![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের জীবনতো তীব্র স্রোতেভেসে চলা কচুরি পানার ন্যায়ক্ষনিকের দেখা আর পরিচয়,আবার স্রোতেই ভেসে চলে যেতে হয়।তবুওতা কখনো ভোলা যায়না।।
পাখির মত পাখা মেলে আকাশে উড়ে বেড়াতে কার না মনে চায়।
কে জানে হয়তো বা কারোর মনে চায় না। এইরকম গাজাখোরি ইচ্ছাটা শুধু আমার মনেই জাগে।
মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখতাম,আমি বড় একটা গাছ বেয়ে তার আগায় উঠে তারপর দুই হাত মেলে দিয়ে বেশ খানিকটা দুর উড়ে যেতে পারি। স্বপ্নের মধ্যে উড়ে উড়ে পদ্মানদী কমছেকম ১০বার পাড়ি দিয়েছি।
একবার দেখিকি, একগাছ থেকে উড়ে অন্য গাছে গিয়ে দেখি গাছের ডালে একটি পাখির বাসা। বাসার মধ্যে ৪/৫টা ডিম। ডিমগুলো একটি বেজি গজগজ করে খাচ্ছে। আমি করলাম কি আচমকা বেজিটাকে ধরে ক্যাচ করে কামড় দিয়ে মাথাটা কেটে ফেলে দিয়ে বাকি অংশটা ক্যচক্যচ করে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে লাগলাম। সেবার ঘুম থেকে উঠে এক সপ্তাহের মধ্যে শান্তিমত ভাত খেতে পারি নাই। ওয়াক থু থু। খেতে বসলেই শুধু বেজি খাওয়ার কথা মনে হত। এরকম আরও অনেক গাজাখুরি স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু সেদিন যা দেখলাম তা গাজাখোর কেও হার মানায়। পুরাই হিরোনখোরী গল্প।
আমি চাদে গিয়েছি। সঙ্গী দুজন। একজন আমেরিকান যার নাম এম থামা আরেকজন ইন্ডিয়ান যার নাম তুরুস আর আমার নাম যে কি ছিল তা মনে নেই।
ইদানিং কি কারনে যেন চাদের বুকটা কালো হয়ে যাওয়ার কারনে রাতের বেলা পৃথিবীতে আমরা যে চাদের আলো পাই তা আগের তুলনায় খুবই অনুজ্জল। আর এ কারনে আমেরিকার একদল গবেষক পরীক্ষা করে বের করেছে চাদের গায়ে বিশেষভাবে তৈরী করা একটি সোয়েটার পরাতে পারলে পৃথিবীতে আরও উজ্জল আলো পাওয়া যাবে। জোস্নাভরা রাতগুলো পৃথিবীর যেকোনো শহরের বুক থেকেও উপভোগ করা যাবে। আর এই কাজটির দ্বায়িত্ব পড়েছে এম থামার উপরে। আর ভিজিটর হিসেবে লটারির মাধ্যমে সারা পৃথিবী থেকে একজন ছেলে এবং একজন মেয়েকে বাছাই করা হয়েছে। পুরুষটি যে আমি আর মেয়েটা তুরুস এটা নিশ্চয় আপনারা বুঝতে পারছেন।
আচ্ছা ভূমিকা থাক এবার আসুন আমরা ওখানে গিয়ে কি কি করলাম তা শোনাই। মিস্টার থামা ভাই তার কাজে ব্যস্ত। তুরুস আর আমি পুরো চাদের বুকটা চষে বেড়াচ্ছি। আমাদের পিঠের সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার বাধা। মুখ ও আটকানো তাই কথা বলার সিস্টেম নাই। মনের ভাব আদান প্রদান করতে হচ্ছে কাগজে লিখে লিখে। ইচ্ছে মত হাটতে পারছি না। লাঠির মত আছে সেটা দিয়ে খুচিয়ে ঠেলে ঠুলে সামনে এগাতে হচ্ছে। নাহ! দেখার মত কিচ্ছু নাই। শুধু পাথর আর পাথর। আমরা ঘুরে ফিরে থামা ভাইয়ের কাছে এস দেখি সে এখনও ব্যস্ত। সোয়েটারটা দিয়ে চাদটাকে ঘিরে ফেলেছে। কিন্তু পরাতে গিয়ে টানাটানি পরাতে ঘারের কাছ দিয়ে খানিকটা ছিড়ে গেছে। থামা ভাই ঐ ছেড়া অংশ ঠিক করার জন্য চেষ্টা করে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। আমি তার কাছে গেলাম। সে ঘাড় ঘুরিয়ে আমায় দেখে একটুকরা কাগজে খসখস করে লিখে দিল,"ভাই সুই সুতা আনছেন্নি?"
