নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এখনও পড়াশুনা করছি। তার সাথে বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছি। বাবা মায়ের ছোট ছেলে। ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি।

কাল্পনিক আমি

আমি এখনও পড়াশুনা করছি। তার সাথে বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছি। বাবা মায়ের ছোট ছেলে। ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি।

কাল্পনিক আমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরীক্ষার পূর্বরাত্রি

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৬

সকালে ঘুম ভেঙ্গেছে ভাগ্নির ফোনে " মামা, আজ আমার পরীক্ষা,দোয়া করবেন"। আমি দোয়া করে দেই ভাগ্নিকে" আল্লার হাওলা, ভাল করে পরীক্ষা দিস"

......

এরপর একই রকম আরও কয়েকটি ফোনকল, আমার ও একই রকম দোয়া।

...............

এদের কেউ যদি ঘুনাক্ষরেও জানত যে ... আমার দোয়াটা ছাদের সাথে বাড়ি খেয়ে নিচেই পড়ে থাকে, উপরওয়ালা পর্যন্ত পৌছায় না। তবে এরা কোনদিন ই আমার কাছে আর দোয়া চাইতে আসত না।


যাই হোক, খাকনা দোয়াগুলা ছাদের সাথে বাড়ি। বাড়ি খাইতে খাইতে ছাদ ফুটো হয়ে একদিন ঠিকই জায়গামত চলে যাবে।


পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমাহীন দোয়া...।


আজ ওদের দোয়া চাওয়ার মুহূর্তগুলোতে একটু নস্টালজিক হয়ে গেলাম। আমার পরীক্ষা দেয়ার সময়টাতেও আমি এমনি করে করে দোয়া চেয়েছি। মোবাইল ফোনের প্রচলন ছিলনা, তাই দোয়া চেয়েছি বাড়ি বাড়ি গিয়ে।


মনে আছে, পরিক্ষার দুদিন আগে নানুবাড়ি আর খালা বাড়ি চলে জেতাম মামা খালাদের কাছে দোয়া চাইতে। উনাদের পায়ে ধরে সালাম করে হাতের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এক সময় মামা খালারা হাতের মধ্যে সালামি দিয়ে দোয়া করে দিতেন। পরিক্ষার পর কিংবা পরিক্ষার মাঝেই টাকাগুলো গুনে দেখতাম। মোটামুটি ভাল রকমের একটা এমাউন্ট জমা হত। তারপর সে টাকায় দুনিয়ার সপ্নবোনা।


এখনকার পরীক্ষার্থীরা এমন ঢের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে সময়ের কারনে।ভয়ভয় মন নিয়ে এমন একটি পরীক্ষা দেয়ার ভেতরেও যে একটা সীমাহীন আনন্দ আছে ওরা হয়ত সেটা টেরই পায়নি কোনদিন। পরিক্ষার হলে জাওয়ার জন্য কাপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখা,নতুন কলম কিনে জ্যামিতি বক্সের ভেতর সাজিয়ে রাখা, হলে গিয়ে দুরুদুরু বুকে সিট খোঁজা কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবর শুনে হাতে কাপুনি ধরার ব্যাপারগুলো এখনকার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূত হয় কিনা আমার জানা নেই।


পরীক্ষায় নকল প্রথা বেশ পুরনো, পরীক্ষা পদ্দতির আধুনিকায়নের কারনে সেটি এখন বিলুপ্ত প্রায়। তবে সেই নকল করা নিয়েও আমাদের সময়ে দারুন কিছু ঘটনা ঘটত। পরীক্ষার হলে ঢোকার পর পরীক্ষার্থীদের হিসু করতে বাইরে যাওয়ার প্রবনতা দেখে পরিক্ষক রীতিমত আঁতকে উঠতেন। দেখা যেত কোন পরীক্ষার্থী খাতায় কিছু লিখতে না পেরে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে মুখে কলম দিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষন পর সে বাথরুমে যাওয়ার অনুমতি পেল, হাসি হাসি মুখ নিয়ে ফিরে এসে সে পরীক্ষার্থী একটানা লিখে পরীক্ষা শেষ করে ফেলল।


এ তো গেল পরীক্ষার সময়ে বাথরুমের কার্যকর পদ্দতি। সে নিয়ে একটি মজার ঘটনা মনে পড়েছে......


মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছি বিজ্ঞান বিষয়ের। একই সময়ে আমি আর রনি গেলাম বাথরুমে। হল নিয়ন্ত্রক হুট করেই হাজির হলেন বাথরুমের সামনে। ছেলেরা সব তখন দৌড়ের উপর। রনি তার প্যান্টের চেইন লাগাতে গিয়ে নকলের অর্ধেকটা বাইরে রেখে দিয়েছে (আন্ডারওয়্যার এর ভিতর নকল রাখে)। চেইনের ফাঁক দিয়ে বের হওয়া নকলের অর্ধেক ধরে হল নিয়ন্ত্রক রনিকে আকাশ ফাটিয়ে দিলেন চড়। রনি চিত খেয়ে পড়ে গেল। উঠার সময় বোঝা গেল, রনি বাথরুমে এলেও বাথরুমের আসল কাজটি তখনো সারেনি। :D :D

............

ছোটবেলায় পড়া “ রিডিং ফর প্লেজার”বাক্যটা একরকম বইতেই থেকে গেছে। বাক্যটা এখন অনেকটাই “ রিডিং ফর পাশ” অথবা “ রিডিং ফর জব” এ সীমাবদ্ধ। এখনকার পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই এখন পরিক্ষার আগের রাতে বই ঘাঁটাঘাঁটির চেয়ে ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করে বেশি। যদি তাতে প্রশ্নপত্রের কোন কপি মেলে????


আমাদের সময়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে রচনা অংশে প্রায়শই একটা রচনা কমন পড়ে যেত। সেটি হল “পরীক্ষার পূর্বরাত্রি”। আমাদের জন্য সেই রচনা লিখা খুব একটা কঠিন হতনা। জা করতাম তাই লিখে দিতাম।


এখনকার পরীক্ষার্থীদের যদি একই রচনা লিখতে বলা হয়, আর তারা যদি তাতে সত্যি সত্যি জা করেছে তাই লিখে দেয়... তাহলে কি দাঁড়াবে??? ভাবতে পারেন?????

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.