নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার দেশ বাংলাদেশ

আমি লেখালেখি করতে খুব ভালোবাসি। আমি আমার লেখার মাধ্যমে আমার দেশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চাই।

খন্দকার এ খালিদ জনি

আমি একজন বাংলাদেশী নাগরিক। আমি বাংলাদেশকে খুব ভালোবাসি, বাংলাদেশ সম্পর্কে, আমার নিজের জেলা সম্পর্কে লিখতে আমার খুব ভালো লাগে।

খন্দকার এ খালিদ জনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেমের সমাধী ছেড়ে পাখি যায় উড়ে যায়, মনের শিকল ভেঙ্গে যায়void(0);

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২১

কি লিখব কিছুই বুঝতে পারছি না। গতকাল শুনলাম সেই সত্য কথাটি, যা আমি কখনো আশা করিনি। আমার ভলোবাসার মানুষটির বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু ওর কোন দোষ নেই। কারন আমি তো কোনদিন ওকে আমার ভালোবাসার কথা জানাইনি। ঘটনাটা খুলে বলি। আমার বাবার চাকুরী সূত্রে আমরা তখন থাকতাম সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানায়। আমাদের দেশের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার কাহেতা গ্রামে। আমাদের গ্রামের বাড়ীর জমি ছাড়া আমাদের আরে কোন জমি-জমা ছিল না। গ্রামের বাড়ীতে যা ছিল তাও ছিল অতি নগন্য। সেটা ভাগ বাটোয়ারা করালে আমাদের ভাগ্যে তেমন একটা থাকে না। কারন আমার বাব-চাচারা সাত ভাই পাঁচ বোন। তাই আমার মা আমার বাবাকে অনেকদিন থেকে বলে আসছিল আমাদের জন্য কিছু জমি কেনার জন্য। তো অবশেষে ভালো জমি খুজতে খুজতে পেলাম টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানায় মনোরম পরিবেশে ১৪ শতকের একখন্ড জমি পেলাম। জমিটা আমাদের খুবই পছন্দ হল। তখন মধুপুরে আমাদের এক আত্মীয় থাকত। এখন অবশ্য অনেক আত্মীয়। তখন যে আত্নীয় থাকত সে হচ্ছে আমার আপন খালাতো বোন। আমার দুলাভাই সেখানে তুলা উন্নয়ন বোর্ডে চাকুরী করত। আমার মা-খালারা পাঁচ বোন দুই ভাই। তার মধ্যে সবার বড় খালার বড় মেয়ে থাকত মধুপুরে। ওনার নাম বেনু। তো বেনু আপার ৩ মেয়ে বন্যা, বর্ষা এবং বৃষ্টি। কোন ছেলে ছিল না। আমার তিন ভাগ্নি আমাকে খুবই শ্রদ্ধা করে। আমিও ওদেরকে খুব স্নেহ করি, ভালোবাসি। বন্যা ছিল প্রায় আমার সম বয়সী, তার পরে বর্ষা, সবার ছোট বৃষ্টি। তো আসল ঘটনায় আসি। তখন ২০০৩ সাল মধুপুর প্রপারে আমাদের এক খন্ড জমি কিনা হয়েছে। অনেক সস্তায় জমিটা আমরা পেয়েছি তাই সবার পছন্দ হয়েছে। তখন মধুপুরে গেলে আমার সেই খালাতো বোন ছাড়া আমাদের থাকার কোন জায়গা ছিল না। আমরা মধুপুরে গেলেই আমার খালাতো বোনের বাসায় ওঠতাম। আমি আগে কখনো মধুপুর যাইনি। সেবার আমাদের জমি কিনার পর প্রথম মধুপুর গেলাম। গিয়ে সেই আমার খালাতো বোনের বাসায় উঠলাম। দেখি আমার খালাতো বোনের তিন মেয়ের সাথে আরেকটি মেয়ে। ওর নাম শিরিন। ও আমার মেজো ভাগ্নি বর্ষার সাথে পড়ে। আমার খালাতো বোনের বাসায় লজিং থেকে লেখাপড়া করে। প্রথম প্রথম শিরিনের দিকে তেমন একটা নজর দেইনি। কিন্তু শিরিনের হাসি আমাকে মুগ্ধ করত। ওর হাসিটা ছিল খবই মিষ্টি, যা আমার মন কেড়ে নিত। আমি প্রথম প্রথম এতটা গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু আমি যখন মধুপুর থেকে সিলেটে চলে আসলাম তখন কেন জানিনা বার বার শুধু শিরিনের কথা মনে পড়ত। রাতে ঘুমাতে গেলেও বার বার শুধু শিরিনের হাসি মুখের ছবি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠত। কিন্তু এই কথাটা আমি আজ পর্যন্ত কাউকে বলিনি। এমনকি আমার একেবারে কাছের বন্ধুকেও না। তারপর ২০০৯ সালে আমার বাবা চাকুরী থেকে অবসর নিলেন। আমরা চলে আসলাম মধুপুরে। মধুপুরে আসার পরে আমি প্রতিদিন কোন না কোন উছিলায় আমার খালাতো বোনের বাসায় যেতাম শুধু শিরিনকে দেখার উদ্দেশ্যে। আস্তে আস্তে শিরিনের