নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা :: শব্দেই দৃশ্যানুভূতি

খলিল মাহ্‌মুদ

সুন্দর পৃথিবী চাই

খলিল মাহ্‌মুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা কলেজ - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি

৩০ শে জুন, ২০০৯ বিকাল ৫:৫০

কী লিখতে যাচ্ছি জানি না। তবু বসলাম।



তখন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। ১৯৮৫। ঢাকা কলেজ।

বাংলা পড়াতেন জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার, শামীম আজাদ ম্যাডাম আরও ৪/৫ জন স্যার/ম্যাডাম পড়াতেন, যাঁদের নাম মনে নেই।



খেই হারিয়ে ফেললাম- কলেজের কথা চলে আসলো বলে। কতো কিছু, কিন্তু কোন্‌টা লিখবো?



জামান স্যার ক্লাসে এসে বাংলা সিনেমার উপর তাঁর সরেজমিনলব্ধ জ্ঞানের কথা বলতেন। তখন তো খুব সিনেমাপাগল ছিলাম, তাই ভালো লাগতো। স্যার নাকি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষদের সাথে মিশবার জন্য মাঝে মাঝে একেবারে সামনের সাড়িতে (থার্ড ক্লাসে) গিয়ে বসতেন। হাইস্কুল লেভেল পর্যন্ত মা-বাবার মতো শিক্ষকগণও সিনেমা দেখাটাকে বখে যাওয়ার লক্ষণ মনে করতেন, কিন্তু জামান স্যারের 'সিনেমাদর্শন'-এর জ্ঞান আমাকে সিনেমা দেখার জন্য খুবই অনুপ্রাণিত করতো। দু কদম হাঁটলেই বলাকা সিনেমা হল, শো-টাইমে যার সামনের দিকটা দর্শনার্থী মানুষে থইথই করতো। ওখানে গিয়ে পাগল হয়ে যেতাম। অনেকদিনই হোস্টেলে দু-একটা মিল না খেয়ে টাকা বাঁচিয়ে সিনেমা দেখেছি।



বলাকার পাশেই ইডেন। ওখানে শাহনাজ পড়তো। স্কুল পার হয়ে ঢাকার শহরে শাহনাজকে কতো খুঁজেছি! একদিন নবাবগঞ্জ সেকশনে খালার বাসায় যাওয়ার পথে দেখি শাহনাজ আসছে রিকশায় উল্টো দিক থেকে, ওর পাশে আরেকটা মেয়ে। শাহনাজ হাসছিল সেভাবে যে হাসির জন্য আমি খুন হয়ে যেতাম। ...........শাহনাজ কি একবারও আমাকে খোঁজে না যেভাবে ওকে আমি খুঁজি- এমন ভেবে ভেবে কতো কেঁদেছি!। রুমমেটের সাথে কথা বলতে বলতে চোখে পানি চলে আসতো- ও জানতো না কিছুই, শুধু জানতে চাইতো কী হয়েছে।



শাহনাজের সাথে আজ কথা হলো।

কিরে, ফোন ধরিস না কেন?

ব্যস্ত আছি।

অন্তত ফ্রি হয়ে কি একটা কল দেয়া যায় না?

না।

তুই মানুষ হবি কবে?

আমি খুব ভালো মানুষ। বিশ্বাস না হলে আমার বউরে জিগা।

ইশ, তোর কথাবার্তাও তো দেখছি অভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

রাখি, ব্যস্ত আছি।

হ্যাঁ, ব্যস্ত তো থাকবিই, ফোন করি তো!

রাখি।

কাল বীনা ফোন করেছিল। খুব দুঃখ করলো। তুই নাকি ওর ফোন ধরিস না?

ব্যস্ত থাকি।

এতো ব্যস্ত কী নিয়ে?

তুই বুঝবি না।

হ্যাঁ, আমার তো বোঝার বয়স হয় নাই।

একটা কবিতা শুনবি?

