নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এখনও পড়াশুনা করছি। তার সাথে বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছি। বাবা মায়ের ছোট ছেলে। ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি।

কাল্পনিক আমি

আমি এখনও পড়াশুনা করছি। তার সাথে বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছি। বাবা মায়ের ছোট ছেলে। ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি।

কাল্পনিক আমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাপ

২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:০০

মুবারক হোসেন মীর এখন যে ঘরটায় বসে আছেন সেটা আর দশটা সাধারণ ঘরের মতই। সাদা রঙের চুনকাম করা দেয়াল। পূবের দেয়ালে একটা ক্যালেন্ডার। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১২। ২৩শে সেপ্টেম্বরের ঘরে লাল কালি দিয়ে বৃত্ত ভরাট করা। হয়তো বা কারোর জন্মদিন, কিংবা কারোর মৃত্যুবার্ষিকী। দিন রাত সমান হওয়ার দিন এজন্যও দাগ দিয়ে রাখতে পারে। ক্যালেন্ডারের বাম পাশেই একটা দেয়াল ঘড়ি। টিক টিক শব্দ করে সময় দিচ্ছে ঘড়িটা। ছয়ের কাটা-বারোর কাটা লম্বালম্বি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দক্ষিন পাশে একটা বড়-সর জানালা আছে। কিন্তু জানালাটা বন্ধ। এসি রুমে জানালা খোলার মানে হয় না, তাই বন্ধ। উত্তর পাশে একটা স্ট্যান্ডের মতন কিছু একটা রাখা। একটা অ্যাপ্রণ রাখা আছে। স্ট্যান্ডের ডান পাশে ছোটখাটো একটা বুক শেলফ। গোটা পঞ্চাশেক বই আছে বলে ধারণা হচ্ছে। ঘরের পশ্চিম পাশে একটা টেবিলের মতন, আর টেবিলের এক পাশে আছেন মুবারক হোসেন মীর ও তাঁর মুখোমুখি আরেক পাশে আছেন ডাঃ মুশফিকুর রহমান। কিন্তু এতক্ষণ তিনি যা কিছুই দেখলেন তার সবই তিনি দেখলেন উল্টো দৃষ্টিতে।

মুবারক হোসেন মীরের কাছে কিছুটা সঙ্কোচ বোধ হচ্ছে। অতি উচ্চশ্রেণীর সমাজের লোকদের সামনে তিনি কেন যেনো খুব অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন; কথা জড়িয়ে আসে। মুখ ভারী হয়ে যায়, তেষ্টা পায় খুব। তাই বলে তিনি যে গরীব তা না। আল্লাহ-তায়ালার অশেষ হেদায়েত তাঁর সম্পত্তির উপরে পড়েছে। পড়েছে বললে ভুল হবে তিনি নিজে আল্লাহর হেদায়েত তাঁর কাছে নিয়ে এসেছেন। গ্রামের হাই-স্কুলের হেড-মাষ্টার হয়ে রিটায়ার্ট করলেও ঢাকা শহরেই তাঁর দুইটা বাড়ি আছে। একটা পাঁচতলা, আরেকটা দোতলা। দোতলারটা ডুপ্লেক্স।

তাঁর বয়স ষাটের উপরে। আধাকপালী মাথার চুল সাদা হয়ে এলেও দাড়ি-গোফ এখনো কাঁচা-পাকা। চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা। সব সময় তিনি কাঁধে ভেজা গামছা পেচিয়ে রাখেন। গামছার রঙ সবুজের মাঝে সাদা ব্লক করা। সবুজ রঙের গামছা নাকি সূর্যের আলো শোষণ করে বেশি, আর গামছা ভিজিয়ে রাখেন, এই ভেজা গামছা নাকি কাধের জন্য খুবই উপকারী।

