নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় - সাদা আর নীল বিষের আঁধার (শিক্ষক রাজনীতি, শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণা ও নিয়োগ)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫১


ছোট বেলায় কালার (রঙ) চিনতে অনেক ঝামেলায় পড়তাম। এখনো পড়ি। তবে মেয়ে মানুষ না হওয়ায় বড়সড় প্রবলেম হয় না, পুরুষ বলে রক্ষা! মেয়েদের সবচেয়ে প্রিয় কালারগুলোর বেশিরভাগই আমি চিনতে পারি না। এটা কালার ব্লাইন্ডনেস কিনা জানি না। শুনেছি মানুষ কালার ব্লাইন্ড হলে লাল, সবুজ অথবা নীল রঙ চিহ্নিত করতে সমস্যা হয়; এমনকি যেসব রঙে অন্য রঙের সংমিশ্রণ আছে সেগুলো কালার ব্লাইন্ডরা দেখতে পায় না। তবে স্ট্রেইট কালারগুলো (সাদা, কালো, লাল, নীল, গোলাপী, বেগুণী, হলুদ ইত্যাদি) চিনতে সমস্যা হয় না। শুনেছি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ পৃথিবী বিখ্যাত অনেক মানুষ কালার ব্লাইন্ড ছিলেন।

কালার নিয়ে আবার কিছু বিশেষ কথা প্রচলিত আছে।
যেমন- নীল দংশন, সাদা বক ও গোলাপী এখন ট্রেনে ইত্যাদি।

আজ আমি সাদা X(; নীল X(; গোলাপী X(; নিয়ে লেখবো।

সাদা, নীল আর গোলাপী- এগুলো শুধু রঙের প্রতীকই নয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিভাজনের প্রতীকও বটে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা আর নীল প্রতীকটা যতটুকু দৃশ্যমান গোলাপী সে হিসাবে তেমন পরিচিত নয়। এই বিভাজন, এই দলবাজি, এই নীতিহীন কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়েেবৃত্তি আর সামান্য ব্যক্তি স্বার্থের কারণে। শিক্ষকদের এ অনৈতিক রাজনীতিতে কোন্দল, উপদল, বিরোধী দলও আছে X(। শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, ডিন, সিনেট ও সিন্ডকেট নির্বাচনে এ দলাদলি স্পষ্ট ফুটে উঠে। দলাদলি আর রাজনৈতিক খুঁটির জোরে শিক্ষকদের মধ্যে পরস্পরে কিল-ঘুসি; চড়-থাপ্পড় এবং কলার ধরে টানাটানির ম্যারাথনে অংশ নিতেও দেখা যায়।

হায়রে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড X(

১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় এ্যক্ট অনুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান; এজন্য দেশের যে কোন বিষয়ে শিক্ষকদের স্বাধীন মতামত দেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু তাই বলে রাজনীতি; পলিটিক্যাল দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি X(? আশির দশকের প্রথম দিকে নীল আর গোলাপীর অস্তিত্ব থাকলেও এরশাদের আমল থেকে সাদা দলের আবির্ভাব ঘটে। প্রথম দিকে সাদা দলটি কিছুটা নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও এখন দলীয় রাজনীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তবে গোলাপীরা এখন কোনঠাশা, ট্রেনটি এক্কেবারে থেমে না গেলেও যাত্রীর অভাবে জং ধরেছে। এখন শুধু সাদা আর নীলের রাজত্ব!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রধান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। একটা সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনীতি সচেতনতা, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণার ঐতিহ্য ছিল। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক সময় বিদেশীরাও সম্মানের চোখে দেখতো; প্রাচ্যের অক্সফোর্ডও বলা হতো। যে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক দিকনির্দেশনার অন্যতম কেন্দ্র; সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এখন রাজনৈতিক দলের লেজুড়ভিত্তি চলে প্রকাশ্যে X(

উপদল ও কোন্দলের স্বর্গভূমি।

শুধু কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়?

শিক্ষা, গবেষণা, পাঠদান, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আরো উৎকর্ষ সাধনের পথ ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি এবং ব্যক্তিগত পদ-পদবী আর দলাদলির স্বার্থে শিক্ষকরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য পৃথিবীর সেরা দুই হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে বাংলাদেশের একটিও নেই। ভবিষ্যতে যে তালিকায় আসবে তার কোন লক্ষণ দেখছি না। রাজনীতি বাদ দিয়ে শিক্ষকরা গবেষণায় মনযোগ না দিলে সে সম্ভাবনা নেই।


গত নয় বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। নিয়োগ পেয়েছেন ৯০০ জনের অধিক শিক্ষক! এ নিয়োগটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হলে খুশি হতাম; কেননা শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ও মান উন্নীত হয়। কিন্তু বিভিন্ন উৎস থেকে শুনা যায়, এসময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য। এই সংখ্যাটা সম্ভবত গিনজ বুকে স্থান পেতে পারে। দল ভারী করার জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় তখন শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়টা মূখ্য হয়ে উঠে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি। এমনও অভিযোগ আছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছাড়াই কোন কোন ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সত্যি বেদনাদায়ক।

এমন নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সাথে চরম বেমানান, বিব্রতকর। শিক্ষকরাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেরুদণ্ড। আর শিক্ষকের প্রধান যোগ্যতা হলো তাদের অর্জিত জ্ঞান এবং গবেষণার ফলাফল; রাজনৈতিক পরিচয় কোন অবস্থাতেই একজন শিক্ষকের যোগ্যতা হিসাবে বিবেচ্য হতে পারে না। এ ধারা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, দেশের সবকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষক প্রত্যক্ষভাবে দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তরুণ শিক্ষকরা রাজনীতি করেন অপেক্ষাকৃত ভাল বাসস্থান, স্কলারশীপ ও সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার আশায়। আর বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ শিক্ষদের লক্ষ্য থাকে প্রক্টর, প্রভোস্ট, ডিন, উপ-উপাচার্য, উপাচার্য এবং বিভিন্ন সংস্থা বা কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার।

বাংলাদেশের প্রায় সবকয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায় ও সুপারিশে। যে দলীয় সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তাদের মতাদর্শের আলোকে শিক্ষক নিয়োগ হয়। এছাড়া ক্লাসে ফাস্টক্লাস ফাস্ট হতে আছে অনেক স্বজনপ্রীতি। কোন কোন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগও মাঝে মাঝে শুনা যায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নতজানু থাকে। শিক্ষক রাজনীতির আড়ালে লাল দল, নীল দল নামে রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এখানে ভাল শিক্ষক হওয়ার প্রচেষ্টার চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে খুশি রাখার প্রতিযোগিতা বেশি হয়।

একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পদায়ন ও মর্যাদা যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় হয় তখন সেখানে গবেষণা ও সুষ্ঠু পাঠদান মুখ্য বিষয় থাকে না। আর এটাই হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ধ্বংসের সবচেয়ে সহজ পথ। এতে ভাল মানের শিক্ষকরা গবেষণায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলশ্রতিতে আমরা পাই আন্তঃসার শুণ্য একদল শিক্ষক, গলাবাজ অধ্যাপক, মেরুদণ্ডহীন জাতির বিবেক। শুনা যায় অনেক শিক্ষক অন্যের গবেষণা কর্ম শতভাগ নকল করে ধরা পড়েছেন। রাজনীতি যেখানে মান মর্যাদা আর রুটি রুজির প্রধান হাতিয়ার সেখানে অন্য শিক্ষকের গবেষণাকর্ম চুরি হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতিটাই তো বেশিরভাগ শিক্ষকের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু।

বিষয়ভিত্তিক গবেষণার সময় কই!

এজন্য সব সময় ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। ছাত্ররা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি বাদ দিয়ে রাজনৈতি দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি করে তখন এ রাজনীতি ছাত্রদের কোন কল্যাণে আসে না, জাতির কোন ভাল কাজে আসে না। তাদের মনে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও প্রতিহিংসা সংক্রমিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র রাজনীতির প্রধান আখড়া। আর এসব রাজনৈতিক কর্মীদের অনেকেই কোন মতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে হয়ে যান বিশববিদ্যালয়ের শিক্ষক; এখানে নিয়োগে শিক্ষা ও গবেষণায় কৃতিত্বের কোন দরকার নেই। থাকতে হয় খুঁটির জোর আর রাজনৈতিক দলের পরিচয়।

ছাত্ররা যখন রাজনীতি, প্রতিহিংসা, টেন্ডারবাজি আর হল দখল/বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে তখন গবেষণার মতো কঠিন কাজ একান্ত মনে করতে পারে না। আর এসব ছাত্ররা যখন শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পান তখন নিজেকে রাজনীতি থেকে আলাদা করতে পারেন না। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ও পাঠদানে নিজের অজান্তেই ছাত্রদের রাজনৈতিক পরিচয় মূখ্য হয়ে উঠে তার কাছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা নয়। একজন শিক্ষকের কাছে একজন ছাত্রের পরিচয় শুধুমাত্র 'ছাত্র' হবে। অন্যকোন পরিচয় থাকতে পারে না।

ফলশ্রুতিতে........
(..........ছাত্র.........শিক্ষক.........রাজনীতি..........)
একটি চক্রে আবর্তিত হতে থাকে।

যদিও তা হওয়ার কথা ছিল...........
..........ছাত্র..........শিক্ষক..........পাঠদান..........গবেষণা..........।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩টি অনুষদ, ৮২টি বিভাগ, ১১টি ইন্সটিটিউট এবং ৩৯ টি গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়েও এতো বিভাগ নেই। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টে যেমন হাজার হাজার এ+ দেখা যায় তেমনি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন নতুন বিভাগ খোলে সংখ্যার হিসাবে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। এটাও কিন্তু কম না! আর ৩৯টি গবেষণা ইন্সটিটিউটে কী গবেষণা হয় জানা নেই। সংখ্যার দিক দিয়ে এটাও কিন্তু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ডিঙিয়ে গেছে!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষক পৃথিবীর নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সহ অনেক উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ কেমন? ছাত্রদের সাথে শিক্ষকদের সম্পর্ক কেমন? গবেষণা ও পাঠদানের ধরণও নিশ্চয় তারা জানেন। তাহলে দেশে ফিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার পর এগুলো কী ভুলে যান? যতদূর জানি গবেষকদের স্মৃতিশক্তি ও বিবেক অনেক প্রখর থাকে। যদি নিজেকে পরিবর্তনই না করা যায় তাহলে শুধু শুধু বিদেশে গিয়ে গবেষণাকর্ম করে তো কোন লাভ নেই, তাই না?

নাকি দেশে ফিরেই উনারা আগের মতো "ছাত্র-শিক্ষক-রাজনীতি" এর দুষ্ট চক্রে পড়ে যান?

লন্ডনের ব্লুমসবারিতে অবস্থিত পৃথিবী বিখ্যত "ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন" (UCL)-এর ক্যাম্পাস। ২০১৭/১৮ সালের QS ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি রেঙ্কিংয়ে পৃথিবীর সপ্তম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় (অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজের সম মানের)। ক্যাম্পাসের ভেতরে তিন মাস চাকরি করার পর জানতে পারি এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কোনদিন দশজন ছাত্রকেও এক সাথে হই হুল্লোড় করতে দেখিনি। কে শিক্ষক কে ছাত্র চেনার কোন উপায় নেই। শিক্ষকরা সার্বক্ষণিক পাঠদান ও গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত। ছাত্ররাও তাই।

লন্ডনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে গিয়ে দেখেছি কে ভিসি, কে ডিন, কে প্রক্টর কেউ চেনে না। আর চেনার প্রয়োজনও নেই। শিক্ষকদের এত এত পদ-পদবীও নাই। থাকলে গবেষণা বাদ দিয়ে শিক্ষকরা এসব পদ নেবেন না বলে আমার বিশ্বাস। নেই রাজনীতির কোন চর্চা। নেই প্রতিহিংসা, পদ-পদবীর দৌড়ঝাপ। সেখানে ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলেও কেউ এর অপব্যবহার করে না। ছাত্রীরা নিরাপত্তার অভাববোধ করে না!