বল।

আমি কবিতার নাম বলি- 'তারপর গুরু ভনিলেন অমর বাণী।' শাহনাজ হাসে। আমি বলি, তোদের মতো মূর্খের কাছে আর কবিতা বলবো না। রাখি।

কিন্তু রাখতে রাখতেও পিসি থেকে দুটো কবিতা শোনালাম। বেশিক্ষণ মোবাইলে কথা বলতে গেলে কানে ব্যথা হয়ে যায়।

শাহনাজ শেষ করলো, মাঝে মাঝে ফোন দিবি, অন্তত মিস্‌ডকল।





চলুন কলেজে ফিরে যাই।



আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার তখন একজন বিখ্যাত টিভি উপস্থাপক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তখনো তাঁর কোনো অনুষ্ঠান দেখবার সুযোগ হয় নি বলে খুব আফসোস হতো।

স্যার ক্লাস নেয়ার সময় গ্যালারি ভরে যেতো; বেঞ্চিতে জায়গা না পেয়ে ছাত্ররা দাঁড়িয়ে থাকতো। অন্যান্য সেকশন, সিনিয়র-জুনিয়র সব সেকশনের ছাত্ররা চলে আসতো। তিনি আমাদের 'হৈমন্তী' পড়িয়েছিলেন। ৩ কি ৪ দিনে। আমার সারা জীবনে আজও ওরকম কোনো ক্লাসে এ্যাটেন্ড করার সৌভাগ্য আমার হয় নি। কিন্তু পরবর্তীতে বিটিভিতে স্যারের উপস্থাপনায় একটা অনুষ্ঠান দেখে খুব মর্মাহত হয়েছিলাম। তাঁর বাংলার ক্লাস যতোখানি উপভোগ্য, রসাত্মক ও আকর্ষণীয় ছিল, টিভি অনুষ্ঠান তার এক দশমাংশও মনে হয় নি।



শামীম আজাদ ম্যাডাম পড়াতেন 'সমুদ্রের প্রতি রাবণ' কবিতাটি। রাবণের পিতৃত্ববোধের বর্ণনা দিতে গিয়ে ম্যাডাম এক ক্লাসে বলে ফেললেন- নিজ সন্তান আর পরস্ত্রী সর্বদাই লোভনীয়। তখন তো সব 'স্ত্রী'ই আমাদের পরস্ত্রী, তাই কথাটার গূঢ়ার্থ আমাদের কাছে ততোখানি স্ট্রাইকিং মনে হয় নি। কিন্তু ম্যাডাম কথাটা বেশ ক'বার বললেন। ১০ সেকেন্ড নীরবতা; হঠাৎ গ্যালারির মাঝখান থেকে 'গর্ধভ' একজন দাঁড়িয়ে গেলো : ম্যাডাম, আমার বউ যদি খুবই সুন্দরী হয়, আর পরের বউটা দেখতে যদি খুবই বিশ্রী হয়, তবুও কি আমার কাছে পরস্ত্রী লোভনীয় মনে হবে?

মুহূর্তে ক্লাসের মধ্যে হাসির বোমা ফাটলো। ম্যাডাম এখন এই পাগলদের চেঁচামেচি থামাতে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।



সেই হাসি একটুখানি স্তিমিত হয়েছে, এমন সময়ে পেছন থেকে আরেক পাগল দাঁড়িয়ে বয়ান করলো : ম্যাডাম, আমার বউ 'বিশ্বসুন্দরী' হলেও কি পরের বউয়ের জন্য আমার লোভ হবে?

