নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।
১.
"মানুষের অভ্যাস-রূচি, শিল্প-সংস্কৃতি, জানা-শুনা আর অনুকরণের বাতিক থেকেই সামাজিক পরিবর্তনটা তরান্বিত হয়। এক্ষেত্র নির্দিষ্ট কোন ভাষার প্রভাব অন্যতম নিয়ামক হয়। মানুষের সামাজিক-সংস্কৃতিক পরিবর্তনে অনেক সময় অতিরিক্ত বিদেশি ভাষা প্রীতির ফলে তাদের কালচার আমদানি/অনুকরণ করা হয় বাছ-বিচার না করেই। অনেক সময় তা স্থানীয় সংস্কৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।"
ফেইসবুকের একটা স্টেটাসে কথাগুলো পড়ে ভাবনায় পড়লেন শরৎ বাবু। কিন্তু এত কঠিন বিষয় ভাবনার সময় কই? বাসায় ফিরেই তাড়াহুড়ো করে সারাদিনের ধুলো-বালির সাথে ক্লান্তি আর পার্টিতে যাওয়ার শিডিউল মেলাতে সোজা শাওয়ার করতে ছুট।
এই.... শুনছো.....
কি হলো? কথা বলছো না কেন? শুনছো?
পুরুষ মানুষের শাওয়ার করতে এতো সময় লাগে? তাড়াতাড়ি বের হও। মানুষটার সব কিছুতেই ডিলামি। এতবার বল্লাম রাতে ঋতুর পার্টিতে যাব একটু আরলি অফিস থেকে আসবে। না, কে শুনে কার কথা। আজো দেরী; মানুষটারে নিয়ে আর পারি না। কথাগুলো একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে আর পায়চারি করছে বৈশাখী।
-- আসছি, আসছি। এত অধৈর্য হচ্ছ কেন? এখনো ঘন্টাখানেক বাকি আছে।
বাথরুমে শাওয়ার করতে করতে উত্তর দিল শরৎ।
-- ঘন্টা? রেডি হতেই তো তোমার দু'ঘন্টা চলে যাবে।
-- আরে না জাস্ট পাঁচ মিনিট।
-- পাঁচ মিনিট!
শাওয়ারের ঝমঝম শব্দ আর সিলিং ফ্যানের খট খট আওয়াজে শরৎ শেখরের বাকি কথাগুলো ঠিকমত শুনতে পেলনা বৈশাখী।
শরৎ গোসল পর্ব শেষ করে শরীর ভালভাবে মূছে একটি বড় সাদা তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে বের হতেই সাদা সার্ট, স্যুট, প্যান্ট ও টাই এগিয়ে দিয়ে বৈশাখি তাড়া দিল, তাড়াতাড়ি পরে নাও। সময় বেশী বাকি নেই। কে জানে রাস্তায় যানজট কেমন?
-- শৌমিক শাওয়ার করেছে?
চার বছরের একমাত্র ছেলে শৌমিককে লক্ষ্য করে শরৎ জানতে চাইল।
-- তোমার ছেলে শাওয়ার করবে? সেই বিকাল থেকে স্যুট-টাই পরে বসে আছে আর একটু পরপর আমাকে তাড়া দিচ্ছে। তার এক কথা-
"মা, বাবুই আচ্ছে না কেন? কখন যাব বেড়াতে? বাবুইকে একটা ফোন দাও।"
কোন কথা না বাড়িয়ে ঝটপট রেডি হতে লাগল শরৎ। শৌমিক চুলের জেলের ডিব্বাটি বাবাকে এগিয়ে দিয়ে বললো- বাবুই আমাকে মাখিয়ে দাও। বাবার দেখাদেখি ছেলেটাও চুল স্পাইক করা শিখেছে। মাঝে মাঝে চুলের পাশাপাশি সারা শরীরও জেলময় করে তোলে শৌমিক। তার কাছে ক্রিম/লোশন মাখা আর জেল মাখা একই।
-- ছেলেটা একদম তোমার মত হয়েছে। সারা সন্ধ্যা থেকে এত করে বুঝালাম কিন্তু না গোসল করবে না। তার এক কথা, মা আমার শীত লাগছে। পেটে হাত দিয়ে দেখো, জ্বর উঠছে আম্মু!! এই কাঠফাটা রোদেও তার নাকি ঠান্ড লাগে! অন্যদিন তো বাথটাব থেকে নামিয়ে আনাই মুশকিল হয়।
-- তাই বলে পেটে জ্বর!! ছেলেটা আমার ভীষণ পাজি!!!
খিল খিল করে হাসতে হাসতে বললো, শরৎ।
-- বাদ দাও। ছেলে মানুষ।
বৈশাখী আজ মনের মত করে সেজেছে। বিকালে পার্লার থেকে চুল স্ট্রেইট করে এসেছে। মুখে দামী মেকাপ দিয়েছে। সাথে মেনি কিউর, পেডি কিউর, আরো কত কী........। ভ্রু-টাও প্লাক করেছে আজ। বরাবরই শাড়িতে খুব সুন্দর দেখায় বৈশাখীকে, তবে আজকের কড়া সাজটা সেই রকম স্পেশাল হয়েছে, একদম ফাটাফাটি রকমের সুন্দরী। বৈশাখী ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শেষ বারের মত মেকআপটা চেক করছে আর চুলের খোঁপায় ও শাড়িতে ক্লীপ/পিন লাগাচ্ছে। হঠাৎ খেয়াল হলো বডি স্প্রে-টা দেওয়া হয়নি। সেল্ফ থেকে এম্পোরিও আরমানির সেন্টের বোতলটি বের করে গলায় ও হাতে স্প্রে করলো, পাশাপাশি হাজবেন্ড ও ছেলেকে দিল।
-- তোমার সাজুগুজু এখনো চলছে?
নিজে ঝটপট রেডি হয়ে এবার বউকে তাড়া দিল শরৎ। সাথে যোগ করলো সেই বিকাল থেকে শুরু করেছ ঘসামাঝা যা এখনো চলছে! আর সুযোগ পেলেই দোষ খোঁজ আমার, তাই না? সব দোষ নন্দ ঘোষ।
-- শেষ। তুমি ছেলেকে নিয়ে নীচে গাড়িতে উঠ। এক্ষুনি আসছি......
২.
