নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কালেভদ্রে লিখি :)

মোঃ জুনায়েদ খান

ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..

মোঃ জুনায়েদ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প: \'মিথ্যা\'

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

দরদর করে ঘামছে সন্তু। মাথার ঘাম পায়ে পড়ার মত বিরল ঘটনাও ঘটছে আজ। গরমটা হঠাৎ করে যে চরম হয়ে যাবে কে জানতো? এদিক ওদিক উঁকি দিয়ে একটা বাড়ির সামনে দাড়িয়ে পড়ে সন্তু। বাড়িটা রাইসার। রাইসার দেয়া তথ্য অনুযায়ী এখন বাড়ির ছাঁদে থাকার কথা তার।

মিনিট পাঁচেক আগেই কথা হয়েছে রাইসার সাথে। এই তালপাকা গরমেও রাইসা ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে। রাইসার সাথে একটা সবুজ রঙয়ের বার্মিজ ছাতাও আছে। ছাতাটা কক্সবাজার থেকে কিনেছিল সন্তু। রাইসা প্রতিদিন দুপুরে সেই ছাতাটা মাথায় দিয়ে ছাঁদে এসে পাখিদের খাবার খাওয়ায় আর সন্তুর সাথে কথা বলে। মেয়েটার জন্য অন্যরকম ভালোলাগা তৈরী হয় ফোনের ওপাশে থাকা সন্তুর মনে।

সেই ভালোলাগার তীব্রতায় দিনাজপুর থেকে ঢাকায় চলে এসেছে সন্তু। উদ্দেশ্য রাইসা যখন দুপুরে পাখিদের খাওয়াতে বের হবে তখন সন্তু বাসার নিচে গিয়ে হাজির হবে। চমকে দেবে রাইসাকে!

এক দুই তিন করে বিশ মিনিট কেটে যায়। ছাঁদে রাইসা আসেনা। শুধু রাইসা কেন? রাইসার পাখীগুলোরও দেখা পায় না সন্তু। বাধ্য হয়েই ফোন করে সন্তু-

- কি করো?
- একটু আগেই তো বললাম! ভুলে গেলে?
- সেটা তো আধঘণ্টা আগে বলেছো! এখনো ছাঁদে?
- হ্যারে বাবা! পাখিদের খাওয়াতে আমার খুব ভালো লাগে!
- তাহলে আর তোমার ভালোলাগায় ডিস্টার্ব না করি। দেখো।

দ্বিতীয়বারের জন্য ছাঁদে চোখ বুলায় সন্তু। ছাঁদের উপর দিয়ে পাশের ছয় তলা বিল্ডিংটা ছাড়া কিছুই দেখতে পায়না সে। রাইসা যে মিথ্যে বলছে সেটা এই শূন্য ছাঁদটার মতই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তবুও বিশ্বাস হতে চায় না। মোবাইলের টু মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় জুম করে ফাঁকা ছাঁদটার ছবি তোলে সন্তু। তারপর ধীর পায়ে ফিরতি পথে হাঁটতে থাকে সে।

রাতে ফোন করে রাইসা। সন্তু তখন বাসের সিটে গা এলিয়ে দিয়ে ইয়ারফোনে ফুল ভলিয়মে গান শুনছিলো। রাতের বাস থেকে থেকেই বিকট শব্দে হর্ণ বাজাচ্ছিল।

- এই তুমি কোথায়?
- আমি তো রুমে!
- তাহলে হর্ণ বাজে কেন?
- ওটা হর্ণ না। ভুভুজেলা! রিদওয়ান ডিস্টার্ব করতেছে।
- ও তাই বলো! আমি তো ভাবলাম রাত দুপুরে আবার কোন মেয়ের সাথে টাংকি মারতে বেড়িয়েছো!
- বেড়িয়েছিলাম তো!
- মানে কি??
- ছবি দেখবা?
- এহ! ভয় দেখাও?
- হোয়াটস অ্যাপ অন করলেই বুঝতে পারবা!

কৌতূহল দমাতে না পেরে হোয়াটস অ্যাপ অন করে রাইসা! সন্তু ছবি পাঠায়। সাথে সুন্দর একটা ক্যাপশন!

“ছবিটা যে তোমার বাসার ছাঁদের সেটা চিনতে নিঃশ্চয় কষ্ট হচ্ছে না? আজ দুপুরের তোলা। তুমি যখন হরহর করে মিথ্যে বলছিলে তখন আমি এই চাঁদটার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলাম। আর ওটা ভুভুজেলার শব্দ না। বাসের হর্ণ। বাসায় যাচ্ছি। এভাবে মিথ্যে না বললেও পারতে। ভালো থেকো। বাই...”

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬

রোবায়দা বলেছেন: মিথ্যা.......... হোক , তবুওতো ছাদটা দেখা হলো !!!!

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৮

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: হা হা হা! ভালো বলেছেন!

২| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মাসাল্লাহ

১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৪

মোঃ জুনায়েদ খান বলেছেন: :-P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.