নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

কদর রাতের প্রার্থণা।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:২১

কদর রাতের প্রার্থণা।



সাধক প্রার্থনা শেষে একটু বিশ্রাম নিলেন। গহীন অরণ্যের নীরব, নিস্তব্দ রাত। অনেকদূর যেতে হবে। মনে সাহস অনেক তাঁর, শ্রষ্ঠাইতো সাথী।



একসময় ভোর হলো। সুন্দর সূর্যালোকিত এক ঝলমলে দিন। সাধক দেখেন-পথের সামনে শ্রষ্ঠার নিখুঁত পদচিহ্ন আঁকা।সাধক সে পদচিহ্ন দেখে দেখে অগ্রসর হন। চলার প্রতি বাঁকে বাঁকে এ পদচিহ্ন দেখে সাধকের পরিতৃপ্তির আর শেষ নেই। দুজোড়া পদ চিহ্ন কী সুন্দর এগিয়ে গেছে। একজোড়া সাধকের আর এক জোড়া মহিমান্বিত শ্রষ্ঠার।



কিছুক্ষণ পরেই শুরু হলো প্রকৃতির তান্ডব। চারদিকে কালোমেঘের ঘনঘটা।বিপদসণ্কুল ভয়ার্ত পরিবেশ। সাধক দেখেন সামনে শুধু একজোড়া পদচিহ্ন আর আরেকজোড়া নেই।



এমনি সময় সাধকের ঘুম ভাঙ্গে। স্বপ্ন চৌচির হয়। কেন এমন হয়? যখনি বিপদ ঘনীভূত হয়, যখন সাহায্যটা বড় বেশী প্রয়োজন,যখনি খুব দ্রুত পথ পাড়ি দেয়া দরকার, ঠিক তখনি কেন একজোড়া পদচিহ্ন মুছে যায় বারবার।



সাধু ধ্যানে মগ্ন হন। ভক্তি আর প্রণয়ের চরম শীর্ষে পৌঁছেন। তারপর মিনতিভরা কন্ঠে বলেন- হে মহীয়ান, হে দয়াময়, হে শ্রষ্ঠা, হে ঈশ্বর ,হে প্রভু, হে পথের দিশারী অনেক বার দেখেছি যখন কোনো শুভক্ষণ থাকে তখনি শুধু আপনার পদচিহ্নের নিশানা দিয়ে যান। দেখি,আমার আর আপনার দুজোড়া পায়ের চাপ পরপর সামনে এগিয়ে গেছে। কিন্তু প্রচন্ড বিপদসঙ্কুল সময়ে কেবল একজোড়া পদচিহ্ন পড়ে থাকে আর আরেকজোড়া ধুলায় মিলিয়ে যায়, কেন ? প্রভু কেন?



শ্রষ্ঠা বলেন- কারণ তখন যে তোমার আরো বেশী সাহায্যের প্রয়োজন হয়। সবচেয়ে বড় বিপদে যে তোমার দ্রুত পার হওয়া দরকার। তাইতো দুজোড়া পদচাপ না দেখে শুধু একজোড়াই দেখো। কারণ বিপদে দ্রুত পার হওয়ার জন্য তোমাকে তখন আমি নিজেই বহন করি। আর আমি সে সময় তোমাকে বহন করে না নিয়ে গেলে পৃথিবীর আর কে তোমায় বহন করবে বলো।



আজ যখন গাজার অবুঝ শিশুদের রক্তে মাটি ভিজে যাচ্ছে, অসহায় মা'য়েরা সন্তানের লাশ বুকে নিয়ে আহাজারী করছে,সন্তানেরা মা'য়ের কফিন কাঁধে নিয়ে হাটছে, জানাযার মিছিলে মিসাইল হামলা হচ্ছে, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ ভেঙ্গে পড়ছে,নিজে গৃহেই সবচেয়ে বড় খোলা আকাশের নীচে বন্দিশালায় এ অসহায় মানুষগুলো এই লাইলাতুর কদরের রাতে খেয়ে না খেয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছে- কিন্তু চারপাশের মুসলিম দেশ গুলো বিলাসীতার স্বপ্নে বিভোর।