বনানীর পাঁচ তারকা ওয়েস্টিন হোটেলে বিশাল পার্টি, রাজকীয় আয়োজন। দেশের নামকরা চলচ্চিত্র-টেলিভিশন শিল্পী, পরিচালক-প্রযোজক, মডেল-নৃত্য শিল্পী, ফ্যাশন ডিজাইনার, নামকরা ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ কে নেই তাতে? একে একে সবাই আসছেন, কুশল বিনিময় করছেন। কেমন যেন বিদেশ বিদেশ ভাব। লাউড স্পিকারে মারিয়া ক্যারির "অলোয়েজ বি মাই বেবি" গানটি বাজছে-
উই ওয়ার এজ ওয়ান, বেবি ফর এ
মোমেন্ট ইন টাইম এন্ড ইট, সিমড্
এভার লাস্টিং দ্যাট ইউ উড অলোয়েজ
বি মাইন, নাও ইউ ওয়ান্ট টু বি ফ্রি।
সো আই উইল লেট ইউ ফ্লাই
কজ আই নো ইন মাই হার্ট
বেবি আওয়ার লাভ উইল নেভার এন্ড।
গানের তালে তালে কয়েকজন সুন্দরী ললনা নাচছে। লিপসিং করছে। সামনে দর্শক সারিতে বসা কিছু ইয়াং ছেলেমেয়েও গানের সাথে দোল খাচ্ছে। ঢলাঢলি করছে।
এত বিশাল আয়োজন দেখে বৈশাখী খুব অবাক হলো। পাঁচতারকা মানের হোটেলের এমন আয়োজনে আগে কোনদিন আসেনি সে। একদম সিড়ি থেকে হরেক রকম কাঁচা ফুল আর বিভিন্ন রঙের বেলুন দিয়ে সাজানো প্রবেশদ্বারটি। এছাড়া পুরো সিঁড়িটাই লাল কার্পেটে মোড়া, পরিচ্ছন্ন ও প্রশস্ত। ভেতরে তো আরো রাজকীয় কারবার। বিশাল বড় হলরুম, দেখতে অনেকটা বলিউডের সিনেমায় দেখা বিয়েবাড়ির মতো সাজানো, পরিপাটি। স্টেজের পেছনে বড় বড় অক্ষর দিয়ে ডিজিটাল ব্যানারে লেখা
"আজ ঋতুর বেবি শাওয়ার"
সামনে সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো একটি টেবিলে হরেক রকম বিদেশী চকলেট সাজিয়ে রাখা। পুরো টেবিলটি ফুল দিয়ে সাজানো। আছে একটি বিশাল সাইজের কেক। কেকটি একটি সুদৃশ্য পুতুলের আকারে ডিজাইন করা।
আজ বৈশাখীর স্কুল জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ট বান্ধবী ঋতুর বেবি শাওয়ারের অনুষ্ঠান। দেড় বছর হলো বিয়ে হয়েছে তার। ঋতু বর্তমানে দেশের সবচেয়ে নামকরা মডেল, পাশাপাশি হার্টথ্রুব নায়িকা। ইদানিং কলকাতার ছবিতেও তার বেশ নামডাক আছে।
-- ওয়েলকাম, মাই ডিয়ারেস্ট ওয়াইফি।
বৈশাখিকে দেখে জড়িয়ে ধরে দুই গালে উ.... আ... করে গাল মেশাতে মেশাতে বল্ল ঋতু। বৈশাখীকে আদর করে ঋতু তাকে 'ওয়াইফি' বলে ডাকে।
-- হুম। নাইস টু সি ইউ, দোস্ত। অনেক দিন পর দেখলাম তোকে।
পেটের দিকে ইশারা করে একটু মুচকি হাসি দিয়ে আবারো জানতে চাইলো, বেবিটা কেমন আছে?
-- আর বলিস না, মনে হয় খুব দুষ্ট হবে। এখন থেকেই খুব জালাচ্ছে সোনাটা, খু-উ-ব!!
কথাটি বলেই ফিক করে একটি রহস্যময় হাঁসি দিল ঋতু।
-- হুম। কয় সপ্তাহ হলো?
জানতে চাইল, বৈশাখী।
-- থারটি ফোর।
ঋতু আজ কালো টাইট লেগিন্সের সাথে পাঞ্জাবীর মতো হাঁতকাটা ঢিলেঢালা লাল রঙের একটি ফতুয়া পরেছে। গোল্ডেন কালারের হাই হিল জুতাটাও বেশ মানানসই। পেটের ঠিক উপরে জামাটি ইলাস্টিক দিয়ে আটকানো, তবে নীচের দিকে তা হাঁটু পর্যন্ত ছড়ানো। টাইট লেগিন্সের সাথে টাইট ফতুয়া তার ভারী নিতম্বকে আগুনের তৈরী ডিম্বাকৃতির বম্ব বানিয়ে দিয়েছে। বৈশাখী লক্ষ করলো, বেবি বাম্পটা বাস্তবের তুলনায় একটু বেশিই বড়; পেটের ঠিক উপরে ইলাস্টিক দিয়ে আটকানো বলে হয়তো এমনটা মনে হচ্ছে। প্রেগনেন্ট হলে কী হবে? শারিরিক সৌন্দর্য একটুও ভাটা পড়েনি ঋতুর। পেটের উপর ফতুয়ার মাঝে একটি নাদুস-নুদুস বেবি বাচ্চার ছবি আঁকা। ব্যাপারটি বৈশাখীর কাছে দৃষ্টিকটু লাগলো, তবে ঋতুকে বুঝতে দিল না। দেখে মনে হচ্ছে বেবিটা সবাইকে বলছে -
"ওয়েলকাম টু বেবি শাওয়ার"।
শরৎ শেখর মিসেস ঋতু ও তার স্বামী নামকরা শিল্পপতি মামুন ইশফাকের সাথে সৌজন্যতা বিনিময় করে ছেলেকে নিয়ে কোনার দিকে একটি চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লো। স্ত্রী তখনো ঋতুর সাথে খোশগল্পে মত্ত।
বৈশাখী এদিক ওদিক চাওয়া-চাওয়ি করে স্বামী-সন্তানকে দেখতে পেয়ে কাছে গিয়ে বল্ল-
-- ড্রাইভারকে বল গিফটি উপরে নিয়ে আসতে।
-- আসার সময় তো বলে এসেছি। হয়তো পার্কিং পেতে সময় লাগছে।
উত্তর দিল শরৎ। এখনই আসবে।
বান্ধবীর প্রথম বেবি শাওয়ারের গিফট কিনতে গত কয়েকদিন বৈশাখী ঢাকার নামকরা সব শপিং মল ঘুরেছে। শেষমেষে একটি বেবি ওয়াকার, এক বক্স ডায়াপার, কয়েকটি বিদেশী চকলেট প্যাক আর বান্ধবী ও তার স্বামীর জন্য কিছু কাপড়চোপড় কিনেছে।
গিফটগুলো হস্তান্তর করতে গিয়ে বৈশাখী লক্ষ্য করলো গিফটের তালিকা তো বিশাল। কি নেই তাতে? বিভিন্ন রঙের টেডি বিয়ার, হরেক রকম পুতুল, বেবি ক্লথ, ডায়াপার ব্যাগ, বেবি ক্যারিয়ার, এক্টিবিটি ম্যাট, বিদেশি শিশু খাদ্য, বাচ্চাদের কমিক্স বই, মাউস বাস্কেট................. ইত্যাদিতে হলরুমের একটি কর্ণার ঠাসা। বাহ! সেলেব্রেটি বলে কথা!!
একটু পরে শুরু হলো হিন্দি পপ গানের তালে তরুনীদের নাচা-গানার পালা। গানের তালে দশ-বারোজন স্বল্প বসনা তরুনী শুরু করলো উদ্দাম নৃত্য। উপস্থিত অনেকেই এতে বিনোদিত হলেও যারা ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসেছেন তারা একটু বিব্রতকর পরিস্থতিতে পড়লেন। বিশেষ করে মায়েরা।
-- মাম্মী, বেবি শাওয়ার কখন হবে?
