নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মফস্বলের ব্লগার ......।

থিওরি

আমারর ব্লগবাড়ীতে আপনার সুস্বাগতম । ইনটারনেট বিপ্লবের যুগে কোন তথ্য যদি সার্চ দিয়ে না পাওয়া যায়, সত্যিই বিরক্তিকর! এই বিরক্তি কিছুটা দূর করার জন্যই আমার ব্লগি ..।! প্রয়োজনীয় তথ্যটি পেলে ভাল লাগবে নিজের, স্বার্থক হবে ব্লগিং! আসবেন আবার, বারবার! আমার সাইট http://www.kazisour.blogspot.com/

থিওরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমাদের জন্য ভালবাসা

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১০

এক।
অনেকদিন আগের কথা। তখন আমি সবে ক্লাস ফাইভে পড়ি। আব্বুর চাকরির সুবাদে নতুন শহরে, ভাড়া নিয়েছি নবগঠিত এক আবাসিক এলাকায়। বাড়ীঘর এখনো পুরোপুরি হয় নাই! আবাসিক এলাকার পাশেই মুচিপাড়া। শহরের বসবাসের অযোগ্য স্থানগুলোর অন্যতম। একপাশে নির্মানাধীন সুরম্য অট্টালিকা, আর অন্যপাশে অবহেলিত পলিথিনের খাপড়া। বিকালে ফুটবল খেলি আবাসিকের অন্যান্য ছেলেমেয়েদের সাথে। হঠাৎ চোখে পড়ল কালো পলিথিনে ঘেরা নতুন একটি খুপড়ির দিকে। হয়ত আজই তৈরি করা হয়েছে। এখনো দুজন কাজ করছে সন্ধ্যা নামার আগে যতোটা পারে গুছিয়ে নেবার জন্য! সাথে দুরন্ত ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে! বয়স আর কতই বা হবে? চার কি তিন?
সম্ভবত আম্মুকে বিষযটি বললাম। পরদিন স্কুলথেকে এসে দেখি পরিবারটি কলাপসিকল গেটের এপাসে বসে আছে । সাথে সেই ফুটফুটে মেয়েটি!
আম্মু তাদেরকে কিছু খাবার দিলেন, সাথে মুরগীর মাংস ! মাংস দেখে বাচ্চাটির মুখে হাসি ফুটে উঠল! বলল, বাবা গোস! কি ব্যাকুলতা ছিল তার কন্ঠে, চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। সত্যি বলছি, কাউকে কোনদিন এতো তৃপ্তি করে খেতে দেখিনি। এখনো যদি কাউকে কখনো খাবার নষ্ট করতে দেখি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে ঐ বাচ্চার ফুটফুটে মুখটি, যেন আমার কানে কানে বলছে "ভাইয়া গোস "

দুই।
রাজশাহী থেকে কুষ্টিয়া আসছি! শহরে প্রবেশের পথে সারি সারি ছাউনি ঘর। কাজে ব্যাস্ত মা বাবারা। আর বিভিন্ন বয়সী বাচ্চারা নোংরার ভিতর খালিগায়ে প্রচন্ড শীতে কুয়াশা পূর্ণ বিকালে খেলা করছে। আমার গায়ে জ্যাকেট, গলায় মাফলার আর ওদের গায়ে সুতোটিও নেই! কতই বা বয়স ওদের?? আমি যদি মধ্যবিত্ত একটা পরিবারে না জন্মে ঐখানে জন্মাতাম? চোখ সরিয়ে নিলাম। কিন্তু আমি চোখ সরালেই তো দৃশ্যপট পরিবর্তন হবে নাা। সেটা করতে হবে আপনাকে বা আমাকেই! কি এমন পরিবার থেকে উঠে এসেছি আমরা? এখন অনেক বড়ো লাটসাহেব হয়ে গেছি! ওসব নোংরা মানুষগুলোকে অবহেলা করছি, ঘূর্ণা করছি। চোখ বন্ধ করে ভাবছি, আমার যদি কোন সন্তান হয় তাকে অন্ততপক্ষে মাসে একদিন এদের সাথে খেলতে দিব, এদের সাথে একসাথে বসে খাব একদিন। পার্থক্য তো নেই! ওর আর আমার রক্ত তো একই! ওদের আর আমাদের জন্ম নোংরাতেই! আমরা কিছু টাকা উপার্জন করে ক্রেতাদুরস্ত পোশাক পরে বড়োবাবু হয়েছি, আর তাদের ফেলে রেখেছি ডাস্টবিনে।

