নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলতে দাও

কামরুল হুদা

কামরুল হুদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু আইলানের প্রতিবাদী পশ্চাতদেশ ,আর মুসলমানদের দায়।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭


লাল জামা আর নীল্ প্যান্ট পরা আইলানের নিথর নিস্তব্দ আর ঘুমন্ত লাশের ছবিটা এখন অনলাইনের সবচেয়ে টাচিং নিউজ। আইলান দের মত ছোট শিশুরা এ ভাবেই ঘুমাতে খুব পছন্দ করে। আইলান ও ঘুমাচ্ছে এক অনন্ত ঘুমের যাত্রী হয়ে। এই ভোগবাদী আর দানবীয় সমাজের নিপীড়ন অবহেলার শিকার হওয়ার হাত থেকে বেছে গিয়েছে। হয়ত বাচার সাধ আর বেছে থাকার আনন্দ তাকে ও ঘিরে রেখেছিল। তার বেছে থাকার সময় ফুটবল নিয়ে দুরন্ত পনার আরেকটি ছবির স্থির দৃশ্য সেটির ও ইঙ্গিত দেয়। তাই তো অভিমানী চেহারা টা বালুর মুখে গুজে দিয়ে ছোট্ট পশ্চাতদেশ টা দেখিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে গেল এই পৃথিবীর সকল মানুষদের।
এগুলো দেখলে আমরা ব্যথিত হই , অনলাইন কাপিয়ে দেই প্রতিবাদের ভাষায়, এখনো দিচ্ছি। আর আমরা জজবাওয়ালা মুসলমানরা তো আরো একধাপ এগিয়ে। প্রতিবাদে ধুয়ে দিচ্ছি ইউরোপ আমেরিকা আর জাতিসংঘের হর্তাকর্তাদের। প্রশ্ন তুলি তাদের মানবিকতা নিয়ে। পরনের কাপড় মাথায় তুলে পাশ্চাত্য সভ্যতাকে একহাত দেখে দেই। নিজের ঘরে আগুন লগিযে দিয়ে শয়নে স্বপ্নে যাদের শত্রু ভাবি তাদের কাছেই আবার মানবিক সাহায্যের নিয়ে হাউকাউ। সেই কাফের আর নাফরমানদের কে আহবান করি ত্রাণকর্তা রূপে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এতোবড় শরণার্থীর ঢল আর নামেনি। মানুষজন দলে দলে ইউরোপের দিকে পাড়ি জমাচ্ছে, মারা যাচ্ছে বা আশ্রয় খুজছে চুড়ান্ত অসহায় হয়ে। পরিবারগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
কই এইসব অসহায় মুলিম শরনার্থীদের জন্য চোখে পড়ার মত কোনো সাহায্য তো কোনো যুব্বাওয়ালা দেশের দেখা যায় নি। বড় যুব্বাওয়ালা সৌদি আর কথিত পরমানু ইরান কি করছে এই মুসলিম অসহায় দের জন্য। পত্রিকায় দেখলাম কয়েকদিন আগে সৌদি যুব্বাওয়ালা তার রাজপরিবার ও আমীর ওমরা মিলে প্রায় হাজার খানিক বিলাসী শরণার্থী নিয়ে আসে প্যারিসে। কোনো এক সমুদ্র কুলে তাদের জন্য করা হয় মিনি অবকাশ কালীন কেন্দ্র। কি ছিলনা তাতে কেনাকাটার জন্য মার্কেট, আর রসালো বিনোধনের জন্য মোহনীয় সাধা চামড়ার রমনীকুল। আরব শেখ রা দু হাতে উড়িয়েছে পেট্রোডলার। আর ফ্রান্স সরকার তার ভঙ্গুর অর্থনীতির কিছুটা হলেও প্রলেপ দিয়েছে শেখ দের উড়িয়ে দেয়া পেট্রোডলার দু হাত ভরে। আর দুবাই আর কাতারের কথা বলে কি আর শেষ করা যায়। অথচ তাদের ই পাশের দেশ হতে জীবন বাচাতে জীবন হাতে পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপে।
কথিত শিয়া সুন্নি নব্য খেলাফতের দাবিদার আই সিস আর বাসার বাহিনীর দানবীয় ধর্মের না অধর্ম যুদ্ধে অসহায় এই মানুষ গুলো। ইরান আর সৌদি আরবের গালফে তাদের ক্ষমতা জাহিরের বলি হচ্ছে ফিলিস্তিন , মিসর আর ইয়েমেনের জনগণ। আর আমরা মোটা মাথার মুসলমানরা গেয়ে যাওয়া বুলির মত ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে যাই নিরন্তর। আরে এই সব ইহুদি নাসারাদের কাজ , মুসলমানদের মাঝে যেন ঐক্য না হতে পারে এই তাদের চক্রান্ত। তাদের চক্রান্তের ফাদে মুসলমানরা পা দিয়ে আজ এই অবস্থা। এই বলে ইহুদি নাসারা আর খ্রিস্টান দের গোষ্ঠী উদ্ধারে আমাদের সময় পার। আবার সেই তাদের তৈরী জাতি সংঘের নিকট আমাদের মানবিকতার আহবান। আমরা কি ভুলে যচ্ছি রোহিঙ্গা দের সাথে আমাদের ব্যবহার , নাসাকা বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মুসলমানরা বাচার আশায় উত্তাল নাফ নদী পাড়ি দিয়ে জীবন বাচাতে আসতে চেয়েছিল বাংলাদেশে। আমরা তাদের কে বন্ধুকের গুলির ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছি আবার উত্তাল নাফের জলের বুকে।
পাশ্চাত্য সভ্যতাকে একহাত দেখিয়ে আর সারা জীবন গালি দিয়ে মুসলমানদের দায় কখনো এড়ানো যাবেনা। এই অসহায় পরিবার আর শিশু আইলান দের মৃত্যুর জন্য মূল দায়ী হলো তারই সম্প্রদায় ভুক্ত মুসলমানরা। আর এই দায় যদি ভাঙ্গা রেকর্ডের মত গড়পরতায় পাশ্চাত্য সভ্যতাকে দিয়ে যাই তাহলে শুধু এখন নয় কেয়ামত পর্যন্ত আইলানরা মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আজীবন পশ্চাতদেশ দেখিয়ে যাবে আমাদের। ঐ শিশুকে কিংবা তার মতো হাজারো শিশুকে বাঁচানোর সত্যিকার উপায় হলো শক্তি অর্জন করা। সভ্যতা আর জ্ঞানে ভারী হওয়া। সেটি করার সময় কি হবে আমাদের নাকি আমাদের ব্যর্থতার দায় তাদের উপর চাপানোর জন্য ভাঙ্গা রেকর্ড প্লে করেই যাব।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:

কিছুটা লজিক্যাল

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯

কামরুল হুদা বলেছেন: আমার কাছে অনেকাংশে পুরোটাই মনে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

এ আর ১৫ বলেছেন:
সিরিয়াতে চলছে যুদ্ধ!
প্রাণে বাঁচতে মা বাবার সাথে ইউরোপের পথে পা বাড়িয়েছিলো শিশুটি।অনিশ্চিত ভবিষ্যতে দিকে সমুদ্রে নৌকায় ভাসে ওরা! বাবার হাত থেকে পিছলে পড়ে যায় সাগরে! তুরষ্কের সমুদ্র তীরে বালিতে পাওয়া যায় শিশুটির লাশ!!!!

এখন প্রশ্ন হলো সিরিয়ার মত মুসলিম প্রধান ইসলামিক রাষ্ট্রে সারাজীবন আরবীয় ধর্ম,বোরকা পড়া,দাঁড়ি রাখা,নামাজ পড়া এগুলো পালন করা স্বত্তেও পাশের ধনী আরবীয় শেখ,আমিরদের রাষ্ট্র দুবাই,কুয়েত,সৌদি,কাতার থাকার পরও কেন আজীবন কাফের,মালাউন,নাসারা গালি দেয়া হিন্দু,খ্রিস্টান বা অমুসলিমদের রাষ্ট্রসমূহ কেবল বাঁচার জন্য পাড়ি দিতে হয় মুসলিমদের??

মুসলিমদের প্রাণে বাঁচতে বা নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় অমুসলিম রাষ্ট্রে যাওয়ার ইতিহাসটা নতুন নয়!!!

১৯৭১ সালেও পূর্ব পাকিস্তানের বহু মুসলিম প্রাণে বাঁচতে ভারতে আসে!!যেকারনে ওই সময় ত্রিপুরা এলাকার শরণার্থীর অধিকাংশই মুসলিম ছিলো!

এছাড়াও সম্প্রতি মায়ানমারে থেকেও প্রাণে বাঁচতে হাজার হাজার মুসলিম ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে!
সূত্রঃ
http://www.sunday-guardian.com/news/burmese-muslim-refugees-in-delhi-search-for-haven-in-jak

সিরিয়া,লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের লাখো মুসলিম প্রাণে বাঁচতে আজ খ্রিস্টানপ্রধান রাষ্ট্রসমূহে আশ্রয় নিচ্ছে!!!!!