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক তরুণ শিক্ষক বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন না নোংরা রাজনীতির ভয়ে। ফিরলেও পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ পান না। আর ভাল কিছু করলে রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলে সেভাবে মূল্যায়িত হন না। এতে তারা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন, হতাশ হন। উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন।

অনেক শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে উচ্চশিক্ষার নামে বছরের পর বছর বিদেশে থাকেন; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা সহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাও নেন। এদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আর দেশমুখী হন না; বেতন ভাতার টাকাও ফেরৎ দেন না। এটা দুঃখজনক।

বিশ্ববিদ্যালয় হল গবেষণার জায়গা। সারা পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাই করা হয়। সেসব দেশে শিক্ষকদের রাজনৈতিক পরিচয় নেই। স্বজনপ্রীতি নেই। তাদের শিক্ষকতার মান ও গবেষণার উপর নির্ভর করে তাদের মর্যাদা ও পদোন্নতি। আর আমাদের দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গবেষণা বাদ দিয়ে অন্যের লেখা কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। স্বনামধন্য কিছু শিক্ষক অন্যের গবেষণাপত্র হুবহু নকল করে ধরা পড়েছেন। এটা সত্যি জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জিত করেছে।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক? উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।


এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাস্টক্লাস ফাস্ট হওয়া মানে ভাল শিক্ষক হওয়ার গ্যারান্টি বুঝায় না, এটা নিয়োগ দাতাদের বোঝা প্রয়োজন।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কোন রাজনৈতিক দল নয় যে বাছ বিচার না করে কর্মী হিসাবে নিয়োগ দেবেন। লন্ডনে দেখেছি যদি কোন ছেলে/মেয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে নিতে চায় তবে ছাত্র জীবনে অত্যন্ত সতর্ক থাকে, যাতে কোন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বা সামাজিক বিশৃংখলার কোন রেকর্ড না থাকে। আমার এক ব্রিটিশ বন্ধু তার বান্ধবীকে সামান্য শারিরিক নির্যাতনের রেকর্ড থাকায় সেকেন্ডারী স্কুলের শিক্ষক হওয়ার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিল। আর আমাদের এখানে চান্দাবাজ ছাত্র, রাজনৈতিক গুন্ডা, অস্ত্রবাজ ছাত্র, মামা-চাচার প্রভাব, মন্ত্রী/এমপিদের সুপারিশ ইত্যাদি হল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার অন্যতম প্রধান যোগ্যতা।

একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে অবশ্যই ভদ্র, বিনয়ী, ধৈর্যশীল, গবেষক, পরিশ্রমী হতে হবে। থাকতে হবে সুন্দর ও সাবলীল উচ্চারণ, আকর্ষনীয় বাচনভঙ্গী ও ব্যাক্তিত্ব। হতে হবে রাজনৈতিক দলের পরিচয়মুক্ত কিন্তু রাজনীতি সচেতন। ছাত্র/ছাত্রীদের শ্রদ্ধা অর্জন করার যোগ্যতা। সিলেবাসের বাইরে গিয়েও সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও দৈনন্দিন ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর উপর নজর রাখা এবং এসব বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের জ্ঞানদান করা। অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষন করা, সঠিক সময়জ্ঞান থাকা, চরিত্রবান হওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্চন্ন পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করাও একজন শিক্ষকের ভাল শিক্ষক হওয়ার অন্যতম যোগ্যতা।

সবচেয়ে অবাকের বিষয় বিশ্বের নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দেশের অসংখ্য প্রফেসর, রিসার্চার আছেন। এরা এই নোংরা রাজনীতি ও স্বজনপ্রীতির জন্য দেশে ফিরে আসে না। এভাবে প্রতি বছর মেধা পাচার হয়। আর এই সুযোগে গলাবাজ আর সুযোগ সন্ধানীরা শুণ্যস্থান পূরণ করে। পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ গবেষক বিদেশী। সেসব দেশ জানে কিভাবে গুণীর মর্যাদা দিতে হয়। এজন্য এই গুণীরাই তাদের আবিষ্কার ও দর্শন দিয়ে নিজ দেশের পরিবর্তে সেসব দেশের উন্নয়নে অবদান রাখেন। আমরা করি মেধাবীদের দেশ ছাড়া, আর ওরা মেধাবীদের বিভন্ন দেশ থেকে জড়ো করে দেয় নাগরিকত্ব! পাশাপাশি পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ করে দেয়। এজন্যই তারা আমাদের চেয়ে দুইশত বছর এগিয়ে। তারা জানে কিভাবে গভীর সমুদ্র থেকে মুক্তা আহরণ করতে হয়।

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক উচুমানের শিক্ষক ও গবেষক আছেন। যাদের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান থাকে শিক্ষা ও গবেষণায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা। এমন অসংখ্য শিক্ষকের সান্নিধ্য আমি পেয়েছি। উনাদের চেহারা চোখের সামনে ভাসলে একটা বাড়তি অনুপ্রেরণা পাই। দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা অটোমেটিক অবনত হয়। তাদের জ্ঞানগর্ব কথাগুলো আমাদের জীবন চলার খোরাক যোগায়, গবেষণায় আগ্রহ যোগায়, দেশপ্রেমে উদ্ভোধ্য করে, বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে সাহস যোগায়। আমার এ লেখাটি এসব খাঁটি মানুষ গড়ার কারিগরদের বেলায় প্রযোজ্য নয়।

একটি কথা না বল্লেই নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের (রঙ ধারী) একটি অংশ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসাবে নিজেদের পরিচয় দেন। তাহলে অপর পক্ষ কী স্বাধীনতার বিরোধী? যতটুকু জানি স্বাধীনতার বিপক্ষে দেশের কোন মানুষ স্পষ্ট অবস্থান নিলে তা দেশদ্রোহীতার শামিল। তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশো শিক্ষক রাজাকার? হায়রে প্রতিহিংসা আর বিভাজনের রাজনীতি! দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠও এখন বিভাজন আর প্রতিহিংসার চরণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

একটি শিশুর হাতে বিপজ্জনক আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেয়া আর শিক্ষকদের মাথায় রাজনীতির প্যাচ ঢুকিয়ে দেওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয়ই ধ্বংস ডেকে আনে, সৃষ্টি নয়। একজন শিক্ষককে আমরা রাজনীতিবিদ নয়, শুধুমাত্র শিক্ষক ও গবেষক হিসাবে দেখতে চাই। শিক্ষকদের রাজনীতি নয়, শিক্ষানীতির মধ্যে থাকতে হবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাদ দিয়ে রাজনীতি/দলাদলি আর প্রতিহিংসার বীজ রোপন করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে 'বিশ্ব' শব্দটি জুড়ে দেওয়া বেমানান। শুধু 'বিদ্যালয়' লেখলেও স্কুলটির জন্য অপমানের।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড; আর এই মেরুদণ্ডের কারিগরেরা যখন মেরুদণ্ডহীন হন; তখন জাতির মেরুদণ্ডে ঘুণে ধরে, পঁচন ধরে। কারণ, এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করে; সচিব, ডিসি, এসপি, জেনারেল, এমপি, মিনিস্টার হয়। শিক্ষকদের নীতি ও আদর্শে গাফলতি থাকলে তা অটোমেটিকভাবে ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত কর। ফলস্বরুপ আমরা পাই একদল ঘোষখোর, নীতিহীন, বিবেকহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন আমলা ও রাজনীতিবিদ।

তবে, সত্যিকারের শিক্ষকরা ভাল যা দেখে তা থেকেই তাঁরা নিংড়ে নেয় প্রকৃত শিক্ষা; শিক্ষকতা ও গবেষণা তাদের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান। "মনে প্রাণে যারা শিক্ষক, বিবেক তাঁদের সদাই জাগ্রত।"



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

চাইলে পড়তে পারেন-
আমার সবচেয়ে পঠিত, লাইক ও কমেন্ট প্রাপ্ত পোস্ট।
গল্প লেখার সহজ পাঠ
সবচেয়ে পঠিত প্রবন্ধ।
আধুনিক কবিতার পাঠ (সমালোচনা)
আলোচিত ফিচার 'দি লাঞ্চিয়ন'।
ব্রিটেনের প্রবাস জীবন- স্মৃতিকথা।
সবচেয়ে পঠিত গল্প।
সবচেয়ে লাইকপ্রাপ্ত গল্প।
ছবি ব্লগ (লন্ডনের ডায়েরি-১)।

মন্তব্য ৮২ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৮২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:০৮

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:



সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দলাদলি। আহমেদ ছফার "গাভী বৃত্তান্ত" পড়িলে ইহাদের রূপ আরো পরিষ্কার হয়!

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, ভ্রমরের ডানা ভাই, আহমেদ ছফার "গাভী বৃত্তান্ত" বইটি সম্বন্ধে কিছুটা জানলেও বইটি পড়া হয় নাই; হাতের কাছে পেলেই বইটি পড়ার ইচ্ছা আছে। প্রথম কমেন্টে আপনাকে পেয়ে ভাল লাগলো।

শুভ রাত্রি।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



লন্ডনের UCL ক্যাম্পাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে আপনি লিখেছেন, "ক্যাম্পাসের ভেতরে তিন মাস চাকুরী করার পর জানতে পারি এটি একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস"!

- ৩ মাস চাকুরী করার পর জানলেন যে, এটি একটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস? জানার আগ অবধি (৩ মাস), কোথায় চাকুরী করছিলেন বলে আপনার ধরণা ছিলো?

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ওখানকার একটি আবাসিক হোটেলে চাকরি করতাম (এটি লন্ডনের সবচেয়ে বড় ত্রি-স্টার হোটেল); এটি রাসেল স্কয়ারে অবস্থিত। আর হোটেলটির সামনের পুরো এলাকা জুড়ে UCL ক্যাম্পাস। পাশে একটি পার্ক ছিল; এছাড়া ক্যাম্পাসের মাঝে মাঝে মানুষের বাসা, বাড়ি ছিল। আমি যে হোটেলে চাকরি করতাম তার পাশে অনেকগুলো বড় বড় আবাসিক হোটেল ছিল। সবই ছিল UCL ক্যাম্পাসের একটি পাশে। আপনি সারাদিন যদি এ এলাকায় হাঁটাচলা করেন তাহলে কখনো ঠার হবে না, এটি একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। এমনকি যারা হোটেলে উঠে তারাও জানে না এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয় আছে। নেই কোন হইচই, নেই দল বেঁধে ছাত্রদের আড্ডা; এগুলো আমাকে অবাক করেছে। এজন্য আমি জানতে পারি নাই এটি UCL ক্যাম্পাস।

শুধু UCL নয়; লন্ডনের বিখ্যাত সব ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস প্রায় একই রকম।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৩

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এটা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক আখড়া।। আর গুড় খাওয়ার খাওয়ার জন্য বিভিন্ন দল থেকে নেয়া/কেনা হচ্ছে শিক্ষক!!
এরা ব্যস্ত আপনার বর্নিত লেখায়।। ছেলেদের শিক্ষা দেবার সময় কোথায়??!! সেখানে ছাত্ররাও এই সুযোগটিই নেয়।।
আবার ছাত্ররাও ক্লিন না।। "বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে" শিক্ষকদের হাতে রাখছে।।
লিখতে গেলে অনেক কিছুই লেখা হয়ে যাবে।। তাই বিরত হয়ে শুধু ভাললাগাটুকু জানিয়ে গেলাম, মনের কথাগুলো লেখার জন্য।।+++
লেখে যান এমনই করে।। শুভেচ্ছা সাথে থাকবে।।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, সচেতনহ্যাপী ভাই। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১ হাজার ৯৯২ জন শিক্ষকের হাজারের অধিক শিক্ষকই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত জাতীয় রাজনীতির প্রধান দু'টি দলের সঙ্গে। তরুণ শিক্ষকরা রাজনীতি করেন অপেক্ষাকৃত ভালো থাকা, একটি বাসস্থান, স্কলারশিপের ছুটি, সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার জন্য। অনেকেই ইচ্ছার বিপরীতে রাজনীতির টেবিলে বসেন। বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিক শিক্ষকদের লক্ষ্য থাকে প্রক্টর, প্রভোস্ট, ডিন, উপ-উপাচার্য, উপাচার্য, বিভিন্ন সংস্থা বা কমিশনের চেয়ারম্যান পর্যন্ত।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি দায়িত্বশীল পদে বসা শিক্ষকের সবাই জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ বিষয়ে একজন প্রবীণ শিক্ষকের মন্তব্য, ‘শিক্ষক হতে অনেকে তদবিরের সময় একই রাজনীতির লোক বলে নিজেকে জাহির করে পরে অন্য দলে সুইংও করছেন!! এমনসব বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ পড়ানোর মান ও গবেষণা কাজ দুই ক্ষেত্রেই দ্রুত অবনমন ঘটেছে। দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই এমন অবস্থার বাইরে নয়। ’

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৫০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভালো একটা বিষয় তুলে এনেছেন। আমাদের ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক রাজনীতিও বন্ধ করতে হবে। অবাক লাগে, কীভাবে একজন শিক্ষক হয়ে ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতির চর্চা চালিয়ে যান তেনারা। আবার তেনারাই আবার নিজ নিজ দলের ছাত্র সংগঠনকে লাই দেন! আজকে এ কারণেই কোন ন্যায্য আন্দোলনেও তেনারা দুই ভাগ হয়ে যান দুই দলের লেজুড়বৃত্তির কারণে। সবাই রাজনীতি করলে দেশ এগুবে না। এতে বিশৃঙ্খলা হবে। রাজনীতি করতে হলে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে করতে হবে...