এটা ফাটলো এটম বোমার মতো।



ম্যাডাম বোধ হয় ঢাকা কলেজ থেকে লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। অনেক বছর পর গত বছর চ্যানেল আইতে তাঁর একটা সাক্ষাৎকার দেখি। দেখলাম ম্যাডাম একটুও বদলান নি।







যেখানে যাই সেখানেই ঢাকা কলেজিয়ানদের খুঁজি। ঢাকা কলেজের পুরনো যে কাউকে পেলেই কলেজের গল্প উঠে আসে। সবার আগেই যে কথাটা উঠে আসে তা হলো- সেই ঢাকা কলেজ আর ঢাকা কলেজ নেই। একদিন যে কোনো মেধাবী ছাত্রের জন্য ঢাকা কলেজ ছিল অনলি ওয়ান চয়েস। আজ সেই ঢাকা কলেজের কোনো নামডাকই নেই। ঢাকা কলেজ আজ শুধু ইতিহাস।



শাহনাজের যমজ দুই ছেলে গত বছর এসএসসি পাশ করলো। বড়টা জিপিএ-৫ সাধারণ আর ছোটটা জিপিএ-৫ গোল্ডেন। বড়টা জিপিএ-তে 'গোল্ড' মিস করেছে বলে ওদের হাহাকারের অন্ত নেই।



হাহাকার বাড়লো কলেজে ভর্তির সময়। ওদের চৌদ্দ গোষ্ঠির সাধ হলো ওরা নটরডেম কলেজে পড়বে। ভর্তিফর্ম ফিলআপ করে জমা দেয়া হলো। কিন্তু বয়সের ভিত্তিতে ভর্তিতালিকা নির্ণয় করা হবে বলে ওরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো, কারণ ওদের সার্টিফিকেটের জন্মতারিখই প্রকৃত জন্মতারিখ; আর সে হিসেবে ওদের বয়স মোটামুটি কমই।



ভর্তিতালিকায় 'নির্বাচিত'দের মধ্যে ওদের নাম নেই; তবে 'গোল্ড'অলার নাম ওয়েটিংয়ে আছে। শাহনাজ ইতোমধ্যে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে ফেলেছে। কিছুটা আশ্বাস পাওয়া গেছে যে গোল্ডকে 'ওয়েটিং' থেকে কনফার্ম্‌ড লিস্টে উন্নীত করা হতে পারে। কিন্তু সাধারণটাকে কোনো মতেই সম্ভব নয়।



আমাকে হন্তদন্ত হয়ে ফোন দিয়ে সবিস্তারে জানিয়ে সবিনয় নিবদনে শাহনাজ বলে, তুই কি একটু আমার সাথে যাবি প্রিন্সিপালের কাছে?

ওরেব্বাবারে! আমি ঘরকুণো ম্যাঁও প্রিন্সিপালের কাছে যাবো? মরে গেলেও সম্ভব না। আমার খুব লজ্জা করে। তুই একাই যা। তুই তো মেয়েমানুষ, তোর কোনো ভয় নাই।



কোনো ভরসা না পেয়ে 'মেয়েলোকের চেয়েও অধম' ইত্যকার গালিগালাজ করে শাহনাজ ফোন রেখে দেয়। আর আমার খুব অনুশোচনা হতে থাকে- হায়, আমি শাহনাজের জন্য কিছুই করতে পারলাম না!



শাহনাজ আমার উপর ক্ষেপে আছে। ওর সাথে বনিবনা না থাকলে আমার অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। মিটিয়ে ফেলি।



রাতে ফোন দিই। শাহনাজ খুব উৎফুল্লভাবে জবাব দেয়, কিরে, কী খবর?

আমার খারাপ লাগে এই ভেবে, ও ওর ছেলেদের নটরডেম কলেজে ভর্তি করিয়ে ফেলেছে, আর সে কাজে আমি এক ফোঁটা অবদান রাখতে পারি নি। অথচ রাজ্জাক ভাই জানেন, যে কোনো বিপদ-আপদ বা কাজের জন্য আমিই শাহনাজের জন্য একমাত্র ভরসা।

অপরাধী স্বরে বলি, গুড। ওদের ভর্তি নিয়ে ঝামেলা মিটে গেলো।

শাহনাজ টেনে টেনে বলে, হ্যাঁ, অনেক চিন্তা করে দেখলাম নটরডেমে হবে না। আর হলেও মাত্র একজনের হবে। দুই ভাই দুই কলেজে গেলে কতো সমস্যা না?