একজন মুসলিম সবসময় চায় তার রাষ্ট্রটা ইসলামিক হোক,মুসলিমপ্রধান হোক!!সে লক্ষ্য সব সময় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষজিহাদ চালিয়ে যেতে থাকে!!কিন্তু রাষ্ট্রি মুসলিমপ্রধান হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় চরম যুদ্ধ আর রক্তের হোলিখেলা!!!! এগুলো থেকে বাচঁতে পারে না মুসলিমরাও!!শুরু হয় গণহত্যা,মসজিদে মসজিদে,ঈদের নামাজে,স্কুলে,কলেজে,বাজারে আল্লাহু আকবর বলে শুরু হয় মানুষ হত্যা,বোমা হামলা!!উদ্দেশ্যওরা জান্নাত যাবে!!
কিন্তু কেন মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রে যদি
মুসলিমদেরই বাঁচার অধিকার না থাকে,বাঁচতে হলে অমুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতে হয় তবে কি লাভ ইসলামিক মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র কররে????

সিরিয়ান মুসলিমদের কেন পাশের দুবাই,কুয়েত, সৌদির মত মুসলিম রাষ্ট্র রেখে ইউরোপের অমুসলিম রাষ্ট্রে পাড়ি দিয়ে হয়??
কেন বিপদজনক ভাবে সাগরে ভাসতে হয়??
কেন মারা যেতে হয়??
কেন আজীবন আরব ধর্ম পালন করার পরও পাশের আরবের ধনী রাষ্ট্রে ওদের জায়গা হয় না??

আজ পর্যন্ত একজন অভিবাসীকে সৌদি,দুবাই,কুয়েতের মত রাষ্ট্র জায়গা দেয় নি!!

সৌদি, দুবাই,কুয়েত,কাতারের মত ধনী রাষ্ট্রগুলো আরামে জীবনযাপন করছে!!এদিকে পাশের সিরিয়া,লিবিয়ার মত রাষ্ট্রের মানুষেরা জীবন বাজি রেখে বাঁচার আশায় ইউরোপে পাড়ি দিচ্ছে!!

বড় বিচিত্র এ আরব!!!!

বিঃদ্রঃ
এই লেখাটি পড়ে কারো আরবানুভূতিতে আঘাত লাগলে আমার কিছু করার নেই!কারণ শিশুটিকে দেখে আমার মানবানুভূতিতে লেগেছে!!

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:২৩

কামরুল হুদা বলেছেন: মুসলমানরা যখন তাদের ঈমানী দায়িত্ব আর সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথ থেকে সরে আসে। তখন ই তাদের উপর বিপর্যয় নেমে আসে। এটি দিবালোকের মত সত্যি। এটি ও সত্যি যে মুসলমানদের এই দুর্বলতার সুযোগ গুলোকে অমুসলিমরা সঠিক ভাবে ব্যবহার করছে।
মনে রাখা দরকার রাত যত গভীর হয় , প্রভাত তত নিকটে আসে। ইনশা আল্লাহ মুসলমানদের এই দুর্বলতা কেটে যাবে একদিন নিশ্চয়। সেদিন আবার তারা দুনিয়াকে জয় করবে। মানবিক আর শান্তির আবাস ভূমি হবে সেদিন এই পৃথিবী।

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২২

বিজন শররমা বলেছেন: আয়লান সাগরের পাড়ে শুয়েছিল বলে তাকে সবাই দেখেছে, অমুসলিম দেশের মানুষের কল্যানে চারদিকে হই চই পড়ে গেছে । বাংলাদেশের অজানা সংখ্যক মানুষ ঘুমিয়ে আছে মায়ানমারের জঙ্গলে মাটির নীচে, অথবা বঙ্গোপসাগরের মাছের পেটে । তাদের দেখা যাছে না। তাদের স্মৃতিভরা কাহিনী লেখা আছে তাদের পুত্র কন্যা, স্ত্রী পিতা মাতা আর আত্মীয়দের চোখের পানিতে । তাদের এই দুর্ভাগ্য যাদের আয় বাড়িয়েছে তাদের মুখে আজ হাসি, তাদের এই দুর্ভাগ্যের জন্য যে শাসকেরা দায়ী তারা আজ বহাল তবিয়তে আছে- এই বাংলাদেশে, যেখানে একজন নেতার সিদ্ধান্তে জীবন গেছে ত্রিশ লক্ষ নিরীহ মানুষের ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৩৮

কামরুল হুদা বলেছেন: অন্যায় অথবা জুলুমের শিকার যারা তাদের সবার জন্য আমাদের সমবেদনা। সে যে দেশের ই হোক কিংবা যে ধর্মের ই হোক। এটি ই হোক মানবতার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। তাহলে একটি সুন্দর পৃথিবী হবে সবার জন্য । ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.