![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এখনও পড়াশুনা করছি। তার সাথে বেশ কিছু দিন ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছি। বাবা মায়ের ছোট ছেলে। ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করতে বেশ পছন্দ করি।
আজকে প্রথমে উদাহরন দিয়ে শুরু করিঃ
হতে পারে এক-অদ্বিতীয় ঈশ্বর সত্যিই আছেন এবং তিনি সচেতন তাঁর সৃষ্টির ব্যাপারে। সময়ে সময়ে তিনি তাঁর সৃষ্টিকে ‘সঠিক পথে’ পরিচালনা করার ‘চেষ্টা’ করেন। তিনি হয়ত একাই তা করেন অথবা এই পরিচালনা করতে তার হয়ত ফেরেশতা, নবী, উপদেবতা কিংবা অবতারের সহায়তা নিতে হয়।
হতে পারে, এই এক-অদ্বিতীয় ঈশ্বর আছেন এবং সৃষ্টির ব্যাপারে সচেতন ও দেখছেন সবকিছু কিন্তু তাতে নাক গলাতে পছন্দ করেন না মোটেই।
এমনকি এও হতে পারে, এই এক-অদ্বিতীয় ঈশ্বর আছেন কিন্ত তিনি উদাসীন তাঁর সৃষ্টির ব্যাপারে। সৃষ্টি করাতেই তাঁর আনন্দ, এরপরে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই। তাঁর মত বিশাল সত্ত্বা এই ক্ষুদ্র সৃষ্টিকে নিয়ে সময় নষ্ট করতে পছন্দ করেন না।
হতে পারে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর একজন নন, দুইজন। জাপানিজ মিথলোজির সেই ‘ইন-ইয়াং’ এর মত। একজন ভালোকে প্রতিনিধিত্ব করে আর একজন খারাপকে। একজন আলো, একজন অন্ধকার। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড়া স্বয়ংসম্পূর্ণ নন, দুইয়ে মিলে দ্বন্দ্ব চলছে সেই আবহমান কাল থেকে। সেই কারণেই কখনো অন্ধকার জেতে আর কখনও আলো। এ কারণেই হয়ত প্রকৃতিতে শৃঙ্খলার পাশাপাশি এত বিশৃঙ্খলা, এনট্রপির বৃদ্ধি। আনন্দের পাশাপাশি এত দুঃখ। বিজ্ঞানও নিজেও কিন্তু আজকাল এমন কিছুই বলছে, পজেটীভ-নেগেটিভ এনার্জি, ম্যাটার-এন্টিম্যাটার এইসব।
ইসলাম সহ বাকি আব্রাহামিক ধর্মগুলোতে প্রায় কাছাকাছি কনসেপ্ট আমরা পাই, ঈশ্বর আর শয়তান। যদিও এ ধর্মগুলোতে ধরে নেয়া হয়েছে শয়তান নিজেও ঈশ্বরের সৃষ্টি এবং সবশেষে ঈশ্বরই জিতবেন।
এমনও হতে পারে, ঈশ্বর আসলে একাধিক। সেই একাধিক ঈশ্বরেরা আবার সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতন হতেও পারেন নাও পারেন। যদি সচেতন হন সেক্ষেত্রে কিন্তু হতে পারে আরও বিভাজন। হয় তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাভুটি করে দুনিয়াটা চালাচ্ছেন, অথবা তাদের মাঝেও চলে একনায়কতন্ত্র। বিভিন্ন মিথলোজিতে ওডিন, জিউস সহ আরও অনেক একনায়ক কিন্তু আমরা পেয়েছি।। সন্দেহবাদীরা বলবেন, এমন হলে তো তাদের মাঝে মতের অমিল হবে, ঝগড়া হবে, সৃষ্টির ভাগ্য হবে বিপন্ন। হয়ত কথাটা ঠিকও। তাদের মাঝে মতের অমিল হয় বলেই হয়ত এসব ভূমিকম্প, সুনামি আমরা দেখি।
অথবা এমন হতে পারে, প্রকৃতি নিজেই ঈশ্বর। আবার এই প্রকৃতি রূপী ঈশ্বর হতে পারেন চিরকালীন ধরে অবস্থান করা কোনও সচেতন সত্ত্বা অথবা মস্তিষ্ক না থাকা অসচেতন সত্ত্বা। হতে পারে প্রকৃতির কোনও স্রষ্টা নেই, সে নিজেই আদি থেকে অন্ততে ছিলো-আছে-থাকবে।
আমরা হয়ত, সৃষ্টির সৃষ্টি। স্রষ্টা হয়ত এমন একদল প্রাণী তৈরি করেছিলেন বহুকাল আগে। সেই মহাজাগতিক প্রাণীগুলো বিবর্তিত হতে হতে প্রচন্ড বুদ্ধিমান হয়ে এক পর্যায়ে এসে তৈরি করেছে আমাদেরকে। আমরা আসলে গবেষণার বস্তু, ল্যাব-র্যাট, গিনিপিগ। তারা আসলে আমাদের মাধ্যমে বুঝতে চায় তাদেরকে সৃষ্টির মূল রহস্য। এবং এই প্রাণীগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, অথবা শুধু পর্যবেক্ষণ করে যেতে পারে।
আমরা হতে পারি, এক বা একাধিক ঈশ্বরের স্বপ্নে ভিতরে বিচরণ করা প্রাণী, ঘুম ভেঙ্গে গেলেই কেয়ামত নামবে। অথবা হতে পারি, সেই ম্যাট্রিক্স সিনেমাটার মত কম্পিউটার সিমুলেশন।
উদাহরণ বাড়িয়ে পাঠককে আর বিরক্ত করতে চাচ্ছিনা। বিরুদ্ধবাদীরা হয়ত বলবেন কিসব গাঁজাখুরি লিখছি। কিন্তু সত্যিটা এইটাই। ঈশ্বর যদি থেকেও থাকেন তবে এই অনুমানগুলোর যে কোনটাই হতে পারেন। অথবা তিনি এমন কিছু যা আমাদের অনুমানের বাইরে।
পৃথিবীতে চার হাজারের উপর ধর্ম রয়েছে, অর্থাৎ ঈশ্বরের ব্যাপারে চার হাজার কাছাকাছি মডেল আমদের হাতে রয়েছে। এর মাঝে কোনটা সঠিক কে জানে? সবাই নিজ নিজ পরিবারে প্রচলিত ধর্মকেই গ্রহণ করে ভাবে যে সে সত্যিকারের ঈশ্বরের উপাসনা করছে, বাকি ধর্মগুলো সব ভন্ডদের কারবার, যত্তসব বুজরুকি। কিন্তু না জেনেশুনে এইভাবে গ্রহণ-বর্জন বিজ্ঞানমনস্কতা নয়। ঈশ্বরের এত রকম হাইপোথিসিস থেকে যারা কোনও প্রকার প্রমাণ ব্যতীত এক-অদ্বিতীয়-সচেতন ঈশ্বর মডেলকে সত্য বলে মানছেন ও যত্রতত্র প্রচার করছেন তারা সকলেই অন্তত এই ব্যাপারে অন্ধবিশ্বাসী।
©somewhere in net ltd.