আমি লিখলাম,"না আনি নাই।"
"ধুর মিয়া কি লইয়াইছেন তাইলে?"
"ধুর মিয়া আমি আপনের লাইগা এইখানে সুইসুতা পামু কই?"
থামা ভাইকে খুবি বিচলিত দেখাচ্চে। আমি বললাম,"হৈচে তো ভাই আপনের সোয়েটার পরানো তারপরও এমুন টানাটানি করতাছেন ক্যান,বুজতাছি না!"
"আরে ভাই দেখতাচেন্না এইযে গলার কাচ্দিয়া ইট্টুহানি ছির্রা গেছেগা।"
"ছিরছে তয় কি ঐছে? এইডা কি এইহানে কেউ দেকতে আইবো?"
"দুর মিয়া এইডাই আপনাগো বাঙালীগো দোষ কোন জিনিষের সৌন্দর্য বোজেন্না।"
"হ আপ্নেরা খুব বোজা বোজেন। দেখতেতো আপ্নেগো একেকটারে দেহা যায় ধলা কদুর মতন এর মইদ্দে সৌন্দের্যের কিছুতো বিচরাইয়া পাইনা।"
"আরে ভাই আমার পরে যে আইবো হে যহন দেখপো এইজাগাডা এট্টু ছিরা তখন হেরা কি কইবো আমারে।"
"খালি বকবকান কেডা আইবো এইহানে আপ্নের এই ছিরা জাগা দেকতে কন?"
"আরে মিয়া আপ্নেরা তো খালি ৩বেলা খাওয়া আর চিৎ হইয়া গুমান ছারা আর কোনো খবরই রাহেন্না। আরে মিয়া আম্রা পরিকল্পনা নিছি আগামি ৩মাসের মদ্দে চান্দের বুকে আমরা ১খান থ্রীস্টার হোটেল বানামু। পরে মাইনসে এইখানে হানিমুন করতে আইবো। পৃথিবী থেকে চান্দে আসার ভাড়া লাগবো মাত্র ২০টাকা। কন এত সস্তা হইলে না আইবো কেডা।''
বাঙ্গালী গাজাখোর। আমেরিকানরাও যে গাজা খায় তা মিস্টার থামা মিয়ার কথায় স্পষ্ট বুঝলাম। কিন্তু আমরা এখানে তো এসেছি অনেকক্ষণ হলো এতক্ষণ তো গাজার নেশা থাকার কথানা। নাকি শালা এখানে এসেও খেয়েছে। ২০টাকায় নাকি চাদে যাওয়া যাবে!!
