নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ কানট্রি ডক্টর (A Country Doctor); ফ্রাঞ্জ কাফকার (Franz Kafka) বিখ্যাত গল্পের অনুবাদ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১১


খুব অসুবিধায় পড়লাম; সময়টা মোটেও আমার অনুকূলে ছিল না। যাত্রাটি ছিল তাৎক্ষনিক, কিন্তু ভীষণ জরুরী। সেদিন প্রায় ১০ মাইল দূরে একজন খুব অসুস্থ রোগীক দেখতে যাওয়ার ডাক পড়েছিল আমার। রোগীর কাছে দ্রুত পৌছিতে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ভারী তুষারঝড়; ঝড়ে সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল। আমার নিয়মিত যাত্রার বাহনটি খুব হালকা পাতলা গড়নের হলেও চাকাগুলো ছিল বেশ বড়; যা আমাদের গ্রামীণ রাস্তায় চলার খুব উপযোগী। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ঊলের কোটটা গায়ে দিয়ে নিজেকে ভালভাবে মুড়িয়ে নিলাম। হাতের ব্যাগে প্রয়োজনীয় ডাক্তারী যন্ত্রপাতি ভরে বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি; কিন্তু এতদূরে যাওয়ার জন্য তখন পর্যন্ত ঘোড়ার কোন ব্যবস্থা হয় নাই!

হ্যা, আমার যাতায়াতের ঘোড়ার জন্য অপেক্ষায় আছি।

এবারের ভারী তুষারপাতের ধকল সহ্য করতে না পেরে গত রাতে আমার ঘোড়াটা হঠাৎ করে মারা গেছে। এজন্য একটি ঘোড়ার ব্যবস্থা করতে কাজের মেয়েটি সারা গ্রাম চষে বেড়াচ্ছে সেই কখন থেকে। কিন্তু কেউ ঘোড়া ধার দেবে বলে মনে হয় না; আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছি। আমি জানি পাওয়া যাবে না। তবুও নিজেকে সান্তনা দিতে বেহুদা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা তুষারপাতের উপর ঠায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি।

অবশেষে মেয়েটি ফিরলো, কিন্তু একাকী! আমি যেমটা ভেবে ছিলাম ঠিক তাই হলো। সে হাতের ল্যানটন এদিক ওদিক ঘুরিয়ে আমাকে খুঁজতে লাগলো। এই তুষারঝড়ে কে তার প্রিয় ঘোড়াটি ধার দেবে, বলুন? আমি আঙিনায় আরেকটু এগিয়ে গেলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী করবো? চরমভাবে হতাশ হয়ে অব্যবহৃত পুরাতন একটি শুকরের ঘরের দরজায় লাথি দিতে লাগলাম। লাথির জোরে দরজাটি খোলে গিয়ে দোল খেতে লাগল।

একটি অচেনা ঘোড়ার উষ্ণ ঘ্রাণ নাকে এসে লাগল। অবাক হলাম! আরেকটু এগিয়ে যেতেই ভেতরে ল্যান্টনের নিভুনিভু আলো চোখে পড়ল। দেখলাম, নীল চোখের একজন হুডওয়ালা লোক সেখানে পড়ে আছে। "আমি কি ঘোড়াটি এখানে বেঁধে রাখতে পারি।" লোকটি দ্রুত এগিয়ে এসে বিনয়ের সাথে অনুমতি চাইলো। আমি বুঝতে পারছিলাম না জবাবে লোকটিকে কি বলব অথবা আমার কি বলা উচিৎ? একটু কাত হয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে চারিদিকে আবার চোখটি বুলিয়ে নিলাম এখানে আরো কিছু আছে কিনা। কাজের মেয়েটিও চুপচাপ আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ মেয়েটি বলে উঠলো, "একজন মোটেও জানে না আরেকজন অপরিচিত লোক চুপিচুপি তার ঘরে কি করছে।" তার কথা শুনে আমরা উভয়েই হেঁসে উঠলাম।

অশ্বরোহী আমাদের দেখে হতবিহ্বল হয়ে কেঁদে উঠে বললো, "প্রিয় ভাই ও বোন, দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।" দু'টি শক্তিশালী ঘোড়া একটার পেছনে আরেকটি গাঁধাগাধি করে আছে। তাদের পা গুলো শরীরের সাথে আঁটসাঁট করে জড়িয়ে আছে; মাথাগুলো দাঁড়িয়ে থাকা উটের মত মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে; পুরো দরজাটির পথ তারা আঁটকে আছে। একটু নাড়াচড়া করতে দেখা যাচ্ছে; লম্বা পা এবং বড় হৃষ্টপুষ্ট শরীর নিয়ে একদম সোজা দাঁড়িয়ে আছে।

আমি চিৎকার দিয়ে কাজের মেয়েটিকে বললাম, "লোকটিকে সাহায্য করতে হবে।" সাথে সাথে মেয়েটি তড়িৎ গতিতে আন্তরিকভাবে ঘোড়ার পিঠে বাঁধা ওয়াগনটিতে হাত দিল। কিন্তু অবাকের বিষয় মেয়েটি অশ্বরোহীর কাছাকাছি যেতেই লোকটি জোর করে তাকে দু'হাতে জড়িয়ে ধরলো। ভয়ে মেয়েটি চিৎকার দিয়ে নিজেকে ছড়িয়ে আমার কাছে এসে দাঁড়ালো। খেয়াল করে দেখলাম, মেয়েটির গালে দুই পালি দাঁতের কামড়ের দাগ! জায়গাটি লাল হয়ে আছে। আমি খুব রেগে চিৎকার দিয়ে লোকটিকে বললাম, "পশুর মত কেন তুমি মেয়েটিকে কামড়ে দিলে, কেন? কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো লোকটি তো আমার অপরিচিত; কোথা থেকে সে এসেছে জানি না। লোকটি আমাকে নিজে থেকে সমস্যা হতে উত্তরণের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে; যেখানে গ্রামের সবাই না করে দিয়েছিল।

লোকটি এমন ভাব করছে যেন, আমি কি ভাবছি তা তার জানা! আমার রূঢ় ব্যবহারে কিছু মনে করবে না তো? আমার দিকে বার কয়েক তাকিয়ে আবারো ঘোড়াগুলো নিয়ে ব্যস্থ হয়ে পড়লো। হঠাৎ বলে উঠলো, "জলদি ঘোড়ায় উঠুন", সব কিছু তৈরী আছে। আমি মনের খুশিতে ঘোড়ায় সওয়ার হতে হতে বললাম, "আমি কখনো এতো সুন্দর ঘোড়ার পালের সাথে যাত্রা করার সুযোগ পাইনি। আমি সামনে থাকব। কারণ, আমি যে পথ দিয়ে যাব তা তোমার অচেনা।" উত্তরে সে সম্মতি দিল। একটু ভেবে আবার বললো, "আমি তোমার সাথে যাচ্ছি না, আমি এখানে রসার সাথে থাকবো।" শুনে রসা চিৎকার করে বলে উঠলো, "না, তুমি আমার সাথে তাকতে পারবে না।" কথাটি বলেই সে বাড়ির পানে দৌড় দিল। অজানা আশংকা ও ভয় অনুভব করলো সে।

আমি দরজার চেইটি টানার স্পষ্ট আওয়াজ শুনতে পেলাম; তালার শব্দও কানে আসলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম কত তাড়াতাড়ি সে বারান্দা পাড়ি দিয়ে দ্রুত পায়ে ঘরের বাতি নিভিয়ে দিল; যাতে কেউ সহজে তাকে খুঁজে না পায়। "তুমি আমার সাথে যাচ্ছ?" আমি অশ্বরোহীকে উদ্দেশ্য করে জানতে চাইলাম। তুমি আমার সাথে না গেলে আমি যাব না; তা যতই জরুরী হোক না কেন? এ যাত্রার বিনিময়ে আমি কোন অবস্থাতে মেয়েটিকে তোমার হাতে তুলে দিতে পারবো না। "যাও তাড়াতাড়ি", সে হাতে তালি দিতে দিতে বলে উঠলো। ঘোড়া দ্রুতবেগে ছুটতে লাগলো। এটা অনেকটা দ্রুতবেগে চলা স্রোতের মাঝে ভেসে যাওয়া এক টুকরো কাঠের মত।

আমার কানে এখনো বাজছে অশ্বরোহীর আক্রমণে কিভাবে দরজাটি ভেঙ্গে খান খান হয়ে গিয়েছিল; তারপর আমার চোখ-কান এমন একটি গর্জনের সাক্ষী হয়েছিল যা এখনো আমাকে আচ্ছন্ন করে আছে।


