নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য কথা বলা এবং সুন্দর করে লেখা অভ্যাসের উপর নির্ভর করে
প্রাগৈতিহাসিক যুগের পর মানুষ যখন সমাজবদ্ধ হতে শুরু করল তখন থেকেই গুপ্তচরবৃত্তির চর্চা ছিল। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সেই গুপ্তচরবৃত্তির কাজটাই করে।
তবে পাল্টেছে কাজের ধরন, পরিধি ও চর্চা। গোয়েন্দা সংস্থা হচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠান যার কাজই হলো নিজ দেশের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা ও সেগুলো নিরাপদে রাখা। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও কাজ করতে হয় তাদের। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। তবে গোপনীয়তা, দুর্ধর্ষ গোয়েন্দাবৃত্তির চর্চায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়িয়ে গেছে সব গোয়েন্দা সংস্থাকে। মোসাদ এরকমই একটি সংস্থা। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সংস্থা মানা হয় ইসরায়েলের এই প্রতিষ্ঠানটিকে। প্রচণ্ড গোপনীয়তার কারণে মোসাদ সম্পর্কে বেশির ভাগ তথ্যই অজানা। এরপরও বিশ্ব মিডিয়ায় নানা সময় এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় উঠে এসেছে। এসব নিয়েই আলোচনার চেষ্টা করেছি—
পটভূমি ও শুরুর গল্পঃ বিশ্ব ইতিহাসের ভিলেন হিসেবে চিহ্নিত হলেও ইতিহাসের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছেন একনায়ক অ্যাডলফ হিটলার। এমনকি ইসরায়েলি রাষ্ট্র এবং মোসাদের জন্মের পটভূমিতেও রয়েছে হিটলারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা। হিটলারের নির্দেশে নাৎসি বাহিনী ইহুদি নিধনের উৎসব শুরু করে। তাদের হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যু হয়। ফলে সারা বিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায় নিজেদের অস্তিত্বের সংকট অনুভব করে। নিজেদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তারা একটি ইহুদি রাষ্ট্র তৈরির ভাবনায় শামিল হয়। সেই ধারণা থেকে তারা ইহুদি, খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের কাছে ‘পবিত্র ভূমি’ বলে পরিচিত বৃহত্তর ফিলিস্তিনকে তারা তাদের আবাসভূমি হিসেবে বেছে নেয়। ফিলিস্তিন দখল নিয়ে বিতর্ক ওঠে। কিন্তু অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে ভুগতে থাকা ইসরায়েলিরা কিছুতেই ছাড় দিতে রাজি নয়। বলা হয়ে থাকে হিটলারের রূঢ়তা ইসরায়েলিদের জাতি হিসেবে হিংস্র করে তোলে। অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে তাদের বিতর্কিত সব সিদ্ধান্তকেই ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম পরিণতি মানা হয়। নিজেরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর করতে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে শুরু থেকেই প্রস্তুত ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল।
১৯৪৮ সালে জাহাজে করে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে এসে উপস্থিত হয়। একই বছর ১৪ মে আরব লিগের প্রত্যাখ্যানের মুখে দখল ভূমিতে ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ১৯ মাসের মাথায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ন ‘মোসাদ’ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগেই যেসব ইহুদি নিষিদ্ধ সংগঠন সংগ্রাম চালাচ্ছিল, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে যে কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তাকে ‘মোসাদ’এর পূর্বসূরি বলা চলে।
মূলত ১৯৪৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর Central Institute of Co-ordination নামে মোসাদের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৫১ সালের মার্চ মাসে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মোসাদকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে রাখা হয়।
ইসরায়েলের প্রথম ডিফেন্স লাইনঃ মোসাদ প্রতিষ্ঠাতা তত্কালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ন মনে করতেন গোয়েন্দাবৃত্তি ইসরায়েলের প্রথম ডিফেন্স লাইন। টার্গেট দেশ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, সন্ত্রাস দমন ও অপারেশনের পর এগুলো গোপন রাখা হচ্ছে মোসাদের প্রধান কাজ। এটি ইসরায়েলের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। এর কাজের রিপোর্ট ও গোয়েন্দা তথ্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হয়। এর নীতিমালা ও কার্যক্রম অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ, যুক্তরাজ্যের এমআই সিক্স ও কানাডার সিএসআইএস’র অনুরূপ। মোসাদের হেড কোয়ার্টার দেশটির রাজধানীতে। এর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঠিক সংখ্যা কেউ না জানলেও এর সংখ্যা কম করে হলেও ১ হাজার ২০০ হবে। অবশ্য ১৯৮০ সালের শেষদিকে এ সংখ্যা ২ হাজারের বেশি ছিল। মোসাদ সামরিক সার্ভিস নয়। যদিও এর অধিকাংশ কর্মকর্তাই ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের।