মায়ের কোলে বসা শৌমিক চুপিচুপি জিজ্ঞেস করলো।
-- এই তো চলছে বাবা।
-- না না মাম্মী, বে-বি শা-ও-য়া-র। এখন বুঝতে পেরেছ?
সাথে যোগ করলো-
-- আমি সারাদিন শাওয়ার করিনি এখানে অনেক বাচ্চার সাথে শাওয়ার করবো বলে। বলো না মাম্মী কখন শুরু হবে? আমার ঘুম পাচ্ছে।
ছেলের কথা শুনে থো বনে গেল বৈশাখী। কি বলছে ছেলে? মনে পড়লো সকালে শরৎ অফিসে যাওয়ার সময় বারবার তাড়া দিয়েছিল, আজ সন্ধ্যায় ঋতুর বেবি শাওয়ার তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসবে। এছাড়া দিনের বেলা দুইবার ফোন করে মনে করিয়ে দিয়েছে সে। ছেলেটি তার কথাটি হয়তো মনযোগ দিয়ে শুনেছে। এজন্য অনেক চেষ্টা করেও গোসল করাতে পারিনি। এখানে আসার জন্য বিকাল থেকে রেডি হয়ে বসেছিল। তাহলে ঘটনা এই!!
৩.
খাওয়া-দাওয়া, আচার-অনুষ্টান শেষ হতে হতেই রাত সাড়ে বারোটা বেঁজে গেল। বেচারা শৌমিক ততক্ষণে ক্লান্ত হয়ে মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে। বাইরে ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, আকাশে মেঘের গর্জনও শুনা যাচ্ছে। শরৎ শেখর বউকে তাড়া দিল-
-- জলদি বের হও, আকাশের অবস্থা ভালো না।
গাড়িতে বসে বৈশাখী জানতে চাইলো-
-- এবার এত আরলি বৈশাখী আবহটা চলে এসেছে। মনে হচ্ছে কালবৈশাখী আসন্ন।
-- আসন্ন মানে? আজ চৈত্র মাসের কয় তারিখ মনে আছে?
বউয়ের কাছে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো শরৎ।
-- কি যে বলো না তুমি, এত তাড়াতাড়ি চৈত্র মাস এস গেল?
-- জি, ম্যাডাম। আজ চৈত্র মাসের একুশ তারিখ। আর দশদিন পর পহেলা বৈশাখ। নিজের জন্মদিনটি ভুলে গেলে?
পহেলা বৈশাখে জন্মেছিল বলে বাবা আদর করে তার নামটি রেখেছিলেন বৈশাখী। ঘটা করে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় বলে জন্মদিনটি তার মনে থাকে। তবে বাকি সারা বছর বাংলা মাস/ঋতুর আর কোন খবর থাকে না। এমনকি বৈশাখী বাংলা মাসের নামগুলোও ঠিকমতো বলতে পারবে কিনা সন্দেহ।
তবে শরৎ শেখরের জন্ম কিন্তু শরৎকালে হয়নি। হয়তো নামটি বাবা মায়ের পছন্দ ছিল। অথবা শরৎচন্দ্র তাদের প্রিয় লেখক ছিলেন বলে ছেলের নামটি শরৎ রেখেছিলেন। আবার অন্য কোন কারণও হতে পারে। জানা নেই শরৎ বাবুর।
মধ্যরাতের যানজটমুক্ত ফাঁকা রাস্তা খুব প্রিয় ঋতুর। শৌমিকের জন্মের পর রাতের ঢাকা ভ্রমণ কিছুটা কমে গেলেও মাঝে মাঝে ছেলেকে কোলে নিয়ে তিনজন বের হয়। ঢাকা শহরের দমবন্ধ পরিবেশ থেকে বাঁচতে এই নিশি ভ্রমণ তাদের কিছুটা হলেও মুক্তি দেয়। কখনো ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে লং ড্রাইভ। কখনো বা ঢাকার অলিগলি, অভিজাত এলাকায়।
-- এ্যাই শুনছো, তাড়াতাড়ি চালাও। মেঘের কি গর্জনরে বাবা। শৌমিক জেগে উঠলে ভীষণ ভয় পাবে। ঝড়তুফান যেকোন সময় চলে আসবে।
লোডশেডিংয়ে অন্ধকার রাস্তায় ভড়কে গিয়ে ঋতু শরৎকে তাড়া দিল।
-- আজ আয়োজনটা কিন্তু জব্বর ছিল; কি বলো, ঋতু? আমি তো মাত্র দুই পেগ গিলেছি চুপিচুপি। এতো ভীড়ে তৃপ্তিমতো গিলার সুযোগ পেলাম কই? এত্তো পাবলিক কোথা থেকে আসে? সেলিব্রিটিদের নাম কামানোর এই পার্টি-টার্টি আমার ভালো লাগে না।
-- বললম, এই ছাইপাশ গিলো না। কে শুনে কার কথা? ওসব গিলে রাতের বেলা গাড়ি চালানো নিরাপদ নয়, মোটেও। বাচ্চা ছেলেটির কথা একবারও মনে হলো না?
-- আরে কিযে ভাবো তুমি? মাত্র দুই পেগ-ই তো। আমি তো দশ পেগ গিলেও ঠিক থাকতে পারি। নো টেনশন গিন্নি। একটা রুমান্টিক গান ধরো। আমিও ঠোঁট মেলাবো তোমার সাথে। শুরু করো...........