ভাবনাটি আর দীর্ঘ হলো না; ততক্ষণে আমি রোগীর বাড়ির উঠানে পৌছে গেছি। শেষ পর্যন্ত আসতে পারলাম! আমাকে দেখে তারা বাড়ির সদর দরজাটি খোলে দিল। ঘোড়াগুলো শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে; তবে তুষাপাত থেমে গেছে। চমৎকার চাঁদের আলোয় চারদিক আলোকিত। আমার উপস্থিতি দেখে রোগীর মা-বাবা তড়িৎ গতিতে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন; রাগীর বোনটিও পেছেনে পেছনে আসলো। আমাকে ধরাধরি করে ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামালো। তবে তাদের কথা বার্তার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝলাম না। রোগীর ঘরটি এতো ছোট যে, মনে হচ্ছিল এখানে একজনও সুস্থভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারবে না। দেখলাম অযত্নে পড়ে থাকা চুলা থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমি ঘরটির জানালা খোলার চেষ্টা করলাম, কিন্তু সবার আগে অসুস্থ ছেলেটার প্রতি দৃষ্টি দিলাম।

রোগা চেহারা। তার শরীরে জ্বর-টর আছে বলে মনে হলো না; শরীর গরমও না আবার ঠান্ডাও না। খোলা চোখ, গায়ে কোন জামা নেই। ভারী কম্বলে মোড়ানো শরীরটা টেনে তুলে আমার গলা জড়িয়ে ছেলেটা কানে কানে বললো, "আমাকে মরতে দিন।" আমি চারিদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকালাম, না কেউ শুনতে পায়নি। সামনের দিকে ঝুঁকে তার বাবা-মা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে; আমার মতামতের অপেক্ষা করছেন তারা। সেবিকা আমার চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যাগটি রাখার জন্য একটা টুল নিয়ে আসলো। আমি ব্যাগটি খোলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি খুঁজতে লাগলাম। রোগী বিছানায় শুয়ে অপলক চোখে আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন আমি তার অনুরোধটি ভুলে না যাই। আমি কয়েটি সন্না বের করে মোমবাতির আলোয় পরীক্ষা করে আবার রেখে দিলাম।

"অসুখটা ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বাস থেকে হয়েছে।" তার বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে আমি বললাম। সাথে যোগ করলাম, এসব ক্ষেত্রে কেবল ঈশ্বর সাহায্য করতে পারেন; একজন ডাক্তারের তেমন কিছু করার নেই।

ঈশ্বর হারিয়ে যাওয়া ঘোড়াটি ফেরৎ দিলেন; জরুরী হওয়ায় সাথে আরেকটি ঘোড়াও যুক্ত হলো! আর উপরি হিসেবে একজন অশ্বরোহীকে পাঠালেন। রসার কথা বারবার মনে পড়ছে আমার। আমি মেয়েটির জন্য কী করতে পারি? কিভাবে তাকে রক্ষা করবো? আমি কিভাবে তাকে অশ্বরোহীর কাছ থেকে বাঁচাতে পারি? এখান থেকে দশ মাইল দূরে তাকে অসহায় হয়ে ফেলে এসেছি।

বাঁধন একটু আলগা হওয়ায় ঘোড়াগুলো বাইরে থেকে দরজা খোলার চেষ্টা করছে। আমি জানি না এটা কিভাবে সম্ভব। তারা যেন জানালার ভেতর দিয়ে অসহায় পরিবারটির দিকে তাকিয়ে আছে। আমার এখনই ফিরে যাওয়া উচিৎ। আমার মনে হয় ঘোড়াগুলো আমাকে নির্দেশ করছে যাতে তাড়াতাড়ি ফিরে যাই। গরমের জন্য আমি কিছুই ভাবতে পারছি না। উলের গরম কোট খুলবো কিনা? সেবিকা জানতে চাইলো। আপ্যায়নের জন্য তারা এক গ্লাস মদ (রাম) নিয়ে আসলো। বুড়ো লোকটা আমার কাঁধে ধাক্কা দিয়ে বললো, সবচেয়ে প্রিয় সম্পদের বলিদান তার নিজের জন্য একটি পরীক্ষা। তার কথা শুনে আমি মাথা নাড়িয়ে দ্বিমত পোষণ করলাম। সংকীর্ণ মনা বুড়ো লোকটি ভাবলো আমি সুস্থ মানুষ নয়! সুস্থ হলে দ্বিমত পোষণ করতাম না। তাদের দেওয়া বিয়ার পান না করার একমাত্র কারণ ছিল এটি।

অসুস্থ ছেলেটির মা বিছানার পাশে বসা ছিলেন, তিনি ইশারায় আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। একটি ঘোড়া যখন খুব আতঙ্কিত হয় তখন যে শব্দ করে আমি সেভাবে ছেলেটির বুকের কাছাকাছি মাথাটি নোয়ালাম। আমার ভেজা দাঁড়ির নীচে অদ্ভুত একটি শব্দ শুনতে পেলাম। এবার নিশ্চিত হলাম; ঘটনা যা ভাবছিলাম তাই। ছেলেটি স্বাস্থবান। মা তাকে যত্ন করে কফি খাওয়াচ্ছেন। ছেলেটি খুব সুঠাম ছিল বিধায় আমার ইশারায় এক ধাক্কায় উঠে বসলো। আমি পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারবো না, এখন তাকে মিথ্যা বলতে হবে। আমি জেলা প্রশাসনের অধীনে কাজ করি, আমি সব সময় নিষ্টার সাথে রোগীর চিকিৎসার জন্য মনোনিবেশ করি। খুব সামান্য বেতন হলেও আমি সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করি। সর্বদা অসহায় ও দরিদ্রের সাহায্যে এগিয়ে আসি।

রসাকে দেখে শুনে রাখাও আমার দায়িত্ব। মনে হচ্ছে ছেলেটি মারা যাবে, আমিও চাই সে মরে যাক। কেন যে এতো ঠান্ডা উপেক্ষা করে এখানে এসেছি! আমার ঘোড়াটি মারা গেল; গ্রামের একটি লোকও তাদের ঘোড়াটা কিছু সময়ের জন্য আমাকে ধার দিল না। পরিত্যক্ত শুকরের ঘরটিতে ঘোড়াগুলো না পেলে হয়তোবা শুকরের পীঠে সওয়ার হয়ে এখানে আসতাম! এরা এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। আর জানলেও বিশ্বাস করবে বলে মনে হয় না। আমি তাৎক্ষনিকভাবে রোগের ব্যবস্থাপত্র লিখতে পারি; কিন্তু মানুষকে বিষয়টি বুঝানো মুশকিল। আমাকে এবার রোগী দেখার পর্ব শেষ করতে হবে। তারা আবারো চেষ্টা করতে শেষ অনুরোধ করলো। এ বিষয়গুলোতে আমি অভ্যস্থ। রাতের বেলাও এলাকার লোকজন জরুরী সেবার জন্য আমাকে জ্বালায়। সুন্দরী রসাকেও এ জ্বালাতন সারা বছর ধরে সহ্য করতে হয়। এটা মেয়েটার অনেক বড় ত্যাগ আমি তা বুঝি।

আমি হাতের ব্যাগটি গুছিয়ে নিলাম এবং উলের কোটটি এগিয়ে দিতে বললাম। পরিবারের সবাই একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটার বাবা হাতের বিয়ারের গ্লাসে চুমুক দিতে ব্যস্ত। আর ছেলেটির মা? সম্ভবত আমার উপর নাখোশ। আমার এর চেয়ে বেশি কিছুই করার ছিল না। তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে ঠোঁট কামড়াচ্ছেন। সেবিকা রক্তে লাল রুমালটি দিয়ে ছেলেটার শরীর মুছে দিচ্ছে। আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছেলেটার উপর অশরীরী কোন আত্মার ছায়া পড়েছে। আমি তার দিকে এগিয়ে যেতেই সে একটি হাসি দিল। আমার প্রস্থান তাকে দারুন এক স্বস্তি এনে দিচ্ছে। হঠাৎ সে 'উহ!' করে একটি নিঃশ্বাস নিল। ঘোড়া দু'টিও সম্ভবত শব্দটি শুনতে পেল। মনে হলো শব্দটি উপর থেকে ভেসে এসেছে আমাকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি নিশ্চিত ছেলেটা খুব অসুস্থ। দেখলাম ছেলেটার নিতম্বের ডান পাশে খোলা হাতটি রাখা। কিন্তু খোলা হাতের তালুটি দেখতে অনেকটা গোলাপী রঙের। তবে তার উপরের দিকটার রঙ কিছুটা ভিন্ন। ছোপ ছোপ রক্তের দাগ সর্বত্র। দূর থেকে লাইটের আলোর মত লাগছে। কিন্তু কাছ থেকে দেখা যায় না; এজন্য মনযোগ দিয়ে খেয়াল না করলে এটি কারো চোখে পড়বে না। এটি আমার সবচেয়ে ছোট আঙুলের চেয়েও ক্ষুদ্র দেখতে, পাশাপাশি রক্তাক্ত। গভীর মনযোগে দেখলাম, সাদা রঙের ছোট ছোট পোঁকাগুলো কিলবিল করছে। এরা আক্রান্ত জায়গায় একজোট হয়ে আলোর দিকে তাকিয়ে আছে।


বেচারা! কেউ তোমাকে সাহায্য করতে পারছে না। আমিই খুঁজে পেয়েছি তোমার হাতের বড় ক্ষতটি। এই ক্ষতটির জন্য তুমি মরতে বসেছ! আমি তোমার সুস্থতার জন্য চেষ্টা করছি এটা দেখে পরিবারের সবাই বেশ খুশি। সেবিকা ছেলেটার মাকে ক্ষতটির বিষয়ে জানালো, তিনি স্বামীকে তা অবগত করলেন, এরপর বাড়িতে আসা আগন্তুকদের জানালেন। যারা সুন্দর এ জোছনা রাতে দরজার মুখে ভীড় জমিয়ে উঁকি দিচ্ছে।

