![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১০.
-হ্যালো।
-আবীর বলছেন?
-জ্বী বলছি। আপনি?
-আমি নুসরাত। আমার নাম্বারটা বুঝি এখনো সেভ করেন নি!
-না। আসলে সময় পাই নি।
-তারপর?
-তারপর কী?
-কিছু জানালেন না যে!
-কী জানাবো?
-বারে! বুঝতে পারছেন না?
-আমি আসলেই বুঝতে পারছি না।
-আমাকে যে সেদিন দেখলেন, কেমন লাগল?
পাত্রী নিজে জানতে চাচ্ছে তাকে কেমন লাগল! এমন পরিস্থিতিতে আমাকে কখনো পড়তে হবে ভাবিনি কখনো। কী যে বলি মেয়েটাকে!
-আসলে আপনাকে দেখার জন্য তো ডাকিনি। আপনি নিজেই আসলেন।
-দেখানোর জন্যই তো গেছি, নাকি?
-তা গেছেন।
-তাহলে বলেন কেমন লাগল আমাকে?
-আপনি তো দেখতে অনেক সুন্দর। এটা আর বলার কী আছে? আপনি নিজেও জানেন সেটা।
-তার মানে আমাকে আপনার ভাল লেগেছে! তাহলে এবার বাসার সবাইকে নিয়ে চলে আসুন। আর বিয়েতে রাজী হয়ে যান।
-না।
-না! আশ্চর্য! আপনি কি বিয়ে করবেন না? আপনার কোন সমস্যা আছে?
-না সমস্যা নাই। এখন আসলে এ বিষয় নিয়ে কথা বলার মুড নেই। আমি মেন্টালি ডিস্টার্বড কিছুটা। পরে কথা বলি।
-(নিরবতা)।
-আমি রাখছি, হু?
-ঠিক আছে। আমি পরে আবার কল দেব।
এমনিতেই ভাল লাগছে না। তার উপর নুসরাতের এসব কথা। উফ! মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেল না। পরের বার কল দিলে জয়ীতার কথা বলে দিতে হবে। তাহলে আশা করি আর বিরক্ত করবে না।
টেবিলে রাখা ক্যালেন্ডারটা হাতে নিলাম। আজ ১১ তারিখ। আর মাত্র ৫ দিন। ৫ দিন পরেই জয়ীর আশীর্বাদ। কলম নিয়ে ১৬ তারিখটা কেটে দিলাম। এই ১৬ জুলাই তারিখটাকে ক্যালেন্ডার থেকে যদি সত্যি সত্যি উধাও করে দেয়া যেত। কী হতো তবে? ১১,১২,১৩,১৪,১৫,১৭... এমন করে যদি তারিখ গোনা হতো। অথবা ১৫ তারিখ সূর্য অস্ত যাবার পর যদি আর উঠতো না? অথবা ১৫ তারিখ যদি ভয়ংকর রকমের ১৫ মাত্রার কোন ভুমিকম্প হয়ে পুরো পৃথিবীটা ধ্বংস করে দিতো। সেটাই বরং ভাল হতো। দুজন একসাথে মারা যেতাম। আমিও থাকতাম না, জয়ীও থাকতো না। হঠাৎ ঘড়ির দিকে চোখ গেল। রাত আটটা বেজে গেছে। আজ বোধ হয় আর চেম্বারে কোন রোগী আসবে না। আমি বরং বাসায় চলে যাই।চেম্বার থেকে বের হবার জন্য চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। হঠাৎ বাইরে মানুষের পায়ের শব্দ শোনা গেল। বোধ হয় রোগী। হু, যা ভেবেছিলাম, তাই। একজন মহিলাকে নিয়ে একটা ছেলে রুমে ঢুকলে তাদের বসতে বললাম। দুজনকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে এরা খুব সম্ভ্রান্ত পরিবারের।
-ডা. সাহেব, দেখেন তো মার কী হয়েছে। কেমন জানি করছেন। ছেলেটি কথা বলে উঠল।
-কী হয়েছে বলেন? মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করলাম।
ভদ্র মহিলা একটু সামনে ঝুঁকে খুব নিচু কণ্ঠে বলতে থাকলেন-
-ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যাথা সেই সাথে মাথায় ব্যাথা।
মহিলাটির কথা বুঝতে আমার সমস্যা হচ্ছে। আমি আসলে জয়ীকে নিয়ে এতো বেশি চিন্তায় মগ্ন যে অন্য কারো কথাতে মনোনিবেশ করতে একেবারেই পারছি না।
মহিলাটিকে ভালমতো এক্সামিন করলাম তারপর তার ঘাড়ের এক্সরে করালাম। নাহ! কোন ফ্র্যাকচার হয় নি। ঘাড়ে ব্যথা বোধ করি বালিশের কারণে। কিছু ব্যাথানাশক ওষুধ দিয়ে মহিলাটিকে বললাম,
-কোন চিন্তা করবেন না। ওষুধগুলো খান, সেরে যাবে।
তারা চলে গেলে আমিও বাড়ি পৌছালাম।
পরদিন হাসাপাতালে যাবার পরেই খুব খারাপ অবস্থার এক রোগীকে এনে ভর্তি করা হল। সিনিয়র ডাক্তার ছুটে এসে তাকে সিপিআর দেয়া শুরু করলেন। প্রথমে আমি রোগীকে চিনতে পারি নি। কিন্তু সঙ্গে আসা মানুষজনদের মধ্যে তার ছেলেকে দেখে চিনতে পারলাম। এরা তো গত রাতে আমার চেম্বারে গিয়েছিলেন। রোগীকে বাঁচানোর তখন প্রাণপণ চেষ্টা চলছে। আমি বুঝতে পারছি, অনেক দেরী হয়ে গেছে। এখন আর তাকে বাঁচানো সম্ভব না। আমার মনে পড়ল, গত রাতে মহিলাটি আমাকে বলেছিলেন তার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে। ব্যাপারটা আমি তখন মোটেও গুরুত্ব দেইনি। দিলে অবশ্যই সিটি স্ক্যান করাতাম আর মহিলাটিও বেঁচে যেতেন। আমার খুব কান্না পাচ্ছে। কাঁদতে পারছি না । মহিলাটির মৃত্যুর জন্য যে আমি দায়ী এটা তবে বুঝে ফেলবে তারা। আর এ বুঝলে আমাকে আস্ত রাখা হবে না। এখানে রোগীদের আত্মীয় স্বজনরা খুব ভয়ানক। ডাক্তারদের মারতে উদ্যত হয়। যাই হোক, মহিলাটির ছেলে মেয়েদের মেডিকেল টার্ম ব্যবহার করে স্ট্রোকের ভয়াবহতা সম্বন্ধে বললাম। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ করেছি এটা বলে তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলাম। তারা কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে গেল।
আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ছোট্ট একটা ভুলে মহিলাটির সন্তানরা মা হারা হয়ে গেল। আমি সিটি স্ক্যানটা করিয়ে ফেললে ঠিক বুঝে ফেলতাম, কী হয়েছে মহিলাটির। কেন যে মহিলাটির সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলাম না? ইশ! আমার গাফিলতির জন্য একটা মানুষ মারা গেল! আমার তো ডাক্তারি পেশাটা নেয়াটাই ঠিক হয় নি। আমি এখন কোথায় গিয়ে লুকাবো? জানি কেউ ব্যাপারটা বুঝে নি। কেউ ব্যাপারটা জানে না। কিন্তু আমি তো বুঝতে পেরেছি। আমি তো জেনে গেছি। নিজের কাছ থেকে নিজেকে কিভাবে লুকোবো? এ কি সম্ভব? আমার মাথায় তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি জানি এ যন্ত্রনা থেকে এখন কিছুতেই মুক্তি পাবোনা। কী করব আমি? কী করব? নাহ! আমার হাতে এখন একটাই উপায় আছে । শুধু একটাই উপায়।
-এই রিক্সা! এই!
