নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কালেভদ্রে লিখি :)

মোঃ জুনায়েদ খান

ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..

মোঃ জুনায়েদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণুগল্পঃ লাল শার্ট

১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:০৮

আমার নতুন বাড়িটা অনেক সুন্দর। আমি যেমনটি চেয়েছিলাম, যেমনটি কল্পনা করেছিলাম তার চেয়ে কোটি কোটি গুণ সুন্দর। পাহাড় আছে, ঝর্না আছে, আঙ্গুরের বাগান আছে, ফুল আছে, পাখি আছে, ছোট্ট একটা নদীও আছে এখানে। কিন্তু অদ্ভুত হলেও সত্য যে নদীতে কোন নৌকো নেই। অবশ্য নৌকোর কোন দরকারও নেই। আমার একটু আগেই মাঝনদীতে যাওয়ার ভীষণ ইচ্ছে করছিল। ইচ্ছেটা শেষ না হতেই দেখি আমি নদীর উপর থপ থপ করে হাঁটছি! অদ্ভুত না?

দিয়াকে মিস করছি খুব। আজ বড় মামার সাথে দিয়াদের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল আমার। দিয়াকে কে বাবা মার খুব পছন্দ হয়েছে। এখন মামা পছন্দ করলেই সানাই বাজবে। প্যাঁ পোঁ ... প্যাঁ পোঁ... ধুর! সানাই প্যাঁ পোঁ করে বাজে নাকি?

দিয়া! পাগলী একটা। একদিন কি হয়েছে জানেন? দোকানদারের পছন্দে নতুন একটা লাল শার্ট কিনেছিলাম। দোকানদার বললেন, ‘এই বয়সে যদি রঙিন কাপড় না পড়েন তবে কখন পড়বেন? মরার পরে?’। কিছুক্ষণ কাচুমাচু করলাম, দূর্বল কণ্ঠে না নাও করলাম। তারপর লাল শার্ট গায়ে চড়িয়ে গেলাম দিয়ার সাথে দেখা করতে। দিয়া কি করলো জানেন? আলগোছে শার্টটা খুলে ড্রেনে ফেলে দিল! তারপর কটমট করে বলল, ‘লাল শার্ট পড়ে আর কোনদিন আমার সামনে আসবা না!’

এরপর আর কোনদিন লাল শার্ট পড়িনি। এবার ঈদে আচমকা একটা সাদা শার্ট গিফট করেছিল দিয়া। সেই শার্টটাই পড়েছিলাম গতকাল। নীল রঙয়ের ১২৫ সিসি বাইকটায় চেপে যাচ্ছিলাম বড় মামার কাছে। বুক দুরুদুরু কাঁপছিলো। দিয়াকে মামার পছন্দ হবে তো?

ঈদের সময়টায় গাড়িগুলোতে টার্বো ইঞ্জিন লাগায় কিনা কে জানে? শাঁই শাঁই করে করে ছুটছিল গাড়ী গুলো। আমিও পাল্লা দিয়ে চলছিলাম। গতিই জীবন, স্থবিরতাই মৃত্যু! হঠাৎ খুব কাছে কর্কশ শব্দে হর্ন বেজে উঠল! তারপর একটা মেটালিক শব্দ! কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছিটকে পড়লাম। একেবারে মাঝরাস্তায়। কয়েক ন্যানো সেকেন্ডের ব্যবধানে ভুট্টুস করে আরেকটা শব্দ হলো। আমার মাথা বার্স্ট হওয়ার শব্দ ওটা। মগজের টুকরোগুলো কালো পিচের রাস্তাটা মূহুর্তের মধ্যে দখল করে নিল। গলগল করে রক্ত বেরুতে লাগল। দিয়ার দেয়া সাদা শার্ট টা চোখের পলকেই অপছন্দের লাল হয়ে গেল! খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার। দাঁতে দাঁত চেপে ধরতে ইচ্ছে করছিল বারবার। কিন্তু সেটা হবে কেন? মাড়িই নেই, দাঁত পাব কোথায়?

এরপর যে কি হলো কিছুই মনে করতে পারছি না। মোবাইলটাও খুঁজে পাচ্ছিনা। মামাকে একটা ফোন দেয়া দরকার। মামা কি আমাকে ছাড়াই দিয়াদের বাসায় গেছেন নাকি?

আচ্ছা মাকে দেখছি না কেন? বাবা! বাবাও তো নেই! পিচ্চি রানুটা কই গেল? মা... ওমা... কোথায় গেলে তোমরা???

ধুর! কিচ্ছু ভালো লাগছে না। আপনি থাকেন। আমি বরং মাঝনদী থেকে একটু হেঁটে আসি...

ট্যাগঃ #সরক_দূর্ঘটনা

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:২১

ঝর্না রহমান বলেছেন: আপনার লেখাটি ভালো লাগলো। পারফেক্ট অণুগল্প। অভিনন্দন!

১১ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩১

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :-)

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:০৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো ।

শুভেচ্ছা :)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪২

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.