"তুমি কী আমাকে বাঁচাতে পারবে?" ফিসফিস করে ছেলেটি জানতে চাইলো। সে একটি ককানি দিয়ে আবারো বললো, " আমার জীবনটা এই ক্ষতের মধ্যে সীমাবদ্ধ।" আমাদের এলাকার লোকজন এমনই। তারা সব সময় ডাক্তারদের কাছে অবিশ্বাস্য কিছু আশা করে। তারা তাদের পূর্ব পুরুষদের বিশ্বাস ভুলে গেছে। একটা সময় যাজকরা বাড়িতে এসে লম্বা গাউন পরে একটার পর একটা মন্ত্র জপ করতেন। কিন্তু ডাক্তাররা তাদের অর্জিত বিদ্যা দিয়ে সবকিছু জয় করতে চায়। এটা ঠিক না।

ভাল কথা, তারা হয়তো এভাবেই ভাবতে অভ্যস্থ; মনে মনে ভাবলাম আমি। কিন্তু আমি চাই না আমার বেলায় এমনটি হোক। তাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় তাহলে তাকে মরতে দেখতে আপত্তি নেই। একজন বুড়ো গ্রামীণ ডাক্তার হিসেবে আমার আর কি করার আছে? আমি এত অসহায় যে, কাজের মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেছে; অথচ কিছুই করতে পারি নাই।

ভাবনার মাঝখানে হঠাৎ গ্রামের আবাল বৃদ্ধ সবাই ছুটে এসে আমাকে আক্রমণ করলো; টেনে হিচড়ে একদম ন্যাংটা করে দিল। ঘটনার আকষ্মিকতায় আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। গান গাইতে গাইতে স্কুলের একদল শিশু তাদের শিক্ষক সহ দলবলে ছুটে এসে বাড়িটার সামনে দাঁড়ালো এবং সুর করে গাইতে শুরু লাগলো-

"কাপড় তার খুলে নাও, যাতে আরোগ্য হয়;
যদি ছেলেটি সুস্থ না হয়, তবে তাকে মেরে ফেল।
একজন ডাক্তার মাত্র, কেবল একজন ডাক্তার।"

এবার আমি বাধ্য হয়ে কাপড় খুলে নগ্ন হয়ে একপাশে কাঁত হয়ে দাড়িতে আঙুল দিয়ে বিলি কাটতে লাগলাম এবং শান্তভাবে তাদের দিকে তাকালাম। এমন পরিস্থিতিতেও আমি পুরোপুরি শান্ত; যদিও তাতে আমার কোন ফায়দা হচ্ছে না। আমি মনে মনে প্রমোদ গুনতে লাগলাম এবং সম্ভাব্য কি ঘটতে পারে তা নিয়ে শংকিত হলাম। আগন্তুকেরা এবার আমাকে মাথা দিয়ে গোতা দিতে লাগলো এবং লাথি দিয়ে টেনে হিচড়ে নীচে ফেলে দিল। তারা ওয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে আমাকে এমনভাবে বসিয়ে রাখলো যাতে অসুস্থ ছেলেটার ক্ষতটা দেখতে পাই। এবার সবাই দরজায় শক্ত করে তালা লাগিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

খেয়াল করে দেখলাম ছোট বাচ্চাদের গান থেমে গেছে। লোকজনের কোন উপস্থিতিও টের পাচ্ছি না। পরিবেশ বেশ শান্ত। মনে হচ্ছে, চাঁদের আলো মেঘে ঢেকে গেছে। তবে আমার বিছানাটি বেশ উষ্ণ। জানালার ছোট্ট ছিদ্র দিয়ে ঘোড়াগুলোর মাথার ছায়া দেখা যাচ্ছিল।

হঠাৎ শুনতে পেলাম কেউ একজন বলছে, "তুমি কি জানো, তোমার উপর আমার বিশ্বাস খুবই অল্প। আমার তো মনে হয় তুমি নিজের পায়ে এখানে আস নাই। হয়তো উড়ে এসেছ। সাহায্য করার পরিবর্তে তুমি আমাকে মরে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছ। ভাল হয় যদি তুমি নিজের চোখ কচলিয়ে সত্যটা উপলব্ধি করতে পার।"

উত্তরে আমি বললাম, "ঠিক আছে। তবে এটা আমার জন্য ভীষণ অপমানের। একজন ডাক্তারের সাথে এমন আচরণ কখনো কাম্য হতে পারে না। একজন ডাক্তার হিসেবে আমি আর কি করতে পারি?" বিশ্বাস করুন, পরিবেশ মোটেও আমার অনুকূলে ছিল না। এই অজুহাতে আমি কি সন্তুষ্ট? হায়! সম্ভবত তা-ই। আমার সব সময় তাই করার কথা। সে আরো বললো, "আমি পৃথিবীতে খুব সুন্দর একটি ক্ষত নিয়ে এসেছি; আর এতে আমি নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছি।"

"শোন বন্ধু; তোমার ভুল হলো, এর জন্য কোন ভূমিকা ছিল না। আমি ইতিমধ্যেই তোমার ঘরের চারদিকে নজর দিয়েছি। তবে আমি বলতে চাই ক্ষতটি খুব মারাত্মক নয়।

কিন্তু এবার নিজের পালানোর পথা বের করতে হবে। দেখলাম ঘোড়াগুলো শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। দ্রুত কাপড়-চোপড়, কোট-টাই এবং ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। কাপড় পরতে কোন সময় নষ্ট করা যাবে না। আসার সময় যেমন ছিল ঘোড়াগুলো যদি এভাবে দ্রুতবেগে এগিয়ে যায় তাহলে অল্প সময়ে বাড়ি ফিরতে পারবো। তড়িঘড়ি করে আমি লাফিয়ে বিছানা থেকে উঠলাম। আমাকে উঠতে দেখে একটি ঘোড়া বাধ্য ছেলের মতো জানালাটি খুলে দিল! আমি যাবতীয় জিনিসপত্র গাড়িতে ছুড়ে মারলাম; কিন্তু পশমী কোটটা দূরে গিয়ে একটি হুকে আটকে গেল। আমি লাফ দিয়ে উঠে ঘোড়ায় সওয়ার হলাম। আমি আলগা করে লাগাম টেনে ধরলাম। পাশাপাশি দু'টি ঘোড়া ছুটছে। পেছনে গাড়ির ওয়াগন। তবে চামড়ার কোটটি টিকই সাথে নিয়েছি। গাড়ি ঘুরিয়ে দিলাম টান। আমরা তুষারের মধ্য দিয়ে দ্রুতবেগে ছুটতে লাগলাম। নিজেকে তখন পরাজিত একজন মানুষ মনে হলো। দেহ ও মন কেমন যেন অসাড় লাগছে। বয়সটা মনে হলো অনেক বেড়ে গেছে। শারিরীক আর মানসিক পরিশ্রম নিজেকে একদম বয়োবৃদ্ধ বানিয়ে দিয়েছে।

উপভোগ কর, আর ধৈর্য্য ধর।
ডাক্তার তোমার সাথে বিছানায় শুয়ে আছে।

আমি হয়তো আর কখনো এভাবে বাড়িতে আসবো না; উদ্যম একদম নষ্ট হয়ে গেছে। একজন উত্তরাধিকারী আমাকে হরণ করেছে। কিন্তু এতে তার কোন উপকার হবে না। সে কখনো আমার স্থান দখল করতে পারবে না। বাড়িতে বিরক্তিকর অশ্বরোহী লোকটা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। এতক্ষণে হয়তো রসা তার শিকারে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয় না এ থেকে মুক্তি মিলবে। বাজে, অন্ধকার এ সময়টাতে, অসুস্থ পার্থিব অসাড় ঘোড়াগুলো আমি কোন রকমে চালিয়ে নিচ্ছি। চামড়ার কোটটি গাড়িতে ঝুলছে; কিন্তু এত পরিশ্রান্ত ছিলাম যে, তা ধরতে পারছিলাম না।

বিশ্বাস ঘাতকতা! এটি একজন ডাক্তারের সাথে স্রেফ বিশ্বাস ঘাতকতা!!

"রাতে দরজায় ভুল সংকেত পেয়ে অসাবধানতাবশত একবার দরজাটি খুলে দিলে, পরে আর তা শোধরানো যায় না। কখনো না।"


লেখক পরিচিতি -

'Franz Kafka' ১৮৮৩ সালে ৩ জুলাই চেকোস্লোভাকিয়ায় (Czech Republic) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে একজন ঔপনিবেশিক এবং গল্পকার ছিলেন। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল সাহিত্যিক হিসেবে মনে করা হয়। 'প্রাগের' একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া এ সাহিত্যিক ছিলেন জার্মান ভাষাভাষী। তিনি আইন বিষয়ে পড়াশুনা করলেও চাকরি করতেন ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি তিনি 'চিটি' লেখতে পছন্দ করতেন।

১৯২৪ সালের ৩রা জুন মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি অস্ট্রিয়ায় মারা যান।

লেখকের বিখ্যাত বইগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো -

(১) The Metamorphosis
(২) The Trial
(৩) In the penal colony
(৪) The castle
(৫) A hunger artist
(৬) Letter to his father
(৭) The complete stories
(৮) Amerika
(৯) Letters to Milena
(১০) A country doctor (etc).


ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

চাইলে পড়তে পারেন-

আমার সবচেয়ে পঠিত পোস্ট।
সবচেয়ে লাইকপ্রাপ্ত গল্প-ধূমকেতু
ধর্ষণ ও ধর্ষক (বাংলাদেশ/বহির্বিশ্ব)
অনুবাদ গল্প-(দি নেকলেস)
দি গিফট অফ দ্যা ম্যাজাই
গল্প লেখার সহজ পাঠ
সবচেয়ে পঠিত প্রবন্ধ।
আধুনিক কবিতার পাঠ (সমালোচনা)
আলোচিত ফিচার 'দি লাঞ্চিয়ন'।
ব্রিটেনের প্রবাস জীবন- স্মৃতিকথা।
সবচেয়ে পঠিত গল্প।
ছবি ব্লগ (লন্ডনের ডায়েরি-১)।


মন্তব্য ৬৪ টি রেটিং +২০/-০

মন্তব্য (৬৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

সনেট কবি বলেছেন: পড়ে পরে মন্তব্য করব।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
শুভ সকাল, শ্রদ্ধেয় সনেট কবি। প্রথম কমেন্টে আপনাকে পেয়ে খুব ভাল লাগছে। আশা করি, আপনার লেখা সনেট এক সময় বিশ্ব সাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। আমরা গর্বিত যে, আমাদের দেশে গুণী এ কবির জন্ম হয়েছে। অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২১

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:
শেষের সুবিধাটা ভাল লাগলো। গল্প আমি পরে পড়বো! এইমাত্র অফিস থেকে আসলাম তো, এখন ঘুমাতে যাব তারপর আপনার সাথে আড্ডা হবে।

আমার একটা অনুরোধ, গল্প থেকে ফরিদ ভাইকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করেন, এতে পাঠকদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে B-)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় সৈয়দ ইসলাম ভাই, শুভেচ্ছা রইলো। গল্পটি সময় করে পড়বেন জেনে খুশি হলাম। আপনি টায়ার্ড হয়ে অফিস থেকে ফিরেছেন, এজন্য বিশ্রামের প্রয়োজন। পরে অনুবাদ গল্পটি পড়ে নিজের মতামতটি দিলে কৃতজ্ঞ থাকিব।

আর 'সনেট কবি' অনেক ব্যস্ত থাকেন। এজন্য হয়তো পরে পড়বেন। পড়ার পরে হয়তো গল্প নিয়ে জিজ্ঞেস করা যাবে। কবির প্রতি আপনার আস্থা দেখে ভাল লাগছে।

শুভ রাত্রি, ইসলাম ভাই।

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভসকাল গুরুদেব,

আমি রোগীর বাড়িতে আপাতত চলে এসেছি । ছোট্ট অপরিস্কার ঘরে রোগীকে দেখতে পেলাম। ইতিপূর্বে রোগীর বাবা - মা ও বোন আমাদের গাড়ি থেকে নামাতে ঘরের বাইরে চলে এসেছেন । আমিও পরে আবার আসছি। ♥♥

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরু...... B-) B-)
হাঁসালেন। আমি তো ভাবছিলাম আপনি কোন রোগীর বাড়িতে আছেন!! নাহ, শেষে এসে ভুলটা ভেঙ্গে গেল। আপনি তো এখন স্কুলে। আমি জানি, প্রিয় ভাই/প্রিয় গুরু ঠিকই অবসর পেলে আবার এসে আশীর্বাদ করে যাবেন।

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অনুবাদ আস‌লেই খুব ক‌ঠিন কাজ। এই ক‌ঠিন কাজ‌টি আপ‌নি কর‌তে পে‌রে‌ছেন।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কেমন আছেন, প্রিয় সাজ্জাদ ভাই? আপনি অনুবাদ গল্পটি পড়েছেন জেনে প্রীত হলাম। আসলে অনুবাদ যে খুব কঠিন একটা কাজ; তা অনুবাদ করার আগে কল্পনায় আসেনি। এতে লাগে প্রচুর সময়, শ্রম আর নিষ্ঠা। সবেচেয়ে বেশি দরকার বিদেশী সাহিত্য নিজের মত করে বুঝে অনুবাদে ফুটিয়ে তোলা। এটা খুব জটিল একটা কাজ। আমি নিষ্ঠার সাথে চেষ্টা করি কাজটি করতে। আশীর্বাদ করবেন যাতে অনুবাদ সাহিত্যে আরো ভালো করতে পারি।

শুভ কামনা রইলো প্রিয় 'সাজ্জাদ' ভাইয়ের জন্য।

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: রাতে দরজায় ভুল সংকেত পেয়ে অসাবধানতাবশত একবার দরজাটি খুলে দিলে, পরে আর তা শোধরানো যায় না। কখনো না।

নিদারুণ সত্যি কথা। পড়া হল অনুবাদ, আশা করছি আপনার কল্যাণে আরও কিছু বিশ্ব বিখ্যাত গল্প পরার সুযোগ পাবো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ, শুভ কামনা।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্টে এসে নিজের ভাল লাগার কথা জানিয়ে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপা। আপনি গল্পের সবচেয়ে শিক্ষনীয় বাক্যটি তুলে ধরেছেন, "রাতে দরজায় ভুল সংকেত পেয়ে অসাবধানতাবশত একবার দরজাটি খুলে দিলে, পরে আর তা শোধরানো যায় না। কখনো না।" আসলে এ গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে লেখকের কথার শতভাগ সত্যতা মিলবে। রাতের আঁধারে তুষারঝড় উপেক্ষা করে নিজের আর ঘরের একমাত্র কাজের মেয়েটির জীবন বিপন্ন করে একজন মুমূর্ষু রোগীকে দেখতে যাওয়ার পরিণাম কত ভয়াবহ হতে পারে!!

অন্ধ বিশ্বাস মানুষকে মানুষ হওয়া থেকে দূরে রাখে। বিবেক ও বোধ জাগ্রত হয় না।

৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার যদি একটা সাহিত্য বিষয়ক পত্রিকা থাকতো আমি আপনার এই কবিতা অবশ্যই ছাপতাম।
আশা করি রাগ করবেন না, আরেকটা কথা বলি- লেখক সম্মানী দিতেও কার্পন্য করতাম না।

ভালো থাকবেন বড় ভাই।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় রাজীব ভাই; শুভেচ্ছা রইলো। আপনার চমৎকার মন্তব্যটি আমাকে দারুনভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি লেখালেখি করি সখ থেকে। আগে শুধু পাঠক ছিলাম; লেখালেখি করবো এমন ভাবনা কখনো ছিল না। হঠাৎ করেই লেখতে শুরু করা। বিনিময় চাই না; আপনাদের আশীর্বাদ চাই। দোয়া করবেন যাতে লেখালেখিতে আরো বেশি মনোসংযোগ ঘটাতে পারি। লেখার মান উন্নীত করতে পারি।

ভাল থাকুন, প্রিয় ভাই।

৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

সূচনা খান বলেছেন: অনার্সে থাকতে বইটি আমার পাঠ্য ছিল। আবার পড়লাম।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



শুভেচ্ছা রইলো। আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। মূল গল্পটি আগে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে যারা পড়াশুনা করেন তাদের জন্য বিদেশী ভাল মানের সাহিত্য পড়ার সুযোগ হয়।

শুভ কামনা রইলো আপনার প্রতি। লিখুন, মন খোলে। ব্লগ মাতিয়ে রাখুন।

৮| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

মিথী_মারজান বলেছেন: সুন্দর একটা গল্প পড়লাম আপনার বদৌলতে।
গল্পটা আগে পড়া ছিলোনা।
অনুবাদ সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।:)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপা, শুভেচ্ছা রইলো। আশা করি ভাল আছেন। আপনাদের মতো গুণীজনেরা আমার ব্লগ ভিজিট করলে, লেখা পড়ে মূল্যবান মতামত জানালে ভাল লাগে, প্রেরণা পাই। আপনার সুন্দর লেখাগুলোও আমি নিয়মিত পড়ি।

ভাল থাকুন, আপা।

৯| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: আংশিক পড়িয়া একখানা লাইক প্রদান করা হইল...;)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরুজনেরা আংশিক পড়লেই পুরোটা বুঝিতে পারেন। আশা করি, আপনিও পেরেছেন। জানেমনের আধা খান প্রতিক্রিয়া পড়েই আমি ভীষণ প্রীত হইলাম। আর লাইকের জন্য আপনাকে শত কোটি আশীর্বাদ করিলাম, যাতে সুন্দরী একখান ডাইনি বউ জীবনে আগমন ঘটে শীঘ্রই!!!