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:১১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, ভাই। চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রধান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, যার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনীতি-সচেতনতা, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং উচ্চমানের শিক্ষা-গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ঐতিহ্য ছিল। এ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক দিকনির্দেশনার অন্যতম কেন্দ্র, সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এখন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি, এমনকি একই দলের ভেতরে উপদলীয় কোন্দল ন্যক্কারজনক মাত্রা অর্জন করেছে।

শিক্ষা-গবেষণা, পঠনপাঠন, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে বিদ্যাপীঠ হিসেবে আরও উৎকর্ষ সাধনের পথ ছেড়ে ব্যক্তিগত বৈষয়িক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সংকীর্ণ ও অসংস্কৃত দলাদলিতে লিপ্ত হয়ে যে শিক্ষকেরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষকসমাজের যে অংশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধ্বংসপ্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন কিন্তু এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে আগ্রহ বোধ করে না, এখন তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় হওয়ার সময় এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির বাইরে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে সচেতন ছাত্রসমাজকে, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন বিদ্যার্জনের মাধ্যমে উন্নত জীবন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত অবক্ষয় রোধ করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ সক্রিয়তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

শুভ রাত্রি।

৫| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৫৭

রাকু হাসান বলেছেন: আমাদের গ্রামের মেম্বার .পাড়ার সাধারণ মোড়ল থেকে শুরু করে সকল উচ্চ স্তরের ব্যক্তিবর্গ নিয়োগে রাজনৈতিক বিষয়টা ই আগে দেখে । কি বলি আওয়ামী বা বিএনপি । সবই এক গোয়ালের ই । কম বেশি থাকতে পারে । বলা হয় স্বায়ত্তশাসিত কিন্তু কার্যত কতটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না । সাম্প্রতিক ঢাবির ভিসির অবস্থান দেখলেই পরিষ্কার । সর্ব অঙ্গে গাঁ আমাদের ঔষধ কোথায় দিবেন ? অনেকে মেধাবী ,পরিশ্রমী থাকলেও সুযোগ পাচ্ছে না ,দিচ্ছেও না । ব্যাপক সংস্কার দরকার ,উদারতা ,ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা দরকার কোন সরকারের কিন্ত সে রকম আশা করতেও আকাশ কুসুম লাগছে আমার ,তবু আশাবাদী হই ....

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



লেখাটি পাঠে এবং কমেন্টে ধন্যবাদ প্রিয় রাকু হাসান ভাই। দেশে বর্তমানে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে রাজনীতি চর্চা এতটাই জোরালো যে এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন রাজনীতি চর্চার চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষকরা এখন দলীয় রাজনীতি করেন নানা কারণে। শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে, সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য হতে, প্রাধ্যক্ষ-ডিন-প্রক্টর ও উপাচার্য হতে লাগে দলীয় পরিচয়।

বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বড় বড় পদ পেতে লাগে দলীয় পরিচয়। তাই শিক্ষকদের নিয়োগ থেকে শুরু করে অবসর পর্যন্ত পুরো শিক্ষকতা জীবনেই যুক্ত থাকতে হয় দলীয় রাজনীতির সঙ্গে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে চাকরি শেষে অনেকে আবার পেয়ে যেতে পারেন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন। সুতরাং রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে সুবিধা অনেক। তবে বিরোধীদলীয় রাজনীতি যারা করেন, সুযোগের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় দল ক্ষমতাসীন হওয়া পর্যন্ত। তবে রাজনীতি থেমে থাকে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির হাওয়া-বাতাস লেগে থাকে প্রায় সারা বছর। সিনেট ও সিন্ডিকেট নির্বাচন, ডিন ও উপাচার্য নির্বাচন, শিক্ষক সমিতি নির্বাচন- এসব নির্বাচনই শিক্ষকদের রাজনীতি চর্চায় নিয়োজিত রাখতে বা থাকতে সাহায্য করে। এসব নির্বাচনে শিক্ষকদের বিভাজনটাও চমৎকার।

রাজনীতির রঙ লাগানোর ফলে শিক্ষকদের রয়েছে তিন রঙ- বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক শিক্ষকরা সাদা, আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকরা নীল ও বাম মোর্চার সমর্থক শিক্ষকরা গোলাপি রঙ নিয়ে নামেন নির্বাচনের মাঠে। এ রঙ শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে সরাসরি ব্যবহার করা হয়। তবে শিক্ষকদের অন্যান্য নির্বাচনেও এ রঙ কাজে লাগে। এ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকার ফলে অনেক শিক্ষক শিক্ষা ও গবেষণা কাজে সময় দিতে পারেন না। রাজনীতি মুখ্য হয়ে ওঠে বলে শিক্ষা ও গবেষণা গৌণ বিষয়ে পরিণত হয়। এভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।

শুভ রাত্রি।

৬| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৭

জোবাইর বলেছেন: চমৎকার লেখা! ইদানীং শিক্ষক নিয়োগও হচ্ছে দলীয় যোগ্যতায়। সুতরাং ভবিষ্যতে শিক্ষকেদের দলবাজি বাড়া ছাড়া কমবে না। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এটা বড়ই অশনিসংকেত!

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, জোবাইর ভাই। আমার ব্লগে সম্ভবত প্রথম কমেন্ট করেছেন; এজন্য কৃতজ্ঞতা রইলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের গত তিন বছরের মধ্যে এবং নতুন বিভাগগুলোয় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারপন্থী নীল দলের শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ক্ষমতায় থাকা অংশটি নিজেদের পছন্দ ও অনুগত শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়াতে অনেক অনিয়ম করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষকের সংখ্যা ১ হাজার ৯৯২।

উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সাড়ে ৮ বছরের মেয়াদে মোট ৯০৭ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেষ তিন বছরে নিয়োগ পেয়েছেন ৩৫০ জন। শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে এবং যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অন্তত ৭৮ জন এবং এবং ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ না করেই দুই বিভাগে নিয়োগ পেয়েছেন ১০ জন। আর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সংখ্যার চেয়ে দুই বা ততোধিক অতিরিক্ত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪১ জনের ক্ষেত্রে। স্নাতকোত্তর ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছেন অন্তত তিনজন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শিক্ষক নিয়োগে এমন অনিয়মের পেছনে ক্ষমতাসীনদের সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। নীল দল এখন দুটি ভাগে বিভক্ত। এর একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক, অন্য অংশে আছেন বর্তমান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাকসুদ কামালসহ নীল দলের কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা।

আরেফিন সিদ্দিক তৃতীয় মেয়াদে উপাচার্য হওয়ার চেষ্টা করলে এই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। চার বছর আগে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হওয়ার পর থেকেই উপাচার্য নিজের পক্ষের শিক্ষক বাড়াতে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। এ জন্য তিনি অনেক সময় নিয়োগ বোর্ডকে প্রভাবিতও করেছেন বলেও শিক্ষকদের একটি অংশের অভিযোগ।

শুভ রাত্রি।

৭| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:১৮

এখওয়ানআখী বলেছেন: খুব খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। সম্ভবত উক্ত কারণেই রাজনীতি শব্দটিকে মানুষ ঘৃনা করতে শিখেছে। আপনার জন্য থাকুক মঙ্গলময় জীবন।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৩৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



লেখাটি পাঠে ও কমেন্টে ধন্যবাদ এখওয়ানআখী ভাই। রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা পূর্বশর্ত হিসেবে আরোপ করলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিক্ষা ও প্রজ্ঞার মধ্যে যে পার্থক্য আছে, তা উপলব্ধি না করলে এরকম পূর্বশর্তের প্রশ্ন আসতে পারে। প্রজ্ঞা না থাকলে রাজনীতিক হিসেবে সফল হওয়া যায় না। কিন্তু কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই মানুষকে প্রজ্ঞা শিক্ষা দেয় না। এটা বিধাতা প্রদত্ত এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বিষয়। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ছিলেন স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। এটা হেনরি ফোর্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

মাইক্রোসফটের বিল গেটসও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করতে পারেননি। বর্তমান পৃথিবীতে রাজনীতিকদের জন্য আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পূর্বশর্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। কারণ আজকের রাষ্ট্রযন্ত্র অত্যন্ত জটিল। কিন্তু রাজনীতিকরা রাষ্ট্র পরিচালনার সিদ্ধান্তের জন্য টেকনোক্রেটের ওপর নির্ভর করেন। তারা সিদ্ধান্ত দেন বিরাজমান রাজনৈতিক বাস্তবতার ভিত্তিতে, যেখানে মানুষের চাহিদাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়। পৃথিবীতে অসংখ্য উদাহরণ আছে যেখানে রাজনীতিকরা টেকনোক্রেটদের সুপারিশ উপেক্ষা করে বড় ও সফল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

রাজনীতিকদের যে গুণাবলি প্রয়োজন তা হচ্ছে সততা, দেশপ্রেম, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞা। এসব গুণ বই পড়ে সব সময় শেখানো যায় না। কয়েকটি ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে বোঝার জন্য উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে? উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও রাজনীতিকরা যেভাবে বেড়ে ওঠেন তাতে এসব বিষয় এমনিতেই তার আয়ত্ত হয়ে যায়।

উচ্চশিক্ষিত অথবা কম শিক্ষিত- এর সঙ্গে রাজনীতির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই; তবে রাজনীতিবিদদের সুশিক্ষিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। রাজনীতিকরা জানেন, ইংরেজি না জানলেও একজন ইংরেজিভাষীর সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা হয় না। আগে আমাদের দেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে কেউ মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর সংবাদপত্রে তাদের জীবনবৃত্তান্ত প্রকাশিত হতো। জাতীয় সংসদ সদস্যদের জীবনবৃত্তান্তও বই আকারে প্রকাশিত হতো। এখন সেসব চোখে পড়ে না। কেন কে জানে। রাজনীতিকরা তাদের অনেক গুণের কারণেই সফল হতে পারেন। হতে পারে সেটা বাগ্মিতা, হতে পারে রাজনৈতিক কৌশলে দক্ষতা, হতে পারে জনগণকে বশীভূত করার মতো নেতৃত্ব। রাজনীতির মাঠে শিক্ষাগত যোগ্যতা বড় হয়ে দেখা দেয় না।

শুভ রাত্রি।

৮| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্বপ্ন ছিল। এখন এখানে পড়ার সুবাদে জানি, ঢাবি কতোটা লেইম। যদিও অন্যান্য ভার্সিটির অবস্থাও সেইম। ঢাবিতে কিছু মানুষের অন্তত মেরুদন্ড আছে, যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে, প্রাইভেট আর আর্মি শাসিত ভার্সিটিগুলোর মত চুপ করে নেই।
ঢাবির যা হওয়ার কথা ছিল, আজ তার ছিটেফোটাও নেই। ঢাবির লাইব্রেরী যেখানে হয়ে গেছে বিসিএস ক্যাডার তৈরীর কারখানা, সেখানে আর চাইবেন কী?
আপনার লেখাটা ভাল লেগেছে

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ আরণ্যক রাখাল ভাই; লেখাটি পাঠে এবং কমেন্টে কৃতজ্ঞতা রইলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সঙ্গে আবাসিক জীবনযাপন, পড়ালেখার পরিবেশ, ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ এবং এর সঙ্গে শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ক্লাসে যাওয়ার আগেই একজন শিক্ষার্থীকে ছাত্র সংগঠনগুলোর দলীয় মিছিলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পর প্রথম দু’বছরই যখন মসজিদ, টিভি রুম কিংবা ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের রাত কাটাতে হয়, তখন সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটুকু শিক্ষার্থীবান্ধব_ সেটা প্রশ্ন করার আবশ্যকতা থাকে না। হলগুলোর পরিবেশও আজ বড় অস্বাস্থ্যকর আর ঘিঞ্জি।

চার বেডের এক রুমে থাকতে হয় আটজনকে। গণরুম বলে খ্যাত রুমগুলোতে সেই আটজনের বিপরীতে ফ্লোরিং করে থাকে অন্তত ৩০ জন। আর শিক্ষার্থীদের এ দুর্বলতাকে কাজে লাগায় রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলো। একটি সিটকে পুঁজি করে রাজনীতির হাতেখড়ি দেয়। যার মাশুল অনেককেই ভয়াবহ আকারে দিতে হচ্ছে।

শুভ রাত্রি।

৯| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৩৯

চাঙ্কু বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয় এর মৌলিক কাজ হল ২টা-
১। জ্ঞান বিতরন করা
২। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথমটাই ঠিকমত করতে পারে না, দ্বিতীয়টা করবে কখন?

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৫৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ব্লগে স্বাগতম, চাঙ্কু ভাই। আপনি ঠিকই বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক কাজ হলো-
(১) জ্ঞান বিতরন করা; (২) নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা; আর এগুলো করতে লাগে যোগ্য শিক্ষক এবং উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে এখন ছাত্ররা গবেষণার বই খোঁজে না; দিনকে রাত করে তারা বিসিএস গাইড মুখস্থ করে। শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়েও অনেক অপ্রিয় কথা প্রচলিত আছে।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক?

উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।

শুভ রাত্রি।

১০| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৫৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: লিখেছেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে তিন মাস চাকরি করার পর জানতে পারি এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
গাজীভাই এর প্রশ্নোত্তরে যা বলেছেন তাতে পরিস্কার যে, আপনার হোটেলটা ছিল ক্যাম্পাসের বাইরে। ব্যাপারটা পরস্পরবিরোধী। ঠিক করে দিলে আর কোন কনফিউশান থাকে না।

রং এর আড়ালে শিক্ষকদের দলীয় লেজুড়বৃত্তির যে নির্লজ্জ রাজনীতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান করুণ অবস্থার জন্য তা বহুলাংশে দায়ী। আপনার লেখাটি ভালো হয়েছে।

শুভেচ্ছা নিন। :)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ মফিজ ভাই, কমেন্ট করার জন্য। হোটেলের সামনে, ডানে এবং পেছনের বড় রাস্তা পার হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল্ডিং আছে; আর হোটেলগুলো এগুলোর ফাঁকে ফাঁকে। কোনটি হোটেল আর কোনটি বিশ্ববিদ্যালয় বিল্ডিং চেনা মুশকিল; কারণ বিল্ডিংগুলো প্রায় একই রকম। তবে এটি UCL ক্যাম্পাসের পেছনের দিক অবস্থিত।

সাদা, নীল আর গোলাপী- এগুলো শুধু রঙের প্রতীকই নয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিভাজনের প্রতীকও বটে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা আর নীল প্রতীকটা যতটুকু দৃশ্যমান গোলাপী সে হিসাবে তেমন পরিচিত নয়। এই বিভাজন, এই দলবাজি, এই নীতিহীন কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়েেবৃত্তি আর সামান্য ব্যক্তি স্বার্থের কারণে।

শিক্ষকদের এ অনৈতিক রাজনীতিতে কোন্দল, উপদল, বিরোধী দলও আছে X(। শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, ডিন, সিনেট ও সিন্ডকেট নির্বাচনে এ দলাদলি স্পষ্ট ফুটে উঠে। দলাদলি আর রাজনৈতিক খুঁটির জোরে শিক্ষকদের মধ্যে পরস্পরে কিল-ঘুসি; চড়-থাপ্পড় এবং কলার ধরে টানাটানির ম্যারাথনে অংশ নিতেও দেখা যায়।

১১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:১৩

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আপনার লেখায় আমি গতানুগতিক গবেষনার কোনো ফ্রেমওয়ার্ক খুজে পাই না। যেসব কথা লেখেন তাতে যুক্তি বা কি কারন বা কি জন্য কিভাবে হয়েছে তার কোনো সূত্র থাকে না। এ যেনো পড়তেছি গরুর রচনা।

যাই হোক, আপনি ঢাকা ইউনির বর্তমান র‌্যাংকিং উল্লেখ করতে পারতেন। গতবছর ছিলো ৬৯৪। তার আগে ৮০০ এর কাছাকাছি। এটা বোধ হয় আপনি জানেন না। কিউএস আর থেসে দুটোতেই এই র‌্যাংকিং এসেছে এবং তাদের কাছ থেকে চিঠি মারফত জানানোও হয়েছে।

আমি মনে করি ১০ বছর আগের ঢাকা ইউনি আর এখনকার ঢাকা ইউনির অনেক পরিবর্তন ও উন্নতি হয়েছে। বাকি যেটা আছে ছাত্র শিক্ষক রাজনীতি। এটা নিয়ে আর অভিসন্দর্ভ লেখা যেতো।

তবে কেন যেনো মনে হয় এসব রচনা এখন মূল্যহীন। কারন আমাদের বর্তমান ইউজিসি বেশ কিছু প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন। আপনি মনে হয় এটাও জানেন না যে ২০১০ থেকে বিশ্বব্যাংক সরাসরি অর্থায়ন করছে বিভন্ন গবেষনায় যার ফলশ্রুতিতে বুয়েট ঢাকা ইউনি স হ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্নয়, বেটা চ্যানেলের অপ্রতিসাম্যের হার, এমনকি কামরুল স্যারের ক্রিস্টাল ল্যাটিসের ওপর গবেষনা বেশ কয়েকটা জার্নালে পীয়ারড রিভিউ হইছে এবং গত বছরও সামার প্রোগ্রামে সার্নে কিছু ছাত্র গিয়েছিলো।

পড়ালেখার গুন গত মানে ঢাকা ইউনি এখন অনেক এগিয়ে। তবে হ্যা, আপনি যেসব কালো দিকের কথা বলেছেন, সেগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আপনার রচনাতে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের অভাব

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:৩৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, আপনাকে। আমি আপনার বেশ কিছু লেখা পড়েছি; যেগুলোর অনেক লেখাই আমার ভাল লেগেছে। আপনারা ব্লগের সিনিয়র লেখক; আমার গুণীজন। আমরা তো আপনাদের দেখে দেখে লেখা শিখছি; লেখার সাহস পাচ্ছি। আপনারা নতুন একজন ব্লগারের লেখায় কমেন্ট করছেন এটাই আমার জন্য সম্মানের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং জানতাম না; তথ্যটি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

"২০১০ থেকে বিশ্বব্যাংক সরাসরি অর্থায়ন করছে বিভন্ন গবেষনায় যার ফলশ্রুতিতে বুয়েট ঢাকা ইউনি স হ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্নয়, বেটা চ্যানেলের অপ্রতিসাম্যের হার, এমনকি কামরুল স্যারের ক্রিস্টাল ল্যাটিসের ওপর গবেষনা বেশ কয়েকটা জার্নালে পীয়ারড রিভিউ হইছে এবং গত বছরও সামার প্রোগ্রামে সার্নে কিছু ছাত্র গিয়েছিলো।"

এগুলো নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ; কিন্তু বিশ্বব্যাংক ইনভেস্ট করতে হলো এসব প্রজেক্টে? এতোদিন কি সরকারের সামর্থ্য ছিল না? যে ৩৯টি গবেষনাগার আছে এগুলো প্রত্যাশিত ফলাফল করতে ব্যর্থ্য হচ্ছে কেন? সরকার থেকে দেওয়া গবেষণার টাকা লুটপাট হচ্ছে না তো? এগুলো নিশ্চয় পজেটিভ দিক নয়।

"গত নয় বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। নিয়োগ পেয়েছেন ৯০০ জনের অধিক শিক্ষক! এ নিয়োগটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হলে খুশি হতাম; কেননা শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ও মান উন্নীত হয়। কিন্তু বিভিন্ন উৎস থেকে শুনা যায়, এসময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য। এই সংখ্যাটা সম্ভবত গিনজ বুকে স্থান পেতে পারে। দল ভারী করার জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় তখন শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়টা মূখ্য হয়ে উঠে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি। এমনও অভিযোগ আছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছাড়াই কোন কোন ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।"

এগুলো নিশ্চয়ই ভাল লক্ষণ নয়।

একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পদায়ন ও মর্যাদা যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় হয় তখন সেখানে গবেষণা ও সুষ্ঠু পাঠদান মুখ্য বিষয় থাকে না। আর এটাই হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ধ্বংসের সবচেয়ে সহজ পথ। এতে ভাল মানের শিক্ষকরা গবেষণায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলশ্রতিতে আমরা পাই আন্তঃসার শুণ্য একদল শিক্ষক, গলাবাজ অধ্যাপক, মেরুদণ্ডহীন জাতির বিবেক। শুনা যায় অনেক শিক্ষক অন্যের গবেষণা কর্ম শতভাগ নকল করে ধরা পড়েছেন। রাজনীতি যেখানে মান মর্যাদা আর রুটি রুজির প্রধান হাতিয়ার সেখানে অন্য শিক্ষকের গবেষণাকর্ম চুরি হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতিটাই তো বেশিরভাগ শিক্ষকের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক?

উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।

শুভ রাত্রি।

১২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:৫৪

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আপনে যে নিয়োগের কথা বলছেন এর প্রচলন শুরু ৯২ এর সমসাময়িক বা তারও কিছু আগে।। যখন লাল নীল দলের প্রতাপ শুরু হচ্ছিলো। এখন এসব জানা কথা দিয়ে বিষেদগার সবাই জানে। আমি বলতে চাচ্ছিলাম কিছু নাম উল্লেখ করুন। একটু গুগল করলেই পেয়ে যাবেন অনেক কিছু।

আমি লিখতে মানা করছি না। বরংচ এসব নিয়ে আরো বেশী লেখা উচিত। তার ওপর শিক্ষকদের যৌনকেলেংকারী। কিন্তু এসব গৎবাধা কথা লিখলে যারা খোঁজ খবর রাখেন তাদের কাছে গুরুত্ব হারায়। ২০০৭-২০১০ এ কিছু ব্লগার ছিলেন যারা খুব সুন্দর তথ্য সহ লিখতেন। এসব লিখতে খুব বেশী কিছু হবারও দরকার নাই। আপনার মধ্যে পটেনশিয়াল আছে, প্লিজ কাজে লাগান

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৬:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমি এখন আপনার লেখা সর্বশেষ পোস্টের কমেন্টগুলো পড়ছিলাম; তখনই আপনার কমেন্ট পেলাম। আপনার অনেকগুলো পোস্ট ও কমেন্ট মনযোগ দিয়ে পড়েছি; আরো পড়তে হবে। জানার কোন শেষ নেই; সারা জীবনটাই হলো পাঠশালা।

ভাল থাকবেন।

১৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:৪৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে এটা আমি মানতে রাজী নই। কারন এখনো এখানে কেবল মেধাবীরাই চান্স পায়।স্বল্প কিছু হয়ত চান্স পায় অবৈধভাবে, তবে ঢুকলেও পরবর্তীতে ঝড়ে পড়ে পড়াশোনার সাথে তাল মেলাতে না পেরে। পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়েও সেভাবে স্বজনপ্রীতির সুযোগ নাই সিস্টেমের কারনে। এখনও আমার ডিপার্টমেন্টে যারা শিক্ষক হিসেবে চান্স পাচ্ছে, দেখে আসছি যে তারা মেধা তালিকার প্রথম দিকে তাদের অবস্থান। তবে ব্যতিক্রম অবস্যই আছে যেগুলো নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয় আবার ডিপার্ট্মেন্টেও তুমুল সমালোচনাও হয়।

তবে শিক্ষক রাজনিতির যে চিত্র তুলে ধরেছেন সেটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কুৎসিত দিক। শিক্ষক হতে হলে আপনাকে অবস্যই একটি ব্যনারের তলে থাকতে হবে। তবে ঢাবির অধিকাংশ শিক্ষক নির্দিষ্ট এক্ব্যটি ব্যানারে থাকলেও তারা চুপচাপ নীতি অবলম্বন করে অর্থাৎ কোন কিছুর সাতে পাঁচে নাই। আর যারা রাজনীতিকে সিড়ি বানিয়ে টুপাইস কামাতে চান তারাই হয় শিক্ষক সমিতির নেতা এবং বিবেক বুদ্ধি বিষর্জন দিয়ে হয়ে যান রাজনৈতিক দলগুলোর মোসাহেব। এইসব বিক্রি হয়ে যাওয়া শিক্ষকদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রষাষন। ১/১১ সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাশন ফিরিয়ে আনার একট কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সফল হতে পারে নাই।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, ঢাবিয়ান ভাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় নাই; একথা সত্য। এখনো কিছু বিভাগের শিক্ষার মান বেশ ভাল; কিন্তু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি ও মর্যাদা নির্ভর করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ, শিক্ষকদের যোগ্যতা, গবেষণা, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, ছাত্রদের কোয়ালিটি, রাজনীতি ও দালালী মুক্ত ক্যাম্পাস, শিক্ষকদের নীতি ও আদর্শ এবং আন্তর্জাতিক লেভেলে সফলতা; এগুলোতে এখনো অনেক অনেক পিছিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আর শুধু মেধা থাকলেই ইউনিভার্সিটি শিক্ষক হওয়া যায় না; লাগে আরো কিছু যোগ্যতা।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক?

উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।

১৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:১৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শিক্ষক যাদেরকে দেখলে শ্রদ্ধায় মাথানত হওয়ার কথা কিন্তু দলবাজী আর লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি শিক্ষকদের মানুষ থেকে পশুতে পরিনত করেছে। দলীয় বিবেচনায় অযোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসাবে নিযোগ দিয়ে শিক্ষক নামধারী সন্ত্রাসীতে ভরে যাচ্ছে ক্যাম্পাসগুলো। বর্তমানে হাতুড়ি বাহিনীর সদস্যরা যেমন শিক্ষক হচ্ছে একসময় রগকাটা বাহিনীর সদস্যরাও অনেকেই শিক্ষক। যাদের নিজেদেরই যোগ্যতা নেই তারা ছাত্রদের কি শেখাবে?

সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ।

পুরোটা পড়া হয়নি তাই ভাষা ভাষা পড়েই মন্তব্য করলাম। অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলে ফেললে দুঃখিত।

আপনার জন্য অনেক শুভকামনা প্রিয় কাওসার ভাই।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৪২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, তারেক ভাই। গত নয় বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। নিয়োগ পেয়েছেন ৯০০ জনের অধিক শিক্ষক! এ নিয়োগটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হলে খুশি হতাম; কেননা শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ও মান উন্নীত হয়। কিন্তু বিভিন্ন উৎস থেকে শুনা যায়, এসময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য। এই সংখ্যাটা সম্ভবত গিনজ বুকে স্থান পেতে পারে। দল ভারী করার জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় তখন শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়টা মূখ্য হয়ে উঠে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি। এমনও অভিযোগ আছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছাড়াই কোন কোন ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এগুলো নিশ্চয়ই ভাল লক্ষণ নয়।

১৫| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি নিজে একটা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



রাজীব ভাই, শুরু করুন আমি আছি আপনার সাথে। আন্তর্জাতিকভাবে রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও পরিচালনা পদ্ধতিতে কিছু মিল থাকলেও অনেক ভিন্নতা ও দেখা যায়,এর মধ্যে কিছু তাত্পর্যপূর্ণ ভিন্নতা ও রয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দলের একটি মূল ভাবাদর্শ থাকে কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দলের থাকে না,আবার কিছু রাজনৈতিক দলের ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠাকালীন ভাবাদর্শ থেকে অনেকটাই ভিন্ন হয়ে যায়। গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে নির্বাচকমণ্ডলী সরকার পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক দলসমূহ নির্বাচন করে। অনেক দেশেই বহুসংখ্যক শক্তিশালী রাজনৈতিক দল থাকে,যেমন জার্মানি ও ভারত। আবার কিছু দেশে একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রচলিত আছে,যেমন চীন ও কিউবা। যুক্তরাষ্ট্রে অনেকগুলো ছোট রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের সঙ্গে দ্বিদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রচলিত আছে। এদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি দল হচ্ছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি।

