নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালি সংস্কৃতি ও উৎসব (প্রবন্ধ)

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৭


পৃথিবীর অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মত হাজার হাজার বছর ধরে নানা নৃতাত্ত্বিক এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী ও শাখা-গোষ্ঠী, নানা শ্রেণির মিলন, পারস্পরিক প্রভাব এবং সমন্বয়ের ফলে গড়ে উঠেছে বঙ্গীয় সংস্কৃতি। সুলতানি আমলের 'বাঙলা' রাজ্য অথবা বাংলা ভাষা গড়ে ওঠার মুহূর্ত থেকে বাঙালি সংস্কৃতির জন্ম হয়নি। বঙ্গীয় সংস্কৃতির ভিত্তি গড়ে উঠেছিলো আরো অনেক আগে থেকে। ধারণা করা হয় বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর পুরনো। এক সময় ভারত উপমহাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালিরা নেতৃত্ব দিয়েছে। বাঙলা ছিল উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির রাজধানী। এজন্য ভারত উপমহাদেশে বাঙালি সংস্কৃতির অনেক প্রভাব ছিল; যা এখনো আছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসাম এলাকা নিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির বিস্তৃতি ছিল। এছাড়া ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, মনিপুর, মেঘালয়, বিহার, ঝাড়খন্ড ও ঊড়িষ্যা রাজ্যের কিছু অংশে বাঙালি সংস্কৃতির প্রভাব আছে।

সংস্কৃতি বা কালচার হলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষের মধ্যে দীর্ঘ দিন থেকে গড়ে উঠা এক প্রকার অভ্যাস; যা মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক বিচরণের ক্ষেত্রে বেশ প্রভাব বিস্তার করে। বিশদ অর্থে সংস্কৃতি হলো মানুষের আচার-আচরণ, রীতিনীতি, বিশ্বাস, নীতিবোধ, চিরায়ত প্রথা, সমষ্টিগত প্রভাব ও সামাজিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। মানুষের ব্যক্তি জীবনে সংস্কৃতির প্রভাব অপরিসীম। অন্যভাবে বলতে গেলে মানুষ তার অভ্যাস বা কালচার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও প্রভাবিত হয় প্রতিনিয়ত। এককথায়, মানুষের আত্মপরিচয় বা মর্যাদার বাহ্যিক রূপই হচ্ছে সংস্কৃতি।

মোতাহার হোসেন চৌধুরী সংস্কৃতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, "সংস্কৃতি মানে সুন্দরভাবে, বিচিত্রভাবে বাঁচা, প্রকৃতি-সংসার ও মানব সংসারের মধ্যে অসংখ্য অনুভূতির শিকড় চালিয়ে দিয়ে বিচিত্র রস টেনে নিয়ে বাঁচা, নর-নারীর বিচিত্র সুখ-দুঃখে বাঁচা, বিচিত্র দেশ ও বিচিত্র জাতির অন্তরঙ্গ সঙ্গী হয়ে বাঁচা, প্রচুরভাবে, গভীরভাবে বাঁচা, বিশ্বের বুকে বুক মিলিয়ে বাঁচা।"

একটা সময় ছিল যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা আজকের মতো এত সহজ ছিল না, ইন্টারনেট ছিল না। তখন দূরের সংস্কৃতি বা বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাব আমাদের সমাজে কম ছিল। এই ভারত উপমহাদেশেও দূরত্বের কারণে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই, ব্যাঙ্গেলোর, কেরালা ও হায়দ্রাবাদের সাথে বাঙালি সংস্কৃতির অনেক অমিল ছিল। এছাড়া পশ্চিম ভারতের মুম্বাই ও গুজরাট; উত্তর ভারতের দিল্লি, হারিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, উত্তর খন্ড, রাজস্থান এবং পাঞ্জাবের সাথেও বাঙালি সংস্কৃতির অনেক পার্থক্য ছিল। ভারতের ঊড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড, ছত্রিশগড়, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম ও মনিপুর আমাদের প্রতিবেশী হওয়ায় এসব এলাকায় বাঙালি সংস্কৃতির প্রভাব আজও স্পষ্ট। গৌড়, রাঢ়, সমতট, বরেন্দ্রী, হরিকেল, বঙ্গ ইত্যাদি রাজ্য নিয়ে বাঙলা গঠিত হয়েছিল।

আর্যরা বঙ্গে আগমনের পর থেকে আমাদের সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যে ছেদ পড়া শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সেন বংশের রাজত্ব, তুর্কি, আফগান ও মুঘল আমলে বাঙালি সংস্কৃতির মাঝে বিজাতীয় (বিদেশি) সংস্কৃতির ব্যাপক মিশ্রণ ঘটে। ইংরেজরা ভারত উপমহাদেশ দখল করার পর অন্যান্য অঞ্চলের মত আমাদের বঙ্গেও বৃটিশ সংস্কৃতি ঢুকে পড়ে। তাদের দুইশত বছরের শাসনামলে বঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক অগ্রগতি হয়, ফলে আমাদের হাজার বছরের চিরচেনা সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন আসে। স্পেনিশ ও পর্তুগীজরা দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো দীর্ঘদিন শাসন করার ফলে সেসব দেশে আজ স্পনিশ ও পর্তুগীজ সংস্কৃতির প্রভাব ব্যাপক। ব্রিটিশ শাসিত অস্ট্রেলীয়া ও নিউজিল্যান্ডের অবস্থাও ঠিক তাই; তবে এ দু'টি দেশের স্থানীয় সংস্কৃতি খুব একটা সমৃদ্ধ ছিল না। তবে আমাদের উপমহাদেশের হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ফলে আজও সগৌরবে তা ঠিকে আছে।

খৃষ্টান (Christianity), মুসলিম (Islam) ও ইহুদি (Judaism) ধর্মের উৎপত্তি বঙ্গভূমি থেকে বহু দূরে হওয়ায় এসব ধর্ম আদি ও অকৃত্রিম রূপে আমাদের বঙ্গে আসেনি; এসব ধর্মে আরব সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। অপরদিকে হিন্দু (Hindusim), বৌদ্ধ (Buddhism) ও শিখ (Sikhism) ধর্মের উৎপত্তি ভারত উপমহাদেশে হওয়ায় এসব ধর্মের রীতিনীতিতে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। শিখ ধর্মে ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরখন্ড, রাজস্থান ও গুজরাটের সংস্কৃতির আধিপত্য রয়েছে। এছাড়া চায়নিজ 'টাও' (Taoism) ও 'ফালুন' (Falun Gong); জাপানের 'শিন্ত' (Shinto) ধর্মের বেলায়ও স্থানীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। এজন্য ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটে মাত্র; ফলে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারিদের মধ্যে আজও ধর্মীয় আচার-অনুষ্টানে এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রথা অনেকটা নীরবেই যুক্ত হয়ে যায়।

দশম শতাব্দীতে রচিত বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদে গ্রামের কোনো উল্লেখ নেই। নিরাপত্তা এবং উৎপাদনের জন্যে লোকেরা তখন ‘পুরী’ এবং ‘নগরে’ বাস করতেন। বসতির এই বৈশিষ্ট্য উপ-নাগরিক সামন্ততান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠার সম্ভবত প্রধান কারণ ছিল। আর নৃতাত্ত্বিক দিক দিয়ে বেশির ভাগ বাঙালিই অস্ট্রো-এশিয়াটিক। কিন্তু দ্রাবিড় গোষ্ঠীও এর মধ্যে মিশিছে। এই দুটি প্রধান নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ছাড়া, বাঙালিদের মধ্যে তিব্বতী-চীনা এবং সেমেটিক রক্তেরও সংমিশ্রণ ঘটেছে।

বখতিয়ার খলজি ১২০৪ খৃষ্টাব্দে লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বঙ্গে মুসলিম শাসন প্রবর্তন করলে আমাদের সংস্কৃতিতেও তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এ সময় আরব ও পারস্য থেকে অনেক সুফি ইসলাম প্রচার করতে আসেন। তখন পীর দরবেশরা যে ভক্তিমূলক ধর্মের প্রচার করেছিলেন তা সমাজকে বেশ প্রভাবিত করেছিল। ইতিহাসবিদদের মতে এ সময় হাজার হাজার নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নিয়েছিলেন। পাশাপাশি হিন্দু ধর্মেও কিছু পরিবর্তন আসা শুরু হয়ে। এ সময় প্রচুর আরবী ও ফার্সি শব্দ বাঙলা ভাষায় যুক্ত হয়ে আমাদের ভাষা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে। ফলে মুসলমানদের মধ্যে আরব ও ফার্সি সংস্কৃতির প্রভাব বাড়তে থাকে। বাঙ্গালা নামে পরিচিত এই বিরাট এলাকায় ছিলো অনেকগুলি রাজ্য-গৌড়, রাঢ়, দক্ষিণ রাঢ়, সুহ্ম, বরেন্দ্রী, হরিকেল, সমতট এবং বঙ্গ। এছাড়া, বিভিন্ন সময়ে আরও ছোটোখাটো রাজ্য ছিল। ১৩৫০-এর দশকে গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁ জয় করে ‘শাহ-ই বাঙালিয়ান’ অর্থাৎ বাঙালিদের শাহ উপাধি গ্রহণ করেন। বৃহত্তর ‘বাঙ্গালা’র জন্ম তার আগে হয়নি।


ঊনিশ শতকে বাঙালি কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে ইংরেজি সাহিত্যের ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বাঙলা সাহিত্যের বিষয়বস্তু ও ভাবধারা এ সময় বদলে যায়। বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাসে এটা একটি যুগান্তর ছিল। প্রকৃতপক্ষে মানবতাবাদী এই সাহিত্য দিয়েই বঙ্গীয় রেনেসাঁর জন্ম হয়। এতে বিরাট অবদান রাখেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধূসুদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ সময় ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাবে নতুন আঙ্গিক নিয়ে লেখা হয় মহাকাব্য, পত্রকাব্য, সনেট, খন্ড কবিতা, নাটক, উপন্যাস, ছোট গল্প ও প্রবন্ধ। রবীন্দ্রনাথের সময়ে বাঙলা সাহিত্য বিশ্ব সাহিত্যের আসন লাভ করে।

ঊনিশ শতকের মাঝামাঝিতে কলকাতায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মঞ্চ নাটকের যাত্রা শুরু হয়। তখন মূলত ব্যক্তিগত উৎসাহে নাটক নির্মাণ ও মঞ্চায়ন করা হতো। দিনদিন মঞ্চ নাটক বাঙালি সমাজে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। যা এখনও অব্যাহত আছে। তবে মঞ্চ নাটকের জনপ্রিয়তার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ইংরেজি সাহিত্যের। টেলিভিশন আবিষ্কারের পর টিভি ও সিনেমার ব্যাপক প্রচার শুরু হয় এই বঙ্গে। যদিও আমাদের থিয়েটার কখনো বিশ্বমানের ছিল না। তারপরও স্থানীয় মানুষের আবেগ-অনুভূতি, সামাজিক ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব, জমিদারদের শোষণ ও বঞ্চনার ইতিহাস এসব নাটকের উপজীব্য ছিল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে নাটকের ভূমিক ছিল ব্যাপক।

ব্রিটিশদের আমলে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিকভাবে বঙ্গে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে অর্থনৈতিক অসমতা দেখা দেয়। এ সময় মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক ও পশ্চিমাদের দ্বারা পরিচালিত শিক্ষা অর্জনে আগ্রহ কম ছিল। ফলে হিন্দুরা শিক্ষা অর্জনে মুসলমানদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে যায়। মুসলমানরা এ সময় ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বেশি মনযোগী ছিলেন। ফলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে। একে অন্যের মধ্যে ভূল বোঝাবোঝি শুরু হয়। এর আগেও এই দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ তাকলেও এর ভয়াবহতা এত বেশি ছিল না। তবুও তারা শত শত বছর থেকে একে অন্যে সমাজে সব সময় মিলে মিশে ছিলেন।

সাতচল্লিশে দেশ ভাগের সময় বাঙলা স্থায়ীভাবে দুইভাগে বিভক্ত হলে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর এর একটা ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এ সময় পূর্ববঙ্গ থেকে অনেক উচ্চ বর্ণীয় হিন্দু এবং হিন্দু জমিদাররা ব্যাপক হারে পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে যে মুসলমানরা হিন্দুদের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছিলেন তারা রাতারাতি সর্বত্রই বিনা প্রতিযোগীতায় উন্নতির পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ আমর্ত্য সেন বলেন, সাতচল্লিশে দেশভাগের ফলে পূর্ববঙ্গে একটি শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরী হয়েছিল। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় পূর্ববঙ্গে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আসে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, আমর্ত্য সেন বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জন্মগ্রহণ করেন।

মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ফলে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আসে। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসে ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে। ধর্মগুলো যে অঞ্চলে আবির্ভূত হয় সেসব অঞ্চলের কৃষ্টি-কালচার ধর্মটিকে বেশ প্রভাবিত করে। এজন্য হিন্দু ধর্মের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। বৌদ্ধ ধর্ম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের কালচার বৌদ্ধ ধর্মে বেশ প্রচলিত। ইসলাম ধর্মেও ঠিক তেমনি আরব সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট। এজন্য আমাদের সংস্কৃতিতে ধর্ম বিশ্বাসের তফাতের কারণে সাংস্কৃতিক চর্চায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ধর্মগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় বহুল প্রচলিত অনেক সংস্কৃতি পালনে নিষধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে যদি তা ধর্মগুলোর মূল নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হয়। ফলে আমাদের সমাজে ধর্মভিত্তিক রীতিনীতি প্রত্যক্ষভাবে মানুষের সাংস্কৃতিক চর্চাকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে।

ইদানিং "বিজাতীয় সংস্কৃতি" এবং "অপসংস্কৃতি" নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। বিজাতীয় সংস্কৃতি হচ্ছে ভাড়া করা কালচার, যা আগে কোনদিন এ অঞ্চলে ছিল না। আর অপসংস্কৃতি হলো সমাজে দীর্ঘ দিন থেকে প্রচলিত কিছু ধ্যান ধারণা ও চর্চিত বিষয় যা সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিজাতীয় সংস্কৃতি এবং অপসংস্কৃতি ভিন্ন দু'টি ধারা হলেও অনেকে না বুঝে এগুলোকে একই ধারায় গুলিয়ে ফেলেন। ধর্মভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় স্থানীয় অনেক কালচারকে বিজাতীয় ও অপসংস্কৃতি হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়। তবে এগুলোর কোনোটি হয়তো অপসংস্কৃতি হতে পারে, তবে তা বিজাতীয় সংস্কৃতি নয়।

বিশ্বায়নের এ যুগে আইন করে বা বাধ্য করে কাউকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য ইদানিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু ভাল কালচারের সাথে বেশ কিছু অপসংস্কৃতিও আমাদের সমাজটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সমাজে এমন কিছু কৃষ্টি-কালচার যুক্ত হয়েছে যা আমাদের সংস্কৃতির সাথে মানানসই নয়। বিশেষ করে তরুণ ও যুব সমাজ এর ক্ষতিকারক বিষক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে বিজাতীয়/বিদেশি যে সংস্কৃতি আমাদের সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে তা অবশ্যই গ্রহণ করা যায়। আর যা আমাদের সমাজটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে তা পরিত্যাগ করতে হবে। এগুলো অপসংস্কৃতি।


এজন্য ঢালাও ভাবে বিজাতীয়/বিদেশি সংস্কৃতি বর্জন করলে লাভের চেয়ে আমাদের ক্ষতিই বেশি হবে। বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব আমরা। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক আদান প্রদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর অপসংস্কৃতি, তা দেশী হোক অথবা বিদেশী তা অবশ্যই বর্জনীয়। যেমন- মঞ্চ নাটক আমাদের বাঙালি সমাজে দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি চর্চার একটি অংশ, কিন্তু মঞ্চ নাটকের নামে নারীদের শরীর প্রদর্শন ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করলে তা হবে অপসংস্কৃতি। দুঃখজনক হলেও সত্য ভারতীয় টিভি চ্যানেলের কিছু সিরিয়াল, অনুষ্ঠান ও আইটেম সঙ আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত করছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের পরিবারকেও সচেতন করা প্রয়োজন।

আমাদের দেশের মতো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শত শত বছর থেকে বিভিন্ন উৎসব চলে আসছে। এগুলো তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। এসব উৎসবে মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে। কারো পছন্দ না হলে চুপচাপ থাকে। জোর করে অন্যদের আগ্রহকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে না। পৃথিবীর কোথাও কোন উৎসব শতভাগ মানুষের কাছে পছন্দনীয় হয় না। আর তা প্রত্যাশা করা অনুচিত।

পৃথিবীর কয়েকটি বিখ্যাত উৎসবের মধ্যে অন্যতম হল- হারবিন স্নো এন্ড আইস ফেস্টিভাল (চায়না); রিও কার্নিভাল (ব্রাজিল); লন্ডন নটিংহিল কার্নিভাল (ইংল্যান্ড); হোলি (ভারত); কাসকামোরাস (স্পেন); ভেনিস কার্নিভাল (ইতালি); অরুরো কার্নিভাল (বলিভিয়া); ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো কার্নিভাল (ক্যারিবিয়ান); মার্ডি গ্রাস (যুক্তরাষ্ট্র); ভিঞ্চে কার্নিভাল (বেলজিয়াম); সঙ্করান ওয়াটার ফেস্টিভাল (থাইল্যান্ড) এবং বোরইয়েং মাড ফেস্টিভাল (দক্ষিণ কোরিয়া)।

সুস্থ ধারার যে কোন সাংস্কৃতিক চর্চাকে আমাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এটি বিদেশি বা স্বদেশী যাই হোক না কেন। আমরা যে নীতি ও আদর্শ বিশ্বাস করি তা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার, এতে সমাজের কিছু যায় আসে না। সমস্যা দেখা দেয় তখনই যখন আমরা নিজের ইচ্ছাকে জোর করে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি। এটা অন্যায়। এতে সমাজে বিভাজন দেখা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ বেড়ে যায় ফলে সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয়। একুশ শতকের বিশ্বায়নের এ যুগে জোর করে নিজের পছন্দ-অপছন্দ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মানুষ তা শুনতে বাধ্য নয়।

কালচার/সাংস্কৃতিক চর্চাটা আসে মানুষের ভালবাসা ও দীর্ঘ দিন থেকে সমাজে প্রচলিত অভ্যাস থেকে। এজন্য জোর করে কোন কালচার/সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া যায় না, আবার জোর করে মানুষের নিজস্ব কালচার/সংস্কৃতি থেকে বের করে আনা যায় না। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিনোদন মানুষের বুদ্ধিভিক্তিক জ্ঞানকে বিকশিত করে, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক দৃঢ় করে। সমাজকে পরিশুদ্ধ করে। পৃথিবীর উন্নত ও সভ্য দেশগুলো এভাবেই আজ এগিয়ে যাচ্ছে আরো উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে। তারা নিজেদের মতামত কারো উপর চাপিয়ে দেয় না; বরং অন্যের পছন্দ অপছন্দকে সম্মান দেয়, সহযোগিতা করে। এতে সমাজে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা অটুট থাকে।।

ধর্ম যার যার, ধর্মীয় উৎসবগুলোও যার যার। তবে ব্যক্তিগত ভাবে কেউ অন্য ধর্মের উৎসবগুলে পালন করলে এটা হবে তার ব্যক্তি ইচ্ছা। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্টান ও রীতিনীতি গুলো অন্য ধর্মের মূল নীতির সাথে যায় না, অনেকটা সাংঘর্ষিক। এজন্য যাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পুরোপুরি আছে তারা এ থেকে বেরিয়ে এসে অন্য ধর্মের উৎসবে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। যেমন- মুসলিমদের কোরবানীর ঈদে যদি বলা হয় হিন্দুদেরও উৎসব করতে তা কী সম্ভব? কারণ গরু হচ্ছে হিন্দুদের দেবতা, পূজনীয়। ঠিক হিন্দুদের কালি পূজা ও স্বরস্বতিপূজাও মুসলিমদের পালন করা সম্ভব নয়। কারণ এগুলো ইসলামের মৌলিক নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তবে অন্য ধর্গুলো যাতে নিরাপদে ও সহজে তাদের ধর্মীয় উৎসবগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পালন করতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতামূলক মানসিকতা থাকাটা আবশ্যিক।

এমন কিছু উৎসব আছে যেগুলো কোন নির্দিষ্ট ধর্মের নয়, এগুলো শত শত বছর থেকে চলে আসা সামাজিক প্রথা/উৎসব। এগুলোর সাথে ধর্মীয় রীতিনীতি সম্পৃক্ত নয়, সে সকল উৎসব সার্বজনীন। যেমন- পহেলা বৈশাখ, নিউ ইয়ার, বসন্ত উৎসব, পিঠা উৎসব ইত্যাদি। তবে এগুলো মানা না মানা ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। তবে যারা তা পালন করে তাদেরকে মুক্তমনে পালন করতে দেওয়া উচিৎ। এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা, ভাল লাগা-মন্দ লাগার সাথে স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চার কোন সম্পর্ক নেই।


তথ্যসূত্র -
বাঙ্গালীর ইতিহাস, নীহাররঞ্জন রায় (২০০১,কলকাতা)
হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি, গোলাম মুরশি(২০০৬)
বাঙ্গালীর সংস্কৃতি, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৯৯৮)
প্রথম আলো (১৩ এপ্রিল, ২০১৭)
Ethnic Groups of South Asia and the Pacific
(James B. ২০১২)।

ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

চাইলে পড়তে পারেন-

আমার সবচেয়ে পঠিত পোস্ট।
সবচেয়ে লাইকপ্রাপ্ত গল্প-ধূমকেতু
ধর্ষণ ও ধর্ষক (বাংলাদেশ/বহির্বিশ্ব)
অনুবাদ গল্প-(দি নেকলেস)
দি গিফট অফ দ্যা ম্যাজাই
গল্প লেখার সহজ পাঠ
সবচেয়ে পঠিত প্রবন্ধ।
আধুনিক কবিতার পাঠ (সমালোচনা)
আলোচিত ফিচার 'দি লাঞ্চিয়ন'।
ব্রিটেনের প্রবাস জীবন- স্মৃতিকথা।
সবচেয়ে পঠিত গল্প।
ছবি ব্লগ (লন্ডনের ডায়েরি-১)।


মন্তব্য ৬৮ টি রেটিং +২১/-০

মন্তব্য (৬৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

ঋতো আহমেদ বলেছেন: সুস্থ ধারার যে কোনো সাংস্কৃতিক চর্চা কে আমাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন--

বরাবরের মতই দারুণ একটা পোস্ট। সত্যি আপনি সমৃদ্ধ করছেন সামুকে। শুভ সকাল কাওসার ভাই।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
শুভ সকাল প্রিয় 'ঋতো আহমেদ' ভাই। প্রথম কমেন্টে আপনাকে পেয়ে প্রীত হলাম। আসলে পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকে। এগুলো হাজার বছর থেকে লালিত-পালিত হয়ে মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠে। আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসও হাজারো বছরের। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি হলো 'বঙ্গীয় সংস্কৃতি'। এজন্য এ জাতির নতুন প্রজন্ম হিসেবে একে ঠিকিয়ে রেখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব।

ছুটির দিনটি সুন্দর হোক, এই প্রত্যাশা রইলো।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

অচেনা হৃদি বলেছেন: অফলাইনে পড়েছি, মন্তব্য করতে লগইন করলাম।

:)
ফিচার পড়ে ভালো লেগেছে।
এক জায়গায় সামান্য কিছু যোগ করব। আমি যতদূর জানি বৃটিশ শাসিত নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াতে নিজস্ব কোন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য নেই। এই দেশগুলো পুরোই এংলো-প্রোফাইল্ড, বৃটিশদের সংস্কৃতির মূল হতে তাদের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। নিউজিল্যান্ডের সংস্কৃতিতে আদিবাসী মাউরিদের সামান্য প্রভাব দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের এই সামান্য প্রভাবও নেই।

(আরেকটা কথা, বাংলা সংস্কৃতিতে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য, আপনার পোস্টের ফটোগুলিতে ইহা ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ। ;) )

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:০২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ধারণা করা হয় প্রায় ৭০ হাজার বছর পূর্বে অস্ট্রেলিয়াতে সর্ব প্রথম মানুষের অস্থিত্ব পাওয়া যায়। সতের'শো শতাব্দীত প্রথম ইউরোপীয়ান হিসেবে ডাচরা (Dutch) অস্ট্রেলিয়ায় আসার আগ পর্যন্ত স্থানীয়দের "Indigenous Australians" বলা হতো। এরা ছিল মূলত পশু শিকারী। পাপুয়া-নিউগিনির উপজাতীয়দের মধ্যে এরা এখনো আছে। তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সেখানে বসতি গড়েছিল। ইনডিগোরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে সারা দেশে বিচরণ করতো বলে তাদের সমষ্টিক কালচার খুব সমৃদ্ধ নয়। এটা অনেকটা মৌখিক ও ঈশ্বরবাদী (Dreamtime) ছিল।

ইউরোপীয়রা আসার পর নতুন করে বসতি স্থাপন করে, শহর ও বন্দর গড়ে তোলে। তখন স্থানীয়দের তারা তাড়িয়ে দেয়; এরা সংখ্যা খুবই অল্প ছিল বিধায় প্রতিবাদ করতে পারেনি। এদের বেশিরভাগ এখনো অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাংশে বসবাস করে। সরকার তাদের জীবন মান উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য ভারত উপমহাদেশের মতো সেখানে সমৃদ্ধ অতীত কালচারের ইতিহাস নেই।