থেঙকু, মেরে জান।

১০| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক সুন্দর গল্প। আপনাকে ধন্যবাদ জনাব।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



অনুবাদ গল্পটি পাঠে এবং কমেন্ট করায় ধন্যবাদ 'সুজন' ভাই। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ভাল থাকুন আর ভাল ভাল লেখা দিয়ে ব্লগ মাতিয়ে রাখুন। আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন।

১১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

আরোগ্য বলেছেন: চমৎকার লেখা কাওসার ভাই। তুষারপাতের দৃশ্যটা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।রসার জন্য আসলে চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু ডাক্তারকে অপদস্থ করার ঘটনাটি বুঝলাম না।আবার পড়ে নেব।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো ভাই। হ্যা, আপনি ঠিকই বলেছেন, তুষারপাতের দৃশ্য আসলেই খুব সুন্দর। বিশেষ করে রাতের বেলা খুব সুন্দর লাগে। রসার জন্য আসলেই খুব দুশ্চিন্তা হওয়ার কথা!! কি ঘটেছে তার জীবনে লেখক তা পরিষ্কার করেন নাই। তবে, গল্পে এ বিষয়ে স্পষ্ট ইংগিত আছে।

আর ডাক্তারকে অপদস্থ করার কারণ হলো তাদের কুসংস্কার। ডাক্তারের চিন্তা ভাবনা ও শিক্ষার সাথে গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা রীতি ও ঈশ্বর বিশ্বাস মিলেনি। এজন্য তারা মনে করেছে, ডাক্তার ঈশ্বরের রীতিকে বৃদ্ধাঙুলী দেখাচ্ছেন। রুগ্ন ছেলেটি ও তার পরিবার তাই মনে করে। সাথে গ্রামবাসীর সমর্থন ছিল।

১২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

আরোগ্য বলেছেন: নেট প্রবলেম এর কারণে মন্তব্যটি দুই বার চলে গেছে। দুঃখিত।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



সমস্যা নেই; আমি বুঝতে পেরেছি। এজন্য একটা ডিলেট করে দিয়েছি। ভাল থাকুন।

১৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি তিনি চিঠি লেখতে পছন্দ করতেন। এখনতো চিঠি লেখা বন্ধ্। এসএমএস জমানা।

অনুবাদ ভালো হয়েছে। সৃষ্টির মধ্যে স্রষ্টার ছায়া নিহিত থাকে। :)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো। আপনি ঠিকই বলেছেন, "সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি তিনি চিঠি লেখতে পছন্দ করতেন। এখনতো চিঠি লেখা বন্ধ। এসএমএস জমানা।" Franz Kafka ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভিকটিম। Jewish পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন বলে তার পরিবার ও বন্ধু বান্ধব বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি পরিবার থেকেও দূরে থাকতেন। এজন্য সব সময় বাবা-মা ও ঘনিষ্ট জনের কাছে নিয়মিত চিটি লেখতেন। এই তালিকায় লেখকের প্রেমিকারাও ছিলেন।

এখনকার সময় হলে তো, Skype, WhtsUp, Facebook, Messanger, Mail, Video Call .........!!!! কত কিছুই ছিল। কষ্ট করে চিটি লিখতে হত না।

১৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮

রাকু হাসান বলেছেন:

গল্পটি দুইবারে পড়লাম । পরে আাসায় সরি ভাইয়া । একটু আগে একটি কমেন্ট লিখলাম । পেজ লোড জনিস সমস্যায় সেটিও হারালাম । আবার লিখি ...

ডাক্টরের মেয়েটাকে রেখে রোগি দেখতে যাওয়া সত্যিই কঠিন সিদ্ধান্ধ ছিল । এমন একটা কঠিন সময়ে যাওয়াতে মানবিকতার পরিচয় পেলাম । কিন্তু ছোট মেয়েটিকে রেখে যাওয়া বাঘের সামনে হরিণ ছেড়ে দেওয়া একই কথা ।আচ্ছা সেই লোকটি মানসিক ভাবে বিকারগ্রস্ত ছিল ,এভাবে কামড় দেওয়াটা অস্বাভাবিক লাগছে । ডাক্টারের কি মেয়েটা কে এভাবে রেখে না গিয়ে সাথে নিতে পারতো না ? তাহলে একটু হলেও সেফ থাকতো । যদিও কঠিন একটি যাত্রা ছিল । ছবি দেখে মনে হচ্ছে ঘোড়ার গাড়িটি বড় ছিল ।
আন্তরিকতার পরিচয় পেলাম ,পেশাদারিত্ব পেলাম সাথে মানবিক একজন ডাক্টার । বলার অপেক্ষা রাখে না গ্রামবাসী ডাক্টারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে । আন্তরিকতার প্রতিদান আন্তরিকতা দিয়েই দেওয়া উচিত । আমি তো ভয়ে ছিলাম যদি মেরেই ফেলে ! যাক শেষে প্রাণে বেঁচে গেছে । শেষ দিকে হালকা ভৌতিক টাইপ মনে হচ্ছে । ....

একবার পড়ে এত বলা ঠিক না । উপরের লেখায় আমার বুঝতে ভুল থাকতে পারে । হলে ক্ষমা করবেন । দোয়া রাখছি আপনার অনুবাদের কাজটি চলতে থাকুক ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয়, রাকু হাসান ভাই। শুনে খুব খারাপ লাগলো আপনার লেখা কমেন্ট ভুলবশত মুছে গেছে শুনে। তবুও আপনি আবার সময় নিয়ে চমৎকার একটি কমেন্ট করেছেন এজন্য ধন্যবাদ। আপনি যে মনযোগ দিয়ে অনুবাদ গল্পটি পড়েছেন তা স্পষ্ট।

তুষার ঝড়ের রাতে অনেক কষ্ট সহ্য করে ডাক্তারের রোগী দেখতে দুরের গ্রামে যাওয়া এবং রসাকে অপরিচিত অশ্বরোহীর কাছে রেখে যাওয়া খুব কঠিন একটা সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি জানতেন এতে রসার জীবন বিপন্ন হতে পারে। শুধুমাত্র পেশাদারি দায়িত্বের কারণে তার এমন ছুটে চলা।

তবে, আগন্তুক অশ্বরোহীর আচরণ আমার কাছে রহস্যময় লাগলো। প্রথম সাক্ষাতে কেন লোকটি রসাকে কামড়ে দিল? কোথা থেকে আসলো? প্রথমে ডাক্তারের সাথে যেতে মনস্থির করলেও কেন পর গেল না তা স্পষ্ট নয়। লোকটি কি সাইকো? কিংবা রসার পূর্ব পরিচিত? তা আমরা জানি না। আর ছবিতে গাড়িটি একটু বড় দেখা গেলেও বাস্তবে সম্ভবত আরেকটু ছোট হবে।

আপনার এই কথাগুলোর সাথে আমিও পুরোপুরি একমত, "আন্তরিকতার পরিচয় পেলাম ,পেশাদারিত্ব পেলাম সাথে মানবিক একজন ডাক্টার । বলার অপেক্ষা রাখে না গ্রামবাসী ডাক্টারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে । আন্তরিকতার প্রতিদান আন্তরিকতা দিয়েই দেওয়া উচিত । আমি তো ভয়ে ছিলাম যদি মেরেই ফেলে ! যাক শেষে প্রাণে বেঁচে গেছে । শেষ দিকে হালকা ভৌতিক টাইপ মনে হচ্ছে।" ...... আমার উপলব্ধিও তাই।

আবারও ধন্যবাদ প্রিয় 'রাকু হাসান' ভাই। শুভ রাত্রি।

১৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:২৬

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: অসাধারণ গল্প, আপ্নার অনুবাদও অনেক সুন্দর হয়েছে।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয়, শাহাদাৎ ভাই। অনুবাদ গল্পটি পড়ে আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আমি চেষ্টা করেছি অনুবাদটি সুন্দর ও সাবলীলবাবে উপস্থাপনা করতে। কতটুকু পেরেছি জানি না। আশীর্বাদ করবেন আমার জন্য।

১৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১৩

প্রামানিক বলেছেন: গল্পের অনুবাদ ভালো হওয়ায় গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগল। লেখকের পরিচয় দেয়ায় জানতে সুবিধা হলো। ধন্যবাদ কাওসার ভাই।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় কবিকে কমেন্টে পেয়ে প্রীত হলাম। অনুবাদ গল্পটি আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম। জার্মান ভাষায় লেখা গল্পটির ইংরেজি অনুবাদ আমার কাছে মানসম্পন্ন মনে হয়নি। এজন্য অনুবাদ করতে আমাকে খুব বেগ পেতে হয়েছে। মূল ভাষা থেকে অনুবাদ করতে পারলে আরো ভাল হতো। আর লেখকের পরিচয় দেওয়াকে আমি দায়িত্ব বলে মনে করি। এতে পাঠকরা মূল লেখক সম্বন্ধে জানতে পারেন।

শুভ রাত্রি।

১৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৬

তারেক ফাহিম বলেছেন: পুরোটি পড়ছি সময় নিয়ে।

আমার কাছে নতুন লাগলো।

পড়ার সুযোগদানে ধন্যবাদ প্রিয় লেখক।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