ডাঃ মুশফিকের কাছে তিনি এসেছেন নেহায়েত বিপদে পড়েই। হাই-স্কুলের চাকরীর রিটায়ার্টের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন পার্টনারশীপ ব্যবসার জন্য। পার্টনারকে সাইজ মতন দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে ব্যবসার পুরো অংশীদারিত্ব তিনি খুব দক্ষভাবেই নিতে পেরেছেন। মানুষের এমন অবস্থা তাঁর কাছে ডালভাত।

ঢাকায় তিনি থাকেন তাঁর নিজের দোতলা ডুপ্লেক্স বাড়িটায়। এ বাড়িটা তিনি বানিয়েছেন উত্তরার ১৩ নাম্বার সেক্টরের শেষ মাথায়। উত্তরার এ জায়গাটায় প্রায় গ্রামের মতনই। রাস্তাঘাট এখনো মাটির। আশে-পাশে মাটির ঘর এখনো আছে। সবগুলো মাটির ঘরের পাশে একটা বিশাল দোতলা ডুপ্লেক্স বাসাকে দেখতে কেমন যেনো প্রাচীন কালের রাজপ্রাসাদের মতই লাগে। তার মাঝে তিনি আবার বাড়ির সামনে একটা পুকুরের মতন জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন। সেখানে ঘাট বাঁধানো। রোজ সকালে তিনি এ ঘাটে এসে বসে থাকেন। এলাকার ছেলে-পেলেরা তাকে দেখলেই সবাই ঘাট থেকে চলে যায়। কারণ একবার তিনি চান না তাঁর এই কষ্টার্জিত সম্পত্তিতে কেউ বিনা পরিশ্রমে ভোগ করুক।

ঘাটলার পাশে বসে থাকতে গিয়েই তিনি একদিন আবিষ্কার করলেন যে তিনি সবকিছু উল্টো দেখছেন। ঘাটের দক্ষিণ পাশে একটা তালগাছ আছে। ঘাটের পানিতে তার প্রতিবিম্ব তাঁর কাছে উল্টো লাগেনি, লেগেছে সোজা। অথচ লাগার কথা উল্টো। তিনি কয়েকবার চোখ ঘষলেন, তারপর আবার তাকালেন, নাহ ঠিকই আছে, তিনি গাছের প্রতিবিম্ব সোজাই দেখছেন। এরপর তিনি পাশের রাস্তার দিকে তাকালেন, তাঁর কাছে মনে হচ্ছে রাস্তার মাঝ দিকটা ঠিক আছে, কিন্তু আশেপাশের সবকিছুই যেনো উলটে গেছে। এরপর তিনি তাঁর হাতের ঘড়ির দিকে তাকালেন। ঘড়ি দেখার পর তাঁর মাথা ঘুরতে লাগলো, বমি বমি ভাবও আসলো। তিনি অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করতে লাগলেন। একসময় তিনি মূর্ছাও গেলেন।

মূর্ছা যাওয়ার পর সবাই তাকে ধরাধরি করে ঘরে নিয়ে এসেছিলো। ডাক্তার ডাকা হয়েছিলো। প্রেশারের কয়েকটা ওষুধ আর ঘুমের ট্যাবলেট দিয়ে রেস্টে থাকতে বলেছিলেন। এরপর কয়েকদিন ঠিকঠাক মতোই চলছিলেন। তারপর হঠাৎ একদিন বাথরুমে গিয়ে শেভ করতে গেছেন, মুখে সাবান লাগানোর পর কি যেনো মনে করে আয়নার দিকে তাকালেন। দেখলেন আয়নায় তিনি উল্টো হয়ে ঝুলে থাকার মতন অবস্থায় আছেন। আশেপাশের সবকিছুও উল্টে গেছে। আবারো তিনি চিৎকার করে মূর্ছা গেলেন। আবারো ডাক্তার আসলো, আবারো ওষুধ, আবারো রেস্ট।