অপহরণ হত্যায় সবার শীর্ষেঃ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে অপহরণ, হত্যা, গুমসহ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে মোসাদকে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ মানা হয়। মূলত ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রশ্নে বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও কর্মকাণ্ড মোসাদকে গোয়েন্দাবৃত্তিতে সর্বোচ্চ মান দিয়েছে। দুর্ধর্ষ এই গোয়েন্দা সংস্থার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন প্রতিহত করা ও আরব বিশ্বসহ মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। ইসরায়েল প্রসঙ্গে বিতর্কিত বা রাজনৈতিক প্রশ্ন নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী বাদানুবাদ তৈরি হলে এ সংস্থা তার কর্মীদের ওই ব্যক্তি বা সংশ্লিষ্ট কাউকে অপহরণ বা হত্যা পর্যন্ত করত। মোসাদ বরাবরই যে কোনো অপারেশন যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ’র ছদ্মাবরণে করত। মোসাদের এ ধরনের সংশ্লিষ্টতার জ্বলন্ত কোনো প্রমাণ না থাকলেও বিশ্বের নানা প্রান্তে জঘন্য সব গুপ্তহত্যার সঙ্গে প্রায়শ মোসাদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেছে। আবার শিহরণ জাগানিয়া অনেক ঐতিহাসিক ব্যাপারেও মোসাদের প্রভাবশালী সংশ্লিষ্টতা যে কারও মনেই ভয়ের সঞ্চার করবে।
অপার রহস্যের প্রতিশব্দঃ হিব্রু ভাষায় ‘মোসাদ’ শব্দের অর্থ ‘ইনস্টিটিউট’ বা প্রতিষ্ঠান। আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘দ্য ইনস্টিটিউট ফর ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশন্স’ (Institute for Intelligence and Special Operations)। মোসাদকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। ইসরায়েলের এই গোয়েন্দা সংস্থাকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর গল্প চালু আছে। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যুর পর বিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নের প্রকল্পে শামিল হয়েছিল। ইহুদি, খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের কাছে ‘পবিত্র ভূমি’ বলে পরিচিত বৃহত্তর প্যালেস্টাইনকেই তারা বেছে নিয়েছিল নতুন এই বাসভূমির জন্য। নাৎসিদের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতো। এই জায়নিস্ট আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে শুরু থেকেই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে আসছে ইসরায়েল। ফলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর করতে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে শুরু থেকেই প্রস্তুত ইহুদি এই রাষ্ট্র। আর এ কাজে ভয়াবহভাবে ব্যবহূত হয় ইহুদিদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। কিন্তু নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা করতে ইসরায়েল যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে এসেছে, তাকে ঘিরে বিতর্কের কোনো শেষ নেই।
ভয়ঙ্কর গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কর্মী সংখ্যা কত তার পরিসংখ্যান কেউ জানে না। তবে ধারণা করা হয় এর কর্মী সংখ্যা কম করে হলেও ১২০০ হবে। এর সদর দফতর ইসরায়েলের তেলআবিবে। সংস্থাটির জবাবদিহিতা দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। মোসাদের প্রধান বিচরণ এলাকা বলতে কিছু নেই। বলা হয়ে থাকে, এদের নেটওয়ার্ক সমগ্র বিশ্বেই বিস্তৃত। মোসাদের দায়িত্ব এতটাই বিশাল যে, সম্পূর্ণ বর্ণনা কঠিন। সাধারণভাবে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বৈদেশিক নীতি-নির্ধারণে সহায়তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা, ড্রোন আক্রমণ, গুপ্ত কারাগার পরিচালনা, বিশ্বের বড় বড় করপোরেশনের নীতি-নির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ। মোসাদের এ কাজের বাজেটও কারও জানা নেই। মোসাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এমএসএস, এফএসবি, এমআইএসআইআরআই, হিজবুল্লাহ ও হামাস। মোসাদের মোটো হচ্ছে : Where there is no guidance, a nation falls, but in an abundance of counselors there is safety.
ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ এবং অন্যান্য ভয়ঙ্কর অপারেশনঃ ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কুখ্যাত অভিযান রয়েছে যা লিখে শেষ করা যাবে না। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধাচরণ ও অভ্যন্তরীণ গোলমাল সৃষ্টিতে ইসরায়েলকে দায়ী করা হয় সবচেয়ে বেশি। আর বছরের পর বছর ধরে চলা ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং যুদ্ধের বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি অভিযান।
আইখম্যান হান্ট ১৯৬০ঃ ১৯৬০ সালের কথা। আমেরিকার পেন্সিলভেনিয়ায় অবস্থিত নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট বা নিউমেকে হঠাৎ করে পারমাণবিক অস্ত্র ও জিনিসপত্র চুরির ঘটনা ঘটে। অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে চেষ্টা করা হয় কোথায় চুরি যাওয়া বা হারানো জিনিসগুলো রয়েছে সেটা খুঁজে বের করার। কিন্তু লাভ হয় না কিছুই। তখন সবচেয়ে বেশি কর্মী নেওয়ার মতো প্রতিষ্ঠান ছিল এই নিউমেক। যেটি এসব নানা কারণে হঠাৎ করেই সবার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। গুজব ছড়ায় নিউমেক নিজেদের পারমাণবিক বিক্রিয়ার ফলে রাস্তায় নানারকম ক্ষতিকারক রেডিয়েশন ছড়িয়ে দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ইউরেনিয়াম আর অস্ত্রগুলো পুঁতে রাখা হয়েছে চারপাশের নানা স্থানে। মাটির নিচে। যে কোনো সময়ই বিস্ফোরিত হতে পারে সেগুলো। ভয়ে স্তব্ধ হয়ে যায় জনসাধারণ। কিন্তু নিউমেকের ভিতরের সবাই এটা নিশ্চিত জানত, এসব গুজব কেবলই গুজব। এবং এ গুজবগুলো যে ছড়িয়েছে আর কেউ নয়, ইসরায়েলি ইনটেলিজেন্স এজেন্সি— মোসাদ।
দক্ষিণ আমেরিকায় মোসাদঃ
অনেক দিন থেকে নাজি ওয়ারে অভিযুক্ত এডলফ ইচম্যানকে খুঁজছিল মোসাদ। ১৯৬০ সালে আর্জেন্টিনায় তাকে খোঁজ পাওয়া যায়। ওই বছরের ১১ মে মোসাদের এজেন্টদের একটি টিম তাকে গোপনে আটক করে ইসরায়েলে নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে উত্তর ইউরোপে ক্যাম্প গঠন ও পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে ইহুদিদের হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ইসরায়েলের আদালতে একটি সাজানো বিচারের মাধ্যমে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। ১৯৬৫ সালে নাজি ওয়ারে অভিযুক্ত লাটভিয়ার বৈমানিক হার্বার্টস কুকার্সকে উরুগুয়ে থেকে ফ্রান্স হয়ে ব্রাজিল যাওয়ার পথে মোসাদের এজেন্টরা হত্যা করে। ১৯৭৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও কূটনীতিক এবং চিলির সাবেক মন্ত্রী অরল্যান্ডো লেটেলারকে ওয়াশিংটন ডিসিতে গাড়িবোমায় হত্যা করে চিলির ডিআইএনএর এজেন্টরা। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, এটি ছিল মোসাদের একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
অপারেশন স্প্রিং অব ইয়ুথঃ ১৯৭৩ সালের ৯ এপ্রিল রাতে ও ১০ এপ্রিল ভোরে লেবাননে বিমান হামলা চালায়। একই সময় ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের স্পেশাল ফোর্স ইউনিট বৈরুত, সিডন ও লেবাননে পিএলওর টার্গেটকৃত নেতাদের খুঁজছিল ও সম্ভাব্য স্থানে হামলা করছিল। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন স্প্রিং অব ইয়ুথ।
আফ্রিকা অঞ্চলেঃ ১৯৮৪ সালে মোসাদ ও সিআইএ ইথিওপিয়ার ইহুদিদের সহায়তার জন্য যে অপারেশন পরিচালনা করে তার নাম দেওয়া হয় অপারেশন মোসেস। ১৯৭৬ সালে উগান্ডায় এয়ারফ্রান্স ফাইট-১৩৯ বিমান ছিনতাই করেছিল মোসাদের এজেন্টরা। বন্দী মুক্তির জন্য তারা এই বিমান ছিনতাই করেছিল। এটি অপারেশন অ্যান্টাবি নামে পরিচিত।
