![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারক্ষণ নানা ঝক্কি ঝামেলায় থাকার কারণে গান শুনার জন্য গাড়িতে করে অফিসে যাওয়ার সময়টাকে বেছে নিয়েছি দীর্ঘদিন ধরে। আমার একটা পেনড্রাইভে র্যানডম ব্যাসিসে কিছু গান নিয়ে নিয়েছিলাম। গাড়িতে চড়তেই দীর্ঘদিনের পরিচিত ড্রাইভারটা গান চালিয়ে দেয় আর আমি গভীর মনোযোগে মাথা দোলাতে দোলাতে গান শুনতে শুনতে গন্তব্যে পৌছে যাই। সবকিছৃু ঠিকঠাক চলছিল। সমস্যা বাঁধল নতুন ড্রাইভার হিসেবে তাসিন মিয়াকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে। তাসিন মিয়াকে নিয়ে দুদিন অফিস যাবার পর খেয়াল হল আমার গাড়িতে আর গান বাজছে না। তাসিন মিয়া বয়েসে আমার থেকে ছোট হলেও খুব ধর্মভীরু মানুষ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। ভাবলাম, তাসিন মনে হয় গান পছন্দ করে না। বেশ ভাল মুশকিলে পড়া গেল! একদিন তাকে গান না বাজানোর কারণ জিজ্ঞেস করলাম. তুমি কি গান পছন্দ কর না? উত্তর শুনেতো আমার মাথা খারাপ অবস্থা, স্যার আপনি যে সব গান শুনেন সেগুলো আমার ভাল লাগে না।
মেজাজটা খুব গরম হলেও প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করলাম। এদ্দিন দেখে এসেছি ড্রাইভাররা সবসময় মালিকের ইচ্ছেমতো গান চালিয়ে থাকে। তাদের নিজেদেরও যে একটা পছন্দ থাকতে পারে এটা কখনো ভেবে দেখিনি। ব্যাপারটাতো ঠিকই। আমরা মালিকেরা কখনো ড্রাইভারদের সুবিধা-অসুবিধা, পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে ভাবি না। বিষয়টা বুঝার পর মেজাজ ঠান্ডা হল। তবু তাকে বললাম, শোন, তাসিন। তুমি এতোদিন প্রাইভেট গাড়ি চালাও না বলে জানো না যে মালিকদের রুচি মাফিক গাড়িতে গান চালাতে হয়। এখানে ড্রাইভারদের ইচ্ছে-অনিচ্ছের কোন মূল্য নেই। এখন থেকে তুমি গান চালাবে। আমি উঠলেই গান চালাতে হবে। আচ্ছা স্যার, বলে গান চালালো তাসিন। আমি গান শুনতে শুনতে ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।
এরপর শুরু হল আরেক সমস্যা। আমি দেখলাম, তাসিনের কোন অপছন্দের গান শুরু হলেই সে গানটি পাল্টে দিয়ে পরের গানে চলে যাচ্ছে। র্যানডমলি বাছাই বরে গান কপি করার কারণে পেনড্রাইভে রাখা সবগুলো গান কিন্তু আমার পছন্দের ছিল না। আমি লক্ষ্য করলাম, আমার যেসব গান অপছন্দের সেসব গানই তাসিনের পছন্দের। ধরা যাক, একটা খুব প্রিয় গান শুরু হয়েছে, আমি গুণগুণ করে গানটি অনুসরণ করছি। মাঝপথে হঠাৎ করে গানটি বন্ধ হয়ে গেল আর অন্য গানটি- যে গানটি কি না আমার অপছন্দের- শুরু হয়ে গেল। তাসিন একটু অন্য ধরণের মানুষ। মালিকের ইচ্ছা-অনিচ্ছা নিয়ে তার ওতো মাথা ব্যাথ্য নেই। আর আমিও গানের মতো একটা হালকা ব্যাপারে তাসিনকে আর কোন কথা শুনাতে চাচ্ছিলাম না। তাই ব্যাপরটা কয়েকদিন আমাকে খুব ভোগালো।
বিষয়টা নিয়ে অনেক ভাবতে ভাবতে অবশেষে একটা উপায় খুঁজে বের করলাম।
আমি পেনড্রাইভ থেকে সব গান মুছে নতুন করে অনেকগুলো গান ঢুকালাম। এবার কিন্তু খুব বেছে বেছে কেবল আমার প্রিয় গানগুলি কপি করলাম।
এখন বেশ আরামে আছি। কিছুক্ষণ পরপরই তাসিন গান পাল্টে দেয়। নতুন গানটাও খুব পছন্দের বলে আমার আর কোন সমস্যা হয় না। তাসিনও খুশি, আমিও খুশি!
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪০
কয়েস সামী বলেছেন: প্রথমবার যেগুলো কপি করা ছিল সেগুলো ছিল রেনডম ব্যাসিসে। সেগুলো তাসিনের পছন্তের ছিল না বলে সে গান চালাতো না। কিন্তু আমি যখন তাকে গান চালাতে বাধ্য করলাম, তখন সেখান থেকেই কিন্তু সে গান বাছাই করে নিয়েছিল। আমার যেগুলো অপছন্দের ছিল সেগুলো তার হয়তো পছন্ত হয়েছিল । গান শুনতে শুনতে তো একসময় অনেকগুলো ভাল লেগে যায়, তাই না? ব্যাপারটা হয়তো ওরকম কিছু ছিল। দ্বিতীয়বার সবগুলো গানই আমার পছন্দের ছিল। সেখান থেকেও হয়কো কিছু কিছু গান তার ভাল লেগে গিয়েছিল। এটা আসলে সত্যি ঘটছে এখন। কোন মিথ্যে কথা লিখিনি এখানে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৭
সুমন কর বলেছেন: সবারই নিজস্ব একটা পছন্দ থাকতে পারে।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪১
কয়েস সামী বলেছেন: সেটাই। অনেক ধন্যবাদ অনেক দিন পর আসার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
"আমি পেনড্রাইভ থেকে সব গান মুছে নতুন করে অনেকগুলো গান ঢুকালাম। এবার কিন্তু খুব বেছে বেছে কেবল আমার প্রিয় গানগুলি কপি করলাম। "
-কি ঘোড়ার ডিম লিখলেন? আপনার পছন্দের তো তাাসিন পছন্দ করার কথা নয়; ২ জনেই কি করে খুশী হলেন?