একসময় তাঁর ডাক্তার তাকে বললেন, তাঁর এই রোগ কোন শারীরিক রোগ না। এটা মানসিক রোগ। তিনি এই কথায় খুব বিরক্ত হয়েছিলেন। এই ডাক্তার নতুন ডাক্তার। কোন কাজে নতুনদের সেরকম গুরুত্বের সাথে দেখা হয় না, তাই মুবারক হোসেন মীর’ও তাঁর আগের ডাক্তারের কথাকে তেমন গুরুত্ব দেননি। অথচ এই কথা বলার আগে ডাক্তারের সব কথাই তিনি মান্য করেছেন। নিজেকে পাগল বলে কেউ তকমা দিলে সেটা সহ্য করা যায় না। মুবারক হোসেন মীর এটা খুব ভালো করেই জানেন। তাই অবজ্ঞা করে বলেছিলেন, “তুমি মিয়া চ্যাংড়া পোলা, তুমি ডাক্তারীর বুঝোডা কি?” ডাক্তার অবশ্য মনে তেমন কিছু করেনি। আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া লোকদের কথাকে তেমন পাত্তা দিতে হয় না, এদের অর্থ বাড়ে, মন বাড়ে না।

মুবারক হোসেন মীরের সেই চ্যাংড়া ডাক্তারের পরামর্শেই তিনি ডাঃ মুশফিকুরের কাছে এসেছেন। ডাঃ মুশফিক লোকটা বেশ অভিজ্ঞ মনে হচ্ছে। আবার না’ও হতে পারে। মুবারক হোসেন মীরের ধারণা এরকম বয়স্ক ডাক্তাররা সবসময় এমন একটা ভাব ধরে থাকে, যেনো সবাই মনে করে তারা খুব অভিজ্ঞ। আসলে ভিতরে ফাও এর ফাও কিচ্ছুই নাই।

ডাঃ মুশফিকুর মুবারক হোসেন মীরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

-কবে থেকে এই সমস্যা?



-জ্বে স্যার প্রায় দুই বছর হইলো।



-সব সময়ই কি হয়?



-জ্বে না। মাঝে মইদ্দে হয়।



-কোন দুশ্চিন্তা কি করেন সব সময়?



-মাইনষের জগৎটাই তো দুচ্চিন্তার। দুচ্চিন্তা না কইর‍্যা থাহি কেমতে?



ডাঃ মুশফিকের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। এসব অর্ধশিক্ষিত ধনীরা আধ্ম্যাতিক টাইপের কথা-বার্তা বলে নিজেদের জ্ঞান জাহির করতে সবসময় চেষ্টা করে। এটা তাঁর পছন্দ না। তারপরেও তিনি রোগীকে বুঝবার জন্য প্রশ্ন করে গেলেন,



-আপনি কি কেবল আয়না, পানি এসবের মাঝেই আপনার প্রতিবিম্ব দেখার পরে সবকিছু উল্টো দেখতে পান, নাকি এমনিতেই হঠাৎ করে সব কিছু উল্টো দেখতে পান?



-জ্বে স্যার। এই জন্যি মাঝে-মইদ্দে চউক্ষু বন্ধ কইরা হইলেও গেলাসে পানি খায়া ফেলি। যদি আবার ব্যাবাগ উল্ডা দেহি। এমনও গেছে, ব্যাবাগ উল্ডা দেহার লেইগ্যা নিজেই উল্ডায়া থাকতাম, মাথা ঘুরাইতো, গু আয়া পড়তো, নাক দিয়া হিঙ্গেল পড়তো। এরপ থিকা আর উল্ডায়া থাকবার পারি না।



এটুকু শোনার পর ডাঃ মুশফিকুর কতক্ষণ থামলেন। তারপর প্রেসক্রিপশনে লিখতে লিখতে বললেন,



-আমার যতদূর মনে হয়, আপনার অতীতে এমন কোন অভিজ্ঞতা আছে, যেটার কারনে আপনার ব্রেণ আপনাকে সেই অতীত সময়ের স্মৃতিগুলো স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য এরকম একটা স্টেজ সাজায়। আছে কি আপনার এমন কোন অতীত স্মৃতি?



-জ্বে না। তয় যুইদ্দের সময় অনেকরে উল্ডায়া মরবার দেখছিলাম।



-কোন যুদ্ধ?