রাজনৈতিক দলগুলিকে এখনও কেউ কেউ বৃহত্ রাজনৈতিক ভাবাদর্শের অংশ মনে করে,বিশেষত সরকার পরিচালনায় থাকা দলগুলি,যারা বিভিন্ন সংগঠন,ব্যবসায়িক ও অন্য সুবিধাভোগী যেমন ট্রেড ইউনিয়নগুলি দ্বারা প্রভাবিত হয়। রাজনৈতিক দল কিংবা এর প্রধান সদস্যদের টাকা ও বিভিন্ন উপহারের মাধ্যমে স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। এমন অনুদান ই প্রধান ডান দলগুলির আয়ের চিরাচরিত উত্স। উনিশ শতকের শেষের দিক থেকে এমন দলগুলি নতুন প্রতিষ্ঠিত বাম শ্রমিক দলগুলির বিরোধিতার সম্মুখীন হতে থাকে। তারা একটি নতুন ধরনের রাজনৈতিক দল শুরু করে যার সদস্য জনগণ এবং যার তহবিল সংগ্রহ হয় সদস্যদের চাঁদা থেকে।

১৬| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতালব্ধ লেখা থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাই কাওসার চৌধুরী।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়; লেখাটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য। বাংলাদেশে একজন মেধাবী, নির্দলীয়, শিক্ষকের কোনো জায়গা আছে কিনা, এটি একটি বিব্রতকর অথচ প্রয়োজনীয় প্রশ্ন। তাদের প্রতিনিয়ত বিব্রত হতে হয় প্রতিভা আর সৌভাগ্যের কাছে! একটি দরিদ্র দেশে টিকে থাকার জন্য অনেক কিছুর সাথে সমঝোতা করতে করতে বিদ্বানেরা আজ বিক্রি আর সমঝোতার মাঝে পার্থক্য ভুলে গেছে! বিক্রি হচ্ছে আদর্শ, মূল্যবোধ, শিক্ষা, সর্বোপরি মনুষত্ব–পাইকারি দামে! এখানে সমাবেশ হয়েছে আমাদের মত কিছু নিরুপায় আশাবাদী আর বেশ কিছু ধূর্ত-স্বার্থ-সর্বস্ব মানুষদের! উপায়হীন মানুষদের হা-পিত্যেশ দিয়ে আর যাই হোক, মহৎ প্রতিষ্ঠান তৈরি হয় না! অসম্ভবকে স্পর্শ করার আবেগ–স্পর্ধা না নির্বুদ্ধিতা–এনিয়ে রিয়ালিস্ট ও অপটিমিস্টদের মাঝে তর্ক হয়েছে চিরকাল।

১৭| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:২৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:



ছাত্রদের পিকনিকের টাকাও মেরে খায় এমন শিক্ষকও দেখেছি। লজ্জা লাগে এদের এমন অধঃপপতন দেখে। এরপর প্রজেক্ট ট্যূর এসব তো আছেই। মাস্টার্স পিএইচডি এসব নিয়েও চলছে রমরমা ব্যাবসা। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য আর গন্তব্য আজ হারিয়ে যাচ্ছে।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আবারো কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। একটি শিশুর হাতে বিপজ্জনক আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেয়া আর শিক্ষকদের মাথায় রাজনীতির প্যাচ ঢুকিয়ে দেওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয়ই ধ্বংস ডেকে আনে, সৃষ্টি নয়। একজন শিক্ষককে আমরা রাজনীতিবিদ নয়, শুধুমাত্র শিক্ষক ও গবেষক হিসাবে দেখতে চাই। শিক্ষকদের রাজনীতি নয়, শিক্ষানীতির মধ্যে থাকতে হবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাদ দিয়ে রাজনীতি/দলাদলি আর প্রতিহিংসার বীজ রোপন করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে 'বিশ্ব' শব্দটি জুড়ে দেওয়া বেমানান। শুধু 'বিদ্যালয়' লেখলেও স্কুলটির জন্য অপমানের।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড; আর এই মেরুদণ্ডের কারিগরেরা যখন মেরুদণ্ডহীন হন; তখন জাতির মেরুদণ্ডে ঘুণে ধরে, পঁচন ধরে। কারণ, এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করে; সচিব, ডিসি, এসপি, জেনারেল, এমপি, মিনিস্টার হয়। শিক্ষকদের নীতি ও আদর্শে গাফলতি থাকলে তা অটোমেটিকভাবে ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত কর। ফলস্বরুপ আমরা পাই একদল ঘোষখোর, নীতিহীন, বিবেকহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন আমলা ও রাজনীতিবিদ।

১৮| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: নতুন নতুন বিভাগ খোলার ব্যাপারটাকে আপনি নেতিবাচকভাবে নিয়েছেন। আমার মনে হয় ব্যাপারটি ঠিক আছে। আরও অন্তত পঞ্চাশটা ডেপ্ট খোলা উচিত। নতুন নতুন এসব বিভাগের কারণেই আজ নতুন নতুন বিষয়ে মানুষ পড়ছে। ভাবুন, আজ থেকে বছর ১০ আগেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগটি ছিল না। এখন আছে। দূর্যোগ সম্পর্কে এখন ছাত্ররা জানছে। লক্ষ্য করে দেখবেন শুধু এই সাব খোলার কিছুদিনের মধ্যেই দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিপুল একটা পরিবর্ত৷ এসেছে। নতুন বিভাগগুলো অকারণে আসেনি। সময়ের প্রয়োজনে এসেছে। আমি criminology পড়ছি। আমাদের একই সাথে ভিক্টিমলোজি, প্রিজন সিস্টেম ইত্যাদি পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য দেশে এসব বিষয়ে আলাদা সাব আছে। দরকারও। আমাদের প্রিজন সিস্টেমের কথা ভাবলেই বোঝা যায় এদেশে প্রিজন সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা চালু হওয়া কতটা দরকারী।
ঢাবির সবচেয়ে সমস্যা রাজনীতি। এখনকার ভিসির কথা ভেবে দেখুন। লোকটা একটা পা'চাটা দালাল। চরিত্র তার অনেকটা এরশাদের মত। তার মত লোক ভিসি হয়েছে রাজনীতি করেই। রাজনীতি করে ভিসি হওয়া গেলে, ভাবুন বাকিসব কত খেলো।
তবে আগের চেয়ে আস্তে আস্তে খাদের কিনার থেকে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসছে বোধহয় ঢাবি। তবে এভাবে রাজনৈতিক আগ্রাসন চলতে থাকলে, আবার খাদই হবে এই ঠিকানা

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আবারো মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আরণ্যক রাখাল ভাই। আমি নতুন নতুন বিভাগ খোলার বিরোধিতা করছি না; কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভাগ খুলে, রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দিলে নতুন বিভাগ নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা হবে। আমি মনে করি নতুন বিভাগ খোলার আগে এগুলো ভবিষ্যতে কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, এগুলো কি সত্যি সত্যি আবশ্যিক তা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে যাচাই করা বাঞ্ছনীয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত কিছু বিভাগ আছে যেগুলো বর্তমান সময়ে হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়; এর মধ্যে অন্যতম হলো "উর্দু বিভাগ"। আমার কথা হলো প্রয়োজনে এটি বন্ধ করে চায়নিজ, জাপানি, কোরিয়ান, স্পেনিশ, জার্মান, ফরাসি, রুশ ইত্যাদি ভাষা ইনস্টিটিউট করা যেতে পারে।

১৯| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭

ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ কাওসার চৌধুরী- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার এই পোস্ট নিয়ে কিছু কমেন্ট করতে চাই।

1. বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । স্থাপিত হয়েছে 1921 সালে । বয়স 97 । শিক্ষার্থী 37,064, শিক্ষক 1817, প্রশাসনিক কর্মকর্তা 3408 ।

2.2018-19 অর্থবছরে ঢাবি-র বাজেট 741 কোটি 13 লাখ টাকা। তার মধ্যে প্রশাসনিক বেতন-ভাতা 432 কোটি 94 লাখ 50 হাজার টাকা , আর গবেষণা খাতে বরাদ্দ 36.55 কোটি যা মোট ব্যয়ের 4.94 % (দৈনিক ইত্তেফাক 27.06.18 )।

3.University of London হচ্ছে UK-র একটি collegiate & federal research বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠা 1836 সালে, 182 বছর আগে। ছাত্র সংখ্যা 2,13,270 (undergraduate and postgraduate) ।

4.2016-17 সালের Financial statement অনুযায়ী London university এর মোট আয় ছিল 17 কোটি 40 লাখ 32 হাজার পাউন্ড ( টাকার হিসাবে 1931 কোটি 75 লক্ষ 53 হাজার। এক পাউন্ড = 111 টাকা ) (london.ac.uk )

5.বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় Univerversity of Oxford প্রতিষ্ঠা 1096 সালে (922 বছর পুরানো) । বাজেট 1.4 বিলিয়ন পাউন্ড, endowment 5.6 বিলিয়ন (2016-17)।
6. আরেক সেরা বিশ্ববিদ্যালয় University of Cambridge প্রতিষ্ঠা 1209 সালে (809 বছর পুরানো) । বাজেট 1.643 বিলিয়ন পাউন্ড , endowment 11.8 বিলিয়ন পাউন্ড (2018) ( Wikipedia )

7.উপমহাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । প্রতিষ্ঠা 1857 সাল ( 161 বছরের পুরোনো )।

8.এই পরিসংখ্যান হতে আমি বলতে চাই , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অবশ্যই সমালোচনা করবেন , গবেষণার সাফল্যে চাইবেন তবে বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে। ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করা অর্থহীন ।

9.শিক্ষক রাজনীতি ও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি/ স্বজনপ্রীতি অবশ্যই কাম্য নয় , কিন্তু এটি কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নয়, পুরো দেশের সমস্যা।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপনার নিকের সাথে কমেন্টও বেশ ব্যতিক্রম; ভাল লেগেছে তথ্যগুলো পড়ে। শিক্ষা-গবেষণা, পঠনপাঠন, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে বিদ্যাপীঠ হিসেবে আরও উৎকর্ষ সাধনের পথ ছেড়ে ব্যক্তিগত বৈষয়িক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সংকীর্ণ ও অসংস্কৃত দলাদলিতে লিপ্ত হয়ে যে শিক্ষকেরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষকসমাজের যে অংশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধ্বংসপ্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন কিন্তু এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে আগ্রহ বোধ করে না, এখন তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় হওয়ার সময় এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির বাইরে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে সচেতন ছাত্রসমাজকে, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন বিদ্যার্জনের মাধ্যমে উন্নত জীবন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত অবক্ষয় রোধ করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ সক্রিয়তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

উচ্চশিক্ষিত অথবা কম শিক্ষিত- এর সঙ্গে রাজনীতির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই; তবে রাজনীতিবিদদের সুশিক্ষিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। রাজনীতিকরা জানেন, ইংরেজি না জানলেও একজন ইংরেজিভাষীর সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা হয় না। আগে আমাদের দেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে কেউ মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর সংবাদপত্রে তাদের জীবনবৃত্তান্ত প্রকাশিত হতো। জাতীয় সংসদ সদস্যদের জীবনবৃত্তান্তও বই আকারে প্রকাশিত হতো। এখন সেসব চোখে পড়ে না। কেন কে জানে। রাজনীতিকরা তাদের অনেক গুণের কারণেই সফল হতে পারেন। হতে পারে সেটা বাগ্মিতা, হতে পারে রাজনৈতিক কৌশলে দক্ষতা, হতে পারে জনগণকে বশীভূত করার মতো নেতৃত্ব। রাজনীতির মাঠে শিক্ষাগত যোগ্যতা বড় হয়ে দেখা দেয় না।

২০| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৪৫

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: একজন শিক্ষার্থী এইচ এস সি পাশ করার পর তার যেন একটা স্বপ্ন থাকে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু যে অবস্থা এখন ক্যাম্পাস এর পড়াশোনা তো না যেন রাজনীতির আখড়া ।
শিক্ষকরা বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসলে কি হবে ভাইয়া, তাদের কর্মক্ষেত্র তো বাংলাদেশ তাই বিদেশী ডিগ্রি থাকলেও লাভ হয়না কোন। আর এসব কারনেই অনেকে আর পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে আসেনা।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, প্রিয় কথা আপু। আপনি খুব সুন্দর একটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন; আসলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় অনেক মেধাবী শিক্ষক বিদেশ থেকে ফিরে আসেন না; এটা দুঃখজনক। আমিও চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক; ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ হোক; বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক গবেষনা ও বুদ্ধি ভিত্তিক চর্চার জায়গা।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড; আর এই মেরুদণ্ডের কারিগরেরা যখন মেরুদণ্ডহীন হন; তখন জাতির মেরুদণ্ডে ঘুণে ধরে, পঁচন ধরে। কারণ, এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করে; সচিব, ডিসি, এসপি, জেনারেল, এমপি, মিনিস্টার হয়। শিক্ষকদের নীতি ও আদর্শে গাফলতি থাকলে তা অটোমেটিকভাবে ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত কর। ফলস্বরুপ আমরা পাই একদল ঘোষখোর, নীতিহীন, বিবেকহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন আমলা ও রাজনীতিবিদ।

ভাল থাকবেন, আপু...........