৯/১১-এর দায়ঃ নাইন/ইলেভেনের দায় কার— এ বিতর্ক এখনো শেষ হয়নি। যদিও সিআইএ’র এক সময়ের বিশ্বস্ত ওসামা বিন লাদেন ও তালেবানকে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর এর শাস্তি হিসেবে দখল করে নেওয়া হয়েছে ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ দেশ আফগানিস্তানকে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ২০০১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জেরুজালেম পোস্টের ইন্টারনেট সংস্করণে বলা হয়, হামলাকালীন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে ৪ হাজার ইহুদি কাজ করত। কিন্তু বিমান হামলায় মাত্র একজন নিহত হয়েছে। পরে আরও দুজনের নিহতের কথা বলা হয়। ওই দিন এত বিপুলসংখ্যক ইহুদি কীভাবে নিরাপদে ছিল তার জবাব আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি বা দেয়নি। অথচ যে সময় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা হয়েছে প্রতিদিন ওই সময়ে অনেক ইহুদি অফিসে উপস্থিত থাকত। ব্যতিক্রম শুধু হামলার দিন।
মিসর ও সিরিয়ায় প্রভাবঃ
টার্গেট দেশ মিসরে ওলফগ্যাং লজের নেতৃত্বে গোয়েন্দা মিশন পাঠায় মোসাদ ১৯৫৭ সালে। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি মিসরে জামাল আবদুন নাসেরের সামরিক বাহিনী এবং তার যুদ্ধোপকরণ ও কৌশল জানতে গোয়েন্দা তত্পরতায় নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৪ সালে লজের চেয়ে বড় মিশন নিয়ে মিসরে গোয়েন্দা তত্পরতা শুরু করেন মোসাদের আর এক স্পাই ইলি কৌহেন। তার সহযোগিতায় ছিল হাই প্রোফাইলের বেশ কয়েকজন স্পাই। ইলি কৌহেন ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে সিরিয়ায় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে তথ্য পাঠানোর সময় হাতেনাতে গ্রেফতার হন। মিসর ও সিরিয়ায় মোসাদ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রেডিও লিঙ্ক স্থাপন করেছিল। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ইসরায়েলের বিপক্ষে ছিল মিসর, জর্দান ও সিরিয়া। এই যুদ্ধটি সিক্স-ডে ওয়ার নামে পরিচিত। ১৯৬৯ সালের ১৯ জুলাই মিসরের ছোট দ্বীপ গ্রিন আয়ারল্যান্ডে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স আকস্মিক হামলা চালায়। পরবর্তী সময়ে অনেক ইসরায়েলি ইহুদি ও পর্যটক সিনাই থেকে মিসর আসে অবকাশ যাপনের জন্য। মোসাদ নিয়মিত এসব পর্যটকের নিরাপত্তা দেখাশোনার জন্য গোয়েন্দা পাঠাত। ধারণা করা হয় এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে লেবানন যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
ইরানঃ
ইসরায়েল ইরানকে বড় ধরনের হুমকি মনে করে। মোসাদ মনে করে, ২০০৯ সালের মধ্যে ইরান পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হবে। যদিও অনেকের ধারণা এ সালটি হবে ২০১০। সম্প্রতি মোসাদের ডিরেক্টর মির দাগান তার এক বক্তৃতায় এ কথা স্বীকারও করেছেন।
ফলে মোসাদের তত্পরতা ইরানে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৭ সালের ১৫ জানুয়ারি ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী ড. আরদেশির হোসেনপুরকে হত্যা করে মোসাদ। প্রথমদিকে তিনি গ্যাস বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। ওয়াশিংটনের প্রাইভেট গোয়েন্দা সংস্থা স্ট্রাটফোর হোসেনপুরকে মোসাদের টার্গেট ছিল বলে উল্লেখ করে। অবশ্য মোসাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
ইরাকঃ