আমি উৎসাহিত হয়ে বলি, হ্যাঁ হ্যাঁ বল, কী সিদ্ধান্ত নিলি?

শাহনাজ বলে, একটু পরেই আমি তোকে ফোন দিতাম।

কেন?

ওরা তো ঢাকা কলেজেও ফর্ম সাবমিট করেছিল। মানসুর ভাই (ঢাকা কলেজের জনৈক অংকটিচার, আমাদের স্কুলের) জানালো ওদের দুজনের নামই আছে। এখন বল, নটরডেমে যেহেতু হলো না আর কী করবো, বাসার কাছে ঢাকা কলেজ, ৫ মিনিটের হাঁটার রাস্তা। এখানেই দিয়ে দিই। কেমন হবে বল তো?



আমাদের ব্যাচে আমাদের স্কুল থেকে আমি একাই ঢাকা কলেজে চান্স পেয়েছিলাম। খবির ঢাকা কলেজে চান্স পেলো না, পেলো নটরডেমে, সে নিয়ে আজও পর্যন্ত খবিরের মনে গভীর কষ্ট, সে ঢাকা কলেজে পড়তে পারে নি।



শাহনাজের কথায় কষ্ট পাই। আমার ঢাকা কলেজ আজ আর ছাত্রদের ফার্স্ট চয়েস নয়। ঢাকা কলেজে পড়বার স্বপ্ন আজ কেউ দেখে না। যারা নটরডেমে চান্স মিস করে, তারাই তখন এরূপ পায়ে হাঁটার ৫ মিনিটের পথ ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। যেনতেন কলেজে হয়ে গেছে ঢাকা কলেজ।



আমি কণ্ঠ ঝেড়ে বলি শাহনাজকে, দেশের সেরা কলেজ ঢাকা কলেজ, যা তোর বাসার এতো কাছে- তুই এটা রেখে নটরডেমে দিতে চাইছিলি তোর ছেলেদের?

শাহনাজ বলে, নটরডেমের মতো কি কলেজ হয়? এমন পড়ালেখা আর কোথাও নাই।

এরপর আমি শাহনাজকে বিভিন্নভাবে বোঝাবার চেষ্টা করি, আসলে ঢাকা কলেজের তুলনা হয় না। হাতি মরলেও লাখ টাকা দাম। নটরডেমের কথা কে জানতে চায়?



কিন্তু আমার সবকথাই ফাঁকা বুলি, আমি জানি। যা শাহনাজকে বললাম তা শুধু আমাকে সান্ত্বনা দেবার জন্যই বলা।



সবশেষে নটরডেমে ভর্তি হতে না পারার দুঃখ নিয়েই শাহনাজের দু ছেলেকে ঢাকা কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে।









(পরিবর্ধিত ও পুনর্মুদ্রিত)







ঢাকা কলেজ - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি



ঢাকা কলেজে - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি



ঢাকা কলেজের কথা



ঢাকা কলেজের পুরনো গৌরব কোথায় গেলো?

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১১

অপ্‌সরা বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে স্মৃতিচারণ।

৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৮

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ধন্যবাদ ও ধন্যবাদ পড়বার জন্য।

২| ৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১২

ইরতেজা বলেছেন: দারুন লিখেছেন। প্লাস

৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৯

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: অশংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ পড়বার জন্য।

৩| ৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭

নীলতারা বলেছেন: স্মৃতির জানালা খুলে...

৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫১

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: স্মৃতির জানালায় উঁকি দিতেই দেখি.... ধন্যবাদ পড়বার জন্য।

৪| ৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৬

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: ভালো লাগলো। আমার এক ছোটভাই ঢাকা কলেজে (আমার এক ব্যাচ পরে) পড়ার সুবাদে আমি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র হয়েও সায়ীদ স্যারের ক্লাস করেছি। সায়ীদ স্যারের ক্লাস যে না করেছে তাকে সে ক্লাসের মজা লিখে বা বলে বোঝানো কঠিন। সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন ! অনেক ধন্যবাদ।

৩০ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২০

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: খুব ভালো লাগলো জেনে যে আপনি সায়ীদ স্যারের ক্লাস এটেন্ড করেছিলেন।

৫| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ৯:৪১

সাহোশি৬ বলেছেন: ১৯৮৭ সালে এস,এস,সি পাশ করে নটরডেমে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। নটরডেমে চান্স পেয়ে আমার ফুর্তি দেখে কে? জীবনে এখন পর্যন্ত এত আনন্দ আর পাই নি। ঢাকা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত দেই নাই। নটরডেম হলো নটরডেম, এর সাথে কি পৃথিবীর অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনা চলে?