-- এ্যাই, তুমি টলতেছো কেন? গাড়ি এতো ঝাঁকুনি দিচ্ছে কেন? আস্তে চালাও প্লীজ, আ-স্তে।
-- তুমি সাথে থাকলে নিজেকে ফর্মূলা ওয়ান চ্যাম্পিয়ন মাইকেল শুমেখার মনে হয়। এ্যাই, আ-সো-না এই নিশি রাতে একা পথে একটু আদর করি। আসো না, সুইটহার্ট। আসো প্লীজ।
সোনারগাঁ হোটেল পেরিয়ে ইস্কাটনের দিকে বামে টার্নিং নিতেই ল্যাম্পপোস্টে টাস করে ধাক্কা মেরে থেমে গেল গাড়িটি। ভাগ্যিস গাড়ির গতি কম ছিল। শৌমিক ঋতুর কোল থেকে ফসকে যেতে যেতে রক্ষা পেল কোনমতে। শরৎ আর বৈশাখীর শরীরে চোট লাগলেও তা গুরুতর কিছু নয়। দু'জনই শৌমিককে জড়িয়ে ধরে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে; ঋতু আতঙ্কে কান্নাকাটি করছে। হঠাৎ শরতের খেয়াল হলো একটু তফাতে ফুটপাতে পুরোনো বস্তার স্তুপের মতো একজন মানুষ ডান দিকে কাত হয়ে শুয়ে আছে। মনে হচ্ছে তাদের এই দূর্ঘটনাটা ঘুমে কাতর মানুষটার গভীর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। মোবাইলের টর্চ লাইট অন করতেই শরৎ আৎকে উঠলো, বছর কুড়ির একজন মা গভীর মমতায় দেড়-দুই বছরের একটি শিশুকে বুকে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন। ঘুমের ঘোরে ছেড়া, পুরোনো শাড়িটি হাঁটুর উপরে উঠি উঠি করছে। বুকের আব্রু মোটামোটি ঠিকঠাক থাকলেও শ্বাস-প্রশ্বাসের জোয়ার ভাটায় অভূক্ত পেটের জেগে থাকা ঢেউ অন্ধকারে আছড়ে পড়ছে।
-- হ্যা, বৈশাখী-শরৎ দু'জনের বজ্রদৃষ্টিকে ঢেউগুলো দৃষ্টিহীন করে দিচ্ছে।
বৈশাখের সাথে কালবৈশাখী, শরতের সাথে কাশফুল এবং বজ্রপাতের সাথে বজ্রদৃষ্টি একাকার করে প্রকৃতির বৈচিত্র্য আর আগমনী সূরকে একসূতোয় বাঁধা না গেলেও পেট আর চক্ষুদৃষ্টির ভাষা খুব একটা বদলায় না; প্রকৃতির খিদে নেই, লোকচক্ষুর ভয় নেই, হিংসা কিংবা লোভ নেই। আছে সৃষ্টি আর ধ্বংসের নেশা।
মানুষের আছে পেটের চেয়ে সহস্রাধিক বড় খাবারের খিদে, যোগ্যতার চেয়ে লক্ষাধিক বেশি অর্জনের বাসনা। আছে জীবনকে জয় করে চিরজীবী হওয়ার নেশা। পেটের খিদের চেয়ে মন আর মস্তিষ্কের খিদে যখন অধিক মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তখন বুকের পাজরে বজ্রপাতের গরম সেঁক বিবেকের মিটমিট করা বাঁতিটাকে গলা টিপে হত্যা করে; চিরতরে।
তৃতীয়বিশ্ব
বিলাসবহুল প্রমোদতরীটি যখন ডাঙায় ভিড়লো তখন সূর্য ডুবুডুবু। লোকালয় থেকে একটু দূরে ছোট্ট একটি দ্বীপে একজন সেলিব্রিটির জন্মদিনের পার্টি ছিলো দিনব্যাপী। ঝিরঝির বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া বইছে। ঘাট থেকে উপরে উঠার সরু পাথর বিছানো রাস্তাটি ততক্ষণে কাদায় লেপটে আছে। দুপুর থেকে প্রায় শ'খানেক সাংবাদিক, টিভি ক্যামেরা আর দূর দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ এসে জড়ো হয়েছে প্রমোদতরী সচক্ষে দেখতে সাথে সেলিব্রিটি পরিবার।
তরীটি ডাঙায় ভিড়লো। সুঠাম দেহের সাতজন কালো কোট পরা সিকিউরিটির সাথে সেলিব্রিটি পরিবার তিন সদস্য। সামনে মা-মেয়ে আর পেছনে সেলিব্রিটি। অধীর আগ্রহে ডাঙায় অপেক্ষা করতে থাকা উৎসক চোখগুলো ততক্ষণে প্রমোদতরীকে ডিঙিয়ে মা-মেয়ের হাইহিল, সাদা হট প্যান্ট, ফর্সা উম্মুক্ত উরু, প্রায় উম্মুক্ত উন্নত বক্ষ এবং টাইট আউটফিটে আবদ্ধ। পেছনে, ক্লান্ত বদনে পা টেনে টেনে স্যুট-টাই পরে বার্থডে জেন্টেলম্যান হাঁটছেন।
সাংবাদিকরা পনেরো বছরের জাইকার ছবি তুলছে নানান ভঙ্গিতে, এঙ্গেলে আর ক্লোজ একশনে। যাদের ক্যামেরা-মোবাইল নেই তারা যতটুকু সম্ভব চোখের লেন্স ছোট্ট করে ফোকাস করছে আর মস্তিষ্কের ম্যামোরিতে তা জমা করছে।
"জাইকা ম্যাডাম একটা সর্ট প্লীজ, একটা সেলফি প্লীজ।"
কাদায় লেপটে যাওয়া হাই-হিলকে সামনে রেখে একটু দূরে রেঞ্জ রোভার
উৎসর্গ: গল্পটি আমার অত্যন্ত প্রিয়, সামুর অন্যতম জনপ্রিয় ব্লগার 'সোহানী' আপুকে উৎসর্গ করলাম।
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: প্রিয়, সাজ্জদা ভাই। প্রথম কমেন্টে আপনাকে পেয়ে ভাল লাগলো। শুভ কামনা আপনার জন্য।
২| ০২ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: অ সা ধা র ণ ।
আমার নতুন গল্প
সময়ের প্র য়ো জ ন পর্ব ১
লিংক Click This Link
এক বার ঘুরে আসার বিনীত অনুরোধ রইল।
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২০
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: রোকনুজ্জামান ভাই, আপনার গল্পটি অবশ্যই পড়বো।
৩| ০২ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:২৯
একদম_ঠোঁটকাটা বলেছেন: পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনি গল্পটি পড়েছেন জেনে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাই।
৪| ০২ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫
অচেনা হৃদি বলেছেন: চমৎকার !
আমার লাস্ট পোস্টটি আপনি দেখেননি । সেটা আপনি না দেখলে তো অপূর্ণ থেকে যাবে ! এখনি দেখার আমন্ত্রণ রইল ।
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: এই মাত্র ঘুরে আসলাম। গল্পটি পড়ে কেমন লাগলো? জানাবে কিন্তু!!
৫| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: হাহা! ভাইয়া, দারুন লিখেছেন
হটাত করেই বাংলাদেশে শুরু হওয়া এই Trend কিভাবে কিভাবে যেন এখন যে কোন গর্ভবতী মায়ের জন্য অবধারিত হয়ে গিয়েছে ঘটা করে বেবি শাওয়ার কর আর ফেসবুক এ পোস্ট কর আমরা বাঙ্গালী উৎসব প্রিয় জাতি, শুধু অনুষ্ঠান করার সুযোগ খুজি ।
তবে আমার প্রশ্ন, বেবি বুঝলাম কিন্তু শাওয়ার কেন ? যেখানে শাওয়ার এর কোন নাম গন্ধই নেই
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "হটাৎ করেই বাংলাদেশে শুরু হওয়া এই Trend কিভাবে কিভাবে যেন এখন যে কোন গর্ভবতী মায়ের জন্য অবধারিত হয়ে গিয়েছে ঘটা করে বেবি শাওয়ার কর আর ফেসবুক এ পোস্ট কর আমরা বাঙ্গালী উৎসব প্রিয় জাতি, শুধু অনুষ্ঠান করার সুযোগ খুজি।"..............
একদম ঠিক কথা বলেছেন, আপু। আমরা পশ্চিমাদের অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ভাল-মন্দ যাচাই বাচাই করতে পারি না। বেবি শাওয়ারের মত উদ্ভট একটা কালচার কেমনে অনুষ্টান সূচীতে আসে!!!
