নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচিনপুরের অচিন ছেলে

আমার মতে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে মানুষের হাসি।তাই আমি সারাজীবন মানুষকে হাসি মুখে দেখতে চাই

কাজী অভন

আমার যা আছে তাই নিয়েই আমি সুখি ।উচ্চাকাঙ্খা কম,এবং মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করি।

কাজী অভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন তাজুল ইসলামের গল্প (মানবতার জয়ধ্বনি)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৭

গশ্প শুনবেন?একজন তাজুল ইসলামের গল্প?তাহলে বলি শোনেন।

তাজুল ইসলাম বয়স ৬০বছর।পেশায় একজন কৃষক। তিনি শাহরাস্তি পৌরসভার উপলতা গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী, ৪ ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার।প্রতিদিনের মতোই ভোরে নামাজ পড়ে ঘর থেকে কাজে বের হন তাজুল ইসলাম। বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া রেলপথে গিয়ে দেখেন কারা যেন লাইন উপড়ে রেখেছে। এদিকে রেলপথের পশ্চিম দিক থেকে ভেসে আসছে চলন্ত ট্রেনের আওয়াজ।

কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না।ট্রেন যতই কাছে আসছে ততই তার গলা শুকিয়ে আসছে।তিনি অসহায়ের মত তাকিয়ে আছেন।আরো কাছাকাছি আসলে তিনি হাত দিয়ে ইশারা করেন।অন্ধকারের মাঝেও চালক মাথা বের করে কিছু একটা বুঝতে পারেন।তিনি গতি কমিয়ে দেন।হটাত্‍ একটা বিকট শব্দে চারদিক কেঁপে উঠল।এরপর শোনা গেল মানুষের গগন বিদায়ী চিত্‍কার।ট্রেনের ইন্জিন সহ কয়েকটি বগি ছিটকে পাশের ক্ষেতে পরেছে।বহু মানুষ আহত হয়েছে।১৫ জন নিহত হয়েছে।আহতদের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।সরকারের কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হল।তাজুল ইসলাম প্রচন্ড পরিমানে অনুতপ্ত হলেন।তিনি ভাবলেন তার জন্যই এতবড় দূর্ঘটনা ঘটেছে।তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন আজই এই পৃথিবী..................

ঘটনাটা এরকম হতে পারত ।কিন্তু এরকম হয়নি।তাহলে শুনুন আসল ঘটনাঃপ্রতিদিনের মতোই ভোরে নামাজ পড়ে ঘর থেকে কাজে বের হন তাজুল ইসলাম। বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া রেলপথে গিয়ে দেখেন কারা যেন লাইন উপড়ে রেখেছে। এদিকে রেলপথের পশ্চিম দিক থেকে ভেসে আসছে চলন্ত ট্রেনের আওয়াজ।

কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। হঠাৎই বুদ্ধি এলো মাথায়। দৌঁড়ে বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর লাল রঙের পেটিকোট (মহিলাদের পরনের কাপড়) একটি লাঠিতে ঝুলিয়ে বের হয়ে আসেন। রেলপথ ধরে দৌড়ে ছুটে যান পশ্চিম দিকে। কারণ, সেদিক থেকেই ছুটে আসছে যাত্রীবোঝাই ট্রেন।

ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে নাড়তে থাকেন লাঠিতে বাঁধা পেটিকোট। লাল নিশান ও নিশানধারীর অভিব্যক্তি দেখে জরুরি ভিত্তিতে ট্রেন থামান চালক। বেঁচে যান চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের প্রায় ৫ শতাধিক যাত্রী।

একই সাথে অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি থেকে রক্ষা পায় সরকার ও জনগণ।

কোনো নাটক বা গল্প-কল্পনা নয়, ১৮দলের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের (পরবর্তীতে আরও ১২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়) ১৫তম ঘণ্টার একটি ঘটনা এটি।

বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উয়ারুক ও মেহের স্টেশন এলাকায় রেললাইন উপড়ে ফেলে অবরোধকারীরা। এ খবর জানা ছিলো না রেল কর্তৃপক্ষের। আর তাই ঠিকঠাক সময় অনুযায়ী চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায় মেঘনা এক্সপ্রেস।

শুধুমাত্র কৃষক তাজুল ইসলামের সর্তকতায় রক্ষা পেল ট্রেনটিতে থাকা প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রীর জীবন।

এত মানুষের জীবন আর সরকারের এত ক্ষতি বাঁচিয়ে দিলেন, বিনিময়ে কী চান? জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার পর স্টেশন মাস্টার আমাকে পঞ্চাশ টাকা দিতে চেয়েছেন। আমি নেইনি। কারও কাছেই কিছু চাই না। সবাই দোয়া করলই আমি খুশি হবো।তাজুল ইসলামরা টাকা পয়সা চান না।তারা মানুষের দোয়া চান।টাকা দিয়ে কৃতজ্ঞতাবোধ কেনা যায় না।আজ তিনি প্রাথমিক বুদ্ধি দিয়ে শতাধিক প্রান বাঁচালেন।তিনি কোন রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবেন না।কেউ তার খোজও নেবে না।ক্রন্ধনরত শতাধিক যাত্রীর দোয়া পাবেন।দোয়ার বরকতেই তিনি বেঁচে থাকবেন।তাজুল ইসলাম আপনাকে স্যালুট।আপনারা আছেন বলেই বাংলাদেশের বাংলাদেশটা এত সুন্দর।ঘৃনা জানাই যারা হরতাল ,অবরোধের নামে নৈরাজ্য চালায় ,মানুষ খুন করে ,সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৫

সুমন কর বলেছেন: এই রকম একটি ঘটনা, ছবি বা নাটকে দেখেছিলাম। তবে বাস্তবে মিল বা অনেক মানুষের জীবন বাঁচার জন্য ঐ কৃষককে স্যালুট। ভালো পোস্ট।

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৫

কাজী অভন বলেছেন: গতকাল তাকে রেল মন্ত্রনালয় ১ লক্ষ টাকা পুরষ্কৃত করেছে তাছাড়া তার ছেলেকে রেলে চাকরি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.