![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।
'অমুক খুব মেধাবী। তমুক ভালো স্টুডেন্ট। কিন্তু আমি কেন হতে পারি না? কারণ আমার মেধা শক্তি দূর্বল। কোনো কিছু সহজে মনে থাকে না। পড়তে বসলে মাথা ঘোরে।' এরকম বিভিন্ন কথা সেই ছোটকাল থেকেই শুনে আসছি। আসলে এসব কথাগুলো কি পুরো-পুরিই ঠিক? আমি বলব, 'না'। কারণ আল্লাহ্ তায়ালা সবাইকে মাথা দিয়েছে। জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেক দিয়েছে। কিন্তু আমরা নিজেদের দোষেই তা নষ্ট করে ফেলি। আমরা ব্রেনকে কাজে লাগাই না। নিজেকে দূর্বল ভাবি। 'আমি পারব' এরকম সাহসটা বুকে রাখতে ভয় করি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- বেশি অলসতার ফলেই স্মৃতিশক্তি কমে যায়। অলস শরীরের ক্লান্তি মেধার জন্য ভাইরাস সরূপ।
.
মানুষ জন্মগতভাবে সর্বোচ্চ ৬০% এর বেশি স্মৃতিশক্তি পায় না। বাকিগুলো পরিবেশ, খাদ্য ও চর্চার উপর নির্ভর করে। তা যাইহোক, আমি বলতে চাচ্ছি- কেউই ১০০% মেধাশক্তি নিয়ে জন্ম গ্রমণ করে না। পরিচর্যা, পরিবেশ ও খাদ্যের উপরও স্মৃতিশক্তি ডিফেন্স করে।
.
আর একটা কথা হচ্ছে- 'যার ভিতরে খারাপ জিনিস দ্বারা ভর্তি, তাদের ভিতরে ভালোর জ্ঞান প্রবেশ করবে না-এটাই স্বাভাবিক।' তাই সুষ্ঠু জ্ঞানে জ্ঞানী হতে চাইলে আগে ভিতর পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিনিয়ত পাপ করে যাওয়া দূর্বল স্মৃতিশক্তির অন্যতম কারণ। পাপের অন্ধকার ও জ্ঞানের আলো কখনো একসাথে থাকতে পারে না। এ প্রসঙ্গে ইমাম আশ-শাফি’ঈ (রহ.) বলেন, "আমি আমার শাইখ ওয়াকীকে আমার খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, 'আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি।' তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো। আর আল্লাহর আলো কোন পাপচারীকে দান করা হয় না।" (আল-খাতীব আল-জামী' - ২)
.
পরিমিত ও সুষম খাদ্য স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। অধিক পরিমাণে খাদ্য ভক্ষণের ফলে ঘুম বেশি ও শরীরে অলসতা সৃষ্টি করে, ফলে তা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে। আবার রাত জেগে থাকা বা নিয়মিত না ঘুমানোর জন্য মস্তিষ্কে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। ফলে কোনো কিছু সহজে মনে থাকতে চায় না। তাই উচিত নিয়মিত ঘুমানো।
.
ইমাম আয-যুহরি বলেন, "তোমাদের মধু পান করা উচিত কারণ এটি স্মৃতির জন্য উপকারী।" মধুতে রয়েছে অধিক পরিমাণে মুক্ত চিনিকোষ। যা আমাদের মস্তিষ্কের গঠনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়াও মধু পান করার সাত মিনিটের মধ্যেই রক্তে মিশে গিয়ে কাজ শুরু করে দেয়। তিনি আরো বলেন, "যে ব্যক্তি হাদীস মুখস্ত করতে চায়, তার উচিত কিসমিস খাওয়া।"
.
রাসূল (স) বলেছেন, "তোমরা যায়তুনের তেল খাও এবং এর দ্বারা মালিশ কর বা শরীরে মাখ। কেননা, তা বরকতময় গাছ থেকে আসে।" (তিরমিযী, আহমাদ, ইমাম আলবানী (রহ.) হাদীসটি সহীহ বলেছেন।) বলা-বাহুল্য, যায়তুন/জলপাই একটি বরকতয় ফল। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা সূরা তীন-এ যায়তুনের কসম খেয়েছেন। অপরপক্ষে শরিষার তেল মস্তিষ্ক উর্বরে সহায়ক। চিকিৎস্যা বিজ্ঞানীরা শরিষার তেলকে 'মাষ্টার ওয়েল' বলেছে। তাই আমরা শরিষার তেলও মাথায় দিতে পারি। এছাড়াও বাজারে উদ্ভিদ জাতীয় উন্নতমানের তেল বিদ্যমান। এগুলোও ব্যবহার করতে পারি।
.
পরিশেষে কিছু আমলের কথা বলি,
১। 'তাফসীরে ইবনে কাছীরের ১ম খন্ডে ২০৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে যে, হযরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, জাফরাণ দ্বারা আয়তুল কুরছী বাম হাতের তালুতে লিখে চেটে খাইলে মুখস্ত শক্তি বৃদ্ধি পায়। এভাবে সাতবার লিখে চেটে খেতে হবে। আল্লাহর রহমতে কোনো কিছু ভুলবে না। এবং মুখস্ত ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে।'
২। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর 'রাব্বি জিদনী ইলমা' ২১ বার করে নিয়মিত পাঠ করলে মুখস্ত শক্তি বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।
৩। 'ইয়া আলিমু' প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১০০ বার করে নিয়মিত পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে মেধাশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
.
পড়া শুরুর আগে...
১। 'রাসূল (স)-এর প্রতি দরূদ শরীফ।'
২। 'রাব্বি জিদনী ইলমা।'
৩। 'রাব্বি ইয়াসসির ওয়ালা তুআসসির ওয়া তাম্মিম আলাইনা বিল খাইর।'
৪। 'রাব্বিস রাহলী ছাদরী ওয়া ইয়াস ছিরলি আমরি ওয়াহ লুল উক্বদাতাম মিন লিসানি ইয়াফ কাহু ক্বওলি।'
এই দোয়াগুলি পড়ে তারপর পড়া শুরু করলে আল্লাহর রহমতে পড়া দ্রুত মুখস্ত হবে।
মা'য়াস সালাম।
.
'স্মৃতি, মুখস্ত ও মেধাশক্তি'/কাওছার আজাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।