আর শাওয়ারের সাথে এই অনুষ্ঠানের যোগসূত্র কী? তা আমিও বুঝিনা।
৬| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: দারুন লিখেছেন
০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: সৌরভ ভাই, শুভেচ্ছা নেবেন। গল্পটি পড়ছেন জেনে ভাল লাগলো। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
৭| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১
কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: ভাইয়া, আপনার মন্তব্য আশা করছি
আমাদের প্রেম ও হিংসুটে চাঁদ
বিঃ দ্রঃ কাউসার ভাই, এই আনাড়ি লেখিকা আপনার গল্পগুলো পড়ে গল্প লেখায় উৎসাহ বোধ করছে
কি জানি কি করবো জানা নাই
তবে আপনি আমার পোস্ট এর গুরু, ভাই
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনার কবিতাটি পড়লাম, একখানা মন্তব্যও করলাম।
৮| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আপনার লেখা পড়ি । আসলে মন্তব্য করা হয়না। ভালো থাকবেন
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, স্বপ্নবাজ সৌরভ ভাই।
৯| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার গল্প।
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, রাজীব ভাই।
১০| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: সামুতে এত লেখক! আমি ছাড়া সবাই হিরো হইয়া গেল!!!
লেখকদের বড় বড় গল্প আর কঠিন কঠিন কবিতা গিলতে গিলতে আমি একদিন শ্যাষ হইয়া যামু!!!
আম্মুউউউ
শুধু টাইট লেগিন্স, জিন্স কেন হে?? স্কার্ট, প্লাজো, মশারি কোথায় গেল?
লিপসিং কি ভাইয়া??
বি. দ্রঃ পাঠকদের জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা করা হোক!
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: লেখকদের বড় বড় গল্প আর কঠিন কঠিন কবিতা গিলতে
গিলতে আমি একদিন শ্যাষ হইয়া যামু!!!
আম্মুউউউ (.................
(আমার গল্পের সাথে কবিতার মিল কোথায় পেলেন!! বিষয়টি ভাবনার!!!)
শুধু টাইট লেগিন্স, জিন্স কেন হে?? স্কার্ট, প্লাজো, মশারি কোথায় গেল?
লিপসিং কি ভাইয়া??
এতকিছুর মাঝে টাইট লেগিন্সটাই চোখে পড়লো!!! (রতনে রতন চিনে!!!)
১১| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬
যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: বেবি শাওয়ার!!!!! কি উদ্ভট সংস্কৃতি।!! মাফ চাই।
বরাবরের মত এক নিমিষে পড়ে ফেললাম। ধন্যবাদ
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: হ্যা, আসলেই উদ্ভট সংস্কৃতি।
১২| ০২ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
মিথী_মারজান বলেছেন: আহারে!
বেচারা শৌমিক!
হা হা হা।
ভালো লাগলো গল্পটা।
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: হ্যা, আপু ঠিকই বলেছেন।
বেচারা সৌমিক!!!
১৩| ০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আধুনিকতার নামে দেশে যা আসছে তাতে মরণব্যাধি এইডস ফেইল ।
০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৫
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন, ঠাকুরমাহমুদ ভাই। এটি এইডসের কার্বন কপি!! মহামারি!!!
১৪| ০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৫
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: লিপসিং কি ভাইয়া??
০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ৮:০৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
চোখ মারা, গানের সাথে ঠোট মেলানো।
ভাইয়া, বুইজতে পাইচ্ছেন!!!
১৫| ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ৮:০৫
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন:
এসব কাজ আমি ভালো পারি...
বি. দ্রঃ নাইকাটা আমার পছন্দ নয়!
০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ৮:১২
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
Amanda Knox..... (হলিউডি স্টাইল)
১৬| ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ৯:৩৫
পবন সরকার বলেছেন: আপনার গল্প লেখার হাতও ভালো, খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ
০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ৯:৩৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, পবন সরকার ভাই।
১৭| ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৯
ফাহমিদা বারী বলেছেন: গল্পটা পড়লাম কাওসার ভাই।
একেবারে সত্যি অনুভূতিটুকু যদি বলতে বলেন তাহলে বলবো, আমার কাছে গল্পের মান মোটামোটি মনে হয়েছে। আমি দুঃখিত। এজন্যই কেউ গল্প পড়তে বললে আমি বিব্রত হই। কারণ আমি সাধারণত খুশি করা মন্তব্য করতে পারি না।
বানানে সতর্কতা জরুরি।
থো(থ), জমজম (ঝমঝম), বল্ল (বললো), বল্লাম (বললাম), এক্কুনি (এক্ষুনি, এখুনি)।
চার বছরের বাচ্চার মুখে এই সংলাপ মানানসই মনে হয়নি।
শুভেচ্ছা আগামীর জন্য।
০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১১:০৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আপা। বানানের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর গল্পটি আপনার হয়তো ভাল লাগেনি। সবার সব লেখা/গল্প পছন্দ হওয়ার কথা নয়। আমিও অনেক নামকরা গল্পকারের কোন কোন লেখা পড়ে বুঝতে পারি না। আবার কখনো খুব কঠিন মনে হয়। কোন কোন গল্প মানহীন মনে হয়।
এটা ব্যক্তিগত পছন্দ/অপছন্দ থেকেও হতে পারে। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
১৮| ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
গল্প কই? আমি দেখছি, বেবী সাওয়ারের উপর একটা বর্ণনা; গল্প বলে মনে হয়নি, কোন প্লট নেই
০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১১:১১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য। এটা আমি গল্প হিসাবে লেখেছি, কাহিনীর বর্ণনা নয়। একটি গল্পের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য থাকার কথা তা এখানে সন্নিবেশিত করার চেষ্টা করেছি। যাক, আপনার হয়তো ভাল লাগেনি।
১৯| ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১২:৪২
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: স্ক্রিপ্টের মতো মনে হয়েছে। মূল চরিত্র শরৎ, বৈশাখীর জীবনের মাত্র কয়েকঘন্টার গল্প। উপস্থাপন ভালো লেগেছে।
০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১২:৫৯
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: পড়ায় ও মন্তব্যে ধন্যবাদ ভাই। এটা একটা ছোট গল্প। আর গল্পের মূল ফোকাস 'বেবি শাওয়ার' এজন্য শরৎ আর বৈশাখীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশী বর্ণনার সুযোগ নেই। বড় গল্প আর উপন্যাস হলে তাদের বিষয়ে আরো লেখার সুযোগ ছিল।
তবে কেন গল্পের বর্ণনা স্ক্রিপ্টের মতো মনে হলো বুঝলাম না।
২০| ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১:১৫
সোহানী বলেছেন: ও মাই গড........!!!!!!!!
হাঁ, ইদানিং কাওসার চৌধুরী নামের একজন দুই মাস বয়সী নবীন ব্লগার ব্লগে এসে পুরোপুরি ব্লগ কাঁপাচ্ছে। তার এমন কোন লিখা আলোচিত ও নির্বাচিত পাতায় যায়নি তা আমি এখনো খুজেঁ পাইনি। এই সিলেকশান শুধু গড়পড়তা নয়... তার লিখার বিষয়, লিখার মান, লিখার গভীরতা তাকে সেখানে নিয়ে গেছে। যা আমি তার অনেক লিখায়ই উল্লেখ করেছি। আমি আরো বলেছিলাম, যে কষ্টগুলো আমরা বলতে চাই, যে দু:খগুলো শেয়ার করতে চাই, যে অন্যায়গুলোতে আমরা দিন দিন অভ্যস্থ হবার পরে ও মনের কোনের দু:খগুলো চোখের কোনে জল হয়ে ঝরে পড়ার অপেক্ষায় থাকে....... সে সব কিছুই তার লিখায় পেয়ে যাই। আমাদের না বলা কথাগুলো সে বলে যায় অবলীলায়। সেই সাথে সহ ব্লগারদেরকে সন্মান ও চমৎকার প্রতিমন্তব্য তাকে নিয়ে গেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
এবার আসি লিখা প্রসঙ্গে.....