২১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

করুণাধারা বলেছেন: শিক্ষক রাজনীতি, শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণা ও নিয়োগ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষিত করছে যে প্রধান চারটি বিষয়ে আপনি তাই নিয়ে আলোচনা করেছেন, ভালো লাগলো।

অনেক ফল বা সবজির ভেতরে পোকা খেয়ে একেবারে শেষ করে ফেলে, কিন্তু বাইরে থেকে বোঝা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা এখন তাই। বাইরে থেকে বোঝা যায় না শিক্ষারমান এখানে দিন দিন খারাপ হয়েছে। প্রথম কারণ, যারা নিয়োগ পান রাজনৈতিক বিবেচনায়, যোগ‍্যতায় তারা পিছিয়ে এবং নিয়োগ প্রাপ্ত হয় তারা রাজনীতিক দলের লেজুড়বৃত্তি শুরু করেন। পড়াবেন কখন? আমার ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়া প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে আসছিলেন থিসিস ডিফেন্স এর আগে পর্যন্ত, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকাদের সাথে তার নাম্বারের যে পার্থক্য ছিল সেটা ঘুচিয়ে দেয়া হলো থিসিস ডিফেন্স এর সময়, কারন সে কোন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করতো না। তাকে ডিফেন্সের সময় কম নাম্বার দেবার ফলে শেয়ার শিক্ষকতায় যেতে পারল না। এমন ঘটনা ভুরিভুরি ঘটছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান মেরুদণ্ডহীন, লেজুড়বৃত্তি করা (youtube এ সার্চ দিলেই তৈলাক্ত বক্তব্য সম্বলিত শিক্ষকদের বক্তৃতা শুনতে পাবেন) শিক্ষকরা কি শেখাবে ছাত্রদের?

আর গবেষণা? দু'দিন আগেই পত্রিকায় দেখলাম, dhaka universityর সহযোগী দুই অধ্যাপক পদোন্নতির জন্য যে পেপার সাবমিট করেছেন (দুইটি পেপার সাবমিট করা লাগে) সেই দুটি পেপার পাঁচটি বাক্য বাদে হুবহু এক!!! এরা করবেন গবেষণা?

প্রবন্ধে অনেক কিছু আলোচনা করেছেন। ভালো লাগলো।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপু লেখাটি পড়ে চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। কয়েক বছর আগে পত্রিকায় পড়েছিলাম, ঢাবির একজন ছাত্র দশ বছর আইনি লড়াই চালিয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায় তিনি একজন শিক্ষকের রোষানলে পড়েছিলেন; তিনি যাতে ঢাবির শিক্ষক হতে না পারেন এবং উনার পছন্দের ছাত্র যাতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হতে পারে সেজন্যে একজন শিক্ষক হয়েও এমন ন্যক্কারজনক কাজ করেছিলেন।

এমন শিক্ষকদের বিচারের আওতায় এনে চাকরিচ্যুত করা উচিৎ। এমন শত শত ঘটনা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অহরহ ঘটছে; কোন কোন শিক্ষক তো ছাত্রীদের সাথে X( X( X(!! এগুলো জাতির জন্য লজ্জা ও অপমানের।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক?

উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।

২২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:১১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় গুনে ও মানে এগিয়ে যাক।

বন্ধ হোক অশুভ রাজনীতি।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, মাইদুল ভাই। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে অবশ্যই ভদ্র, বিনয়ী, ধৈর্যশীল, গবেষক, পরিশ্রমী হতে হবে। থাকতে হবে সুন্দর ও সাবলীল উচ্চারণ, আকর্ষনীয় বাচনভঙ্গী ও ব্যাক্তিত্ব। হতে হবে রাজনৈতিক দলের পরিচয়মুক্ত কিন্তু রাজনীতি সচেতন। ছাত্র/ছাত্রীদের শ্রদ্ধা অর্জন করার যোগ্যতা। সিলেবাসের বাইরে গিয়েও সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও দৈনন্দিন ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর উপর নজর রাখা এবং এসব বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের জ্ঞানদান করা।

অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষন করা, সঠিক সময়জ্ঞান থাকা, চরিত্রবান হওয়া। পরিষ্কার-পরিচ্চন্ন পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করাও একজন শিক্ষকের ভাল শিক্ষক হওয়ার অন্যতম যোগ্যতা।

সবচেয়ে অবাকের বিষয় বিশ্বের নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দেশের অসংখ্য প্রফেসর, রিসার্চার আছেন। এরা এই নোংরা রাজনীতি ও স্বজনপ্রীতির জন্য দেশে ফিরে আসে না। এভাবে প্রতি বছর মেধা পাচার হয়। আর এই সুযোগে গলাবাজ আর সুযোগ সন্ধানীরা শুণ্যস্থান পূরণ করে। পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ গবেষক বিদেশী। সেসব দেশ জানে কিভাবে গুণীর মর্যাদা দিতে হয়। এজন্য এই গুণীরাই তাদের আবিষ্কার ও দর্শন দিয়ে নিজ দেশের পরিবর্তে সেসব দেশের উন্নয়নে অবদান রাখেন।

আমরা করি মেধাবীদের দেশ ছাড়া, আর ওরা মেধাবীদের বিভন্ন দেশ থেকে জড়ো করে দেয় নাগরিকত্ব! পাশাপাশি পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ করে দেয়। এজন্যই তারা আমাদের চেয়ে দুইশত বছর এগিয়ে। তারা জানে কিভাবে গভীর সমুদ্র থেকে মুক্তা আহরণ করতে হয়।

শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

২৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় কাওসারভাই,

সকালেই আপনার পোষ্টটি পড়েও কমেন্ট করার মত অবস্থায় না থাকায় লাইক দিয়ে চলে যায়। যে কারনে আবার আসা। মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যে ইতিমধ্যে পোষ্টটির কৌলিন্য বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি - এটা বোধহয় উপমহাদেশের সামুগ্রিক চিত্রে কখনই সম্ভব নয়। আমাদের এখানে বাম আমলে একরকম দলদাসত্ব দেখেছি। এখন তার কালারটি শুধু পরিবর্তীত হয়েছে। যুগ এগিয়ে চলছে, শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে দাসত্বের। বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্ক দিয়ে শুরু করি। গতবছর হোক কলরব ও আফজাল গুরুর ফাঁসির প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে অশান্তি থাকায় যাদবপুর ও দিল্লীর জে এন ইউকে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে সরিয়ে রেখে মেধার বিচারে একটি সান্ত্বনা বাচক র‍্যাঙ্ক দিয়েছে। উল্লেখ্য এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় আগে ভারতসেরা ছিল। বিজেপির ছাত্র সংগঠন এখানে কোনও ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারছেনা। যেমন পারছেনা যাদবপুরে মমতা ব্যানার্জীর দলের ছাত্র সংগঠন। কলকাতা মেডিকেলেও তৃণমুল কংগ্রেস হুল ফোঁটাতে ব্যর্থ হয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা হোস্টেলে ব্যবস্থা করে শুরু থেকে কচি মাথাগুলি নিজ অনুকুলে আনার একটা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মেধাবী ডাক্তার পড়ুয়ারা সে ফন্দি ধরে ফেলে আমরণ অনশনে বসে মাত্র কয়েকদিন আগে সরকারের সে চেষ্টাও বানচাল করে দেয়। আপনি ভাবুনতো, রাজ্যের উৎকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে যদি শাসকদল বিঁধতে না পারে তাহলে মাথামতি ভালো থাকে? শিক্ষকদের না হয় নিজ পছন্দ মত দলদাস বানিয়ে চেয়ারে বসালাম, কিন্তু ঐ ফুঁচকে ছেলেমেয়ে গুলিকে বাগে আনতে না পারলে দু একটা কটু কথা বলটা স্বাভাবিক নয়কী। যে কারনে বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালদের মাধ্যমে মোদী উপচার্যদের একটি মিটিংএর ব্যবস্থা করালেও পশ্চিমবঙ্গের ভি সিরা রাজ্যের কথানুযায়ী কেন্দ্র সরকারের মিটিংএ যেতে অস্বীকার করেছে।

এবার দেখবো ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আন্তর্জাতিক মান -
IIT Bombay ? / ১
I IT Madras,৬০৪ /২
IIT Kanpur ৬৬৪/ ৩
IIT Delhi ৭১৭ / ৪
University of Delhi ৭৪১/ ৫

University of Calcutta ৮০০ /১০

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রিয় বড় ভাইকে। আমি এতোদিন ভাবতাম ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার পরিবেশ আমাদের চেয়ে ভাল; এখন তো দেখি "এক ক্ষুরে মাথা কামানো"। তবে শিক্ষক রাজনীতিতে আমরা ভারতের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে আছি!!!

তবে, ভারতের আইটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনীতির ছোয়া কম থাকায় এগুলো এখন বিশ্বের সাথে তাল মেলাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নাম ডাক ছিল এক সময়; এখন হয়তো সে দিনগুলো অতীত।

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রথম পর্বে তৃণমূল নেতারা নন, গ্রেফতার হচ্ছিলেন নকশালপন্থি ছাত্রছাত্রীরাই৷ আটক ছাত্রদের পুলিশ হেডকোয়ার্টার লালবাজার থেকে মুক্ত করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট মানুষেরা৷ অপর্ণা সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষ, শঙ্খ ঘোষেরা মিছিল করে পৌঁছে গিয়েছিলেন লালবাজারে।

প্রথম পর্বের সেই আন্দোলনে নকশালপন্থি ছাত্ররা প্রভূত সমর্থন পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজের কাছ থেকে৷ অভিযোগ, আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্বে তৃণমূল ছাত্রদের আন্দোলন ‘হাইজ্যাক' করে৷ এবং লড়াইটা হয়ে দাঁড়ায় সিপিএম-তৃণমূলের৷ যার ফলাফল, ২০১১ সালে তৃণমূলের জয় এবং সিপিএম-এর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সেই বাম আমল থেকেই ছাত্র আন্দোলনের ধারা ক্রমশ বদলে গেছে পশ্চিমবঙ্গে৷ মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি চেষ্টা করেছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ভবিষ্যতের নেতা তৈরির কারখানা হিসেবে গড়ে তুলতে৷ ছাত্রছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লোভ দেখানো হয়েছে৷ ফলে অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী দল তৈরিই হতে পারেনি৷ যেখানে হয়েছে, সেখানে সংঘর্ষ হয়েছে৷ অধ্যক্ষ ঘেরাও হয়েছেন ছাত্র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে৷ সিপিএম-এর সদর দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কথায় ওঠাবসা করেছেন ছাত্রনেতারা।

‘পরিবর্তন'-এর পরেও সেই একই ছবি৷ আগে কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ দখলে রাখত বামপন্থি ছাত্ররা৷ এখন সেই সমস্ত সংসদই তৃণমূলের ছাত্রদের দখলে৷ আগের মতোই এখনো নির্বাচন হয় না অধিকাংশ জায়গায়৷ বিরোধীদের তৈরিই হতে দেওয়া হয় না।

পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, কারণ, ছাত্ররা এখন শিক্ষকদেরও ছাড়ছে না৷ শিক্ষক নিগ্রহ, অধ্যক্ষকে পেটানোর মতো ঘটনাও ঘটছে প্রায় প্রতিদিন৷ যদিও প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের ক্যাম্পাসগুলিতে এখনো সে ঘটনা ঘটেনি৷ এখনো সেখানে নির্বাচন হয়৷ এখনো তাদের বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা রয়েছে৷ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ‘হোক কলরব' আন্দোলন হয়েছে যাদবপুরে।

....... অনেক শুভ কামনা রইলো, গুরু.........

২৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

অচেনা হৃদি বলেছেন: সুশান্ত পাল নামের একজন বড় ক্যাডার ঢাবি নিয়ে কয়েকটি কথা বলেই ওএসডি হয়ে গেছেন। ;)

লিখতে কিন্তু সাবধান! :)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমি সত্য বলতে পিছপা হই না; প্রয়োজনে ওএসডি হতেও রাজি। তবুও সত্য কথা বলে যাব; আমার কলম সত্য ও ন্যায়ের পথে সব সময় চলবে। আমি এগুলো ডরাই না আপুনি; আমি আপনার মতোই নির্ভীক, অকুতোভয় সৈনিক! :)

মেঘনাদবধ কাব্যের কয়েকটি লাইন পড়ুন; ডর ভয় কমে যাবে, রাতে ঘুম না হলে এটি তাবিজ আকারে ব্যবহার করিলে ডরভয় পালিয়ে এভারেস্ট চলে যায়............