মাহিলাটির বাড়ির ঠিকানা আগেই নিয়ে রেখেছিলাম। রিক্সা নিয়ে তাদের বাড়ি চলে গেলাম।
বাড়িতে দরজা হাট করে খোলা। মৃতদেহ দেখতে এলাকার লোকজন আসছেন। বাড়ির সামনের উঠোনে বসার ব্যবস্থা। মহিলাটির ছেলে আমাকে দেখে বসতে বলল। আমি তাকে বললাম, জরুরি কথা আছে। একটু আড়ালে চলুন।
ছেলেটি তাদের অসম্ভব রকমের পরিপাটি করা ঘরের ভেতরে বসার রুমে আমাকে নিয়ে গেল।
বললাম, আপনার অন্যান্য ভাই বোনদের ডাকুন। আমার কিছু কথা আছে।
মহিলাটির সকল ছেলে মেয়ে ইতোমধ্যে বাসায় পৌছে গেছে, বুঝলাম। হাসাপাতালে সবাইকে দেখিনি। ছেলেদের দুইজনই খুব শান্ত হয়ে বসে আছে। তিন মেয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
বললাম, আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলতে এসেছি। আপনারা দয়া করে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সেদিন তো আপনি আপনার মাকে নিয়ে চেম্বারে গিয়েছিলেন, না?
যে ছেলেটি নিয়ে গিয়েছিল তিনি মাথা নাড়লেন।
আমি বললাম, সেদিন উনি দুইটা সমস্যার কথা বলেছিলেন মনে আছে? ঘাড় ব্যাথা আর মাথা ব্যাথা।
ছেলেটি আবারো মাথা নাড়লেন।
বললাম, আসলে তখন আমি কোন একটা কারনে ডিস্টার্বড ছিলাম। তাই মাথা ব্যাথাটাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেই নি। দিলে অবশ্যই আমি সিটি স্ক্যানটা করাতাম।
আমার সামনে বসে থাকা কেউ কোন কথা বলছে না।
যদি সিটি স্ক্যানটা করাতাম তবে হয়তো আমি বুঝতে পারতাম কী হয়েছে উনার। উনার অসুস্থতাটাকে হালকা করে দেখতাম না তখন।
কথাগুলো বললাম, ডান পায়ের বুড়ো আঙুলের দিকে তাকিয়ে। কারণ, আমি জানি এ সময়টাতে যদি কোন মানুষের চোখের দিকে আমি তাকাই তবে চোখ থেকে জল পড়া শুরু হবে। ব্যাপারটা খুব বিব্রতকর হয়ে যাবে।
পুরো ঘরে তখন থমথমে নিরবতা। হঠাৎ করে যেন পাশের রুম থেকে সুরেলা কন্ঠের কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ আমার কানে প্রবেশ করা বন্ধ করে দিল। সারাটা ঘর জুড়ে ভেসে বেড়ানো আগর বাতির গন্ধ আমার নাকে প্রবেশ করা বন্ধ করে দিল। আমি বলে চললাম,
আমাকে আপনারা ক্ষমা করুন। আমি পারলাম না আপনাদের মাকে বাঁচাতে। তিনি আমাকে হয়তোবা খুব ভাল ডাক্তার বলে ভেবেছিলেন। আমি নিজেও তাই জানতাম। কিন্তু উনার মৃত্যু আমাকে বুঝিয়ে দিল এখনও অনেক কিছু শেখার দরকার আছে আমার। আমাকে আপনারা যে কোন শাস্তি দিতে পারেন । আমি তা মাথা পেতে নেব।
আবার কিছুক্ষণ নিরবতা।
-মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। আমার মাও বোধহয় গুরুত্বটা ঘাড়ে ব্যাথাতেই দিয়েছিলেন। আর... আর তাছাড়া যা হবার তা তো হয়েই গেছে।
মেয়ে কণ্ঠের কথা শুনে তার দিকে তাকালাম। ইনি মনে হয় বড় মেয়ে। আমি কোন উত্তর দিলাম না। আবার আমার পায়ের বুড়ো আঙুলের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
-আপনি বসেন। জানাজা পড়ে যাবেন।
মায়ের সাথে যাওয়া ছেলেটি বলে উঠলেন। তারপর একে একে সকলে বের হয়ে গেলেন। আমি বসে থাকলাম। এখানে থাকতে দম বন্ধ লাগছে এখন। কিন্তু জানাজার নামায পড়ে যওয়াটাই সমীচিন মনে করছি।
জানাজার নামায পড়ে বাসায় পৌছে বিশ্রাম নিচ্ছি আর সেদিনকার ঘটনাটার কথা ভাবছি এমন সময় নুসরাতের কল।
-হ্যালো।
-হ্যালো। আমি নুসরাত।
-কী বলার তাড়াতাড়ি বলেন।
-আপনি কি বিরক্ত?
