![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের জীবনগুলো আসলে একেকটি উপন্যাস, সুন্দর মলাটে বাধানো হাজার পৃষ্ঠার উপন্যাস। উপন্যাসের শুরু হয় জন্মে আর শেষে থাকে মৃত্যু। উপন্যাস জুড়ে থাকে অসংখ্য ছোটগল্প,থাকে ভাঙ্গা গড়ার খেলা। সেই উপন্যাসের মূল চরিত্র আমরা নিজেই। আমাদের ঘিরে থাকে অসংখ্য পার্শ্বচরিত্র। কোন চরিত্র থেকে যায় পুরো উপন্যাস জুড়েই। আবার কোন পার্শ্বচরিত্রের বিচরণ থেমে যায় ক্ষুদ্র পরিসরেই। সে চরিত্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় উপন্যাস। চলে আসে নতুন নতুন গল্প,নতুন নতুন চরিত্র। \nউপন্যাসে কখন কোন গল্প শুরু হবে,কে আসবে সবই ঠিক করেন লেখক। তার কলমের আচড়ে লেখা হয়ে যায় উপন্যাসের মানুষ গুলোর ভবিতব্যতা। সত্যি ঈশ্বর মহান লেখক............
ঘরে তেমন কিছু নাই, কয়েকটা আলু আর কিছু চাল। কোন রকমে আজকের রাতটা পার হবে। কিন্তু কালকে?
আগামীকাল ঈদ, পবিত্র ঈদ। ছোট মেয়েটা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে, মা দুইটা চড় মেরেছে। মেয়েটা বায়না ধরেছে পোলাও-গোশত খাবে। গরীবের আবার পোলাও শখ কত!
বড় মেয়েটাকে মারধর করে জামাই ভাগিয়ে দিয়েছে , জামাইয়ের দাবি দুই হাজার টাকা লাগবে। সে কাল থেকে না খাওয়া। দু হাজার টাকা না পাঠালে তালাক দেবে বলে হুমকি দিয়ে রেখেছে ।
আনু মিয়া পড়ে গেছে মহা চিন্তায়। গত দুই সপ্তাহ যাবত সে কোন কাজ পায় নাই । বাড়িতে একটা কানাকড়িও নাই। চিন্তামুক্ত হবার জন্য একটার পর একটা মধু বিড়ি টানছে। প্রতি টানে টেনশন যেন আরো বাড়ছে।
বাড়ি বাড়ি গেলে কিছু গোশত পাওয়া যাবে, কোরবানীর ঈদে সবাই গরীব মানুষদের বেশ উৎসাহ নিয়ে মাংস দান করে। বছরের ঐ একটা দিনেই আনু মিয়ার কপালে গরুর মাংস জোটে। সমস্যা হল পোলাওয়ের চাল। তার উপর আবার বড় মেয়েটার জামাইকে দু হাজার টাকা পাঠাতে হবে, কাল আল্টিমেটামের শেষ দিন। আনু মিয়া মনে মনে একটা উপায় বেড় করে ফেলেছে।
মধ্যরাত, আনু মিয়া চৌধুরী বাড়ির সামনে। একটু পর তাকে এই বাড়িতে নিঃশব্দে ঢুকতে হবে, উদ্দেশ্য চুরি করা। আনু মিয়া পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়া মাত্র কুকুরটা খেকিয়ে উঠল। মুহুর্তে টর্চ লাইটের একরাশ আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠল আনু মিয়ার সারা দেহ, মলিন হয়ে গেল আনু মিয়ার দারিদ্র ক্লিস্ট মুখখানি। আনু চোরকে ধরে ফেলেছে দারোয়ান।
ঈদ্গাহ মাঠের পাশে সাড়ি সাড়ি গরু বেধে রাখা হয়েছে,একটু পর কোরবানী হবে। চৌধুরী সাহেবের গরুটার ঠিক পাশে বেধে রাখা হয়েছে আনু মিয়াকে। বাদ-নামাজ গরু গুলোর কোরবানী হবে আর আনু মিয়ার হবে বিচার। সারা রাত মারধরের ছাপ আনু মিয়ার চোখে মুখে। ছোট-ছোট বাচ্চা-কাচ্চারা বেশ মজা পাচ্ছে। গরুর সাথে মানুষ বাধা, বিষয়টা মজার। তারা আনু মিয়াকে মাঝে মাঝে ঢিল মারছে, আজকের ঈদের সব মজা আনু মিয়া অরফে আনু চোরকে ঘিরে। মুসুল্লিরা আনু মিয়াকে দেখে রাগি রাগি চোখে তাকাচ্ছে, মনে হয় তাকে চিবিয়ে খাবে।
গরুর খুটির সাথে বাধা আনু মিয়া মাইকে ইমামের খুতবা শুনে, ইমাম সাহেব বড়ই জ্ঞানী মানুষ। কি সুন্দর তার কন্ঠ। একটু পর ইমাম সাহেব তার বিচার করবেন, চেয়ারম্যানও থাকবেন। আনু মিয়ার কস্ট হয়, তার পাশের বেধে রাখা গরুটার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। একটু পর গরুটা জবাই হবে।
আনু মিয়ার হবে বিচার… মহা বিচার। ছোট মেয়েটার পোলাও গোশত আর জামাই বাবার দুইহাজার টাকার জন্য আনু মিয়ার অস্থির লাগে। আনু মিয়া ছটফট করে , পাশের গরুটিও ছটফট করে।
বাদ-নামাজ দু জনের জন্যই অপেক্ষা করছে ঘোর অনামিষা…………………।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২১
খান আসিফ তপু বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ রইল
২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২৩
শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: ভালো লাগলো। +++++
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২৩
খান আসিফ তপু বলেছেন: প্রথম এ+
৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩২
সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: মুগ্ধতা রেখে গেলাম।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২৪
খান আসিফ তপু বলেছেন: জমা থাকল, শোধ দিতে পারব না কিন্তু
৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ১ম ভালোলাগা +++++++++
ভালো থাকবেন
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২৫
খান আসিফ তপু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:০৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: দ্বিতীয় ভালোলাগা।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৫১
খান আসিফ তপু বলেছেন: ধন্যবাদ তনিমা আপু
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:০০
এম এম করিম বলেছেন: ভালো লাগল অণুগল্প।
ভাল থাকুন সবসময়।