ইরাকে বরাবরই ইসরায়েলের গোয়েন্দা তত্পরতার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ইরাকে সিআইএ মোসাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। ইরাকে অনেক বড় অপারেশন চালায় মোসাদ। এর একটি হচ্ছে ১৯৬৬ সালে। মিগ-২১ জঙ্গি বিমানের পাইলট ছিলেন খ্রিস্টান বংশোদ্ভূত মুনির রিদফা। ১৯৬৬ সালে তাকে বিমানসহ কৌশলে ইরাক থেকে ইসরায়েলে নিয়ে আসে মোসাদ। তার কাছ থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ইরাকের অসরিক নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের স্পর্শকাতর কিছু বিষয়ে গোয়েন্দা তত্পরতা চালায়। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয় অপারেশন স্ফিঙ্কস। ইরাক এই গবেষণা সম্পন্ন করতে পারলে পারমাণবিক গবেষণায় অগ্রবর্তী থাকত। এ জন্য ১৯৮১ সালের ১৭ জুন এফ-১৬ এ যুদ্ধবিমানে বিপুল গোলাবারুদসহ একটি ইউনিটকে পাঠানো হয় ইরাকের এই প্রকল্প ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য।
কীভাবে কাজ করেঃ বলা হয়ে থাকে ইসরায়েল রাষ্ট্রই টিকে আছে মোসাদের জন্য। বিশ্ব রাজনীতি এবং বিশ্ব কূটনীতিতে মোসাদের এমনই দাপুটে প্রভাব যে, এর কারণে বিশ্বের অনেক বড় ঘটনাই ঘটে যাচ্ছে হরহামেশা। যতদিন মোসাদ তার এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে ততদিন পর্যন্ত ইসরায়েল রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি করা মোটামুটি অসম্ভব। মোসাদের এই দুর্ধর্ষ ইমেজের পেছনে রয়েছে একটি দুর্দান্ত পরিচালনা পদ্ধতি। যদিও কঠোর গোপনীয়তার কারণে বিস্তারিত কোনো ধারণাই কারও কাছে নেই। এরপরও কিছু কিছু ধারণা রয়েছে যেগুলোও চমকে ওঠার মতো। স্বাভাবিকভাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে অতি ক্ষমতাসম্পন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালিত মোসাদের মোট ৮টি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বিভাগের কিছু তথ্য জানা গেছে।
এই বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে কালেকশন ডিপার্টমেন্ট। বহির্বিশ্বে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য ছদ্মবেশে কাজ করে এই বিভাগের এজেন্টরা। তাদের কাজ হচ্ছে তথ্য, ঘটনা গতিপ্রবাহ প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করা। গুপ্তচরবৃত্তির সময় এর কর্মীরা বিভিন্ন রূপ নেয়। একই কাজে বহুরূপী আচরণ প্রায়ই লক্ষণীয়। এ বিভাগের কাজের প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে কূটনৈতিক ও বেসরকারি কর্মকর্তা। মোসাদের মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দাদের কাটসাস বলে। সিআইএ এ পর্যায়ের গোয়েন্দাদের কেস অফিসার বলে। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ১৩ থেকে ১৪টি অপারেশন এ বিভাগ একসঙ্গে করতে পারে। এই বিভাগের অধীনে অনেক ডেস্ক আছে। সেখানে একজন করে ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় স্টেশনগুলোর সঙ্গে এই বিভাগ যোগাযোগ রক্ষা করে। রাজনৈতিক যোগাযোগ বিভাগের কর্মীরা দেশের রাজনৈতিক নেতা, অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও যেসব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক যোগাযোগ নেই সেসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। প্রয়োজনে অর্থ ও নারীসহ নানা সুবিধা দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। এ ছাড়া অন্য দেশের কূটনৈতিক ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও এই বিভাগের কর্মীরা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখে। বিশেষ উদ্দেশ্যে বিভাগকে মোসাদ মেটসাদা বলে। গুপ্তহত্যা, আধা-সামরিক অপারেশন, নাশকতামূলক কাজ, রাজনৈতিক কলহ তৈরি, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধাবস্থা তৈরি বা প্রোপাগান্ডা চালানো এই বিভাগের কাজ। মোসাদ গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডের প্রতিদিনের তথ্য এবং সাপ্তাহিক ও মাসিক পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট তৈরি করে। গোয়েন্দা তত্পরতা চালানোর সুবিধার্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ১৫টি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