প্রতি আমার দুর্বলতা বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা কাউকে বুঝতে দেইনি। এক সময় আমি ওকে ভালোবেসে ফেলি। কিন্তু ওকে কখনও বলতে পারিনি। কারন ও ছিল আমার ভাগ্নির বান্ধবী। তাই সেও আমাকে মামা বলে ডাকত। সেও আমাকে খুব শ্রদ্ধা করত। শুধু শ্রদ্ধাই করত না, আমাকে খুব বিশ্বাস করত। তাই আমার কোনদিন আমার মনের কথা বলার সাহস হয়নি। কারন যদি আমি শিরিনকে বলি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি তখন যদি সে বলে ‘মামা আমি আপনাকে এত শ্রদ্ধা করি এত সম্মান করি এত বিশ্বাস করি আর আপনি আমাকে এ কথা বলতে পারলেন?’ তখন আমি খব অপমানিত হব। তাই আমি ওকে কিচ্ছু বলিনি। মনের কথাটা মনেই চেপে রেখেছি। ও আমাকে ভালোবাসত কিনা জানি না। তবে ওর অনেক ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে সেও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু প্রথম দিকে এসব ভাবভঙ্গি আমি বুঝতে পারিনি। কারন তখন মেয়েদের সাইকোলজিটা আমি খুব কম বুঝতাম। পরে আমার কাছের মানুষের কাছ থেকে মেয়েদের সাইকোলজি সম্পর্কে ধারনা নিয়ে বুঝতে পেরেছি শিরিনও আমাকে ভালোবাসত। একবার অবশ্য আমার এক দূর সম্পর্কের মামা আমাকে বলেছিল যে শিরিন আমাকে ভালোবাসে। আমি সেটা হেসে উরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি মনে মনে অনেক ভালোবাসতাম শিরিনকে। কিন্তু সেটা কাউকে বুঝতে দেইনি। তাদের সাথে এমন ভাব করতাম যেন আমি কিছুই বুঝি না। আস্তে আস্তে শিরিন কলেজ থেকে অনার্সে ভর্তি হল। আমার ভাগ্নি বর্ষা চলে চট্রগাম। সে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হল। আর শিরিন ভর্তি হল ময়মনসিং এর শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ আনন্দমোহন কলেজে। ও আনন্দ মহন কলেজে ভর্তি হবার পরে অনেকবার ওকে বলার চেষ্টা করেছি যে আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু সাহস হয় নি। ওর একবার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু ও বিয়েতে রাজি হয়নি। ও বলেছিল যে লেখাপড়া শেষ করে তারপরে বিয়ে করবে। আমি মনে মনে খুব খুশি হয়েছিলাম। কারন আমি ভেবে ছিলাম ওর লেখাপড়া শেষ হলে যখন ওর বিয়ের সময় হবে তখন আমার মনের কথাটা ওকে বলব, সে যেভাবেই হোক। সাহস নিয়ে ওকে বলতেই হবে। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। দিনটা ছিল ২০১৪ সালের ২৮শে জানুয়ারী। আমি আমার দোকানের সামনে দাড়িয়ে আছি। এমন সময় কামাল ভাই আমার সামনে এসে দাড়াল। কামাল ভাই ছিল আমার ভাগ্নিদের শিক্ষক। কামাল ভাইয়ের একটা কোচিং সেন্টার ছিল। সেই কোচিং সেন্টারে আমার তিন ভাগ্নিই পড়ত। শিরিনও পড়ত। সেই হিসাবে ওদের টিচার ছিল। বর্ষা কামাল ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সেই থেকে কামাল ভাইয়ের সাথে আমার খুব ভালো একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমি আমার মনের কথাটা কামাল ভাইকেও কোন দিন বলি নাই। তো কামাল ভাই আমাকে বল্ল শিরিনের বিয়ে হয়ে গেছে। তোমাকে কি দাওয়াত দিয়েছিল ? আমি বল্লাম না! আমি তো কিছুই জানিনা। আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। আমি ভালো করে খোজ নেবার জন্য আমার খালাদো বোনের বাসায় গেলাম। গিয়ে শুনলাম ঘটনা সত্য। আমার সেদিন রাতে আর ঘুম হল না। বার বার শুধু শিরিনের কথা মনে পড়ল। শিরিনকে মন থেকে কিছুতেই সরাতে পারছি না। শিরিন আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। তোমার জন্য আমার হৃদয়ের দরজা চিরদিন খোলা থাকবে। আমি চাই নতুন সংসার নিয়ে তুমি সুখে থাক। তখনো যদি তুমি সব হারিয়ে নিসঙ্গতা বোধ কর। তাহলে তুমি আমার কাছে চলে এস। তোমার জন্য আমার মনের দরজা সব সময় খোলা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.