ফাহমিদা বারী বা চাঁদগাজী ভাই এটিকে গল্প বলতে নারাজ হলেও আমি এর মাঝামাঝি। ব্যাখ্যা করি, গল্পতে টুইস্ট বা বাঁক হয়তোবা নেই তাই গল্পের আবহ পাওয়া যায় না। কিন্তু এখানে একটি ম্যাসেজ আছে, একটি সামাজিক ম্যাসেজ আছে যা আমার ভালো লেগেছে। কারন আমি সবসময়ই সামাজিক অসঙ্গতিগুলোকে তুলে ধরার চেস্টা করি। এই যে উদ্ভট কিছু নতুন কালচার আমরা আমদানী করেছি হিন্দি চ্যানেলগুলো থেকে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত? এই সব উদ্ভট কালচার আমাদেরকে কি ভালো কিছু দিচ্ছে? বিষয়টি ভাবায় আমাকে ও।
সবার শেষে বিনীতভাবে বলতে চাই আমি সামুতে মোটেও জনপ্রিয় নই কারন আমার এসব সাধারন মানের লিখা শুধুমাত্র কিছু পাঠকদের ভালোবাসায় চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমি অনেক ভাগ্যবান কারন আমি অকৃত্রিম নি:স্বার্থ ভালোবাসা পেয়েছি এ ব্লগারদের থেকে। আর তাইতো দিনের পর দিন টিকে আছি এখানে।
সরি অনেক বড় মন্তব্য করছি.............. আমি সত্যিই আপ্লুত,গল্পের শেষে নিজের নামটি দেখে বারবারই মনে হচ্ছে আমি এতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য নই। তারপর বলি আমি খুব সু-কপালী.........হাহাহাহাহাহাহা........
অনেক অনেক ভালো থাকেন, প্রিয়তে নিলাম কারন সবাইকে দেখাবে হবে না
০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ২:৩২
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপু, এত বড় মন্তব্য আশা করিনি। সত্যি মনটা ভীষণ খুশি হয়ে গেল প্রিয় আপুর কাছ থেকে এমন একটি কমেন্ট পেয়ে। আমার ব্লগের বয়স সবে দুই মাস! বলা যায় সদ্য জন্ম নেওয়া একটি শিশু। ব্লগে আসার পর থেকে আপনি সহ ব্লগের শ্রদ্ধেয় গুণীজন, সিনিওর বিজ্ঞজন আমাকে যেভাবে আপন করে নিয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। শুধু বলবো, কৃতজ্ঞ। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
শ্রদ্ধেয় চাঁদগাজী সাহেবের মন্তব্যগুলো আমি সব সময় পজেটিভ ভাবে নেই। তিনি আমার শ্রদ্ধাভাজন গুণীজন। ভুলগুলো ধরিয়ে দেন বলে শুধরাতে পারি। আর ফাহমিদা আপার গল্পগুলো আমি নিয়মিত পড়ি। তিনিও আমার গুণীজন। আপার লেখা আজকের গল্পটিতে একটু সমালোচনা করেছিলাম, তাই হয়তো একটু কষ্ট পেয়েছেন, জানি না।
এখন আমার গল্পে আসি। যদিও আমাদের সাহিত্যে গল্পকে একটি নির্দিষ্ট ছকে ফেলা হয়। তবে বিশ্ব সাহিত্যে গল্পের ধরাবাঁধা কোন ছক নেই। ইংরেজি সাহিত্যের গল্পগুলো পড়লে তা বুঝা যায়, এখানে লেখকের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে। আধুনিক বাংলা গল্পের পথিকৃত বলা হয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি যখন গল্প লেখেন তখন সমসাময়িক লেখকরা তাঁকে নিয়ে টাট্টা মশকরা করতেন। স্বীকৃতি পেতে উনাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। হুমায়ুন আহমদ স্যার সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছেন উপন্যাস লেখে নয়, ছোট গল্প লেখে। উনার লেখার স্টাইল কারো সাথে মিলে না। কিন্তু পাঠক মুগ্ধ হয়ে উনার গল্পগুলো পড়ে। গল্পের ভাষা ও টুইস্টগুলো খুব সহজ হওয়ায় সব শ্রেণীর পাঠক তা বুঝতে পারেন। তিনি যখন প্রথম গল্প লেখা শুরু করেন, অনেকে এটিকে নিছক পাগলামি বলেছেন।
অনুগল্প, ছোট গল্প ও বড় গল্পের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। আমার গল্পটি যেহেতু ছোট গল্প তাই শুধু এ বিষয়টি নিয়ে বলবো। ছোট গল্পে প্রতিটি চরিত্রের গভীরে যাওয়ার সুযোগ নেই বড় গল্পের মত। এজন্য লেখককে বিষয়বস্তুর দিকে সবচেয়ে বেশি মনযোগী হতে হয়। আমি এ গল্পে তাই করেছি। এখানে ছোট ছোট অনেকগুলো টুইস্ট আছে। এর মধ্যে অন্যতম শরৎ ও বৈশাখীর চার বছরের চরিত্র শৌমিক।
এটা একটা ছোট গল্প। আর গল্পের মূল ফোকাস 'বেবি শাওয়ার' এজন্য শরৎ আর বৈশাখীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশী বর্ণনার সুযোগ নেই। বড় গল্প আর উপন্যাস হলে তাদের বিষয়ে আরো লেখার সুযোগ ছিল।
(৩) নং পার্টে গল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দেওয়া আছে। বিষয়টি হয়ত অনেকে খেয়াল করেন নাই। গল্পের প্রধান তিন চরিত্র- শরৎ, বৈশাখী এবং ঋতু। এ নামগুলো এমনিতে দেইনি। এগুলোর পেছনে যুক্তি আছে। শরৎ ও ঋতু আমাদের ষড়ঋতুর অংশ। বৈশাখ থেকে এসেছে বৈশাখী নামটি। তিনটি নামই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি ও বর্ষপঞ্জীর অবিচ্ছেদ্য অংশবিশেষ।
কিন্তু আমরা আমাদের নিজস্ব কালচার ভুলে এমন কিছু উদ্ভট পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানী করেছি যা আমাদের সমাজের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান। এজন্য বৈশাখী তার নামটির স্বার্থকতা ভুলে গেছে। ঋতু ও শরতের বেলায়ও তাই। গল্পের শেষ অংশে এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এজন্য তৃতীয় অংশটি বাদ দিলে গল্পের পূর্ণ স্বার্থকতা আসবে না।।
আপা অনেক কিছু লেখলাম যাতে সম্মানিত সহ ব্লগার ও পাঠকরা বিষয়টি বুঝতে পারেন। আমি মনে করি কঠিন কথাটি আরো কঠিন করে নয়, কঠিন কথাটি আরো সহজতর করে বলা ও সমাজে সুন্দর একটি ম্যাসেজ দিতে পারাটাই গল্পের সার্থকতা। আমি বড় মাপের অনেক লেখকের গল্প পড়ে কিছুই বুঝি না, আর আমি যা বুঝি না তা যত দামী সাহিত্য হোক না কেন আমার কাছে তার কোন গুরুত্ব নেই। আমি চাই সমাজের অল্পশিক্ষিত পাঠকও যাতে আমার লেখাগুলো পড়ে বুঝতে পারেন। সমাজের হাতে গোনা কয়েকজন পাঠকের জন্য উচ্চমার্গীয় লেখক হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই।
আপা, আবারও কৃতজ্ঞতা রইলো। আপনার প্রবাস জীবনটা সুখের হোক এই দোয়া করি। অনেক ভাল লাগা প্রিয় আপুটার জন্য।
২১| ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১:২৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ৩ নং পার্ট না দিলে গল্পটা সার্থক হত। নামের সাথেও মিল থাকত। প্রথম ২ পার্ট ভালো হয়েছে...