-আামার আসলে কিছু ভাল লাগছে না।
-কেন, কিছু হয়েছে?
-না। কিছু হয় নি।
-ও বুচ্ছি। আমাকে বলা যাবে না, তাইতো?
আমি কোন উত্তর দিলাম না।
-না বলতে চাইলে বলবেন না। সমস্যা নেই। কিন্তু আমাকে এটা তো বলেন আমার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নিলেন।
-নুসরাত।
-জ্বি বলেন, শুনতে পাচ্ছি।
-আমি আসলে আরেকটা মেয়েকে ভালবাসি।
-বাহ! ভালবাসেন ভাল কথা। তাহলে এরকম নাটক করছেন কেন?
-কিসের নাটক?
-এই যে আপনার বাবা-মাকে দিয়ে পাত্রী খুঁজে বেরাচ্ছেন। ওকে বিয়ে করলেই তো পারেন।
-ওকে বিয়ে করা যাবে না।
-কেন? কী হয়েছে তার?
-মেয়েটা অন্য ধর্মের।
-নামটা জানতে পারি?
-জয়ী। জয়ীতা গোস্বামী। আমাদের পাড়াতেই থাকে।
-মেয়েটা জানে?
-না বোধহয়। আমি কখনো বলি নি। তবে ও জানে বোধ হয়।
-বলেন নি যখন বলে ফেলেন। এখন তো ইন্টার-মেরেজ বিয়ে অনেক হচ্ছে।
-ও রাজী হবে না।
-তাহলে কী করবেন আপনি?
-জানি না।
-না জানলে হবে? ওর তো একসময় বিয়ে হয়ে যাবে।
-বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
-তাহলে তো হয়েছে! আপনি কি ডিসিশন নিলেন। ও বিয়ে করে ফেললেও আপনি বিয়ে করবেন না?
-না। আমি আসলে পারবো না। ছেলেবেলা থেকেই ওকে খুব পছন্দ আমার।
-দেখুন মি. আবীর। ছোট মুখে কিছু বড় কথা বলে ফেলি। আপনি যা করছেন তা রীতিমতো পাগলামি। আজকালকার ছেলেরা এমনটা করে না কখনো। জয়ী যদি তার নিজের জীবন সুন্দর করে লিড করতে পারে। আপনি করবেন না কেন? আপনার নিজের একটা জীবন আছে। আপনার বাবা-মা আছেন। আপানাকে নিয়ে তাদের সাধ-আহলাদ আছে। আপনি বিয়ে না করতে চাইলে তারা কষ্ট পাবেন। জয়ী না কী জানি বললেন নামটা। সে তো ঘুণাক্ষরেও আপনার কথা ভাবছে না। খোঁজ নিলে দেখবেন সে আপনাকে পছন্দই করে না।
-না। এ কথা বলবেন না। সে আমাকে পছন্দ করে।
-কিভাবে বুঝলেন? সে তো কিছু বলে নি, তাই না?