'পলিনেশিয়ানরা' সর্ব প্রথম (১২৫০-১৩০০ খৃষ্টাব্দে) নিউজিল্যান্ডে বসতি স্থাপন করে। তারা মূলত 'মাওরি' (maori) নামে পরিচিত। তাদের সংস্কৃতি Indigenous Australians দের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ ছিল। এছাড়া আয়তনে দেশটি ছোট হওয়ায় সমষ্টিক কালচার গড়ে উঠতে সহায়ক ছিল। তবে বৃটিশদের আগমনের পর 'মাওরিদের' সংস্কৃতিতে ব্রিটিশ কালচার আধিপত্য বিস্তার করে।

আর পৃথিবীর যে কোন সংস্কৃতিতে নারীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নারীরাই মূলত সংস্কৃতির কমনীয় রূপটা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলেন। আর আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে নারীদের অবদান সীমাহীন।

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: পোস্ট পুরোটা এখনো পড়িনি। তবে সাংস্কৃতিক চর্চা কোথায় এসে নেমেছে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে গতকাল। যশোরের এক স্কুলে এমপি গেছে । দেশাত্নবোধক গানের তালে তালে নাচতে নাচতে স্কুলের ছাত্রীদের তাকে সম্বর্ধনার চিত্র দেখে পুরাই শকড হয়ে গেছি।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেইসবুকে ভিডিওটি দেখেছি। আসলে এমপিদের বেশিরভাগই এই পদের অযোগ্য। এদের পড়াশুনার গভীরতা কম। এদের বেশিরভাগের বাঙালি সংস্কৃতি এবং নিজের করনীয় সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা নেই। এরা এমপি হয় টাকার দাপটে আর হাই কমান্ডের সুনজরের ফলে। এখানে যোগ্যতার দরকার নেই। 'ভাঁড়' হলেও এদেশে মিনিস্টার হওয়া যায়।

#সেলিব্রেটি

কিছুদিন আগে টিভিতে একটি সেলিব্রেটি টক'শো দেখলাম। ইদানিং টেলিভিশন তেমন একটা না দেখলেও খবর দেখার ফাঁকে হঠাৎ করেই 'সেলিব্রেটি অনুষ্ঠানে' ঢুঁকে পড়া। এখানে যিনি উপস্থাপিকা তিনিও তথাকথিত সেলিব্রেটি। আলোচনায় নিজেদের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কিছুই বাদ পড়েনি। আর প্রেম-সংসার, হাজবেন্ড প্রসঙ্গেও গরম গরম আলোচনা হলো। সংসারের প্রসঙ্গ আসতেই শুরু হলো নিজেদের হাজবেন্ড আর পিচ্চি ছেলে-মেয়েদের সেলিব্রেটি বানানোর ইঁদুর দৌড়! কার বাচ্চা সেলিব্রেটি হওয়ার লাইনে বেশি এগিয়ে তা নিয়ে ঠান্ডা প্রতিযোগিতা!!

যদিও উপস্থাপিকা ম্যাডামের ডিভোর্স কিছুদিন আগে ছিল 'টক অফ দ্যা মিডিয়া'!!

অতিথি সেলিব্রিটি শুরু করেলেন, 'ইউ নো, মাই বেবি গার্ল ইজ টু মাচ টেলেন্টেড।' জানো, সে খুব ভাল গান গাইতে পারে। তবে, অফকোর্স তা ইংলিশ সঙ!! আরো যোগ করলেন, 'তুমি জানলে অবাক হবে, মেয়েটি আমার চমৎকার ইংরেজি বলতে পারে; ইউ নো, আমিও ইংলিশ মিডিয়ামের স্টুডেন্ট!!

এই হচ্ছে আমাদের মিডিয়া আর তথাকথিত সেলিব্রেটিদের অবস্থা। অথচ পহেলা বৈশাখে ডালা-কুলা, ইলিশ-পান্তা, মাটির দোল-মালা, বাউল গান নিয়ে এদের কি-যে মাতামাতি!! পত্রিকা-টিভিতে তাদের লেখা আর ভারী ভারী টিভি কথনে আমরা যারপরনাই পুলকিত হই। এরা পহেলা ফাল্গুনে বাসন্তী রঙের শাড়ী পরে রমনার বটমূলে কোরাস গায় সূর তোলে। একুশে ফেব্রুয়ারী, বিজয় দিবস আর স্বাধীনতা দিবসে দেশ আর ভাষা প্রেমের যিগির তোলে।

অথচ, নিজের বাচ্চাদের বেলায় ঠিক উল্টো সূর। এরা হলো মুখোশধারী 'হিপোক্রেট"।

৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: একটি দেশের সংস্কৃতি ও বিভিন্ন ধরনের উৎসব সে দেশের পরিচয় বহন করে । জাতি ও গোষ্ঠী ভেদে সংস্কৃতি ও উৎসব ভিন্ন ভিন্ন । তবে কিছু বিষয় থাকে যা একটি দেশের সব জাতি ও গোষ্ঠী সবার জন্যই এক ।

হ্যাঁ, কথা সত্যি । আইন করে কাউকে দমিয়ে রাখা যাবেনা । আর বিশ্বায়নের এই যুগে একটি দেশের সংস্কৃতি ও উৎসব সেই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য দেশে যাবে এটাই স্বাভাবিক তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনটা আমাদের জন্য ভালো কোনটা না । আমরা ভালোটা গ্রহন করবো আর খারাপটা বর্জন করবো । আর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে অন্য দেশের সংস্কৃতি ও উৎসব গ্রহন করতে গিয়ে যেন নিজেদের পরিচয় হারিয়ে না যায় । তাই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে এ সকল বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে । আমাদের একটাই সমস্যা আমরা অন্যকে ফলো করে চলাকে স্মার্টনেস মনে করি যেখানে চাইলেই আমরা নিজেই পারি নিজের একটি আইডেন্টিটি গড়ে তুলতে ।

অপসংস্কৃতি নিয়ে পড়েছি কিন্তু বিজাতীয় সংস্কৃতি নিয়ে তেমন জানা ছিলনা ।

মঞ্চ নাটক অনেক ভালো লাগে আমার ।

সকাল সকাল একটা চমৎকার লেখা উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় কাউসার ভাইয়া

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কথাপু,
খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন। আপনি যথার্থই বলেছেন, "একটি দেশের সংস্কৃতি ও বিভিন্ন ধরনের উৎসব সে দেশের পরিচয় বহন করে। জাতি ও গোষ্ঠী ভেদে সংস্কৃতি ও উৎসব ভিন্ন ভিন্ন। তবে কিছু বিষয় থাকে যা একটি দেশের সব জাতি ও গোষ্ঠী সবার জন্যই এক।" এটি হচ্ছে সংস্কৃতি চর্চার আসল কারণ।

সংস্কৃতির সঙ্গে মানুষের অস্তিত্ব জড়িয়ে থাকে। জীবনকে সহজ, সুন্দর করে রাখতে মন্দের বিরুদ্ধে মানুষের যে সংগ্রাম, তাই সংস্কৃতি। জীবনসংগ্রাম, সমাজ চালিয়ে নেবার বাস্তব ব্যবস্থা, মানবসম্পদ, আচার-ব্যবহার, ধ্যানধারণা, সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, ধর্ম, উৎসব, খাদ্য, ক্রিয়া, মানবিকতা, জ্ঞানের উৎকর্ষ। যদি আরও ব্যাপকভাবে দেখতে যাই তাহলে সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের-জ্ঞান, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, নীতিবোধ, রীতিবোধ, চিরাচরিত প্রথা, সমষ্টিগত মনোভাব ও জাতীয় অর্জন।

হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বঙ্গদেশে এসেছে শাসন, ধর্ম প্রচার ও ব্যবসার উদেশ্যে। এই নানান সংস্কৃতির পরস্পর বিরোধী সহাবস্থানের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে নতুন সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটিয়ে বঙ্গীয় সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বাঙলা নামে পরিচিত বিরাট এলাকা জুড়ে ছিল অনেকগুলো রাজ্য—গৌড়, রাঢ়, দক্ষিণ রাঢ়, সুহ্ম, বরেন্দ্রী, হরিকেল, সমতট ও বঙ্গ। গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁ জয় করে ‘শাহ-ই বাঙালিয়ান’ অর্থাৎ বাঙালিদের শাহ উপাধি গ্রহণ করেন।

খাদ্য অভ্যাসে এ দেশের মানুষের মধ্যে ভাতই প্রধান। এ দেশের ধান উৎপন্ন হতো অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগে। তারপর আর্য, সেন, তুর্কি, আফগান, মোগল ও শেষে ইংরেজরা বঙ্গভূমি দখল করেছে। কিন্তু বাঙালির ভাত খাবার অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি। আর অপসংস্কৃতি হলো যা স্থানীয় জনগনের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে সমাজকে দূষিত করে।

৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

আখেনাটেন বলেছেন: এই গুরুগম্ভীর বিষয়টি নিয়ে লেখার প্রচেষ্ঠার জন্য সাধুবাদ। তবে লেখার কোয়ালিটি নিয়ে বিস্তর কথা আছে। অনেক তথ্যগত ও ভাবনাগত ত্রুটি খোলা চোখে দেখা যাচ্ছে। কিছু বিষয় অালোচনা না করলেই নয়। অাশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

অাপনি লিখেছেন: সুলতানি আমলের 'বাঙলা' রাজ্য অথবা বাংলা ভাষা গড়ে ওঠার মুহূর্ত থেকে বাঙালি সংস্কৃতির জন্ম হয়নি। বঙ্গীয় সংস্কৃতির ভিত্তি গড়ে উঠেছিলো আরো অনেক আগে থেকে। ধারণা করা হয় বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর পুরনো। -- এই কথা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা পণ্ডিতদের সাথে সাংঘর্ষিক।

দেখুন তো ড. অানিসুজ্জামানের এই লেখাটা, '...অতএব বাংলার সংস্কৃতির ইতিহাসও খুব প্রাচীন। কিন্তু সে সংস্কৃতি বাঙালির নয়। বঙবাসী যদি বঙ্গভাষী না হয়, তাহলে তাঁকে বাঙালি বলা যায় না এবং তাঁর সংস্কৃতিও বাঙালি সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত করা চলে না...।''

ড. সুনীতিকুমার, ড. সুকুমার রায় প্রমুখগণও একই কথা বলেছেন উনাদের নানা প্রবন্ধে।

আবার বলেছেন, 'ইহুদি, খৃষ্টান, মুসলমান ও বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি বঙ্গভূমি থেকে বহু দূরে হওয়ায় এসব ধর্ম আদি ও অকৃত্রিম রূপে আমাদের বঙ্গে আসেনি। এসব ধর্মের সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছে মাত্র''। -- কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অাব্রাহামিক ঐ তিন ধর্ম বাইরের হলেও বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি আমাদের বাংলার পাশেই। আর যখন তা অাবির্ভাব ঘটে তখন এখানকার ও পূর্বভারতের ঐ অঞ্চলের ভাষা ও সংস্কৃতি কাছাকাছি ছিল। আর বৌদ্ধ ধর্মের চুড়ান্ত বিকাশ এই বাংলার মাটিতেই ঘটেছিল, যদিও আপনি উল্লেখ করেছেন 'দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া'। ভুল।

ড. শহীদুল্লাহর মতে, 'বাংলাদেশ পৃথিবীতে তিনটি ধর্মমত দিয়েছে: প্রাচীনকালের মরমী বৌদ্ধধর্ম, মধ্যযুগে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম, আর আধুনিক যুগের ব্রাক্ষ্মধর্ম।''


আরেক জায়গায় লিখেছেন,'' ঊনিশ শতকের মাঝামাঝিতে কলকাতায় প্রথম মঞ্চ নাটকের যাত্রা শুরু হয়।'' -- সত্যটি হচ্ছে কলকাতায় মঞ্চ নাটকের শুরু অাঠারো শতক থেকেই শুরু হয়। তবে প্রথমে ইংরেজী নাটক মঞ্চস্থ হলেও ১৭৯৫ সালে প্রথম বাংলা-অনুবাদ নাটকের মঞ্চস্থ করেন লেবেদেফ নামক একজন বিদেশী। এরপর উনিশ শতকের প্রারম্ভিক থেকেই মঞ্চ নাটকের উন্মেষ ঘটতে শুরু করে যা উনিশ শতকের মাঝামাঝি এসে কিছুটা পূর্নতা পায়।


আবার লিখেছেন, ''ব্রিটিশরা অাসার পর...এর আগে কখনো এই দুই সম্প্রদায়ের (হিন্দু ও মুসলমান) মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ছিল না।'' -- ব্রিটিশরা আসার অনেক আগে থেকেই উপমহাদেশ তথা বাংলাতেই হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ দানা বেঁধেছিল। এ নিয়ে বিস্তর লেখা অাছে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, ক্ষোভ, ধর্মচ্যুত হওয়ার ভয়, ধর্মের বিনাশ ইত্যাদি চেতনা থেকেই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক অধ্যাত্মিক ব্যক্তির অাবির্ভাব ঘটেছে সেজন্য। এদের একজন পনের-ষোল শতকের শ্রী চৈতন্য।