-ক্যা রে, স্বাধীন যুইদ্দে।



-আপনার গ্রাম যেনো কোন জায়গায় বললেন?



-জ্বে আমি জামালপুরের কুলকান্দি গেরামে আছিলাম।



-আপনার নামটা যেনো কি বললেন?



-জ্বে মুবারক হোসেন মীর।



ডাঃ মুশফিকুর রহমানের চোখ সরু হয়ে এলো। তিনি চোখ পিটপিট করেই কয়েকবার মুবারক হোসেন মীরের দিকে তাকালেন। এতক্ষণ সেভাবে নজর দিয়ে তাকাননি লোকটার দিকে। লোকটাকে চেনা চেনা লাগছে। মাথার চুলে পড়ে গেছে, পেকেও গেছে। মুখের চামড়া বয়সের কারণে ঝুলে গেছে। নাহ চিনতে খুব একটা কষ্ট আর হচ্ছে না। সেই মীর। রাজাকার মীর। ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর পাড়ে ৭ই নভেম্বর ৯জন গেরিলা যোদ্ধাদের বটতলায় গাছের ডালে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছিলো। চারপাশ থেকে মিলিটারীদের ঘেরাও। মেজরের পাশে দাঁড়িয়ে মীর মুচকি হাসছিলো। ডাঃ মুশফিক তখন ১২ বছরের কিশোর, ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে সব দেখছিলেন। সাতদিন গেরিলাদের লাশ ঝুলে রয়েছিলো। আশেপাশে কেউ যেতে পারেনি ভয়ে। দুর্ভাগ্যবশত তার চাচাও সেখানে ছিলো। ডাঃ মুশফিকের পুরো ঘটনাটা চোখের সামনে মনে পড়লো। এই সেই মীর যে কি না জামালপুরের জল্লাদ নামে পরিচিত ছিলো। হিন্দুদের ঘরবাড়ি লুটপাট, মেয়েদের ধর্ষণ, যুবকদের ধরে ধরে খুন করার মাঝে যার নেশা ধরে গিয়েছিলো। শুনেছিলো তার নাকি যুদ্ধাপরাধের নামে মামলা হয়েছিলো। সেখানে যাবজ্জীবন রায় পেয়েছিলো। পরে টাকা দিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়েও এসেছিলো।

কিন্তু এর সাথে তার উল্টে যাওয়া সবকিছু দেখার সম্পর্কটা কোন জায়গায়? ব্রেনের নিউরণগুলো এরকম আচরণ করতে পারে দৃষ্টি বিভ্রম হতে পারে, তাই বলে তো একধারে প্রতিদিনই এই বিভ্রম হতে পারে না। ডাঃ মুশফিকুর তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন,



-মীর সাহেব, আপনার চিকিৎসা আমি করতে পারবো না। দুঃখিত।



-কেন স্যার?



-দুঃখিত, আমি পারবো না, আমাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন না।



-থাক, আপনেরে আর ত্যাক্ত করতাম না। জীবনে ম্যালা পাপ করছিলাম, হ্যাডার শাস্তি পাইয়াই বাকী জীবন কাডাইতাম হইবো।



-কি কি পাপ করেছেন জীবনে?





-কত্ত করছি, একডা দুইডা কউন যায়। এই যে আজকে ট্যেকা পয়সা হইছে, এরার এগডাও আমার না। আমার বন্সীর। হ্যারে জায়গা মতন সরায় দিয়া, বউ পোলাপানগোরে বুঝ দিয়া এহন আমিই সব লইয়া লইছি। মায়া লইয়া লডর-পডর তো আছেই।



-আর?



-আরো আছে, কউন যাবো না।



-উল্টা করে মানুষকে ঝুলিয়ে রাখতেন না?



মুবারক হোসেন মীর ডাঃ মুশফিকের দিকে অপলক তাকিয়ে আছেন। তিনি উল্টা করে মানুষকে ঝুলিয়ে রাখতেন এই খবর এই লোক জানে কিভাবে? আমতা আমতা করে তিনি বললেন,



-আপনে জানলেন ক্যামতে?