চলি গেলা বামাকুল। কেহ টঙ্কারিলা
শিঞ্জিনী; হুঙ্কারি কেহ উলঙ্গিলা অসি;
আস্ফালিলা শূলে কেহ ;হাসিলা কেহ বা
অট্টহাসে টিটকারি ;কেহ বা নাদিলা,
গহন বিপিনে যথা নাদে কেশরিণী,
বীর-মদে, কাম-মদে উন্মাদ ভৈরবী;
লক্ষ্য করি রক্ষোবরে ,কহিলা রাঘব;--
" কি আশ্চর্য্য, নৈকষেয়? কভু নাহি দেখি,
কভু নাহি শুনি হেন এ তিন ভুবনে;
নিশার স্বপন আজি দেখিনু কি জাগি?"
উত্তরিলা বিভীষণ; " নিশার স্বপন
নহে এ,বৈদেহী-নাথ,কহিনু তোমারে।
কালনেমি নামে দৈত্য বিখ্যাত জগতে
সুরারি,তনয়া তার প্রমীলা সুন্দরী ।
মহাশক্তি-সম তেজে;দম্ভোলি-নিক্ষেপী
সহস্রাক্ষে যে হর্ষ্যক্ষ বিমুখে সংগ্রামে,
সে রক্ষেন্দ্রে,রাঘবেন্দ্র,রাখে পদতলে
বিমোহিনী,দিগম্বরী যথা দিগম্বরে;"
লঙ্কার কনক-দ্বারে উতরিলা সতী
প্রমীলা। বাজিল শিঙ্গা,বাজিল দুন্দুভি
ঘোর রবে;গরজিল ভীষণ রাক্ষস,
প্রলয়ের মেঘ কিম্বা করীযুথ যথা;
উচ্চৈস্বরে কহে চন্ডা নৃ-মুন্ডমালিনী;---
" কাহারে হানিস্ অস্ত্র,ভীরু,এ আঁধারে ?
নহি রক্ষোরিপু মোরা, রক্ষঃ-কুল-বধূ,
খুলি চক্ষুঃ দেখ চেয়ে।" অমনি দুয়ারী
টানিল হুড়ুকা ধরি হুড় হুড় হড়ে ;
বজ্রশব্দে খুলে দ্বার। পশিলা সুন্দরী
আনন্দে কনক লঙ্কা জয় জয় রবে ।

........মাইকেল মধুসূদন দত্ত.......

২৫| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

সনেট কবি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় কবি............+++++++

২৬| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো ও অনুষদ বাড়ানোর ব্যাপারে আপনি যা বলেছেন, এগুলো আপনার ভাবনার মৌলিক সমস্যা; আপনার ভাবনা পুরোপুরি বেঠিক।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



হতে পারে মৌলিক অথবা যৌগিক সমস্যা; কারণ, এগুলো আমার নিজস্ব ভাবনা, আমার ভাবনার সাথে সবার ভাবনা মিলতে হবে তা আমি ভুলেও মনে করি না; শিক্ষা ও সাহিত্য নিয়ে ভাবনা করা, গবেষণা করা, লেখালেখি করা পিওর সাইন্স নয়।

কারণ এগুলো নতুন কোন আবিষ্কার নয়; এগুলো হলো একজন লেখকের অর্জিত জ্ঞান ও নিজের চিন্তা চেতনার একান্ত ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং দর্শন।

এজন্য শিক্ষা ও সাহিত্য নিয়ে লেখায় মৌলিক জ্ঞান খোঁজা হলো অজ্ঞতা। (ধন্যবাদ)

২৭| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:০৪

বলেছেন:
আরেকটি চিত্তাকর্ষক চমৎকার লেখা

শিক্ষার গুণগত মান কি বৃদ্ধি হবে অনুষদ বাড়ানোর সাথে সাথে?
আপনার সাবলীল লেখার প্রশংসার পাশাপাশি -আপনার চিন্তার প্রশংসা করতে হয়,

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, প্রিয় রহমান লতিফ ভাই; আপনার কথার উত্তরে বলতে হয়, - নতুন নতুন বিভাগ খোলা হোক ভাল কথা; কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভাগ খুলে, রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দিলে নতুন বিভাগ নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা হবে। আমি মনে করি নতুন বিভাগ খোলার আগে এগুলো ভবিষ্যতে কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, এগুলো কি সত্যি সত্যি আবশ্যিক তা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে যাচাই করা বাঞ্ছনীয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত কিছু বিভাগ আছে যেগুলো বর্তমান সময়ে হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার কথা হলো প্রয়োজনে অকার্যকর বিভাগগুলো বন্ধ করে চায়নিজ, জাপানি, কোরিয়ান, স্পেনিশ, জার্মান, ফরাসি, রুশ ইত্যাদি ভাষা ইনস্টিটিউট করা যেতে পারে।

আপনি মনযোগ দিয়ে লেখাটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ; আপনার প্রবাস জীবন সুন্দর হোক, ভবিষ্যৎ আরো মর্যাদাবান হোক এই আশীর্বাদ রইলো।

শুভ রাত্রি।

২৮| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩১

তারেক ফাহিম বলেছেন: ভালোলাগার মত আরও একটি পোষ্ট পড়লাম।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৩২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো তারেক ফাহিম ভাই। ভাল থাকবেন, সব সময়; লেখুন মন খুলে ব্লগে, যা মন চায়।

২৯| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০২

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এক সময়ে এই ঢাবির ছাত্রী ছিলাম । মায়া লাগে ক্যাম্পাসটার জন্য । ভাল মানুষের জন্য যে কোন খারাপ কিছু ভাল হয়ে উঠে । আর খারাপ মানুষের কারনে সব ভাল নষ্ট হয় ।
লেখাটা খুব ভাল হয়েছে । লেখক কে ধন্যবাদ ।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপু ঢাবির ছাত্রী ছিলেন জেনে ভাল লাগলো; আর মায়া তো লাগারই কথা, তাই না? কতশত স্মৃতি আছে ক্যাম্পাস জুড়ে; আছে অনেক গর্ব ঢাবিয়ান হিসাবে। নিজের এমন স্বপনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বদনাম কেউ শুনতে চায় না; কিন্তু এটাই বাস্তবতা, এটাই ঘটছে প্রতিনিয়ত। আশা করি, আগামী দিনগুলোতে ঢাবি বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে; ঢাবিয়ানরা গর্ব করে বলবে আমি এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম।

শুভ রাত্রি।

৩০| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫৩

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: দাদা শুভেচ্ছা নিবেন।

খারাপের রাজনীতি যদি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যায় তখন ভালো অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, ইব্‌রাহীম আই কে ভাই। আপনি ঠিকই বলেছেন, "খারাপের রাজনীতি যদি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যায় তখন ভালো অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে।"....... এটাই চরম সত্য, এটাই আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাস্তবতা।

৩১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো, আপনা সাথে একমত প্রকাশ করতে কোন দ্বিধানেই।

শিক্ষকদের রাজনীতির খোলা ময়দানে নেমে ছাত্রছাত্রী থেকে দূরে সড়ে গেছেন, হয়েছেন বিভাজিত।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৫০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন ভাই। শিক্ষকদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে; লাল দল নীল দল এসব লেজুড়ে বৃত্তি রাজনীতি বাদ দিয়ে শিক্ষকদের গবেষণা ও পাঠদানে মনোযোগী হতে হবে; একজন প্রকৃত শিক্ষকের আদর্শ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে।

৩২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৫৯

যবড়জং বলেছেন: ভালো পোষ্ট পড়ে ভালই লাগলো ( বুঝলেন তো কেমন দায়সারা মন্তব্য ) ।

আনেকে সমস্যাটা ধরতে পারলেও যারা সমাধান করতে সচেষ্ট হতে পারে তাদের আন্তরিকতা নৈবচ ।।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



যবড়জং, B-) ভাইজান গরীবের ঘরে প্রথমবার আইছেন; এতেই আমি মহা খুশি। এজন্য শুভেচ্ছা রইলো। মন্তব্য না দিলেও সমস্যা নেই; আপনি লেখাটি পড়েছেন এতেই আমি খুশি। আপনি নিয়মিত লেখুন পাঠক হিসাবে আমাকে সব সময় পাবেন।

শুভ রাত্রি।

৩৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৪

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণধর্মী লেখা এবং সমস্ত মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্য মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। শিক্ষকদের রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি নিয়ে খুব ভালো লিখেছেন। ক্যাম্পাসটা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা উন্নতির দিক তুলে ধরেছেন, আবার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও বলেছেন। সত্য এটাই সবগুলো পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ই রাজনীতির কাঁদায় ডুবে আছে। অথচ রাজনীতির ফুল বাগান হতে পারতো। ঢাকা ইউনির উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই, পূর্বের যে কোন সময় থেকেই অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এই উন্নতি আরও অনেক আগেই হতো এবং এখন যতটা হয়েছে তার চেয়ে আরও অনেক বেশী হতো যদি এই বিশাল কালো মেঘ না থাকতো। সুস্থ পায়ে হাঁটা আর খোঁড়া পায়ে হাঁটার গতি তো মোটেই এক নয়। হেঁটে গেলে পথ অতিক্রম হবেই। আর সেজন্যই উন্নতি হয়েছে, আরও হবে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাঁটাটা হচ্ছে পায়ে ভারী শিকল নিয়ে। উন্নয়নের এই ধীর গতিতেই আমাদের বয়স, সময় সব চলে যাচ্ছে ।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



অবশেষে প্রিয় হরিনী আপুনির মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগলো। আপনি লেখার পাশাপাশি মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্য মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। শিক্ষা, গবেষণা, পাঠদান, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আরো উৎকর্ষ সাধনের পথ ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি এবং ব্যক্তিগত পদ-পদবী আর দলাদলির স্বার্থে শিক্ষকরা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য পৃথিবীর সেরা দুই হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে বাংলাদেশের একটিও নেই। ভবিষ্যতে যে তালিকায় আসবে তার কোন লক্ষণ দেখছি না। রাজনীতি বাদ দিয়ে শিক্ষকরা গবেষণায় মনযোগ না দিলে সে সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের প্রায় সবকয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় রাজনৈতিক বিবেচনায় ও সুপারিশে। যে দলীয় সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তাদের মতাদর্শের আলোকে শিক্ষক নিয়োগ হয়। এছাড়া ক্লাসে ফাস্টক্লাস ফাস্ট হতে আছে অনেক স্বজনপ্রীতি। কোন কোন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগও মাঝে মাঝে শুনা যায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নতজানু থাকে। শিক্ষক রাজনীতির আড়ালে লাল দল, নীল দল নামে রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এখানে ভাল শিক্ষক হওয়ার প্রচেষ্টার চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে খুশি রাখার প্রতিযোগিতা বেশি হয়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষক প্রত্যক্ষভাবে দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তরুণ শিক্ষকরা রাজনীতি করেন অপেক্ষাকৃত ভাল বাসস্থান, স্কলারশীপ ও সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার আশায়। আর বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ শিক্ষদের লক্ষ্য থাকে প্রক্টর, প্রভোস্ট, ডিন, উপ-উপাচার্য, উপাচার্য এবং বিভিন্ন সংস্থা বা কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার।

শুভ রাত্রি।

৩৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৫৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: এতো রাত্রে কি করেন ? লন্ডনের প্রতিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ছোট ছোট রেষ্টুরেন্ট আছে সেখান থেকে একটা “ডোনাট” আর একটা “সসেজ রোল” এনে দেন - এর বেশী কিছু খেতে পারবো না, সমস্যা অন্যখানে - খুদা আছে তবে পাউন্ড নাই, সস্তা লজে থেকে থেকে পাউন্ড সব সেখানেই শেষ, এখন ডোনাট আর সসেজ রোল খেয়ে খেয়ে ফ্লাইট ডেটের অপেক্ষা করছি - আরো তিন দিন থাকতে হবে আপনার লন্ডনে - গুরু কতো দিনে তিন দিন হয় ???

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরু...........
লন্ডন কবে গেলেন? কোন এরিয়ায় ছিলেন? কোন কোন জায়াগায় বেড়াতে গিয়েছেন? কেমন লাগলো? লন্ডনের আকাশের বিমানগুলো গুনেছেন তো?..........!!!

লন্ডনে শুধু সসেজ রুলটাই মন চাইলো, আর কিছু মন চায়নি??? বেটার হবে, বার্গার কিং থেকে একটি ডেলিসিয়াস বার্গারের অর্ডার দেন; সাথে স্টার বাকসের এক কাপ কফি B-), পাউন্ড শেষ হলে সমস্যা নেই; ক্রেডিট কার্ড পাঞ্চ করেন B-)

আর বিরক্তিকর অপেক্ষায় তিন দিনে ৩০ দিনের সমান হয়; পাশাপাশি কোন কেসিনোতে ঢুকে পড়ুন; এক দানেই কোটিপতি হতে পারবেন, সময়ও ভাল কাটবে।

৩৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: গুরু
লন্ডন ভ্রমণ ইতিহাস ২০১২ । সে এক আনন্দ-বিষাদ-কষ্ট-খুদা-অপেক্ষা আর বোকামীর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ সময় ১২ দিন ।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আহারে............, জানলে তো গুরুকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করতাম; মিস করলাম সাক্ষাৎটা......

৩৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৪৫

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ঢাবি তার পুরানো ঐতিহ্য হারিয়েছে বহু আগে । এখন বেঁচে আছে তার কংকাল

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



লেখাটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ, শাহরিয়ার ইমন ভাই, :( :( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস মানেই ছাত্র রাজনীতির তির্থ ভূমি। এখানে মিছিল মিটিং করলেই যেন সব দাবী আদায় হবে? এটা যে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা বেমালুম ভুলে যান ছাত্র নেতৃবৃন্ধ? সামান্য বিষয় নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যাপী মিছিল-সমাবেশ। তাও আবার উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে। এসব মিছিলের অধিকাংশের কেন্দ্রস্থল কলা ভবন সংলগ্ন “অপরাজেয় বাংলা’, বটতলা বা আমতলা। মিছিলের সময়টা ১০টা থেকে ১ টা। এসময় কলা ভবনে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে থাকেন। এবার চিন্তা করুন ৯০-১০০ ডেসিবলের শব্দের মধ্যে কতটা মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করা সম্ভব? আবার অনেক সময় শিক্ষক বিরক্ত হয়ে ক্লশ বন্ধ করেও চলে যান।

আর এ মিছিল বা সমাবেশ মাসে একটি ব দুটি নয়। প্রতিকর্ম দিবসে। আবার দিনে দু-তিনটিরও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী যেখানে মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করতে পারছেন না, শিক্ষক ক্লাশ নিতে পারছেন না সেখানে তাকে নিয়ে জাতির আশা-আকাংখা পরের কথা; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জাতির কাংখিত ফল লাভেল জন্য দরকার শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এটা সোনার হরিণ। এখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা মানে রাজনৈতিক পরিচয় কার কি?