আরো কিছু বিষয় আছে। আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। তারপরও আবার বলি, এই বাঙালিদের ভুলে যাওয়া বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে আবারও সাধুবাদ জানাই।

আর একটি কথা, এরকম লেখার শেষে তথ্যসূত্র দেওয়া উচিত বলে মনে করি। ভালো থাকুন।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় "আখেনাটেন" ভাই। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো লেখার বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য। সময় নিয়ে লেখাটি পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ। আপনার দেওয়া তথ্যগুলো আবার যাচাই-বাচাই করে প্রয়োজনে সংশোধন করবো।

আপনি বলেছেন, "সুলতানি আমলের 'বাঙলা' রাজ্য অথবা বাংলা ভাষা গড়ে ওঠার মুহূর্ত থেকে বাঙালি সংস্কৃতির জন্ম হয়নি। বঙ্গীয় সংস্কৃতির ভিত্তি গড়ে উঠেছিলো আরো অনেক আগে থেকে। ধারণা করা হয় বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর পুরনো।" আপনার মতে এ তথ্যটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষকদের দেওয়া তথ্যের সাথে সাংঘর্ষিক।

এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হলো, সুলতানি আমলের আগ পর্যন্ত 'বাঙলা' নামে কোন অঞ্চল ছিল না। কিন্তু আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব সমৃদ্ধ কালচার ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে যার ব্যপ্তি ছিল হাজারো বছর ধরে। একটি বিষয় লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন হঠাৎ করেই কোন এলাকার নিজস্ব সংস্কৃতি কখনো গড়ে উঠেনি। এই বাঙলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এজন্য বাঙালদের জন্য আলাদা প্রদেশ গড়ে উঠার সময় স্থানীয়দের মধ্যে যে কালচার গড়ে উঠেছিল তার শুরুও অনেক পূর্বে হয়েছিল, হঠাৎ করে তা হয়নি। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান স্যারের বক্তব্যের সাথে আমি কিছুটা একমত হলেও পুরোপুরি একমত নই। কারণ, ভাষা হলো একটি জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির অন্যতম সোপান (একমাত্র নয়)। ভাষাকে ভিত্তি করে কোন সংস্কৃতি পৃথিবীর কোথাও গড়ে উঠেনি। সংস্কৃতির সাথে স্থানীয় জনগনের দীর্ঘদিনের অভ্যাস ও বিশ্বাস জড়িত। ভাষা এখানে গৌণ।

আপনি আরো বলেছেন, ''ইহুদি, খৃষ্টান, মুসলমান ও বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি বঙ্গভূমি থেকে বহু দূরে হওয়ায় এসব ধর্ম আদি ও অকৃত্রিম রূপে আমাদের বঙ্গে আসেনি। এসব ধর্মের সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছে মাত্র''। আপনি ঠিকই বলেছেন, বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি আমাদের থেকে খুব বেশি দূরে নয়। এ বিষয়টি লেখার সময় আমারও মাথায় ছিল এজন্য দ্বিধায় ছিলাম। এটি উল্লেখ করার অন্যতম কারণ হলো, বৌদ্ধ ধর্মের কালচারের সাথে ভারত উপমহাদেশের চেয়ে মায়ানমার, তিব্বত, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডের স্থানীয়দের কালচারের প্রভাব অনেক বেশি। তবে আপনার সাথে একমত হয়ে বৌদ্ধ ধর্মের কথাটি লেখা থেকে সরিয়ে নেব।

আর ঊনিশ শতকে আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতায় মঞ্চ নাটকের যাত্রা শুরু হলেও বিচ্ছিন্নভাবে তা সারা বাঙলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল আগে থেকে। এ বিষয়ে একমত আপনার সাথে। তখন মূলত জমিদারদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে এমন আয়োজন চলতো। আমি শুধু 'আনুষ্ঠানিক' শুরুর কথা বলতে চেয়েছি লেখাটিতে।

আপনি আরো বলেছেন, ''ব্রিটিশরা অাসার পর...এর আগে কখনো এই দুই সম্প্রদায়ের (হিন্দু ও মুসলমান) মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ছিল না।'' এখানে একটু মিসটেক হয়ে গেছে। ব্রিটিশদের আগমনের পূর্বেও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা ছিল। বিষয়টি সংশোধন করবো। ভুলটি তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আর তথ্যসূত্র দিতে খেয়াল ছিল না। এখন যুক্ত করে দিচ্ছি। (ধন্যবাদ)

৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৪

শায়মা বলেছেন: বাঙ্গালীর সংস্কৃতি ও উৎসব এটাই ছিলো আমার এ বছরের সবচেয়ে মনের মত কাজগুলির একটি। এখানে ছিলো পহেলা বৈশাখ, বসন্ত বরণ, বর্ষামঙ্গল ছাড়াও নবান্ন, ঈদ এবং পূজাপার্বনের বিষয়গুলি.......পরবর্তী কাজ হচ্ছে বাউল উৎসব, ধানকাটা উৎসব, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী নিয়ে নৌকাবাইচ টাইপ উৎসবগুলি নিয়ে।

এই লেখাটা অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। :)

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপা, অনেক খুশি হয়েছি আপনাকে আমার পোস্টে পেয়ে। খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। বাঙালি সংস্কৃতি ও উৎসবে আপনি সারা বছর মেতে ছিলেন জেনে ভাল লাগছে। আমাদের উৎসবগুলো আমাদের জাতীয়তার প্রতীক। এগুলো হলো আমাদের অক্সিজেন। এর সাথে আমাদের মাটি ও মানুষের টান আছে; আছে পূর্ব পূরুষদের ঐতিহ্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাড়না।

বাউল উৎসব, ধানকাটা উৎসব, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী নিয়ে নৌকাবাইচ টাইপ উৎসবগুলি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আপনি মেতে থাকুন, উৎসবগুলো প্রাণভরে উপভোগ করুন এই প্রত্যাশা রইলো। আমি নিজেও বাউল গান খুব পছন্দ করি। এজন্য বাউল আবদুল করিম এবং রাধারমন দত্ত আমার খুব প্রিয়। সময় পেলেই উনাদের গান শুনি; আত্মা জুড়িয়ে যায়। নৌকা বাইচ প্রিয় হলেও এখন দেখার সুযোগ হয় না।

প্রিয় আপার জন্য শুভ কামনা রইলো। ছুটির দিনটি উপভোগ্য হোক।

৭| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

রাকু হাসান বলেছেন:


দিনের প্রথম পড়াটা একটা ভালো লেখা দিয়ে শুরু হলো ।
আপনি কেমন লিখেন তা নতুন করে বলার কিছু নেই । তা প্রমাণিত ।
একটি কথা খুব ভালো লাগলো পোস্টে উল্লেখ করায় । খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু প্রায় সবাই বলে আসে উচ্চবাক্যে । ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’’ ব্যক্তিগতভাবে তা মানতে পারি রা । কেননা আমি নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্মের উৎসবগুলো পালক করা নীতির পরিপন্থি ,যা পাপ হবে । প্রত্যক ধর্মেই চাইবে নিজ ধর্মের বাইরে উৎসব পালন না করতে । আমি মসজিতে নামাজ পড়ে,কিভাবে দুর্গাপূজা পালন করবো বা উৎসবের যোগদান করবো ! সম্ভব নয় ।
সুন্দর একটি টপিকে লেখায় অভিনন্দন ভাই!

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমার খুব প্রিয় ভাইয়ের কমেন্ট পাওয়া মানেই বিশেষ কিছু। কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। দিনের প্রথম লেখাটি আমার পেয়ে খুশি হয়েছেন জেনে কৃতজ্ঞতা রইলো। আমি আসলে ভাল লেখক নই, সখ করে লিখি। নিজের জানার ও পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবনা শেয়ার করি মাত্র।

"ধর্ম যার যার উৎসব সবার" এই ধারণায় আমি বিশ্বাসী নই। কারণ, কিছু কুছু উৎসব ধর্মের রীতিনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এজন্য এসব উৎসব কখনো সার্বজনীন হবে না। তবে যার যার ধর্মের কালচার ও রীতি পালন করার অধিকার আছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কেউ অংশগ্রহণ করলে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। এখানে জোরাজুরির সুযোগ নেই। তবে অন্যের ধর্মীয় উৎসব পালনে সহযোগী মনোভাব তাকতে হবে। কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো প্রিয় 'রাকু' ভাইয়ের জন্য।

৮| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:১৫

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া তোমার ইমেইল আইডি দেবে?

তোমার একটা লেখা চাচ্ছি আমাদের একটি প্রকাশনার জন্য...

মেইলে বাকীটা জানাবো।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:১৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমার লেখা আপনি চাচ্ছেন এটা আমার জন্য অনেক মর্যাদার। আমার মেইল - [email protected]

৯| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:২১

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর একটি পোষ্ট।
অনেক কিছু জানতে পারলাম।

আসলে পশ্চিমেরা যা ফেলে দেয়, আমরা তা কুড়িয়ে নিয়ে চর্চা চালিয়ে যাই। আর আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতি হয়।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় রাজীব ভাই, ছুটির দিনের শুভেচ্ছা রইলো। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম। আপনি ঠিকই বলেছেন, "পশ্চিমেরা যা ফেলে দেয়, আমরা তা কুড়িয়ে নিয়ে চর্চা চালিয়ে যাই। আর আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতি হয়।" এগুলো যাচাই বাচাই করে গ্রহণ করা উচিৎ। তবে সবার আগে নিজেদের সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

১০| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:২১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় গুরুদেব,

প্রথমে অন্তরের কুর্নিস জানাই এমন একটি বহুল পরিশ্রমী পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। গত পোস্টে সময়াভাবে মনেরমত কমেন্ট করতে পারিনি । যে কারনে এখানে একটু চেষ্টা করেছি। ফ্যারাওভায়ের অত্যন্ত সুন্দর কমেন্ট ও ততোধিক সুন্দর প্রতিমন্তব্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এবার আসি,

" বৌদ্ধধর্ম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু হওয়ায় ঐ অঞ্চলের মানুষের কালচারে বৌদ্ধ ধর্মে বেশ প্রচলিত । " আমার মনে ধর্মের সঙ্গে কালচারের একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে। যেমন আপনি ইসলামের মত অন্যান্য ধর্মে উল্লেখ করেছেন। তবে বৌদ্ধ ধর্মের ক্ষেত্রেও সেই যুক্তিতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে বৌদ্ধ কালচার ছড়িয়ে পড়েছে গৌতম বুদ্ধের জন্ম স্থান থেকে। এমনিতে খৃ পূঃ ষষ্ঠ শতকে যে আর্থ - সামাজিক পটভূমিতে প্রতিবাদী ধর্ম হিসাবে অপরাপর ধর্মের মত জৈন, বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি ঘটেছিল সেখানে নবউত্থিত ধর্মগুলির কাছে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বেশ কষ্টকর ছিল। সেখানে গৌতম বুদ্দু যে বুদ্ধং শরনং গচ্ছামি , ধর্মং শরনং গচ্ছামি , সঙ্ঘং শরনং গচ্ছামির তত্ত্ব আনেন তাতে সুকৌশলে সদ্য জন্ম নেওয়া ধর্মকে আচার- আচরণে অন্যদের থেকে আলাদা করেন।

সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পরে বৌদ্ধ হয়ে চন্ডাশোক বা যুদ্ধযাত্রা, মৃগয়া শিকারের পরিবর্তে ধর্মাশোকে পরিনত হন এবং দেশ ও দেশের বাইরে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের কর্মসূচী নেন। তিনি কন্যা সঙ্ঘমিত্রা ও পুত্র অন্যমতে ভ্রাতা মহেন্দ্রকে ধর্মপ্রচারের জন্য সিংহলে পাঠিয়েছিলেন। চতুর্থ বৌদ্ধ মহাসম্মেলনের পর বৌদ্ধ ভিক্ষু নাগসেনের কাছে দীক্ষা নিয়ে সম্রাট কনিষ্কও তিব্বতে ধর্মদূত পাঠিয়ে ছিলেন। আনুঃ১০৪০ খ্রি অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতের রাজা জ্ঞানপ্রভার অনুরোধে সে দেশে মহাযান বৌদ্ধধর্ম প্রচারে যান । তারই চেষ্টায় তিব্বতে তো বটেই পরে অন্যান্য স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম জনপ্রিয়তা লাভ করে। জনপ্রিয় হয় এ সমস্ত দেশে অতীশ দীপঙ্করের মত বৌদ্ধ সসন্ন্যাসীর আচার - আচরণ ও বেশভুষা। আজও হিমালয়ের পাদদেশস্থ অঞ্চলে প্রতি বছর হাজার হাজার দক্ষিণ ও দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ পূর্ণার্থী বৌদ্ধ পূর্ণ্যস্থান গুলিতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পরিভ্রমনে আসেন। আমি নিজে হিমাচল প্রদেশে বা দার্জিলিং হিমালয়ে দেখেছি বৌদ্ধ সংস্কৃতি বা আচার - আচরণ । কাজেই বৈশালী, পাটলিপুত্র, কোশাম্বীর মানুষেরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে বৌদ্ধ সংস্কৃতি ধার করেননি। উল্টে আমি আপনি যেমন ইসলামীয় সংস্কৃতি আরবদের কাছ থেকে নিয়েছি, তেমনি দঃ পূঃ এশিয়ার বৌদ্ধরা কোশাম্বী পাটলিপুত্রের সংস্কৃতিকে নিজের করে নিয়েছেন।