-জানি না এমনি বললাম। ধারণা। আচ্ছা ঠিক আছে, আজ আসুন। ঘুমের ওষুধ কিছু লিখে দিচ্ছি, খেয়ে নিবেন।



-আইচ্ছ্যা স্যার। আহি। পাপের প্রায়চ্চিত করুন লাগব। শাস্তি না পাইলে চইলতো না। কপালের লিহন।



চেম্বার থেকে বের হতে হতে তাঁর সন্ধ্যা বেজে গেলো। মুবারক হোসেন মীর তাঁর গাড়িতে উঠতে যাবেন। গাড়ির কোন দরজা দিয়ে তিনি ঢুকবেন তা ঠিক বুঝতে পারছেন না। গাড়ি উল্টিয়ে আছে। শুধু গাড়িই না সবকিছুই তার কাছে উল্টো লাগছে। হঠাৎ তিনি দেখলেন এই সন্ধ্যাতেই শহরের সব কোলাহল ভিড়িয়ে তিনি চলে এসেছেন গ্রাম্য এক পরিবেশে। সবকিছুকেই কেমন যেনো অপার্থিব লাগছে। মনে হচ্ছে তিনি এখন যে জায়গায় এসেছেন, তার সবকিছুর জন্ম এই জগতে না। অন্য কোন জগত থেকে এগুলো এসেছে। সবকিছুই উল্টো। বাঁশবাগান, মেঠো রাস্তা, বট গাছটা, তার ধারে আম গাছটা সবই উল্টো। শত শত মানুষের লাশ উল্টে ঝুলে আছে। সেই সাথে অনেক মেয়ে লোকের আহাজারির শব্দ।

মুবারক হোসেন মীরের মাথায় যন্ত্রণা করতে লাগলো। অসহ্য যন্ত্রণায় তিনি আহাজারি করে যাচ্ছেন। শত শত মেয়েলোকের আহাজারিতর যন্ত্রণার শব্দ কারোর কানে যাচ্ছে না। তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। খোলা আকাশের বুক জুড়ে আকাশ ফাটা জোছনা নেমেছে। চাঁদের আলো উল্টে যায়নি, আকাশ উল্টে যায়নি। অসম্ভব রকমের মায়া হচ্ছে তাঁর পৃথিবীর জন্য।



এতক্ষনে তাঁকে ঘিরে ফুটপাথের পাশে হৈ-চৈ বেঁধে গিয়েছে। ড্রাইভার তাঁর হাত ধরে ঝাকাচ্ছে। অথচ সবকিছুকে উপেক্ষা করে আকাশের দিকে মোহিত হয়ে তিনি আস্তে আস্তে উড়ে উপরে চলে যাচ্ছেন। তাঁর নিথর দেহ পড়ে আছে। কিন্তু কেউ সেটা বুঝতে পারছে না। এখন তিনিই শুধু উল্টে আছেন, আশেপাশের সব রক্তাক্ত দেহগুলো কিভাবে যেন সোজা হয়ে গিয়েছে।



আবারো একটা হরেক মাল ১০টাকার গল্প নিয়ে হাজির হলাম। হরেক মাল ১০ টাকার গল্প কোন উচ্চমার্গীয় পাঠকদের জন্য না। দামী লেখার ভিরে সস্তা পাঠকদের জন্য সস্তা গল্প নিয়ে হাজির হই। হরেক স্বাদের সস্তা গল্প নিয়েই কারবার। ভৌতিক গল্প লিখতে চেয়েছিলাম, পেরেছি বলে মনে হয় না। আসলে কোন লক্ষ্য নিয়ে লিখতে পারি না। চেয়েছিলাম মজা করে গল্পটা লিখবো। কিন্তু পারলাম না। হরেক মাল ১০টাকার গল্পের লেখকদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। আমি এর উর্ধ্বে নই। তাই ভুল ক্রুটি থাকলে যৌক্তিকভাবে সমাধান করে ধরিয়ে দিয়ে সাহায্য করলেই কৃতজ্ঞ থাকবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.