![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইংরেজি কসমেটিক্স শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ " কসমস " থেকে। কসমস অর্থ হলো চেহারা আরও সুন্দর হয়ে উঠা। যেহেতু এটি ল্যাটিন শব্দ, তাই ধারণা করা যায়, নিজেদের প্রসাধনী দ্বারা সজ্জিত করার প্রচলন গ্রীক ও রোমের মহিলাদের মধ্যেও ছিল। কসমেটিক বা প্রসাধনীর ব্যবহার প্রাচীন মিসরেও ছিল। ক্লিয়পেট্টা নিজেকে সাজিয়ে তুলতে ও সাজিয়ে রাখতে ভালবাসতেন। তার ছিল সাজসজ্জার জন্য ভিন্ন প্রসাধনী কক্ষ। ছিল তার কয়েকজন সজ্জাকর মহিলা আর ছিল সাজসজ্জার ভেষজ উপকরণ ও উপাদান।
এক তথ্যে জানা যায়, মোগল হেরেমের বেগম-শাহাজাদীরা নাকি গোসল করতেন দুধ দিয়ে। পা ধৌত করতেন গোলাপ পানিতে। গোলাপ পাপড়ির তৈরি সুগন্ধীতে সুবাসিত করতেন নিজেদের দেহকে। গোসলের পর চুল শুকাতেন সূর্য কিরণে। মুখে মাখতেন পুস্প রেণু।
আমাদের এই উপমহাদেশে প্রথম বিউটি পার্লার প্রতিষ্ঠিত হয় বোম্বেতে। অতপর মাদ্রাজ, দিল্লি ও কলিকাতায়।
বাংলাদেশে ব্যবসা হিসেবে পার্লার প্রবেশ করে ১৯৬৫ সালে। এই সালে ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডে " হংকং বিউটি পার্লার " নামে প্যাটরিকা (patrica) নামে একজন চৈনিক রেস্তোরাঁ মালিক এ ব্যবসা প্রথম শুরু করেন। ১৯৭২ সালে এরা ব্যবসা গুটিয়ে অন্যত্র চলে যান। লেদার ব্যবসায়ী চাইনিজ পরিবারের মেয়ে কারমেল কেমব্রিজ (Carmel Cambrige )উপার্জনের সাথে সাথে সময় কাটাবার পথ খুঁজে পেলেন। ১৯৬৮ সালে বিউটি পার্লার ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেন মেফেয়ার (Mayfair)। সড়ক ৪ নম্বর ধানমন্ডির ভাগাটে বাড়িতে ব্যবসা শুরু করেন।
ধানমন্ডি ২৬ নম্বর রোডে হাবিবা ইসলাম নামের এক মহিলা ১৯৭৩ সালে নিজ বাড়িতে পার্লার ব্যবসা শুরু করেন।
১৯৭৫ সালে চীনু নামের এক মহিলা মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডে প্রথমে নিজ বাড়িতে এবং পরে ভাড়াতে বাড়িতে পার্লার পরিচালনা করেন।
১৯৭৭ সালে পুরানা পল্টনে জরিনা আসগার নামের এক মহিলা মায়ের বাড়িতে বিউটি পার্লার দেন। বলাবাহুল্য, তিনি ব্যবসায়িক সাফল্যও অর্জন করেন।
১৯৭৯ সালে লুসি নামের একজন চৈনিক মহিলা ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডে পার্লার দোকান খোলেন।
১৯৮৬ সালে নিলুফার নজীব নামের এক মহিলা পুরনো ঢাকায় রূপচর্চার এক দোকান খোলেন। উল্লেখ্য, সে সময় রাজধানীতে শতাধিক পার্লার প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যবসাও সরগরম হয়ে উঠে।
এই ধারাবাহিকতার বিস্তৃতি প্রথমে রাজধানীতে বিশেষ বিশেষ এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও দ্রুত সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে তো এই পার্লার অভিজাত এলাকায় যেমন আছে, তেমনি যে সব এলাকা অভিজাত নয়, সে সব এলাকায়ও পার্লার ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে। অলিগলিতে তো রয়েছেই, এমন কি বড় বড় বস্তিতেও এ পার্লার ব্যবসা চলছে বলে জানা যায়। বর্তমান অবস্থা তো এমনই যে, এ ব্যবসা আর রাজধানীতে সীমাবদ্ধ নেই, দেশের সব জেলা সদরে অবৈধভাবে চলছে, এ সংখ্যা কেউ বলতে পারছেন না, তবে কয়েক হাজার যে হবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।
৮০ দশকের মধ্য ভাগ থেকে পার্লার ব্যবসায়ে হাওয়া লাগে বেশ জোরেশোরে। সেই ৮০ দশকের মধ্য ভাগ থেকে পার্লার ব্যবসা বিভিন্ন নামে ও বিভিন্ন পথে পরিচালিত হ৮য়ে আসছে। সব পার্লারই বিউটি পার্লার নামে পরিচালিত ও পরিচিত। কিন্তু বাহিরের পাবলিসিটির আড়ালে অধিকাংশ পার্লার যৌন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ৯০ দশকের শুরুতেই পত্রপত্রিকায় লেখালেখির কারেণে রাজধানীতের কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকার পার্লারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অনেক পুরুষ ও মহিলকে আপত্তিকর অবস্থায় গ্রেফতার করে। তাদের চবিও পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়। ধরপাকড় কয়েক দিন চলার পর অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। রাজনীতির ঝড়ো হাওয়া এ অভিযানকে থামিয়ে দেয়। নিন্দুকেরা বলে, পুলিশ প্রহরায়, পুলিশ পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়মিত দাঁদা লেনদেনের কারণে পার্লার নামের আড়ালে যৌন ব্যবসা অবাধে চলছে,। আর ধর-পাকড় নেই। হ্যাঁ, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে আর একবার ধর-পাকড় শুরু হয়েছিল। এর পর থেকে বন্ধ। মনে হয়, পার্লার ব্যবসায় আর কোন ভেজাল নেই। অনৈতিকতা নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারের কোন নীতিমালাও নেই। যে যেমন খুশি তেমন ব্যবসা চালাচ্ছে। নতুন নতুন আইটেম যোগ হচ্ছে। কোন বাধা নেই, মানা নেই। চলবে ইনশাল্লাহ......................।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৯
শুঁটকি মাছ বলেছেন: রেনেসার যুগে নাকি মহিলারা ভ্রু একদম তুলে ফেলত!আমার তো ভাবতেই ভয় লাগে ভ্রু-বিহীন মহিলাগুলোকে কেমন দেখাতো!!!!