পরের বিভাগটি পলিটিক্যাল অ্যাকশন ডিপার্টমেন্ট। এই গ্রুপের কাজ প্রতিটি বন্ধুভাবাপন্ন দেশের গোয়েন্দা ও স্পাই সংস্থার সঙ্গে সংযোগ রাখা।
আরেকটি বিভাগ হচ্ছে স্পেশাল অপারেশন ডিপার্টমেন্ট। এই গ্রুপকে গুপ্তহত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে সিক্রেট কিলিংয়ে এর জুড়ি মেলা ভার।
পরের বিভাগটি ল্যাপ ডিপার্টমেন্ট। এটি প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। যাবতীয় যুদ্ধের পরিকল্পনাও এখান থেকেই করা হয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হচ্ছে রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট। এই গ্রুপের গবেষকরা বিভিন্ন প্রযুক্তিগত জিনিস উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা করে।
গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, ধারণা ও তত্ত্ব প্রচার, গবেষণা কাজের জন্য ইসরায়েলি ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি গঠন করে। দেশটির ভিতরে ও বাইরে কাজ করে এমন সব গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে এই কমিউনিটি গঠন করা হয়। এর প্রধান সদস্য হচ্ছে আমান, মোসাদ ও শাবাক। মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স, এয়ার ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট, নেভাল ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট, ইন্টেলিজেন্স কর্পস, চারটি আঞ্চলিক গেয়েন্দা সংস্থা আমান’র অন্তর্ভুক্ত। মোসাদের কার্যক্রম হচ্ছে দেশের বাইরে। শাবাক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ও দখলকৃত ভূখণ্ডে গোয়েন্দা তত্পরতা চালানোর জন্য। এ ছাড়াও দেশটির পুলিশ বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ এই কমিউনিটির অন্তর্ভুক্ত।
তবে এগুলো কেবল প্রকাশ্যে আসা ধারণা। এর বাইরে মোসাদ কীভাবে কাজ করে তার সঠিক কোনো তথ্য-প্রমাণ কারও কাছেই নেই।
অসংখ্য টার্গেট চারদিকেঃ অন্যান্য বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় মোসাদের দায়িত্ব বা কাজের পরিধির অনেক পার্থক্য রয়েছে। সংস্থাটির স্বঘোষিত উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সীমানার বাইরে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা, শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো যাতে বিশেষ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংগ্রহ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে দেশে-বিদেশে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলার ষড়যন্ত্র আগাম প্রতিরোধ করা। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছে আরও কিছু উদ্দেশ্য। যেসব দেশে ইসরায়েলের অভিবাসন সংস্থা আইনত সক্রিয় হতে পারে না, সেসব দেশ থেকে ইহুদিদের ইসরায়েলে নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করে মোসাদ। মনে রাখতে হবে, বিশ্বের যে কোনো ইহুদি ব্যক্তির জন্য ইসরায়েলের দ্বার খোলা রয়েছে, যাতে তারা সেখানেই পাকাপাকি বসবাস করতে পারে। ইসরায়েলের সীমানার বাইরে বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা ও কার্যকর করার বিশেষ দায়িত্ব্বও পালন করে মোসাদ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড বা অপহরণের ঘটনায় মোসাদের এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় প্রায়ই। রাষ্ট্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত এসব এজেন্ট যে উচ্চমাত্রার পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে থাকে, তা অনেকেরই আতঙ্ক, সমীহ ও কিছু ক্ষেত্রে ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি অনেক দেশের গোয়েন্দা সংস্থা পর্যন্ত বিভিন্নভাবে মোসাদকে অনুকরণ করারও চেষ্টা করে থাকে।
