![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডেইলি সকালবেলা বাজখাই চিক্কুরে ঘুম ভেঙগে যায়। ঘটনা হলো- সেই ছেলেটির অনবরত চীৎকার- ভাঙগা থালা বাসন, লোহা লক্কড় বেচবাইন।
সারারাত নেট ঘাটাঘটি করে সকালে একটু চোখে ঘুম আসে আর এমুন গলা ফাটা চীৎকার মেজাজ পুরা খারাপ হয়ে যায়। রাগের মাথায় শিশু অধিকার, মানবাধিকার ইত্যাদি ভঙ চঙ আরো ভালো লাগেনা।
একদিন দুপুর বেলা অলস সময়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে গেজাইতাছি। শুনি সেই পরিচিত চীৎকার - ভাঙগা থালা বাসন, লোহা লক্কড় বেচবাইন। হাঁকটা আস্তে আস্তে নিকটে আসে, দেখি সেই ল্যাংড়া ছেলেটি,বয়স নয় অথবা দশ। মাথায় বিরাট এক বোঝা নিজের ওজনের চেয়ে বেশি নিয়ে হেঁকে হেঁকে যাচ্ছে। সাথে ছোট একটা মেয়ে এক হাত মেয়েটির কাঁধের উপর আরেক হাতে মাথার বোঝা ধরে আছে।
গেটের সামনে আসলে দাঁড় করাই। বলি- কীরে মাথায় কি আছে?
বলে - ভাঙাচোরা লোহা, থালা, বাসন ইত্যাদি। আপনে কি কিছু বেচবেন?
বললাম না, তোর সাথে একটু গফ সফ করি।
বলে - গফ সফ করার টাইম নাই গো মামা। পারলে পুরান একটা শার্ট দেন।
আমি বলি, আমার শার্টতো তুর গায়ে আটকাবেনা।ঢিলাঢালা হবে।
বলে- কোনো রকমে গতরে পেচাইতে পারলেই হবে।
বললাম- তোরতো ভালই ইনকাম আছে, একটা নতুন দেখে কিনে নিলেই পারিস।
বললো- ইনকাম যা আছে তা দিয়া নিজের পেট আর বোনের পেট পালতেই শেষ।আর যা বাচে , তা নতুন জামা কিননের লাইগা খরচ করবার পারুম না। মেলা টাকা জমাইতে হবে।
বললাম-টাকা জমাইয়া কি করবি? ব্যবসা করবি?
বললো না, আপাততঃ ব্যবসা করুম না, হেইডা পরে।
তাহলে টাকা জমিয়ে কি করবি?
বললো- মামা সত্যি কথা বলবো- টাকা জমাইতাছি ছোট বোনটার লাইগা।
হে বলেছে-তারে একডা টেডিসকোপ কিনা দিতে।
আমি বললাম -টেডিসকোপ সেইডা আবার কি?
বললো- মামা ঐ যে যেটা দিয়া মাইনসে মাঝে মাঝে রাইতের বেলা আসমানের তারা দেখে।
আমি বললাম- ও বুজছি, টেলিসকোপ।
আচ্ছা তোর নামটাও জানা হয়নি। নাম কি তোর?
বলে- মামা আপনের মতো বেহুদা পেচাল পারের টাইম নাইগো মামা।এবার বিদেয় দেন।
আমি বললাম- নামটা অন্তত বলে যা।
বলে - নাম জামাল, কলোনির সবাই ডাকে ল্যাংড়া জামাইল্লা।
এবার মেয়েটা বলে- না শুধু ল্যাংড়া জামাল না গো মামা, অনেকে ভাইরে কানা জামাল ও ডাকে। চোখে ভালো দেখবার পায়নাতো তাই।
এতক্ষণে আমি খেয়াল করলাম সত্যিই জামালের চোখ দুটি যেন কেমন পিটপিট করছে।
বললাম- তা টেলিসকোপ দেখলি কোথায়?
জামালের বোন বলে- রাইতের বেলা গো মামা , সংসদ ভবনের সামনে দেখলাম। মাইনসে লাইন ধইরা দেখতাছে। একজনরে জিগাইলাম- যন্ত্রটা কি?