আজও আমি গর্ব করে বলতে পারি, আমি এক্স নটরডেমিয়ান। শাহনাজ আপার ছেলেদের কথা ভেবে বড়ই দু:খ পেলাম, তারা নীবনে কখনোই বলতে পারবে না তারা এক্স নটরডেমিয়ান। আহা বেচারারা!!!

০৩ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৪৮

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: নটরডেম কলেজ তো অবশ্যই ভালো কলেজ সন্দেহাতীত ভাবে। তবে ঢাকা কলেজের গৌরব আর ঐতিহ্যের সাথে নটরডেম কলেজকে মেলানো বোধ হয় খুব বেশি হয়ে যায়। সব বোর্ডের স্ট্যান্ড করা আর সেরা ছাত্রগুলো এসে জমা হয় ঢাকা কলেজে। তাই স্বভাবতই পরীক্ষার ফলাফলে ঢাকা কলেজের একচেটিয়া প্রাধান্য থাকতো। ঢাকা কলেজের প্রাধান্য এতো বেশি বলেই মেধাবী ছাত্রদের দৃষ্টি সবসময় ঢাকা কলেজের দিকেই থাকতো। এটা তো গায়ের জোরে বলছি না, পরিসংখ্যান থেকে বলা। এডমিশন টেস্টের জন্য ঢাকা কলেজের কোয়ালিফাইং নম্বর ৬৫০, আর নটরডেম কলেজের ৬০০ ছিল (যা নিচেও একজন উল্লেখ করেছেন)। এ থেকেও কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। হয়তো এমনও হতে পারে যে ঢাকা কলেজে ভর্তি হবার জন্য কোয়ালিফাইং মার্কসই আপনার ছিল না (প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড)। তবে স্বীকার করি ঢাকা কলেজের সেই গৌরব আজ আর নেই, সে জায়গা রাজউক, ভিকারুন্নিসা আর নটরডেম কলেজ দখল করে নিতে যাচ্ছে। আর সেই আক্ষেপের কারণেই আমার এ লেখা। তবে শান্তি এটাই, হাতি মরলেও লাখ টাকা দাম।

৬| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১০:১৭

ঘুমরাজ বলেছেন: আমি ঢাকা কলেজ থেকে hsc পাস করসি ২০০৩তে।ঢাকা কলেজ এখনও ভাল।কিন্তু honors লেভেলের ছাত্রদের কারনে সুনাম খারাপ হইসে।hsc result কিন্তু ঢাকা কলেজের ভালই হয়।ছাত্র কম পরিক্ষা দেয়,তাই দেখা যায় total A+ কম দেখা যায়।২০০৩ তে hsc তে A+ পাইসিল বাংলাদেশ এ ৫জন।ধালা কলেজ থাকে ছিল ২জন যা highest।stand system এও কিন্তু ভালই করত।

০৩ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৫০

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: এখন শুনতে পাচ্ছি ঢাকা কলেজকে নাকি ভার্সিটি করা হবে। কদ্দূর সত্য জানি না।

