নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখার জন্যে কলম, পেন্সিল, মোবাইল, পিসি কিছু দরকার আছে বলে আমার মনে হয়না। লিখার মত একটা মন থাকলেই যথেষ্ট।

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী

কেউ জানেনা আমি কত বাচাল। কারন মনের কথাগুলো কেউ শুনতে পায়না।

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারে আমি চোখে দেখিনি

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪১


মায়ের বাল্যবান্ধবী আমাকে ফেসবুকে মেসেজ পাঠালেন। ওনার সাথে বাস্তবে আমার দেখা হয়নি বললেই চলে। তবে ফেসবুকের কল্যানে তিনি কি করছেন, খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, কোথায় যাচ্ছেন এসব নিয়মিতই চোখে পড়তো। মাঝে মাঝে ওনার করা পোস্টে লাইক দিলেও কমেন্ট করিনি খুব একটা। 'মায়ের বাল্য কালের বান্ধবী' ব্যতীত খুব কাছের মানুষের মত সম্পর্ক ছিলনা কোন। তাই আন্টি কি মনেকরে হঠাৎ ফেসবুকে মেসেজ দিলেন এসব ভাবতে ভাবতে মেসেজ ওপেন করলাম।
মেসেজ পড়ে কিছুটা অবাক হলাম। আন্টি মাত্র তিনটি বাক্য লিখেছেন।
  'কেমন আছ?
   তোমার জন্য বিয়ের পাত্রী দেখতে চাচ্ছিলাম
    যদি মতামত জানাও।'
বিয়ের ব্যাপারে কদিন ধরে বাবা মায়ের কাছ থেকেও কথা শুনছিলাম। কিন্তু আন্টির মুখে হঠাৎ কথাগুলো শুনে প্রথমে কিছুটা অবাক হয়েছি। মা তার ছেলের বৌ খুঁজতে বান্ধবীর সাহায্যের আশ্রয় নিয়েছে কিনা ঠিক ঠাহর করতে পারলাম না। আন্টি প্রফেশনাল ভাবে ঘটক নন। বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। শুনেছি যারা দুজন মানুষকে বিয়ে নামক এ পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দেন, তারা বেশ সওয়াবের অংশীদার হন। এজন্যেই কিনা জানিনা, মধ্য বয়সের পর থেকে অনেক নারী পুরুষ কে আমি প্রফেশনাল ঘটক না হয়েও প্রফেশনালী ঘটকালী করতে দেখেছি।  কিন্তু এরা টাকার জন্যে কখনও ঘটকালী করেন না। ঐযে বলেছি সওয়াবের আশায় করে থাকেন হয়ত। তবে আমার ধারনা একটু ভিন্ন। আমার মনেহয় যে, যখন একজন মানুষ অপর দুজন মানুষ তথা দুটি পরিবার কে বিয়ে নামক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এক করতে পারেন,  তখন এক করে দেয়া সেই (ঘটক) মানুষটির মনে এক ধরনের গভীর আত্মতৃপ্তি কাজ করে। বিয়ে করে সংসার শুরু করা মানুষ দুটি সুখে থাকলে এক করে দেয়া মানুষগুলোও মনে সুখ অনুভব করেন। এবং অনুরূপভাবে তাদের দুঃখ কষ্টে সেই এক করে দেয়া মানুষগুলোও ব্যথিত হন। এটা আমার ব্যক্তিগত ধারনা। তবে প্রফেশনাল ঘটকদের ক্ষেত্রেও একই রকমের অনুভূতি  কাজ করে কিনা এ ব্যাপারে আমার সঠিক ধারনা নেই।
যাহোক, আন্টির মেসেজে ফিরে আসি। মেসেজটা পড়ার পর কি উত্তর দিব ভাবছিলাম। কেননা বিয়ের ব্যাপারে নিজের বাবা মায়ের সাথেই এখনও পর্যন্ত কোন ফলপ্রসূ আলাপ হয়ে উঠেনি। ওনারা মাঝে মাঝে বললে, আমি এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিতাম এ পর্যন্তই।