তবে প্রাচীন ভারতে মেটের উপর ব্রাহ্মণ্য ধর্ম রাজধর্ম হওয়ায় রাজনৈতিক উদাসীনতায় বৌদ্ধ ধর্মের জনপ্রিয়তা এদেশে কমতে থাকে। উল্টে ঐ সমস্ত দেশে রাজ ধর্মে পরিনত হওয়ায় কারনে বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।


মন্তব্যে একটি দিক তুলে ধরেছি। অন্যদিক নিয়ে আবার আসছি।



১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় গুরু,
এতো গোছানো চমৎকার এ মন্তব্যটি আমার লেখাটিকে অলঙ্কারিত করেছে। বৌদ্ধ ধর্মের আদি রূপ কিংবা সংস্কৃতি নিয়ে আমার জানাশুনা কম। আপনার লেখাটি পড়ে নিজের জানার পরিধি সমৃদ্ধ হলো। আমার এত দিনের ভাবনার সাথে কিছুটা অমিল খুঁজে পেলাম। এজন্য গুরুদেবকে স্যলুট।

আপনি বলেছেন, "বৌদ্ধ ধর্মের ক্ষেত্রেও সেই যুক্তিতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে বৌদ্ধ কালচার ছড়িয়ে পড়েছে গৌতম বুদ্ধের জন্ম স্থান থেকে। এমনিতে খৃ পূঃ ষষ্ঠ শতকে যে আর্থ - সামাজিক পটভূমিতে প্রতিবাদী ধর্ম হিসাবে অপরাপর ধর্মের মত জৈন, বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি ঘটেছিল সেখানে নবউত্থিত ধর্মগুলির কাছে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বেশ কষ্টকর ছিল। সেখানে গৌতম বুদ্দু যে বুদ্ধং শরনং গচ্ছামি , ধর্মং শরনং গচ্ছামি , সঙ্ঘং শরনং গচ্ছামির তত্ত্ব আনেন তাতে সুকৌশলে সদ্য জন্ম নেওয়া ধর্মকে আচার- আচরণে অন্যদের থেকে আলাদা করেন।" এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তাহলে, বৌদ্ধ ধর্মে উত্তর ভারতের সংস্কৃতির যে প্রভাব আছে তা গৌতমবুদ্ধের মাধ্যমে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

আপনি আরো বলেছেন, "আনুমানিক ১০৪০ খ্রি অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতের রাজা জ্ঞানপ্রভার অনুরোধে সে দেশে মহাযান বৌদ্ধধর্ম প্রচারে যান । তারই চেষ্টায় তিব্বতে তো বটেই পরে অন্যান্য স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম জনপ্রিয়তা লাভ করে। জনপ্রিয় হয় এ সমস্ত দেশে অতীশ দীপঙ্করের মত বৌদ্ধ সসন্ন্যাসীর আচার - আচরণ ও বেশভুষা। আজও হিমালয়ের পাদদেশস্থ অঞ্চলে প্রতি বছর হাজার হাজার দক্ষিণ ও দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ পূর্ণার্থী বৌদ্ধ পূর্ণ্যস্থান গুলিতে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পরিভ্রমনে আসেন। আমি নিজে হিমাচল প্রদেশে বা দার্জিলিং হিমালয়ে দেখেছি বৌদ্ধ সংস্কৃতি বা আচার - আচরণ।" মুগ্ধ হয়ে পড়লাম, কৃতজ্ঞতা রইলো গুরু।

"কাজেই বৈশালী, পাটলিপুত্র, কোশাম্বীর মানুষেরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে বৌদ্ধ সংস্কৃতি ধার করেননি।" এগুলো তাহলে আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিরই অংশ।

আবারো, স্যলুট প্রিয় ভাই, প্রিয় গুরু।

১১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৪

আরোগ্য বলেছেন: প্রিয় কাওসার ভাই আপনার লেখা যত পড়ি ততই মুগ্ধ হই। আপনার পোস্ট এসেছে দেখে খুব খুশি হলাম। পুরো পোস্ট ও মন্তব্যগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ি।বিষয়বস্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। আখেনাটেন ভাই এর যে ত্রুটি ধরেছেন সে ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই বলা যায়, হয়ত বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়লে তাও কিছু বলতে পারতাম। একজন মুসলিম হিসেবে রাকু ভাই এর সাথে আমি একমত।
প্রায় সাতাশ বছরের এই জীবনে দেশের অনেক উন্নতি দেখেছি। ডিজিটাল উন্নতি যতটা আনন্দ দেয়, বাঙালী সংস্কৃতির অবক্ষয় তার চেয়ে বেশি পীড়াদায়ক। আধুনিক হতে হতে মানুষ শেকড় থেকে এতটা দুরে চলে যাচ্ছে যে বাঙালীর বৈশিষ্ট্য আর তাদের চালচলনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
আমার মতে, স্কুলের পাঠ্যবইতে বাঙালী সংস্কৃতি ও বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত এতে ছোটবেলা থেকেই বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জন্মাবে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সহনশীল মনোভাব গড়ে উঠবে।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:২৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় 'আরোগ্য' ভাই; লেখাটি পড়ে নিজের মতামত জানিয়ে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আর মন্তব্যগুলো মনযোগ দিয়ে পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। এখানে সবাই খুব তথ্যবহুল মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে 'আখেনাটেন' ভাই এবং "পদাতিক চৌধুরী" ভাই। উনার দু'জনেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে দক্ষ মানুষ। সাহিত্য চর্চাও নিয়মিত করে থাকেন। এজন্য উনাদের মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমন গঠনমূলক কমেন্ট লেখকদের লেখার মান বাড়াতে খুবই সহায়ক।

আর রাকু হাসান ভাই খুব দরকারি একটি বিষয়ে পয়েন্ট আউট করেছেন। আমার বক্তব্য হলো, "ধর্ম যার যার উৎসব সবার" এই ধারণায় আমি বিশ্বাসী নই। কারণ, কিছু কিছু উৎসব ধর্মের রীতিনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এজন্য এসব উৎসব কখনো সার্বজনীন হবে না। তবে যার যার ধর্মের কালচার ও রীতি পালন করার অধিকার আছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কেউ অংশগ্রহণ করলে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। এখানে জোরাজুরির সুযোগ নেই। তবে অন্যের ধর্মীয় উৎসব পালনে সহযোগী মনোভাব তাকতে হবে। কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেছেন। তা হলো, "স্কুলের পাঠ্যবইতে বাঙালী সংস্কৃতি ও বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত এতে ছোটবেলা থেকেই বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জন্মাবে এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সহনশীল মনোভাব গড়ে উঠবে।" সহমত আপনার সাথে। বিভিন্ন ধর্ম সম্বন্ধে জানাশোনা তাকলে, একে অন্যের সাথে ঘনিষ্টভাবে মিশলে সমাজে সহনশীলতা বাড়বে। একটি জাতির উন্নতির জন্য তা খুব প্রয়োজন। আর স্কুল-মাদ্রাসাগুলোতে নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চাকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।

ভাল থাকুন ভাই, সব সময়।

১২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গুরুদেব,

আপনি লিখেছেন, " বিশ্বায়নের যুগে আইন করে বা বাধ্য করে কাউকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য ইদানিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। "
অন্য এক স্থানে, " একুশ শতকে বিশ্বায়নের যুগে জোর করে নিজের পছন্দ - অপছন্দ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায়না । মানুষ শুনতে বাধ্য নয়। " ভেরি ভেরি গুড।

তাহলে , "ভারতীয় টিভি চ্যানেলের কিছু সিরিয়াল অনুষ্ঠান বা আইটেম সঙ আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষত বিক্ষত করছে। এথেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে । " এক্ষেত্রে বাঙালী কনসেপ্টটা খুব লোকালাইজড হল নয়কি?
আপনি যে ছবিগুলি ব্যবহার করেছেন তার প্রথমটি ওডিসি নৃত্যের দ্বিতীয়টি শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবের তৃতীয়টি সম্ভবত ২১ বইমেলার সেল্ফি আর চতুর্থটি ডুয়ার্সেও দেখা গেলেও আসামের বিহু নাচ । তাহলে আপনি ছবির কোলাজে যেখানে ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের সময়ের বৃহৎ বঙ্গদেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরলেন সেখানে ভারত ছেড়ে দিলাম কলকাতা কেন্দ্রিক টিভি সিরিয়ালকে আটকাবেন কোন যুক্তিতে ? হ্যাঁ রাজনৈতিক দৃষ্টিতে হলে আলাদা কথা । আর সেক্ষেত্রে ধারনাটাও ?????? হা হা হা।

সবশেষে সিদ্ধান্তে এসে আপনার সুরে বরং বলবো ,
রাজনৈতিক বেড়া বিদ্যমান হলেও সংস্কৃতির প্রশ্নে আমরা মিলেমিশে একাকার। সাহিত্যকে যেমন এপার - ওপার বলে বেড়া দিয়ে রাখতে পারবেন না । তেমনি বিশ্বায়নের যুগে আমরা ওরা নয়, ভারত - বাংলাদেশ নয়, বরং আমরা প্রজন্মকে চেনাই কোনটা গ্রহণীয় বা কোনটা বর্জনীয় । মনে রাখবেন ঘাড়ের উপর ইউটিউব আছে । কোনও লাভ হবেনা বাঁধা দিলে। বরং যেটা নিষেধ করবেন সেটা বিজ্ঞাপন পেয়ে আরও আর্থিক সুবিধা পাবে।


শুভকামনা ও বিমুগ্ধতা গুরুদেবকে।



১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:২০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



হা হা হা :-B!!
গুরু সব গোপনীয়তা ফাঁস করে দিলেন। আসলে বিশ্বায়নের এ যুগে বিজাতীয় কালচার, কিংবা বিদেশি অপসংস্কৃতি বন্ধ করা প্রায় অসম্ভ। এজন্য আমাদেরকে সচেতন হতে হবে; যাতে বিশ্বায়নের নামে কোন অপসংস্কৃতির প্রবেশ না ঘটে (তবে বিদেশি বলতে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা বুঝাই নাই; এগুলো আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির অংশ)। আশা করি, প্রিয় গুরু এবার খুশি হবেন B-)

ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের কুটনামি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির অংশ নয়; এটি পশ্চিম ভারতের সংস্কৃতি; এমন সিরিয়াল দেখে সমাজে নেগেটিভ প্রভাব পড়ে। এটি উভয় দেশের বাঙালিদের জন্য পরিত্যাজ্য। আমাদের সমাজে যৌথ পরিবার প্রথা, সহনশীলতা, পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং বউ শাশুড়ির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। আমি যতটুকু জানি পশ্চিমবঙ্গের সচেতন বাঙালিরা এই বস্তাপঁচা সিরিয়াল দেখেন না। আমার গুরুও দেখার কথা না :-B!!

গুরু, সত্যি বলতে কি এই ছবিগুলো আমার খুব পছন্দ হয়েছে তাই দিয়েছি। আসলে আমরা তো রাজনৈতিক কারণে দু'টি দেশের সিটিজেন। জাতি হিসেবে তো আমরা এক। দেশ, কাঁটাতার কখনো মানুষকে সংস্কৃতির সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করতে কোনদিন পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। এজন্য আমাদের প্রিয় "সামহোয়্যারইন" ব্লগের সবার একটাই পরিচয় আমরা সবাই 'বাঙালি'।

গুরু, আবার এসে কমেন্ট করায় সত্যি কৃতজ্ঞ। আচ্ছা, আমরা দু'জন বাঙালি না হলে কি ভাই-ভাই হতে পারতাম? আমার "শান্তনু দা"কে আমি কখনো ভারতীয় মনে করি না; তিনি আমার মত বাঙালি। আপনিও ঠিক তাই। এ সম্পর্কের যোগসূত্র আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি।

ভাল থাকুন, প্রিয় ভাই। সব সময়।

১৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অসাধারণ! আপনার পোস্টগুলি যেন এক একটি শিক্ষা সফর, শুভ কামনা রইল

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ, লিটন ভাই। কমেন্ট করে প্রেরণা দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো। আমি সৌখিক কলমবাজ। নিজের পছন্দের বিষয়াদি নিয়ে লেখতে পছন্দ করি। চেষ্টা করি, সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দিয়ে ভাল লিখতে; কিন্তু কোন লেখাই মনমতো হয় না। আশীর্বাদ করবেন আমার জন্য। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইলো।

১৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: প্লিজ , মেইল চেক করুন।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



মেইল পেয়েছি। প্রতি উত্তরও দিয়েছি। একটু চেক করে দেখলে খুশি হবো। (ধন্যবাদ)

১৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ ভাইয়া।

গিয়াসভাইয়া তোমাকে মেইল করে দিয়েছেন!