৭| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:০৫

চিত্তরঞ্জন সাহা বলেছেন: সাহোশি৬@, নটরডেমে এডমিশন টেষ্টের জন্য ৬০০ নম্বরের দরকার, আর ঢাকা কলেজে দরকার ৬৫০। ঢাকা কলেজের পাশে ল্যাবরেটরি স্কুল। আমাদের ৫০ জনের উপরে ঢাকা কলেজে এডমিশন টেষ্ট দিয়ে ১৩ জন পাশ করেছিল। আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হতে পারিনি। নটরডেমিয়ান হিসেবে আমি খুব গর্বিত, কিন্তু ঢাকা কলেজে পড়ার সৌভাগ্য হয়নি এই যন্ত্রণা পুরা ভার্সিটি লাইফ থেকে আজও পর্যন্ত আমাকে পুড়িয়ে মারে। নটরডেমিয়ান হয়েও বলতে চাই, ঢাকা কলেজের তুলনা শুধু ঢাকা কলেজই। আমার পুরা পরিবার ঢাকা কলেজিয়ান আমি ছাড়া। ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোয়ালিফাইং মার্কসই ঢাকা কলেজকে নটরডেমের উপরে তুলে নেয়। কোন এক সময় মেধা তালিকায় শুধু ঢাকা কলেজের নামই থাকত, মাঝেমধ্যেও অন্যান্য কলেজ থেকে দুই একজন ঢুকে পড়ত ভিতরে। তবে ইদানিং কালে নটরডেমিয়ানরা লেখাপড়ায় বেশ ভাল করছে, যা ঢাকা কলেজে অনুপস্থিত।

০৩ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৫২

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: ধন্যবাদ নটরডেমিয়ান সত্য স্বীকারের জন্য।

৮| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:৪০

ঘুমরাজ বলেছেন: চিত্তরঞ্জন সাহা ভাইয়ার সাথে আমি এক মত।ঢাকা কলেজে আসল ঝামেলা হল-৬দিনে একই বিষয় ৬জন টিচার পরান ৬টা ছাপটার'তাই দেখা যায় কেও চাইলেও তাল মিলায় ছলতে পারে না।

@সাহোশি৬ ভাইয়া।আমি নটরডেমিয়ান কলেজে ১week cls করে ঢাকা কলেজে চলে আইসিলাম।কলেজের বেপারটা হল যার কাছেজেটা ভাল লাগে।সবার কাছেই তার কলেজের তুলনা অন্য কলেজের সাথে হয় না

@চিত্তরঞ্জন সাহা ভাইয়া আমি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র ছিলাম।আপনিও কি ল্যাবরেটরি স্কুল'র ছাত্র ছিলেন?

০৩ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৫৬

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: ঢাকা কলেজিয়ানরা মনে করে ঢাকা ভার্সিটি শুধু তাঁদের সম্পদ। আর ল্যাব: স্কুলের ছাত্ররা মনে করে ঢাকা কলেজ ওদের তালুক। :) ঢাকা কলেজে ল্যাবঃ আর আইডিয়াল স্কুলের প্রাধান্য বেশি থাকতো আমাদের সময় পর্যন্ট, পরের খবর জানি না।

৯| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:৪৮

বুলবুল আহমেদ পান্না বলেছেন: আমি ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. পাশ করলাম ১৯৯৮ সালে। ছিলাম সাউথ হোস্টেলে।

সায়ীদ স্যারের কোন ক্লাস পাই নাই :(
তবে স্বাতী ম্যাডামের বাংলা ক্লাস গুলোর কথা এখনো মনে আছে।

০৩ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:৫৯

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: আমি কিছু আগে পাশ করেছি। ১৯৮৬ সনে। নর্থ হোস্টেল, ১০১ নং রুম। সেকশন-সি, সায়েন্স, রোল-৫৩। :) আগে মাঝে মাঝে হোস্টেলে বেড়াতে যেতাম, বিশেষ করে ১০১ নং রুমে। কতো স্মৃতি!