নিজেই এখনও গুছিয়ে উঠতে পারিনি। তার উপর এত ব্যস্ত জীবন! বিয়ে করার ইচ্ছা নেই তা নয়। কিন্তু করবটা কখন! সময়ই তো নেই। আন্টির কথার 'হ্যা/না' কিছু একটা উত্তর দিতে হবে। কিছুটা বাংলা সিনেমার মত করে বললাম, 'আন্টি আমি থাকি দূর পরবাসে। আপনারাই তো আমার একমাত্র ভরসা। আপনারা যা ভাল মনে করেন।'
এক বিন্দুও মিথ্যে বলিনি অবশ্য। নিজের মোরদে যেহেতু একলা থেকে দোকলা হতে পারিনি এত বছর পর্যন্ত, তাই পরিবার পরিজনের কাছে নিজেকে সপে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আন্টি বললেন, 'তুমি কোন চিন্তা করোনা। আমার পরিচিত খুব সুন্দরী একটা মেয়ে আছে। ফেসবুকে কথা বলে দেখবে?'
তারমানে আন্টির ধারনা আমি চিন্তা করছিলাম? সত্যি বলতে এ যুগেও যারা সিঙ্গেলের খাতায় নাম লিখিয়ে রেখেছে ওদের আসলে চিন্তা করারই কথা। বললাম 'ঠিক আছে আন্টি, কথা বলে দেখা যেতে পারে।'
আমি এর আগে কোন মেয়ের সাথে এভাবে বিয়ের উদ্দেশ্যে কথা বলিনি। তাই দেখে কিনা জানিনা, হঠাৎ কেমন রোমাঞ্চ অনুভূত হতে লাগল মনে। আন্টি বলেছেন মেয়েটির সাথে ফেসবুকে পরিচয় করিয়ে দিবেন। তাছাড়া আন্টির কথামতে মেয়েটি সুন্দরী। যদিও সব ঘটকরাই পাত্র পাত্রীদের রাজপুত্র আর রাজকন্যার সাথে তুলনা করে থাকে।  তবুও আমি মনে মনে ভাবছি, আহা! মেয়েটি নাজানি কত সুন্দরই হবে! কেন জানিনা বেশ ভাল লাগছে মনে। আমি মেয়েটির নাক-কান, চোখ-মুখ কল্পনায় বারবার নিজের মত করে ভাবছি  কদিন ধরে।  হঠাৎ কেমন অদ্ভুত মনে হতে লাগল নিজের এমন আচরণ দেখে। একটা মেয়ে যাকে দেখা তো দূরে থাক, যার নামটা পর্যন্ত জানিনা! তার প্রেমে পরে যাচ্ছি আমি? এমনটা কেন হচ্ছে! আমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই বলে? নাকি আমি বড্ড একা বলে? এসব ভাবনা এসে মনটা আবার কেমন দমে গেল। কিন্তু তবুও আন্টির একটি কথা আমার মনে গেঁথেই রইল। একটি সুন্দরী মেয়ের সাথে আন্টি আমাকে পরিচিয় করিয়ে দিবেন। আমাকে কি তাহলে সুন্দরের লোভ পেয়ে বসেছে! নাকি আমি কারও কাছে নিজেকে সপে দেয়ার জন্য আকুল হয়ে আছি । নিজের প্রশ্ন নিজেই উত্তর মেলাতে পারছিনা। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। নাম পরিচয় না জানা সেই মেয়ের সাথে কথা বলার জন্যে। এ অপেক্ষার জন্যে কেও কাউকে কোন কথা দেয়নি। কোন ধরাবাঁধা সময় নেই। তবুও  কেমন যেন অস্থির হয়ে আছে মন। শেষমেশ যদি মেয়েটির সাথে কথা হয়, দেখা হয় আর মেয়েটি যদি আমার মনের মত না হয়, কিংবা আমার মনের মত হলেও আমি যদি তার মনের মত না হই তবে কি হবে ওসব সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানিনা। আর জানতেও ইচ্ছা করছেনা। শুধু এখনকার অনুভূতিগুলো গুছিয়ে রাখার মত। একমাত্র ভরা মনেই এই অনুভূতি পাওয়া যায় বলে আমার মনেহয়। মনটা কাউকে অর্ধেক কিংবা পুরোটা দিয়ে দিলে এরকম পরিস্থিতে পৃথিবীটা অনেক পর মনেহয় বুঝি? জানিনা আমি। আমার মন ভরা চাঁদের মত পূর্ণ।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০২