অনেক অনেক ভালোবাসা! :)

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপু, লিটন ভাইয়ের মেইল পেয়েছি। প্রতি উত্তর করেছি। (ধন্যবাদ)

১৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২২

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: মন্তব্য করতে গিয়ে লগআউট হলে মেজাজ যা গরম হয় না!!!!

মন্তব্যই করবো না।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



মন্তব্য করতে "লগআউট" হবে কেন? নিশ্চয়ই এটা জীনের কারসাজি। তেলপড়া থাকলে লকে (ব্লগে) মালিশ করুন। দেখবেন এমন লগইন হবে, আজীবনের জন্য আর লগআউট হবে না :-B !!

১৭| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৩

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: ইভ টিজিং এর শাস্তি প্যানেল কোড কত অনুযায়ী এবং এর সর্বোচ্চ শাস্তি কি ?


নারী ও শিশু আইনে এক ইভ টিজিংকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কোনো শাস্তির বিধান রাখা হয়নি। তবে দণ্ডবিধির ২৯৪ ও ৫০৯ ধারা এবং পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৬ ধারা অনুসারে ইভ টিজিংকে আইনি অপরাধের আওতায় আনা যায়। এর সর্বোচ্চ শাস্তি ১ বছর ও ১০০০ টাকা সহ সশ্রম কারাদণ্ড।

আমাকে বাঁচান.....

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



"ইভটিজিং" বিষয় নিয়ে এত উদ্বিগ্ন কেন? জানেমন B:-)!! আজই মাইয়ার মায়ের কাছে একজন নিরীহ পোলা হিসাবে প্রস্তাব পাঠাইলাম আর আইজই অন্য মাইয়ার লগে ইভটিজিং!! এটা ক্যান করলা জানেমন!! আফনেরে বাঁচানোর একমাত্র উপায় জলদি "বেলতলায়" পাঠানো। এর কোন বিকল্প নেইক্কা :-B!!!

১৮| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৪

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: লগইন করে আপনাকে দুটো মন্তব্য না করতেই আবার লগআউট হয়ে গেল। পোস্ট পড়ার মুড নাই, মানে পোস্টটা আমি পড়ি নি। ওটা বলতেই লগইন করলাম। দারুন আবহাওয়া। ব্লগিং বাদ দিয়ে আমার মত ঘুমান। শুভরাত্রি।


পুনশ্চঃ
বারবার লগআউট হবার জন্য সামুর খবর আছে। সামনের দিন থেকে সারাদিন লগইন করে বসে থাকবো। আমাকে করে লগআউট..X(
(লগইন করেই ঘুম গেলাম। থাক বেটা বদজাত সামু..)X(

১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আমনে কবে, পুরা পোস্ট পড়ছেন? এত মুড নাই, মুড না করো ক্যান মনু? নিশ্চয়ই ভেতরে ভেতরে কোন অভিমান কিম্বা বিরহের পাথর জমা হয়ে আছে। এগুলো গলানোর জন্য "মোমবাতি" থেরাপি লাগবে মনু। বুজলেন, মোমবাতি!! :-B

এই ঠান্ডা রাতে ঘুম আাসবে? মনটা 'মনু' কেমন যেন উদাস হয়ে গেছে।

১৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:০০

বলেছেন:


The Notting Hill Carnival is an annual event that has taken place in London since 1966 on the streets of Notting Hill, in the Royal Borough of Kensington and Chelsea and the City of Westminster, each August over two days.


বিষয়বস্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ -আমাদের হৃদয়ে বেচে থাকুক হাজার বছর ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৭:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



চমৎকার একটি কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ 'রহমান লতিফ' ভাই। নটিংহিল কার্নিভাল হলো ইউরোপের সবচেয়ে বড় "Street Carnival"। আমি ৩-৪ বার এ কার্নিভালে গেছি। এটা অনেকটা ব্রাজিলের " Rio Carnival" এর মত। এখানে পৃথিবীর শতাধিক দেশের মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরার সুযোগ পায়। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয় এতে; যার বড় একটি অংশ তরুণ-তরুণী। এই উৎসবটি এত রঙিন যে একবার গেলে বার বার যেতে মন চায়। এটা আমার জন্য দারুণ একটি অভিজ্ঞতা ছিল।

২০| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:১৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: আপনার লেখাগুলো বড় হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অনেককিছু সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। গ্রেট ভাই।

শুভকামনা ও সুস্থতা সার্বিকভাবে সঙ্গ দিক আপনাকে

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ 'নয়ন' ভাই। সংস্কৃতির সঙ্গে মানুষের অস্তিত্ব জড়িয়ে থাকে। জীবনকে সহজ, সুন্দর করে রাখতে মন্দের বিরুদ্ধে মানুষের যে সংগ্রাম, তাই সংস্কৃতি। জীবনসংগ্রাম, সমাজ চালিয়ে নেবার বাস্তব ব্যবস্থা, মানবসম্পদ, আচার-ব্যবহার, ধ্যানধারণা, সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, ধর্ম, উৎসব, খাদ্য, ক্রিয়া, মানবিকতা, জ্ঞানের উৎকর্ষ।

যদি আরও ব্যাপকভাবে দেখতে যাই তাহলে সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের-জ্ঞান, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, নীতিবোধ, রীতিবোধ, চিরাচরিত প্রথা, সমষ্টিগত মনোভাব ও জাতীয় অর্জন। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বঙ্গদেশে এসেছে শাসন, ধর্ম প্রচার ও ব্যবসার উদেশ্যে।

এই নানান সংস্কৃতির পরস্পর বিরোধী সহাবস্থানের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে নতুন সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটিয়ে বঙ্গীয় সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বাঙলা নামে পরিচিত বিরাট এলাকা জুড়ে ছিল অনেকগুলো রাজ্য—গৌড়, রাঢ়, দক্ষিণ রাঢ়, সুহ্ম, বরেন্দ্রী, হরিকেল, সমতট ও বঙ্গ। গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁ জয় করে ‘শাহ-ই বাঙালিয়ান’ অর্থাৎ বাঙালিদের শাহ উপাধি গ্রহণ করেন।

২১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:২১

স্বপ্নডানা১২৩ বলেছেন: ব্যাপক শ্রম দিয়ে ব্যাপকতর পোস্ট তৈরি করেছেন

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:১০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



লেখাটি পড়ে কমেন্ট করে নিজের ভাল লাগার অনুভূতি শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ "shopnodana" ভাই। বাঙালি সংস্কৃতির সমন্বয়বাদী বৈশিষ্ট্য থেকেই মূলত বাংলা নববর্ষের সৃষ্টি। যার সূচনা করেছেন সম্রাট আকবর। বার্ষিক কর, কৃষিকর, ভূমিকর, জলকর আদায়ের উদ্দেশ্যেই বাংলা সাল প্রচলন করেন। ফসল ঘরে তুলে সব কর মিটিয়ে বছরের প্রথমে কৃষক উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে। সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষ এক হয়ে নববর্ষের উৎসব পালন করে।

ধর্মীয় উৎসবগুলো নিজ নিজ ধর্মের মানুষের মধ্যে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। কিন্তু বর্ষবরণে সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতি থাকে সমান। দেশের সীমানা বেরিয়ে অন্য দেশেও এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। এটা কোনো জাতি বা গোষ্ঠী অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। পৃথিবীর যেখানেই বাঙালি রয়েছে-সেখানেই বাংলা নববর্ষকে স্বাগতম জানাতে থাকে।

সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সকল বাঙালিকে সমান একটি রেখায় দাঁড় করাতে পারে বাংলা নববর্ষ। এ কারণে সম্রাট আকবর তার রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা পেয়েছিলেন সকল ধর্মের মানুষের কাছ থেকে। যুগ যুগ ধরে বাঙালির বর্ষবরণে সামাজিক বন্ধন কথাই ছড়িয়ে দিয়েছে, আজও দিচ্ছে। যত দিন বাংলা পৃথিবীতে থাকবে, তত দিনই বাংলা বর্ষবরণের মধ্য দিয়ে বাঙালি তাদের সম্প্রীতি ধরে রাখবে।

২২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১০

সোহানী বলেছেন: ভাইরে তোমার লিখা পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল বাংলা পরীক্ষার আগের রাতের পড়া মুখস্ত করছি…..হাহাহাহাহাহাহা

মজা করলাম……….

অসম্ভব গুড়ুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আসলেন এবার। অতীত বর্তমান ভবিষ্যত সব কালের সংস্কৃতি বা কাচার কালের বিবর্তনে ধাক্কা বার বারই সেইপ পাল্টিয়েছে এবং পাল্টাবে। সে বিষয়ে আপনিও দ্বিমত করেননি, আমিও করছি না। শুধু আপনার কথার সাথেই যোগ করতে চাই আমরা অবশ্য্ বেছেঁ নিবো কোনটা ভালো কোনটা খারাপ। অপসংস্কৃতি কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। কথা প্রসঙ্গে ভারতীয় টিভির উদাহরন এনেছেন এবং পদাতিক ভাই তার প্রতিউত্তরও দিয়েছেন। তবে এ প্রসঙ্গে অামার কথা হলো, যে ঘটনা বা কাহিনী বা মানসিকতা দেখানে হয় তা কোনভাবেই আমাদের কালচারের সাথে যায় না।

এ সব নিয়ে অনেক প্রতিবাদ করেছি, অনেক বাঘা বাঘা শিল্পী যেমন শহীদুল, ফারুকী সহ অনেকেই এসব চ্যানেল বন্ধ করতে বলেছে কিন্তু আজো কিছুই করেনি সরকার। অবস্থাদৃস্টে মনে হচ্ছে নিজেদের কালচার ধরে রাখার চেয়ে ভারতীয় চ্যানেল প্রোভাইডারদের সাথে সম্পর্কটা বেশী জরুরী।

পদাতিক ভাই হয়তো ভালো বলতে পারবেন, তবে আমি যতটুকু জানি স্বয়ং ভারতেই এসব চ্যানেল দেখানো হয় না। এসব চ্যানেল শুধুমাত্র আমাদের দেশের জন্য করা হয়।

যাহোক, আদার ব্যাপরীর জাহাজের খবর নিয়ে লাভ নেই।

তবে আপনার লিখা প্রসঙ্গে এতোটুকু বলতে পারি, লেখালেখির জগতে আপনি দেশের সম্পদ। প্লিজ লেখালেখি ধরে রাখুন। অনেক সম্ভাবনাময় লেখকদের মতো একসময়ে হারিয়ে যাবেন না।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



"Morning shows the day" B-)!! সকাল সকাল প্রিয় মানুষের আশীর্বাদ দিনটিকে রঙিন করে তুলতে যথেষ্ট। অনেক ব্যস্থতার মাঝেও আপু আমাকে মনে রেখেছেন, লেখাটি পড়ে মন্তব্য করেছেন; এটা আমার জন্য অনেক স্পেশাল। আমার লেখা পড়ে পরীক্ষার আগের রাতের পড়া মুখস্ত করা মনে হলো? :-B

আপনি খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেন, "অতীত বর্তমান ভবিষ্যত সব কালের সংস্কৃতি বা কাচার কালের বিবর্তনে ধাক্কা বার বারই সেইপ পাল্টিয়েছে এবং পাল্টাবে। সে বিষয়ে আপনিও দ্বিমত করেননি, আমিও করছি না।" আসলে কালচার হলো মানুষের দীর্ঘদিনের অভ্যাস ও সামাজিক রাতিনীতি। এজন্য সাহিত্যের মতো কালচারও সময়ের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়। তবে, সংস্কৃতির আদি ও অকৃত্রিম রূপ সব সময় দৃশ্যমান থাকে। সাথে অন্য কালচারগুলো যুক্ত হয়ে একে কালারফুল করে। তবে, অপসংস্কৃতি অবশ্যই বর্জনীয়। তা দেশি কিংবা বিদেশি যাই হোক না কেন।

ভারতীয় রিয়েলিটি শো, টিভি সিরিয়ালগুলোর বেশিরভাগই হলো আমাদের সংস্কৃতি পরিপন্থী। এগুলো ভারতীয়-বাংলাদেশি কোন বাঙালির কালচারের মধ্যে পড়ে না। সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে; এজন্য এগুলো বর্জনীয়। এতে পরিবার ও সমাজে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পদাতিক ভাই এসব বস্তা পঁচা অনুষ্ঠান দেখেন না। আপনি খুব ভাল লিখেন। সময় সুযোগে ব্লগে লেখলে পড়তে পারবো।

ছুটির দিনটি সুন্দর হোক এই প্রত্যাশা রইলো। B-)

২৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
প্রিয় রাজীব ভাই, ছুটির দিনের শুভেচ্ছা রইলো। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম। আপনি ঠিকই বলেছেন, "পশ্চিমেরা যা ফেলে দেয়, আমরা তা কুড়িয়ে নিয়ে চর্চা চালিয়ে যাই। আর আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতি হয়।" এগুলো যাচাই বাচাই করে গ্রহণ করা উচিৎ। তবে সবার আগে নিজেদের সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।


ধন্যবাদ, বড় ভাই। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



রাজীব ভাই, কোন কমেন্টের প্রতি উত্তর আপনার পছন্দ হলে তা আবার কমেন্ট করে জানিয়ে দেন। এটা আমার খুব ভাল লাগে। আপনি যে মনযোগ দিয়ে কমেন্টগুলো পড়েন এটা তার প্রমাণ। আশীর্বাদ করি, পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখী হোন; আর আমাদের জন্য নিয়মিত ব্লগ লিখুন।

২৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: বর্তমান বিদেশী সংস্কৃতির প্রভাব কি আমাদের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করছে নাকি ধ্বংস করছে??

