নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..
অবশেষে চোখ খুলতেই হলো। এ নিয়ে তিনবার। এর আগেও অনিচ্ছা সত্বেও দু’বার চোখ খুলে গিয়েছিলো। একবার রুমমেটের এলার্মে আর একবার মশকীর সংগীত মূর্ছনায়। দু’বারেই মাথার উপরে বালিশ চেপে জরুরী ভিত্তিতে চোখ বন্ধ করেছি। কিন্তু এবার চোখ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। পেটের মধ্যে আগুণ জ্বললে চোখ কি ঘুমিয়ে থাকতে পারে?
মোবাইলটা বালিশের কাছেই ছিলো। সময় দেখে চমকে উঠলাম! ১২ টা বেজে গেছে! গতরাতে দাঁত ব্রাশ না করেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মুখটা আঠালো হয়ে আছে। গন্ধও করছে বোধহয়। এই অবস্থায় ব্রাশ না করে বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না। মুখ গন্ধ করাটা অপমানের! ঠান্ডা সইবে তবুও অপমান সইবে না!
ঠান্ডা কি সত্যিই সইবে? বরফ ধোয়া পানি মুখে নেয়া মাত্রই দাঁত শিরশির করে উঠলো। গিটগিট করে কাঁপতে কাঁপতে হাতের ব্রাশটাকে বারকয়েক ডানে বামে সরিয়ে অসাধ্যকে সাধন করে ফেললাম। তারপর হাতের কোন স্পর্শ ছাড়াই কুলি করে ফেললাম! ভাগ্যিস বেসিনে লম্বা নলওয়ালা একটা টেপ ছিলো!
গত কয়েকদিন থেকে শৈতপ্রবাহ চলছে। সেই সুযোগে সূর্যি মামাও শ্বশুরবাড়ি গেছেন গরম গরম পিঠা খেতে। আকাশে দেখা দেন না অনেক দিন। ঘড়ির কাটা দুপুরের কথা জানান দিলেও বাইরের হিম শীতল বাতাস আর অন্ধকার ভাব দেখে মনে হচ্ছে এইমাত্র ভোর হলো। ভোরের লেপ আমাকে ডাকছে, আর আমার ক্ষুধার্ত পেট দ্বিগুণ গতিতে হোটেলের খাবারকে ডাকছে! অগ্যতা পেটের ডাকে সাড়া দিয়ে গায়ে মোটা মোটা কাপড় জড়িয়ে আমাকে রাজপথে নামতেই হলো।
যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই। রাস্তা একদম ফাঁকা। এই আধ কিলোমিটার পথ আমাকে এগারো চাকার গাড়িতে করেই পাড়ি দিতে হবে! হাত বরফ হয়ে গেছে। আর কিছুদূর এগুলো হয়তো আমি সমেত বরফ হয়ে যাবো। শিরশির করে বরফ বাতাস বইছে। আমিও বরফ-শীতল বাতসের বিপরীতে মুখ দিয়ে হু হু করে গরম বাতাস ছাড়ছি আর কচ্ছপ গতিতে এগুচ্ছি। আমার খুব কাছেই ক্রিং করে একটা শব্দ হলো। পেছন ফিরে তাকাতেই মুখটা এক’শ ওয়াটের বাতির মত উজ্জ্বল হয়ে উঠলো! ইয়াহু...! আমাকে আর হাঁটতে হবে না। রিক্সা পেয়ে গেছি!
হুড তুলে রিক্সায় চেপে বসেছি। রিক্সার বেগের সাথে পাল্লা দিয়ে বাতাসের বেগ বাড়ছে। বিনা নোটিসে থেকে থেকে কেঁপে উঠছি। রিক্সাচালক মাঝ বয়সী লোক। মুখ ভর্তি সাদা-কালো দাড়ি। পরনে তেল চিটচিটে একটা ফুল শার্ট আর গ্রামীণ চেকের পাতলা একটা লুঙ্গী। পায়ে যথারীতি প্লাস্টিকের কালো স্যান্ডেল। আমিও কাঁপছি, উনিও কাঁপছেন! কিন্তু আমার মত হু হু করে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিচ্ছেন না। লোকটার দিকে এক নজরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। তারপর মাথা থেকে গরম টুপিটা এক টানে খুলে ফেললাম। গায়ে বড় মামার দেয়া মোটা যে শালটা জড়িয়ে ছিলাম সেটাও খুলে সিটের উপর রাখলাম। পা থেকে জুতো জোড়া খুলে তৎক্ষণাৎ আবার পড়ে ফেললাম। লোকটা গিটগিট করে কাঁপতে কাঁপতে রিক্সার পেডেলে চাপ দিচ্ছেন। আমি কাঁপছি আর নারিকেলের ছোবড়ার সিটে বসে নয়নাভিরাম সে দৃশ্য উপভোগ করছি।
শিরশির করে বরফ ধোয়া বাতাস বইছে। ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে। হোটেলের সামনে এসে রিক্সা থামলো। একলাফে রিক্সা থেকে নেমেই গটগট করে হেঁটে হোটেলে ঢুকলাম। পেছন থেকে রিক্সাওয়ালা হাঁক ছাড়লো- ‘মামা ভাড়া দিলেন না যে?”
গিটগিট করে কাঁপতে কাঁপতে ভাঙা গলায় চেঁচিয়ে বললাম, -“রিক্সায় রেখে এসেছি মামা!”
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৭
মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২১
নাজনীন পলি বলেছেন: এখানেই কি গল্প শেষ ? আরও একটু পড়তে পারলে ভালো লাগতো ।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৬
মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: আরো একটু লিখতে পারলে আমারও ভালো লাগতো! কিন্তু এই ঠান্ডায় কিবোর্ডের বাটন চাপতেও আলসেমী লাগে! ধন্যবাদ।
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৫
আলম দীপ্র বলেছেন: হুম ! ভালো লেগেছে গল্প !
শুভকামনা নিরন্তর ।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৬
মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ :-)
৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮
সুমন কর বলেছেন: সাবলীল বর্ণনার কারণে পড়তে ভাল লাগল।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৬
মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন দা
৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৯
জিরো ডাইমেনশন বলেছেন: গল্পের কোথায় যেন একটা ক্লাইম্যাক্স আসা করেছিলাম...... সেরকম না পেলেও গল্পটা ভালো লেগেছে...... কাপতে কাপতে পড়লাম লেখাটা......
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৮
মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: গল্পে সে রকমের কোন ক্লাইম্যাক্স উপহার দিতে না পায়ায় দুঃখিত। অসং্খ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা নিরন্তর :-)
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৯
নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লাগলো।