যদি আপনি বিরোধী দলের হয়ে থাকেন তবে আপনার নিরাপত্তা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ অপরাগ। এমনও হতে পারে আপনাকে কি কারণে আহত করা হবে তা যেমন আপনিও জানবেন না, তেমনি যারা করবে তারাও জানবে না। সব সময় একটা সংকার মধ্যদিয়ে কাটে একজন শিক্ষার্থীর। এরপর রয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর হল দখল, সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের মধ্যে গ্রুপিং নিয়ে ক্রোন্দল ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইত্যাদি। এসব কারণে একজন শিক্ষার্থী সব সময় তার নিরাপত্তায় ভোগেন। তেমনি ভাবে ঐ শিক্ষার্থীর অবিভাবকরাও। এই হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার বাস্তব পরিবেশ।

ইমন ভাই মন খারাপ না করে নিয়মিত ভাল লেখা পোস্ট করুন; সহ ব্লগারদের ভাল লেখাগুলোতে কমেন্ট করুন দেখবেন পরিচিতি বাড়বে, আপনার লেখার পাঠক ও মূল্যায়ন বাড়বে।

৩৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: আসলে আমরা চাইলেও এখন আর কিছু করতে পারবো না , শুধু কষ্ট লাগে এই ভেবে পরের প্রজন্মকে কি পরিবেশ দিয়ে যাচ্ছি ।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:১৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পর্যন্ত পদের শিক্ষকদের প্রমোশন ও ইনক্রিমেন্ট ইত্যাদির জন্য গবেষণা প্রবন্ধ বাধ্যতামূলক হলেও এ বিষয়েও আছে ব্যাপক শূন্যতা। অন্যান্য অনুষদে যাই আছে কলা এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদে শিক্ষকদের গবেষণা এবং প্রকাশনার সংখ্যা মোটেই সন্তোষজনক নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়-বরাদ্দের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের মাধ্যমে সরকারি তহবিল থেকে। এ বাজেটের আবার শতকরা ৯০ ভাগের বেশির ভাগ ব্যয় হয় বেতনভাতা ও অবকাঠামোগত খাতে। বাকি অর্থ ভাগ ব্যয় হয় শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা খাতে। প্রতিবছরই এ বরাদ্দের হার কমছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৪টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও গত ৮৮ বছরে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য গবেষণাকর্ম সম্পাদিত হয়নি। অর্থের অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গবেষণা কেন্দ্র মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। অথচ গবেষণা এবং নতুন নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ।

বিভিন্ন সরকারের সবুজ সঙ্কেতের অভাবে ১৯৯০ সালের পর থেকে ডাকসু নির্বাচন হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। অছাত্র, বহিরাগত ক্যাডার বা ক্ষমতাসীনদের আর্শীবাদপুষ্টরা নিয়ন্ত্রণ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম। সৃষ্টি হচ্ছে না নতুন নেতৃত্ব। নির্বাচিত নয় বলে কোন দায়বদ্ধতা বা জবাবদিহিতাও নেই।

গত কয়েক দশক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতাদের নিয়ন্ত্রণে চলছে। এখানে জিপিএ ফাইফ (গোল্ডেন অ+) পাওয়া ছাত্রকেও থাকতে হয় ঘিঞ্জি পরিবেশ তথা গণরুমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলে ৯ হাজার আসনের বিপরীতে এর দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থী বসবাস করে। এতে লেখাপড়ার কী অবস্থা হয় তা সহজেই অনুধাবন করা যায়। ক্যান্টিন ও ডাইনিংগুলো থেকে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয় তাতে হল প্রশাসনের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। ডাইনিং-ক্যান্টিন দেখার জন্য এক বা একাধিক আবাসিক শিক্ষক থাকলেও তাঁরা খুব একটা নজর দেন না। এই নজরদারির অভাব, রাজনীতি, দলীয়করণ, অর্থলিপ্সার কারণে ক্রমেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিম্নমুখী হতে চলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দায়িত্ব ছিল জ্ঞানের বিস্তার ও নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কী এসব দায়িত্ব পালন করছে যথাযথভাবে? দেশের ক্রান্তিকালে বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পালন করেছে প্রধান ভূমিকা।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও দেশ গঠন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বা অধিকার আদায়ে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল কেন্দ্রবিন্দু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তারা বিশ্বাস করে স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব জরাব্যাধি ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ফিরে পাবে তার হারানো ঐতিহ্য ও গতিময়তা।

কমেন্ট করায় এবং লেখাটি পড়ায় কৃতজ্ঞতা রইলো পবিত্র হোসাইন ভাই।

৩৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:২২

সাদাফ কামরুল হাসান বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পোষ্টটি পড়ে।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:২২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড; আর এই মেরুদণ্ডের কারিগরেরা যখন মেরুদণ্ডহীন হন; তখন জাতির মেরুদণ্ডে ঘুণে ধরে, পঁচন ধরে। কারণ, এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করে; সচিব, ডিসি, এসপি, জেনারেল, এমপি, মিনিস্টার হয়।

শিক্ষকদের নীতি ও আদর্শে গাফলতি থাকলে তা অটোমেটিকভাবে ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত কর। ফলস্বরুপ আমরা পাই একদল ঘোষখোর, নীতিহীন, বিবেকহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন আমলা ও রাজনীতিবিদ।

এখন তো প্রাইমারি স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মাস্টার্স ডিগ্রিধারী; তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সাথে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পার্থক্য কোথায়? নিশ্চয় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র পড়ানো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়ানো এক বিষয় নয়; অথবা পড়ানোর পদ্ধতি এক নয়। তাহলে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে বাড়তি কি কি যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক?

উত্তর হলো, (১) একাডেমিক ভাল ফলাফল; (২) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা; (৩) ট্রেনিং; (৪) বিষয়ভিত্তিক গবেষণা; (৫) পিএইচডি (এটা আবশ্যিক নয়, তবে থাকলে ভাল)।

ধন্যবাদ, সাদাফ কামরুল হাসান ভাই।

৩৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮

প্রামানিক বলেছেন: আগে শিক্ষকরা প্রচুর লেখাপড়া করতো কারণ যে শিক্ষক যত জানতো তত ছাত্রদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করতে পারতো। এখন কিন্তু সেই চর্চা কমে গেছে। এখন জ্ঞান চর্চা না করে দলীয় চিন্তায় দিন কাটায়।

১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পদায়ন ও মর্যাদা যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় হয় তখন সেখানে গবেষণা ও সুষ্ঠু পাঠদান মুখ্য বিষয় থাকে না। আর এটাই হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ধ্বংসের সবচেয়ে সহজ পথ। এতে ভাল মানের শিক্ষকরা গবেষণায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলশ্রতিতে আমরা পাই আন্তঃসার শুণ্য একদল শিক্ষক, গলাবাজ অধ্যাপক, মেরুদণ্ডহীন জাতির বিবেক। শুনা যায় অনেক শিক্ষক অন্যের গবেষণা কর্ম শতভাগ নকল করে ধরা পড়েছেন। রাজনীতি যেখানে মান মর্যাদা আর রুটি রুজির প্রধান হাতিয়ার সেখানে অন্য শিক্ষকের গবেষণাকর্ম চুরি হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতিটাই তো বেশিরভাগ শিক্ষকের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু।

"গত নয় বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে। নিয়োগ পেয়েছেন ৯০০ জনের অধিক শিক্ষক! এ নিয়োগটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হলে খুশি হতাম; কেননা শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ও মান উন্নীত হয়। কিন্তু বিভিন্ন উৎস থেকে শুনা যায়, এসময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেক নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য। এই সংখ্যাটা সম্ভবত গিনজ বুকে স্থান পেতে পারে। দল ভারী করার জন্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় তখন শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়টা মূখ্য হয়ে উঠে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি। এমনও অভিযোগ আছে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ছাড়াই কোন কোন ছাত্রকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।"

প্রিয় প্রামানিক ভাইয়ের কমেন্ট পেয়ে খুব ভাল লাগছে; কৃতজ্ঞতা রইলো।

৪০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৫৫

সোহানী বলেছেন: পার্সোনাল অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমার খুব কাছের বন্ধুর অনার্স মাস্টার্সে রেকর্ড নাম্বার পেয়েছিল। কিন্তু শিক্ষক হতে পারনি কারন সে রাজনীতি করতো না বা সেসব টিচারদেরও তেল দিতো না। ঠিক যে ১২ তম মেধা তালিকায় ছিল সে সবাইকে ছাড়িয়ে টিচার হয়ে গেল। কারন সে একজন এমপি পুত্র। এইতো গেল ছাত্র পর্যায়ের কথা...... শিক্ষক!!!! ভিসি পোস্ট, ডিন পোস্ট, এমন কি হলের টিউটর পোস্ট সবই হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। তুমি যদি কোন রংয়ের পতাকাতলে না থাকো তাহলে তুমি হইলা দুধ ভাত। প্রথমে কোনভাবেই শিক্ষক হবার যোগ্যতা রাখো না ... তারপর হলেও তারা থাকে পেটে ভাতে। কিভাবে যে মেধাবী তরুন সমাজ ধ্বংস হচ্ছে....। কদিন আগেইতো দ্বিতীয় থাকা মেয়েটি ক্ষমতার জোরে রাবির শিক্ষক হতে না পেরে ছেলেটি আত্মহত্যা করলো।

যাইহোক, সব কিছুর মূল এক জায়গায়। আজকে বেন করা হোক ছাত্র রাজনীতি কাল থেকে দেখবা সবাই পড়াশুনায় মনোযোগ দিচ্ছে। ছাত্র বা শিক্ষক........ অন্তত দুএকটা জায়গায় এ অসুস্থতা না ঢুকালে দেশ অন্তত অনেক দূর এগিয়ে যেত।

ভালো থাকুন প্রিয় লেখক।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপু, আমি খুব লাকি; আপনি যখন নীরবে, নিভৃতে ব্লগে এসে চুপিচুপি আমার পোস্ট পড়েন তখন আমি ব্লগে থাকি; একটু আগেই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম, না ঘুম বাবাজি একবার ঢুশ করে এসে টুশ করে বের হয়ে গেল; কখন আসবে ঠিক নেই :( ৷এখন একটি বিদেশী গল্পের অনুবাদ করছিলাম হঠাৎ আনমনে ব্লগে ঢুকতেই প্রিয় আপুনির কমেন্ট B-)

আপু, আমাদের সমাজের পঁচন মাথায় ধরেছে, এজন্য এটি এইডসের মতো মহামারি এখন; এজন্য পড়ালেখা করেও আমাদের বিবেক সৃষ্টি হয় না, দেশপ্রেম জাগে না, দেশের যে সাধারন পাবলিকের করের টাকায় পড়েছি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি না ৷এটি জাতি হিসাবে আমাদের ছোট করছে বিশ্বের দরবারে ৷

এদেশে ভিসি হয় দেশের শিক্ষক নামধারী কিছু দালাল ও চাটুকার; যাদের বেশিরভাগের নেই কোন যোগ্যতা ৷এটা দুঃখজনক ৷এদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ হয় দলীয় পরিচয়ে, ফলশ্রুতিতে এরা সরকার দলীয় ছাত্র নেতাদের সাথে আঁতাত করে চলে; কনট্রোল করে সব শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ, ঠিকাদারী ও হল বাণিজ্যের ৷

আসলে এর পরিবর্তন আশু দরকার; কোটা ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল ছাত্র আন্দোলনের মতো "পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রয়-শিক্ষক রাজনীতি, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের দলীয় প্রভাবের বিরূদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে হবে ৷" না হলে জাতির মাথায় পঁচন ঠেকানো যাবে না ৷

মন তো এখন ভাল হয়ে গেছে, তাই না!!! শুভ অপরাহ্ন আপু ৷

৪১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: কাওসার চৌধুরী ,




আপনার এমন লেখাতে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছু বলার নেই ।
সাদা, নীল, লাল, হলুদ সব রং মিলেমিশে শিক্ষার পরিবেশটাই যে আজ আতঙ্কিত হবার মতো একটা বিষের আঁধার হয়ে উঠেছে , তাতে সন্দেহের কিছু নেই ।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৩১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, শ্রদ্ধেয় @ আহমেদ জী এস;
আপনি ঠিকই বলেছেন, "সাদা, নীল, লাল, হলুদ সব রং মিলেমিশে শিক্ষার পরিবেশটাই যে আজ আতঙ্কিত হবার মতো একটা বিষের আঁধার হয়ে উঠেছে , তাতে সন্দেহের কিছু নেই।"

এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে না আসলে জাতির ভবিষ্যৎ হতাশার; এজন্য প্রয়োজন দক্ষ হাতে দেশকে পরিচালিত করার মতো নেতৃত্ব ৷শিক্ষাকে বুঝে এমন কিছু দিক নির্দেশক ৷দেখা যাক নতুন প্রজন্ম পরিবর্তন আনতে পারে কিনা?

শুভ রাত্রি ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.