![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও আমি স্বফলভাবে স্বক্ষমতার সাথে সমাজে বসবাস করছি। আমি একটি প্রতিব্ন্ধী বন্ধব পৃথিবী চাই।
মানববর্গের এক বিশাল অংশ প্রতিবন্ধী মানুষ। তা হলে কী হবে, অ-প্রতিবন্ধী মানুষদের তুলনায় এরা সংখ্যায় কম। ঐতিহাসিক কাল থেকেই এই মানুষদেরকে অ-প্রতিবন্ধী মানুষরা রেখে দিয়েছে `পূণ্য অর্জনের জন্য'। দেবতা করে নয়, অসহায় করে, যাতে এদের `উপকার করে' `দয়া করে' স্বর্গে যাওয়াটা সহজ করা যায়। মানুষ দয়াশীল, এটা স্বাভাবিক বটে। তবে এই দয়া যদি আরেকদল মানুষকে করে তোলে নির্ভরশীল, অধীনস্ত, তবে তা অত্যাচার' বৈকি! সংখ্যাগুরু অপ্রতিবন্ধী মানুষ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব্ প্রমাণ করতে, তা বহাল রাখতে যা কিছুই তৈরি করেছে, তার প্রায় সবকিছু থেকেই বাদ পড়েছে প্রতিবন্ধী মানুষ। সে হোক পড়া-লেখা, হোক কর্মসংস্থান, হোক চলাফেরার রাস্তাঘাট আর অপ্রতিবন্ধী মানুষের হাতে তৈরি করা সকল ব্যবস্থা। শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অংশগ্রহন করতে পারেনা কেবল মাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা তাদের অনুকূলে নয় বলে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিই শিক্ষাগ্রহণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে যায়। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিশেষ করে যারা হুইলচেয়ার ও অন্যান্য সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করে চলাচল করে তাদের ভোগান্তি আরও চরমে। এই সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কথা আমরা কখনও ভাবি না। তাদের জন্য নেই কোন যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা। আমাদের সকলের জানা দরকার এ দেশের নাগরিক হিসেবে সহজ চলাচলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কি কি অধিকার আছে। ২০০১ সালে গৃহীত প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইনে তফসিল ধারা ২(খ) এবং ৬(২) দ্রঃ)-এর ‘ছ’-তে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যাতায়াতের সুবিধা সম্পর্কে সুস্পষ্ট উলে¬খ আছে-
১. প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত ও যোগাযোগের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণকল্পে সরকারী, সংবিধিবদ্ধ ও বেসরকারী সংস্থার ভবন ও অন্যান্য স্থাপনা এবং যানবাহনে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা।
২. রেলগাড়ী, নৌযান, বাস টার্মিনাল এবং বিশ্রামাগারসহ যে সকল স্থানে সাধারণ ব্যবহার্য শৌচাগার নির্মাণের বিধান রহিয়াছে সে সকল যান ও স্থানে যাহাতে প্রতিবন্ধীরা সুবিধাজনকভাবে ব্যবহারের সুযোগ লাভ করে তাহার ব্যবস্থা করা।
৩. দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের চলাচলের শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা পারাপারের স্থানে শব্দ সংকেতের ব্যবস্থা করা।
৪. প্রতিবন্ধীদের নিরাপদ ও চলাচলে সহায়তা প্রদানকল্পে উপযুক্ত প্রতীক উদ্ভাবন করা।
৫. হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রযোজ্য স্থানে ঢালু ও বাকানো রাস্তা, সিঁড়ি ও র্যাম্প নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
৬. পরিচয় পত্র বহনকারী প্রতিবন্ধী ও তাহার একজন সহযোগী সঙ্গীর জন্য বাস, ট্রেন, বিমান ও জলযানে রেয়াতী হারে ভাড়া নির্ধারণসহ বহনযোগ্য মালামাল পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
ইদানিং ট্রাফিক বিভাগের নানামুখী কর্মকাণ্ডের ফলে সারা দেশে যানজট অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এর মধ্যে ব্যস্ততম স্থানে মাইকিং পদ্ধতি চালু করা অন্যতম। এই মাইকিং পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে পথচারীরা অতি সহজেই জানতে পারছে তারা কিভাবে রাস্তা পারাপার হবে, কিভাবে রাস্তায় চলাচল করবে। চালকরাও জানতে পারছে তারা কোথায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করবে সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। যা সত্যই প্রসংশার দাবী রাখে। তাদের এই প্রসংশা আরও ষোলআনায় পূর্ণ হবে যদি সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের আগে থেকেই যদি প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হয় এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে এই নির্দেশ দেওয়া যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দেখলেই তাদের চলাচলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজিকরণের লক্ষ্যে ট্রাফিক বিভাগ যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে তার কিছু প্রস্তাবনা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
# ব্যস্ততম স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলের ব্যাপারে জনগনকে সচেতন করা।
# প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলের পথ-নির্দেশনা দেওয়া।
# দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিশেষ করে যারা হুইলচেয়ার ও অন্যান্য সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করে চলাচল করে রাস্তা পারাপারের সময় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ যেন নিজ দায়িত্বে তাদের রাস্তা পার করে দেন।
# বাস সহ অন্যান্য যানবাহনে ওঠা-নামার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা।
# যে সকল বাসের হেলপার/কন্ট্রাক্টর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের গাড়িতে নিতে চায় না তাদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দয়া চায় না। তারা তাদের অধিকারের বাস্তবায়ন চায়। সকলের আন্তরিকতা ও সক্রিয় সহযোগিতার দ্বারাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন করা সম্ভব।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৯:৪৬
অাজমাল েহােসন মামুন বলেছেন: পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ওদের জন্য লিখবেন। আমিতো দাদা প্রায় ৪০০ এর ওপরে প্রথম শ্রেণীর দৈনিকে লিখলাম। কাজ হচ্ছে না। এদেশের মানুষ বিবেক প্রতিবন্ধী। ভাল থাকবেন। চালিয়ে যান। আবারও অনেক ধন্যবাদ রইল।