১০| ০৩ রা জুলাই, ২০০৯ ভোর ৫:৩৬

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য বলেছেন: স্মৃতিচারণ সুন্দর হলো। ++++++

অ.ট: আপনাদের ম্যাডাম কবি শামীম আজাদের একভাই আপনাদের সাথেই এইখানে ব্লগিং করেন। তিনিও কবি। নাম মিল্টন রহমান।

০৬ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫০

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: তথ্য দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

১১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৫:৪২

সহেলী বলেছেন: স্মৃতিকাতর করে দিলেন ।

শুভকামনা রইল আপনার জন্য ।

০৬ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫১

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: আপনার জন্যও শুভ কামনা।

১২| ০৫ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:১২

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির, সেইখানে পরাজয়ে ডরে না বীর। মানেন তো! বলেছেন: সাহোসি৬@, ঢাকা কলেজ সম্বন্ধে আপনার জ্ঞান খুবই অপ্রতুল, হে বালক। আপনার ঢাকা কলেজ সম্পর্কে কোন জ্ঞান থাকলে জীবনেও নটরডেম কলেজে যাওয়ার কথা ভাবতেন না। অবুঝ ছেলে বড়!

০৬ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫১

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: একমত।

১৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৪:০৪

কালীদাস বলেছেন: নটরড্যাম, ঢাকা দুটার আলাদা ঐতিহ্য, কোনটাকেও ছোট করে দেখতে চাইনা। আমি নিজেও নটরড্যামে চান্স পেয়েও ঢাকাতে পড়েছি, এটা সম্পূর্ণ যারযার ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার।

ভাল লাগল পোস্ট-টা।+++++আপনি তো আমার জন্মের সময় পাশ করে ফেলেছেন;)

১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২১

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: আপনার মতামত গ্রহণযোগ্য। মনে হচ্ছে অনেক সিনিয়র হয়ে গেছি। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১০ সকাল ৭:১৯

শাকিউল রানা বলেছেন: আমার জন্মের আগেই বের হইছেন ;)
আমি ২০০৭ সালে পাশ করলাম hsc. আমাদের সময় শমীম রেজা, শামীম সিদ্দিকী স্যারের বাংলা ক্লাস খুব ভাল লাগতো। আরও আনেকের কথাই মনে পড়ছে

০১ লা মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৩

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো। আসলে ঢাকা কলেজে এতো টিচার যে সবার কথা মনে রাখা আর জুলুজির সবকিছু মনে রাখা এক সমান। আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো।

১৫| ০৪ ঠা মে, ২০১০ রাত ২:১০

ইসফার আহমদ সিফাত বলেছেন: ভাইয়া আমি ঢাকা কলেজের ০৮ ব্যাচ । গোল্ডেন এ+ পেয়েও নটরডেম কলেজে ভর্তি হতে পারিনি । যখন ঢাকা কলেজে আসলাম তখন নিজেকে একসময় খুব গৌরবান্বিত মনে হলো । সেকেন্ড ইয়ারে আমার ০% এটেন্ড্যান্স । খুব মজার একটা লাইফ ছিলো । ছিলাম নর্থ হলের ৩২৬ নম্বর রুমে । রোল ২৬১ । শমীম রেজা, শামীম সিদ্দিকী আর কাওসার স্যারকেও খুব ভালো লেগেছে ।

০৬ ই মে, ২০১০ রাত ১১:০৩

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: জেনে খুবই ভালো লাগলো।

১৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১১

ইসফানিদয়র আরিওন বলেছেন: আমিই এই বাঙলাদেশের একমাত্র গর্দভ হব যে ঢাকা কলেজে পড়ার জন্য ২০০৪ সালের নটর ডেমের ভর্তি পরীক্ষাটা যাচ্ছেতাই দিয়েছিল । ভাগ্য ভালো যে, আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হতে পেরেছিলাম । তারপরও আমাকে মা-বাপের ১০১টা কথা হজম করতে হয়েছিল ।
উচ্চ মাধ্যমিকের এই স্মৃতি নিয়ে আমি এখনও অহঙ্কর করি ।
কারণ, এটা আমার জীবনের প্রথম স্বপ্ন , এবং আমি তা পূর্ণ করেছি ।

১২ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৩:১৫

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: আসুন, আলিঙ্গন করি। ঢাকা কলেজ তার নিজের জায়গাতেই আছে, আর আপনিও ঠিকটিই করেছিলেন। অভিনন্দন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.