনা, স্বাধীনতা চায়না। শুধু বিড়ালের বাচ্চা কেন? প্রতিটি জীবন স্বাধীনতার কাঙাল। কেউ অপার স্বাধীনতার সাগরে হাবুডুবু খেয়ে স্বাধীনতা স্বাধীনতা বলে চিল্লায় আবার কেউ বিড়ালের বাচ্চাটার মত অন্ধকারের সমুদ্রে স্বাধীনতা হাতরে বেড়ায়।



আর কত রক্ত চাই? আর কত লাশ চাই? ছোট ছোট শিশুদের নির্ভেজাল রক্তে কি তোদের পেট ভরে না? নাকি বদহজম হয়? হারামীর বাচ্চারা দয়া করে এবার অফ যা!



হে আল্লাহ, তুমি ফিলিস্তিনীদের মুক্তি দাও, শান্তি দাও, স্বাধীনতা দাও...

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৩১

লেখোয়াড় বলেছেন:
স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার।
তবে স্বাধীনতা অর্জন খুবই কঠিন।
অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
ফিলিস্তিন একসময় সেটা পাবে বলে আশা করি।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৫৫

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: আমিও সেটা আশা করি। তবে শুধু আশা করে কোন কাজ হবেনা মনে হয়

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৫৭

লেখোয়াড় বলেছেন:
হবে হবে ধৈর্য ধরুন।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


হে আল্লাহ, তুমি ফিলিস্তিনীদের মুক্তি দাও, শান্তি দাও, স্বাধীনতা দাও...

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৩৫

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.