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ 'হাসান জাকির' ভাই। আমাদের উপমহাদেশের সংস্কৃতি মিশ্র রীতিনীতি আর অভ্যাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। হাজার বছর আগে থেকে এ বঙ্গে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর আগমনের ফলে আমাদের সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য এসেছে। তবে, গত ২০-২৫ বছর থেকে বিদেশি সংস্কৃতির আমদানী হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এসব সংস্কৃতির ইতিবাচক দিকের চেয়ে নেতিবাচক প্রভাব অনেক বেশি। আমি মনে করি, হঠাৎ করে ধেয়ে আসা এসব আকাশ সংস্কৃতি আমাদের দীর্ঘদিন থেকে গড়ে উঠা স্থানীয় সংস্কৃতিকে হটিয়ে দিচ্ছে। এগুলো মোটেও ভাল লক্ষণ নয়।

২৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

নজসু বলেছেন: সংস্কৃতি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
আজ বিশ্বের দিকে দিকে চলছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির যুদ্ধ।
উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য সংস্কৃতি উদ্দাম ভোগ-বিলাসিতা ও উচ্ছ্বংখলতার জন্ম দেয়।
সময়োপোযী পোষ্ট আপনার।
সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে আমাদেরকে অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করা
ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
সাথে চাই শুভ সুন্দর জীবনের নবতর দীক্ষা।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:০৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ 'নজসু' ভাই। আপনি ঠিকই বলেছেন, "সংস্কৃতি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আজ বিশ্বের দিকে দিকে চলছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির যুদ্ধ। সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে আমাদেরকে অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সাথে চাই শুভ সুন্দর জীবনের নবতর দীক্ষা।"

সংস্কৃতির সঙ্গে মানুষের অস্তিত্ব জড়িয়ে থাকে। জীবনকে সহজ, সুন্দর করে রাখতে মন্দের বিরুদ্ধে মানুষের যে সংগ্রাম, তাই সংস্কৃতি। জীবনসংগ্রাম, সমাজ চালিয়ে নেবার বাস্তব ব্যবস্থা, মানবসম্পদ, আচার-ব্যবহার, ধ্যানধারণা, সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, ধর্ম, উৎসব, খাদ্য, ক্রিয়া, মানবিকতা, জ্ঞানের উৎকর্ষ। যদি আরও ব্যাপকভাবে দেখতে যাই তাহলে সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের-জ্ঞান, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, নীতিবোধ, রীতিবোধ, চিরাচরিত প্রথা, সমষ্টিগত মনোভাব ও জাতীয় অর্জন।

আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।

২৬| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫

নীলপরি বলেছেন: তথ সমৃদ্ধ ও পরিশ্রমী পোষ্ট ভালো লাগলো ।

শুভকামনা

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:১২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



দিদি, শুভেচ্ছা রইলো। লেখাটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার স্ফূরণ, ঐতিহাসিকরা একে সাধারণত বঙ্গীয় রেনেসাঁ বলে থাকেন। এতে অবদান রেখেছিলেন হিন্দু জমিদার শ্রেণি এবং শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী। এ ছিলো ঐতিহাসিক এবং নতুন যুগসৃষ্টিকারী। এই রেনেসন্সের প্রভাবে বাঙালিরা ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তিবাদ, উদারনৈতিকতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, এক কথায় আধুনিকতার ধারণা দিয়ে প্রভাবিত হন। এ থেকে আবার পরের দিকে স্বাজাত্যবোধের জন্ম হয়। তবে বঙ্গীয় রেনেসাঁর প্রকাশ ছিল নিতান্ত আংশিক এবং সীমিত। কারণ রেনেসাঁর প্রধান দুটি ক্ষেত্র - চিত্রকলা এবং স্থাপত্যে এর কোনো প্রকাশ ঘটেনি, বা সমাজের প্রধান ভাগ অর্থাৎ মুসলমান এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুরাও এর আলোক থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। তবে পরে এই প্রক্রিয়া তাঁদেরও ধীরে ধীরে খানিকটা প্রভাবিত করেছিলো।

আধুনিক বাঙালিদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা এবং বিবাহ ও পরিবারের মতো সামোজিক প্রতিষ্ঠানকেও পশ্চিমা চিন্তাধারা প্রভাবিত করেছিল। উপনিবেশিক আমলের আগে মহিলাদের রাখা হতো অশিক্ষিত এবং অন্তঃপুরে বন্দী করে। আর বিবাহ ছিলো নিতান্তই সন্তান জন্ম দিয়ে পরিবার গড়ে তোলার একটা প্রক্রিয়া। ইংরেজি শিক্ষা এই পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করে - প্রথমত নাগরিক সমাজে। নগরের শিক্ষিত সমাজে এর ফলে স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন হয় এবং পর্দাপ্রথাও ধীরে ধীরে শিথিল হয়। এমনকি মেয়েদের পোশাকেও দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। মোট কথা, উচ্চশ্রেণির নাগরিক সমাজের অনেক মহিলাই যথেষ্ট পরিমাণে আধুনিক হয়ে ওঠেন। রোমান্টিক প্রেমের ধারণাও ক্রমশ দানা বাঁধতে থাকে এবং সমাজও আস্তে আস্তে তা স্বীকার করে নেয়। তবে এখনও তা সামাজিক রীতিতে পরিণত হয়নি। রোমান্টিক প্রেমের উন্মেষের ফলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আগের থেকে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে এবং পারস্পরিক প্রেমের ওপর গড়ে ওঠে, এভাবে পরিবারে মহিলাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

বস্ত্তত, বাঙালি নারীদের বর্তমান অবস্থা, বিশেষ করে শিক্ষিত নাগরিক সমাজের নারীদের অবস্থান মোটামুটি সন্তোষজনক ও ন্যায্য বলে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু এই অবস্থা থেকে উনিশ শতকের প্রথম দিকে তাঁদের অবস্থা কী শোচনীয় ছিলো, তা অনুমান করা অসম্ভব। পরিবর্তিত পরিবেশে পরিবার, সমাজ এবং অর্থনীতিতে নারীরা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগ এবং ১৯৫০ সালের দাঙ্গার পরে পূর্ব বাংলা থেকে ব্যাপকহারে শিক্ষিত হিন্দুদের দেশত্যাগ এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের ফলে নারীদের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাঁরা আগের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাচ্ছেন।

ভাল থাকুন সব সময়।

২৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৪১

ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: বাঙ্গালিদের একটাই দোষ, পশ্চিমা দেশের সংস্কৃতি নিয়ে তারা একটু বেশিই ঘাটাঘাটি করে এবং ফলো করার চেষ্টা করে। আমরা ভাবি পশ্চিমা দেশগুলোর কালচার ফলো করলেই আমরাও স্মার্ট হয়ে যেতে পারবো এবং তাদের বরাবর হয়ে যেতে পারবো।
দুঃখের সূরে বলতে হচ্ছে, আমাদের সচেতন হওয়া খুব জরুরী। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের শৈশব থেকেই সচেতন হওয়া খুবই জরুরী।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:২২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করে নিজের মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ 'প্রভা' আপু। আসলে আকাশ সংস্কৃতির এ সময়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের বুঝতে হবে কোনটি আমাদের জন্য গ্রহনীয় এবং কোনটি বর্জনীয়। অপসংস্কৃতিকে সচেতনভাবে সমাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। না হলে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; নতুন প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারকেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

আধুনিক কালে বাঙালিদের সংস্কৃতি বিচিত্র রূপ লাভ করলেও, তার মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য রয়ে গেছে, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাঙালি সমাজে স্থায়ী আসনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। যেমন, বাঙালি মহিলাদের এখনো উপমহাদেশের এক দল নারীর মধ্যে সহজেই আলাদা করে চিনে নেওয়া যাবে। ক্রমবর্ধমান ব্যস্ত জীবনযাত্রার মধ্যেও বাঙালিরা ঢিলেঢালা জীবনধারা পছন্দ করেন এবং কয়েকজন মিলে আড্ডা দিতে ভালোবাসেন।

তাদের অনেকেই হুজুগে, দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলের কথা না ভেবে সবাই মিলে লাফিয়ে পড়তে পছন্দ করেন। জীবনের বহু ক্ষেত্রে আধুনিক হয়ে উঠলেও, তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের বিকাশ ঘটেছে সামান্যই। তাঁদের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন খুব জোরালো। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, বিবাহের আয়োজন করেন পিতামাতারা, এবং তাঁদের মধ্যে বিবাহপূর্ব ও বিবাহ-বহির্ভুত প্রেম সামান্যই দেখা যায়।

গ্রামীণ জনগণের মধ্যে দারিদ্র্য এবং ভূমিহীনতা বৃদ্ধি পেলেও মধ্যবিত্ত এবং ধনীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং নিজেদের জাহির করার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিরা আগে কৃষিনির্ভর ছিলেন, কিন্তু বিশ শতকে জনসংখ্যার বিস্ফোরণের ফলে অনেক বাঙালিই এখন গ্রামের বদলে শহরে গিয়ে স্বল্প-দক্ষ বা অদক্ষ শ্রমিকে পরিণত হয়েছেন। বাঙালি চরিত্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তাঁরা সাধারণত নমনীয় মধ্যপন্থায় এবং সমন্বয়ধর্মিতায় বিশ্বাসী। সে কারণে তাঁরা যেকোনো উগ্রবাদের পথ সাধারণত এড়িয়ে চলেন।

আপনি মন খুলে লিখুন, লেখতে চেষ্টা করুন। শুভ কামনা রইলো।

২৮| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৬

হাবিব বলেছেন:



অসুস্থ সংস্কৃতির দাপটে আজ সুস্থ সংস্কৃতি আমরা প্রাই ভুলেই যাচ্ছি। ওপার বাংলার সংস্কৃতি আমরা এতো বেশি চর্চা করি যে আমরা আমাদের বাঙ্গালী নামটাই মনে হয় মনে রাখিনি। বিনদেশি উৎসব আমরা যেভাবে ঘটা কওে পালন করি তা আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে অনেকাংশেই দেখা যায় না। সংস্কৃতি একটা জাতির পরিচিতি। জাতিকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করাতে এর ভ’মিকা অনেক। সুস্থ সংস্কৃতি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মেও ভবিষ্যৎ গড়ার সহায়ক।

আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন কাউসার ভাই। ভালো লাগলো পড়ে।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



চমৎকার একটি মন্তব্য করে নিজের সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ 'হাবিব' ভাই। আসলে সংস্কৃতি হলো একটি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অলঙ্কার। মুক্ত সংস্কৃতির এ সময়ে বিভিন্ন দেশ ও জাতির সংস্কৃতির মিশ্রণ হবে সত্য, তবে তা কোন অবস্থাতে নিজেদের কালচারকে বিনষ্ট করে নয়। এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।

আপনি ঠিকই বলেছেন, "ভিনদেশী উৎসব আমরা যেভাবে ঘটা কওে পালন করি আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে তা অনেকাংশেই দেখা যায় না। সংস্কৃতি একটা জাতির পরিচিতি। জাতিকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করাতে এর ভূমিকা অনেক। সুস্থ সংস্কৃতি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গড়ার সহায়ক।" সহমত আপনার সাথে।

ভাল থাকুন, শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

২৯| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮

স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: তথ্যবহুল একটি প্রবন্ধ এবং সুন্দর লেখনী। তার উপর বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে লেখা। যেটা নিয়ে আমার মত মোটামুটি সব বাঙালিরই আগ্রহ আছে। পড়ে ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো। :)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনাকে, আপু। লেখাটি পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো। মানুষের আত্মপরিচয় বা মর্যাদার বাহ্যিক রূপই হচ্ছে সংস্কৃতি। মোতাহার হোসেন চৌধুরী সংস্কৃতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে—‘সংস্কৃতি মানে সুন্দরভাবে, বিচিত্রভাবে বাঁচা, প্রকৃতি-সংসার ও মানব সংসারের মধ্যে অসংখ্য অনুভূতির শিকড় চালিয়ে দিয়ে বিচিত্র রস টেনে নিয়ে বাঁচা, নর-নারীর বিচিত্র সুখ-দুঃখে বাঁচা, বিচিত্র দেশ ও বিচিত্র জাতির অন্তরঙ্গ সঙ্গী হয়ে বাঁচা, প্রচুরভাবে, গভীরভাবে বাঁচা, বিশ্বের বুকে বুক মিলিয়ে বাঁচা।’