০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ১:৪৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয়ভাই। (৩) নং পার্টে গল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দেওয়া। বিষয়টি হয়ত আপনি খেয়াল করেন নাই। গল্পের প্রধান তিন চরিত্র শরৎ, বৈশাখী আর ঋতু। এ নামগুলো এমনিতে দেইনি। এগুলোর পেছনে যুক্তি আছে। শরৎ ও ঋতু আমাদের ষড়ঋতুর অংশ। বৈশাখ থেকে এসেছে বৈশাখী নামটি। তিনটি নামই আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি ও বর্ষপঞ্জীর অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কিন্তু আমরা এগুলো ভুলে এমন কিছু উদ্ভট পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানী করেছি যা আমাদের কালচারের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান। এজন্য বৈশাখী তার নামটির স্বার্থকতা ভুলে গেছে। ঋতু ও শরতের বেলায়ও তাই। গল্পের শেষ অংশে এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এজন্য তৃতীয় অংশটি বাদ দিলে গল্পের পূর্ণ স্বার্থকতা আসবে না।
২২| ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ২:১৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ!!
বেশ লাগলো পড়তে !!
আহারে বাবু টা ,ওর জন্য মন খারাপ লাগলো।
০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ২:৩৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপু, শুভেচ্ছা নেবেন। গল্পটি মনযোগ দিয়ে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। আপনার জন্য অনেক ভাল লাগা ও শুভ কামনা। সব সময় ভাল থাকবেন।
২৩| ০৩ রা জুন, ২০১৮ রাত ৩:৫৫
সোহানী বলেছেন: হাঁ সবই ঠিক আছে কাওসার ভাই। সাহিত্যকে সনেটের মতো করো তালি চাবি দিয়ে আটকাতে আমি কখনই পছন্দ করি না। আমার মনের সুখে আমি লিখি তা সাহিত্য হলো নাকি খিচুড়ি হলো তা নিয়ে আমি মোটেও ভাবি না এবং কাউকে ভাবতেও বলি না। তাই আপনার সাথে দ্বিমতের সুযোগ নেই।
শুধু যারা সমালোচনা করছে তাদের উদ্দেশ্যেই বলছিলাম যে কিছু না হোক একটি ম্যাসেজ এখানে আছে। আর শেষ প্যারাটা অবশ্যই চোখে পড়েছে কারন অনেক মনোযোগ দিয়েই লিখাটা পড়েছি। কিন্তু আমার কাছে সামাজিক এ ম্যাসেজটিই সবেচেয়ে গুড়ুত্বপূর্ন মনে হয়েছে। তাই সব কিছুকে ছাড়িয়ে এটির উদাহরনই দিলাম। আর গল্প যেকোনভাবেই হতে পারে। আপনার গল্পে হয়তো টুইস্ট নেই কিন্তু প্রতিটি চরিত্র এর আলাদা সত্বা আছে, তা নিয়ে ভাববার সুযোগ আছে। যা না বললেও অলিখিত আছে। যা আমার ভালোলেগেছে। আর ফাহমিদার বানান নিয়ে আমার সামান্য আপত্তি আছে কারন আবার ও বলি এটি ব্লগ পিউর সাহিত্য চর্চা নয়। নিজের মনের ডায়রীর ব্লগ তাই বানান নিয়ে মাথা না ঘামালে ও চলে, যা আমি খুব একটা ভাবি না।
০৩ রা জুন, ২০১৮ ভোর ৪:১৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপু, মন্তব্যটি আপনার পোস্টে করেছি কারণ, আপনি ব্লগের সিনিওর ও গুণী ব্লগার। পাঠকরা আপনার কমেন্ট পড়ে, আমার প্রতিউত্তর পড়বে। বিশ্বাস করেন, আপনি এত সুন্দর করে কমেন্ট করেছেন যা আমার সারা জীবনের পাথেয়।
আমি চাই সমালোচনা হোক গঠনমূলক, এতে লেখক নিজেকে শুধরাতে পারবেন। পাশাপাশি অনুপ্রাণিত হবেন। পৃথিবী বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস আজ থেকে চব্বিশো বছর আগে বলে গেছেন,
"কাউকে কঠিন করে প্রশ্ন না করে ভদ্রভাবে উত্তরটি জেনে নাও। এতে তার বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা হবে, বিষয়টি নিয়ে পুনরায় ভাববে এবং ভুল করলে শুধরাতে চেষ্টা করবে। এতে প্রশ্নকারীর প্রতি রেসপেক্ট বাড়বে।"......