পুরো গল্পটি সময় নিয়ে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। আপনি মূল গল্পটি আগে পড়েন নাই বলে অনুবাদ পড়ে ভাল লেগেছে। Franz Kafka খুব উঁচু মানের একজন সাহিত্যিক। মাত্র ৪০ বছরের জীবনে যা অর্জন করেছেন, তা দেখলে অবাক হতে হয়। আরো কয়েক বছর বাঁচলে বিশ্ব সাহিত্যে আরো অনেক ক্লাসিক গল্প, উপন্যাস আমরা পেতাম।

শুভ রাত্রি, প্রিয় ফাহিম ভাই।

১৮| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩১

মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: রসার শেষ পরিণতি কী হল তা জানার ইচ্ছা রয়ে গেছে। খুব ভাল লাগল। আরেকটু সহজ ভাষায় অনুবাদ করলে পাঠকরা উপকৃত হবে। ভাল লাগল কাওসার ভাই।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় হাসিব ভাইকে কমেন্টে পেয়ে দারুন ভাল লাগছে। এজন্য ধন্যবাদ আপনাকে। 'রসার' জন্য আপনার দরদ দেখে ভাল লাগলো। মেয়েটির জীবনে শেষ পরিণতি কি ঘটেছিল লেখক তা উল্লেখ করেন নাই। সে কি অপহৃত হয়েছে? 'রেপড' হয়েছে? নাকি, মেরে ফেলেছে? তা আমরা জানি না। তবে, এমনও হতে পারে ডাক্তার বাড়িতে ফিরে দেখলেন অশ্বরোহী যুবকটি রসাকে পাহারা দিয়ে রেখেছে, কোন ক্ষতি করে নাই!!

মূল গল্পটি খুব কঠিন। এজন্য অনুবাদ করতে আমাকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় লেখকের বক্তব্য এত অস্পষ্ট যে, বেশ কয়েকবার পড়েও বুঝতে পারা যায় না লেখক কি বলতে চেয়েছেন। আমি এ বিষয়গুলো স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছি। অনুবাদ গল্পে খুব সতর্ক থাকতে হয় যাতে তার 'মৌলিকতা' নষ্ট না হয়। এজন্য খুব সহজ করে অনুবাদ করার সুযোগ নেই।

শুভ রাত্রি, 'হাসিব' ভাই।

১৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



সময় করে আপনার গল্পটি পড়ার ইচ্ছে থাকলো। শ্রমসাধ্য পোস্টে +++

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্ট করে নিজের মতামতটি জানিয়ে যাওয়ায় খুশি হলাম নকীব ভাই। অনুবাদ গল্পটি পড়লে আপনার ভাল লাগবে। ভাল থাকুন সব সময়। শুভ কামনা রইলো প্রিয় ভাইয়ের জন্য।

২০| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২২

অচেনা হৃদি বলেছেন: অনুবাদ পড়ে ভালো লাগল।
ফ্রাঞ্জ কাফকার গল্পটি আগে ইংরেজিতে পরেছিলাম। এই গল্পের কিছু পরাবাস্তব সিচুএশন আমার কাছে ভালো লাগে না, বিশেষ করে কাজের মেয়ে রোসার ভাগ্যটা মেনে নিতে আমার কাছে কষ্ট হয়। :( (আরেকটা কথা ভাইয়া, গল্পের ইংরেজি ভার্সনে Maid লেখা। মেইড শব্দটিকে কাজের মেয়ে লিখলে সঠিক ভাবার্থ প্রকাশ পায় না, কারন আমাদের দেশের কাজের মেয়ে আর ইউরোপের মেইডদের মাঝে সূক্ষ্ম একটা পার্থক্য আছে।)

আচ্ছা, আমাদের কাওসার ভাইয়া কি নিজের গল্প লিখতে আগ্রহী নন? তিনি ইদানিং খালি অনুবাদ গল্প পোস্ট করছেন। :)

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমি না হয় গল্প না লিখে অনুবাদে আছি; কিন্তু আমার আপুনি তো ব্লগেই এক্কেবারে আসে না!! আমি লিখবো এ মাসে আশা করছি। "আই মিস ইয়র রাইটিং'। সময় সুযোগে আশা করি পোস্ট লিখবেন। আপনি গল্পটি ইংরেজি ভার্সনটি পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। আচ্ছা, আপনি কি ইংলিশ মিডিয়ামের স্টুডেন্ট?

কাজের মেয়ে রসার ভাগ্যে কি ঘটেছে আমরা জানি না। মেয়েটির জীবনে শেষ পরিণতি কি ঘটেছিল লেখক তা উল্লেখ করেন নাই। সে কি অপহৃত হয়েছে? 'রেপড' হয়েছে? নাকি, মেরে ফেলেছে? তা আমরা জানি না। তবে, এমনও হতে পারে ডাক্তার বাড়িতে ফিরে দেখলেন অশ্বরোহী যুবকটি রসাকে পাহারা দিয়ে রেখেছে, কোন ক্ষতি করে নাই!!

আসলে 'maid' বা 'servant' শব্দের অর্থের তেমন কোন পার্থক্য নেই। তবে, Ian Johnston এর ইংরেজি অনুবাদ গল্পে 'servant' লেখা আছে। আমি বাক্যটি তুলে ধরছি, "My servant girl was at that very moment running around the village to see if she could borrow a horse." লেখক যখন গল্পটি লেখেন (প্রায় শত বছর পূর্বে) তখন ধনী মানুষের বাড়িতে "কাজের মেয়ের" প্রথা ইউরোপ জুড়ে ছিল। এখন এ প্রথা পশ্চিমের বেশিরভাগ দেশে নেই ।

২১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: বাহ! চমৎকার অনুবাদ করেছেন ভাইয়া। অনেক ভালো ভালো বিশ্ব বিখ্যাত গল্প আপনার মাধ্যমে জানতে পারি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। গল্পটি আমার প্রথম থেকেই ভালো লাগছিলো।
যখন রোগী বলল আমাকে মরতে দিন। তখনই বুঝতে পারলাম গল্পটিতে টুইস্ট আর টুইস্টে পরিপূর্ণ। পরে যখন ডাক্তারকে লোকজনেরা বের করে অপমান শুরু করলো তখন খারাপ লেগেছিলো তবে হ্যা বেশ ভয়ানক পরিস্থিতি ছিলো। আমিতো ঘরে বসেই অনুভব করতে পারছিলাম কিছুটা।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কেমন আছেন, আপুনি? দারুন প্রেরনাদায়ক একটি কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমি চেষ্টা করছি পৃথিবীর সেরা সাহিত্যিকদের লেখা গল্পগুলো অনুবাদ করে ব্লগে দিতে। যাতে পাঠককরা বিশ্ব সাহিত্য সম্বন্ধে অবগত হন। জানি না কতটুকু পরিপাটি করে অনুবাদ করতে পারছি, তবে চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখি না কখনো। আপনি নিশ্চয়ই জানেন অনুবাদ খুব কঠিন কাজ। অনেক সময়সাপেক্ষও বটে। চেষ্টা করবো নিয়মিতভাবে অনুবাদে সময় দিতে।

আপনি ঠিকই বলেছেন, "যখন রোগী বলল আমাকে মরতে দিন। তখনই বুঝতে পারলাম গল্পটিতে টুইস্ট আর টুইস্টে পরিপূর্ণ। পরে যখন ডাক্তারকে লোকজনেরা বের করে অপমান শুরু করলো তখন খারাপ লেগেছিলো তবে হ্যা বেশ ভয়ানক পরিস্থিতি ছিলো।" এজন্য এটা বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম টুইস্টেড গল্প।

শুভ কামনা রইলো আপনার প্রতি।

২২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৩৯

বলেছেন: রাতে দরজায় ভুল সংকেত পেয়ে অসাবধানতাবশত একবার দরজাটি খুলে দিলে, পরে আর তা শোধরানো যায় না। কখনো না। [/si
#