ব্যর্থতার নজিরও আছেঃ মোসাদের অনেক অনেক সাফল্যের পাশাপাশি কিছু ব্যর্থ অভিযানও রয়েছে। হামাস নেতা খালিদকে হত্যা করতে গিয়ে মোসাদ পুরোপুরি বিফল হয়। দ্য ফেইলড এসেসাইনেশান অব মোসাদ অ্যান্ড দ্য রাইস অব হামাস বই হতে সংক্ষিপ্ত আকারে ওই অপারেশন সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত মোসাদ দুর্দান্তভাবে পিএলও নেতাদের হত্যা শুরু করে। পিএলও ধীরে ধীরে স্বাধীনতা-সংগ্রাম থেকে নিস্তেজ হয়ে যায়। উল্টো পথে হামাসের উত্থান হতে থাকে। খালিদ মিশাল তখন অনেক বড় হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৯৭ সালে খালিদ তার গাড়ি থেকে নেমেই মাত্র হামাস অফিসে ঢুকবেন এ সময়ই হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো তিনজন কানাডিয়ান ট্যুরিস্ট তার গাড়ির পাশেই দাঁড়িয়েছিল। একজন ট্যুরিস্ট (মোসাদের স্পাই) হঠাৎ খালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার কানে কিছু একটা পুশ করতে চেষ্টা করে। বিষ ঢেলে দিয়েছে তার শরীরে। চুম্বকটানের মতো খালিদের দেহরক্ষী ট্যুরিস্টের ওপর পুরো শরীরের চাপ দিয়ে বসিয়ে দেয়। খালিদ ছিটকে দূরে সরে যান। আক্রমণকারীদের একজন পালিয়ে গিয়ে ইসরায়েলি অ্যাম্বাসিতে লুকিয়ে পড়ে। পরে সাইয়াফ হাসপাতালে এবং স্পাইদের পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। খালিদের অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যাবেন। হাসপাতালে ভর্তি করা হলো তাকে। জর্ডানের বাদশাহ হোসাইন এবার সরাসরি ফোন দেন নেতানিয়াহুকে। যদি খালিদ মিশাল মারা যান, তিন মোসাদ স্পাইকে খুন করা হবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি বাতিল হবে। এবার মোসাদ সতর্ক হয়ে ওঠে। মোসাদের চিফ নিজেই ল্যাবরেটরিতে মডিফাই করা বিষের প্রতিষেধক নিয়ে আম্মানে আসেন। খালিদ মিশাল সুস্থ হয়ে ওঠেন। এই ব্যর্থ হামলার ফলাফল এমনই করুণ ছিল যে, মোসাদের চিফকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। ইসরায়েলের চিরশত্রু ইরানের হাতেও মোসাদের বেশ কিছু বিফলতা রয়েছে বর্তমানে।
তথ্যসূত্রঃ
১। বাংলাদেশ প্রতিদিন
২। উইকিপিডিয়া
৩। প্রথম আলো
৩। বিবিসি
৪। অামাদের সময়
২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:১৬
আরিফ রুবেল বলেছেন: বেশ গবেষনামূলক পোস্ট। অনেক কিছু জানলাম।
৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৪
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: কপি পেস্ট করে কী মজা পান? কোন টাকার ব্যপারও তো নাই। তাহলে কেন এসব কপি পেস্ট?
৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:১৪
কালীদাস বলেছেন: লেখাটা প্রায় পুরাটাই বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে হুবহু কপিপেস্ট করা, ছবিসহ, অবশ্য রেফারেন্স রেখেছেন। এরচেয়ে আপনার নিজের ভাষার লিখলে অনেক গ্রহণযোগ্য হত, আপনার নিজের বক্তব্য কি এই পোস্ট থেকে বোঝার কোন উপায় নেই।
৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:২৬
ইসমাঈল আনিস বলেছেন: অনেক জানা হল৷
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫৫
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: পড়ে গেলাম, কিছু জানা হল