সংস্কৃতির সঙ্গে মানুষের অস্তিত্ব জড়িয়ে থাকে। জীবনকে সহজ, সুন্দর করে রাখতে মন্দের বিরুদ্ধে মানুষের যে সংগ্রাম, তাই সংস্কৃতি। জীবনসংগ্রাম, সমাজ চালিয়ে নেবার বাস্তব ব্যবস্থা, মানবসম্পদ, আচার-ব্যবহার, ধ্যানধারণা, সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, ধর্ম, উৎসব, খাদ্য, ক্রিয়া, মানবিকতা, জ্ঞানের উৎকর্ষ। যদি আরও ব্যাপকভাবে দেখতে যাই তাহলে সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের-জ্ঞান, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, নীতিবোধ, রীতিবোধ, চিরাচরিত প্রথা, সমষ্টিগত মনোভাব ও জাতীয় অর্জন।

হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বঙ্গদেশে এসেছে শাসন, ধর্ম প্রচার ও ব্যবসার উদেশ্যে। এই নানান সংস্কৃতির পরস্পর বিরোধী সহাবস্থানের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে নতুন সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটিয়ে বঙ্গীয় সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বাঙলা নামে পরিচিত বিরাট এলাকা জুড়ে ছিল অনেকগুলো রাজ্য—গৌড়, রাঢ়, দক্ষিণ রাঢ়, সুহ্ম,বরেন্দ্রী, হরিকেল, সমতট ও বঙ্গ। গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ সোনারগাঁ জয় করে ‘শাহ-ই বাঙালিয়ান’ অর্থাৎ বাঙালিদের শাহ উপাধি গ্রহণ করেন।

"শুভ কামনা" রইল আপনার জন্য।

৩০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

করুণাধারা বলেছেন: কাওসার চৌধুরী, পোস্টটা বুকমার্ক করে রেখেছিলাম। এত সমৃদ্ধ পোস্ট একবার পড়ে মন্তব্য করা যায় না। আসলে শুধু পোস্ট না, আপনার মন্তব্য- প্রতিমন্তব্যগুলোও খুবই সুচিন্তিত হয় পড়তে খুব ভালো লাগে। অনেক গুলোতে লাইক দিয়েছি।

সুস্থ ধারার যেকোনো সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার মানসিকতা দরকার, তা স্বদেশী বা বিদেশি যাই হোক না কেন। তবে এক্ষেত্রে ভন্ডামি পরিহার্য। কিছু কিছু পরিবার আমি দেখেছি, ঢাকাতে বসেই যাদের সন্তানেরা বাংলায় কথা বলে না, ইংরেজিতে কথা বলে। স্পষ্টতই মা-বাবার উৎসাহেই তাদের এই কথা বলা! আবার এই মা বাবাই পয়লা বৈশাখে সন্তানদের একদিনের জন্য বাঙালি বানান। ৩ প্রতিমন্তব্যে আপনি এ ব্যাপারে বলেছেন।

প্রত্যেকেই নিজের মনে নিজের পছন্দমত সংস্কৃতি লালন করেন, সেটা আমিও করি। অন্যের সংস্কৃতি পালনে কোন বাধা দেব না, যদি না তা আমার অনুভূতিকে আঘাত করে।

খুব জানার ইচ্ছা করছে এই তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টটি তৈরি করতে আপনার কত সময় লেগেছে। চমৎকার এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ, এবং লাইক।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



আপু,
শুভেচ্ছা রইলো। চমৎকার একটি মন্তব্য করে নিজের সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো। লেখাটি আপনি 'বুকমার্ক' করে রেখেছেন জেনে প্রীত হলাম। আমার প্রতি মন্তব্যগুলো আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুশি হয়েছি। আপা, যারা এত ব্যস্ততার মাঝে সময় বের করে আমার লেখাটি মনযোগ দিয়ে পড়ে নিজের সুচিন্তিত মতামতটি দিলেন, উনাদের মতামতের মূল্য আমার কাছে সীমাহীন। আমার দায়িত্ব হলো এসব গুণীজনের মতামতকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে নিজের ভাবনাটুকু শেয়ার করা। আমি চেষ্টা করি, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি উত্তর দেওয়ার।

আপনি ঠিকই বলেছেন, "সুস্থ ধারার যেকোনো সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার মানসিকতা দরকার, তা স্বদেশী বা বিদেশি যাই হোক না কেন। তবে এক্ষেত্রে ভন্ডামি পরিহার্য।"

আপনি আরো বলেছেন, "কিছু কিছু পরিবার আমি দেখেছি, ঢাকাতে বসেই যাদের সন্তানেরা বাংলায় কথা বলে না, ইংরেজিতে কথা বলে। স্পষ্টতই মা-বাবার উৎসাহেই তাদের এই কথা বলা! আবার এই মা বাবাই পয়লা বৈশাখে সন্তানদের একদিনের জন্য বাঙালি বানান।"

আপা (৩) নং কমেন্টের প্রতি মন্তব্যে ক্ষোভ থেকেই এ কথাগুলো বলেছি। আমার ছোট্ট এ জীবনে দেশে-বিদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে আমি বুঝেছি মাতৃভাষায় শিক্ষা অর্জন করার গুরুত্ব। পৃথিবীর কোন জাতি আজ পর্যন্ত মাতৃভাষা ভুলে বিদেশী ভাষাকে ভিত্তি করে উন্নতি করতে পারেনি। মাতৃভাষায় শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। এ বিষয়ে কয়েকটি গবেষণাধর্মী লেখা আমার আছে।

আমি নিজে খুব দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছি। ১ম-১০ম শ্রেণী পর্যন্ত কোনদিন প্রাইভেট পড়িনি। গ্রামের স্কুলে পড়েছি বলে প্রাইমারিতে "English Grammar" কি জিনিস তা জানতাম না। এই আমি এখন ইংরেজি বলতে, লেকচার দিতে, রিসার্চ করতে, অনুবাদ করতে কোন সমস্যা ফিল করি না। ইংরেজি একটি ভাষা; এ ভাষা শেখার জন্য সারা স্টুডেন্ট লাইফ "English Medium"-এ পড়তে হবে কেন?

আপা, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য 'জ্ঞান অর্জন' করা 'ভাষা শিক্ষা' নয়।

মূলত, শিক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের অজ্ঞতা ও উচ্ছাকাঙ্খাই দায়ী। এজন্য অনেক টাকা খরছ করে দামি স্কুলে, দামি টিচারের বাসায় ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করেন। বাসায় 'আংলিশ টকিং' করেন। ফলাফল স্বরূপ আমরা পাচ্ছি একটা ' মগজহীন' প্রজন্ম। FM radio মার্কা জোকার।

আপা, আমি এই লেখাগুলো অনেক যত্ন করে সময় নিয়ে লিখি। এজন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এখন "বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভবিষ্যৎ স্বরূপ" নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখছি। হয়তো আরো কয়েকদিন সময় লাগবে শেষ করতে। আশীর্বাদ করবেন আমার জন্য। আপনিও ভাল থাকুন সব সময়।

৩১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:১৭

সূর্যালোক । বলেছেন:

আমাদের অপসংস্কৃতি চর্চা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত । সবার সচেতনতা জরুরি । বাঙালি সংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে নিচের স্বকীয়তায় বেঁচে থাকুন ।তথ্যবহুল পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:১৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ প্রিয় "সূর্যলোক" ভাই/আপু, আমাদের একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ইতিহাস আছে; এজন্য আমরা গর্ব করতে পারি। ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি হলো "বাঙালি" সংস্কৃতি। এ জাতির উত্তরাধিকারী প্রজন্ম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো তা ধরে রাখা। এজন্য সচেতনতা জরুরী।

৩২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২২

সামিয়া বলেছেন: আপনি ছবিগুলো পোষ্টের সাথে এত সুন্দর করে attached করেন যে দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়, আর লেখার সাথে ও দারুন সামঞ্জস্যপূর্ণ। লেখাটি সময় করে পরে পড়ে নিবো। তাই আপাতত এই মুহূর্তে লেখা নিয়ে কোন মন্তব্য জানালাম না। শুভকামনা ভাইয়া।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ আপু, কমেন্ট করে নিজের উপস্থিতিতি জানিয়ে যাওয়ার জন্য। আসলে ছবিগুলো অনেক সময় নিয়ে নির্বাচন করি; যাতে বিষয়বস্তুর সাথে খাপ খায়, দেখতে সুন্দর লাগে। ছবিগুলো আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম। সময় করে লেখাটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামতটি জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

ভাল থাকুন, সব সময়।

৩৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: কিছুটা ইতিহাস, কিছুটা নৃতত্ত্ব, কিছুটা ধর্মতত্ত্ব এবং চমৎকার কিছু ছবির সমন্বয়ে একটি সুলিখিত এবং সুবিন্যস্ত পোস্ট।
পোস্টে ভাল লাগা + +

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:১৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



স্যার, আপনার একেকটি মন্তব্য আমার জন্যে কতটা প্রেরণা দেয় তা বলে বুঝাতে পারবো না। শুধু এটুকু বলবো আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য আমার ব্লগের অলঙ্কার স্বরূপ। একটি জাতির সংস্কৃতির সাথে তার ইতিহাস-ঐতিহ্য, জাতিসত্তা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, মানুষের অভ্যাস, পারস্পরিক সম্পর্ক, রূচি, সহনশীলতা ইত্যাদি অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জড়িত। আর এগুলোর সংমিশ্রণ হলো একটি জাতির সংস্কৃতি বা কালচার। এসব সংস্কৃতির একটি বড় অংশ দখল করে নেয় ধর্মীয় বিশ্বাস ও প্রথা। এগুলোও একটা সময় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠে বিশ্বাসীদের কাছে। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম। আপনার সু-স্বাস্থ্য কামনা করছি, স্যার।

শুভ রাত্রি।

৩৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেকগুলো মন্তব্য এবং প্রতিমন্তব্য এ পোস্টের অলংকার হয়ে বিরাজ করবে। কিছু ভাল লাগা মন্তব্যকারী পাঠকের নামঃ
ঋতো আহমেদ, অচেনা হৃদি, কথার ফুলঝুরি, আখেনাটেন, পদাতিক চৌধুরি, আরোগ্য, সোহানী, নজসু প্রমুখ। সেই সাথে আপনার অনেকগুলো প্রতিমন্তব্য খুব ভাল হয়েছে।
মনে রাখবেন ঘাড়ের উপর ইউটিউব আছে । কোনও লাভ হবেনা বাঁধা দিলে। বরং যেটা নিষেধ করবেন সেটা বিজ্ঞাপন পেয়ে আরও আর্থিক সুবিধা পাবে - পদাতিক চৌধুরি এর এ কথাটা ভাল লেগেছে।
আমি চেষ্টা করি, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি উত্তর দেওয়ার (৩০ নং প্রতিমন্তব্য) - এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবিনয়ে এটাও বলতে চাই যে আপনার অনেকগুলো প্রতিমন্তব্য, বিশেষ করে শেষের দিকে, অনাবশ্যক দীর্ঘ বলে মনে হয়েছে।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



স্যার, প্রতি মন্তব্যগুলো মনযোগ দিয়ে আবার কমেন্ট করার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো। আপনি ঠিকই বলেছেন, "ঋতো আহমেদ, অচেনা হৃদি, কথার ফুলঝুরি, আখেনাটেন, পদাতিক চৌধুরি, আরোগ্য, সোহানী, নজসু প্রমুখ খুব ভাল মন্তব্য করেছেন।" উনারা গুণী ব্লগার। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি কমেন্টগুলোর উপযুক্ত প্রতি উত্তর দিতে। জানি না কতটুকু পেরেছি। এসব কমেন্ট থেকে আমিও শিখেছি এবং প্রয়োজনে কিছুটা সংশোধন করেছি, বিষয়বস্তু নিয়ে আবার ভাবতে বাধ্য হয়েছি।

আমি বিশ্বাস করি, লেখার মানোন্নয়নে 'গঠনমূলক মন্তব্যের' কোন বিকল্প নেই। এজন্য আপনি সহ গুণী এসব ব্লগারদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনি ঠিকই বলেছেন, শেষের দিকে কিছু মন্তব্যে প্রয়োজনের চেয়ে বড় প্রতি মন্তব্য করেছি। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি খেয়াল রাখবো, স্যার। (ধন্যবাদ)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.