এপিক
ভীষণ মুগ্ধ হলাম


শূন্যস্থানে

বনের মাঝামাঝি, ভাবাই যায় না, একটা চমৎকার ফাঁকা জায়গা আছে, জায়গাটা শুধু
তারাই খুঁজে পায় যারা হারিয়ে যায়।
এই ফাঁকা জায়গাটা একটা বন দিয়ে ঘেরা, যে নিজেই দমবন্ধ হয়ে হাঁসফাস করে। কালো
গুঁড়ি, গায়ে স্যাঁতসেঁতে ছোপ। বনের চূড়ায় জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো মৃত;
আছে শুধু কিছু নিঃসঙ্গ সবুজ শাখা, ছুঁয়ে দিচ্ছে আলো। নিচে : ছায়ারা শুয়ে আছে ছায়ার উপরে,
বাড়ছে শ্যাওলা।
তবে ওই ফাঁকা জায়গার ঘাসগুলো কী অদ্ভূত সবুজ আর জীবন্ত। বড় বড় পাথর
জায়গাটাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, যেন ওভাবেই ওদের দাঁড়িয়ে থাকবার কথা ছিল।
এই পাথরগুলো হতে পারত যে-কোনও বাড়ির ভিত্তিস্থাপনের প্রস্তর, আমার হয়তো
ভুলও হতে পারে। কে থাকে ওখানে? কেউ নেই যে সাহায্য করবে। যাদুঘরের কোথায় যেন
ওই নামটি ঘুমাচ্ছে, কেউ খুলে দেখে না (শুধু যাদুঘর সবসময় তরুণ থাকে)।
মৌখিক ঐতিহ্য আজ মৃত, সেই সঙ্গে মরে গেছে সব স্মৃতি। জিপসিরা, গোত্রের মানুষেরা
স্মরণে আনতে পারে, কিন্তু যারা লিখতে জানত তারা ভুলে গেছে। লিখে রাখো আর ভুলে যাও
একে।
এই ছোট্ট বাড়ি ফিসফিস করে, হামা দেয়। এটাই পৃথিবীর কেন্দ্র। কিন্তু এই বাড়ির
মানুষেরা মরে যায় অথবা সরে যায় দূরে। ইতিহাসের এখানেই সমাপ্তি। জায়গাটা বছরের পর
বছর খালি থেকে যায়। আর তার খামারবাড়ি রূপান্তরিত হয়ে যায় স্ফিংসে। পরিশেষে
এই ভিত্তিস্থাপনের পাথরগুলো ছাড়া সবকিছু দূরে চলে যায়।
আগেই আমি এখানে কোনওক্রমে চলে এসেছি, কিন্তু সময় হয়েছে বিদায় নেবার। আমি
কণ্টকাকীর্ণ জঙ্গলে ঝাঁপ দেই। তুমি যদি এখান থেকে বের হতে চাও তাহলে তোমাকে
দাবার গুটির মতো এক পা এগিয়ে দু-পা পাশে সরে আসতে হবে। ধীরে ধীরে কমে আসবে
এই বনের ঘনত্ব আর আলো ফুটবে চোখে। আমার পদক্ষেপ দীর্ঘতর হচ্ছে। একটা পথ
একবার পেছনে আরেকবার সামনে করতে করতে এগিয়ে আসছে আমার দিকে।
আমি যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একেবারে পেছনে রয়ে গেছি।
শিখরস্পর্শী উঁচু বিদ্যুৎবাহী খাম্বার উপরে একটা ঝিঁঝিঁ পোকা সূর্যের দিকে মুখ করে বসে আছে।
তার ঝিকিমিকি-কাঁধের নিচে উড়ন্ত পাখা এমনভাবে গোটানো যেন কোনও দক্ষ প্যারাশুটার লোটাকম্বল
নিয়ে অপেক্ষমান।

(অর্ধসমাপ্ত বেহেশত : টমাস ট্রান্সট্রমারের শ্রেষ্ঠ কবিতা থেকে

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় ভাইয়ের চমৎকার একটি কমেন্ট পেয়ে খুব খুশি হলাম। গল্পের শেষ লাইন তো দারুন এক মেসেজ দিয়ে গেছে, "রাতে দরজায় ভুল সংকেত পেয়ে অসাবধানতাবশত একবার দরজাটি খুলে দিলে, পরে আর তা শোধরানো যায় না। কখনো না।"

আর "টমাস ট্রান্সট্রমারের" কবিতা কখনো পড়া হয়নি। আপনার অনুবাদটি দারুন হয়েছে। উনার কবিতা পড়ার আগ্রহ আছে। সময় সুযোগে পড়বো আশা করি। ভাল থাকুন রহমনা লতিফ ভাই।

২৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: এটির চাইতে আগের গল্পগুলো বেশি ভালো লেগেছিল ভাইয়া । তবে গল্প হিসেবে মজা পাওয়ার মত কিছু না থাকলেও শিক্ষণীয় কিছু আছে যেটা লেখক শেষের লাইনটিতে বলেছেন । আর একজন ডাক্তার হিসেবে রোগীর প্রতি তার আগ্রহ ও কঠিন অবস্থার মধ্যেও চিকিৎসা করতে যাওয়া বিষয়টি ভালো লেগেছে যেটি সাধারণত কেউ করতে চায়না । তবে এই ডাক্তার ভদ্রলোক উপকার করতে গিয়ে উল্টো বাড়ীর কাজের মেয়েটিকে বিপদে ফেলল ও নিজেও বিপদে পড়ল । একেই বলে উপকার করলে বাঘে খায় ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো কথা আপু। খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন। আসলে এই গল্পটি রসাত্মক কিংবা ফান নির্ভর নয়। এটি তখনকার সমাজের মানুষের কুসংস্কার ও মিথ্যা বিশ্বাসের এক নিষ্ঠুর বর্ণনা। গল্পের শুরু এবং শেষের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। এটি বিখ্যাত ছোট গল্পের মধ্যে অন্যতম টুইস্ট নির্ভর গল্প।

আপনি ঠিকই বলেছেন, "একজন ডাক্তার হিসেবে রোগীর প্রতি তার আগ্রহ ও কঠিন অবস্থার মধ্যেও চিকিৎসা করতে যাওয়া বিষয়টি ভালো লেগেছে যেটি সাধারণত কেউ করতে চায়না । তবে এই ডাক্তার ভদ্রলোক উপকার করতে গিয়ে উল্টো বাড়ীর কাজের মেয়েটিকে বিপদে ফেলল ও নিজেও বিপদে পড়ল । একেই বলে উপকার করলে বাঘে খায়।"

ভাল থাকুন সব সময় ও নিয়মিতভাবে ব্লগে লিখুন। শুভ কামনা রইলো, আপু।

২৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩০

নজসু বলেছেন: ফ্রাঞ্জ কাফকার গল্প আপনার মাধ্যমে পাঠ করার সুযোগ হলো।

এক জন ডাক্তারে দায়িত্ব শুধুমাত্র তাঁর রোগীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না,
সমাজের প্রতিও তাঁর সমান দায়িত্ব থেকে যায়।
মনের গভীর থেকে একজন রোগীকে পরিপূর্ণ সেবা দেওয়া চিকিৎসকের ধর্ম।
কর্তব্যবোধ, মানবিকতাও এক জন ডাক্তারের পেশার সঙ্গে জড়িত।

কিন্তু গ্রামের এই ডাক্তারটি অসহায় একটি মেয়েকে গালে কামড় দেয়া এক হায়েনার কাছে রেখে গেলেন শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য।

একটা মেয়ের সন্মানহানি হলে সেও তো মৃতা।

যা হোক Franz Kafka এর এই গল্পটা শেষের দিকে মাথা এলোমেলো করে দিল।
একজন ডক্টরের মানবতা দেখাতে গিয়ে আরেকটা মানবতাকে হত্যা করা হয়েছে।

যদি এমন হতো অশ্বারোহী রসাকে পাবার নিমিত্তে ডাক্তারে ঘোড়াকে মেরে, ১০ মাইল দূরে রোগী দেখার নাটক সাজিয়েছে।
আর কাকতালীয়ভাবে দূর্যোগের রাতে ঘোড়া নিয়ে হাজির হয়েছে এবং রোগীর বাড়িতে লিফট দেবার প্রস্তাবও রেখেছে।
যেখানে গ্রামের লোকজন অসহযোগিতা করেছে।

"আমি তোমার সাথে যাচ্ছিনা। আমি এখানে রসার সাথে থাকবো। "

এত কঠিন করে যে বলতে পারে, অবশ্য তার এতো নাটক করার দরকার পরেনা।

না তুমি আমার সাথে থাকতে পারবেনা- রসার এই সংলাপে থাকতে শব্দটা তাকতে হয়ে গেছে।

বেশি একটা ভালো লাগলো না বলে মন খারাপ করলেন কি? আসলে আমি কেমন যেন বুঝতে পারলাম না। :(

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:২৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



চমৎকার একটি কমেন্ট করে নিজের মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় 'নজসু' ভাই। আপনি ঠিকই বলেছেন, "এক জন ডাক্তারে দায়িত্ব শুধুমাত্র তাঁর রোগীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সমাজের প্রতিও তাঁর সমান দায়িত্ব থেকে যায়। মনের গভীর থেকেএকজন রোগীকে পরিপূর্ণ সেবা দেওয়া চিকিৎসকের ধর্ম। কর্তব্যবোধ, মানবিকতাও এক জন ডাক্তারের পেশার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু গ্রামের এই ডাক্তারটি অসহায় একটি মেয়েকে গালে কামড় দেয়া এক হায়েনার কাছে রেখে গেলেন শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য।" আপনার মতের সাথে আমিও একমত। ডাক্তারের আগে উচিৎ ছিল মেয়েটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তিনি চাইলে পুলিশকেও ডাকতে পারতেন। তবে আমার কেন যেন মনে হয়েছে এটি লেখকের অসম্পূর্ণ গল্প। মাত্র ৪০ বছর বয়সে মারা না গেলে হয়তো রসার বিষয়ে আরো লিখতেন।

"যদি এমন হতো অশ্বারোহী রসাকে পাবার নিমিত্তে ডাক্তারে ঘোড়াকে মেরে, ১০ মাইল দূরে রোগী দেখার নাটক সাজিয়েছে। আর কাকতালীয়ভাবে দূর্যোগের রাতে ঘোড়া নিয়ে হাজির হয়েছে এবং রোগীর বাড়িতে লিফট দেবার প্রস্তাবও রেখেছে। যেখানে গ্রামের লোকজন অসহযোগিতা করেছে।" হ্যা, এমনটিও হতে পারে। গল্পের আরো পর্ব থাকলে বিষয়টি হয়তো পরিষ্কার হত।