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ওগো অজানা সুর তুমি......

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৫

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: তবু তোমার সুরেই গান গেয়ে যাই আমি। :D

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: শুনেছি, সঠিক কিনা জানিনা। ''জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে'' এই তিন বিষয় নাকি স্বয়ং অাল্লাহ ঠিক করে দেন। কাজেই এ নিয়ে বেশী চিন্তা করবেন না। যার সাথে হবার, তার সাথেই হবে; সে যেভাবেই হোক না কেন। :)

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৩

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: হুম এটা আমিও মানি। তবে এই ব্যাস্ত জীবনে বেশি চিন্তা করারও অবকাশ নেই। এমনি হঠাৎ মনে ভাবনাগুলো আসল তাই সবার সাথে ভাগ করে নিলাম অনুভূতিগুলো। 'প্রথম' বলে একটা কথা আছেনা? হয়ত প্রথম বলেই একটু স্পেশাল মনে হয়েছিল।

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২২

খাঁজা বাবা বলেছেন: :P

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। তবে ঘটকালি করা খুব কঠিন ব্যাপার। আমি জীবনে এক মেয়ের ঘটকালী করতে গিয়ে শেষে আমার সাথেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছিলো প্রায়। পরে বহু ঝামেলা করে বেঁচেছি। তবে আপনার মায়ের বান্ধবীর ক্ষেত্রে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই শতভাগ। তা ছাড়া উনার বর্ণনামতে মেয়েটা সুন্দর.... নেমে যান ক্রিজে.. ;)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫১

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: ঘটকালী করা আসলেই অনেক কঠিন ব্যাপার। তবে আপনার কাহিনী টাও ইন্টারেস্টিং মনেহচ্ছে! কোন একদিন শুনব আশা করি। : D

৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: মনে হচ্ছে আশার কলিটি ফুটবে।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫২

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: তাই যেন হয়। : D

৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্প ভাল লেগেছে।
পরে কি হল জানতে ইচ্ছে করছে যদিও গল্পটি এখানেই শেষ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৩

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: আপাতত গল্প এখানেই থেমে আছে। পরে বলার মত কিছু ঘটলে জানবেন ইন-শা-আল্লাহ।

৭| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখায় রস না পেলে কেউ লেখকের বশ হয় না।

পাঠকের মনে রস সঞ্চার করার উপযুক্ত লেখা চাই, তা কবিতা বা গল্প যা-ই হোক।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৭

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: এখানে এত জ্ঞানী গুনি মানুষের ভীরে আমার মত এত নগন্য একজন যে কিছু লিখার চেষ্টা করছি এটাই অনেক বড় দুঃসাহস মনেহয় আমার কাছে। কেও কেও আমার লিখা পরে ভাল হোক, খারাপ হোক মন্তব্য প্রকাশ করলেও খুব ভাল লাগে। লিখাটা একেবারেই বৃথা যায়নি অন্তত গুটিকয়েকজন পড়ে হলেও আমাকে কৃতজ্ঞ করেছে এভাবে ভাবি। আমি কোন লেখক নই। মাঝে মাঝে মনের অগোছালো কথা গুলো গুছাতে চেষ্টা করেও পারিনা ঠিকমত। তাই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনাদের লিখাগুলোই আমার অনুপ্রেরণা। :)

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫

নীল আকাশ বলেছেন: ১। আপনার মন ভরা চাঁদের মতো পূর্ণ। - কি দিয়ে পূর্ণ হলো বাহে? পাত্রীর কথা শুনেই এই অবস্থা, না জানি কথা বললে কি হবে...... ;)
২। এই লেখার ২য় পর্ব চাই। এটা কঠিন হুকুম। অর্ধেক লেখা পড়িয়ে মাঝ নদীতে আমাদের রেখে পালাবেন? এটা তো হতে পারেনা.....।
৩। দেরী করে পড়তে আসার জন্য দু:খিত। লেখাটা ভালো, আরও আগেই পড়া উচিৎ ছিল। আপনার লেখার ধরন ভালো লেগেছে। সময় করে আপনার বাকি লেখাগুলিও পড়ে যেতে হবে। আপাতত এই পর্যন্তই! ভালো থাকুন, সব সময়।
শুভ কামনা রইল।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: হাহা। ভরা চাঁদের মত পূর্ণ বলতে আমার আস্ত মন লইয়া আমি একলা একলা ই বইসা আছি বুঝাতে চেয়েছি। আপনার কঠিন হুকুমের কথা মনে থাকবে। :) দেরিতে হলেও পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ! আর আপনার লিখাও আমার ভাল লেগেছে। আজ ভদ্রতা শিরোনামের ছোট গল্পটা দারুন ছিল। আমিও সময় করে অন্য লিখাগুলো পড়তে চেষ্টা করব। আপনিও ভাল থাকবেন ইনশাআল্লাহ :)

৯| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৬

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



ভাই বিয়ে কইরেন না পুরা ধরা খাইবেন ।

যত দিন সিঙ্গেল তত দিন ই জিঙ্গেল

ভাল থাকবেন ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭

দিকশূন্যপুরের অভিযাত্রী বলেছেন: তা বেশ বলেছেন ভাই। তবে অন্তত অন্যদেরও একই রকম উপদেশ দেয়ার জন্যে হলেও বিয়েটা করা দরকার! কি বলেন? :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.