তিন।
ঈদের কিিছুদিন আগে। কোন কারণে মনটা ভালো নেই। টিভি অন কললাম। চমকে উঠলাম মাছরাঙা টিভির একটা রিপোর্ট দেখে! এই কি মানবতা? সামান্য টাকার জন্য ফুটফুটে বাচ্চাদের ধরে লুলা, কানা কিংবা খোড়া করে দিচ্ছি! বিকিয়ে দিচ্ছি মানবতা, মাদক ধরিয়ে দিচ্ছি বাচ্চাদের হাতে। যে হাতে রংপেন্সিল দিয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি আকার কথা সে হাতে আজ তারা করছে চুরি ,বেগারিং আর টানছে ড্যান্ডি ইয়াবা, গাজা আর সস্তা সিগারেট। আমরা ভদ্রসমাজ তাদের নাম দিয়েছি পথশিশু। তাদের নিয়ে পালন করছি দিবস। করছি র্যালী, সেমিনার, নাটক, আলোচনা সভা! দিনশেষে পথশিশুরা পথেই ঘুমিয়ে যাচ্ছে। তাদের জন্য নেই কোন বিছানা, নেই কোন বালিশ, মমতাময়ী মা শোনাচ্ছে না কোন ঘুমপাড়ানি গান।

আমরা আস্তে আস্তে সবকিছুর সাথে অভ্যস্ত হয়ে যায়। মেনে নেওয়াটাই আমাদের স্বভাব হয়ে যাচ্ছে। আমরা মেনেই নিচ্ছি এরা পথেই আছে, পথেই থাক। ওদের নিয়ে কি আপনার আমার কিছুই করার নেই? সব কি কিছু এনজিও আর দাতব্য সংস্থার কাজ? আর কতকাল মানবতা লুুটাবে পথের ধুলায়??
দিনশেষে তোমাদের জন্য কিছুই দিতে পারলাম না। তবে রইল আন্তরিক ভালবাসা। জানি এ ভালবাসা তোমাদের কাছে পৌছবে না, তবু ....
ভালো থেকে পথে ঘুমানো শিশুরা!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:২১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমরা আস্তে আস্তে সবকিছুর সাথে অভ্যস্ত হয়ে যায়। মেনে নেওয়াটাই আমাদের স্বভাব হয়ে যাচ্ছে। আমরা মেনেই নিচ্ছি এরা পথেই আছে, পথেই থাক। ওদের নিয়ে কি আপনার আমার কিছুই করার নেই? সব কি কিছু এনজিও আর দাতব্য সংস্থার কাজ? আর কতকাল মানবতা লুুটাবে পথের ধুলায়??

একদম সহমত। আমি নিজেই আগে যতটা দুঃখ অনুভব করতাম এখন সেটা করতে পারিনা।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১০

থিওরি বলেছেন: হয়তো ওদের জন্য আমার যখন কিছু করার থাকবে তখন হয়তো আর অনূভুতি থাকবে না।
ধন্যবাদ।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম।
যখন কোন ঠুনকো কারণে মন খারাপ হবে, আপনার পোস্টটা পড়ব।
হায়, দুঃখ বিলাসিতা !!!!

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১০

থিওরি বলেছেন: ধন্যবাদ ,প্রিয়তে নেবার জন্য।

৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৮

সুমন কর বলেছেন: দৈনন্দিন জীবনের হতাশা আপনার লেখায় ফুঁটে উঠেছে। ভালো বলেছেন।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৮

থিওরি বলেছেন: ধন্যবা
হতাশ হহলেও ততো ককিছু ককরতে পপারছি না।

৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

নিয়েল হিমু বলেছেন: আমি একজনকে চিনি এইসব দেখে লিখেন না কিছু তিনি, কাজ করেন সাধ্য মত । ২০১৪র রোজার ঈদে তিনি তার নিজের সপিং করার টাকা দিয়ে একটা রিক্সাওলার পরিবারের ঈদের আনন্দ কিনে দিয়েছিল । কোথাও রক্ত লাগবে এমন শুনলে তিনি পাগল হয়ে যান । বাচ্চা কাচ্চা খুব ভাল বাসেন আবার বাচ্চারাও তাকে ভাল বাসে । আমিও ভালবাসি তাকে । আপনার দু নম্বর ঘটনাটা কুষ্টিয়ার তিনিও কুষ্টিয়ার মানুষ । এরকম কোটি খানেক মানুষ হলে আর পিছিয়ে থাকতে হত না আমাদের ।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৬

থিওরি বলেছেন: ২০১৪র রোজার ঈদে তিনি তার নিজের সপিং করার টাকা দিয়ে একটা রিক্সাওলার পরিবারের ঈদের আনন্দ কিনে দিয়েছিল । কোথাও রক্ত লাগবে এমন শুনলে তিনি পাগল হয়ে যান । বাচ্চা কাচ্চা খুব ভাল বাসেন আবার বাচ্চারাও তাকে ভাল বাসে ।
এরকম কোটি খানেক মানুষ হলে আর পিছিয়ে থাকতে হত না আমাদের ।
সহমত।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.