আসলে গল্পটি ভাল না লাগার অনেক কারণ আছে। মূলত ডাক্তারের রোগীর প্রতি দায়িত্ববোধ, সমাজের একটি অংশের কুসংস্কার এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি অবিশ্বাস এ গল্পের মূল উপজীব্য। একজন দায়িত্ব সচেতন ডাক্তারকে আমরা এভাবে অপমাণিত হতে দেখতে চাই না। রসার মতো একটি মেয়েকেও বিপদগ্রস্ত হতে দেখতে চাই না। কিন্তু এগুলো ঘটছে যুগের পর যুগ এ মহাবিশ্বে।

২৫| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:২৯

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: কাফকার এ গল্পটি পড়া ছিল না। জটিল মনোবৈজ্ঞানিক গল্পের সুন্দর অনুবাদে অভিনন্দন। বানানে মনোযোগ দিতে থাকুন।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গল্পটি পড়ে নিজের মতামত জানিয়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো প্রিয় 'মামুন' ভাই। বানান নিয়ে কাজ করছি। আশা করি, ধীরে ধীরে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ হবে শীঘ্রই। আশীর্বাদ করবেন। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

২৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৫

সূর্যালোক । বলেছেন: ব্লগে কম সময় দেওয়া হয়। তিনবারে গল্পটি পড়লাম । গ্রামবাসীরা কি কুসংস্কারে বিশ্বাস করে ? অন্যদিক নিয়ে বলেছে তাই বললাম না সে বিষয়ে । ধন্যবাদ আপনাকে ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



শুভেচ্ছা রইলো আপনার প্রতি। আর গল্পটি তিনবার পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। আপনি ঠিকই বলেছেন, গ্রামবাসীরা প্রচন্ড রকম কুসংস্কারে বিশ্বাসী। এরা মনে করে, মানুষের অসুখ বিসুখ ঈশ্বরের ইচ্ছারই প্রতিফলন। এজন্য কৃত্রিম উপায়ে চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করার অপচেষ্টা করা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখানো। এরা ডাক্তারদের এজন্য পছন্দ করে না। এরা মনে করে ডাক্তাররা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে চ্যালেঞ্জ করছে।

২৭| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:১০

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম, কাওসার স্যার


!!!তুই একটা বদ্ধ পাগল, অহংকারী, ইগোর পাহাড়, সর্বনাশী, উন্মাদিনী, লক্ষীছাড়া, না ছুঁই পানি!!! (Click This Link)
:P

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:




OMG B-)!!
জানেমন, এত্ত সুন্দর একখান কবিতা উপহার দিয়ে মোরে ধন্য করায় আপনাকে থেঙকু। আননি, ক্যান আছইন? এমন চমৎকার কবিতা লেখার জন্য 'সায়মাপু'কে ধন্যবাদ। মুই একটা বদ্ধ পাগল, অহংকারী, ইগোর পাহাড়, সর্বনাশী, উন্মাদিনী, লক্ষীছাড়া, না ছুঁই পানি!! তা মুই জানি মোনা।

মোরে এত্ত সালাম কালাম আর তোলয়াজ করার হেতু বুইজলাম না জানেমন? মুই কিন্তু আফনের বড় ভক্ত। ইদানিং নেটে তেমন পাই না কেন? তবে, মুইও কিছু বি-জি!!
তবে অন্য কিছু নয়, কাজ নিয়ে।

পুনশ্চঃ নতুন একটি ব্যবসা শুরু করেছি। তিন মাস চলছে। দোয়া কইরেন।

২৮| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: যাহ্! সাপ মারতে গিয়ে লাঠিতো ভাঙলই, সাপের কামড়ও খেলুম। এটা কি শীষ নাগ??:P:P




লেখাটা গতকাল পেলাম, তাই শেয়ার করলাম। একটা অনুবাদ করে দিন..
cÂg Zdwmj [150 (2) Aby‡”Q`] 1971 mv‡ji 7BgvP© Zvwi‡L XvKvi †im‡Kvm© gq`v‡b RvwZi wcZv e½eÜz †kL gywReyi ingv‡bi †`Iqv HwZnvwmK fvlY

[msweavb (cÂ`k ms‡kvab) AvBb, 2011 (2011 m‡bi 14 bs AvBb)-Gi 55 avive‡j cÂg, lô I mßg Zdwmj¸wj ms‡hvwRZ|]


পুনশ্চঃ
দোয়া করি ব্যবসায় বরকত হোক। বিয়া করে সুখী হউন।
(ব্যবসাতে লাভ হলে, আমারেও সাথে নিয়েন। ডোডোগিরি না করে টাকা ইনকাম করতে হবে। এদিকে সব আপুর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে.....) :(

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



জানেমন B-)B-)!!
সাপ মারিতে লাগে হিম্মত আর সাহস। বুকে আর ....x... বল থাকতে হয়!! এটি হচ্ছে পেখম তোলা নাগিন; যার বিষ দাঁত বড়ই রুমান্টিক!! বিয়া মুই করুম না, ডর করে। হাঁটুতে কমজুর :-B!!

আপনের লেখাটির অনুবাদও আমার করা আছিল। এই লেহা আফনে কই পাইলেন? ঠিক আছে মুই অনুবাদখানি পাঠিয়ে দিচ্চি।.........

kezdőrúgásra vártak volna, úgy bolydította fel a versengő űrhatalmakat a SpaceX magán űrvállalkozás vezetőjének közelmúltbeli bejelentése a Mars kolonizálásáról. Amióta Elon Musk vázolta nagyívű terveit, valamennyi mértékadó űrhatalom és cég hasonlóan nagyszabású programokkal állt elő, illetve "mérföldkőnek" tartott tesztek bejelentésével gondoskodott róla, hogy kivegye a részét a Mars-őrületből.

körüli hájphoz előzőleg Kína is hozzájárult, amikor szeptember közepén pályára állította második saját űrállomását, amivel a 2020-ra tervezett Mars-missziót készítik elő. Ez már önmagában is arra késztethette a többi űrhatalmat, hogy felpörgesse saját Mars-programját, amit csak tovább fokozott a magán űrvállalkozások erősödő rivalizálása.

időzítés persze nem feltétlenül volt szándékos, hiszen számos ország évek óta dolgozik a maga Mars-küldetésén. De ezzel együtt is figyelemre méltó előrelépéseket jelentettek be egyetlen hét alatt. például nemrég közölte, hogy 25 éven belül embert küldenek a Marsra (igaz, ez az űrhivatal jövő évi költségvetésének elfogadásához kötődött, nem állt közvetlen összefüggésben Musk terveinek beharangozásával).

বুইজতে পবলেম অইলে মোরে আওয়াজ দিয়েন B-)!!!

২৯| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১

ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: জি আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমি ভালো আছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরো ভালো ভালো টুইস্টেড গল্প আমাদের উপহার দিন এই চাওয়া। শুভ কামনা রইলো।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপনি ভাল আছেন জেনে খুশি হলাম। এবার মন খুলে সুন্দর সুন্দর পোস্ট লিখুন। আমি খুব ভাল লিখতে পারি না। তবুও মাঝে মাঝে লেখার চেষ্টা করি। ইদানিং ব্যস্থতা বেড়ে যাওয়ায় লেখায় তেমন সময় দিতে পারছি না। তবে সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে আবার লেখতে মনোযোগী হবো। আপনার জন্য আশীর্বাদ রইলো।

৩০| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৪৬

রাকু হাসান বলেছেন:

ভাইয়া কেমন আছেন । নতুন পোস্ট পাবার সময় হয়ে গেছে । একজন বললো পরে ,পড়বে কই দেখলাম না =p~ ;)
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ভাইয়ের যেমন কমেন্ট তেমন উত্তর । হাহাহা । হাসলাম ।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমি ভাল আছি, ভাই। আবার এসে খবর নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। নতুন পোস্ট দেব শীঘ্রই। অনেকে লম্বা লেখার জন্য সময় করে পড়েন। হয়তো কমেন্ট করে মতামত জানানোর সময় থাকে না ব্যস্থতার কারণে। আর 'পাঠকের প্রতিক্রিয়া' আমার বন্ধু মানুষ এজন্য দুষ্টুমি করি।

ভাল থাকুন প্রিয় রাকু ভাই।

৩১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:১৪

নজসু বলেছেন: আপনার পরবর্তী অনুবাদ গল্প কবে পাবো?

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, সুজন ভাই। আমাকে স্বরণ করেছেন জেনে খুশি হলাম। কয়েকদিন হলো ব্যক্তিগত কাজে কিছু ব্যস্ত থাকায় অনুবাদে সময় দিতে পারছি না। আশা করি, আগামী মাসে আবার অনুবাদে মনযোগী হব।

ভাল থাকবেন ভাই, শুভ কামনা রইলো।

৩২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৭

নজসু বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:৪২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, প্রিয় 'নজসু' ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.