-না বললেও আমি বুঝি। তার যেকোন দরকারে সে আমার সাহায্য নেয়।
-সাহায্য! এটা সকল মেয়েই নেয়। খোঁজ নিয়ে দেখেন আরো কতো ছেলের সাহায্য সে নিচ্ছে।
-একবার আমি তার বাসায় আড্ডা দিচ্ছিলাম। আমি সে আর তার ভাই। আমরা চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে সে করল কী? সে আমি চায়ে চুমুক দিয়ে কাপটা টেবিলে রেখেছি। সে দুম করে আমার কাপটা হাতে নিয়ে তাতে চুমুক দিল। তার ভাই ব্যাপারটা খেয়াল না করলেও আমি করলাম। এটা কি ভালবাসা প্রকাশ না?
-দেখেন সে হয়তো ভুল করে কাজটা করেছিল। টেবিলে রাখা তিনটা কাপ হয়তো পাশাপাশি ছিল। আপনি কি ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছিলেন?
-না। আমার কাছে তো ভুল বলে মনে হয় নি।
-ভাল করেছিলেন । চুমুক দেয়ার পর ভুলটা ধরিয়ে দিলে হয়তো বমি করে বসতো।
-আরেকদিন ওর কাছ থেকে আনা একটা বইয়ের ভেতর একটা প্রেমের কবিতা পেয়েছিলাম।
-কে বলল, ওটা আপনার জন্য ছিল? হয়তো সে এমনিতেই কবিতাটা বই এর ভেতর রেখেছিল। আপনাকে বই দেয়ার সময় খেয়াল করে নি।
-আমি আর রাজ মানে জয়ীর ভাই যখন তাদের বাসায় বসে দাবা খেলতাম তখন সে পাশের রুমে বসে গান বাজাতো। খুব রোমান্টিক সব গান।
-আর আপনি ভাবতেন ওগুলো আপনাকে শুনানো হচ্ছে? আপনি যে এতো বোকা এটা জানতাম না। ঐ বয়সের মেয়েরা গান শুনলে রোমান্টিক গানই শুনে। আর পৃথিবীতে প্রেম বিষয়ক গান ছাড়া কয়টা গানই বা আছে শোনার মতো?
-ও না বাসুক। আমি তো তাকে অনেক ভালবাসি।
-তাহলে মন খারাপ করে বসে আছেন কেন?
-না। মন এজন্য খারাপ না। আজ একটা ভুল করে ফেলছি। একজন রোগীকে বাঁচাতে পারতাম। পারলাম না। আমারই দোষ।
-পারবেন কী করে? আপনার জয়ীর যে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আপনার কাছে তো জয়ীর গুরুত্ব সবার আগে।
-আসলে মহিলাটি যখন চেম্বারে এসেছিলেন তখন জয়ীর বিয়ের কথাই ভাবছিলাম।
-আচ্ছা এই যে আপনি কী বড় একটা ভুল করে ফেললেন, তাতে ওর কিছু যায় আসে? ও কি জানে? দেখেন গিয়ে ও ওর হবু হাসব্যান্ডের সাথে চুটিয়ে গল্প করছে।
-আপনি হয়তো ঠিক বলেছেন।
-তাহলে একটু বাস্তববাদী হোন। আমাকে বিয়ে না করুন। অন্য কাউকে করুন। আর আমার মধ্যেই বা কিছু কম আছে? জয়ী কি আমার থেকে অনেক সুন্দর?
-আপনি বুঝতে পারছেন না নুসরাত। প্রেমের শুরুতে সুন্দর অসুন্দর হয়তো মেটার করে। কিন্তু কারো সাথে একবার প্রেম হয়ে গেলে, তখন অন্য কারো সৌন্দর্য সেই প্রেমে বাঁধা দিতে পারে না।
-ও। ঠিক আছে। জয়ীর কথা ভাবতে ভাবতে আঙুল চোষতে থাকুন। আমি গেলাম। আল বিদা।
নুসরাত ফোন রেখে দিল। (চলবে...)
অন্য পর্বগুলো:
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি-১ম পর্ব
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি-২য় পর্ব
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি-৩য় পর্ব
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি- ৪র্থ পর্ব
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি- ৫ম পর্ব
কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি- ষষ্ঠ পর্ব
©somewhere in net ltd.