বললো- আকাশে নাকি তারা দেখে। শুইনাতো গো মামা, আমার কলিজা ফাইটা গেলো। আমি ও দেখনের লাইগা লাইনে দাঁড়ালাম। ভাই লাইনের বাইরে খাড়াই রইলো। যেই নাগো মামা- আমার চান্স আসছে দেখনের লাইগা।
ঠিক তখনই গো মামা- একজনে ধাক্কা দিয়া লাইন থাইকা বাইর কইরা দিলো।
সেদিন থাইকা ভাইরে কইছি আমারে একটা টেডিসকোপ কিনা দিতে।
ভাইয়েতো আর ভালো করে দেখতে পায়না, তয় আমি ভাইরে কইছি আমি দেইখা সব তোমার কমু। তুমি শুধু আমারে একটা টেডিসকোপ কিনা দাও।
আমি বললাম- এতো কিছু থাকতে আকাশের তারা দেখার এতো শখ হলো কেন?
জামাল বলে- আমি আর জামিলা তখন আরো ছোট। মা মারা গেলো হাসপাতালে। বাবার কোন খবর নাই। এক ডাক্তার আপারে কইলাম- মা কথা কয় না কেন? মা গো তুমি কই গেলা।
ডাক্তার আপায় কইলো- তোমাদের মা আর কথা বলবেনা।কিছুক্ষণ পর তোমাদের মা দূর আকাশে চলে যাবেন।
আমি বললাম- আকাশে মা কি করবো আমগো ছাইড়া।
ডাক্তার আপায় কইলো- সে আকাশে তারা হয়ে যাবে। তারা হয়ে সে খুব সুখে থাকবে।
আর যখনই জামিলা শুনলো -টেডিসকোপ দিয়া আকাশের তারা দেখা যা্য- সেদিন থাইকাই বায়না ধরছে ওরে টেডিসকোপ কিনা দেওনের লাইগা। জামিলা দেখতে চায়- আমগো মা আমাদের ছাইড়া গিয়া আকাশের তারা হয়ে কেমন সুখে আছে? যার দুইডা পোলা রাতে না খেয়ে শুধু পানি খেয়ে শীতের রাতে ছালা জড়িয়ে বস্তিতে শুয়ে থাকে সে কেমন সুখে আছে তারা হয়ে একবার দেখতে চাইগো ।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: হুমম।
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৪
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: দারুণ লিখেছেন ভাইয়া। মর্মস্পর্শী। + দিয়ে গেলাম।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩
স্বপনবাজ বলেছেন: বিলাল বলেছেন: এটা কি লিখলেন। চোখে জল আসলো মনে হয়।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: হুমম।
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২২
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: খুব সুন্দর...
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৬
বেবিফেস বলেছেন: হৃদয় ছিঁড়ে যাওয়া গল্প ভাই। কাঁদানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫১
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৪৩
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: মন খারাপ করা লেখা
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৫৪
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মাসুম আহমেদ ১৪ ।
৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩৩
গৃহত্যাগী পূর্ণিমার আলো বলেছেন: মন খারাপের গল্প
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫১
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:০৪
আমিই মিসিরআলি বলেছেন: মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে গেছে,গল্পের বিষয়বস্তু সত্যিই অতুলনীয়
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫১
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৭
সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
খুব মানবিক গল্পে অনেক ভালোলাগা।।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫১
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২৫
বটের ফল বলেছেন: খেয়া ঘাট, আপনাকে বলছি। অসম্ভব সুন্দর এই লেখা গুলো আপনি কিভাবে লেখেন , বলবেন কি?
খুব সুন্দর ভাবে আপনি অল্প কথায় মেসেজ দিয়ে যান আমাদের। চমৎকার প্রকাশ এবং চমৎকার প্রয়াস।
ভালো থাকবেন।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে মন ভরে গেলো ভাই।
নিরন্তর শুভকামনা রইলো। অনেক ভালো থাকবেন।
১১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: এক টুকরো কষ্ট
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:২০
খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৬
বিলাল বলেছেন: এটা কি লিখলেন। চোখে জল আসলো মনে হয়।