গাজাখোরের সাথে আর কথা বললে আমারও নেশা ধরে যাবে। তাই আপাতত্ত আমি তুরুসের দিকে তাকালাম। দেখি তুরুস বসে পড়ে পাথর কুড়িয়ে তা দিয়ে এক্কা দোক্কা খেলছে।
আমার খুব ক্ষূধা লাগছে। যতটা ভাল লাগবে ভেবেছিলাম চাদে এসে ততটা ভাল লাগছে না আমার। মনে হচ্ছে না এলেও হতো। এমন সময় ঠিক আমার পিছনে শব্দ শুনলাম, "আপনাদের খাবার দেয়া হয়েছে অনুগ্রহ করে খেতে আসুন।"
পেছন ফিরে কাউকে দেখেতে পেলাম না। আমি তুরুসের হাত ধরে টেনে তুলে শব্দটিকে অনুস্মরণ করতে লাগলাম। ইচ্ছে করে থামাকে ডাকলাম না। থাক শালা তুই তোর সৌন্দর্য নিয়ে। কিছুদুর গিয়ে দেখি সুন্দর একটা ঘর। আরে এটা এলো কোথা থেকে একটু আগেও তো এখানে এটাকে দেখিনি। যাহোক দরজা বন্ধ ঘরের দরজার সামনে দাড়াতেই অটোমেটিক খুলে গেলো। আমাদের পিছু পিছু থামা ভাই ও এসে পড়েছে। আমরা ভেতরে প্রবেশ করলাম। সুন্দর ছিমছাম ঘরখানা। ঘরের ভেতরে অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আছে। চেয়ার টেবিল সাজানো। টেবিলের উপরে খাবার ঢাকা রয়েছে।
কিন্তু চেয়ার টেবিল খাবারদাবার যাবতীয় সব কিছুই পাথরের তৈরী। প্লেটে কিছুটা খাবার তুলতে গিয়ে টের পেলাম ঝনঝন আওয়াজ হচ্ছে। আরে সবই পাথর। এসব খাবো কি করে। ধুর শালা মেজাজটাই গেলো খারাপ হয়ে। ক্ষুধায় পেট চোচো করছে। সামনে খাবারও আছে অথচ খেতে পরবোনা। এসব ইকলিবিকলি ভাবছি। তখন সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি ওরা দুজন ধুমছে খেয়ে যাচ্ছে। আরে অবাক! পাথর আবার খাওয়া যায়নাকি! ওদের দেখদেখি আমিও একটা টুকরা ধরে মুখে দিলাম। আশ্চর্য কাণ্ড, মুখে দেয়া মাত্র দুধের ছানার মত গলে গেল। আমি নিশ্চিত এত্ত সুস্বাদু খাবার কখনো খাইনি। পেট ভরে খেলাম।
খাওয়া শেষ করে দাড়িয়ে জানালায় চোখ রাখতেই আমার আরার বিচি মাথায় উঠে গেল। আমরা যে ঘরটায় বসে আছি সেটা আর চাদের বুকে নাই। ছিটকে পড়েছে মহাশূণ্যে। কোথায় যাচ্ছি আমরা। পৃথিবীর বুকে? নাকি অন্য কোন গ্রহে?না কোথায়?আকাশের নাকি সিমা নেই,তাহলে আমরা কি শুধু যেতেই থাকবো। কোন দিন শেষ হবেনা ছুটে চলা। নাকি হাওয়ায় মিশে যাবো?কে জানে? আমি জানিনা,জানিনা,জানতে চাইনা। আমি পৃথিবীতে যেতে চাই। অন্য কোথাওনা। ভাবছি,আমিতো মাঝে মাঝে উড়তে পারতাম। এখন দরজা খুলে চেষ্টা করবো নাকি একবার? না,না কিছুই ভাবতে পারছি না। আজকে আমি শেষ। আমি বরং চোখ বন্ধ করে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে লাগলাম। দোয়া কলেমা যতটুকু জানি সব পড়তে লাগলাম। এভাবে কতক্ষণ কেটেছে বলতে পারবোনা।
হটাৎ কানে এলো মানুষের কোলাহল। পুলিশের বাশি ফোকার শব্দ। ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে তাকালাম। আরে আশ্চর্য এ দেখি আমাদের বাড়ির সামনের খোলা মাঠটায় এসে নেমেছে ঘরটা। আমরা আস্তে আস্তে বেরিয়ে এলাম। পুলিশ,র্যাব সদস্যরা আমাদের ঘিরে রেখেছে। টিভি সাংবাদিকগণ এগিয়ে আসছে...........এর মধ্যেই ফুট্টুস করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল সাক্ষাৎকার আর দেয়া হলোনা। ধুত্তরি আর একটু দেখতাম চান্দে গেছি বা না গেছি টিভিতে যদি একটু দেখাইতো। তাহলেও তো ............অন্তত বিয়ে করার সময় পাত্রীপক্ষকে বলা যেত,ছেলেকেতো মাঝেমাঝে টিভিতে দেখায়!!
বোর্ডবাজার,গাজীপুর
01620595358
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮
চেয়ারম্যান০০৭ বলেছেন: শেষে মোবাইল নাম্বার এর কাহিনি কি ভাইজান ? আণ্ডারস্ট্যান্ড খাইতারলাম না
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
কামাল ভাই, আপনার এই লেখাটা অন্যান্য লেখা চেয়ে অনেক ডিফারেন্ট হয়েছে। নিয়মিত দেখিনা কেন?