আর মানবাতবাদী সংগঠনগুলোও বুঝেনা- এই শিশুগুলো হিন্দু না, বৌদ্ধ না, খ্রীস্টান না, ইহুদী না, মুসলমান না-এরা মানবশিশু। ইলেক্ট্রিক তারে আটকা পড়া একটি পাখীর জীবন বাঁচাতে তোমাদের হেলিকপ্টার উড়ে যায়, আর রক্তস্নাত একটা শিশু মিসাইল আঘাতে যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন তোমাদের বিবেকের টনক নড়ে না।



OIC (Organizatioin of Islamic Countries) বলে একটা সংঘটন আছে ।যাদের নামের সাথে ওদের কাজের দারুন মিল।ওদের কাজটাই হলো O...I...C..- (মানে Oh I see). মৃত্যুর মিছিল যতই দীর্ঘায়িত হোক, শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ, গৃহহীন মানুষের আহাজারিতে ওদের কিছুই হয়না। যা হবার হোক, ওদের কাজই হলো O...I ...C..



হে দয়াময় মেহেরবাণ, পৃথিবীতে আর মুসা আঃ নাই যে তোমাকে সরাসরি বলবে, নবী সাঃ নাই যে তোমার আয়াত নাজিল হবে।কিয়ামতের আগ পর্যন্ত তোমাকে দেখার সুযোগ নাই। আর সে রকম সাধু, তাপস, সূফী , দরবেশ নেই যে তোমার অলৌকিক চিহ্ন স্বপ্নে দেখবে।আমরা বেঘোর পাপের সমূদ্রে নিমজ্জিত। তোমার দিদার লাভের সে সাহসও করিনা। তবে খোদা তুমিতো সব দেখো। মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর এক শিশু বলেছিলো- আমাকে তাড়াতড়ি মারো। আমি দ্রুত আল্লাহর কাছে যেতে চাই। তোমাদের এই জুলুমের সব কথা আমি আল্লাহকে বলে দিবো।





পূুণ্যবান সাধুর বিপদে তুমি নিজেই তাকে বহন করছো। কারণ এঘোর বিপদে তাকে বহন করার যে আর কেউ নেই। আজ গাজাবাসী'রও চরম বিপদ। ওদের আশেপাশেও কেউ নেই। এই লাইলাতুল কদর রাত্রের প্রার্থণা-হে প্রভু তুমিই তাদের বহন করো।



আর পুরো বিশ্বের হিংস্র, মানবতাহীন, নৈরাজ্যবাদী, খুনি, জাতি বিনাশকারী, অত্যাচারী, জুলুমকারীদের ওপর তোমার রহম করো। ওদের দেখার চোখ খুলে দাও, অনুধাবনের মন খুলে দাও প্রভু। তোমার রহম ওদেরই খুব দরকার। তোমার রহমতে জালিমরা যদি শান্ত না হয় তবে বারবার এই গাজার মতো রক্তের দরিয়া বয়ে যাবে প্রভু।তোমার করুণায় ওদের দিলে মানবতার বীজ বুনে দিয়ে এই রক্তের দরিয়াকে রহমতের দরিয়া বানিয়ে দাও প্রভু।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫৬

না পারভীন বলেছেন: চোখ ভিজে গেলো

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: আমারও।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫৬

সুমন কর বলেছেন: পুরো বিশ্বের হিংস্র, মানবতাহীন, নৈরাজ্যবাদী, খুনি, জাতি বিনাশকারী, অত্যাচারী, জুলুমকারীদের ওপর তোমার রহম করো। ওদের দেখার চোখ খুলে দাও, অনুধাবনের মন খুলে দাও প্রভু।

গল্পের মাধ্যমে হোক আর রূপক অর্থেই হোক সমসাময়িক ঘটনাগুলো আপনার লেখায় দারুণ ভাবে ফুঁটে উঠে।
ভাল লাগল।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ ভাই।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৯

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আল্লাহ মুসলিমদের হেদায়েত করুন, সত্যের পথে আনুন । (আমিন)

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: আমিন।

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:১৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুক আর হেদায়েত নসীব করুক ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: আমিন।

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০২

মামুন রশিদ বলেছেন: মানবতার জয় হোক ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: মানবতার জয় হোক ।

৬| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:২৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল।

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ রইলো প্রিয় ঢাকাবাসী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.