আপু, ঈদের আগে নতুন একটি লেখা দেন, প্লীজ।
২৪| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ৮:২৩
মিরোরডডল বলেছেন: লেখাটা পড়ছি আর হাসছি কারন এটা আমারও হয়েছিলো । আমি ছিলাম শৌমিকের ভূমিকায় । লং লং টাইম ব্যাক আমি জানতাম না বেবি শাওয়ার কি । বাংলাদেশে থাকতেও না । এখানে এসেও না। আমি পার্টি গার্ল না। সাধারণত ক্রাউড এভয়েড করি । মনে পড়ে ২০০৬ এ আমার এক অস্ট্রেলিয়ান বন্ধু জোর করেই তার এক ফ্রেন্ড এর বেবি শাওয়ার এ নিয়ে গেল। অনেক সুন্দরি মেয়ে, নাইস ড্রেস, ফুড, গিফট কিন্তু বাবু নেই । আমার বন্ধু তার বান্ধবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। আমিতো সুপার সারপ্রাইজড। বন্ধু কে কানে কানে বললাম বান্ধবিতো এখনও প্রেগন্যান্ট । তুমি না বললে বেবি শাওয়ার? আমি ভেবেছি বাবুর প্রথম শাওয়ারের প্রোগ্রাম । তখন সে বলল বেবি শাওয়ার কি । Both of us laughed a lot. এখনও মনে পরলে হাসি। অনেকদিন পর আজ আপনার লেখা পড়ে সেটা মনে পড়ে গেল :-)
০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য। গল্পের সাথে আপনার জীবনের একটি ঘটনার মিল খোঁজে পেয়েছেন জেনে ভাল লাগলো। আমরা অতি অনুকরনীয় হতে গিয়ে এমন উদ্ভট কিছু কালচার আমদানী করছি যার সাথে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির অনেক অমিল। 'বেবি শাওয়ার' তার বাস্তব উদাহরণ। বেবি শাওয়ারের বেবি থাকে না, থাকে বেবি বাম্প!!! বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে একজন প্রেগনেন্ট মহিলা 'লাউ' সাইজের পেটটি আয়োজন করে সবাইকে দেখানোর মাঝে কী স্বার্থকতা তা আমার জানা নেই। তবে এতে সমাজের বা ভূমিষ্ট হতে যাওয়া বাচ্চাটির কোন উপকার হয় না। আমি এটাকে 'ভাড়ামি' বলি।
২৫| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: গল্পের মাঝে কিছু দু:খবোধ আছে। আমাদের নিজেকে ভুলে যাবার মত মসলা বিদ্যমান। আজকাল অনেক ছেলে পেলে বাংলা কি মাস চলে? এরকম প্রশ্ন করলে কিছুক্ষণ ভাবে! তারপর আমতা আমতা করে উত্তর দেয়।
০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "আজকাল অনেক ছেলে পেলে বাংলা কি মাস চলে? এরকম প্রশ্ন করলে কিছুক্ষণ ভাবে! তারপর আমতা আমতা করে উত্তর দেয়।".......
শাহাদাৎ ভাই, ঠিকই বলেছেন। আমরা অতি অনুকরণীয় হতে গিয়ে নিজেদের পুরোটা ভুলে বসে আছি। 'বেবি শাওয়ার' একটা ভাড়ামি ছাড়া কিছুই না।
২৬| ০৩ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ১:১০
জাহিদ অনিক বলেছেন:
সোহানী বলেছেন: ও মাই গড........!!!!!!!!
হাঁ, ইদানিং কাওসার চৌধুরী নামের একজন দুই মাস বয়সী নবীন ব্লগার ব্লগে এসে পুরোপুরি ব্লগ কাঁপাচ্ছে। তার এমন কোন লিখা আলোচিত ও নির্বাচিত পাতায় যায়নি তা আমি এখনো খুজেঁ পাইনি। এই সিলেকশান শুধু গড়পড়তা নয়... তার লিখার বিষয়, লিখার মান, লিখার গভীরতা তাকে সেখানে নিয়ে গেছে।
সোহানী আপু ভালো বলেছেন।
আমার কাছেও গল্প মোটামুটি লেগেছে।
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: জাহিদ ভাই, শুভেচ্ছা নেবেন। আপনি খুবই উঁচুমানের একজন লেখক। আপনার কবিতাগুলো সব সময় পড়ি। কিন্তু কবিতার ভাব কম বুঝি বলে সংকোচে তেমন কমেন্ট করা হয়না। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল, জাহিদ ভাই।
২৭| ০৩ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:২৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাইতো দেখছি- অলরাউন্ডার
একের পর এক ওভার বাউন্ডারী হাকিয়েই চলছেন অভিনন্দন!
চলুক ব্লগ বাস্টার ব্লগিং! সৃষ্টি আনন্দে!
++++
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ভাইজান কেমন আছেন? আপনি ভাই অনেক গুনী একজন লেখক। আপনার মত গুণীজন আমার লেখা মনযোগ দিয়ে পড়েন এটাই আমার সৌভাগ্য। অনেক শুভ কামনা প্রিয় বিদ্রোহী ভৃগু ভাই।
২৮| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কাওসার ভাই
নিন্দুকের কথায় দমে যাবেন না
গল্পটি যদিও আগের ভৌতিক গল্পের মতো
গোছানো নয় তবুও ভালো লেগেছে। আর একটা কথা
যদি কিছু মনে না করেন, ছোট গল্প ছোট পরিসরেই
হওয়া বাঞ্ছনীয়। টেনে বাড়াতে গেলে পড়ায় ক্লান্তি আসে।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
সোহানী আপুকে উৎসর্গ করা একদম সহি হয়েছে ।
০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ৯:৫১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, শ্রদ্ধেয় নূরু ভাই। উৎসাহ পেলাম। আপনার পরামর্শটি মনে রাখবো।
২৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ৮:১১
সোহানী বলেছেন: নুরু ভাই, আপনি সাড়ে তিন বছরে ১১২৯ টি পোস্ট করেছেন আর আমি সাড়ে দশ বছরে ১২৩ টি পোস্ট করেছি....হাহাহাহা বলেন কে শ্রেষ্ঠ!!! তাই আমি হলাম পাঠক লেখক আর আপনি হলেন সত্যিকারের লেখক। সাথে কাওসার ভাইতো আছেনই নতুন জনপ্রিয় লেখক..........।
০৪ ঠা জুন, ২০১৮ রাত ১০:০০
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপু চমৎকার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন-
"আমি সাড়ে দশ বছরে ১২৩ টি পোস্ট করেছি....হাহাহাহা বলেন কে শ্রেষ্ঠ!!! তাই আমি হলাম পাঠক লেখক আর আপনি হলেন সত্যিকারের লেখক।"......... ভাল লেখকরা সব সময় লেখেন কম, কিন্তু পড়েন অনেক বেশী। লেখকের দরকার কোয়ালিটি, কোয়ান্টটি নয়। আমি একজন কবিকে চিনি যিনি প্রতি বছর নিজের টাকায় একটি করে কবিতার বই বের করেন। এখন পর্যন্ত ১৭টি বই বাজারে এসেছে। কিন্তু কবির প্রতিভা ও কবিতার মান নিয়ে পাঠকের সন্দেহ আছে।
আপনি যে এ ব্লগের অন্যতম সেরা লেখক তা লাইক আর কমেন্ট পড়লেই বুঝা যায়। আমার আপুই প্রথম, আপুই সেরা।
৩০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২১
রাকু হাসান বলেছেন: আমি বরাবরের মত লেইট লতিফ আর কি ,অনেক পরে পড়লাম ।
০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ২:৩১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: লেইট লতিফ!! চালাকরা লেইটেই আসে চুপি চুপি। পড়ে শেষ রাতে!!! ধন্যবাদ, রাকু হাসান ভাই।
৩১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:২৯
নীল আকাশ বলেছেন: বড়ই দু:খ পেলাম। সমাজ যে ধীরে ধীরে অধ:পতনের দিকে যাচ্ছে এই গল্পটাই সেটার প্রমান। ২ দিনের ইংলিশ শিখে বাপ কে বলে ড্যাডি কুকুর কে বলে ডগি। নিজের স্বকিয়তা হারানোর মতো খারাপ আর কিছু হতে পারে না................
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৪৫
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
স্যরি, ভাই নটিফিকেশন না পাওয়ায় আপনার কমেন্ট দেখিনি; খোঁজে খোঁজে গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে৷শুভ কামনা রইলো ভাই৷
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:২০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ সুন্দর। পড়ে বিমোহিত হলাম।